সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

ভালোবাসার ঋন

তখন সময় বেলা ৯ টা সবে মাত্র ভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছে স্যামি। চশমায় মোটা ফ্রেমে বন্দি সামিউর। বন্ধুরা ভালোবেসে নাম দিয়েছে স্যামি। তার অনেক বন্ধু, টাকা পয়সারও কোনো কমতি নেয়। সব কিছুই আছে তার টাকা, ৪ তালা ফ্লট বাড়ি, বাবা-মা,ভাই-বোন & আত্মীয়স্বজন। কিন্তু তবুও তার দিন শেষে রাতে সবার চোখের আরাল করে বুক চাপা কষ্টে কান্না করে সে। কেন এমন করে স্যামি? কিসের এতো কষ্ট তার? কি হয়েছিল সেদিন? কেনই বা প্রেম,ভালোবাসা & ছ্যাকা কে ঘৃনা করে? আছে অনেক কিছু রই উত্তর আছে এতে। আজকে আপনাদের বলব স্যামি নামে ছেলেটি জীবনের প্রেম কাহানী।
সাল: ২০১২, মাস:জানুয়ারি সময় : বর্ষাকাল।
আর যাই হোক সে তখন ক্লাস ৮ম শ্রেণীতে পড়ে। চোখে চশমা, ঘাড়ে স্কুল ব্যগ & সাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন স্কুল যায় সে। প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে সেদিন অজানা এক কারনে রুয়েটের ভিতর দিয়ে স্কুল যাচ্ছিল সে। রাস্তায় কিছু একই স্কুলের ছাত্রীরাও যাচ্ছিল। স্কুল টা ছিল রুয়েটের ভিতরেই অগ্রণী স্কুল। যাই হোক রাস্তায় এক মেয়ের ছাতা উল্টিয়ে যায়। সেই মেয়ের বৃষ্টি মাখা মুখ দেখে কল্পনায় চলে যায় স্যামি। হঠাত করেই সে নিজেকে আবিষ্কার করে ড্রেনে। সে মেয়েটিকে দেখে এতোটাই মুগ্ধ ছিল যে কখন যে সাইকেল নিয়ে ড্রেনে পরে গেছে সেদিকে খেয়ালই নাই তার। যখন জ্ঞ্যান ফিরল দেখল মেয়ে টি তার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসছে। সে বেশি দেরী না করে সামনে এগুতে থাকে কিন্তু তার জামা কাপড়ের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেয়েছিল। তাই সেদিন সে স্কুলে যেতে পারল না। বাড়িতে গিয়ে নিজেই নিজের কাপড় কাচ্ছে আর ভাবছে এটা কি হল তার সাথে। মেয়েটির জন্য সে আজকে স্কুলে যেতে পারল না। কে সে মেয়ে? কেন তাকে এতো মায়াবী মনে হল? তাহলে কি সে প্রেমে পড়ল না তো? পর দিন আবার একই পথ দিয়ে এবার হেটে যাচ্ছিল স্যামি। কিন্তু মেয়েটিকে এবার দেখতে পেল না সে। তাই মন খারাপ করে জড়ে জড়ে হাটা শুরু করল সে। স্কুল গেট সিয়ে ক্লাস দরজা তে যেতে এক ধাক্কায় পরে গেল স্যামি। আসলে ধাক্কা খেয়েছিল সেই মেয়েটির সাথেই। মেয়েটি অন্য পাশে স্যামি অন্য পাশে। পরে জানত পারল মেয়েটি তারই স্কুলে পড়ে এবং একই ক্লাসের। মেয়েটির নাম রিয়া। এর পর থেকে তাদের প্রতি নিয়ত একটু একটু করে কথা হতো। তাদের বন্ধুত্ব ভালোই চলছিল। কিন্তু স্যামি যে তার প্রেমে হাবু ডুবু খাচ্ছে। মেয়েটি হয়ত টেরও পাই নি। স্যামি ভেবেছিল তাকে তার মনের না বলা কথা গুলো বলবে কিন্তু তাকে হারানোর ভয়ে কিছু বলতে পারে নাই সে। পরের বছরে মেয়েটি কে আর ক্লাস মেট হিসেবে পায় নি। হয়ত মেয়েটি অন্য স্কুলে চলে গেছে। এগুলা এগুলা ভেবে তার যে এস এসি পরিক্ষা খুব খারাপ হয়েছিল। এটাই ছিল তার প্রথম ভালো বাসা।তার পর থেকে বাকি ২ টা বছর সে কোনো মেয়ের দিকে মুখ তুলেও তাকায় নি ভালোবাসার জন্য। হঠাত এক সময় সে অগ্রণী কলেজেয় চান্স পায় তাই সে সেখানেই ভর্তি হই। কিন্তু কলেজে সে রেগুলার ছিল না হাতে গনা ২-৩ জন বন্ধু ছিল তার। কলেজ থেকে প্রাইভেট প্রাইভেট থেকে কলেজ যাওয়া আসা করত সে। বন্ধুদের মাঝে তেমন আড্ডা দিত না সে। কলেজ গেট দিয়ে আসার সময় তার বোরখা পড়া মেয়েদের কে সে খুব শ্রদ্ধা করত। এবার সে ভাবল বোরখা পড়া মেয়েরাই বুঝি অনেক ভালো সুন্দর হয়। তাই সে তাদের বন্ধু হওয়ার ইচ্ছা করল। কিন্তু কেউ তার প্রতি পাত্তা দিত না। তাই সে ঠিক করে ফেবুতে বন্ধু বানাবে অনেক অনেক। তাই সে বোরখা পড়া & কিছু ছবি না দেওয়া মেয়ে কে রিকুয়েস্ট দিতে থাকল। হাতে গোনা ১০-১২ জনের মতো এক্সেপ্টও করল তার রিকুয়েস্ট। তাদের সাথে কথা হত তার প্রতিদিন মজার বিষয় হল তারা সকলেই রাজশাহীর & বাসা শহরেই তাই সে সবার সাথে দেখা করার জন্য। কিন্তু সে বিবেক হারিয়ে ফেলছিল। শয়তান প্রতিনিয়ত তাকে কুমন্ত্রণা দিত। সে দিন দিন কেমন জানি মেয়ে আকর্ষিত বেশি হতে লাগল। ভালোবাসার প্রস্তাব দিতে লাগল তাদের। কেউ এক্সেপ্ট করে নাই। তাই ভাবল তাদের সাথে দেখা করার পরই প্রপোজ করবে। একে এক নুসরাত,মৌ,নদী। দেখাও হলো ২-৩ জনের সাথে কিন্তু তারা প্রত্যেকেই বিবাহিত ছিল। তাই সে মন মরা করে ফিরত বাসায়।? সে কলেজ জীবন টা পার করতে থাকল। সে আর কোনো ভালোবাসায় জড়াই তে চাই না এখন সে একা। কোনো ভালোবাসা,প্রেম & ছ্যাকার কথা শুনতে পারে না সে। হয়ত এক দিন তার বিয়ে হবে। তার বউকেই বুক ভরা ভালোবাসা দিবে তার সাথেই প্রেম করবে। ছ্যাকা, রাগ & অভিমান বউয়ের কাছ থেকেই পাবে। যাই হোক আল্লাহ হাফেজ বন্ধু রা চির বিদায় নিলাম গল্প লিখা লিখির বালক ছদ্মবেশী লেখক পদ থেকে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন