সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭

হারিয়ে ফেলা ভালবাসা

গল্পের শুরুটা একটু ভিন্ন ভাবে।
ছেলেটির একাকী জীবনে একটা জীবন সঙ্গী বেধে দিতে উঠে পরে লাগে বন্ধু মহল সহ সকল কাজিনরাও। সবারই একটা চিন্তাধারা যে কিভাবে ছেলেটিকে একটা জিএফ ধরিয়ে দেয়া যায়। অবশ্য ছেলেটিও মনে মনে তাই চাচ্ছিল যে তারও একজন ভাল জীবন সঙ্গী হোক।
আর তার ফল হিসাবে ছেলেটির এক কাজিনের মাধ্যমে মেয়েটির সাথে পরিচয় হয় ফেসবুকে।
গল্পের শুরুটা অন্য দশটা গল্পের মত না।
ছেলেটি মেয়েটির সাথে দুই-তিন দিন কথা বলার পরই মেয়েটি কে প্রপোজ করে বসে।
হুম মেয়েটিও না করে নাই, তবে হ্যা মেয়েটি ছেলেটিকে একটা শর্ত দেয় যে,
 ছেলেটি যদি মেয়েটির মা কে খুশি করতে পারে তাহলে সে রাজী, ছেলেটিকে আগে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে । একটা কথা, মেয়েটি তার জীবনে তার মাকে সব থেকে বেশি ভালবাসে, আর তার পরের স্থানটি দেয় ছেলেটিকে। ছেলেটি মেয়েটির শর্তে রাজি। মেয়েটা ছিল কবিতা প্রেমী, আর ছেলেটা ছিল গল্প প্রেমী এইভাবেই চলছিল সুন্দর মুহুর্ত গুলো।
এইভাবেই চলতে থাকে তাদের দিন গুলো। তার কিছু দিন পর দুজন দেখা করার দিন ঠিক করল। অবশেষে দুজন দেখাও করল। সারাদিন অনেক ঘুরাঘুরি করে আবার দুজন দুজনের গন্তব্যে চলে গেল।
এইখানে বলে রাখা ভাল যে, ছেলেটি এবং মেয়েটির বাড়ী পাশাপাশি জেলায়। দুজন দুজন কে দেখল, পছন্দও হল।
এইবার শুরু হল সেই শর্ত পুরনের পালা।
ছেলেটি তখনো ছাত্র জীবনে , কিন্তু তার প্রিয় মানুষটিকে পাওয়ার জন্য সব কিছু শিকায় তুলে রেখে জীবন যুদ্ধে নেমে যায়। নেমে যায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যুদ্ধে।
আর সেই সাথে কয় দিনের মধ্যেই একটা ভাল চাকরিও পেয়ে যায়। চাকরী এবং মেয়েটিকে নিয়ে ভালই চলছিল ছেলেটির জীবন। এইভাবেই তাদের সম্পর্কটা সামনে এগুচ্ছিল।
তার মধ্যে একদিন মেয়েটির একটি বিয়ের প্রপোজাল আসে। ছেলেটিও অনেক ভাল, একটা ভাল জবও করে।
তারপর মেয়েটি ছেলেটিকে ফোন দেয় --
মেয়ে--- পরিবার থেকে আমার বিয়ের কথা হচ্ছে।
ছেলে--- মানে?
মেয়ে --- আমাকে কিছু দিন আগে একটি ছেলে দেখতে আসছিল, তাদের নাকি পছন্দও হয়েছে।
ছেলে- এখন তুমি কি বল?
মেয়ে --- আমি কিছু জানি না।
ছেলে --- তুমি কি আমাকে ভালবাস না?
মেয়ে --- আমি তোমাকে ভালবাসি কি না তা জানি না, তবে আমি পৃথিবীতে আমার মাকে সব থেকে বেশী ভালবাসি। আর মায়ের পরে যদি কাউকে ভালবেসে থাকি সে হল তুমি।
ছেলে --- এখন তুমি কি চাও?
মেয়ে --- আমি আমার মাকে কষ্ট দিতে পারব না।
তুমি তিন মাসের মধ্যে কিছু একটা করে আমার মায়ের কাছে যাও। আমিও তোমাকে ছাড়া বাচব না।
তারপর থেকে মেয়েটির সাথে ছেলেটির কথা ধীরেধীরে কমতে থাকে।
তবুও ছেলেটির সাথে মেয়েটির আগের মত না হলেও নিয়মিত কথা হতে থাকে। মেয়েটি ছেলেটিকে ৩ মাস সময় দেয় নিজেকে ভাল কিছু একটা করে তার মায়ের কাছে যেতে। আর এরপর থেকে মেয়েটি আর আগের মত কথা বলতে চায় না। তবুও ছেলেটি মেয়েটিকে সব সময় কল দিয়ে খুজ খবর নেয়, নিজের দু:খ গুলো প্রকাশ করে।
মেয়েটি সব সময় নিষেধ করে ছেলেটি কে সে যেন তার সাথে আর যোগাযোগ না রাখে।
তবুও ছেলেটি সেই আগের বোনা সপ্ন গুলার বীজ রোপ্ন করতে থাকে তার হৃদয়ে।
ছেলেটি মেয়েটিকে পাবার আশায় এখনো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু হঠাৎ একদিন মেয়েটির ফোন -
মেয়ে -- তুমি আমাকে ভুলে যাও।
ছেলে - কেন ?
মেয়ে-- আমার ফ্যামিলি থেকে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, আর তাই আমি চাই না আর তোমার সাথে আমার সম্পর্কটা রাখতে।
ছেলে- তাহলে তুমি আমায় কেন ভালবেসেছিলে?
তাহলে তুমি কেন আমায় তুমায় নিয়ে সপ্ন দেখিয়েছিলে?
মেয়ে -- আমি কিছু জানি না, আমি কিছুই বলতে পারব না, আমি শুধু এইটাইই জানি যে আমি আমার মাকে কষ্ট দিতে পারব না।
ছেলে- তাহলে আমার কি হবে তুমি বলতে পার? তুমি চলে গেলে আমার জীবনটা কি হবে বলে দাও?
মেয়ে - আমি কিছু জানি না, আমি চাই তুমি আমাকে ভুলে যাও।
আমি তোমার পাশে তোমার একটা ভাল বন্ধু হয়ে সারাজীবন থাকতে চাই। এই বলে কল কেতে দিল।
আর এইভাবেই মেয়েটি ছেলেটির জীবন থেকে ধীরেধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ছেলেটি এখন প্রতিদিন নামায পরে আল্লাহ্‌র কাছে দুয়া করে আল্লাহ্‌ যেন মেয়েটিকে তার জীবনে এনে দেয়, এই জীবনে যদি মেয়েটিকে তার জীবনে না লিখে থাকে তাহলে পর জনমেও যেন মেয়েটিকে পায়। ছেলেটির বিশ্বাস যে সে মেয়েটি কে এই জনমে না হোক পর জনমে হলেও পাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন