শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

বৃষ্টি

কই তুমি,,??
,
বাইরে,,,,
,
বাইরে কই,,,??
,
এক বন্ধুর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছি,,,??
,
রাত হইছে তো,,??
,
হুম,,,,
,
বাসায় যাবা কখন,,,??
,
এই তো এখনই চলে যাবো,,,??
,
এই বৃষ্টি হচ্ছে ভিজবা না কিন্তু,,,??
,
ঠিকাছে মেডাম ,,,,,
,
কই তুমি বৃষ্টির মাঝে বাইরে দাঁড়িয়ে আছো,,,??
,
নাহ দোকানের ভিতরে চলে আসলাম,,,,
,
ভিজবা না একদম জ্বর, ঠান্ডা লাগবে,,,,,,
,
নাহ ভিজবো না,,,,,,
,
বসে থাকো বৃষ্টি কমলে তারপর বাসায় যাবা,,,,,
,
আচ্ছা। তুমি কি করো,,,,??
,
বৃষ্টি দেখি কি সুন্দর ঠান্ডা বাতাস,,,,,,
,
হুম তোমার না শরির ভালো না,,,,??
,
এখন তো ভালো,,,,
,
এই ঠান্ডা বাতাসে আবার জ্বর আসবে যাও রুমের ভিতর,,,,,
,
ওকে যাচ্ছি,,,,
,
খাবা কখন,,,,,,??
,
এখনই তুমি,,,,??
,
বাসায় গিয়ে খাবো,,,,,,
,
দিনটা মেঘলা ছিলো সারাদিন যাবত নিজুম ধারায় বৃষ্টি ছিলো। বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট একদম স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে কাদার কারণে রাস্তায় মন খুলে হাটাও যাচ্ছে না। বৃষ্টিটা হঠাৎ করে বাড়ছে আবার হঠাৎ করে কমছে এর কোনো মিল খোজে পাচ্ছি না। আকাশের দিকে তাকাতেই কয়েক ফোটা বৃষ্টি আমার মুখের উপর এসে পরলো কয়েক ফোটা চোখের ভিতরেও চলে গেলো।
চোখের ছাউনিটা বেশ কয়েকবার বন্ধ আর খোলার পর আবারও সাহস করে আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকালাম। আকাশের ঘন কালো মেঘ গুলো আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে বৃষ্টিও কমে গেছে। আস্তে আস্তে একদম বৃষ্টি সেরে গেলো পরিবেশটা শীতল হয়ে গেলো। শীতের রাতে সন্ধ্যার আগে যেমন একটা হালকা শীত শীত ভাব লাগে এখনও ঠিক তেমনই লাগছে। বাসার রাস্তায় হাটছি বৃষ্টি নেই রাস্তায় অর্ধ হাটু পর্যন্ত পানি। পানি ভীষণ ঠান্ডা যা শরিরের প্রত্যেকটা শিরা উপশিরাকে ঠান্ডার অনুভুতিটাকে জানান দিচ্ছে,,,,
,
দূর ঐ আকাশের কালো মেঘ গুলো কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো চাঁদটাকে হালকা হালকা দেখা যাচ্ছে। তবে চাঁদটাও মুখটাকে বার করে রেখেছে কেমন যেনো গুমরা মুখোর একটা ভাব। আকাশের যত টুকু পর্যন্ত দৃষ্টি যাচ্ছে তার ত্রিসীমানার মাঝে কোনো তারা নেই তবে চাঁদটা দেখে ভালোই লাগছে।
পকেটে থাকা ফোনটা হালকা কম্পন সহ বাজতে শুরু করলো ফোন করা ব্যক্তিটা আর কেউ নয়। পকেট থেকে ফোনটা বের করেই স্ক্রিনে না তাকিয়ে রিসিভ করলাম,,,,
,
বৃষ্টি কমেছে,,,??
,
হ্যাঁ বাসার সামনেই আছি,,,,,
,
চাঁদটা দেখছো,,??
,
হ্যাঁ দেখছি,,,,,,
,
চাঁদটা আজ মুখটা গোমরা করে রাখছে কেন,,,??
,
কি জানি চাঁদের হয় তো মন খারাপ,,,,,
,
চাঁদেরও মন খারাপ হয়,,,,??
,
তোমার মন খারাপ হতে পারলে চাঁদের হতে পারে না,,,??
,
আমার তো মন খারাপ না,,,
,
আমি তো বলি নাই তোমার মন খারাপ,,,,??
,
হু জানি আমারেই বলছো,,,,,
,
হুম,,,,
,
বাসায় যাও গিয়ে ফ্রেশ হও আর বের হবা না বাসা থেকে,,,,,
,
ঠিকাছে,,,,,
,
ফোনটা কেঁটে দিয়ে আবারও চাঁদের দিকে দৃষ্টি দিলাম। আচ্ছা এই শাসত্ত বছরের পুরানো চাঁদটাতে দেখার মত কি আছে ?
কেনো অনেকের এই শত শত বছরের পুরাতন চাঁদটা দেখলে মন খারাপ হয়?
আচ্ছা চাঁদেরও কি মন আছে?
চাঁদের মন খারাপ হলে কি করে?
কিছু প্রশ্ন জন্মাচ্ছে মনের চিলে কোঠায় উওর গুলা বাসায় যাবার আগে বের করতে হবে না হলে রাতে ঘুম হবে না। শাসত্ত বছরের পুরানো চাঁদটা একটা মানুষকে বাঁচার স্বপ্ন দেখায়। স্বপ্ন মানুষকে বাঁচতে শিখায় একটা স্বপ্নকে মানুষ পুঁজি করে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে পারে। চাঁদে দেখার মত কিছুই নাই সবাই চাঁদের মাঝে নিজেকে খোঁজে বেড়ায়। কেউ নিজের প্রিয় মানুষটার মুখ দেখতে পায় আবার কেউ চাঁদের আলোয় কিছু মধুর মুহূর্ত কাটিয়ে দেয়,,,,
,
চাঁদের মন আছে কি না জানা নেই তবে চাঁদেরও মাঝে মাঝে মন খারাপ হয়। মন খারাপটা যদি মাত্রার বাইরে চলে যায় তখন আকাশ বাতাস ভারি হয়ে আসতে শুরু হয় এক পর্যায়ে বর্ষণ। আকাশ আর মেয়েদের মন দুটাই এক জিনিস যে কোনো সময় যেকোনো জায়গায় বৃষ্টি শুরু হতে পারে। মানুষের মন খারাপের কারণ অনেক হতে পারে সেটা প্রিয় মানুষটার সাথে কথা না বলতে পারার কারণেও হয়,,,,,,
বাতাসটা মাতাল করার মত বাসায় যেতে ইচ্ছে করছে না তারপরেও যেতে হবে। বেশি রাত হলে আবার ঝামেলা আম্মু বকা বকি করবে সেই সাথে প্রিয় মানুষটা রাগ করে কথা বলবে না। বাসার গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই কারেন্ট চলে গেলো আল্লাহ জানে এই কারেন্ট আজ আসবে কিনা। না আসলেও সমস্যা নাই পরিবেশটা ঠান্ডা রাতের ঘুমটা বেশ আরামদায়ক হবে কাথা মুড়ি দিয়ে বিছানার একপাশে কাত হয়ে ঝিম মেরে ঘুমানো আমার পুরাতন অভ্যাস।
,
ঝিম মেরে ঘুমালে আমি আবার অনেকটা রুমান্টিক হয়ে যাই প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে সপ্ন দেখি। স্বপ্ন গুলা অনেকটা ভিন্ন রকম অনেকটা বাস্তবের সাথে মিল মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখে স্বাদের ঘুমটাও ভেঙ্গে যায়।
খাওয়া দাওয়া আজ আর করা হবে না তাই বাসায় ঢুকে সোজা বিছানাতে শুয়ে পরলাম। মশার উপদ্রুপটা কয়েক দিন যাবত একটু বেশি মানুষের চাইতে মশার জনসংখ্যা অনেক গুণে বেশি।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এটা আদমসুমারির রিপোর্ট কিন্তু মশার জনসংখ্যা কি দিন দিন বাড়ছে না কমছে তা জানার দরকার ছিলো। আজ কাল মশাও ডিজিটাল হচ্ছে মশারির ভিতরেও মশা ডুকে যায়। থাবড়াইতে থাবড়াইতে হাত লাল হইয়া গেছে তাও মশা মারতে পারলাম না।
ফোনটা হাতে নিয়ে শুয়ে আছি হঠাৎ বাজতে শুরু করলো,,,,,
,
আমার ফোনে চার্জ নাই মাএ ১%চার্জ,,,,,
,
তাহলে ফেবুতে আসবা না,,??
,
নাহ। যাতে তুমি অন্য মেয়ের সাথে লাইন না মারতে পারো সেই জন্য ফোন দিলাম,,,,,,
,
হাহাহা লাইন মারতে যামু কেন,,,?
,
পোলাদের আমার জানা আছে সুযোগ পাইলেই হলো,,,,,
,
নাহ তাহলে আমি আজ ফেবুতে যামুই না,,,,,
,
হু যাবা না একদম,,,,,,
,
ঠিকাছে,,,,,
,
ফেবুতে গেলে হাত কাইটা দিমু,,,,,,
,
থাক কাটা লাগবো না,,,,,
,
হুম।খাইছো,,??
,
হুম তুমি,,,,,??
,
হুম খাইছি,,,,,,
,
ঘুমাও তাহলে ফোন চার্জে দিয়া,,,,,,,
,
তুমি কি করবা ফেবুতে যাইবা,,,,???
,
আরে নাহ মেডাম চিন্তা কইরেন না আপনার এই বলদটারে কেউ নিয়া যাইবো না,,,,,,
,
এহ নিতে দিলে তো যে আসবো নিতে তার কপালে দুঃখ আছে,,,,,
,
হাহাহা,,,,,,
,
হাসো কেন,,,,,,,??
,
নাহ এমনি,,,,,
,
হু। যাও ঘুমাও,,,,,,
,
ওকে তুমিও ঘুমাও,,,,,,,,
,
ফোনটা কেটে দিয়ে ভাবছি মেয়েটা আমাকে নিয়ে কত চিন্তা করে। না হলে এই গভীর রাতে ফোন দিতো না অথচ সন্ধ্যায় মেয়েটাকে কাঁদিয়েছি। কাঁদানোর কারণটা খুবই নগ্ন ছিলো তাও মেয়েটা হুট করে কেঁদে দিলো । যখন জিজ্ঞেস করলাম কান্না করছো কেন তখন উওর দিলো " চোখকে জিজ্ঞেস করো"।
ভালোই লাগে মাঝে মাঝে কাঁদাতে আবার নিজেরই কষ্ট হয় রাগ ভাংগাতে।
মাঝ রাতে যখন বৃষ্টির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় তখন মেয়েটা ছটফট করতে শুরু করে। মনে মনে ভাবে " যদি এখন সে পাশে থাকতো তাহলে দুজনে মিলে বৃষ্টি বিলাস করতাম "।কতই না ভালো লাগতো । বালিশের নিচে থেকে ফোনটা বের করে নাম্বারটা চাপ দিতে গিয়েও চাপ দেয় না। ভাবতে থাকে " যদি ঘুমের ডিস্টার্ব হয় "।
তখন কিছু উওরহীন প্রশ্নের সম্মুখীন হয় মেয়েটা সেই সাথে বৃষ্টির কারণে প্রিয় মানুষটাকে ভীষণ মিস করতে থাকে।
নিজের অজান্তে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে বালিশের কভারটা একসময় প্রায় ভিজে ওঠে হঠাৎ আবার ঘুমিয়ে পরে,,,,,,,

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন