আজ প্রথম দিন কলেজে,কেমন জানি একটু নার্ভাস ফিল হয়েছিল। হওয়ার-ই কথা প্রথম দিন বলে কথা, তার উপরে সবাই অপরিচিত। কাল থেকে হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে।
সি.এন.জিতে করে বাসায় ফিরতে ফিরতে এই সব ভাবছে নীড়। কিছুদিনের মধ্যে-ই সবার সাথে পরিচয় হয়ে উঠে। আর সবচেয়ে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে উঠে অভ্র ও জিহামের সাথে। অভ্র কলেজ হোস্টলে থাকতো আর জিহাম থাকতো নিজেদের বাসায়। তাই মাঝে মাঝে আড্ডা দিতে জিহাম আর নীড় জমাট বাঁধতো অভ্রের রুমে। যে দিন-ই আড্ডা দিতে মন চাইতো সে দিন-ই কলেজ শেষে সোজা বাড়ি না গিয়ে অভ্রর রুমে গিয়ে উঠতো তারা। আর বেশী সময়-ই দেখা যেত,অভ্রর জন্য খাবার আসলে ৩ জনে মিলে ভাগাভাগি্র করে খাবারটা খেত। খুব ভাল বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায় অল্প দিনের মাঝে-ই। আর তিনজন একসাথ হলে-ই জায়গাটাকে একটা কমেডি শো তে পরিণত করে। নীড় কিছুদিন যাবত ফেইসবুকে একটা মেয়ের সাথে চ্যাট করছে, সেটা কিন্তু অভ্র ও জিহামকে জানাতে ভুল করেনি। কয়েক দিন পর মেয়েটি নীড়ের সাথে মোবাইলে কথা বলা শুরু করে দিলো।আর কিছু দিনের মধ্যেই নীড় মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেল। কিন্তু নীড় মেয়েটিকে বলতে পারছে নাহ। অভ্র আর জিহাম বুঝলো নীড়কে দিয়ে হবে নাহ, তাই তারাই মেয়েটিকে বল্ল। আর মেয়েটিও রাজি হয়ে গেলো, বেশ ভালো-ই যাচ্ছিল দিনকাল। কিছুদিন পর নীড় বুঝতে পারলো মেয়েটি তার সাথে শুধু অভিনয়-ই করছে,বাস্তবে তাকে ভালোবাসে না। আর সেখানেই থেমে গেল গল্পটা। নীড়ের প্রথম কিছুদিন একটু মন খারাপ থাকলেও কিছুদিন পর সব আগের মত হয়ে গেল। বিন্দাস দিন যাচ্ছিল। প্রায় ১ বছর সিঙ্গেল ছিল নীড়। তার পর হঠাৎ নীড় লক্ষ করলো তার বন্ধু শিখাকে তার ভালো লাগতে শুরু করলো। (শিখার সাথে নীড় অনেক ফ্রি ছিল বলে সব সময় দুষ্টামি করে জান,বেবি এই সব বলে ডাকতো, আর দুষ্টামি করে প্রায় সময় I Love U বলত আর শিখাও মজা করে Love u 2-ই বলতো।) কিছু দিন ধরে নীড় শিখার প্রতি অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়েছে। একদিন নীড়ের সাথে শিখার মেসেজে চ্যাটের সময় :
নীড়: I love u
শিখা : Love u 2.
নীড়: আমি কিন্তু সিরিয়াস।
শিখা: আমি মনে হয় ফান করি?
নীড়: রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস দে!
শিখা: ওমা,পোলা কয় কি?
নীড়: সত্যি তোরে ভালোবাসি।
শিখা: এভাবে বললে তো হবে নাহ, সরাসরি বললে দেখা যাবে।
.
সঙ্গে সঙ্গে নীড় শিখাকে কল দিয়ে আবার বলল I Love u, আর শিখার উত্তর ছিল, এভাবে হবেনা সরাসরি প্রপোজ করলে ভেবে দেখবো। পরের দিন নীড় কলেজে না যাওয়ার কথা ছিল তবুও শিখাকে প্রপোজ করবে বলে গেল, কিন্তু প্রপোজ করতে যে ফুলের প্রয়োজন সেটা নিড়ের এক দম-ই মাথায় ছিলনাহ। ক্লাসে গেল এক ঘন্টা দেরি করে তাই,হয়ত ফুলের কথাটা মাথায় ছিলনাহ। ক্লাসে গিয়ে ফুলের কথা মনে পড়তে-ই অভ্র আর জিহাম কে নিয়ে ছুটে গেল ফুলের দোকানে, কিন্তু গিয়ে দেখলো দোকান বন্ধ।
আর ফিরে আসতে আসতে ক্লাস শেষ হয়ে গেল। পরের দিন নীড় ভাবলো শিখাকে প্রপোজ করলে ওর আবার রিয়েক্ট টা কেমন হবে।তাই নীড় অভ্র আর জিহামকে বলল তারা আগে একবার সরাসরি বলে দেখতে, যেই কথা সেই কাজ। অভ্র আর জিহাম শিখাকে বল্ল যে, নীড় তাকে ভালোবাসে। কিন্তু, শিখা একটাই উত্তর দিল,এটা কিভাবে সম্ভব? বন্ধু আছি সেটাই ভালো। কথাটা নীড় শুনেছিল কিন্তু নরমাল ভাবেই নিলো। সে দিন রাতে নীড়,অভ্র ও জিহাম আড্ডা দিচ্ছিল, হঠাৎ শিখা একটা স্ট্যাটাস দিল ফেইসবুকে, মিসিং সামওয়ান দিয়ে। স্ট্যাটাসটা দেখে নীড়ের কেন জানি অনেক কষ্ট হতে লাগলো,নীড় সঙ্গে সঙ্গে অভ্র আর জিহামের কাছ থেকে উঠে গিয়ে বাথরুমে ডুকে কাঁদতে লাগলো। হয়ত কষ্টটা নিজের মাঝেই রাখতে চেয়ে ছিল। সেদিন রাতেও নীড় কলেজ হোস্টেলেই ছিল। যখন ভোর ৫ টা বাজে।নীড় দেখলো সবাই ঘুমে,কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই।চোখের কোণ দিয়ে ২ এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে আর শিখার কথা ভাবতে ভাবতেই রাত কেটে গেল। পরের দিন রাতে শিখার সাথে চ্যাটের সময় শিখা নিড়কে কথায় কথায় প্লে বয় বলে ফেল্লো। ব্যাপারটা নীড়ের কাছে কিছুটা খারাপ লাগলেও। তার নিজের দোষ মেনেই ধরে নিল। নীড় বুঝে নিলো তার অন্য কারো কাছে তার স্থান কোথায়।তাড় পর থেকে নীড় নিজেকে সবার থেকে সরিয়ে নিতে চাইলো। হয়ত, মন তাকে সরে আসতে দিচ্ছিল নাহ, তবুও ভাবল চেষ্টা করতে দোষ কোথায়। কিছু দিন নীড় ক্লাসে গিয়েও কারো সাথে কথা বলতোনা ঠিকমত,এমনকি অভ্র ও জিহামের সাথেও নাহ।আর এভাবেই দিন কাটতে লাগলো। প্রায় সপ্তাহ হয়ে গেল নীড় কারো সাথে একটু মন খুলে কথা বলে নি, অনেক কষ্ট হচ্ছিল। তাই নীড় এবার ভেবেই নিলো কাল ক্লাসে গেলে সবার সাথে আবার কথা বলবে। রাতে ঘুমানোর আগে হঠাৎ নীড়ের প্রচুর মাথা ব্যাথা উঠলো, আর সাথে নীড় অজ্ঞান হয়ে গেল। যখন চোখ খুলল নীড় দেখলো সে এক অজানা জায়গায়, পরে বুঝতে পারলো সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। নীড় হঠাত তার মাকে জিজ্ঞেস করলো তার কি হয়েছে? আর তার মার মুখে কোন কথা ছিলনা, শুধু চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে দেখলো নীড়।নীড়ের আর বুঝতে বাকি নেই,যে তার বড় কোন রোগ হয়েছে। পরে জানতে পারলো আসলেই তাই, তার ব্রেন ক্যান্সার। আর অনেক দেরি হয়ে গেছে,তাই তার হাতে আর একমাস সময় আছে। কথাটা যখন নীড় শুনলো হাসতে লাগলো, মনে মনে বলতে লাগলো, এক সময় নিজে চেয়ে ছিলাম জিবন থেকে ছুটটে আর আজ জিবন-ই আমার থেকে ছুটে যাচ্ছে। আজ হঠাৎ সময় খুব কম মনে হচ্ছে। সপ্তাহ ধরে নীড় হসপিটালে, কিন্তু তার বন্ধুদের সে বলেছে সে তার গ্রামের বাড়িতে গেছে তাই আসতে কয়দিন দেরি হবে। এক সপ্তাহ পরে নীড় ক্লাসে গেল কিন্তু কারো সাথেই ঠিক ভাবে কথা বললো নাহ। তার একটাই লক্ষ ছিল আস্তে আস্তে সবার মন থেকে নিজেকে মুছে নেওয়া। হয়ত এখন জিবনটা উপভোগ করার সময়,কিন্তু আজকাল কেন জানি সময় গুনতে গুণতে আর কিছুই ভালো লাগছে নাহ। আজকাল ফেইসবুকে সারা দিন পড়ে থাকে নীড়, কিন্তু হোম পেইজেই। অনেক মেসেজ জমা হয়ে আছে, কিন্তু উত্তর দেওয়ার মন নেই। ভাবছে আরতো কয়েক দিন, তার পর আইডিটা কে চালাবে। ক্রমশ কেন জানি শরীরের শক্তিটুকু হারিয়ে পেলছে নীড়। আর মাত্র ১ দিন। কালকেই কি তাহলে ইতি? আজ কেন জানি আরো কিছু দিন বাঁচতে ইচ্ছে করছে। রাতে সব বন্ধুদের কল দিয়ে কথা বলে নিল হয়ত এটাই শেষ কথা। রাতে শুয়ে পড়ল নীড়,আজ ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিল,নয়তো হয়তো ঘুম আসবেনা। আজ অনেক চিন্তা মাথায় ঘুরছে, শিখাকে নিয়ে আজ বড্ড বেশী ভাবা হচ্ছে। ভাবছে- শিখা কেনযে তার ভালোবাসা বুঝলো না, বড্ড বেশী ভালোবাসতো মেয়েটাকে, আচ্ছা সে মারা গেলে শিখাকি তার ভালোবাসা বুঝবে? কাঁদবে কি তার জন্য?, আবার ভাবলো ঠিক-ই তো আছে মেয়েটা বুঝলে আজ'নয়তো কতটা কাঁদতে হতো'। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল নীড় টের-ই পেল নাহ। আর ঘুম থেকে উঠা হলো না নীড়ের। স্বপ্ন নিয়ে হারিয়ে গেল অচীন দেশে।
দেখা হলোনা আর শেষ প্রহরের আলো।
সি.এন.জিতে করে বাসায় ফিরতে ফিরতে এই সব ভাবছে নীড়। কিছুদিনের মধ্যে-ই সবার সাথে পরিচয় হয়ে উঠে। আর সবচেয়ে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে উঠে অভ্র ও জিহামের সাথে। অভ্র কলেজ হোস্টলে থাকতো আর জিহাম থাকতো নিজেদের বাসায়। তাই মাঝে মাঝে আড্ডা দিতে জিহাম আর নীড় জমাট বাঁধতো অভ্রের রুমে। যে দিন-ই আড্ডা দিতে মন চাইতো সে দিন-ই কলেজ শেষে সোজা বাড়ি না গিয়ে অভ্রর রুমে গিয়ে উঠতো তারা। আর বেশী সময়-ই দেখা যেত,অভ্রর জন্য খাবার আসলে ৩ জনে মিলে ভাগাভাগি্র করে খাবারটা খেত। খুব ভাল বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায় অল্প দিনের মাঝে-ই। আর তিনজন একসাথ হলে-ই জায়গাটাকে একটা কমেডি শো তে পরিণত করে। নীড় কিছুদিন যাবত ফেইসবুকে একটা মেয়ের সাথে চ্যাট করছে, সেটা কিন্তু অভ্র ও জিহামকে জানাতে ভুল করেনি। কয়েক দিন পর মেয়েটি নীড়ের সাথে মোবাইলে কথা বলা শুরু করে দিলো।আর কিছু দিনের মধ্যেই নীড় মেয়েটির প্রেমে পড়ে গেল। কিন্তু নীড় মেয়েটিকে বলতে পারছে নাহ। অভ্র আর জিহাম বুঝলো নীড়কে দিয়ে হবে নাহ, তাই তারাই মেয়েটিকে বল্ল। আর মেয়েটিও রাজি হয়ে গেলো, বেশ ভালো-ই যাচ্ছিল দিনকাল। কিছুদিন পর নীড় বুঝতে পারলো মেয়েটি তার সাথে শুধু অভিনয়-ই করছে,বাস্তবে তাকে ভালোবাসে না। আর সেখানেই থেমে গেল গল্পটা। নীড়ের প্রথম কিছুদিন একটু মন খারাপ থাকলেও কিছুদিন পর সব আগের মত হয়ে গেল। বিন্দাস দিন যাচ্ছিল। প্রায় ১ বছর সিঙ্গেল ছিল নীড়। তার পর হঠাৎ নীড় লক্ষ করলো তার বন্ধু শিখাকে তার ভালো লাগতে শুরু করলো। (শিখার সাথে নীড় অনেক ফ্রি ছিল বলে সব সময় দুষ্টামি করে জান,বেবি এই সব বলে ডাকতো, আর দুষ্টামি করে প্রায় সময় I Love U বলত আর শিখাও মজা করে Love u 2-ই বলতো।) কিছু দিন ধরে নীড় শিখার প্রতি অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়েছে। একদিন নীড়ের সাথে শিখার মেসেজে চ্যাটের সময় :
নীড়: I love u
শিখা : Love u 2.
নীড়: আমি কিন্তু সিরিয়াস।
শিখা: আমি মনে হয় ফান করি?
নীড়: রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস দে!
শিখা: ওমা,পোলা কয় কি?
নীড়: সত্যি তোরে ভালোবাসি।
শিখা: এভাবে বললে তো হবে নাহ, সরাসরি বললে দেখা যাবে।
.
সঙ্গে সঙ্গে নীড় শিখাকে কল দিয়ে আবার বলল I Love u, আর শিখার উত্তর ছিল, এভাবে হবেনা সরাসরি প্রপোজ করলে ভেবে দেখবো। পরের দিন নীড় কলেজে না যাওয়ার কথা ছিল তবুও শিখাকে প্রপোজ করবে বলে গেল, কিন্তু প্রপোজ করতে যে ফুলের প্রয়োজন সেটা নিড়ের এক দম-ই মাথায় ছিলনাহ। ক্লাসে গেল এক ঘন্টা দেরি করে তাই,হয়ত ফুলের কথাটা মাথায় ছিলনাহ। ক্লাসে গিয়ে ফুলের কথা মনে পড়তে-ই অভ্র আর জিহাম কে নিয়ে ছুটে গেল ফুলের দোকানে, কিন্তু গিয়ে দেখলো দোকান বন্ধ।
আর ফিরে আসতে আসতে ক্লাস শেষ হয়ে গেল। পরের দিন নীড় ভাবলো শিখাকে প্রপোজ করলে ওর আবার রিয়েক্ট টা কেমন হবে।তাই নীড় অভ্র আর জিহামকে বলল তারা আগে একবার সরাসরি বলে দেখতে, যেই কথা সেই কাজ। অভ্র আর জিহাম শিখাকে বল্ল যে, নীড় তাকে ভালোবাসে। কিন্তু, শিখা একটাই উত্তর দিল,এটা কিভাবে সম্ভব? বন্ধু আছি সেটাই ভালো। কথাটা নীড় শুনেছিল কিন্তু নরমাল ভাবেই নিলো। সে দিন রাতে নীড়,অভ্র ও জিহাম আড্ডা দিচ্ছিল, হঠাৎ শিখা একটা স্ট্যাটাস দিল ফেইসবুকে, মিসিং সামওয়ান দিয়ে। স্ট্যাটাসটা দেখে নীড়ের কেন জানি অনেক কষ্ট হতে লাগলো,নীড় সঙ্গে সঙ্গে অভ্র আর জিহামের কাছ থেকে উঠে গিয়ে বাথরুমে ডুকে কাঁদতে লাগলো। হয়ত কষ্টটা নিজের মাঝেই রাখতে চেয়ে ছিল। সেদিন রাতেও নীড় কলেজ হোস্টেলেই ছিল। যখন ভোর ৫ টা বাজে।নীড় দেখলো সবাই ঘুমে,কিন্তু তার চোখে ঘুম নেই।চোখের কোণ দিয়ে ২ এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ছে আর শিখার কথা ভাবতে ভাবতেই রাত কেটে গেল। পরের দিন রাতে শিখার সাথে চ্যাটের সময় শিখা নিড়কে কথায় কথায় প্লে বয় বলে ফেল্লো। ব্যাপারটা নীড়ের কাছে কিছুটা খারাপ লাগলেও। তার নিজের দোষ মেনেই ধরে নিল। নীড় বুঝে নিলো তার অন্য কারো কাছে তার স্থান কোথায়।তাড় পর থেকে নীড় নিজেকে সবার থেকে সরিয়ে নিতে চাইলো। হয়ত, মন তাকে সরে আসতে দিচ্ছিল নাহ, তবুও ভাবল চেষ্টা করতে দোষ কোথায়। কিছু দিন নীড় ক্লাসে গিয়েও কারো সাথে কথা বলতোনা ঠিকমত,এমনকি অভ্র ও জিহামের সাথেও নাহ।আর এভাবেই দিন কাটতে লাগলো। প্রায় সপ্তাহ হয়ে গেল নীড় কারো সাথে একটু মন খুলে কথা বলে নি, অনেক কষ্ট হচ্ছিল। তাই নীড় এবার ভেবেই নিলো কাল ক্লাসে গেলে সবার সাথে আবার কথা বলবে। রাতে ঘুমানোর আগে হঠাৎ নীড়ের প্রচুর মাথা ব্যাথা উঠলো, আর সাথে নীড় অজ্ঞান হয়ে গেল। যখন চোখ খুলল নীড় দেখলো সে এক অজানা জায়গায়, পরে বুঝতে পারলো সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। নীড় হঠাত তার মাকে জিজ্ঞেস করলো তার কি হয়েছে? আর তার মার মুখে কোন কথা ছিলনা, শুধু চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে দেখলো নীড়।নীড়ের আর বুঝতে বাকি নেই,যে তার বড় কোন রোগ হয়েছে। পরে জানতে পারলো আসলেই তাই, তার ব্রেন ক্যান্সার। আর অনেক দেরি হয়ে গেছে,তাই তার হাতে আর একমাস সময় আছে। কথাটা যখন নীড় শুনলো হাসতে লাগলো, মনে মনে বলতে লাগলো, এক সময় নিজে চেয়ে ছিলাম জিবন থেকে ছুটটে আর আজ জিবন-ই আমার থেকে ছুটে যাচ্ছে। আজ হঠাৎ সময় খুব কম মনে হচ্ছে। সপ্তাহ ধরে নীড় হসপিটালে, কিন্তু তার বন্ধুদের সে বলেছে সে তার গ্রামের বাড়িতে গেছে তাই আসতে কয়দিন দেরি হবে। এক সপ্তাহ পরে নীড় ক্লাসে গেল কিন্তু কারো সাথেই ঠিক ভাবে কথা বললো নাহ। তার একটাই লক্ষ ছিল আস্তে আস্তে সবার মন থেকে নিজেকে মুছে নেওয়া। হয়ত এখন জিবনটা উপভোগ করার সময়,কিন্তু আজকাল কেন জানি সময় গুনতে গুণতে আর কিছুই ভালো লাগছে নাহ। আজকাল ফেইসবুকে সারা দিন পড়ে থাকে নীড়, কিন্তু হোম পেইজেই। অনেক মেসেজ জমা হয়ে আছে, কিন্তু উত্তর দেওয়ার মন নেই। ভাবছে আরতো কয়েক দিন, তার পর আইডিটা কে চালাবে। ক্রমশ কেন জানি শরীরের শক্তিটুকু হারিয়ে পেলছে নীড়। আর মাত্র ১ দিন। কালকেই কি তাহলে ইতি? আজ কেন জানি আরো কিছু দিন বাঁচতে ইচ্ছে করছে। রাতে সব বন্ধুদের কল দিয়ে কথা বলে নিল হয়ত এটাই শেষ কথা। রাতে শুয়ে পড়ল নীড়,আজ ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিল,নয়তো হয়তো ঘুম আসবেনা। আজ অনেক চিন্তা মাথায় ঘুরছে, শিখাকে নিয়ে আজ বড্ড বেশী ভাবা হচ্ছে। ভাবছে- শিখা কেনযে তার ভালোবাসা বুঝলো না, বড্ড বেশী ভালোবাসতো মেয়েটাকে, আচ্ছা সে মারা গেলে শিখাকি তার ভালোবাসা বুঝবে? কাঁদবে কি তার জন্য?, আবার ভাবলো ঠিক-ই তো আছে মেয়েটা বুঝলে আজ'নয়তো কতটা কাঁদতে হতো'। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল নীড় টের-ই পেল নাহ। আর ঘুম থেকে উঠা হলো না নীড়ের। স্বপ্ন নিয়ে হারিয়ে গেল অচীন দেশে।
দেখা হলোনা আর শেষ প্রহরের আলো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন