ছোটোমামার কাছ থেকে পাঁচশো টাকা নিয়ে
দোকানে এসেছি। মেজাজটা বেশ ফুরফুরে।
কারন খরচ শেষে অবশিষ্ট টাকা, পুরোটাই আমার।
মামার জন্য একপ্যাকেট গোল্ডলিফ সিগারেট,
নুডুলস, ডিম কেনার পরেও দুইশো তিনটাকা
বেচে গেছে। একেই বলে আমার পৌষ মাস,
আর মামার সর্বনাশ! আপাতত মামার সর্বনাশের চিন্তা না
করে রাস্তায় হাটছি। আমার একহাতে বাজারের ব্যাগ,
আর এক হাতে মোবাইল। ফেসবুকে এক
সুন্দরী ললনা পেয়েছি, ওটার সাথেই চ্যাটিং করছি
আর সমান্তরাল ভাবে রাস্তায় হাটছি।
.
সুন্দরী ললনার সাথে, আমার চ্যাটিং যখন সেই
পর্যায়ে ঠিক তখনি ঘটলো বিপত্তি। একটা
মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে, রাস্তায় পড়ে
গেছি। আসলে সুন্দরী ললনার মোহে এতটাই
বিভোর ছিলাম যে, সামনের কিছুই খেয়ালই করিনি।
যাই হোক, মেয়েটাকে সরি বলবো! তার
আগেই আমার গালে উষ্ণগরম পরশ অনূভব করলাম।
মানে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই, মেয়েটা
আমার গালে কষে থাপ্পর মারছে। কানের কাছে
ভনভন শব্দ হচ্ছে। মেজাজ আমার একদম সেই
পর্যায়ে। মামার সিগারেটের প্যাকেট ছিঁড়ে,
একটা সিগারেট বের করলাম। যদিও আমি সিগারেট
খাইনা, তারপরেও ভাব নিলাম আরকি! পরক্ষণেই
মনে হল দিয়াশলাই কোথায় পাবো? তাই সিগারেটটা
মুখ থেকে নামিয়ে হাতে নিলাম। কর্কশ কন্ঠে
মেয়েটাকে বললাম ....
-- এলাকায় কী নতুন?
-- মেয়েটা ভয়ভয় করে বললো " হ্যাঁ! আসলে
মেজাজ খুব গরম ছিলো। তাই ভূল করে চড়
মারছি। প্লিজ ভাইয়া কিছু মনে করবেন না! "
-- হা হা হা! কী বললে কিছু মনে করবো না! তুমি
জানো আমি কে? আমার গায়ে হাত দিয়ে তুমি
রেহাই পাবে? ভাবলে কী করে!
-- বললাম তো সরি! আপনি চাইলে আমাকে
মেরে শোধ নিতে পারেন। প্লিজ! আমায় মাফ
করে দেন!
-- মেয়েটার মুখ ভয়ে একদম বাচ্চাদের মতো
লাগছে। যদিও আমি মজা করছিলাম, মেয়েটা আমার
এই মজাকেই সিরিয়াস মনে করে ভয়ে চুপসে
আছে। মেয়েটাকে আর কিছু বললাম না, বিদায়
দিলাম।
.
পথে শাকিলের সাথে দেখা, ওর সাথে কিছুক্ষণ
আলাপ করে বাড়ি আসলাম। বাড়ি এসেই, আমার চোখ
ছানাবড়া! দেখি রাস্তার ওই মেয়েটা আমাদের
বাসায়। তাহলে কী, আমার নামে বিচার দিতে
এসেছে? এইসব চিন্তাভাবনার মধ্যে বড় আপু
বললো, " রাজ ওর নাম অনু! আমার ক্লাসমেট। আর
এটা আমার কিউট ভাই রাজ। "
যাইহোক একটু দম পেলাম, মেয়েটার সামনে
বেশিক্ষণ থাকলাম না। ঘরে চলে আসলাম। ঘর
থেকে শুনতে পেলাম, মা মেয়েটাকে
বলছে "আমার ছেলেটা খুব লাজুক,
মেয়েদের সাথে কথাই বলেনা! "
ভাগ্যিস ওই সময় ড্রয়িং রুমে ছিলাম না, নাহলে
মেয়েটার মুখখানি দেখতে পারতাম। এইসব চিন্তা
করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি,
নিজেই বলতে পারিনা!!!
.
মেয়েটার আমাদের বাড়িতে যাতায়াত বেড়ে
গেছে। প্রত্যেকদিন সকালে আমাদের
বাড়িতে আসবে, আপুর সাথে একসাথে কলেজ
যাবে আবার একসাথে ফিরবে। প্রথমে
মেয়েটা আমাকে খুব ভয় করতো, এখন আর
করেনা। আপু কলেজে না গেলে, এখন আমি
কলেজে ড্রপ করে দেই। অনুর আর আমার
সম্পর্কটা বেশ বন্ধুর মতো। যদিও অনু আমার
থেকে দুইবছরের বড়।
.
সকাল থেকে শুয়ে আছি! কালকে রাতে অনুর
সাথে চ্যাটিং করতে করতেই রাত শেষ হয়ে
গেছে। স্বপ্ন দেখছি, আমি আর অনু হাত ধরাধরি
করে হেটে যাচ্ছি! ঠিক এই সময়েই আম্মু
দিলো ঘুমটা ভেঙে। ধুর!
"তোর আপু আজ কলেজ যাবেনা, তুই অনুকে
কলেজে দিয়ে আয় " বলেই আম্মু রান্নাঘরে
চলে গেলো। কী আর করার? যেতেই
হবে। আমার কিন্তু মোটেও খারাপ লাগছে না,
বরঞ্চ ভালোই লাগছে। অনুর সাথে কোথাও
যেতে আমার অসম্ভব ভালো লাগে!
.
অনু আর আমি পাশাপাশি হেটে যাচ্ছি। অনুর পড়নে
হলুদ শাড়ি। হলুদ আমার খুব প্রিয় কালার। অনুর চুল
গুলো খোলা থাকায় অনুকে অসম্ভব মায়াবী
দেখাচ্ছে। আমি মুগ্ধ নয়নে অনুর দিকে
চেয়ে আছি। বুকের মধ্যে ভয় নিয়ে বলেই
ফেললাম ....
-- অনু আপু! আমি তোমাকে ভালোবাসি!
-- আমিও তোমায় ভালবাসি! পিচ্চি ভাই
-- আমি তোমায় বিয়ে করতে চাই।
-- হোয়াট!!! কী বলছিস এইসব?
-- হুম! ঠিকই বলছি।
-- তুই জানিস না আমি তোর থেকে বড়?
-- হুম! জানি। মাত্র দুইবছরের বড়।
-- দুইবছর তোর কাছে মাত্র মনে হয়?
-- নয়তো কী! মহানবী যদি তার প্রথম স্ত্রী
হিসেবে বিবি খাদিজাকে মেনে নিতে পারে,
তুই কেন আমায় পারবি না। তাছাড়া শেক্সপিয়ার
থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় মনীষী
তাদের থেকে বেশি বয়স্ক মহিলাকে বউ
হিসাবে স্বীকার করেছে। তোর সমস্যা
কোথায়?
.
অনু আর দাড়ালো না। সোজা কলেজ চলে
গেলো একলাই, আমাকেও যেতে দিলো না।
বাসায় এসে শুয়ে আছি। এমন সময় আপু আসলো...
-- তুই আমার বান্ধবীরে কী বলছিস?
-- আমি আবার কী বললাম? (ভয়ে ভয়ে)
-- (প্রচন্ড কষে একটা চড় মারলো) ফাজলামি করিস
সাথে। আম্মু... আম্মু
মা এসেও অনেক বকতে লাগলো, একটা
পর্যায়ে গায়েও হাত তুললো। ভাবলাম ঝড় বোধ
হয় শেষ। ঠিক তখনি আমার আব্বু টর্নেডো
হয়ে এল। ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে সবার
সামনে মারলো। ঠিক এই সময়ই আপু বললো " ও
সিগারেট খায়। তাও আবার গোল্ডলিফ সিগারেট "
এই কথা শুনে আব্বুর সাথে আম্মুও ভূমিকম্প
চালালো। তারপর বাড়ি থেকে বের করে
দিলো। তারপর! তারপর আর কী! একটা প্রেম
শুরুর আগেই আর একটা প্রেমের অপমৃত্যু
ঘটলো!!!
দোকানে এসেছি। মেজাজটা বেশ ফুরফুরে।
কারন খরচ শেষে অবশিষ্ট টাকা, পুরোটাই আমার।
মামার জন্য একপ্যাকেট গোল্ডলিফ সিগারেট,
নুডুলস, ডিম কেনার পরেও দুইশো তিনটাকা
বেচে গেছে। একেই বলে আমার পৌষ মাস,
আর মামার সর্বনাশ! আপাতত মামার সর্বনাশের চিন্তা না
করে রাস্তায় হাটছি। আমার একহাতে বাজারের ব্যাগ,
আর এক হাতে মোবাইল। ফেসবুকে এক
সুন্দরী ললনা পেয়েছি, ওটার সাথেই চ্যাটিং করছি
আর সমান্তরাল ভাবে রাস্তায় হাটছি।
.
সুন্দরী ললনার সাথে, আমার চ্যাটিং যখন সেই
পর্যায়ে ঠিক তখনি ঘটলো বিপত্তি। একটা
মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে, রাস্তায় পড়ে
গেছি। আসলে সুন্দরী ললনার মোহে এতটাই
বিভোর ছিলাম যে, সামনের কিছুই খেয়ালই করিনি।
যাই হোক, মেয়েটাকে সরি বলবো! তার
আগেই আমার গালে উষ্ণগরম পরশ অনূভব করলাম।
মানে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই, মেয়েটা
আমার গালে কষে থাপ্পর মারছে। কানের কাছে
ভনভন শব্দ হচ্ছে। মেজাজ আমার একদম সেই
পর্যায়ে। মামার সিগারেটের প্যাকেট ছিঁড়ে,
একটা সিগারেট বের করলাম। যদিও আমি সিগারেট
খাইনা, তারপরেও ভাব নিলাম আরকি! পরক্ষণেই
মনে হল দিয়াশলাই কোথায় পাবো? তাই সিগারেটটা
মুখ থেকে নামিয়ে হাতে নিলাম। কর্কশ কন্ঠে
মেয়েটাকে বললাম ....
-- এলাকায় কী নতুন?
-- মেয়েটা ভয়ভয় করে বললো " হ্যাঁ! আসলে
মেজাজ খুব গরম ছিলো। তাই ভূল করে চড়
মারছি। প্লিজ ভাইয়া কিছু মনে করবেন না! "
-- হা হা হা! কী বললে কিছু মনে করবো না! তুমি
জানো আমি কে? আমার গায়ে হাত দিয়ে তুমি
রেহাই পাবে? ভাবলে কী করে!
-- বললাম তো সরি! আপনি চাইলে আমাকে
মেরে শোধ নিতে পারেন। প্লিজ! আমায় মাফ
করে দেন!
-- মেয়েটার মুখ ভয়ে একদম বাচ্চাদের মতো
লাগছে। যদিও আমি মজা করছিলাম, মেয়েটা আমার
এই মজাকেই সিরিয়াস মনে করে ভয়ে চুপসে
আছে। মেয়েটাকে আর কিছু বললাম না, বিদায়
দিলাম।
.
পথে শাকিলের সাথে দেখা, ওর সাথে কিছুক্ষণ
আলাপ করে বাড়ি আসলাম। বাড়ি এসেই, আমার চোখ
ছানাবড়া! দেখি রাস্তার ওই মেয়েটা আমাদের
বাসায়। তাহলে কী, আমার নামে বিচার দিতে
এসেছে? এইসব চিন্তাভাবনার মধ্যে বড় আপু
বললো, " রাজ ওর নাম অনু! আমার ক্লাসমেট। আর
এটা আমার কিউট ভাই রাজ। "
যাইহোক একটু দম পেলাম, মেয়েটার সামনে
বেশিক্ষণ থাকলাম না। ঘরে চলে আসলাম। ঘর
থেকে শুনতে পেলাম, মা মেয়েটাকে
বলছে "আমার ছেলেটা খুব লাজুক,
মেয়েদের সাথে কথাই বলেনা! "
ভাগ্যিস ওই সময় ড্রয়িং রুমে ছিলাম না, নাহলে
মেয়েটার মুখখানি দেখতে পারতাম। এইসব চিন্তা
করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি,
নিজেই বলতে পারিনা!!!
.
মেয়েটার আমাদের বাড়িতে যাতায়াত বেড়ে
গেছে। প্রত্যেকদিন সকালে আমাদের
বাড়িতে আসবে, আপুর সাথে একসাথে কলেজ
যাবে আবার একসাথে ফিরবে। প্রথমে
মেয়েটা আমাকে খুব ভয় করতো, এখন আর
করেনা। আপু কলেজে না গেলে, এখন আমি
কলেজে ড্রপ করে দেই। অনুর আর আমার
সম্পর্কটা বেশ বন্ধুর মতো। যদিও অনু আমার
থেকে দুইবছরের বড়।
.
সকাল থেকে শুয়ে আছি! কালকে রাতে অনুর
সাথে চ্যাটিং করতে করতেই রাত শেষ হয়ে
গেছে। স্বপ্ন দেখছি, আমি আর অনু হাত ধরাধরি
করে হেটে যাচ্ছি! ঠিক এই সময়েই আম্মু
দিলো ঘুমটা ভেঙে। ধুর!
"তোর আপু আজ কলেজ যাবেনা, তুই অনুকে
কলেজে দিয়ে আয় " বলেই আম্মু রান্নাঘরে
চলে গেলো। কী আর করার? যেতেই
হবে। আমার কিন্তু মোটেও খারাপ লাগছে না,
বরঞ্চ ভালোই লাগছে। অনুর সাথে কোথাও
যেতে আমার অসম্ভব ভালো লাগে!
.
অনু আর আমি পাশাপাশি হেটে যাচ্ছি। অনুর পড়নে
হলুদ শাড়ি। হলুদ আমার খুব প্রিয় কালার। অনুর চুল
গুলো খোলা থাকায় অনুকে অসম্ভব মায়াবী
দেখাচ্ছে। আমি মুগ্ধ নয়নে অনুর দিকে
চেয়ে আছি। বুকের মধ্যে ভয় নিয়ে বলেই
ফেললাম ....
-- অনু আপু! আমি তোমাকে ভালোবাসি!
-- আমিও তোমায় ভালবাসি! পিচ্চি ভাই
-- আমি তোমায় বিয়ে করতে চাই।
-- হোয়াট!!! কী বলছিস এইসব?
-- হুম! ঠিকই বলছি।
-- তুই জানিস না আমি তোর থেকে বড়?
-- হুম! জানি। মাত্র দুইবছরের বড়।
-- দুইবছর তোর কাছে মাত্র মনে হয়?
-- নয়তো কী! মহানবী যদি তার প্রথম স্ত্রী
হিসেবে বিবি খাদিজাকে মেনে নিতে পারে,
তুই কেন আমায় পারবি না। তাছাড়া শেক্সপিয়ার
থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় মনীষী
তাদের থেকে বেশি বয়স্ক মহিলাকে বউ
হিসাবে স্বীকার করেছে। তোর সমস্যা
কোথায়?
.
অনু আর দাড়ালো না। সোজা কলেজ চলে
গেলো একলাই, আমাকেও যেতে দিলো না।
বাসায় এসে শুয়ে আছি। এমন সময় আপু আসলো...
-- তুই আমার বান্ধবীরে কী বলছিস?
-- আমি আবার কী বললাম? (ভয়ে ভয়ে)
-- (প্রচন্ড কষে একটা চড় মারলো) ফাজলামি করিস
সাথে। আম্মু... আম্মু
মা এসেও অনেক বকতে লাগলো, একটা
পর্যায়ে গায়েও হাত তুললো। ভাবলাম ঝড় বোধ
হয় শেষ। ঠিক তখনি আমার আব্বু টর্নেডো
হয়ে এল। ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে সবার
সামনে মারলো। ঠিক এই সময়ই আপু বললো " ও
সিগারেট খায়। তাও আবার গোল্ডলিফ সিগারেট "
এই কথা শুনে আব্বুর সাথে আম্মুও ভূমিকম্প
চালালো। তারপর বাড়ি থেকে বের করে
দিলো। তারপর! তারপর আর কী! একটা প্রেম
শুরুর আগেই আর একটা প্রেমের অপমৃত্যু
ঘটলো!!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন