সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭

এক মিস্টি ভালবাসার রূপরেখা

সপ্নমাখা ভুবনের সমরেখা ছুয়ে দিব ভেবেছিলাম।নীল আকাশের নীলিমাটাকেও ছুতে তাচ্ছিল্যতার রুপরেখাও টা ও মুহূর্তের জন্য আনি নি।ঝাপসা চোখ দুটি আজ অশ্রুময়।নিঃস্বাস গুলো বিষময়।সপ্নগুলো ছন্নছাড়া। কি ই বা করভ বল।আমার মত এমন একটা মেয়ে নীল তোমার জীবনসঙ্গীনি কি করেই বা হতে পারে বল।তুমি স্মারট,হাই ক্লাসিফাইড,একটা সোসাইটি আছে তোমার,একটা ফ্রেন্ডসারকেল আছে,একটা পরিবার আছে।কোন দিক থেকেই তোমার যোগ্য আমি না।তাই ত সেদিন তোমার প্রস্তাবে প্রত্যাখান করে ছুটে আসছিলাম।ভাবতেই নীলার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পরছে আর একটা ফ্রেমে নীল নামের কোন প্রেমো প্রত্যাশীর একটা ছবিকে আকরে ধরে হাউমাউ করে কান্না করতেছে।
কল্পনা থেকে বাস্তবে আসি।
নীল ইউনিভারসিটির প্রথম দিনেই এক মেয়েকে দেখে ভাললাগা তৈরি হয়ে যায়।সেই মেয়ে আর কেউ ছিল না নীলাই ছিল।নীল দৌড়ে গেল
_এইজে হাই,আমি আজ প্রথম ভারসিটিতে ক্যাম্পাসটার কিছুই ভাল করে চিনি না।একটু আমার সাথে যাবেন প্লিজ।(নীল)
-''''''''(চুপ)
_এইজে হ্যালো,কিছু ত বলেন।চুপ করে থাকবেন।(নীল)
নীলা রিক্সাওয়ালাকে ভাড়ার টাকাটা দিয়ে কিছু না বলেই চলে গেল।আর দূরে গিয়ে একটা অপরিচিত মেয়েকে হাত দিয়ে আমার দিকে কি জেন দেখিয়ে বলল।আমি একটু বিব্রতবোধ ও করছিলাম যদিও।
কিছুক্ষন পরেই একটা মেয়ে আমার দিকে এসে
-এইজে ভাইয়া, আপনি আমার সাথে আসেন আপনাকে আপনার ক্যাম্পাস টা দেখিয়ে দিচ্ছি।ওহ আর আমি রিসা।নীলার বন্ধু।(রিসা)
-উনি কিছু না বলে চলে গেল কেন।(নীল)
-ওর কথা বাদ দেন।ও অরকমই।আপনি আসেন।(বলেই রিসা হেটে গেল্)
-আমি পিছুন পিছুন গেলাম
প্রথম দিনটা কেটে গেল।আমি ও বাবার অসুস্থতার জন্য বাড়ীতে আসলাম কিছু দিনের জন্য।তারপর আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।তার পরের দিন কলেজে একি সময় নীলাকে, পরনে একটা লাইট হোয়াইট ড্রেস, সত্যিই একটা হুর পরীর মত লাগছিল। কি জানি।
তারপর গিয়েই কাশ দিয়ে
_এইজে হ্যালো।আমি নীল।আপনার সাথেই পড়ি।চিনতে পেরেছেন।(নীল)
-মাথা নারিয়ে হুম
_আচ্ছা কেমন আছেন?(নীল)
-একটা মিস্টি হাসি দিয়ে বুজিয়ে দিল জী ভাল।
_নিল বলল আজ বিকালে একটু আমার সাথে দেখা করভেন?পারকে বা কোন রেস্টুরেন্ট এ।(নীল)
_ইসারা দিয়ে ব্রু কুচকিয়ে কেন?
_কথা ছিল কিছু।খুব প্রোয়জনীয়।(নীল)
_মাথা নেরে বলে বুজিয়ে দিল।আচ্ছা ঠিক আছে।
নীল জায়গা আর সময় টা বলে দিল।ঠিক বিকালা ৪ টায় নীলের একটা প্রিয় জায়গার নাম বলল।
নীল একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়ে বসে আছে।নীলা ঠিক সময় একটা লাইট ব্লু সাড়ি পরে এসে বসল।তারপর ই,
-নীলা কিছু কথা ছিল।যা তোমায় বলা খুবই প্রয়োজন।অনেক লড়াই করেছি নিজের সাথে।তুমি অভয় দিলে বলতাম।(নীল)
-নীলা মাথা নুইয়ে চোখ বুজে ইশারা দিয়ে বুজিয়ে দিল।বলতে পার।
-নীল চোখ বুজেই বলা শুরু করে দিল।নীলা তোমাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভাললেগে যায় আর ভাল ও বেসে ফেলি খুব।বলেই হাতটা বাড়িয়ে দিল আর বলল→ Nila I love u,Will u marry me
নীলা চুপ করে আছে।এ যেন এক বিষন্ন বিদগ্ধ মুহূর্ত বয়ে যাচ্ছে।কিচ্ছুক্ষন পর হাতে একটা কাগ কলম নিয়ে প্রশ্নের ঝড় তুলছে নীলা
_নীল তোমার ফেমিলিতে কে কে আছে?(নীলা লিখে দিল)
_আমি বাবা মা একটা ভাই।সবাই আছেন।
_কিন্তু আমার কেউ নাই।না মা বাবা না কোন ভাই বোন।
কারো ভালবাসা পাই নি ছোটবেলা থেকেই।এভাবেই নিস্তব্দতার সাথে বড় হয়ে আসছি।চোখ দুটো বেইমানি করে নি তাই বলে,এমন কোন রাত নেই যে রাতে আমার এই দুচোখ দিয়া অশ্রু ঝরে নি।জাইহক চাচার বাসায় থাকি বলতে পার উনারাই আমার সব এখন।আর তাছাড়া আরেকটা কঠিন সত্যি হল প্রায় ৪ মাস আগে হঠাৎ করেই আমার ভোকাল কর্ডে প্রভলেম দেখা দেয় তাই স্পষ্ট কথা ও বলতে পারি না।ডক্টরের থেরাপির মধ্যে আছি তাই তোমার সাথে ইশারা দিয়েই কথা বলতে হচ্ছে।এমনো হতে পারে আমি আজীবনের জন্য বাক প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারি।এরকম অনিশ্চিতই জীবনের সাথে তোমার সুন্দর জীবন টা না ঝরালেই ভাল থাকবে।
ভাল থেক।(কেদে দিল নীলা বলতে বলতে,পরক্ষনেই উঠে দৌড় দিয়ে চলে গেল)
নীলার এভাবে চলে যাওয়াটা দেখছে নীল চাতকের বেশে।কিচ্ছুক্ষন পর বাসায় চলে আসল নীল।
নীলা কলেজে যাচ্ছে কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে দেখে আসছে নীল কলেজে আসছে না আর কোন খবরাখবর ও নেই।
প্রায় ১ সপ্তাহ পর।নীলা বাসায় একজন অপরিচিতার হাত ধরে একটা চিঠি আসল।খাম দিয়ে চিঠিটা বের করেই দেখল
প্রিয় নীলা,
কেমন আছ?হইত অনেক প্রশ্ন ই করার ছিল ওদিন কিন্তু করা হয়ে উঠে নি।ছন্নছাড়া মনটা তোমায় খুজে বেরায়।নিঃস্বাস টা তোমার ঘ্রানটা অনুভব করায় মাতহারা হয়ে পড়ে,তোমায় কাছে না পেয়ে কখনো কখনো দম টা আটকে যায়।তোমার শরীরে কি পুর্নতা, কি ই বা ত্রুটি রয়েছে সেগুলোকে কোনদিন ভালবাসি নি। ভালবেসেছি পুরো তুমিটাকে,হ্যা পুরো তুমি নামের নীলাটাকে।তাতে তুমি একবার কেন একশবার বাক প্রতিবন্ধী হয়েও আমার সামনে আসলেও বারবার তোমায় ই চেয়ে নিতাম আর তাতে আমার মনে কোন ২য় প্রশ্ন রয়ে থাকত না।এরকম ই তো কেউ যার জীবন মরন, সুঃখ - বেদনার সাথী শুধু আমি ই হব আর কি ই বা চাই আমার,এটুকুও ত চাইছিলাম।মা বাবা নেই তোমার তো কি হইছে, আমি তোমায় একটা সুন্দর ফেমিলি দিব যেখানে থাকবে তোমার মা বাবা,আর থাকবে একজন সঙ্গী যার ভালবাসা তোমার সব অপুর্নতা বার বার প্রতিটা পদক্ষেপে পুরন করে দিবে।
আবারো বলছি আমি পুরো তুমিটাকে ভালবাসি
তোমার পুর্নতাগুলোকে না। তোমার সব কিছুটাকেই আমার ভাল লাগে।কাল ঠিক বিকালে সেই যায়গাটায় আসবে।তোমায় জন্য ওয়েট করব।
ইতি
( নীল )
নীলা ঠিক সময়ে আসল।
তারপরই_
-আজ নয় তোমার জীবন থেকে চলে যাব, তবে আরাল থেকে তোমায় ভালবেসেই যাব।খুব কষ্ট ও হবে দূরে থেকে তোমায় দেখতে, তারপরো সয়ে নিব।আর নইলে তোমার হাত ধরে পারি জমাব এক নতুন পৃথীবিতে যেখানে রবে তুমি আমি আর আমাদের মিস্টি ভালবাসা ময় সময়।
নীলা আমি তোমার সাথে আমার শেষ নিঃস্বাস টা পার করতে চাই।(নীল)
নীলা চুপ করে আছে।নীলের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে কিচ্ছুক্ষন পর নীল হাটা শুরু করল।কতদুর এগোতেই কানে ভেসে আসল নীল আমিও তোমায় ভালবাসি বড্ড বেশি।নীল থমকে গেল।তার ভালবাসার মানুষীর মুখ দিয়ে আজ প্রথম কন্ঠসর শুনতে পেল।নীলা এসেই হাটতা পিছন থেকে হাতটা ধরল।আর বলল-
_নীল আমি পুরোপুরি সুস্থ আর তোমার ভালবাসাই আমার সুস্থ হতে সাহায্য করেছে।সেদিন বাসায় গিয়ে অনেক বার চেষ্টা করি হঠাৎ ই মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায় নীল আমিও যে তোমায় বড্ড ভালবাসি।জান আমারো খুব কষ্ট হইছে আমার মুখ দিয়ে রক্ত ও ঝরছিল, তারপরো আমি থেমে থাকি নি,তোমার ভালবাসার টানে ঠিকি পেরেছি বলতে নীল আমি ও যে তোমায় বড্ড ভালবাসি।এ চল অনেক হইছে। বিয়া করব কাজী অফিসে চল।
_এখনি।
_হুম চল।
দুজন দুজনের কাদে মাথা রেখে হাটতে হাটতে এক নুতুন দুনিয়ায় পারি জমাচ্ছে।
বিঃদ্র:- বেচে থাকার জন্য,একটা সুন্দর জীবনের জন্য ভালবাসাটার খুব দরকার আছে।সব কিছু বেইমানি করে এই মায়ার দুনিয়ায় কিন্তু সত্যিকারের ভালবাসা কোনদিন বেইমানি করে না।তাই তো ভালোবাসা সর্গীয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন