সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭

দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা

তাহা -রাহাত আমি কিন্তু তোকে কিছু জিজ্ঞাসা
করেছি।
রাহাত -হুম শুনেছি তো।
তাহা -তাহলে গরুর মত এখনো আইসক্রিম
খাচছিস কেন?
রাহাত -তুই বল না আমি শুনছি।
তাহা -বলব মানে তাহলে এতক্ষন আমি কার
সাথে কথা বললাম।
রাহাত -কেন আশেপাশে আমি ছাড়া আর কেউ
নেই নাকি?
তাহা -কি?কি বললি তুই?
রাহাত -কিছু না তো বল কি বলছিলি যেন?
তাহা-তোর মত একটা গাধার সাথে আমার
কথা বলাই ভুল হয়েছে তুই থাক তোর আইসক্রিম নিয়ে।
রাহাত-আরে কোথায় যাচ্ছিস শোননা, আইসক্রিম টা নে
আইসক্রিম খেয়ে মাথা ঠান্ডা কর।
তাহা -রাহাত একেবারে কথা ঘুরানোর চেষ্টা
করবি না।
রাহাত -আজিব আমি আবার কি করলাম।
তাহা -মেয়েটা কে ছিল?
রাহাত -কোন মেয়েটা?
তাহা -দেখ রাহাত একেবারে ন্যাকামি করবি
না।যার সাথে কাল রিক্সায় সারাদিন
ঘুরেছিস।
রাহাত -সারাদিন আর কোথায় ঘুরতে পারলাম
বল আম্মু তো বিকেল হতেই বাসায়
ডেকে নিল।
তাহা -তুই এত বেহায়া কেন বল তো।
রাহাত -আজিব আমি কি করলাম।বাদ দে তুই
যখন দেখেছিস,এবার বল তো আমাদের
দুজনকে কেমন লাগছিল।
তাহা -ভূতের পাশে পেত্নির মত লাগছিল।
রাহাত -ওয়াও কি আইডিয়া তোর একেবারে
মিলে গেল।চল তোকে আইসক্রিম
খাওয়াব।
তাহা-তোর কি লজ্জা বলতে কিছুই নাই?
রাহাত -আছে তো।এইতো আম্মু যখন আমায় বলে
এত বড় হয়েছিস এখন একটা বউ এনে
দে।আমি খুব লজ্জা পাই হি হি হি।
তাহা -উফফ,তুই একটা পেইন।
রাহাত -সত্যি দোস্ত,তাহলে আমি ধন্য।
তাহা -উফফ,আমি আর নিতে পারছি না।এবার
সত্যিই পাগল হয়ে যাব।
রাহাত -এই তো ভুল বললি,তুই তো পাগলী হবি
পাগল না।
তাহা -রাহাত তুই চুপ করবি?
রাহাত -আমি তো চুপই ছিলাম তুই তো কথা
বলতে বললি।
তাহা -আমার ভুল হয়েছে মাফ করে দে এবার
অন্তত চুপ হয়ে থাক।
রাহাত -আচ্ছা যা চুপ হয়ে গেলাম এবার
চলতো আমায় ফুসকা খাওয়াবি।
তাহা -হে আইছে,তুই কে যে তোকে আমি ফুসকা
খাওয়াব।যা না ঐ পেত্নির কাছে ওকে
খাওয়াতে বল।
রাহাত -দোস্ত তুই কি তোর ভাবীকে হিংসে
করছিস?
তাহা -কি? কি বললি তুই আবার বল?তুই
আসলেই একটা ছ্যাচড়া।
রাহাত -থ্যাংকু।
তাহা -কেন?
রাহাত -এত সুন্দর একটা উপাধি দেওয়ার
জন্য।
তাহা -তুই আসলেই বেহায়া।
রাহাত -দোস্ত আর বলিস না,আমি তো খুশিতেই
পাগলামো হয়ে যাব।
তাহা -রাহাত আমি কিন্তু এবার সত্যিই রেগে
যাচ্ছি।মানুষের ধৈর্য বলে একটা
ব্যাপার আছে কিন্তু।
রাহাত -দোস্ত তুই রেগে গেলে কিন্তু দারুন
লাগে।
তাহা -উফফ,তুই একটা আস্ত গাধা।থাক
এখানে পড়ে।(বলেই তাহা উঠে গেল)
আমি মুচকি হাসছি,পাগলীটাকে আজকে
অনেকটাই রাগিয়ে দিয়েছি।সবথেকে
মজার ব্যাপার হল এই পাগলীটাকে
আমি অনেক ভালবাসি।ও আমাকে
ভালবাসে কিন্তু এখনো কেউ কাউকে
বলা হয় নি।তবুও বুঝতে পারি দুজনেই।
ইচ্ছে করেই গতদিন ফফাতো বোন
মিমিকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম
ওদের গলিতে।ভেবেছিলাম সিনেমার
মত নায়িকা এসে কলার ধরে নামিয়ে
থাপ্পড় মেরে বলবে গাধা তোকে শুধুই
আমি ভালবাসি।কিন্তু সেইটা আর হল
কোথায় মহারানী তেমন কিছুই বলে
নি,এখনো বলল না।কিভাবে যে ওর মুখ
থেকে বের করব ভালবাসি রাহাত
একমাত্র আল্লাহই জানে।এত রাগিয়ে
দেই মেয়েটাকে তবুও আমার উপর কখনই
রাগ করে থাকতে পারে না।কেমন করে
যেন এই মেয়েটা আমাকে বুঝে যায়।ওর
সাথে বন্ধুতের এই তিনবছর।মাঝে
মাঝে খুব রেগে গেলে আমাকে ছ্যাচড়া
বলে ডাকে।যদিও এই কথাটির অর্থ
আমি এখনও অনুধাবন করতে পারি
নি,তবুও কেন জানি ভাল লাগে ওর মুখ
থেকে শুনতে।এমনভাবে কখনও ওকে চলে
যেতে দিই না।জোর করে ফুসকা
খাওয়াব রিক্সায় ঘুরব অতপর সুন্দর
মুখখানা পথের ধুলায় কালচে হয়ে
আসলে ছুটি।অবশ্য এটা নিয়ে আমাকে
অনেক বকুনি দেয় তবু জোর করে বলে না
যে আজকে যাবনা।এজন্যই পাগলীটাকে
এত ভাল লাগে।ওকে রাগিয়ে দিলে ওর
মুখটা লালচে হয়ে আসে এক অপরুপ
সৌন্দর্য ফুঁটে উঠে তখন।
------------------------------
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ফোন
দিয়েছি তাহাকে।দুইবার দেওয়ার
পর তৃতীয়বার রিসিভ হল...
-কি রে রেগে আছিস নাকি?(আমি)
-আজিব আমি কেন রেগে থাকব।তাছাড়া
আমি তো শুধুই আমার আপনজনের উপর
রাগ করি।
রাহাত -তার মানে আমি তোর কেউ নই?
তাহা -নাহ।
রাহাত -তুই এই কথা বলতে পারলি।আমি কিন্তু
এখন ঐ পেত্নির কাছে চলে যাব।
তাহা -যা না কে মানা করেছে।
রাহাত -সত্যিই যাব কিন্তু।
তাহা -হুম যা তো এত বলার কি আছে।
রাহাত -আমি কিন্তু কেঁদে দিব।
তাহা -আজিব কেন?
রাহাত -তুই আমাকে তাড়িয়ে দিলি কেন?
তাহা -কখন তোকে তাড়িয়ে দিলাম।
রাহাত -একটু আগেই তো বললি যা না কে মানা
করেছে।
তাহা -তুই তো যেতে চাইলি।
রাহাত -আমি যেতে চাইলাম আর তুই যেতে
দিবি।আমি এতটাই পর হয়ে গেছি
তোর।
তাহা -দেখ রাহাত আমি কিন্তু সে কথা বলিনি।
রাহাত -জানি জানি তুই কি বলতে চাইছিস।
তুই ভাল থাক আমি আর তোকে ফোন করছি
না।(বলেই লাইনটা কেটে দিলাম)
(এতটা কেয়ারলেস হয় কি করে ও।ও কি
বুঝে না আমি ওকে ছাড়া চলতে পারব
না।ও কি বুঝতে পারি নি ওটা শুধু ওকে
রাগানোর জন্য আর ওর মুখ থেকে
ভালবাসি কথাটি শোনার জন্য করেছি
মাত্র।এজন্য সবসময়ই বলদে হবে কি।
তাহা একের পর এক কল করে যাচ্ছে।
রাগে ফোনটা তুলতে চাইছি না।
অবশেষে বিরক্ত হয়ে ফোনটা তুললাম।
-এতবার ফোন দিচ্ছিস কেন?আমি তোর
কেউ না।(আমি)
তাহা -একটা থাপ্পড় দিব তোকে এত রাগ
আসে কোথা থেকে।আমি তো তোর মত
রাগ করি না তাহলে তুই এত রাগিস
কেন?
রাহাত -মানে?
তাহা -মানে তুই কি ভেবছিলি বুদ্ধু একটা
মেয়েকে পাশে বসিয়ে রিক্সায় চড়লে
আমি তোকে ভুল বুঝব।
রাহাত -তাহলে.....
তাহা -তাহলে আমি জানি রে বুদ্ধু তুই
আমাকে রাগানোর জন্য এইটা করেছিস।
রাহাত -উহু উহু উহু এবার ও ধরে ফেললি।
তাহা -হ্যা তুই তো একটা গাধা তাই বুঝতে
পারিস না।
রাহাত -আচ্ছা দোস্ত তুই আমাকে এত বুঝিস
কেন বল তো।
তাহা -কারন তুই একটা বুদ্ধু তাই।এবার বল
এতকিছু করার পিছনে যে কারনটা আছে
সেইটা কি?
রাহাত -কারন মানে?
তাহা -দেখ রাহাত এত ন্যাকামি করবি না তো
সোজাসুজি বলবি না ফোন রাখব।
রাহাত -দোস্ত বিশ্বাস কর কোন কারন নেই।
(ইস ধরা খেয়ে গেলাম যে)
তাহা -তাহলে ফোন রাখছি।
রাহাত -এই শোন না।
তাহা -না শুনব না আগে আমার প্রশ্নের
উত্তর দে।
রাহাত -বললে যদি তুই আমাকে ছেড়ে চলে
যাস।
তাহা -যাবনা তুই বল তো।
রাহাত -কথা দে?
তাহা -হুম দিলাম।
রাহাত -দোস্ত আমি তোকে কিভাবে যেন
ভালবেসে ফেলেছি রে।তোকে ছাড়া এক
মূহুর্তও আমার থাকতে ইচ্ছে হয় না।
তোকে বলি বলি করে বলতে পারি না।
জানি তুই ও আমাকে ভালবাসিস তাই
বলে ফেললাম...আমি তোকে ভালবাসি
রে দোস্ত।(চোখ বন্ধ করে বলে
দিলাম,অপেক্ষা শুধু একটা থাপ্পড়ের
না তেমন কিছু হল না)
তাহা -তুই আসলেই একটা ছ্যাচড়া।
রাহাত -কেন?
তাহা -বুদ্ধু জি এফ কে প্রপোজ করার সময়
কেউ দোস্ত ডাকে।ভালভাবে বল।
রাহাত -নাহ আর পারব না।আমার লজ্জা করে।
তাহা -কেন তুই কি মেয়ে মানুষ নাকি?
রাহাত -মোটেও না।
তাহা -তাহলে বল।
রাহাত -আমি তোমাকে ভালবাসি বালিকা,তুমি
কি আমাকে একটু ভালবাসবে।
তাহা -উহু একটু ভালবাসব না।
রাহাত -কেন আমি কি খুব পঁচা(কেঁদে কেঁদে
বললাম)
তাহা -না আমি তোমাকে একটু ভালবাসব না
বুদ্ধু অনেক ভালবাসব বুঝলে।
রাহাত -হুম ভালবাসি।
তাহা-আমি ও।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন