-ক্লাস করে বাসায় ফিরছি।রাস্তায় অামার এক বন্ধুর সাথে দেখা।ওরে অামি মটু ডাকি।
: কিরে বাসায় যাবি না?? (অামি)
: তোর জন্য দাড়াই রইছি। (মটু)
: কেন??
: বাসায় চল।
: কেন বলবি তো???
: অামার বোনকে অাজ প্রথম দেখতে অাসবে।
: ও অাচ্ছা অাগে বলবিতো অাচ্ছা চল।
একটা রিক্সা নিয়ে সোজা ওর বাসায় গেলাম।
: অান্টি অাসসালামুঅালাইকমু ভাল অাছেন??
: হ্যা ভাল অাছি।তুমি ভাল অাছ???
: অাপু কেমন অাছো??
: ভাল তুমি ভাল অাছো?? পড়াশোনা কেমন চলছে??
: এইতো ভালই অাপু।
: অাচ্ছা বসো.....
.
ওদের বাসায় অাগেও কয়েকবার অাসছি।তাই অান্টি,অাপু খুব ভালভাবেই চিনে অামাকে।অবশ্য অাঙ্কেল তেমন চিনেন না।কারণ তিনি তো চাকরি করেন।অামি যখন যাই তখন বাসায় থাকেন না।
অার অাপুকে অাজ দেখতে অাসবে।
.
দুপুর দুইটা বাজে।3টার সময় বরপক্ষ অাসবে।
তাই বসে অাছি।অবশ্য নাস্তা খাইছি অাইসাই।
দেখলাম অামার বন্ধুটা ঘরের সব কিছু ঠিক করছে অামিও হেল্প করতে গেলাম।
ঘরের কাজ করতে করতেই সময় চলে গেল।
3টার কিছুক্ষণ পর বরপক্ষের লোকেরা অাসল।
সবাই কে সালাম দিয়ে।
সাধরে গ্রহণ করলাম।অাসার পরপরই শরবত দেওয়া হল।পরে সেমাই,নুডলস,পিঠ
া অারো অনেক কিছু দিয়ে অাপ্যায়ন করলাম।
সবাই পরিচিত হচ্ছিলাম।
কিছুক্ষণ হাসি /ঠাট্টাও হল।
ওরা চাইছিল অাগে কন্যা দেখতে পরে খাইতে।কিন্তু অামরা জোরাজোরি করলাম।
''কন্যা তো অাছেই।অাগে খেয়ে নিন।কন্যা তো দেখাবোই।''
ওরা রাজি হল।
অান্টি অার অাপু অনেক কিছু রান্না করছে।সব খাওয়াইলাম।খাওয়াইলাম না তো খাবার এনে দিলাম ওরা খাইল।
খাওয়ার পর্ব শেষ এখন কন্যা দেখার পালা।
.
অাপুকে নিয়ে অাসলাম।অাপু সালাম দিয়ে গোমটা টেনে বসল।
এবার শুরু হল.....
: তোমার নাম কি ??
: কি পর্যন্ত লেখাপড়া করছ??
: কি কি রান্না করতে পার??
: বাসায় কে কে অাছে??
: হেটে দেখাও তো।
: চুল টেনে দেখল।
: হাত গুলো পা গুলো হাতে নিয়ে দেখল।
: হাতের লেখা দেখাও তো।
এরকম অনেক উদ্ভটা প্রশ্ন করল।
অামি তো অবাক!!
এগুলার মানে কি?? ওরা কি মেয়ে দেখতে অাসছে নাকি মেয়ে কিনতে অাসছে?? এত দরদাম কেন???
যাক প্রায় 30 টা প্রশ্ন করল।অাপু সবগুলো প্রশ্নের উত্তর নিচু স্বরে দিল।
অাপুকে দেখা শেষ হলে অন্য রুমে নিয়ে গেলাম।
.
ওদের মুখ দেখে বুঝা গেল মেয়ে পছন্দ হয়নি।
না'ই হতে পারে।কারণ একবার দেখেই বিয়ে নাও হতে পারে।যদি পছন্দ মতো মেয়ে না হয় তাহলে বরপক্ষের রাজি না হওয়াই স্বাভাবিক।
অার অাপু দেখতে খুব সুন্দর না , কালো।কিন্তু চেহারাটা খুব'ই মায়াবী।
অবশেষে ঠিক করা হল 10লাখ টাকা লাগবে!!
অাঙ্কেলএর দিকে খেয়াল করে দেখলাম।মুখটা গম্ভির হয়ে অাছে।
সবচেয়ে খারাপ লাগছিল যখন একজন বলল ''এমন কাইল্যা ছেরি দশ লাখ টেকায় নিতাছি এটাই অনেক''
এরকম পরিস্থিতিতে কি অার শান্ত থাকা যায়??
.
: এই মিয়া কি বললেন?? (অামি)
: কি বললাম ঠিকই তো কইছি।
: মেয়ে কিনতে অাসছেন নাকি বিয়ে করিয়ে নিতে অাসছেন??? 10লাখ টাকা দিলাম।টাকাটা অাশা করি শিগ্রই শেষ হয়ে যাবে।তখন এই কাইল্যা ছেরিরে কি করবেন?? ফালাই দিবেন??? নাকি অাবার 10লাখ টাকা দিতে হবে??? টাকা দিলে মেয়ের দাম অাছে?? না দিলেই নাই??মেয়েরে কি খেলনা পাইছেন?? যখন এই কাইল্যা ছেরির সন্তান হবে তখন কি করবেন?? কাইল্যা ছেরির সন্তান কারণে অাদর কম করবেন?? নাকি অাঙ্কেলের তখন বৃদ্ধিকালে ঘর বাড়ি বিক্রি করে অাবার 10লাখ টাকা দিতে হবে???অাজ যদি অাপনার মেয়ে এমন হতো অাপনি কি এই কথা বলতে পারতেন??? যদি অন্য কেউ অাপনাকে এই কথা বলতো কি করতেন??কেমন লাগতো তখন?? মনমানসিকতা পাল্টান ।অাপনার ধুনিয়া পাল্টে যাবে।অার হ্যা অামরা মেয়ে অাপনাদের মত লোকের কাছে বিয়ে দিবনা।হ্যা অাপনারা 10লাখ টাকা চাইছেন ভাল কথা।অাঙ্কেল যা ভাল বুঝতেন করতেন।কিন্তু মেয়ের বাবার সামনে যারা এই কথা বলতে পারে!! তারা মেয়েটাকে কতটা অাপন করে রাখবে জানা হয়ে গেছে। অাপনারা অাসতে পারুন।
.
অার কিছু না বলে সবাই চলে গেল।
কাজটা কি ঠিক করলাম?? খুব ভয় পাচ্ছিলাম। না জানি অাঙ্কেল কি বলেন!! খুবই ভয় করছিল। এভাবে অামার বলা ঠিক হয়নি।কারণ অামি তো মেয়ের কোন অাত্বিয় না।কিন্তু যা বলছি সব মনের কথা গুলোই বলছি।এভাবে অপমান মেনে নিতে পারিনি।
.
: সাব্বাশ!! ধারুন বলছ বেটা।অামার মনের কথা গুলো বলে দিছ।কিন্তু অামি ওদের এগুলো বলতে পারতাম না কারণ অামি মেয়ের বাবা।ওরা মানুষ না পাষাণ তাহলে ওদের হাতে অামার মেয়েকে কিভাবে তুলে দেই বল!! অামার কাজটা তুমি করে দিছ।
:(___)
.
কিন্তু অাপুর জন্য খুব খারাপ লাগছিল।অাপুর রুমে যায়া দেখলাম।অাপু কাদছে।
অাড়ালে থেকে হয়তো সব কথা শুনছে।
খুব কষ্ট হচ্ছিল।
অাপু মুখ তুলে তাকাল।
: অাচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলি অামি কি দেখতে খুব খারাপ??
: না অাপু তুমি দেখতে মোটেও খারাপ নও।ওদের চোখটাই খারাপ অাপু।তুমি চিন্তা করনা এর চেয়ে ভাল ঘরে তোমার বিয়ে দিব।অারো ভাল ছেলের সাথে তোমার বিয়ে দিব।
.
.
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম। রাস্তায় হাটছি।
অাসার সময় বন্ধুর মুখটাও দেখে অাসিনি।হয়তো বাড়িতে সবাই মুখ গোমরা করে বসে অাছে।
: এই কই গেছিলি??
: অাসসালামুঅালাইকমু স্যার।স্যার কেমন অাছেন??
: ভাল নাইরে খুব চিন্তায় অাছি।
: কেন স্যার কি হয়েছে।
: তর ভাইয়ারে বিয়ে দিব।পাত্রি পাচ্ছিনা।
: স্যার
: কিরে মন খারাপ
: হ্যা
: কি হয়েছে??
সব খুলে বললাম।
স্যারের মুখটা মনেহয় হাসিতে ভরে গেল।
: সাইকেলের পিছে উঠ।
: কেন স্যার??
: সেই বাড়িতে নিয়া যা।
: কেন স্যার??
: তর ভাইয়ার জন্য মেয়ে পেয়ে গেছি।
: স্যার!!!!
: হ্যা চল।
: স্যার অামি সাইকেল চালাই? ?খুব খুশি লাগতেছে।
: না পিছনে বস।
: অাচ্ছা স্যার।
.
.
ওয়াও!!! খুব ভাল লাগছিল।অামি যদি একটু পরে অাসতাম তাহলে হয়তো স্যারের সাথে দেখা হতোনা এই মুহুর্ত টা দেখতে পারতাম না।অার সব কিভাবে মিলে গেল।ইনি অামার শ্রদ্ধেয় স্যার।প্রাইমারিতে এই স্যারের কাছেই পড়েছি। অামাদের বাড়ি অার স্যারের বাড়ি পাশাপাশি।স্যার খুব অাদর করেন অামায়। অামিও স্যারের অনেক কাজে হেল্প করি গাছ থেকে অাম পেরে দেই ,সুপারি পেরে দেই।বড়শি দিয়ে মাছ ধরে দেই।সব কাজেই সাহায্য করি। কিন্তু ভাইয়ার জন্য যে পাত্রি খুজছেন তা জানতাম না।
.
একটু পরেই ওদের বাড়ির সামনে অাইসা পড়লাম।
সোজা ঘরে।
: অাঙ্কেল অাপুর জন্য বর পেয়ে গেছি।
: মানে??
: অাগে তো পিছনের দড়জাটা খুলুন।
: অাচ্ছা।
দৌড়ে অাপুর রুমে চলে গেলাম।
: অাপু বলছিলাম না তোমার জন্য ভাল ছেলে এনে দিব??দাড়াও সব দেখতে পারবা।
অাঙ্কেল দড়জা খুলে দিলেন।
স্যার অাসলেন।
খাবার তো ছিলই।অাবার খাইলাম পেট গোপাল ভারের পেটের মত হয়া গেছে।
স্যার অার অাঙ্কেল সব অালাপ করছিলেন।
অার অামি অাপু অার অান্টিরে অালাদা করে বোঝাতে গেলাম।
অান্টির মুখে কিছুটা হাসি ফুটল।
অাপু এখনো মুখ গম্ভির করে অাছে যদি স্যার পছন্দ না করে।
কিন্তু স্যার দেখে ঠিক করে ফেলেছেন।এই মেয়েই হবে তার ছেলের বউ।
অার ভাইয়া অার্মির চাকরি করেন।
সব কথার পর স্যার বাহিরে গেলেন ।
অামি রুমেই বসে অাছি।
সবাই কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকাই রইছে।মনেহয় এভারেস্ট জয় করে মাত্রই দেশে অাইসা সোফায় বসলাম অার সবাই অামাকে দেখতে অাসছে।
.
: বাবা তুমি অামার ছেলের কাজ করছ...(অাঙ্কেল)
অাপু অামাকে তার রুমে ডেকে নিলেন।
: অাচ্ছা অাপু বিয়ের পর তোমাকে অাপু ডাকব নাকি ভাবি ডাকব??অার ভাইয়াকে ভাইয়া ডাকব নাকি দুলাভাই ডাকব??
: হিহিহি
: তুমি হাসছ অাপু যাক খুব ভাল লাগল।অাচ্ছা তোমার শ্বশুর বাহিরে অপেক্ষা করছে অাজ যাই?? কাল তো সবাই দেখতে অাসবে অাবার।অার শোন কাল মুরগিতে মরিচ কম দিয় কেমন??
: অাচ্ছা ভাইয়া যাও তোমারে অালাদা করে রান্না করে খাওয়ামু।
অাবার অাঙ্কেল অান্টির কাছে অাসলাম।
অাঙ্কেল পকেট থেকে বের করে কিছু টাকা দিলেন।অামি সেটা পকেটে নিলাম।অাবার বের করে অাঙ্কেলের হাতে দিলাম।
: বিয়ের দিন দিবেন কেমন?? অাজ এটা যদি নেই অন্যায় হবে।বললেন না ছেলের কাজ করছি ছেলে হয়ে এটা নিব কিভাবে??
: অারে না না খুশি হয়ে দিলাম।তোমার বন্ধুটারে নিয়ে খাইয়।
: লাগবেনা বিয়ের দিন দিবেন কিন্তু।
: হাহাহা অাচ্ছা ।
: বাবা কাল তুমিও অাসবা কিন্তু( অান্টি)
: অাসবোই তো অান্টি অাচ্ছা অাজ যাই।স্যার অপেক্ষা করছেন।
: মটু গেলামরে ....
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম।
বিকালে ভাইয়ার সাথে ঘুরতে বের হলাম।
ভাইয়াতো মনে হল অামার কথা শুনেই অাপুর প্রেমে পড়ে গেছে।
.
রাতে:
: কিরে খাবিনা?? (অাম্মু)
: না খামুনা।অাজ খাইলে কাল খেতে পারমু না।
: মানে??
অাম্মুকে সব বললাম।অাম্মুর চাহনি দেখে বুজলাম এতদিন অপদার্থ ছিলাম অাজ পদার্থ হয়ে ভাল একটা কাজ করছি।
.
.
সেদিনের মত ঘুমিয়ে পড়লাম।পরদিন সকালে উঠেই।কাপর নিয়ে দোকানে গেলাম ইস্ত্রি করে অানলাম।
অার 10টার দিকে সবাই গেলাম।
মেয়ে সবার পছন্দ হয়েছে।
হবেই না কেন ভাইয়াদের চোখ তো অার নষ্ট না।
অার 15দিন দিন পরেই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হল।
: তর হবু ভাবির ফোন নাম্বার টা অাইনা দে না?? (ভাইয়া)
: টাকা দেও।
: কত??
: 500
: 200দিলে হয়না??
: তাহলে নাম্বারের ডিজিট 11টা না 09টা বলমু।
: অাচ্ছা 300??
: তাহলে 10টা বলমু।
: না না 500ই দিমু।
যদিও অাপুর নাম্বার অাছে।তারপরো অাপুর কাছে গেলাম।
অাপু মানে হবু ভাবি ভাইয়া মানে হবু দুলাভাই তোমার নাম্বার চাইছে।
: তোমার কাছে অামার নাম্বার অাছে তো?
: তুমি লিখে দাওনা।
: অাচ্ছা দিচ্ছি।এককাজ কর তোমার ভাইয়ার নাম্বারটা দাও। অামিই অাগে ফোন দিব।
: ওকে,কিন্তু নাম্বার 11টা ডিজিটের । সবাই জানে প্রথমে 01 হয়।01চলে গেলে থাকে অার 9টা। বাকি 9টার জন্য কয় টাকা দিবা।
: টাকা লাগবে??
: জ্বি।
: অাচ্ছা 100টাকা।
: 100টাকা দিয়া কি করমু 1000টাকা লাগবে না হলে হবেনা।
: অাচ্ছা কাল তো তোমার অাঙ্কেলরে বললা টাকা লাগবেনা একবারে বিয়ের দিন।
: অারে বিয়ের জন্য জামাকাপড় কিনবনা??দিলে দাও।না দিলে গেলাম।
: অার দিবনা না বলছি?? দাড়াও।
অাহা 1500 হয়ে গেল।
নাম্বার দিয়ে ভাইয়ার কাছে অাসলাম।
.
: দেশের ছেলেরা অাজকাল ফকির হয়া গেছে
: কেন কি হইল??নাম্বার এনেসিছ??
: কি অাবার।অাপু বেকার হয়ে 1000দিল অার তুমি চাকরিজীবী হয়া মাত্র 500 লজ্জায় অামি শেষ হয়ে যাচ্ছি।অামার ভাই বিয়ে হওয়ার অাগেই হবু ভাবির কাছে হেরে গেল।
: খোটা দিবিনা বলে দিলাম।
: দিলামনা।বিয়ে তো একটাই করবা।অার 500দেওয়া যায়না??
: এই নে।
অাহা 2000।
নাম্বার দিয়ে দিলাম।
অাসার সময় অাঙ্কেল জোর করেই 1000দিল।অান্টি 500দিল।
ওদের কি টাকা বেশি হইছে নাকি? ?
অাহা অাজ সকালে কার মুখ দেখে উঠছিলাম।
অামার মুটু বন্ধুটা সব দেখছিল। অার যখন ভাইয়া 1000 বললাম অাপু 1000 দিছে বললাম রাগে গজগজ করতাছে।
অামি ওরে বললাম ওকে যা তকেও দিব অর্ধেক।
ও তো খুশিতেই শেষ।
এত খুশি হইয় না চান্দু অর্ধেক মানে 100এর অর্ধেক 50 হাহাহাহ।
.
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম।
দিনগুলো খুব দ্রুত চলে যাচ্ছিল।
বিয়ের অার মাত্র 5দিন অাছে।
বিয়ের জন্য ভাইয়া অনেক কিছু কিনে দিছে অামায়।অাসলে স্যারের একটাই ছেলে।অামাকে ভাইয়া স্যার দুজনই খুব অাদর করেন।
.
বিয়ের দিন চলেই অাসল।4টা মাইক্রো নিয়ে সবাই গেলাম।
হাহাহাহ যায়া দেখি মটু গেইট অাটকাইছে টাকা নিবে!! টাকা দিব বেশি কইরা।
গাড়ি থেকে যায়া জাস্ট একটা কথা বললাম।
দেখেন ''এখানে একটা শুভ কাজ হবে।অামি চাইনা শুভ কাজের প্রথমেই বাধা পড়ুক'' অাহা বলার সাথে সাথে গেইট ক্লিয়ার।মটু অাজ পাতলু হয়া গেছে হাহাহাহা ।
.
সারাদিন খুব মজা করলাম।খাইতে খাইতে পেট পানির ট্যাংকির মত বড় হয়া গেছে।
রাত্রে ফেরার পালা।অাপু কান্না করছিল।
: কি অাপু শ্বশুর বাড়ি তারতারি যাওয়ার জন্য কান্না করছ (অাপুর কানে কানে বললাম)
কান্না করবে নাকি হাসবে বুঝতে পারছিল না।
অাজকেও অনেক সেলামি পাইলাম।
অাঙ্কেল অাজ 2000দিছেন অান্টি 1000।স্যার 1000। স্যারেরটা নিতামই না জোর করে দিছেন ।ভাইয়ার কাছ থেকে অাসার সময়ই 1000নিছি।এতটাকা!!তাই ভাবই অন্যরকম।মটু পাইছে মাত্র 2000।
এখন ফেরার পালা।
অাইসা পড়লাম।
অামি গাড়ি থেকে নেমেই তারাতারি ভাইয়ার রুমে যায়া ছোট্ট একটা তালা লাগাইলাম।
সবাই অাসল।
: কিরে তুই না বললি শুভ কাজে প্রথমেই বাধা পড়া ঠিক না?? (সবাই বলল)
: হ্যা ঠিকনা।কিন্তু পড়ে গেলে সেই বাধা অতিক্রম করতে হয়।এখন যদি অামাকে সেলামি না দিয়ে ওরা ঘরে ডুকে।তাহলে কি হবে?? প্রথম ধাপেই ওরা হেরে যাবে।এটা কি ঠিক?? কি এমন হবে কিছু টাকা দিলে।এই টাকার জন্য কি ভাইয়া/ভাবি প্রথম ধাপেই হেরে যাবে ছি: ছি: ছি: এটা কি অামি কি দেখছি!! কেউ অামারে একটা চিমটি দাও।অামি কি স্বপ্ন দেখছি?? কয়েকটা টাকার জন্য ভাইয়া/ভাবি প্রথম ধাপেই হেরে গেল।
: হইছে ভাষণ বন্ধ কর কত লাগবে??
: 2000!!!!!!!
: হ্যা।
: 20টাকাও দিবনা
: 20টাকা চাইছে কে?? 2000দিন।
: যা 1000দিমু।
: গরু কিনতে অাসছেন যে দরদাম করছেন???
: অাচ্ছা এই নে 2000
: হ্যা ওদের ঘরে নিয়ে যান।
: চাবি দে।
: চাবি লাগবেনা এটা নষ্ট তালা।চাবি ছাড়াই টান দিলে খুলে হাহাহা।
সবাই হেসে উঠল।
.
.
.
.
যাক বিয়ের সব কার্যক্রম শেষ।
অাজ খুব অারামের একটা ঘুম হবে।
অার অাজকের মত খুশি অাগে অার লাগেনি।
অাপু+ভাইয়া সুখি হোক ।(সমাপ্ত)
.
.
.
>>> ভাইয়ারা যদি অাগের লোকদের মত হত তাহলে এত খুশির মুহুর্ত গুলো অাসতনা।কি লাভ মানুষের দূর্বলতা নিয়ে খোটা দেওয়ার???সবাইকে তো অাল্লাহ সৃষ্টি করছেন।অার অাল্লাহ নিশ্চয়ই কোন ভুল করেন না।মানুষ।সৃষ্টির সেরা জীব।তাই কাউকে উপহাস করা উচিত নয়।যাকে উপহাস করছেন তার জায়গায় একবার নিজেকে কল্পনা করে দেখুন তো???<<<<
: কিরে বাসায় যাবি না?? (অামি)
: তোর জন্য দাড়াই রইছি। (মটু)
: কেন??
: বাসায় চল।
: কেন বলবি তো???
: অামার বোনকে অাজ প্রথম দেখতে অাসবে।
: ও অাচ্ছা অাগে বলবিতো অাচ্ছা চল।
একটা রিক্সা নিয়ে সোজা ওর বাসায় গেলাম।
: অান্টি অাসসালামুঅালাইকমু ভাল অাছেন??
: হ্যা ভাল অাছি।তুমি ভাল অাছ???
: অাপু কেমন অাছো??
: ভাল তুমি ভাল অাছো?? পড়াশোনা কেমন চলছে??
: এইতো ভালই অাপু।
: অাচ্ছা বসো.....
.
ওদের বাসায় অাগেও কয়েকবার অাসছি।তাই অান্টি,অাপু খুব ভালভাবেই চিনে অামাকে।অবশ্য অাঙ্কেল তেমন চিনেন না।কারণ তিনি তো চাকরি করেন।অামি যখন যাই তখন বাসায় থাকেন না।
অার অাপুকে অাজ দেখতে অাসবে।
.
দুপুর দুইটা বাজে।3টার সময় বরপক্ষ অাসবে।
তাই বসে অাছি।অবশ্য নাস্তা খাইছি অাইসাই।
দেখলাম অামার বন্ধুটা ঘরের সব কিছু ঠিক করছে অামিও হেল্প করতে গেলাম।
ঘরের কাজ করতে করতেই সময় চলে গেল।
3টার কিছুক্ষণ পর বরপক্ষের লোকেরা অাসল।
সবাই কে সালাম দিয়ে।
সাধরে গ্রহণ করলাম।অাসার পরপরই শরবত দেওয়া হল।পরে সেমাই,নুডলস,পিঠ
া অারো অনেক কিছু দিয়ে অাপ্যায়ন করলাম।
সবাই পরিচিত হচ্ছিলাম।
কিছুক্ষণ হাসি /ঠাট্টাও হল।
ওরা চাইছিল অাগে কন্যা দেখতে পরে খাইতে।কিন্তু অামরা জোরাজোরি করলাম।
''কন্যা তো অাছেই।অাগে খেয়ে নিন।কন্যা তো দেখাবোই।''
ওরা রাজি হল।
অান্টি অার অাপু অনেক কিছু রান্না করছে।সব খাওয়াইলাম।খাওয়াইলাম না তো খাবার এনে দিলাম ওরা খাইল।
খাওয়ার পর্ব শেষ এখন কন্যা দেখার পালা।
.
অাপুকে নিয়ে অাসলাম।অাপু সালাম দিয়ে গোমটা টেনে বসল।
এবার শুরু হল.....
: তোমার নাম কি ??
: কি পর্যন্ত লেখাপড়া করছ??
: কি কি রান্না করতে পার??
: বাসায় কে কে অাছে??
: হেটে দেখাও তো।
: চুল টেনে দেখল।
: হাত গুলো পা গুলো হাতে নিয়ে দেখল।
: হাতের লেখা দেখাও তো।
এরকম অনেক উদ্ভটা প্রশ্ন করল।
অামি তো অবাক!!
এগুলার মানে কি?? ওরা কি মেয়ে দেখতে অাসছে নাকি মেয়ে কিনতে অাসছে?? এত দরদাম কেন???
যাক প্রায় 30 টা প্রশ্ন করল।অাপু সবগুলো প্রশ্নের উত্তর নিচু স্বরে দিল।
অাপুকে দেখা শেষ হলে অন্য রুমে নিয়ে গেলাম।
.
ওদের মুখ দেখে বুঝা গেল মেয়ে পছন্দ হয়নি।
না'ই হতে পারে।কারণ একবার দেখেই বিয়ে নাও হতে পারে।যদি পছন্দ মতো মেয়ে না হয় তাহলে বরপক্ষের রাজি না হওয়াই স্বাভাবিক।
অার অাপু দেখতে খুব সুন্দর না , কালো।কিন্তু চেহারাটা খুব'ই মায়াবী।
অবশেষে ঠিক করা হল 10লাখ টাকা লাগবে!!
অাঙ্কেলএর দিকে খেয়াল করে দেখলাম।মুখটা গম্ভির হয়ে অাছে।
সবচেয়ে খারাপ লাগছিল যখন একজন বলল ''এমন কাইল্যা ছেরি দশ লাখ টেকায় নিতাছি এটাই অনেক''
এরকম পরিস্থিতিতে কি অার শান্ত থাকা যায়??
.
: এই মিয়া কি বললেন?? (অামি)
: কি বললাম ঠিকই তো কইছি।
: মেয়ে কিনতে অাসছেন নাকি বিয়ে করিয়ে নিতে অাসছেন??? 10লাখ টাকা দিলাম।টাকাটা অাশা করি শিগ্রই শেষ হয়ে যাবে।তখন এই কাইল্যা ছেরিরে কি করবেন?? ফালাই দিবেন??? নাকি অাবার 10লাখ টাকা দিতে হবে??? টাকা দিলে মেয়ের দাম অাছে?? না দিলেই নাই??মেয়েরে কি খেলনা পাইছেন?? যখন এই কাইল্যা ছেরির সন্তান হবে তখন কি করবেন?? কাইল্যা ছেরির সন্তান কারণে অাদর কম করবেন?? নাকি অাঙ্কেলের তখন বৃদ্ধিকালে ঘর বাড়ি বিক্রি করে অাবার 10লাখ টাকা দিতে হবে???অাজ যদি অাপনার মেয়ে এমন হতো অাপনি কি এই কথা বলতে পারতেন??? যদি অন্য কেউ অাপনাকে এই কথা বলতো কি করতেন??কেমন লাগতো তখন?? মনমানসিকতা পাল্টান ।অাপনার ধুনিয়া পাল্টে যাবে।অার হ্যা অামরা মেয়ে অাপনাদের মত লোকের কাছে বিয়ে দিবনা।হ্যা অাপনারা 10লাখ টাকা চাইছেন ভাল কথা।অাঙ্কেল যা ভাল বুঝতেন করতেন।কিন্তু মেয়ের বাবার সামনে যারা এই কথা বলতে পারে!! তারা মেয়েটাকে কতটা অাপন করে রাখবে জানা হয়ে গেছে। অাপনারা অাসতে পারুন।
.
অার কিছু না বলে সবাই চলে গেল।
কাজটা কি ঠিক করলাম?? খুব ভয় পাচ্ছিলাম। না জানি অাঙ্কেল কি বলেন!! খুবই ভয় করছিল। এভাবে অামার বলা ঠিক হয়নি।কারণ অামি তো মেয়ের কোন অাত্বিয় না।কিন্তু যা বলছি সব মনের কথা গুলোই বলছি।এভাবে অপমান মেনে নিতে পারিনি।
.
: সাব্বাশ!! ধারুন বলছ বেটা।অামার মনের কথা গুলো বলে দিছ।কিন্তু অামি ওদের এগুলো বলতে পারতাম না কারণ অামি মেয়ের বাবা।ওরা মানুষ না পাষাণ তাহলে ওদের হাতে অামার মেয়েকে কিভাবে তুলে দেই বল!! অামার কাজটা তুমি করে দিছ।
:(___)
.
কিন্তু অাপুর জন্য খুব খারাপ লাগছিল।অাপুর রুমে যায়া দেখলাম।অাপু কাদছে।
অাড়ালে থেকে হয়তো সব কথা শুনছে।
খুব কষ্ট হচ্ছিল।
অাপু মুখ তুলে তাকাল।
: অাচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলি অামি কি দেখতে খুব খারাপ??
: না অাপু তুমি দেখতে মোটেও খারাপ নও।ওদের চোখটাই খারাপ অাপু।তুমি চিন্তা করনা এর চেয়ে ভাল ঘরে তোমার বিয়ে দিব।অারো ভাল ছেলের সাথে তোমার বিয়ে দিব।
.
.
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম। রাস্তায় হাটছি।
অাসার সময় বন্ধুর মুখটাও দেখে অাসিনি।হয়তো বাড়িতে সবাই মুখ গোমরা করে বসে অাছে।
: এই কই গেছিলি??
: অাসসালামুঅালাইকমু স্যার।স্যার কেমন অাছেন??
: ভাল নাইরে খুব চিন্তায় অাছি।
: কেন স্যার কি হয়েছে।
: তর ভাইয়ারে বিয়ে দিব।পাত্রি পাচ্ছিনা।
: স্যার
: কিরে মন খারাপ
: হ্যা
: কি হয়েছে??
সব খুলে বললাম।
স্যারের মুখটা মনেহয় হাসিতে ভরে গেল।
: সাইকেলের পিছে উঠ।
: কেন স্যার??
: সেই বাড়িতে নিয়া যা।
: কেন স্যার??
: তর ভাইয়ার জন্য মেয়ে পেয়ে গেছি।
: স্যার!!!!
: হ্যা চল।
: স্যার অামি সাইকেল চালাই? ?খুব খুশি লাগতেছে।
: না পিছনে বস।
: অাচ্ছা স্যার।
.
.
ওয়াও!!! খুব ভাল লাগছিল।অামি যদি একটু পরে অাসতাম তাহলে হয়তো স্যারের সাথে দেখা হতোনা এই মুহুর্ত টা দেখতে পারতাম না।অার সব কিভাবে মিলে গেল।ইনি অামার শ্রদ্ধেয় স্যার।প্রাইমারিতে এই স্যারের কাছেই পড়েছি। অামাদের বাড়ি অার স্যারের বাড়ি পাশাপাশি।স্যার খুব অাদর করেন অামায়। অামিও স্যারের অনেক কাজে হেল্প করি গাছ থেকে অাম পেরে দেই ,সুপারি পেরে দেই।বড়শি দিয়ে মাছ ধরে দেই।সব কাজেই সাহায্য করি। কিন্তু ভাইয়ার জন্য যে পাত্রি খুজছেন তা জানতাম না।
.
একটু পরেই ওদের বাড়ির সামনে অাইসা পড়লাম।
সোজা ঘরে।
: অাঙ্কেল অাপুর জন্য বর পেয়ে গেছি।
: মানে??
: অাগে তো পিছনের দড়জাটা খুলুন।
: অাচ্ছা।
দৌড়ে অাপুর রুমে চলে গেলাম।
: অাপু বলছিলাম না তোমার জন্য ভাল ছেলে এনে দিব??দাড়াও সব দেখতে পারবা।
অাঙ্কেল দড়জা খুলে দিলেন।
স্যার অাসলেন।
খাবার তো ছিলই।অাবার খাইলাম পেট গোপাল ভারের পেটের মত হয়া গেছে।
স্যার অার অাঙ্কেল সব অালাপ করছিলেন।
অার অামি অাপু অার অান্টিরে অালাদা করে বোঝাতে গেলাম।
অান্টির মুখে কিছুটা হাসি ফুটল।
অাপু এখনো মুখ গম্ভির করে অাছে যদি স্যার পছন্দ না করে।
কিন্তু স্যার দেখে ঠিক করে ফেলেছেন।এই মেয়েই হবে তার ছেলের বউ।
অার ভাইয়া অার্মির চাকরি করেন।
সব কথার পর স্যার বাহিরে গেলেন ।
অামি রুমেই বসে অাছি।
সবাই কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকাই রইছে।মনেহয় এভারেস্ট জয় করে মাত্রই দেশে অাইসা সোফায় বসলাম অার সবাই অামাকে দেখতে অাসছে।
.
: বাবা তুমি অামার ছেলের কাজ করছ...(অাঙ্কেল)
অাপু অামাকে তার রুমে ডেকে নিলেন।
: অাচ্ছা অাপু বিয়ের পর তোমাকে অাপু ডাকব নাকি ভাবি ডাকব??অার ভাইয়াকে ভাইয়া ডাকব নাকি দুলাভাই ডাকব??
: হিহিহি
: তুমি হাসছ অাপু যাক খুব ভাল লাগল।অাচ্ছা তোমার শ্বশুর বাহিরে অপেক্ষা করছে অাজ যাই?? কাল তো সবাই দেখতে অাসবে অাবার।অার শোন কাল মুরগিতে মরিচ কম দিয় কেমন??
: অাচ্ছা ভাইয়া যাও তোমারে অালাদা করে রান্না করে খাওয়ামু।
অাবার অাঙ্কেল অান্টির কাছে অাসলাম।
অাঙ্কেল পকেট থেকে বের করে কিছু টাকা দিলেন।অামি সেটা পকেটে নিলাম।অাবার বের করে অাঙ্কেলের হাতে দিলাম।
: বিয়ের দিন দিবেন কেমন?? অাজ এটা যদি নেই অন্যায় হবে।বললেন না ছেলের কাজ করছি ছেলে হয়ে এটা নিব কিভাবে??
: অারে না না খুশি হয়ে দিলাম।তোমার বন্ধুটারে নিয়ে খাইয়।
: লাগবেনা বিয়ের দিন দিবেন কিন্তু।
: হাহাহা অাচ্ছা ।
: বাবা কাল তুমিও অাসবা কিন্তু( অান্টি)
: অাসবোই তো অান্টি অাচ্ছা অাজ যাই।স্যার অপেক্ষা করছেন।
: মটু গেলামরে ....
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম।
বিকালে ভাইয়ার সাথে ঘুরতে বের হলাম।
ভাইয়াতো মনে হল অামার কথা শুনেই অাপুর প্রেমে পড়ে গেছে।
.
রাতে:
: কিরে খাবিনা?? (অাম্মু)
: না খামুনা।অাজ খাইলে কাল খেতে পারমু না।
: মানে??
অাম্মুকে সব বললাম।অাম্মুর চাহনি দেখে বুজলাম এতদিন অপদার্থ ছিলাম অাজ পদার্থ হয়ে ভাল একটা কাজ করছি।
.
.
সেদিনের মত ঘুমিয়ে পড়লাম।পরদিন সকালে উঠেই।কাপর নিয়ে দোকানে গেলাম ইস্ত্রি করে অানলাম।
অার 10টার দিকে সবাই গেলাম।
মেয়ে সবার পছন্দ হয়েছে।
হবেই না কেন ভাইয়াদের চোখ তো অার নষ্ট না।
অার 15দিন দিন পরেই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হল।
: তর হবু ভাবির ফোন নাম্বার টা অাইনা দে না?? (ভাইয়া)
: টাকা দেও।
: কত??
: 500
: 200দিলে হয়না??
: তাহলে নাম্বারের ডিজিট 11টা না 09টা বলমু।
: অাচ্ছা 300??
: তাহলে 10টা বলমু।
: না না 500ই দিমু।
যদিও অাপুর নাম্বার অাছে।তারপরো অাপুর কাছে গেলাম।
অাপু মানে হবু ভাবি ভাইয়া মানে হবু দুলাভাই তোমার নাম্বার চাইছে।
: তোমার কাছে অামার নাম্বার অাছে তো?
: তুমি লিখে দাওনা।
: অাচ্ছা দিচ্ছি।এককাজ কর তোমার ভাইয়ার নাম্বারটা দাও। অামিই অাগে ফোন দিব।
: ওকে,কিন্তু নাম্বার 11টা ডিজিটের । সবাই জানে প্রথমে 01 হয়।01চলে গেলে থাকে অার 9টা। বাকি 9টার জন্য কয় টাকা দিবা।
: টাকা লাগবে??
: জ্বি।
: অাচ্ছা 100টাকা।
: 100টাকা দিয়া কি করমু 1000টাকা লাগবে না হলে হবেনা।
: অাচ্ছা কাল তো তোমার অাঙ্কেলরে বললা টাকা লাগবেনা একবারে বিয়ের দিন।
: অারে বিয়ের জন্য জামাকাপড় কিনবনা??দিলে দাও।না দিলে গেলাম।
: অার দিবনা না বলছি?? দাড়াও।
অাহা 1500 হয়ে গেল।
নাম্বার দিয়ে ভাইয়ার কাছে অাসলাম।
.
: দেশের ছেলেরা অাজকাল ফকির হয়া গেছে
: কেন কি হইল??নাম্বার এনেসিছ??
: কি অাবার।অাপু বেকার হয়ে 1000দিল অার তুমি চাকরিজীবী হয়া মাত্র 500 লজ্জায় অামি শেষ হয়ে যাচ্ছি।অামার ভাই বিয়ে হওয়ার অাগেই হবু ভাবির কাছে হেরে গেল।
: খোটা দিবিনা বলে দিলাম।
: দিলামনা।বিয়ে তো একটাই করবা।অার 500দেওয়া যায়না??
: এই নে।
অাহা 2000।
নাম্বার দিয়ে দিলাম।
অাসার সময় অাঙ্কেল জোর করেই 1000দিল।অান্টি 500দিল।
ওদের কি টাকা বেশি হইছে নাকি? ?
অাহা অাজ সকালে কার মুখ দেখে উঠছিলাম।
অামার মুটু বন্ধুটা সব দেখছিল। অার যখন ভাইয়া 1000 বললাম অাপু 1000 দিছে বললাম রাগে গজগজ করতাছে।
অামি ওরে বললাম ওকে যা তকেও দিব অর্ধেক।
ও তো খুশিতেই শেষ।
এত খুশি হইয় না চান্দু অর্ধেক মানে 100এর অর্ধেক 50 হাহাহাহ।
.
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম।
দিনগুলো খুব দ্রুত চলে যাচ্ছিল।
বিয়ের অার মাত্র 5দিন অাছে।
বিয়ের জন্য ভাইয়া অনেক কিছু কিনে দিছে অামায়।অাসলে স্যারের একটাই ছেলে।অামাকে ভাইয়া স্যার দুজনই খুব অাদর করেন।
.
বিয়ের দিন চলেই অাসল।4টা মাইক্রো নিয়ে সবাই গেলাম।
হাহাহাহ যায়া দেখি মটু গেইট অাটকাইছে টাকা নিবে!! টাকা দিব বেশি কইরা।
গাড়ি থেকে যায়া জাস্ট একটা কথা বললাম।
দেখেন ''এখানে একটা শুভ কাজ হবে।অামি চাইনা শুভ কাজের প্রথমেই বাধা পড়ুক'' অাহা বলার সাথে সাথে গেইট ক্লিয়ার।মটু অাজ পাতলু হয়া গেছে হাহাহাহা ।
.
সারাদিন খুব মজা করলাম।খাইতে খাইতে পেট পানির ট্যাংকির মত বড় হয়া গেছে।
রাত্রে ফেরার পালা।অাপু কান্না করছিল।
: কি অাপু শ্বশুর বাড়ি তারতারি যাওয়ার জন্য কান্না করছ (অাপুর কানে কানে বললাম)
কান্না করবে নাকি হাসবে বুঝতে পারছিল না।
অাজকেও অনেক সেলামি পাইলাম।
অাঙ্কেল অাজ 2000দিছেন অান্টি 1000।স্যার 1000। স্যারেরটা নিতামই না জোর করে দিছেন ।ভাইয়ার কাছ থেকে অাসার সময়ই 1000নিছি।এতটাকা!!তাই ভাবই অন্যরকম।মটু পাইছে মাত্র 2000।
এখন ফেরার পালা।
অাইসা পড়লাম।
অামি গাড়ি থেকে নেমেই তারাতারি ভাইয়ার রুমে যায়া ছোট্ট একটা তালা লাগাইলাম।
সবাই অাসল।
: কিরে তুই না বললি শুভ কাজে প্রথমেই বাধা পড়া ঠিক না?? (সবাই বলল)
: হ্যা ঠিকনা।কিন্তু পড়ে গেলে সেই বাধা অতিক্রম করতে হয়।এখন যদি অামাকে সেলামি না দিয়ে ওরা ঘরে ডুকে।তাহলে কি হবে?? প্রথম ধাপেই ওরা হেরে যাবে।এটা কি ঠিক?? কি এমন হবে কিছু টাকা দিলে।এই টাকার জন্য কি ভাইয়া/ভাবি প্রথম ধাপেই হেরে যাবে ছি: ছি: ছি: এটা কি অামি কি দেখছি!! কেউ অামারে একটা চিমটি দাও।অামি কি স্বপ্ন দেখছি?? কয়েকটা টাকার জন্য ভাইয়া/ভাবি প্রথম ধাপেই হেরে গেল।
: হইছে ভাষণ বন্ধ কর কত লাগবে??
: 2000!!!!!!!
: হ্যা।
: 20টাকাও দিবনা
: 20টাকা চাইছে কে?? 2000দিন।
: যা 1000দিমু।
: গরু কিনতে অাসছেন যে দরদাম করছেন???
: অাচ্ছা এই নে 2000
: হ্যা ওদের ঘরে নিয়ে যান।
: চাবি দে।
: চাবি লাগবেনা এটা নষ্ট তালা।চাবি ছাড়াই টান দিলে খুলে হাহাহা।
সবাই হেসে উঠল।
.
.
.
.
যাক বিয়ের সব কার্যক্রম শেষ।
অাজ খুব অারামের একটা ঘুম হবে।
অার অাজকের মত খুশি অাগে অার লাগেনি।
অাপু+ভাইয়া সুখি হোক ।(সমাপ্ত)
.
.
.
>>> ভাইয়ারা যদি অাগের লোকদের মত হত তাহলে এত খুশির মুহুর্ত গুলো অাসতনা।কি লাভ মানুষের দূর্বলতা নিয়ে খোটা দেওয়ার???সবাইকে তো অাল্লাহ সৃষ্টি করছেন।অার অাল্লাহ নিশ্চয়ই কোন ভুল করেন না।মানুষ।সৃষ্টির সেরা জীব।তাই কাউকে উপহাস করা উচিত নয়।যাকে উপহাস করছেন তার জায়গায় একবার নিজেকে কল্পনা করে দেখুন তো???<<<<
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন