রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭

সহজ প্রেমের গল্প

আমার নাম বাপ্পি। আজ কলেজের ফরম তোলার জন্য যাচ্ছি।
এ সময় ফরম তোলার সময় মেয়েটির সঙ্গে দেখা
আসলে কয়েকদিন আগে ফুটবল খেলতে গিয়ে হাতে ব্যাথা পাইছি,তাই লিখতে পারছিলাম না। ফরম পূরণের জন্য কারো হেল্প প্রয়োজন ছিল।
তখন মেয়েটির কাছে গিয়ে বললাম। এই যে আপু, প্লিজ,একটু হেল্প করবেন।
মেয়েটি পিছন ফিরে তাকিয়ে আমাকে বলল,কি হেল্প……। আমি তখন ফরম পূরনের কথা বললাম।যা হোক ফরম পূরণের ইচ্ছা না থাকলেও আমার হাতের দিকে তাকিয়ে দয়া হল মনে হয় এবং ফরম পূরন করে দিল।যা হোক সেদিন ধন্যবাদ দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসলাম।
.
ঐদিন রাতে কেন যেন মেয়েটির কথা বার বার মনে পড়তে লাগল।
.
কলেজে চান্স পেয়ে গেলাম।কলেজের প্রথম দিন গিয়েই দেখলাম মেয়েটি আমার বিভাগে চান্স পেয়েছে।শিক্ষাথীদের পরিচয় পর্বের সময় মেয়েটির নাম জানতে পারলাম ফারিয়া।এরপর প্রায়ই তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।কিন্তু তার সামনে যেতে পারতাম না।তাকে একদিন ফলো করে তার বাড়ির ঠিকানা জানতে পারলাম,ধানমন্ডির ৩নং সেক্টরে। তার বাবা বড় ব্যবসায়ী।প্রায়ই ফারিয়ার পিছন পিছন যেতাম। একদিন সে আমাকে দেখে ফেলল।
.
আমার কাছে এস বলল,
ফারিয়াঃ আমি দেখছি আপনি কিছুদিন থেকে আমাকে ফলো করছেন।
বাপ্পিঃকই না তো আমি আপনাকে ফলো করছিনা। এদিক দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলাম
ফারিয়াঃ মিথ্যা কথা বলবেন না।
বাপ্পিঃ নাতো আমি মিথ্যা কথা বলছি না। এটা তোমার ভুল।
ফরিয়াঃ মিথ্যা কথা আবার বলছ। তোমার আসল উদ্দেশ্য বল।
বাপ্পিঃ ঠিক আছে আমি মিথ্যা বলছি না,আসলে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
ঠিক সেই মূহূর্তে আমার গালে একটা ছড় হল।আর দেখলাম ও্ কলেজের গেইট দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে।
.
ঐ দিন রাতে ঘুম আসল না।ওর কথা বার বার মনে পড়তে লাগল পরেরদিন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে কলেজের দিকে রওনা হলাম। কলেজে পৌচেঁ গেটের সামনে দাড়িয়ে রইলাম। ক্লাস শুরু হওয়ার আগ পযন্ত ওর জন্য অপেক্ষা করলাম, কিন্তু ও আসলনা।এভাবে কয়েকদিন ও কলেজে আসল না। ফারিয়ার বান্ধবীদের কাছে খোঁজ নিলাম,কিন্তু কেউ খবর দিতে পারল না।
.
সাতদিন ও কলেজে না আসায় ঠিক করলাম ওর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম।কলেজ শেষে ফারিয়ার বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম। ফারিয়ার বাড়ির গেটের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম,কিন্তু কিছুতেই যেতে পারছিলাম না। শেষ পযন্ত সংকোচ ত্যাগ করে গেটে টোঁকা দিলাম। কিছুক্ষন পর দারোয়ান গেট খুলে দিল।
.
দারোয়ানঃ কাকে চাই?
বাপ্পিঃ ফারিয়া আছে।
দারোয়ানঃ আপনি আপামনির কে?
বাপ্পিঃ আমি ওর বন্ধু।
দারোয়ানঃ ও! তা আপামনি তও হাসপাতালে।
বাপ্পিঃ ওর কি হয়েছে?
দারোয়ানঃ আপামনির পা ভাইঙ্গা গেছে,সিঁড়ি থেকে পড়ে।
বাপ্পিঃ ফারিয়া এখন কোন হাসপাতালে?
দারোয়ানঃ তা স্কয়ার হাসপাতালে।
.
তাড়াতাড়ি করে হাসাপাতালে রওনা দিলাম। হাসপাতালে পৌঁছে সরাসরি ওর কেভিনে ঢুকে গেলাম।আস্তে আস্তে ফারিয়ার দিকে আগাতে লাগলাম।দেখলাম ও আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।আমি ওর কাছে গিয়ে দাড়ালাম।
বাপ্পিঃ কেমন আছে এখন?
ফারিয়াঃ ভালো,আসতে এত দেরি করলে যে…
বাপ্পিঃ মানে!
ফারিয়াঃ বোকারাম আরে আমি তো প্রথম তিন দিন কলেজে যায়নি তোমার পরীক্ষা নেওয়ার জন্য।এরপর তো পড়ে পাটা ভেঙ্গে গেল।আমি ভাবলাম আমি কলেজে যায় না দেখে তুমি আমার খোঁজ করতে আইসবা।
বাপ্পিঃ আই এম সরি……..। আসলে আমি ভয়ে আসতে পারি নাই,তুমি যদি আবার থাপ্পর দেও।
ফারিয়াঃ হা…হা…হা….।তুমি ভীতুর ডিম আস্ত।
বাপ্পিঃ তুমি সত্যি আমাকে ভালোবাসো…………………………..
ফারিয়াঃ I LOVE YOU
বাপ্পিঃ বাংলাতে বল………………
ফারিয়াঃ হা…….হা…..হা…..আমি তোমাকে ভালোবাসি।
বাপ্পিঃ আরকবার বল না……………………….
ফারিয়াঃ হা…….হা…..হা…..আরে আমার বধির প্রেমিক আমি তোমাকে ভালোবাসি। এবার তুমি বল……………………
বাপ্পি ঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি।
.
এরপর মিষ্টি ঝগড়া,ভালোবাসা,অভিমান নিয়ে পাচঁ বছর চলে গেল।আমি একটা সরকারি ব্যাংকে চাকরি পেলাম।তারপর ওর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দিলাম।প্রথমে ওর বাবা রাজি না হলেও একমাত্র মেয়ের জেদে রাজি হয়ে গেলেন। আগামী মাসে আমাদের বিয়ে সকলের দাওয়াত…………………………

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন