মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭

অতঃপর তুই ফাঁকি দিলি

ফেইসবুক থেকেই আমাদের প্রথম কথাবার্তা তারপর ভাললাগা অতপর ধীরে ধীরে ভালবাসা থেকে অনেক কিছু..যাইহোক এভাবেই চলছিল আমাদের প্রেম,ভালবাসা ইত্যাদি ইত্যাদি...O আমার ছবি ফেইসবুকে দেখেছে কিন্তু আমি ওর ছবি কোনদিন দেখিনি আর ওর ফোন নাম্বার ও চাইনি... !
তখন আমি S.s.c পরিক্ষার্থী ছিলাম আর দেখতে দেখতেই Xm ও শেষ, আগেই জানতাম রেজাল্ট কি হবে...এককথায় লাস্ট ব্রেন্ঞ এর ছাএ হলে যা হয়....ভাগ্যিস বালিকার বাড়ির কাছের একটা কলেজেই সীট পাইছি...আমার আনন্দ আর দেখে কে?
.
তারপর নতুন কলেজের দিকে লোকাল বাসে দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে যাচ্ছিলাম অনেক দূরের পথ তাই বিরক্তি ও কম লাগছিলো না...তবে মনে আজ অনাবিল আনন্দ হচ্ছে কারন,আজযে পাগলিটার সাথে দেখা করার দিন... !
তো কথামতো কলেজ শেষ করে সেই পার্কে গেলাম ১৫ মিনিট লেট হয়েছে..না জানি কি না,কি বলে... পার্কে গিয়ে ওকে খুজঁতে লাগলাম...ও আমাকে হলুদ পান্জাবি পরে আসতে বলেছিল আর আমি ওকে নীল শাড়ী পরে নীল অপন্সরী হয়ে আসার কথা বলেছিলাম...পার্কের গেট থেকেই একটা নীলশাড়ী পরা মেয়ে দেখতে পেলাম... !
দেখতে দারুন লাগছিল একেবারে স্বর্গের অপন্সরীর মতো আমি ওর সামনে গেলাম..ওর নাম ও চেহারার মধ্যে দারুণ মিল.ধূরু ওর নামটাইতো বলিনি!ওর নাম মিথিলা..আমি ওকে আদর করে মিথি বলে ডাকতাম..এবার গল্পে আসি তারপর ও আমাকে বলল !
মিথি:~তুই সুমন?
আমি;~মাথাটা ঝাকিয়ে বল্লাম হুম.. মিথি:-বসে পর,তা কেমন আছিস? আমি:~ভালো,তুই?
মিথি;~ভালো নেই?
আমি;~কেন?
মিথি;~তুই ১৫ মিনিট লেট করলি কেন!কান ধর?{অভিমানি সুরে}
আমি;~সরি ম্যাডাম,ভুল হয়েছে! আর কোনদিন দেরী হবেনা!
মিথি;~আমি বল্লাম কান ধর? আমি;~এখানে লোকজন দেখবে তো? মিথি;~তাতে আমার কি কানধর? আমি;~ওই কুট্টা এবার মাফ কর প্লিজ আর দেরী হবেনা?
মিথি;~আচ্ছা ঠিক আছে আর যেন ভূল না হয়. আমি;~থ্যাংকু.
মিথি;~ওই তুই এতো আনরোমান্টিক কেনরে? আমি;~কেন?
মিথি;~আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারিস না?
আমি;~তোর চোখের দিকে তাকালে আমার গলা শুকিয়ে যায়.
মিথি;~ওই কুট্টা তা বাসা থেকে পানি আনতে পারিসনি,পানি গিলতি আর আমার সাথে কথা বলতি.
আমি;~আচ্ছা ঠিক আছে,এখন থেকে তোর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলব! মিথি;~এইতো লক্ষী ছেলে. আমি;~হইছে আর গ্যাস দিতে হপেনা. !
এভাবে আরো অনেকক্ষন দুষ্টমি করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম.
!
!
এভাবে আমরা রোজ দেখা করতাম_আমার বাড়ি দূরে হওয়ার কারনে একটা ম্যাচ ও খুজঁছিলাম,কিন্তু কোথায় ম্যাচ,কোথায় কি_একটা পেলাম তা ৫হাজার টাকা মাস নিবে তাই ওখানে থাকিনি.ব্যাপারটা মিথি জানার পর ওদের বাসায় থাকতে বলল; !
আমি~তোর বাবা ব্যাচেলারদের বাসা ভারা দিবে তো?
মিথি;~হুম,আমি কতটাকা মাস ভাড়া নিবে? মিথি~ভাড়া লাগবেনা. আমি;~তাহলে তোর বাবা থাকতে দিবে? মিথি;~এতো বেশি বুঝিস কেন? আমি;~না,এমনি বললাম আর কি. মিথি~হবু জামাই হয়ে থাকবি! আমি~আমাকে এতো ভালবাসিস? মিথি~হুম,একটা রিকুয়েস্ট রাখবি? আমি;~কেন নয়?
মিথি~আমাকে রোজ সময় দিবি তো? আমি;~খুব দিবো.
মিথি~সত্যি?
আমি;হুম.
মিথি;~আর কিছু দিবি না?{চোখের দিকে তাকিয়ে}
.
তারপর ওকে জরিয়ে ধরে,ওর ঠোটে আলতো করে একটা চুমু দিলাম ও লজ্জা পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল,ধরার চেষ্টা ও করলাম Bt পারলামনা.
!
প্রতিদিনের মতো আজও বিকালে ওদের ছাদে তিনজন (আমি,মিথি আর নিধা) সময় কাটাতাম_নিধা মিথির ছোট বোন ক্লাস ফাইভে লেখাপড়া করে_আমার সাথে ওর খুব ভাব_সবদিনই বিকালটা একটু গড়িয়ে আসলে নিধা পড়ার জন্য চলে যেত_তখন আমি পাগলিটাকে জড়িয়ে আকাশ দেখতাম,দেখতাম কর্মমুখী মানুষের ঘড়ে ফেরার ভীড়.আরো দেখতাম সূর্যাস্তের অপরুপ দৃশ্র্র্র্র
!
কিন্তু ওর ব্যবহারটা কেমন যেন পাল্টাটে থাকে একদিন বিকালের কথা;~
!
ও আমাকে শক্ত করে জরিয়ে কাদছে আর বলছে আমাকে খুব বেশি ভালবাসিস তাই না? আমি;~হুম.
মিথি;~আমাকে হারিয়ে যেতে দিবি না তো?
আমি;~একদম না.
মিথি;~তুই পারবি নারে! আমি;~কেন পারবনা,তোর জন্য সব করতে পারবো..
মিথি;~নারে তুই পারবিনা,আমাকে ভুলে যা (অবিরাম ধারার কেদে চলছে আর আবল তাবল বলছে)তারপর বলল আজ ডাক্তার এর কাছে গিয়েছিলাম এটা বলেয় চলে গেল.. !
আমিও দ্রুত ওর বাবার কাছে গেলাম ঘটনাটা জানার জন্য..কিন্তু ওর বাবা যা বলল,তাতে আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না..ওর নাকি ব্রেন ক্যান্সার ডাক্তার তাই বলেছে,এটা শোনার সাথে সাথে আমার মাথাটা ঘুরিয়ে উঠল,পায়ের নিচের মাটি যেন সরে যেত লাগল আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম. !
কিন্তু এতে আমার ভালোবাসা বিন্দু মাএ ও কমেনি বরং বেড়ে গেছে ওকে পাগলের মতো ভালবাসতে লাগলাম।তখন ও কেমন যেন বাচ্চাদের মতো আচরণ করতো রোজ কলেজ থেকে আসার সময় চকলেট,আইসক্রিম আনার বায়না ধরতো আমিও নিয়ে আসতাম ও খুব খুশী হতো.আমি তাকিয়ে দেখতাম আর হাসতাম আমি বলতাম আমাকে দিবি না ও বলতো তোকে পরে দিব.তারপর চকলেট মাখা মুখ নিয়ে আমার মুখে চুমু দিয়ে ভরিয়ে দিত.একদিন রাতে ওর অসুখ বেশি হলো,
!
আমি এখনও তোদের বাড়িতে যাই,কেন যাই জানিস? তোর বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে তোকে খুজে পাই,খুজে পাই সেই হারানো ভালবাসাকে..একদিন তোর বোন আমাকে তার স্কুলে নিয়ে গিয়ে বলেছিল?এটা আমার ভাইয়া হয়..আর তোর বোনের ফ্রেন্ডসরা বলেছিল এই পাগলা তোর ভাইয়া..তারপর ও খুব কষ্ট পেয়েছিল তাই আর ওর সাথে স্কুলে যাইনি..তবে লুকে লুকে গিয়েছে তোর বোনের স্কুলে..কারন আমিযে তোর বোনের দিকে তাকিয়ে তোকে দেখতে পাই..একদিন স্কুল ছুটি হলে,বাচ্চা ছেলে মেয়েরা আমার গায়ে ইট,পাথর দিয়ে ঢিল ছুটেছিল এতে আমার মাথা ফেটে যায়.তাই ভয়ে আর তোর বোনের স্কুলে যাইনা.তোর কি মনে আসে সেই পার্কের কথা,যেখানে আমারা রোজ দেখা করতাম?সেই সীটে বুঝলি এখন অন্য প্রেমিক-প্রেমিকা বসে..তবে পার্থক্য এতটাই তারা দামি দামি খাবার খায়..আর আমরা ২টাকার কালাই,বাদাম খেতাম..সে জন্যই বুঝি তুই আমাকে ফাকি দিছিছ তাইনা? তবে একটা সুখবর আছেরে..আমার একটা কিডনীতো তোকে আগেই দিয়েছিলাম..আর একটা ভালো কিডনী ছিলো সেটাও একজনকে দান করছি..আরো খুশির খবর আছে জানিস?আমার মাথা ফেটে যাওয়ার পর,সেলাই না করার জন্য মগজ পোচে যাচ্ছে..আর আমার ফুসফুসটাও এখন পোকার দখলে..আমি খুব শ্রীঘই তোর কাছে যাবো..এবার ফাকি দিবিনা তো? [সমাপ্ত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন