শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

"নিষ্পাপ প্রাণের কান্না"

পশ্চিম আকাশে সূর্য অস্ত হতে থাকে, নীড় হারা পাখি গুলো আকাশে-বাতাসে উড়ে উড়ে নীড়ে যেতে থাকে। ব্যস্ত শহরের মানুষ গুলো জীবিকা শেষ করে কেউ নিজের গাড়ি চড়ে, আবার কেউ অন্যের গাড়ি চড়ে বাসায় ফিরতে থাকে।
কিন্তু একটা ছেলের কোন তাড়া নেই, কোন চিন্তা নেই, কোন ভাবনাও নেই, সে তার মত করেই চলছে। শুধু তার একটাই চিন্তা, একটাই ভাবনা, কিভাবে একটা বোতল তার ব্যাগে ভরতে পারবে। সে একা নয়, তার মত এরকম আরও অনেক ছেলে-মেয়ে এভাবে খুঁজে বেড়াচ্ছে। কারণ বোতল গুলো তাদের মালিকের কাছে জমা দিলে কিছু টাকা পাবে সেই টাকা দিয়ে তাদের ক্ষুুধার্ত পেট গুলো একটু হলেও ঠান্ডা করতে পারবে।

ধীরে ধীরে সন্ধা হয়ে যায়। পাখিরা গাছে বসে কিচিরমিচির করতে থাকে। কিছু মানুষ বাসায় চলে যেতে থাকে। আর কিছু মানুষ বিভিন্ন কাজে আটকে থাকে। বিভিন্ন মসজিদ থেকে আযানের ধ্বনি শুনা যেতে থাকে।
এখন শীতকাল, তাই আস্তে আস্তে কুয়াশাও পড়তে থাকে।কিন্তু এক শ্রেণীর মানুষ ছাড়া প্রায় প্রত্যেকের গায়েই দামী বা কম দামী শীতের পোশাক পড়া থাকে।
.
ঐ ছেলেটা বোতল খুঁজা শেষ করে মালিকের দোকানে যেতে থাকে। হঠাৎ ডাসটবিনের পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ শুনে তার হাঁটার গতি থামিয়ে দেয়।
সে কাছে যেতেই দেখে একটা বাচ্চা মেয়ে কান্না করতেছে। মেয়েটার কান্না দেখে তাদের সবার চোখে পানি এসে পরে।কারণ তারাও যে একই পথের পথিক ছিল।
তারপর ঐ ছেলে ও আর একটা মেয়ে বাচ্চটাকে নিয়ে বস্তিতে ফিরতে থাকে, আর অন্যরা বোতল গুলো জমা দিতে মালিকের কাছে যেতে থাকে।

গল্পের ছেলেটার নাম আকাশ। তার বয়স মাত্র দশ বছর। এখন তার স্কুলে পড়ার কথা কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সে রাস্তার ছেলে পরিচিতি লাভ করে। তার সাথে যে ছেলে-মেয়ে গুলো আছে তারাও তার মতই; কারো বয়স ছয়, কারো সাত,কারো আট, আবার কারো নয়।
কারো নাম রহমত, কারো নাম বেলী, কারো নাম আরিফ, কারো নাম আলী। আকাশকে পেয়েছিল এক মহিলা। ঐ মহিলাকেই সে মা বলে ডাকতো এবং মা বলেই চিনতো। কিন্তু একদিন তার এই মা তাকে বলে
.
- বাজান! বাজান! একটা কথা কইতাম, কিন্তু কথাটা যে তরে কিভাবে কই!
তখন সে বলে
- কও মা কি কইবা
- কথাটা শুনে তুই মন খারাপ করতে পারবি না, কথা দে
- আচ্ছা মন খারাপ করতাম না।
- আমি তোকে একদিন রাস্তা থেকে পাইছিলাম।
এই কথাটা বলার সময় উনার গলাটা কিরকম যেন ধরে আসে ও চোখ থেকে টপটপ করে পানি ঝরে।
কথাটা শুনে সে শুধু তার মায়ের দিকে মলিন মুখে তাকিয়েই ছিল, ভাল বা মন্দ কিছু বলতে পারেনি।
.
ঐ-দিন সে একা একা চিৎকার করে বাবা-মা বলে ডেকে ডেকে কেঁদেছিল। তার এই কান্না কাউকে দেখতে দেয়নি। কিন্তু তার এই মায়ের কাছে লুকাতে পারেনি। তার কান্না দেখে, দূর থেকে তার মাও সাথে সাথে কেঁদেছে। তখন দূর থেকেই বলতে থাকে
- বাজান! ও বাজান! আর কাঁদিস না, তোর কান্না না আমি সহ্য করতে পারছি না, বাজান না ভালা আর কাঁদিস না।
কিন্তু এই কথা তো আকাশের কানে যায় না, তাই তার কান্নাও থামে না।
.
ঐ-দিন এর পর থেকে সে কি-রকম যেন হয়ে যায়। কারো সাথে ঠিকমত কথা বলতে পারতো না, কারো সাথে ঠিকমত চলতে পারতো না। কেমন যেন পাল্টে যায়, কিভাবে যে পাল্টে যায়, সে নিজেও জানে না, নিজেও বোঝে না।

মাঝে মাঝে আকাশ একা একাই চিন্তা করতো তার বাবা-মা দেখতে কি রকম ছিল। আবার কখনো তার বাবা-মাকে নিয়ে কল্পনার জগতে হারিয়ে যেত।
সে কল্পনাই দেখতো তার বাবা-মা তাকে নিয়ে গল্প করতেছে, সে গল্প শুনে শুনে ঘুমানোর চেষ্টা করতেছে। আবার দেখতো, তাকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছে, ঘুরা-ফেরা করছে, এটা সেটা কিনে দিচ্ছে এবং এটা সেটা খাইয়েও দিচ্ছে। আবার বাসায় ফিরার পথে তার সাথে মজা করছে।
যখন কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে আসতো। তখন সে অনুভব করত তার চোখ বেয়ে পানি পরছে। তারপর রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে চিৎকার করে বাবা-মা বলে ডাকতো আর চোখের পানি ফেলতো।
.
সে কেঁদে কেঁদে বলতো
- মা! ও মা! বাবা! ও বাবা! তোমরা কই বল? ও মা ও বাবা! তোমাদেরকে না দেখতে খুব ইচ্ছা করতাছে। একবার দেখা দিবে এই ছেলেটাকে! দেও না একটা বার দেখা একটা বার দেখা দিলে কি এমন দোষ হবে? কি এমন ক্ষতি হবে? ও মা! ও বাবা! বল না?
.
আচ্ছা বাবা! আচ্ছা মা! একটা কথা আমারে কইবা আমার কোন দোষের জন্য আমারে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেয়েছিলে! আমার কোন অপরাধের জন্য এভাবে বড় হতে হচ্ছে? এই কথাটা একবার বল বা(কেঁপে কেঁপে কেঁদে ওঠে আর এভাবে বলতে থাকে)
.
কিন্তু তার বাবা-মা কি করে শুনবে! কি করে বলবে! কি করে দেখা করবে! তাদের তো এই সময় নেয়। এসব নোংরা কাজ করার পরেও তাদের মনে কোন অপরাধ বোধ কাজ করছে না। মরলে কতটুকু শাস্তি পাবে এটাও তারা ভাবছে না, চিন্তা করছে না। কারণ তারা তো আছে রং তামাশায় মেতে।
.
তার এই মা দূর থেকে সব দেখতো আর নীরবে চোখের জল ফেলতো। কিছু বলতে পারতো না, কিছু করতে পারতো না, আবার মুখ বুজে নীরবে সহ্যও করতে পারতো না। এভাবে প্রায় দিনেই আকাশ কাঁদতো আর উনি দূর থেকে চোখের জল ফেলতো।

আকাশ ও বেলী বাচ্চাটাকে নিয়ে এসে তার মাকে ডাকতে থাকে।
- মা! মা! ও মা! তাড়াতাড়ি আইসা দেইখা যাও।
তার মা ভিতর থেকে বলে
- কিরে বাজান কি হইছে?
- আইসা দেইখা যাও কারে আনছি।
তার কোলে বাচ্চা দেখে তার মা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। উনি দেখেন যে তার কোলে বাচ্চাটা শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে, ভাই বোনের অনেক দিন দেখা হয়নি। তাই আজ ভাইকে পেয়ে চুপ হয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে আছে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে সব কিছু খুলে বলে।
তারপর উনি বাচ্চাটার সেবা যত্ম করতে থাকেন। কি সুন্দর মুখ, কি সুন্দর চোখ, কি সুন্দর চেহারা দেখলেই যেন তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। দেখলেই যেন আদর করতে ইচ্ছা করে।
.
কিন্তু এই রকম একটা বাচ্চাকে কিভাবে ডাসটবিনে ফেলে দিতে পারে আকাশের মা ভেবে পায় না। এই বাচ্চাটার কোন দোষের জন্য কোন অপরাধের জন্য তাকে এভাবে ফেলে দিতে হয়েছে! তিনি এটাও ভেবে পান না। তিনি তো তার কোনো দোষ দেখতে পাচ্ছেন না। তাহলে কেন তাকে ফেলে দিয়ে গেল? তিনি যা মনে করেন সব দোষ তার বাবা-মার ছিল।
তারা নোংরামী ভালবাসায় জড়িয়ে পড়ে।একটু সুখের জন্য অসামাজিক কাজ করে। তারপর পাপের ফলকে ডাসটবিনে ফেলে, মেরে ফেলে বা অন্যকিছু করে। আর যখন নিজের ভুল বুঝতে পারে তখন তারা আত্মহত্যা করে বা জীবন্ত লাশ হিসেবে বেঁচে থাকে। কিন্তু এসবের মানে কি? কেন এসব করতে হয়? তিনি ভেবে পান না।

গভীর রাতে বাচ্চাটা কান্না আরম্ভ করে। কিন্তু তখন এই কান্না কেউ থামাতে পারে না। তখন আকাশ কেঁদে কেঁদে বলতে থাকে
- বোন! এই বোন! কান্দিছ না রে কান্দিছ না। আমাদের যে কাঁন্দন সাজে না, কেন তুই বুঝিস না! এই বোন কান্না করিস না, তোর কান্না না যে আমি সহ্য করতে পারছি না।
- কিন্তু সে কান্না করেই যাচ্ছে তার কোন কথা শুনছে না। কি করে শুনবে? কি করে বুঝবে? তার যে শুনার ও বোঝার সে বয়স হয়নি।
তখন আকাশ তার মাকে বলতে থাকে
- মা! ও মা! বোনকে বল না কাঁন্দা বন্ধ করতে, বোন কি বোঝে না! তার কান্না আমি সহ্য করতে পারছি না।
তখন তার মা বলতে থাকে
- বাজান! ও বাজান! কত করেই তো কইতাছি; কিন্তু সে তো কোন কথায় শুনে না, বোঝে না। কি করেই শুনবে বা কি করেই বুঝবে সে ক্ষমতা তো তার হয়নি।
.
সকালে আকাশের ঘুম ভাংলে ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে, তার এই বোন তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে মুখটা ছুঁয়ে দিতেই একটা হাসি দেয়। এই হাসিটা দেখে তার মনটা আনন্দে ভরে যায়।তারপর এই বোনের সাথে খেলায় মেতে উঠে।তার বোনও তার সাথে খেলতে শুরু করে।
.
আকাশ তার এই বোনের নাম দেয় মায়া। কারণ তার চেহারাটার মাঝে যে অনেক মায়া ছিল।মায়া বলে ডাক দিতেই তাকিয়ে একটা হাসি দিত। তখন তার যে কতটুকু ভাল লাগতো বলে বোঝাতে পারবে না।এখন এই বোনকে নিয়ে তার একটা নতুন পৃথিবী তৈরি হয়ে যায়।
.
দেখতে দেখতে দিন গুলি কেটে যেতে থাকে। মায়া বড় হতে থাকে। কখনো ভায়ের সাথে, কখনো মায়ের সাথে, আবার কখনো অন্যদের সাথে দুষ্টামি করতো , খেলা করতো। তারাও তার সাথে সাথে দুষ্টামি করতো, খেলা করতো, আনন্দে মেতে থাকতো। কিন্তু কোন কোন সময়ে সে যখন কান্না আরম্ভ করতো তখন তার এই কান্না কেউ থামাতে পারতো না। তখন তার দেখাদেখি সবাই কাঁদতো।

তখন তার ভাই বলতো, বোন! এই বোন! কান্না করিস না। কেন কান্না করিস? তুই বুঝিস না তুই কাঁন্না করলেও তোর বাবা-মা শুনবে না, তোকে দেখতে আসবে না। যদি তোকে দেখতই তোর জন্য মায়া হতোই তাহলে কি তোকে ফেলে দিয়ে যেত?
মা! এই মা! বোনকে বল না কান্না না করতে, সে কেন বোঝে না তার কান্না সাজে না। ও মা! তাকে বল না! এভাবে আকাশ বলে আর কাঁদে।তার সাথে তার মা ও অন্যেরাও কাঁদে।
.
এভাবেই সুখে-দুঃখে, হাসি-আনন্দে মায়ের আদর ভালোবাসা শাষণ পেয়ে তারা বড় হতে থাকে।কিন্তু প্রকৃত বাবা-মায়ের আদর ভালোবাসা শাষণ পায় না।কোনদিন পাবে কিনা সেটাও তারা জানে না।

কিছু_মুহূর্ত

পার্কে বসে কিছু সময়ের জন্য সতেজতা অনুভব করছি । পাশ ফিরে দেখি এক দাড়ি,গোঁফ ওয়ালা মানুষ বসে অাছে । ভাবলাম তার সাথে কথা বলে কিছুটা সময় ব্যয় করা যায় । 
তার দিকে তাকিয়ে বললাম ,
-ভাই কি করছেন ? কেমন অাছেন ? 
- অালহামদুলিল্লাহ ঠিক ঠাক। অাপনি ? 
অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম মানুষটা পুরোপুরি শুদ্ধ ভাষায় কথা বলছে। মানুষ টি শিক্ষিত বলে মনে হল । শিক্ষিত একজন মানুষ এই অবস্থায় অাছে ভাবতেই খারাপ লাগছে। 
অামি তার দিকে তাকিয়ে বললাম ,
- অামিও ভালো । তা ভাই অাপনি তো অনেক শিক্ষিত । এই অবস্থা কেন? 
 - গল্পটা শুনবেন ? অামি একজন সাবেক লেখক । মজা পাবেন । 
- বলুন শুনি । 
- সময়টা তখন ও প্রাপ্তিত কিছুর অানন্দে মুখরিত। প্রাপ্তি টি অপ্রকাশিত। নতুন করে স্বপ্নের বুননে সে নিজেকে ব্যাকুল করে তুলেছে। কারন স্বপ্ন বুননের ই সময় সেটি। নিজেকে অপ্রকাশিত রেখে স্বপ্নের প্রকাশনায় তার ব্যস্ততা। এমন ই একজন স্বপ্ন বুনক তার জীবনের অপ্রত্যাশিত কাহিনি শুনাবে। 
বিকেল বেলা ফেসবুকে লগ ইন করে দেখি একটি ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট । সাধারনতই অামি কোনো অাইডি ঝুলিয়ে রাখিনা । হয়ত confirm করি নয়ত not now করে দেই। পরিচিত ছাড়া একসেপ্ট করিনা , অার কিছু গ্রুপের সদস্য ছাড়া এড দেইনা । 
অাইডি টি অামি খুব ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করে বুঝতে পারি অাইডি টি অামার পরিচিত একটি গ্রুপের। তাই একসেপ্ট করি। কিছুক্ষন পরেই মেসেজ দিয়ে কথা শুরু হয় । কথাগুলো এমন ছিল যেন খুব পরিচিত একজন কথা বলছে। সাধারনত মেয়েরা এত ফ্রি ভাবে কখনও কথা বলেনা। কিন্তু সে এরকম না। 
মেয়েটির নাম শর্মি । 
অামি গল্প লিখি । অার সে অামার গল্প পড়ে। বলতে গেলে বলা যায় , ভার্চুয়াল পাঠক । ফেসবুকে কনভারসেশনে অামি তাকে জিঞ্জেস করি যে, “ সে কেন অামাকে এড দিয়েছে? ” 
সে বলল, “ অামার লেখা গল্প তার ভালো লাগে। ” 
এভাবেই কথা বলার সূচনা। 
তখন তার সাথে কথা বলা শুধু গল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । তার নিজস্ব বিষয়গুলো সম্পর্কেও ধারনা নেওয়া হয়েছে । সে এতদিন কে ছিল , কি ছিল , কেন ছিল ! সবকিছুই জানা হয়েছে। শুধু তাই নয় দুজনের সুখের-দুঃখের সময়গুলো সম্পর্কেও পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ ও সম্পন্ন। 
 তার সাথে পরিচয় হওয়ার পর বুঝলাম। সে অামার মনের মতো একজন। তখন অার কারও সাথে কথা ও বলতাম না। সারাদিন শুধু শর্মির সাথে কথা হত। প্রথম পর্যায়ে শুধু ফেসবুকে কথা হলেও মাঝের একটা সময়ে ফোন নাম্বার অাদান প্রদানেও কথা হতে শুরু করে। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে কখনও কথা হয়নি। 
শর্মির অাচার-ব্যবহার ছিল কিছুটা পাগলি টাইপের। নিজেকে সে সবসময় একজন চঞ্চলা রুপে তুলে ধরত। তার চঞ্চলতা যে কারও মনে দাগ কেটে দিবে। 
অামি অামার বন্ধু হিসেবে কিংবা মনের মানুষ হিসেবে যেমন একজন মানুষ খুঁজতাম , শর্মি ঠিক সেরকম ই। কয়েকদিনের মধ্যেই তার অার অামার মাঝে একধরনের বন্ধন সৃষ্টি হয়ে যায় । বন্ধনটির কথা শুধু অামিই জানতাম। ব্যাপারটি পুরোপুরি অদৃশ্য এবং অপর পক্ষের কাছে অনুভবহীন ছিল । 
অামি নিজেকে যেভাবে অানন্দ দিতে চাই , মনের কিছু সুখ-দুঃখের কথা প্রকাশ করতে চাই , ঠিক সেভাবে শর্মি ও চায় । তার চাওয়া পাওয়ার গ্রাফ টুকু সম্পর্কে বিশদ ধারনা না থাকলেও এতটুকু বুঝতে পারি যে, দুঃখের রেখাটির উচ্চতা বেশি ছিল । অামার গ্রাফ সে লক্ষ্য করেছে কি না কখনও তা ঠিক জানিনা। হয়ত লক্ষ্য করলে বুঝতে পারত অামার ও গ্রাফ তার গ্রাফের মতোই। স্বল্প সময়ের গল্পের মাঝে সে অামাকে কতটুকু বুঝেছে শুধুমাত্র সে ই জানে। 
শর্মি অামার থেকে এক বছরের বড় ছিল । অামি তখন অনার্স ১ম বর্ষে এবং সে ২য় বর্ষে । যদিও অামাদের মাঝে বয়সের পার্থক্য ছিল তবুও অামরা অামাদের মেন্টালিটির গভীর কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করিনি। 
একটা সময়ে অামি ভার্সিটির কিছু কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। যার কারনে ফেসবুকে অাসা হত না। ফোন নাম্বার থাকলেও ফোন দিতাম না। কারন শর্মির সাথে কথা বলতে শুরু করলে অামি কথা হারিয়ে ফেলি । যেন অামার কাছে কোনো টপিক নাই তার সাথে কথা বলার। সব শেষ করে ফেলেছি। তার ব্যাপারে সবকিছুই জানি। অথচ তাকে প্রতিটা মুহূর্তে অনুভব করার চেষ্টা করি । অবসর সময় গুলোতে তাকে নিয়ে সারাক্ষন ভাবতে থাকি। 
সবসময়ের জন্য মনে হত শর্মি শুধু অামার জন্যই জন্মেছে। তার প্রতিটা সুখের কারন যদি নিজে হতে পারতাম নিজেকে সবচেয়ে ভাগ্যবান বলে মনে হত। 
শর্মি তার সব ব্যাপার অামাকে নির্দ্বিধায় বলেছিল । সে ধুমপান করত, সে ড্রিংকস করত, সে খুব চঞ্চল, সে কাউকে মারতে ও দ্বিধাবোধ করত না , তার অাগে একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল । তার সবগুলো বৈশিষ্টের বিপরীত চরিত্রের মানুষ অামি । তবে সে নিজেকে মজা দেওয়ার জন্য যা যা করে অামিও ঠিক সেভাবেই দিতে চাই । কিন্ত অামি কারও কখনও সাহায্য পাইনি কিংবা এমন কোনো মানুষ কে দেখিনি। 
শর্মি ছিল এমন ই একজন । অামার বিষাদময় মুহূর্তগুলো সে কিভাবে অানন্দে মুখরিত করে তুলত কখনও বুঝতে পারিনি । বুঝতে চাই ও না। শুধু সেভাবেই তাকে সারাজীবন পেতে চাই । 
অামি বুঝতে পারি অামি ধীরে ধীরে শর্মির উপর দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। নিজেকে সংযত রাখা দরকার। কারন তার সাথে সম্পর্কটি শেষ কখনও ভালো হবে না । সমাজ অামাদের মেনে নিবে না । 
শর্মিও হয়ত কখনও অামাকে মেনে নিবে না। এমন ও হতে পারে সে অাগে ই কাউকে মন দিয়ে বসে অাছে। অামি তাকে বললে সে খুব রাগ করতে পারে, কথা বলা বন্ধ করে দিতে পারে , অামাকে সে কখনও ই অার মন থেকে গ্রহন করতে পারবেনা। 
তাই তাকে নিজের মনের অনুভূতি গুলো অনেকদিন ধরে বলতে চেয়েও বলতে পারিনা। সকল কষ্ট বুকে পাথর চাপা দিয়ে ঢেকে রেখেছি শুধু তাকে হারানোর ভয়ে। নিজেকে বুঝাতে চেষ্টা করি, “ শ্রাবন , তুমি শর্মির জন্য নও। নিজেকে গুটিয়ে রাখো । নিজেকে সুপ্ত রাখলেই কষ্টটা একদিন কমে যাবে। প্রকাশ করলে সেটি ধীরে ধীরে বাড়তেই থাকবে। ” 
অামি ফেসবুকে প্রবেশ করা বাদ দিয়ে দিলাম। তার সাথে কথা যেন না বলতে পারি ! স্বল্প মুহূর্তের জন্য ঢুকে অাবার বের হয়ে যাই। তাকে ভুলে থাকার কঠিন প্রচেষ্টা চলছে। কিন্তু তবুও নিজেকে অার কতটুকু ধৈর্য্য ধারন করে রাখা যায় ! পারিনি ধৈর্য্যের মূল্য রাখতে । 
অামি নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারিনি। 
রাতে বেলকুনিতে বসে জোৎস্না দেখছিলাম। কাজটা অামি নিয়মিত ই করি। নিজেকে ফ্রেশ রাখার একটা মাধ্যম বলা যায় । সেই রাতে অামি নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করে ফেলি তার কাছে। 
 খুব ভয় লাগছিল সে কি করবে না করবে, সে কি ভাববে না ভাববে , কি বুঝবে না বুঝবে ভেবে। মনে হচ্ছিল খুব বড় অপরাধ করছি । 
সে মেসেজ মেসেজ পেয়ে বলে, “ সত্যিই ? ”
অামি মেসেজ দেই , “ হ্যাঁ সত্যি । ” 
সে মেসেজ দিয়ে অামাকে বুঝিয়ে বলে, “ এমনটা হয় । কাউকে ভালো লাগার বিষয়টা খুব অপরাধের কিছু না । ভালো লাগতেই পারে । তবে কিছু দিন দেখবে তোমার উপন্যাসের অাদিবার মতো এমন কাউকে পেয়ে অামায় ভুলে গেছ। ” 
অামি অার নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি। তার মেসেজ দেখে অামার চোখের অশ্রু ঝর ঝর করে বইতে শুরু করে নিরবে। একটা মানুষ কতটুকু অনুভূতি নিয়ে কাউকে ভালোবাসলে এভাবে অশ্রুধারা বইতে পারে সেটা অামার জানা নেই। 
অামি তাকে মেসেজ দিয়ে বলি, “ অামি জানি অামাদের মাঝে সেরকম সম্পর্ক কখনও গড়ে উঠা সম্ভবনা । না তুমি অামাকে মেনে নিবে , না সমাজ অামাদের মেনে নিবে। তাই এর চেয়ে বরং তোমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে নিজেকে গুটিয়ে রাখাই ভালো । কিন্তু অামি তোমাকে প্রচন্ড পছন্দ করি এবং ভালোবাসি। সেটা হয়ত কখনও ভুলে যাওয়া সম্ভব না। কারন , অন্য কারও মতো অামি মন নিয়ে খেলা করিনা। ” 
সে মেসেজ দেখে প্রচন্ড রাগ করে বলে, 
 “ তুমি কখনও কথা বলা বাদ দিবে না। যদি দাও তোমাকে অামি মেরে ফেলবো বলে দিলাম । তুমি একক ভাবেই অামাকে ভালোবাসবে। কোনো সমস্যা? ” 
অামি কাদব না হাসব বুঝতে পারছিনা। 
তবে ক্ষানিকটুকু না হেসে পারলাম না । তবে অামি জানি যে সে অামার জীবনে এলে, অামার অানন্দের সীমা থাকবেনা। তার চঞ্চলতা , পাগলামি সব কিছুই অামাকে মুগ্ধ করেছে। 
অামি অাবারও মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে বলি, 
 “ একক ভালোবাসায় কোনো সমস্যা নেই । তবে সারাজীবন এক ধরনের অাকাঙ্খা থেকে যায় । ”
 .
অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল কথার মাঝে । বুঝতেই পারিনি। শর্মির সাথে কথা বললে মনে হয় সময় অালোর গতিতে চলে । পরের দিন ক্লাস ছিল দুজনের ই তাই অার কথা না বাড়িয়ে ঘুমোতে যাই। তবে সারারাত ঘুম হয়নি। একধরনের অাহাকার সৃষ্টি হয়েছিল মনে। 
.
পরের দিন ঠিক করে ফেলি একটা গল্প লিখব অামাদের ঘটনাগুলো নিয়ে । সারাদিন তার জন্য অপেক্ষা করছিলাম এমনকি ক্লাসেও মনযোগ দিতে পারছিলাম না। তাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই ক্লাসের সময় কেটে যায় । 
বাসায় ফিরে তাকে মেসেজ দিয়ে বলি, “ তোমাকে নিয়ে গল্প লিখব । বাস্তব কাহিনি নিয়ে । ” 
সে রিপ্লাই দিয়ে বলে, “ সত্যি নাকি? তাহলে তুমি নায়ক হবে অবশ্যই । অার গল্পের শেষ যেন অানন্দের হয় । অার গল্পে অামাকে পারলে মেরে ফেলিও । ” 
তার কথা শুনে অামার বুকে ব্যাপক অাহাকারের সৃষ্টি হয় । মনে হয় চরম খরায় মাটি ফেটে চির চির হয়ে গেছে। কিছু সময়ের জন্য কল্পনা করলাম , “ যদি সত্যিই এমন হয় তাহলে অামার কি হবে? কিভাবে বাচবো অামি ? তার অাশায় তো বেচে থাকা । তাকে হারিয়ে সকল অাশা, স্বপ্ন , অনুভূতির মৃত্যু ঘটবে। তাহলে অামিই বা বাচব কিভাবে ? ” 
এত কিছুর চিন্তার পর তার মেসেজের রিপ্লাই দিতে অনেক দেরি হল। 
অামি তাকে বুঝিয়ে বললাম ,“ তুমি কি পাগল হইছ ! তোমাকে মারবো কেন ! অামার কি হবে তখন? ? অার গল্প লিখার অাগে সব কিছু সাজানো থাকে। এখন চেঞ্জ করলে সব কিছু চেঞ্জ হয়ে যাবে । ” 
সে বাধ্য মেয়ের মতো বলল, “ অাচ্ছা গল্প লেখা শেষ হলে পড়তে দিও । ” 
গল্প লিখা শেষ করে তাকে পড়তে দিলাম । সে পড়ল । কিছুটা তারিফ করল এবং সাথে দুঃখ প্রকাশ করল । কারন গল্পের শেষ দুঃখের ছিল। কি জানি গল্পটি পড়ে হয়ত সে কেঁদেছিল। কিন্তু সেটি লুকিয়ে রেখেছিল । উল্টোটাও হতে পারে। 
সেদিন গল্প নিয়ে কিছু কথা বলে বিদায় নিলাম তার কাছে । কারন অামার পরের দিন ক্লাস ছিল সকাল ৮ টায় । ব্যাচেলর দের জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠা খুব কষ্টকর একটা ব্যাপার। 
সকালে উঠে অামি ফেসবুক অাইডি ডিএক্টিভেট করে, ফোন থেকে সিম কার্ড খুলে ভেঙ্গে ফেলি । অামি জানি শর্মি অামাকে কিছু বলতে পারছেনা। নিজেকে সে অালাদা প্রমান করতে চাইছে। কিন্তু সেটা তার জন্য কষ্টকর হচ্ছে। যাকে ভালোবাসি , তাকে কিভাবে কষ্ট দেই! তাই তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই । 
তবে অামি তাকে না দেখে থাকতে পারব না। তাই ঠিক করলাম ঢাকায় চলে যাবো, গিয়ে অামি তার কলেজের ভিক্ষা করব । সে কলেজ থেকে বের হলে প্রতিদিন দুবার অন্তত দেখা হবে সেটাই বা কম কিসে ! 
শর্মি সিদ্ধশ্বরী গার্লস কলেজে পড়ত । 
 অামি সেদিন রাতেই চলে অাসি তার কলেজের সামনে । প্রথম কয়েকদিন তার সামনে যাইনি । দূর থেকে চেয়ে দেখেছি তাকে । শুধু দর্শনেই মনে খুশির ঢেউ বইয়ে গিয়েছিল। 
কয়েকদিন কলেজের অাসে পাশের কয়েকটি হোটেলে কাজ করে নিজের চেহারার পরিবর্তন নিয়ে অাসি । ততদিনে মুখে দাড়ি , গোঁফ দিয়ে ভরে গেছে। কেউ চিনতে পারবে না । 
 অামি অামার পরিবার থেকে পুরোপুরি বাইরে। হয়ত তারা অনেক খোঁজ করেছে । ভার্সিটি থেকেও হয়ত নাম কেটে গেছে। 
অামি জানি তাকে অামি কখনও পাবোনা । কিন্তু তাকে ছাড়া অামিও সুখ নিয়ে বাঁচব না । তাই এভাবেই বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে কষ্ট হবেনা। 
এভাবেই চলতে চলতে অামি তার বাসা ও চিনে ফেলি। নিয়মিত তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখতাম। 
তিন বছর পরে, 
শুনতে পাই , তার বিয়ে । ছেলের বাসা মানিকগঞ্জ । ছেলে পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার । শর্মির জীবন এখন সুখ অার সুখ । অামি কে ছিলাম সেটা হয়ত মনেও থাকবে না। সুন্দর এক সংসার হবে । কিছুদিন পরে ফুটফুটে দুটি বাচ্চা হবে। 
অামি তখন শর্মিদের বাসার অাশেপাশে থাকা শুরু করি। সেখানেই ছোটখাটো এক ওয়ার্কশপের দোকানে কাজ করি। অার বেলকুনির দিকে তাকিয়ে থাকি কখন সে বের হবে । মায়াবী মুখ খানি একটু দেখতে পারব । 
কিছুদিন পরে শর্মির বিয়ে হয়ে যায় । অামিও তার শশুড় বাড়ির এলাকায় থাকা শুরু করি । 
অামি বুঝতে পারিনি সে অামাকে প্রতিটি জায়গায় লক্ষ্য করেছে কিন্তু কিছু বলেনি । 
.
.
একদিন ভোরে অামি ঘুমোচ্ছিলাম হোটেলের একটা বেঞ্চে । সে ডেকে তুলে অামাকে। 
অামি হকচকিয়ে উঠে বসে বলি, 
 - কে অাপনি ? 
সে রাগান্বিত চোখ নিয়ে বলল, 
- কি মনে হয়? কিছু বুঝিনা অামি? 
- কি বুঝেন ? 
- তুমি শ্রাবন । 
অামি অাবার ও অবাক হলাম । কিছু বললাম না। 
শর্মি অাবারও বলল, 
- তুমি এখান থেকে চলে যাবে । তোমাকে যেন অার এই এলাকায় নি দেখি । এখন তো বিয়ে হয়ে গেছে অামার । অার দেখতে হবে না। তুমি একটা কাপুরুষ । I hate you so much. 
অামি অাবারও কিছু বললাম না । শুধু ক্ষানিক ক্ষন চেয়ে রইলাম তার মুখের দিকে । এতদিনের ক্রন্দনে চোখের অশ্রু হয়ত শুকিয়ে গিয়েছে । তাই অার চোখের অশ্রু দেখা গেল না। 
অামি নিরবে বাধ্য ছেলের মতো সব ছেড়ে চলে অাসি ঢাকায় । অনেক অাত্নীয় থাকার পর ও কারও বাসায় যাই নি। এভাবেই পার্কে বসে, শুয়ে দিন কেটে যায় । 
.
অামি অার কিছু বলতে পারিনি । দেখছি শ্রাবন নামের ভিক্ষুক টা কাঁদছে । তার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ছে, তাকিয়ে অাছে অদৃশ্য কোনো দিকে। অামি তাকে কিছু টাকা দিলাম । সে নির্দ্বিধায় হাত বাড়িয়ে টাকা নিল । 
জড়িয়ে ধরে বললাম, “ ভালো থাকবেন ভাই। অাপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি । ” 
চলে অাসছি অামি । মানুষটি হয়ত অাবারও কাঁদছে। তার বুকে হয়ত অসীম কষ্ট বিদ্যমান । সুখে থাক সে এই কামনা ই করি ।

একটি কালো মেয়ের বিয়ে

-ক্লাস করে বাসায় ফিরছি।রাস্তায় অামার এক বন্ধুর সাথে দেখা।ওরে অামি মটু ডাকি।
: কিরে বাসায় যাবি না?? (অামি)
: তোর জন্য দাড়াই রইছি। (মটু)
: কেন??
: বাসায় চল।
: কেন বলবি তো???
: অামার বোনকে অাজ প্রথম দেখতে অাসবে।
: ও অাচ্ছা অাগে বলবিতো অাচ্ছা চল।
একটা রিক্সা নিয়ে সোজা ওর বাসায় গেলাম।
: অান্টি অাসসালামুঅালাইকমু ভাল অাছেন??
: হ্যা ভাল অাছি।তুমি ভাল অাছ???
: অাপু কেমন অাছো??
: ভাল তুমি ভাল অাছো?? পড়াশোনা কেমন চলছে??
: এইতো ভালই অাপু।
: অাচ্ছা বসো.....
.
ওদের বাসায় অাগেও কয়েকবার অাসছি।তাই অান্টি,অাপু খুব ভালভাবেই চিনে অামাকে।অবশ্য অাঙ্কেল তেমন চিনেন না।কারণ তিনি তো চাকরি করেন।অামি যখন যাই তখন বাসায় থাকেন না।
অার অাপুকে অাজ দেখতে অাসবে।
.
দুপুর দুইটা বাজে।3টার সময় বরপক্ষ অাসবে।
তাই বসে অাছি।অবশ্য নাস্তা খাইছি অাইসাই।
দেখলাম অামার বন্ধুটা ঘরের সব কিছু ঠিক করছে অামিও হেল্প করতে গেলাম।
ঘরের কাজ করতে করতেই সময় চলে গেল।
3টার কিছুক্ষণ পর বরপক্ষের লোকেরা অাসল।
সবাই কে সালাম দিয়ে।
সাধরে গ্রহণ করলাম।অাসার পরপরই শরবত দেওয়া হল।পরে সেমাই,নুডলস,পিঠ
া অারো অনেক কিছু দিয়ে অাপ্যায়ন করলাম।
সবাই পরিচিত হচ্ছিলাম।
কিছুক্ষণ হাসি /ঠাট্টাও হল।
ওরা চাইছিল অাগে কন্যা দেখতে পরে খাইতে।কিন্তু অামরা জোরাজোরি করলাম।
''কন্যা তো অাছেই।অাগে খেয়ে নিন।কন্যা তো দেখাবোই।''
ওরা রাজি হল।
অান্টি অার অাপু অনেক কিছু রান্না করছে।সব খাওয়াইলাম।খাওয়াইলাম না তো খাবার এনে দিলাম ওরা খাইল।
খাওয়ার পর্ব শেষ এখন কন্যা দেখার পালা।
.
অাপুকে নিয়ে অাসলাম।অাপু সালাম দিয়ে গোমটা টেনে বসল।
এবার শুরু হল.....
: তোমার নাম কি ??
: কি পর্যন্ত লেখাপড়া করছ??
: কি কি রান্না করতে পার??
: বাসায় কে কে অাছে??
: হেটে দেখাও তো।
: চুল টেনে দেখল।
: হাত গুলো পা গুলো হাতে নিয়ে দেখল।
: হাতের লেখা দেখাও তো।
এরকম অনেক উদ্ভটা প্রশ্ন করল।
অামি তো অবাক!!
এগুলার মানে কি?? ওরা কি মেয়ে দেখতে অাসছে নাকি মেয়ে কিনতে অাসছে?? এত দরদাম কেন???
যাক প্রায় 30 টা প্রশ্ন করল।অাপু সবগুলো প্রশ্নের উত্তর নিচু স্বরে দিল।
অাপুকে দেখা শেষ হলে অন্য রুমে নিয়ে গেলাম।
.
ওদের মুখ দেখে বুঝা গেল মেয়ে পছন্দ হয়নি।
না'ই হতে পারে।কারণ একবার দেখেই বিয়ে নাও হতে পারে।যদি পছন্দ মতো মেয়ে না হয় তাহলে বরপক্ষের রাজি না হওয়াই স্বাভাবিক।
অার অাপু দেখতে খুব সুন্দর না , কালো।কিন্তু চেহারাটা খুব'ই মায়াবী।
অবশেষে ঠিক করা হল 10লাখ টাকা লাগবে!!
অাঙ্কেলএর দিকে খেয়াল করে দেখলাম।মুখটা গম্ভির হয়ে অাছে।
সবচেয়ে খারাপ লাগছিল যখন একজন বলল ''এমন কাইল্যা ছেরি দশ লাখ টেকায় নিতাছি এটাই অনেক''
এরকম পরিস্থিতিতে কি অার শান্ত থাকা যায়??
.
: এই মিয়া কি বললেন?? (অামি)
: কি বললাম ঠিকই তো কইছি।
: মেয়ে কিনতে অাসছেন নাকি বিয়ে করিয়ে নিতে অাসছেন??? 10লাখ টাকা দিলাম।টাকাটা অাশা করি শিগ্রই শেষ হয়ে যাবে।তখন এই কাইল্যা ছেরিরে কি করবেন?? ফালাই দিবেন??? নাকি অাবার 10লাখ টাকা দিতে হবে??? টাকা দিলে মেয়ের দাম অাছে?? না দিলেই নাই??মেয়েরে কি খেলনা পাইছেন?? যখন এই কাইল্যা ছেরির সন্তান হবে তখন কি করবেন?? কাইল্যা ছেরির সন্তান কারণে অাদর কম করবেন?? নাকি অাঙ্কেলের তখন বৃদ্ধিকালে ঘর বাড়ি বিক্রি করে অাবার 10লাখ টাকা দিতে হবে???অাজ যদি অাপনার মেয়ে এমন হতো অাপনি কি এই কথা বলতে পারতেন??? যদি অন্য কেউ অাপনাকে এই কথা বলতো কি করতেন??কেমন লাগতো তখন?? মনমানসিকতা পাল্টান ।অাপনার ধুনিয়া পাল্টে যাবে।অার হ্যা অামরা মেয়ে অাপনাদের মত লোকের কাছে বিয়ে দিবনা।হ্যা অাপনারা 10লাখ টাকা চাইছেন ভাল কথা।অাঙ্কেল যা ভাল বুঝতেন করতেন।কিন্তু মেয়ের বাবার সামনে যারা এই কথা বলতে পারে!! তারা মেয়েটাকে কতটা অাপন করে রাখবে জানা হয়ে গেছে। অাপনারা অাসতে পারুন।
.
অার কিছু না বলে সবাই চলে গেল।
কাজটা কি ঠিক করলাম?? খুব ভয় পাচ্ছিলাম। না জানি অাঙ্কেল কি বলেন!! খুবই ভয় করছিল। এভাবে অামার বলা ঠিক হয়নি।কারণ অামি তো মেয়ের কোন অাত্বিয় না।কিন্তু যা বলছি সব মনের কথা গুলোই বলছি।এভাবে অপমান মেনে নিতে পারিনি।
.
: সাব্বাশ!! ধারুন বলছ বেটা।অামার মনের কথা গুলো বলে দিছ।কিন্তু অামি ওদের এগুলো বলতে পারতাম না কারণ অামি মেয়ের বাবা।ওরা মানুষ না পাষাণ তাহলে ওদের হাতে অামার মেয়েকে কিভাবে তুলে দেই বল!! অামার কাজটা তুমি করে দিছ।
:(___)
.
কিন্তু অাপুর জন্য খুব খারাপ লাগছিল।অাপুর রুমে যায়া দেখলাম।অাপু কাদছে।
অাড়ালে থেকে হয়তো সব কথা শুনছে।
খুব কষ্ট হচ্ছিল।
অাপু মুখ তুলে তাকাল।
: অাচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলি অামি কি দেখতে খুব খারাপ??
: না অাপু তুমি দেখতে মোটেও খারাপ নও।ওদের চোখটাই খারাপ অাপু।তুমি চিন্তা করনা এর চেয়ে ভাল ঘরে তোমার বিয়ে দিব।অারো ভাল ছেলের সাথে তোমার বিয়ে দিব।
.
.
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম। রাস্তায় হাটছি।
অাসার সময় বন্ধুর মুখটাও দেখে অাসিনি।হয়তো বাড়িতে সবাই মুখ গোমরা করে বসে অাছে।
: এই কই গেছিলি??
: অাসসালামুঅালাইকমু স্যার।স্যার কেমন অাছেন??
: ভাল নাইরে খুব চিন্তায় অাছি।
: কেন স্যার কি হয়েছে।
: তর ভাইয়ারে বিয়ে দিব।পাত্রি পাচ্ছিনা।
: স্যার
: কিরে মন খারাপ
: হ্যা
: কি হয়েছে??
সব খুলে বললাম।
স্যারের মুখটা মনেহয় হাসিতে ভরে গেল।
: সাইকেলের পিছে উঠ।
: কেন স্যার??
: সেই বাড়িতে নিয়া যা।
: কেন স্যার??
: তর ভাইয়ার জন্য মেয়ে পেয়ে গেছি।
: স্যার!!!!
: হ্যা চল।
: স্যার অামি সাইকেল চালাই? ?খুব খুশি লাগতেছে।
: না পিছনে বস।
: অাচ্ছা স্যার।
.
.
ওয়াও!!! খুব ভাল লাগছিল।অামি যদি একটু পরে অাসতাম তাহলে হয়তো স্যারের সাথে দেখা হতোনা এই মুহুর্ত টা দেখতে পারতাম না।অার সব কিভাবে মিলে গেল।ইনি অামার শ্রদ্ধেয় স্যার।প্রাইমারিতে এই স্যারের কাছেই পড়েছি। অামাদের বাড়ি অার স্যারের বাড়ি পাশাপাশি।স্যার খুব অাদর করেন অামায়। অামিও স্যারের অনেক কাজে হেল্প করি গাছ থেকে অাম পেরে দেই ,সুপারি পেরে দেই।বড়শি দিয়ে মাছ ধরে দেই।সব কাজেই সাহায্য করি। কিন্তু ভাইয়ার জন্য যে পাত্রি খুজছেন তা জানতাম না।
.
একটু পরেই ওদের বাড়ির সামনে অাইসা পড়লাম।
সোজা ঘরে।
: অাঙ্কেল অাপুর জন্য বর পেয়ে গেছি।
: মানে??
: অাগে তো পিছনের দড়জাটা খুলুন।
: অাচ্ছা।
দৌড়ে অাপুর রুমে চলে গেলাম।
: অাপু বলছিলাম না তোমার জন্য ভাল ছেলে এনে দিব??দাড়াও সব দেখতে পারবা।
অাঙ্কেল দড়জা খুলে দিলেন।
স্যার অাসলেন।
খাবার তো ছিলই।অাবার খাইলাম পেট গোপাল ভারের পেটের মত হয়া গেছে।
স্যার অার অাঙ্কেল সব অালাপ করছিলেন।
অার অামি অাপু অার অান্টিরে অালাদা করে বোঝাতে গেলাম।
অান্টির মুখে কিছুটা হাসি ফুটল।
অাপু এখনো মুখ গম্ভির করে অাছে যদি স্যার পছন্দ না করে।
কিন্তু স্যার দেখে ঠিক করে ফেলেছেন।এই মেয়েই হবে তার ছেলের বউ।
অার ভাইয়া অার্মির চাকরি করেন।
সব কথার পর স্যার বাহিরে গেলেন ।
অামি রুমেই বসে অাছি।
সবাই কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকাই রইছে।মনেহয় এভারেস্ট জয় করে মাত্রই দেশে অাইসা সোফায় বসলাম অার সবাই অামাকে দেখতে অাসছে।
.
: বাবা তুমি অামার ছেলের কাজ করছ...(অাঙ্কেল)
অাপু অামাকে তার রুমে ডেকে নিলেন।
: অাচ্ছা অাপু বিয়ের পর তোমাকে অাপু ডাকব নাকি ভাবি ডাকব??অার ভাইয়াকে ভাইয়া ডাকব নাকি দুলাভাই ডাকব??
: হিহিহি
: তুমি হাসছ অাপু যাক খুব ভাল লাগল।অাচ্ছা তোমার শ্বশুর বাহিরে অপেক্ষা করছে অাজ যাই?? কাল তো সবাই দেখতে অাসবে অাবার।অার শোন কাল মুরগিতে মরিচ কম দিয় কেমন??
: অাচ্ছা ভাইয়া যাও তোমারে অালাদা করে রান্না করে খাওয়ামু।
অাবার অাঙ্কেল অান্টির কাছে অাসলাম।
অাঙ্কেল পকেট থেকে বের করে কিছু টাকা দিলেন।অামি সেটা পকেটে নিলাম।অাবার বের করে অাঙ্কেলের হাতে দিলাম।
: বিয়ের দিন দিবেন কেমন?? অাজ এটা যদি নেই অন্যায় হবে।বললেন না ছেলের কাজ করছি ছেলে হয়ে এটা নিব কিভাবে??
: অারে না না খুশি হয়ে দিলাম।তোমার বন্ধুটারে নিয়ে খাইয়।
: লাগবেনা বিয়ের দিন দিবেন কিন্তু।
: হাহাহা অাচ্ছা ।
: বাবা কাল তুমিও অাসবা কিন্তু( অান্টি)
: অাসবোই তো অান্টি অাচ্ছা অাজ যাই।স্যার অপেক্ষা করছেন।
: মটু গেলামরে ....
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম।
বিকালে ভাইয়ার সাথে ঘুরতে বের হলাম।
ভাইয়াতো মনে হল অামার কথা শুনেই অাপুর প্রেমে পড়ে গেছে।
.
রাতে:
: কিরে খাবিনা?? (অাম্মু)
: না খামুনা।অাজ খাইলে কাল খেতে পারমু না।
: মানে??
অাম্মুকে সব বললাম।অাম্মুর চাহনি দেখে বুজলাম এতদিন অপদার্থ ছিলাম অাজ পদার্থ হয়ে ভাল একটা কাজ করছি।
.
.
সেদিনের মত ঘুমিয়ে পড়লাম।পরদিন সকালে উঠেই।কাপর নিয়ে দোকানে গেলাম ইস্ত্রি করে অানলাম।
অার 10টার দিকে সবাই গেলাম।
মেয়ে সবার পছন্দ হয়েছে।
হবেই না কেন ভাইয়াদের চোখ তো অার নষ্ট না।
অার 15দিন দিন পরেই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হল।
: তর হবু ভাবির ফোন নাম্বার টা অাইনা দে না?? (ভাইয়া)
: টাকা দেও।
: কত??
: 500
: 200দিলে হয়না??
: তাহলে নাম্বারের ডিজিট 11টা না 09টা বলমু।
: অাচ্ছা 300??
: তাহলে 10টা বলমু।
: না না 500ই দিমু।
যদিও অাপুর নাম্বার অাছে।তারপরো অাপুর কাছে গেলাম।
অাপু মানে হবু ভাবি ভাইয়া মানে হবু দুলাভাই তোমার নাম্বার চাইছে।
: তোমার কাছে অামার নাম্বার অাছে তো?
: তুমি লিখে দাওনা।
: অাচ্ছা দিচ্ছি।এককাজ কর তোমার ভাইয়ার নাম্বারটা দাও। অামিই অাগে ফোন দিব।
: ওকে,কিন্তু নাম্বার 11টা ডিজিটের । সবাই জানে প্রথমে 01 হয়।01চলে গেলে থাকে অার 9টা। বাকি 9টার জন্য কয় টাকা দিবা।
: টাকা লাগবে??
: জ্বি।
: অাচ্ছা 100টাকা।
: 100টাকা দিয়া কি করমু 1000টাকা লাগবে না হলে হবেনা।
: অাচ্ছা কাল তো তোমার অাঙ্কেলরে বললা টাকা লাগবেনা একবারে বিয়ের দিন।
: অারে বিয়ের জন্য জামাকাপড় কিনবনা??দিলে দাও।না দিলে গেলাম।
: অার দিবনা না বলছি?? দাড়াও।
অাহা 1500 হয়ে গেল।
নাম্বার দিয়ে ভাইয়ার কাছে অাসলাম।
.
: দেশের ছেলেরা অাজকাল ফকির হয়া গেছে
: কেন কি হইল??নাম্বার এনেসিছ??
: কি অাবার।অাপু বেকার হয়ে 1000দিল অার তুমি চাকরিজীবী হয়া মাত্র 500 লজ্জায় অামি শেষ হয়ে যাচ্ছি।অামার ভাই বিয়ে হওয়ার অাগেই হবু ভাবির কাছে হেরে গেল।
: খোটা দিবিনা বলে দিলাম।
: দিলামনা।বিয়ে তো একটাই করবা।অার 500দেওয়া যায়না??
: এই নে।
অাহা 2000।
নাম্বার দিয়ে দিলাম।
অাসার সময় অাঙ্কেল জোর করেই 1000দিল।অান্টি 500দিল।
ওদের কি টাকা বেশি হইছে নাকি? ?
অাহা অাজ সকালে কার মুখ দেখে উঠছিলাম।
অামার মুটু বন্ধুটা সব দেখছিল। অার যখন ভাইয়া 1000 বললাম অাপু 1000 দিছে বললাম রাগে গজগজ করতাছে।
অামি ওরে বললাম ওকে যা তকেও দিব অর্ধেক।
ও তো খুশিতেই শেষ।
এত খুশি হইয় না চান্দু অর্ধেক মানে 100এর অর্ধেক 50 হাহাহাহ।
.
.
সেদিনের মত চলে অাসলাম।
দিনগুলো খুব দ্রুত চলে যাচ্ছিল।
বিয়ের অার মাত্র 5দিন অাছে।
বিয়ের জন্য ভাইয়া অনেক কিছু কিনে দিছে অামায়।অাসলে স্যারের একটাই ছেলে।অামাকে ভাইয়া স্যার দুজনই খুব অাদর করেন।
.
বিয়ের দিন চলেই অাসল।4টা মাইক্রো নিয়ে সবাই গেলাম।
হাহাহাহ যায়া দেখি মটু গেইট অাটকাইছে টাকা নিবে!! টাকা দিব বেশি কইরা।
গাড়ি থেকে যায়া জাস্ট একটা কথা বললাম।
দেখেন ''এখানে একটা শুভ কাজ হবে।অামি চাইনা শুভ কাজের প্রথমেই বাধা পড়ুক'' অাহা বলার সাথে সাথে গেইট ক্লিয়ার।মটু অাজ পাতলু হয়া গেছে হাহাহাহা ।
.
সারাদিন খুব মজা করলাম।খাইতে খাইতে পেট পানির ট্যাংকির মত বড় হয়া গেছে।
রাত্রে ফেরার পালা।অাপু কান্না করছিল।
: কি অাপু শ্বশুর বাড়ি তারতারি যাওয়ার জন্য কান্না করছ (অাপুর কানে কানে বললাম)
কান্না করবে নাকি হাসবে বুঝতে পারছিল না।
অাজকেও অনেক সেলামি পাইলাম।
অাঙ্কেল অাজ 2000দিছেন অান্টি 1000।স্যার 1000। স্যারেরটা নিতামই না জোর করে দিছেন ।ভাইয়ার কাছ থেকে অাসার সময়ই 1000নিছি।এতটাকা!!তাই ভাবই অন্যরকম।মটু পাইছে মাত্র 2000।
এখন ফেরার পালা।
অাইসা পড়লাম।
অামি গাড়ি থেকে নেমেই তারাতারি ভাইয়ার রুমে যায়া ছোট্ট একটা তালা লাগাইলাম।
সবাই অাসল।
: কিরে তুই না বললি শুভ কাজে প্রথমেই বাধা পড়া ঠিক না?? (সবাই বলল)
: হ্যা ঠিকনা।কিন্তু পড়ে গেলে সেই বাধা অতিক্রম করতে হয়।এখন যদি অামাকে সেলামি না দিয়ে ওরা ঘরে ডুকে।তাহলে কি হবে?? প্রথম ধাপেই ওরা হেরে যাবে।এটা কি ঠিক?? কি এমন হবে কিছু টাকা দিলে।এই টাকার জন্য কি ভাইয়া/ভাবি প্রথম ধাপেই হেরে যাবে ছি: ছি: ছি: এটা কি অামি কি দেখছি!! কেউ অামারে একটা চিমটি দাও।অামি কি স্বপ্ন দেখছি?? কয়েকটা টাকার জন্য ভাইয়া/ভাবি প্রথম ধাপেই হেরে গেল।
: হইছে ভাষণ বন্ধ কর কত লাগবে??
: 2000!!!!!!!
: হ্যা।
: 20টাকাও দিবনা
: 20টাকা চাইছে কে?? 2000দিন।
: যা 1000দিমু।
: গরু কিনতে অাসছেন যে দরদাম করছেন???
: অাচ্ছা এই নে 2000
: হ্যা ওদের ঘরে নিয়ে যান।
: চাবি দে।
: চাবি লাগবেনা এটা নষ্ট তালা।চাবি ছাড়াই টান দিলে খুলে হাহাহা।
সবাই হেসে উঠল।
.
.
.
.
যাক বিয়ের সব কার্যক্রম শেষ।
অাজ খুব অারামের একটা ঘুম হবে।
অার অাজকের মত খুশি অাগে অার লাগেনি।
অাপু+ভাইয়া সুখি হোক ।(সমাপ্ত)
.
.
.
>>> ভাইয়ারা যদি অাগের লোকদের মত হত তাহলে এত খুশির মুহুর্ত গুলো অাসতনা।কি লাভ মানুষের দূর্বলতা নিয়ে খোটা দেওয়ার???সবাইকে তো অাল্লাহ সৃষ্টি করছেন।অার অাল্লাহ নিশ্চয়ই কোন ভুল করেন না।মানুষ।সৃষ্টির সেরা জীব।তাই কাউকে উপহাস করা উচিত নয়।যাকে উপহাস করছেন তার জায়গায় একবার নিজেকে কল্পনা করে দেখুন তো???<<<<