স্পর্শী খাটের উপরে চুপচাপ বসে আছে | দুচোখ বেয়ে ফোটায় ফোটায় জল গরিয়ে পরছে |
রাগে অভিমানে ছোট্র গালদুটো লাল হয়ে গেছে |
মাথার উপরে ফ্যান যথেষ্ট স্পিডে ঘোরা সত্বেও মেয়েটার শরীর বেয়ে ঘাম ঝড়ছে |
কয়েকফোটা ঘাম নাকের ডগায় জমাট বেঁধে মুক্তোর মতো ঝিকমিক করছে |
মেয়েটা মায়ের মতই রাগী |
অদ্ভুত রকমের রাগ আর অভিমানের পাল্লাটা এতোটাই ভারী যে,
নিজে থেকে শান্ত না হলে কেউ তাকে শান্ত করতে পারবে না |
আট বছর আগের কথা |
কোন এক বাসস্টপে আমার আর ঐশির পরিচয় হয় |
বাসস্টপে কড়া রোদের মধ্যে একা একা দাড়িয়ে ছিলাম | আনমনে ভাবছিলাম কোন এক অজনা কল্প | কল্পনায় এতো বেশি বিভর ছিলাম যে কারুর উপস্থিতি টেরই পেলাম না |
ঠিক সেই সময় মাথার উপরে একটা ছায়া এসে দাড়িয়ে যায় |
ছায়াটা ছাতার | ঐশি পাশে এসে আমার মাথার উপরে ছাতাটা ভাগাভাগি করে দাঁড়ায় |
-কে আপনি?
-ঐশি |
-এখানে এভাবে পাশে এসে দাড়িয়ে গেলেন?
-কেন খারাপ লাগছে | অকে সরে যাচ্ছি |
একটু দুরে গিয়ে |
-এখন ঠিক আছে?
-নাহ | কিছুই ঠিক নেই | আগেই ঠিক ছিলো |
আবার কাছে এসে ছাতাটা মাথায় দিয়ে |
-এবার ঠিক আছে?
-হুম |
-নামটা জানতে পারি?
-ইমতিয়াজ
-এতোবড় নাম ধরে ডাকতে পারব না | তার চেয়ে আমি আপনাকে ইমতি বলে ডাকি |
-হুম |
-ওয়াও ইমতি | কি দারুন একটা নাম দিয়ে দিলাম |
আচ্ছা এখন থেকে কেউ আপনাকে নাম জিঙ্গেস করলে বলবেন আপনার নাম ইমতি |
-ঠিক আছে |
-আমি জানতাম আপনি আমার কথা শুনবেন |
-জ্বি, মানে ঠিক বুজলাম না |
-আপনাকে বুজতে কে বলেছে?
-আপনি একটু আগেই যে বললেন?
-হুম বলছি | তো
-বুজতে পারিনি তাই বলছিলাম যদি বুজিয়ে দিতেন?
-আপনার কি মনে আমি আপনার শিক্ষক?
-না | তা হবে কেন?
-তাহলে বুজিয়ে দিতে বলছেন কেন?
-দুঃখিত |
-দুঃখিত মানে কি? আপনি আমার কথা বুজতে পারেন নি সেটা আপনার ব্যার্থতা |
-জ্বি | এখন বুজতে পেরেছি |
-কি বুজলেন?
-অন্য একদিন না হয় বলবো |
- আচ্ছা ঠিক আছে |
-হুম
- ফোন নাম্বারটা দেন?
-কেন?
-আমি চাইছি তাই
বুজতে পারলাম বেশি প্রশ্ন করলে উল্টা পাল্টা কথা বলে মাথাটা খারাপ করে দিবে |
তাই নাম্বারটা দিয়ে দিলাম |
একটু পরে বাস আসতেই বাসে উঠে পরলাম |
কিন্তু ঐশি বাসে উঠলো না |
-বাসে উঠবেন না?
-নাহ | আপনি যান | আমি পরের বাস ধরে চলে যাব |
-ঠিক আছে বায় |
বাস ছেড়ে দিলো |
ঘন্টা খানিক পরে বাসায় এসে পৌছাইলাম |
হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘুমতে যাব ঠিক সেই সময় ফোনটা ক্রিং ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠলো |
ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম অপরিচিত একটা নাম্বার তাই রিসিভ না করে রেখে দিলাম |
কিন্তু নাহ ফোনটা থামবার জো নেই | বারবার বেজে উঠছে | অবশেষে অনিচ্ছা সত্বেও ফোনটা কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে কর্কশ একটা মেয়ে কন্ঠ ভেসে আসলো,
-ফোন রিসিভ করতে এতোক্ষন লাগে?
-একটু ব্যাস্ত ছিলাম |
এবার একটু নরম সুরে,
-চিনতে পেরেছেন?
-জ্বি নাহ | কে বলছেন?
-ওমা সেকি আপনি এতো মনভুলো | এই মন নিয়ে অফিস করেন কি ভাবে?
-মানে?
-থাক মানে মানে করতে হবে না | আমি ঐশি ? বাসস্টপে একটা মেয়ে,ছাতা মনে পরছে |
-ও হ্যা | ঐশি | এবার চিনতে পেরেছি |
আপনাকে কি আর ভোলা যায় | যে আপনার সাথে পাঁচ মিনিট কথা বলবে তার পক্ষে আপনাকে ভোলা সম্ভব নয় | সেখানে কিনা আমি ত্রিশ মিনিটের মতো কথা বলেছি |
-আপনিতো বেশ কথা বলতে পারেন ?
-হুম তা পারি বৈকি
-তাহলে বাসস্টপে এতো কম কথা বললেন কেন?
-কথা বলার সুযোগ দিলেন কোথায়
-মানে | কি বলতে চাচ্ছেন আমি বেশি কথা বলি ?
-আমার থেকে একটু বেশিই |
-আপনার সাথে কথা বলাই আমার ঘাট হয়েছে | আর কথা বলব না রাখছি |
বলেই ফোনটা কেটে দিলো |
এরপর থেকে আমাদের নিয়মিত কথা হতে থাকে | প্রথম প্রথম আমার বিরক্ত লাগতো | ঐশি খুব বেশি কথা বলতো আর মিছে মিছে রাগ করতো |
পরে অবশ্য ঐশির রাগ আর বেশি কথা বলাটাই আমার ভাল লাগতে শুরে করে | ওর এই ব্যাপারগুলিই ওকে অন্য সব মেয়ে থেকে ওকে পৃথক করতে থাকে |
অন্য সবার থেকে আলাদা লাগে |
একসময় ওর জন্য বুকের মাঝে একটা খাদের সৃষ্টি হয় | সেখানটা ভালবাসা নামক অদৃশ্য মায়া দিয়ে পূর্ন |
আমরা দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই |
বিয়ের দুবছর পরে স্পর্শী আমাদের ঘরেকে আলোকিতো করে |
সেই ছোট্র স্পর্শীটা আজ ছয় বছরের একটা জীবন্ত পুতুল | আজ ও বায়না ধরেছে ওর মায়ের সাথে ঘুরতে বেরুবে |
কিন্তু ওর মা তো অফিসে |
মেয়েকে বুজানোর অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু কাজের কাজ কিছূই হলো না |
তাই বাধ্য হয়ে ঐশিকে ফোন করলাম,
-হ্যালো |
-তোমার রাজকন্যা রাগ করছে? সেকি কান্না |
-কেন কি হয়েছে আমার রাজকন্যার?
-বায়না ধরেছে তোমার সাথে ঘুরতে বেরুবে |
-ঠিক আছে আসছি |
বলেই ফোনটা কেটে দিলো...
রাগে অভিমানে ছোট্র গালদুটো লাল হয়ে গেছে |
মাথার উপরে ফ্যান যথেষ্ট স্পিডে ঘোরা সত্বেও মেয়েটার শরীর বেয়ে ঘাম ঝড়ছে |
কয়েকফোটা ঘাম নাকের ডগায় জমাট বেঁধে মুক্তোর মতো ঝিকমিক করছে |
মেয়েটা মায়ের মতই রাগী |
অদ্ভুত রকমের রাগ আর অভিমানের পাল্লাটা এতোটাই ভারী যে,
নিজে থেকে শান্ত না হলে কেউ তাকে শান্ত করতে পারবে না |
আট বছর আগের কথা |
কোন এক বাসস্টপে আমার আর ঐশির পরিচয় হয় |
বাসস্টপে কড়া রোদের মধ্যে একা একা দাড়িয়ে ছিলাম | আনমনে ভাবছিলাম কোন এক অজনা কল্প | কল্পনায় এতো বেশি বিভর ছিলাম যে কারুর উপস্থিতি টেরই পেলাম না |
ঠিক সেই সময় মাথার উপরে একটা ছায়া এসে দাড়িয়ে যায় |
ছায়াটা ছাতার | ঐশি পাশে এসে আমার মাথার উপরে ছাতাটা ভাগাভাগি করে দাঁড়ায় |
-কে আপনি?
-ঐশি |
-এখানে এভাবে পাশে এসে দাড়িয়ে গেলেন?
-কেন খারাপ লাগছে | অকে সরে যাচ্ছি |
একটু দুরে গিয়ে |
-এখন ঠিক আছে?
-নাহ | কিছুই ঠিক নেই | আগেই ঠিক ছিলো |
আবার কাছে এসে ছাতাটা মাথায় দিয়ে |
-এবার ঠিক আছে?
-হুম |
-নামটা জানতে পারি?
-ইমতিয়াজ
-এতোবড় নাম ধরে ডাকতে পারব না | তার চেয়ে আমি আপনাকে ইমতি বলে ডাকি |
-হুম |
-ওয়াও ইমতি | কি দারুন একটা নাম দিয়ে দিলাম |
আচ্ছা এখন থেকে কেউ আপনাকে নাম জিঙ্গেস করলে বলবেন আপনার নাম ইমতি |
-ঠিক আছে |
-আমি জানতাম আপনি আমার কথা শুনবেন |
-জ্বি, মানে ঠিক বুজলাম না |
-আপনাকে বুজতে কে বলেছে?
-আপনি একটু আগেই যে বললেন?
-হুম বলছি | তো
-বুজতে পারিনি তাই বলছিলাম যদি বুজিয়ে দিতেন?
-আপনার কি মনে আমি আপনার শিক্ষক?
-না | তা হবে কেন?
-তাহলে বুজিয়ে দিতে বলছেন কেন?
-দুঃখিত |
-দুঃখিত মানে কি? আপনি আমার কথা বুজতে পারেন নি সেটা আপনার ব্যার্থতা |
-জ্বি | এখন বুজতে পেরেছি |
-কি বুজলেন?
-অন্য একদিন না হয় বলবো |
- আচ্ছা ঠিক আছে |
-হুম
- ফোন নাম্বারটা দেন?
-কেন?
-আমি চাইছি তাই
বুজতে পারলাম বেশি প্রশ্ন করলে উল্টা পাল্টা কথা বলে মাথাটা খারাপ করে দিবে |
তাই নাম্বারটা দিয়ে দিলাম |
একটু পরে বাস আসতেই বাসে উঠে পরলাম |
কিন্তু ঐশি বাসে উঠলো না |
-বাসে উঠবেন না?
-নাহ | আপনি যান | আমি পরের বাস ধরে চলে যাব |
-ঠিক আছে বায় |
বাস ছেড়ে দিলো |
ঘন্টা খানিক পরে বাসায় এসে পৌছাইলাম |
হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘুমতে যাব ঠিক সেই সময় ফোনটা ক্রিং ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠলো |
ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম অপরিচিত একটা নাম্বার তাই রিসিভ না করে রেখে দিলাম |
কিন্তু নাহ ফোনটা থামবার জো নেই | বারবার বেজে উঠছে | অবশেষে অনিচ্ছা সত্বেও ফোনটা কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে কর্কশ একটা মেয়ে কন্ঠ ভেসে আসলো,
-ফোন রিসিভ করতে এতোক্ষন লাগে?
-একটু ব্যাস্ত ছিলাম |
এবার একটু নরম সুরে,
-চিনতে পেরেছেন?
-জ্বি নাহ | কে বলছেন?
-ওমা সেকি আপনি এতো মনভুলো | এই মন নিয়ে অফিস করেন কি ভাবে?
-মানে?
-থাক মানে মানে করতে হবে না | আমি ঐশি ? বাসস্টপে একটা মেয়ে,ছাতা মনে পরছে |
-ও হ্যা | ঐশি | এবার চিনতে পেরেছি |
আপনাকে কি আর ভোলা যায় | যে আপনার সাথে পাঁচ মিনিট কথা বলবে তার পক্ষে আপনাকে ভোলা সম্ভব নয় | সেখানে কিনা আমি ত্রিশ মিনিটের মতো কথা বলেছি |
-আপনিতো বেশ কথা বলতে পারেন ?
-হুম তা পারি বৈকি
-তাহলে বাসস্টপে এতো কম কথা বললেন কেন?
-কথা বলার সুযোগ দিলেন কোথায়
-মানে | কি বলতে চাচ্ছেন আমি বেশি কথা বলি ?
-আমার থেকে একটু বেশিই |
-আপনার সাথে কথা বলাই আমার ঘাট হয়েছে | আর কথা বলব না রাখছি |
বলেই ফোনটা কেটে দিলো |
এরপর থেকে আমাদের নিয়মিত কথা হতে থাকে | প্রথম প্রথম আমার বিরক্ত লাগতো | ঐশি খুব বেশি কথা বলতো আর মিছে মিছে রাগ করতো |
পরে অবশ্য ঐশির রাগ আর বেশি কথা বলাটাই আমার ভাল লাগতে শুরে করে | ওর এই ব্যাপারগুলিই ওকে অন্য সব মেয়ে থেকে ওকে পৃথক করতে থাকে |
অন্য সবার থেকে আলাদা লাগে |
একসময় ওর জন্য বুকের মাঝে একটা খাদের সৃষ্টি হয় | সেখানটা ভালবাসা নামক অদৃশ্য মায়া দিয়ে পূর্ন |
আমরা দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই |
বিয়ের দুবছর পরে স্পর্শী আমাদের ঘরেকে আলোকিতো করে |
সেই ছোট্র স্পর্শীটা আজ ছয় বছরের একটা জীবন্ত পুতুল | আজ ও বায়না ধরেছে ওর মায়ের সাথে ঘুরতে বেরুবে |
কিন্তু ওর মা তো অফিসে |
মেয়েকে বুজানোর অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু কাজের কাজ কিছূই হলো না |
তাই বাধ্য হয়ে ঐশিকে ফোন করলাম,
-হ্যালো |
-তোমার রাজকন্যা রাগ করছে? সেকি কান্না |
-কেন কি হয়েছে আমার রাজকন্যার?
-বায়না ধরেছে তোমার সাথে ঘুরতে বেরুবে |
-ঠিক আছে আসছি |
বলেই ফোনটা কেটে দিলো...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন