শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৭

উপলব্ধি!

আম্মুর ডাকে সকালে ঘুম ভাঙ্গল! ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কলেজে গেলাম।
কিন্তু ঐদিন আমার কোন ফ্রেন্ডই কলেজে যায় নি, তাই ১২ টার দিকে বাসায় চলে আসলাম।
আবারো ফ্রেশ হয়ে আম্মুকে বললাম "ভাত" দিতে।
খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
হঠাৎ করে ফোনের রিংটোন বেজে উঠল কষ্ট করে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখি সিয়ামের ফোন।
তখন ফোনটা রিসিভ করতেই!
-কিরে কোথায় তুই? (সিয়াম)
-ক্যান? বাসায় (পিয়াল)
-কি করছিস?? (সিয়াম)
-ঘুমাচ্ছি! (পিয়াল)
-এখনো ঘুমাচ্ছিস? কি বলে ছিলাম তকে? (সিয়াম)
-কি বলেছিলি মনে নাই! আবার বল? (পিয়াল)
-
-তকে না বললাম আজ বিকেলে রেল লাইনে ঘুরতে যাব
(সিয়াম)
-ওহহ সরি দোস্ত! মনে ছিল না! তুই দাঁড়া আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। (পিয়াল)
-ওকে। তাড়াতাড়ি আসবি কিন্তু! (সিয়াম)
-আচ্ছা ঠিক আছে! (পিয়াল)
তখন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সিয়ামের কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম। তখনই আম্মু আমার রুমে এসে বলল কোথায় যাস?? দুপুরের খাবার টা খেয়ে যা!
আমি বললাম "মা" মাত্র ১২ টায় খেলাম এখন খাব না। সন্ধ্যায় বাসায় এসে তখন খাব।
তখন "মা" বলল আচ্ছা বাবা তাড়াতাড়ি চলে আসবি কিন্তু। আমি বললাম আচ্ছা মা ঠিক আছে!
তারপর আমি বাসা থেকে বের হয়ে চারপাশে তাকিয়ে রিক্সা খোঁজতে থাকি।
আশেপাশে কোন রিক্সা না পাওয়াতে হাটতে শুরু করলাম!
কিছুটা হাটার পর একটা রিক্সা পেলাম! 
এবং রিক্সায় উঠে সিয়ামের কাছে পৌছালাম।
গিয়ে দেখি আমার সব ক্লাসমেট আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
-সবাই তখন একসাথে বলল তুই এত্ত অলস ক্যান? কখন ফোন করলাম এত্ত লেট করলি কেন??
-আরে আর বলিস না! কোন রিক্সা নাই তাই হাটতে শুরু করলাম, মাঝ পথে এসে রিক্সা পেলাম তাই লেট হল! (আমি)
ওও! আচ্ছা চল, আজ রেল লাইনে ঘুরতে যাব।
তখন সবাই একসাথে হাটতে শুরু করলাম!
কিছুক্ষণ হাটার পরে রেল লাইনের কাছে পৌঁছালাম। তখন সবাই রেল লাইনের উপর বসে আড্ডা দিতে লাগলাম! কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর আবার রেল লাইন দিয়ে হাটতে শুরু করলাম।
-
কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলাম একজন লোক রেল লাইনের উপর শুয়ে আছে।
তখন আমরা সবাই লোকটির কাছে গেলাম! এবং আমি প্রশ্ন করলাম, ভাইয়া আপনি এখানে শুয়ে আছেন কেন???
-লোকটি কোন জবাব দিল না!
-ভাইয়ার কি মন খারাপ? (আমি)
-তখন ও লোকটি কিছু বলল না!
-ভাই, ব্যাপার টা কি একটু বলুন! কিসের কষ্ট আপনার?? (আমি)
-তখন লোকটি জবাব দিল! ভাই আমার গার্লফ্রেন্ড আমাকে ছেড়ে চলে গেছে! (অনেক টা কান্নার স্বরে)
-তখন আমি বললাম তাহলে এখানে শুয়ে আছেন কেন?? (আমি)
-বেঁচে থেকে আর কি হবে! আত্মহত্যা করার জন্য (লোকটি)
-কেন? আপনি জানেন না আত্মহত্যা মহাপাপ? (আমি)
-হুম্ম জানি! এই মুহুর্তে এছাড়া আর কি করব বুঝতে পারছি না। (লোকটি)
-আচ্ছা আপনাদের রিলেশন কত দিন ধরে? (আমি)
-প্রায় আড়াই বছর! (লোকটি)
-আড়াই বছরের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে তাই আত্মহত্যা করতে চলে আসছের??
আচ্ছা আপনার মা-বাবার সাথে আপনার সম্পর্ক কত দিন ধরে??
-এটা কেমন প্রশ্ন? জন্মের পর থেকেই! (লোকটি)
-প্রশ্নটা অন্যরকম লাগছে তাইনা! একবার ভাবুন তো মাত্র আড়াই বছরের সম্পর্কের জন্য আপনি আত্মহত্যা করতে চলে আসছেন, আর আপনার মা-বাবার আপনার সাথে জন্মের পর থেকেই সম্পর্ক। আপনি যদি মরে যান তাহলে তারা কেমন কষ্ট পাবে??
-লোকটি তখন মাথা নিচু করে ফেলল! আর কিছুই বলতে পারল না।
-
আমাদের চারপাশে এমন অনেল অনেক মানুষ আছে যারা প্রেম করে ছ্যাকা খাওয়ার পর আত্মহত্যা করতে সিদ্ধান্ত নেই! তারা কি একবার ভেবে দেখেছে যে, সে আত্মহত্যা করলে তার পিতা-মাতার কি হবে? তারা একটা মেয়েকে দুই বছর আড়াই বছর ভালোবেসে না পাওয়ার বেদনায় আত্মহত্যার পথটা বেছে নেয়, আর যে মা-বাবা জন্মের পর থেকেই আমাদের ভালোবেসে আসছে আমরা যদি এখন আত্মহত্যা করি তাহলে তাদের কি হবে!
যদি এই চিন্তাটা কেউ করে তাহলে সে কখনোই গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের জন্য আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত টা নিত না!
-
যে মা-বাবা আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখে, আমাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নিজে না খেয়ে না পরে আমাদের পরার খরচ চালায়, আর আমরা গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের জন্য আত্মহত্যা করে বসি!
আত্মহত্যা মহা পাপ! এটা জেনে বুঝেও আমরা আত্মহত্যা করি।
আসুন মা-বাবাকে মূল্য দিতে শিখি।
যাদের জন্য আমাদের এই পৃথিবীতে আসা, যাদের জন্য আজ আমরা এর বড় হতে পেরেছি আজ তাদের কথা ভূলে আমরা আত্মহ্যার পথ বেছে নেই!
আমার আর কিছুই এখানে বলার নাই!
বাকিটুকু আপনারা বুঝে নিবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন