কোনো এক পরন্তু বিকেলে , গোধূলির সময়। ইনো বেরিয়েছে এই ভেবে কোনো এক নির্জন যায়গাতে বসে নিজের দোষ গুলি সংশোধনের চেষ্টা করবে। কেনো সে এইরকম উগ্র মেজাজের , কেনো সবার সাথে ঝগড়া করে। কেনো সে গুছিয়ে কথা বলতে পারেনা। কিছু কিছু সময় এইসব ছোট ছোট দোষের কারনে খুব ভালো গুনটি সবার চোখে পরেনা। আর একটা মানুষ যে সম্পূর্ণ টাই খারাপ এইটাও পসিবল না। কারন ভালো খারাপ মিলিয়েই পৃথিবী। যার ভিতর খারাপ গুন আছে তার ভিতর ভালো গুনো আছে। হয়তো একটু কম বা বেশী। আর ভালোটার থেকে খারাপ টা সবার নজরে বেশী পরে। এই বলেই যে একজন মানুষ সম্পূর্ণ টাই খারাপ তা কিন্তু নয়। এই সব ভেবেই ইনো নিজেকে পরিবর্তন করেনা বা করতে চায় না। কি দরকার আমার থেকে জগন্য লোক কি পৃথিবী তে বেচে নেই। এই সকল চিন্তা ভাবনা এখনো ইনোকে নিজেকে পরিবর্তনে বাধা দেয়।
.
আজ ইনো আবার এক ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করেছে। তাই এখন একটা নির্জন যায়গায় বসে এই সকল চিন্তা ভাবনা করে নিজেকে সামাল দেওয়াটাকেই ইনো শ্রেয় মনে করেন। সেই কারনে গোধূলির সময়টাকে সে বেছে নিয়েছে। ইনো বাড়ি থেকে বেরুলো , মুড টা খারাপ থাকা সত্বেও সে মনের আনন্দে বাইক চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্তায় অন্তুর ফোনঃ----
অন্তুঃ কিরে শালা সেই যে ঝগড়া কইরা চইলা গেলি একটা ফোনো তো দিলি না।
ইনোঃ শালা ফোনে কি তুই টাকা ভইরা দেস যে তরে ফোন দিমু।
অন্তুঃ আচ্ছা তরে ভইরা দিমু তুই বাসায় আয় ইমার্জেন্সি দরকার্।
ইনোঃ আচ্ছা দেখি।. . . . . . . . . . . . . . . .
.
ইনো অন্তুর বাসায় যাবে কিন্তু অন্তুর বাসা অনেক দুর কমপক্ষে আধা ঘন্টা তো লাগবেই। কি করার তবুও যেতে হবে। ইনো সবে অন্তুর এলাকায় প্রবেশ করলো , আর হুট করেই কে যেনো বাইকের সামনে এসে পরলো। ইনো কোনোমতেই নিজেকে সামাল দিয়ে ব্রেক করলো। যাক এক্সিডেন্ট হয়নি। কিন্তু ইনোর মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে ইনো বলে উঠলো --------
.
ইনোঃ কোন শালায় রে , চোখে দেখেনা নাকি। ( ইনো চোখ তুলে দেখে ছেলে না একটা মেয়ে )
ইনোঃ কি আজিব , এমনে কি কেউ রাস্তায় হাটে নাকি। যদি এক্সিডেন্ট হইয়া যাইতো তখন ত পাবলিক আমারে কেলাইতো আপনি তো তখন ধোয়া তুলছি পাতা হইয়া যাইতেন। কোনো কাজ না থাকলে টয়লেটে বইসা থাকবেন তাও এইরকম কইরা কানার মত রাস্তায় হাটবেন না। ধ্যাত মেজাজ টাই গরম কইরা দিলো। চোখ দুইটা ত খাইছেন তার সাথে কান দুইটাও কি গেছে নাকি। এতোগুলা কথা কইলাম কিছু কি কানে গেছে।
মেয়েটাঃ জি গেছে। আমি সত্যিই দুঃখিত আসলে চোখে দেখতে পাইনা তো তাই হয়তো বুঝতে পারিনি আমি সত্যিই দুঃখিত।
ইনোঃ মানে কি। চোখে দেখেন না তাইলে রাস্তায় একা একা বাইরাইছেন কেন। অন্য কাউরে সাথে আনতে পারেন নাই। নাকি কানা দেইখা রাস্তায় বাইর কইরা দিছে।
মেয়েটাঃ জি না। এক ফ্রেন্ড বাসায় আসছিল তাকেই একটু এগিয়ে দিলাম।
ইনোঃ হায়রে কেমন বান্ধবী আপনার একটা অন্ধরে কয় আমারে পথ দেহান। হেহহেহেহ খুব মজা পাইলাম।
মেয়েটাঃ আপনি ভুল বুঝছেন ও রাজি হয় নি। আমিইত জোড় করলাম। তাছাড়া আমিও এর আগে রাস্তায় একাবের হয়েছি কিন্তু কখনো এইরকম কিছু ঘটেনি।
ইনোঃ অহহহ তারমানে সব দোষ এখন আমারে দিতে চাইতাছেন হু। আল্লাহ আমার কপালেই যত সব আইসা জুটে। রাস্তায় ফালাইয়াও যাইতে পারিনা। বাসা কই আমি আপনারে আগাইয়া দিয়া আহি।
মেয়েটাঃ ধন্যবাদ তার প্রয়োজন নেই আমি একাই চলে যেতে পারবো।
ইনোঃ ইসসসস কানা হইলে কি হইবো ভাব আছে অনেক। ভাব ধইরা লাভ নাই এহন আমি ছাইড়া দিলে পরে অন্য গাড়ির তলে মাথা দিবেন তার থেইকা আমি আগাইয়া দেওয়াটাই ভালো। এখন কথা না কইয়া হাটেন। বাইকে তুলতে পারমু না , পিছন থেইকা পইরা গেলে আরেক ভেজাল , তাই এখন হাটেন।
.
মেয়েটা কিছু বললো না , কি বলবে বলার ত কিছুই থাকেনা। কিন্তু মেয়েটা বুঝতে পেরেছিলো ছেলেটা উগ্র মেজাজের হলেও মনুষ্যত্ব বধ টা ঠিকি আছে তার্। একটা অসহায় মেয়েকে অপমান করলেও তার অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় না বরং সাহায্যের চেষ্টা করে। আজ কাল এইরকম ছেলের বড়ই অভাব। সেদিনের মত সেখানেই কথার সমাপ্তি ঘটলো। মেয়েটা ভেবেছিল হয়তো আর দেখা হবে না। কিন্তু কে জানতো এখন থেকে কেবল গল্পের শুরু হলো।
.
একদিন মেয়েটা তার বান্ধবীর সাথে তার বাড়ি যাচ্ছে আর ইনো অন্তুর বাড়ি যাচ্ছে। আবার ওদের দেখা , সেই একি রাস্তায়। ইনো মেয়েটিকে দেখে বাইক থামাল , মেয়েটিকে বললোঃ ------
ইনোঃ কিগো কানি , sorry সেন্স লেসের বান্ধবী আন্ধা , ওই এইটাই আপনার সেই জ্ঞান হীন বান্ধবী টা তাই না। যে আপনাকে একা রোডে ছাইরা দিয়া গেছিলো। মাথায় কি কমন সেন্স বলতে কিছু নাই নাকি। এইরকম বান্ধবীর সাথে আবার কিসের সম্পর্ক , যার খুলিতে ঘিলু বলতে কিছুই নাই হু। এই রকম বান্ধবীর তো গলা টিইপা . . . . . . . . . . . .
মেয়েটাঃ হয়েছে হয়েছে এইবার থামেন। একটু শ্বাস নেন , ও সে না , ও অন্য ফ্রেন্ড , ও আমাকে আমার বাড়ি ছেড়তে যাচ্ছে। আপনি তো না যেনে শুধু শুধু এক গাদা কথা শুনিয়ে দিলেন। নিজেও হাপিয়ে গেছেন। পানি খাবেন , বোতলে পানি আছে একটু গলা ভিজিয়ে নেন যাতে আবার শুরু করতে পারেন।
ইনোঃ অহ এইটা ঐটা না আগে কইবেন না। যাইকগা কইছি তো কইছিই sorry কইতে পারমু না। আসলেই হয়রান হইয়া গেছি। পানি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ , আর একটা কথা, আজ যে একা বের হননাই কেউ সাথে আছে এইটা দেইখা সত্যিই খুব খুশি হইলাম। কিন্তু ঐ আগের বজ্জাত মাইয়া টারে পাইলে খবর আছিলো আজকে।
মেয়েটাঃ একটু সান্ত হোন প্লিজ , রাস্তায় এইভাবে কথা বলাটা ঠিক না লোকে খারাপ বলবে। তার চেয়ে একটু আস্তে করে কথা বলুন।
ইনোঃ হেহহেহেহ আমি জীবনেও লোকে কি বললো না বললো ওই সবের ধার ধারিনাই। কবি কামিনী রায়ের কবিতাটা মনে নাই পাছে লোকে কিছু বলে। তাদের কাজ সমালোচনা করা, তারাতো করবোই। তাছাড়া আমি এখন যামুগা ফ্রেন্ড অপেক্ষা করতাছে যাইগা। পরে দেখা হইবো।
মেয়েটাঃ এই প্রথম আপনি যুক্তি দিয়ে কিছু বললেন শুনে খুব ভালো লাগলো। আর হে দেখা হবে না কথা হবে। কারন দুজন দুজন কে দেখতে পেলেই সেটা দেখা হয়। আপনি দেখতে পেলেও আমি পাবো না কিন্তু দুজনেই কথা বলতে পারবো। আচ্ছা আসেন তাহলে।
ইনোঃ হ হয়তো আপনে ঠিকিই কইছেন কিন্তু আমি কিছুই বুঝিনাই। তয় এইটুকু বুঝছি খুব সিরিয়াস কিছু কইছেন। আইচ্ছা আহি তাইলে।
.
সেদিনকার মত তাদের কথার সমাপ্তি ঘটলো। মেয়েটির প্রশ্ন এ কেমন ছেলে , জীবনে অনেক ছেলে দেখেছে কিন্তু এর মতো এক পিস ও দেখেনি। মাঝে মাঝে মেয়েটির মনেহয় ছেলেটি হয়তো অন্য গ্রহের ছেলে। যার মাঝে শুধু সেই বিদ্যমান , পরিবার , পরিবেশ বা সমাজের কোনো ভেলু তার কাছে নেই। সে নিজেই আর তার মন দুটা কে ঘিরেই যেনো তার একটা পৃথিবী , অবশ্য মেয়েটা এইটুকু বুঝেছিলো যে ছেলেটার পৃথিবীর এক অংশ জুরে তার বন্ধুরা আছে। নয়তো অসময়ে কি এতো দুরে বন্ধুর কথায় কেউ রোজ আসে। নিজের আয়েশ বলেও ত কিছু থাকে তাইনা। এইতো তার কিছুদিন পরের কথা। খুব ভোরে মেয়েটা তার ছোট ভাইয়ের সাথে হাটতে বের হয়েছে। কিন্তু তখন যে ইনোর মেয়েটার সাথে বা মেয়েটার ইনোর সাথে কথা হবে তা কেউই ভাবেনি। কারন এতো সকালে নিজের ঘুমটাই সবার কাছে প্রিয়। ইনো মেয়েটাকে দিখেই ডাক দিলো। ------------
.
ইনোঃ ওই হ্যালো। দাড়ান একটু।
মেয়েটাঃ আপনি এতো সকালে, তাও এখানে?
ইনোঃ ওই আপনে আমারে চিনলেন কেমনে ? কেমনে বুঝলেন আমিই হইতে পারি।
মেয়েটাঃ আসলে এইভাবে যে রাস্তায় আপনি ছাড়া আর কেউ একটা অপরিচিত মেয়ে ডাক দিতে পারে না সেইটা বুঝার মত জ্ঞান কিন্তু আমার আছে। চোখের মাথা খেলেও তো আর নিজের মাথাটা খাইনি তাই না। তাছাড়া ওই ওই বলে যে আপনিই ডাক দিবেন সেইটা আমি যানি।
ইনোঃ আল্লাহ গো কি ট্যালেন্ট আপনার্। আমি জীবনেও এইরকম কইরা ভাবতে পারিনাই।
মেয়েটাঃ আমি কিন্তু আমার প্রশ্নের উওর টা এখনো পেলাম না। অসময়ে আপনি এইদিকে কেনো।
ইনোঃ ফ্রেন্ড ফোন দিয়া কইলো আইতে, তাই আইলাম।
মেয়েটাঃ ঘুম নষ্ট করে এসে পরলেন। আমি তো জানতাম ভোরের ঘুমটা ছেলেদের খুব প্রিয় , যার ভাগ কাউ কেই দিতে চায় না কেউই। আর আপনি সেই ঘুম বাদ দিয়ে বন্ধুর সাথে দেখা করতে আসছেন। খুবই রহস্যময় চিন্তা ভাবনা আপনার্।
ইনোঃ কার কাছ থেইকা যানি শুনছিলাম , বন্ধু মানে বন্ধন আর এই পৃথিবী টা নাকি বন্ধনের উপরে টিইকা আছে। আর পৃথিবী আছে বইলাই তো আমরা বা আমি আছি। তাইলে যাদের জন্য আমি আছি তারা যদি ডাক দেয় তাইলে না আইসা কেমনে পারি। আর এখন মনে হইতাছে আইসা ভালোই করছি নাইলে তো আপনার সাথে কথাও হইতো না।
মেয়েটাঃ আপনাকে আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। মাঝে মাঝে কিছু কথা বলেন তখন কথা গুলোর অর্থ খুজতে গিয়ে খুব ভালোলাগে। কিন্তু সব সময় বলেন না। সব সময় নিজের মতো করেই ভাবেন বলেই হয়তো ভাবনার এতো গভীরে যেতে পারেন।
ইনোঃ আল্লাহ আপনি আমারে কিন্তু অপমান করতাছেন। আমি ভালো কইরা গুছাইয়া কথা কইতে পারিনা তাই এই কথা কইলেন।
মেয়েটাঃ আরে নাহহ ছি ছি আপনি ভুল ভাবছেন।
ইনোঃ যা ভাবছি আমি ভাবছি। আপনার কথায় তো আমার ভাবনার পরিবর্তন হইবো না , তাই না।
মেয়েটাঃ বুঝতে পারছি আপনার মুডটা ঠিক নেই। এতো অল্পতেই রাগা ঠিক না। নিজেকে কন্ট্রোল করতে শিখুন। আমি আসছি , ভালো থাকবেন।
ইনোঃ যান যান এইখানে থাকার লেইগা কে জোর করলো আপনারে।
.
সেদিন তাদের মাঝে মোটামুটি একটা ছোট্ট ঝগড়ার সৃষ্টি হলো। পৃথিবীর নিয়ম এক পক্ষ কঠিন হলে অপর পক্ষকে নরম হতে হয় , নয়তো জীবনে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়না। আর মেয়েটা ঠিক এই কাজটিই করলো। কারন মেয়েটি খুব বুদ্ধিমতি , তাছাড়াও মেয়েটা যানে ছেলেটা উগ্র মেজাজের , এখন যদি দুজনেই বিক্রিয়া করে তাহলে তো বিস্ফোরণের সৃষ্টি হবে। তাই মেয়েটাই সব সময় স্তব্ধ হয়ে যায়। এই মান অভিমানের পালা বেশকিছুদিন চললো। প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে দুজন দুজনের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। মেয়েটা ভাবছে আর হয়তো কথা হবেনা। আর বার বার নিজেকে দোষী ভাবছে। কারন তার জন্যই ইনোর মেজাজ বিগ্রে যায়। যাই হোক যদি জীবনে কখনো তাকে সামনে পায় তাহলে মেয়েটা ক্ষমা চেয়ে নিবে বলে ঠিক করেন। কিন্তু সেই সুযোগ টা বেশ কিছুদিন ধরে পাচ্ছে না। আর পাবে কিনা সেটা সে জানেনা, কারন ছেলেটা যদি মেয়েটার সামনে এসে না দাড়ায় তাহলে কিভাবে মেয়েটা ক্ষমা চাইবে। নিজেকে অপরাধী ভেবে কাটিয়ে দিলো আরো কয়েকটি সপ্তাহ।
.
এক মিষ্টি দুপুরে মেয়েটা বাড়ির বাহিরে দাড়িয়ে ফোন থেকে কোনো একটা নম্বর ডাইল করার চেষ্টা করছে। ইনো কোথা থেকে এসে তার সামনে হাজির্। মেয়েটার হাত থেকে ফোনটা নিয়েই ইনো বলে ------
ইনোঃ নাম্বার কন?
মেয়েটাঃ জি আপনি আসছেন? আমি ত ভাবতেই পাচ্ছি না।
ইনোঃ অহ আইসা ভুল করলাম নাকি , তাইলে যাইগা।
মেয়েটাঃ না প্লিজ যাবেন না। আমি সেইদিনের জন্য খুবই দুঃখিত সেইদিন আমার জন্যই আপনার মুডটি নষ্ট হয়ে যায়। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন।
ইনোঃ হেহহেহেহ হইছে তো , এখন নাম্বার কন। . . . .
মেয়েটা নাম্বার বললো ইনো কল করে দিলো মেয়েটা কথা বললো। ইনো চুপচাপ দাড়িয়ে আছে কোনো কথা বলে না। মেয়েটা ভাবছে ইনো চলে গেছে। কিন্তু মেয়েটার কেনো যেনো মনে হচ্ছে ইনো তার পাশেই আছে। মেয়েটা বললোঃ আপনি কি আছেন নাকি চলে গেছেন।
ইনোঃ কোনটা আশা করছিলেন।
মেয়েটাঃ আপনার উপস্থিত থাকাটা। আবার ভাবলাম চলেও যেতে পারেন। হয়তো আপনার ফ্রেন্ড খুব দরকারে ফোন দিয়েছে তাই . . . . . .
ইনোঃ নাহহ আজ ফ্রেন্ড আসতে বলেনাই তবুও নিজের ইচ্ছায় আইছি আপনার সাথে কথা বলতে।
মেয়েটাঃ আমি ঠিক বুঝিনি।
ইনোঃ আমার খুব অল্পতেই রাগ উঠে। আর রাগ ভাংতে অনেক লম্বা সময় নেয়। এই কারনেই আমি sry বলার আগেই আমার বন্ধু রা আমারে sry বলে দেয়। আর ক্ষমা চাওয়ার পর কি আর রাগ থাকে আপনিই কন। আমি আজ আইছিলাম আপনারে sry কইতে।
মেয়েটাঃ আল্লাহ তাই বলে এতো লম্বা সময়। এক দিনে ২৪ ঘন্টা , ৬০ মিনিটে ১ঘন্টা . ৬০ সেকেন্ডে ১মিনিট। যথেষ্ট লম্বা সময়। রাগ করে একদিন থাকলেই তো হয়।
ইনোঃ কি করমু। আমি এইরহমি। . . . . . . . . . . . . .
.
সেইদিন তারা দুজন অনেকটা সময় একসাথে কাটায়। তাদের কুশল বিনিময় করে। এবং সেদিনই তারা ফ্রেন্ডশীপ করে নেয়। শুরু হয় একটা নতুন বন্ধুত্বের পথযাত্রা। দুপুর গরিয়ে যখন সন্ধ্যে নেমে এতো , তখন ইনো মেয়েটির থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে গেলো।
.
সন্ধ্যের পর থেকে মেয়েটি যেনো ইনো কে একটু বেশিই মিস করতে লাগলো। আর এদিকে ইনোও wait করছিলো কখন ঘড়ির কাটা ১০ এর ঘরে এসে দাড়াবে। অবশেষে ঘড়ির কাটায় রাত ১০ টা। শব্দ হতে লাগলো , কিরিং কিরিং। এই কিরিং কিরিং শব্দটি শুনে মেয়েটা চকমকে উঠলো। কারন এই সময় মেয়েটিকে কেউই ফোন দেয় না। মেয়েটির ধারনা হয়তো রং নাম্বার হবে। তবুও ফোনটা রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে বলে উঠলো : আসসালামু অলাইকুম .
মেয়েটাঃ অলাইকুম আসসালাম। আপনি এইসময়? আমার নাম্বার টা কিভাবে মেনেজ করলেন।
ইনোঃ আমি শুধুই সালাম দিছি , এতেই কেমনে বুঝলেন আমিই হইতে পারি।
মেয়েটাঃ আপনাকে দেখিনি , চিনিনা , তা বলে এই নয় যে আমি আপনার ভয়েস টাকেও চিনিনা। আপনার সাথে আমার কথা হয়েছে তাহলে কন্ঠ কিভাবে ভুলে যাই বলেন। তাছাড়া ও আপনি এইটা বলেন আপনি কিভাবে বুঝলেন যে আমি আপনাকে মিন করেছি। আমিতো অন্য কাউকেও মিন করতে পারতাম তাই না।
ইনোঃ খুবই স্বাভাবিক , আপনি আমার নাম যানেন না। এইটা প্রথম ধাপ আর দ্বিতীয় ও শেষ ধাপ হলো নাম্বার মেনেজ করার কথা টা। এই দুইটা ধাপের কারনেই আমি বুঝতে পারছি যে আপনে আপনি দ্বারা আমারেই বুঝাইছেন। যাকগে আমি ইনো , আজ দুপুরে আপনার বান্ধবীকে আপনার ফোন থেকে ফোন করার সময়ই আপনার নাম্বার টা মেনেজ করি। যদি ভুল কইরা থাকি তাইলে আগেই ক্ষমা চাইয়া নিতাছি।
মেয়েটাঃ না না ঠিক আছে আমি কিছু মনে করিনি। তাছাড়া বিকেলে আমাদের ফ্রেন্ডশীপ হয়েছে। so এখন আপনি আমার নাম্বার নিতেই পারেন। কিন্তু আপনি যে আমার নাম যানতে চাইলেন না।
ইনোঃ আমি মনে করি, নামের মাঝে কখনোই একজন মানুষকে বুঝা যায় নাl আর একটা মানুষ কে বুঝতে হলে তার কাছে যাওয়াটা জরুরী।
মেয়েটাঃ আপনাকে ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। আপনি কেমন যেনো একটা গোলক ধাধার মতো। বার বার হারিয়ে ফেলি। আপনি কিছু টা মরিচিকার মতো সামনেই আছেন কিন্তু কাছে গেলেই আর অস্তিত্ব পাইনা। আপনি মাঝে মাঝে খুব সুন্দর করে কথা বলেন। লজিক দিয়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন কিন্তু সব সময় না। আচ্ছা আপনি সব সময় এইভাবেই কথা বলতে পারেন না। আমি যানি আপনি পারেন বা পারবেন। প্লিজ এখন থেকে এই আপনি টাই থাকেন প্লিজ।
ইনোঃ ok দেখি চেষ্টা করবো। আমাতে আমিই বিদ্যমান থাকতে পারি কিনা।
মেয়েটাঃ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ , আমি যানি আপনি পারবেন।. . . . . . . . . . . . . . .
.
সেদিন রাতে ওদের মাঝে অনেক কথা হয়। তারা প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত এইভাবেই গল্প করলো। একজন আরেকজনকে বুঝতে চেষ্টা করে , আর একজন আরেকজনকে বুঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু হয়তো দুজনের কেউই উভয়ের মনের কথা বুঝতে পারেনি। বা দুজনের কেউই ওদের মনের কথা একে অপর কে বুঝাতে পারেনি। বুঝা আর বোঝানো বা বুঝতে পারা বা বুঝানোর চেষ্টা করা আর এই বুঝা ও না বুঝার মাধ্যে পরে ওরা নিজেরাই বুঝতে পারছে না যে ওরা আসলে কি বুঝতে চাচ্ছে। এভাবে না বুঝেই তারা মধ্যরাত অতিবাহিত করলো। . . . .
.
পরদিন গোধূলির সময় ইনো রেডি হচ্ছে , কোথায় যেনো যাবে। খুব দ্রূত রেডি হয়ে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরলো। ওহ হে আজ তো ইনোর মেয়েটির সাথে কথা বলার কথা। গতকাল রাতে তাদের মাঝে কথা হয়েছিলো। আজ তারা কোথাও মিট করবে। গোধূলির সময় থেকে প্রদোষকাল সময় পর্যন্ত তারা কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটাবে। এইটা মেয়েটার কথা নয়। এইটা ইনোর আবদার ছিলো মেয়েটার কাছে। মেয়েটা ইনোর আবদার টুকু ফেলতে পারে নি। কারন মেয়েটাও মনে মনে এইটাই চেয়েছিলো। . . . . . ইনো মেয়েটাকে তার বাড়ির সামনে থেকে নিয়ে, নদীর ধারে নির্জন পরিবেশ তরু ছায়ার নিচে বসে। সেখানে গিয়েই ইনো মেয়েটা কে তাদের আশেপাশের বর্ননা দিতে শুরু করলো। যাতে মেয়েটা বুঝতে পারে তারা এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সুন্দর্যের মাঝে অবস্থা করছে। হুট করেই ইনো বলে উঠলো : আচ্ছা আপনার বয়ফ্রেন্ড কয়টা।
মেয়েটাঃ এইটা আবার কেমন প্রশ্ন। কে তার ভালোবাসার সাথে অন্ধ কে জরাবে। আকাশ আর মাটি কি কখনো এক হয়।
ইনোঃ হে এক হয়। অই নদীটার দিকে তাকান। oops sorry দেখতে না পেলেও আমার কথা টা ফিল করে বুঝতে পারবেন আমি আশা করি। নদীর দিকে তাকালেই দেখা যায় আকাশ জমীনে নেমে আসছে।
মেয়েটাঃ অইটা তো একটা প্রতিবিম্ব মাত্র।
ইনোঃ না ঐ টা প্রতিবিম্ব না। ওইটা নদীর বুকে আকাশের ছবি। আমরা যাকে ভালোবাসি চোখ বন্ধ করলে তাকে যেমন দেখতে পাইl যেইভাবে তার ছবি আমাদের চোখের পাতায় ভেসে উঠে, ঠিক সেভাবেই নদী আর আকাশের ভালোবাসা এতোই গভীর যে নদীর বুকে সবসময় আকাশের ছবি দেখা যায়।
মেয়েটাঃ আপনার সাথে আমি কথায় পারবো না। তাছাড়াও আপনিই বলেন কে একটা বোঝাকে বইতে চায়। যারা প্রথম আলাপে জানতে পারে আমি অন্ধ দ্বিতীয় বারের মত আর তাদের সাথে আমার আলাপ হয় না। আমার লাইফে আপনিই প্রথম ছেলে , যেকিনা আমি অন্ধ যেনেও আমার সাথে মিশেছে , আমার কাছে এসেছে , আমার বন্ধু হয়েছে।
ইনোঃ কিন্তু আমি আর আপনার বন্ধু হয়ে থাকতে চাইনা। আপনিই একদিন বলেছিলেন ১দিনে ২৪ঘন্টা , ৬০মিনিটে ১ঘন্টা , ৬০সেকেন্ডে ১মিনিট যথেষ্ট লম্বা সময়। আমরা আমাদের ফ্রেন্ডশীপের এক দিন পার করে ফেলছি। অনেক লম্বা একটা সময় অতিক্রম করে ফেলছি। কিন্তু আর না , আমি আর ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে চাই না। আমি আপনার দুচোখ হতে চাই। যেই চোখ আপনাকে সুন্দর পৃথিবী দেখাবে। আমি আপনার একলা পথের সঙ্গী হতে চাই। যেই একলা পথ আপনার একাকিত্ব টাকে দূর করবে। বিশ্বাস করেন কখনো আপনার দৃষ্টিহীন চোখ থেকে পানি ঝরতে দেবোনা। please you love me.
মেয়েটাঃ ( মাথা নিচু করে ) are you serious. যে আপনি আমাকে বা আমার মত একটা মেয়েকে ভালোবাসেন। আপনি কি সিরিয়াসলি আমাকে ভালোবাসেন।
ইনোঃ আপনার কি মনে হচ্ছে আমি এই বিষ নিয়ে আপনার সাথে fun করছি।
মেয়েটাঃ যানিনা , আমি কিছু বলতে পারবো না . . . . .
ইনোঃ please anyone reply. কিছু একটা বলুন।
মেয়েটাঃ আপনাকে আমার ভালোলাগে , আপনার সাথে কথা বলতে ভালোলাগে , আপনার সাথে একা গল্প করতে ভালোলাগে , কিছু সময় একসাথে কাটাতে ভালো লাগে, আপনি আমার সাথে থাকলে আমার ভালোলাগে।
ইনোঃ just এইটুকুই , আমি যানি আপনার আমাকে ভালোলাগে কারন ভালোনা লাগলে আপনি আজ আমার সাথে এইখানে আসতেন না। একটা গান আছে ভালোলাগা ভালোবাসা এক নয়।
মেয়েটাঃ যাকে আপনার ভালোই লাগে না তাকে ভালোবাসবেন কিভাবে , গান বানানো হয় মানুষের পাবলিসিটি পাবার জন্য। মানুষের চিন্তা ভাবনা বা মনোভাব কে পরিবর্তন করার জন্য না।
ইনোঃ আমি অতো শত বুঝিনা , আমি শুধু যানি I love you. আচ্ছা যান আপনি না চাইলে,
আপনাকে আমায় ভালোবাসতে হবে নাl
আমার সাথে কোথাও ঘুরতে যেতে হবে নাl
রোজ আমার সাথে ফোনে কথা বলতে হবেনা।
আমার পাশে বসে বাদাম খেতে হবে না।
আমার হাতে হাত রেখে হাটতেও হবে না।
শুধু দিনে যতবার আমি আপনাকে বলবো ভালোবাসি , প্রতিবারে আপনি একটু মুচকি হেসে. আমার চোখে চোখ রেখে মৃদু গলায় বলবেন, পাগল তাতেই আমি খুশিl
মেয়েটাঃ হাহাহা, পাগল একটা।
ইনোঃ তাহলে কবুল তো।
মেয়েটাঃ হু পাগল।
ইনোঃ যাই হই তোমারি তো।
মেয়েটাঃ I love you.
ইনোঃ I love you too. . . . . . . .
.
__একটা কথা বলবো রাগ করবে নাতো। (মেয়েটা)
__নাহহ, বলো রাগ করবো কেন?
__আমি অন্ধ না , আমি তোমারি মত দৃষ্টি যুক্ত চোখ দিয়ে দেখতে পাই। এতদিন আমি অন্ধের নাটক করে গেছি। প্লিজ আমাকে ভুল বুঝোনা।
__কিহহহহ তুমি এতদিন নাটক করে গেছো , কিন্তু কেনো।
__সেইদিন কার সিচুয়েশন সামলানোর জন্য কিন্তু ভেবেছিলাম পরে সব বলে দিবো কিন্তু সুযোগ হয়নি। অবশেষে নাটক টা কন্টিনিউ করতে হয়। এখন মনে হচ্ছে নাটক টা করে ভালোই হয়েছে নয়তো আমি তোমার মত কাউকে পেতাম না। যে শুধুই আমার মনকে ভালোবেসেছে।
__তুমি কি সব সত্যি বলছো। আচ্ছা বলোতো আমি কি কালারের শার্ট পড়ে আছি।
__blue.
__তারমানে তুমি এতদিন আমার ভালোবাসার পরিক্ষা নিলা।
__ Yesssss Sir.
__ তো মেডাম আমার পরিক্ষার রেজাল্ট টা কই?
__ ( গালে আলতো হামি দিয়ে ) একদম পটিয়ে ফেলছ। just পোটে গেলাম। i love you. . . . . . . .
__ i love you toooo.
.
আজ ইনো আবার এক ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করেছে। তাই এখন একটা নির্জন যায়গায় বসে এই সকল চিন্তা ভাবনা করে নিজেকে সামাল দেওয়াটাকেই ইনো শ্রেয় মনে করেন। সেই কারনে গোধূলির সময়টাকে সে বেছে নিয়েছে। ইনো বাড়ি থেকে বেরুলো , মুড টা খারাপ থাকা সত্বেও সে মনের আনন্দে বাইক চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্তায় অন্তুর ফোনঃ----
অন্তুঃ কিরে শালা সেই যে ঝগড়া কইরা চইলা গেলি একটা ফোনো তো দিলি না।
ইনোঃ শালা ফোনে কি তুই টাকা ভইরা দেস যে তরে ফোন দিমু।
অন্তুঃ আচ্ছা তরে ভইরা দিমু তুই বাসায় আয় ইমার্জেন্সি দরকার্।
ইনোঃ আচ্ছা দেখি।. . . . . . . . . . . . . . . .
.
ইনো অন্তুর বাসায় যাবে কিন্তু অন্তুর বাসা অনেক দুর কমপক্ষে আধা ঘন্টা তো লাগবেই। কি করার তবুও যেতে হবে। ইনো সবে অন্তুর এলাকায় প্রবেশ করলো , আর হুট করেই কে যেনো বাইকের সামনে এসে পরলো। ইনো কোনোমতেই নিজেকে সামাল দিয়ে ব্রেক করলো। যাক এক্সিডেন্ট হয়নি। কিন্তু ইনোর মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে ইনো বলে উঠলো --------
.
ইনোঃ কোন শালায় রে , চোখে দেখেনা নাকি। ( ইনো চোখ তুলে দেখে ছেলে না একটা মেয়ে )
ইনোঃ কি আজিব , এমনে কি কেউ রাস্তায় হাটে নাকি। যদি এক্সিডেন্ট হইয়া যাইতো তখন ত পাবলিক আমারে কেলাইতো আপনি তো তখন ধোয়া তুলছি পাতা হইয়া যাইতেন। কোনো কাজ না থাকলে টয়লেটে বইসা থাকবেন তাও এইরকম কইরা কানার মত রাস্তায় হাটবেন না। ধ্যাত মেজাজ টাই গরম কইরা দিলো। চোখ দুইটা ত খাইছেন তার সাথে কান দুইটাও কি গেছে নাকি। এতোগুলা কথা কইলাম কিছু কি কানে গেছে।
মেয়েটাঃ জি গেছে। আমি সত্যিই দুঃখিত আসলে চোখে দেখতে পাইনা তো তাই হয়তো বুঝতে পারিনি আমি সত্যিই দুঃখিত।
ইনোঃ মানে কি। চোখে দেখেন না তাইলে রাস্তায় একা একা বাইরাইছেন কেন। অন্য কাউরে সাথে আনতে পারেন নাই। নাকি কানা দেইখা রাস্তায় বাইর কইরা দিছে।
মেয়েটাঃ জি না। এক ফ্রেন্ড বাসায় আসছিল তাকেই একটু এগিয়ে দিলাম।
ইনোঃ হায়রে কেমন বান্ধবী আপনার একটা অন্ধরে কয় আমারে পথ দেহান। হেহহেহেহ খুব মজা পাইলাম।
মেয়েটাঃ আপনি ভুল বুঝছেন ও রাজি হয় নি। আমিইত জোড় করলাম। তাছাড়া আমিও এর আগে রাস্তায় একাবের হয়েছি কিন্তু কখনো এইরকম কিছু ঘটেনি।
ইনোঃ অহহহ তারমানে সব দোষ এখন আমারে দিতে চাইতাছেন হু। আল্লাহ আমার কপালেই যত সব আইসা জুটে। রাস্তায় ফালাইয়াও যাইতে পারিনা। বাসা কই আমি আপনারে আগাইয়া দিয়া আহি।
মেয়েটাঃ ধন্যবাদ তার প্রয়োজন নেই আমি একাই চলে যেতে পারবো।
ইনোঃ ইসসসস কানা হইলে কি হইবো ভাব আছে অনেক। ভাব ধইরা লাভ নাই এহন আমি ছাইড়া দিলে পরে অন্য গাড়ির তলে মাথা দিবেন তার থেইকা আমি আগাইয়া দেওয়াটাই ভালো। এখন কথা না কইয়া হাটেন। বাইকে তুলতে পারমু না , পিছন থেইকা পইরা গেলে আরেক ভেজাল , তাই এখন হাটেন।
.
মেয়েটা কিছু বললো না , কি বলবে বলার ত কিছুই থাকেনা। কিন্তু মেয়েটা বুঝতে পেরেছিলো ছেলেটা উগ্র মেজাজের হলেও মনুষ্যত্ব বধ টা ঠিকি আছে তার্। একটা অসহায় মেয়েকে অপমান করলেও তার অসহায়ত্বের সুযোগ নেয় না বরং সাহায্যের চেষ্টা করে। আজ কাল এইরকম ছেলের বড়ই অভাব। সেদিনের মত সেখানেই কথার সমাপ্তি ঘটলো। মেয়েটা ভেবেছিল হয়তো আর দেখা হবে না। কিন্তু কে জানতো এখন থেকে কেবল গল্পের শুরু হলো।
.
একদিন মেয়েটা তার বান্ধবীর সাথে তার বাড়ি যাচ্ছে আর ইনো অন্তুর বাড়ি যাচ্ছে। আবার ওদের দেখা , সেই একি রাস্তায়। ইনো মেয়েটিকে দেখে বাইক থামাল , মেয়েটিকে বললোঃ ------
ইনোঃ কিগো কানি , sorry সেন্স লেসের বান্ধবী আন্ধা , ওই এইটাই আপনার সেই জ্ঞান হীন বান্ধবী টা তাই না। যে আপনাকে একা রোডে ছাইরা দিয়া গেছিলো। মাথায় কি কমন সেন্স বলতে কিছু নাই নাকি। এইরকম বান্ধবীর সাথে আবার কিসের সম্পর্ক , যার খুলিতে ঘিলু বলতে কিছুই নাই হু। এই রকম বান্ধবীর তো গলা টিইপা . . . . . . . . . . . .
মেয়েটাঃ হয়েছে হয়েছে এইবার থামেন। একটু শ্বাস নেন , ও সে না , ও অন্য ফ্রেন্ড , ও আমাকে আমার বাড়ি ছেড়তে যাচ্ছে। আপনি তো না যেনে শুধু শুধু এক গাদা কথা শুনিয়ে দিলেন। নিজেও হাপিয়ে গেছেন। পানি খাবেন , বোতলে পানি আছে একটু গলা ভিজিয়ে নেন যাতে আবার শুরু করতে পারেন।
ইনোঃ অহ এইটা ঐটা না আগে কইবেন না। যাইকগা কইছি তো কইছিই sorry কইতে পারমু না। আসলেই হয়রান হইয়া গেছি। পানি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ , আর একটা কথা, আজ যে একা বের হননাই কেউ সাথে আছে এইটা দেইখা সত্যিই খুব খুশি হইলাম। কিন্তু ঐ আগের বজ্জাত মাইয়া টারে পাইলে খবর আছিলো আজকে।
মেয়েটাঃ একটু সান্ত হোন প্লিজ , রাস্তায় এইভাবে কথা বলাটা ঠিক না লোকে খারাপ বলবে। তার চেয়ে একটু আস্তে করে কথা বলুন।
ইনোঃ হেহহেহেহ আমি জীবনেও লোকে কি বললো না বললো ওই সবের ধার ধারিনাই। কবি কামিনী রায়ের কবিতাটা মনে নাই পাছে লোকে কিছু বলে। তাদের কাজ সমালোচনা করা, তারাতো করবোই। তাছাড়া আমি এখন যামুগা ফ্রেন্ড অপেক্ষা করতাছে যাইগা। পরে দেখা হইবো।
মেয়েটাঃ এই প্রথম আপনি যুক্তি দিয়ে কিছু বললেন শুনে খুব ভালো লাগলো। আর হে দেখা হবে না কথা হবে। কারন দুজন দুজন কে দেখতে পেলেই সেটা দেখা হয়। আপনি দেখতে পেলেও আমি পাবো না কিন্তু দুজনেই কথা বলতে পারবো। আচ্ছা আসেন তাহলে।
ইনোঃ হ হয়তো আপনে ঠিকিই কইছেন কিন্তু আমি কিছুই বুঝিনাই। তয় এইটুকু বুঝছি খুব সিরিয়াস কিছু কইছেন। আইচ্ছা আহি তাইলে।
.
সেদিনকার মত তাদের কথার সমাপ্তি ঘটলো। মেয়েটির প্রশ্ন এ কেমন ছেলে , জীবনে অনেক ছেলে দেখেছে কিন্তু এর মতো এক পিস ও দেখেনি। মাঝে মাঝে মেয়েটির মনেহয় ছেলেটি হয়তো অন্য গ্রহের ছেলে। যার মাঝে শুধু সেই বিদ্যমান , পরিবার , পরিবেশ বা সমাজের কোনো ভেলু তার কাছে নেই। সে নিজেই আর তার মন দুটা কে ঘিরেই যেনো তার একটা পৃথিবী , অবশ্য মেয়েটা এইটুকু বুঝেছিলো যে ছেলেটার পৃথিবীর এক অংশ জুরে তার বন্ধুরা আছে। নয়তো অসময়ে কি এতো দুরে বন্ধুর কথায় কেউ রোজ আসে। নিজের আয়েশ বলেও ত কিছু থাকে তাইনা। এইতো তার কিছুদিন পরের কথা। খুব ভোরে মেয়েটা তার ছোট ভাইয়ের সাথে হাটতে বের হয়েছে। কিন্তু তখন যে ইনোর মেয়েটার সাথে বা মেয়েটার ইনোর সাথে কথা হবে তা কেউই ভাবেনি। কারন এতো সকালে নিজের ঘুমটাই সবার কাছে প্রিয়। ইনো মেয়েটাকে দিখেই ডাক দিলো। ------------
.
ইনোঃ ওই হ্যালো। দাড়ান একটু।
মেয়েটাঃ আপনি এতো সকালে, তাও এখানে?
ইনোঃ ওই আপনে আমারে চিনলেন কেমনে ? কেমনে বুঝলেন আমিই হইতে পারি।
মেয়েটাঃ আসলে এইভাবে যে রাস্তায় আপনি ছাড়া আর কেউ একটা অপরিচিত মেয়ে ডাক দিতে পারে না সেইটা বুঝার মত জ্ঞান কিন্তু আমার আছে। চোখের মাথা খেলেও তো আর নিজের মাথাটা খাইনি তাই না। তাছাড়া ওই ওই বলে যে আপনিই ডাক দিবেন সেইটা আমি যানি।
ইনোঃ আল্লাহ গো কি ট্যালেন্ট আপনার্। আমি জীবনেও এইরকম কইরা ভাবতে পারিনাই।
মেয়েটাঃ আমি কিন্তু আমার প্রশ্নের উওর টা এখনো পেলাম না। অসময়ে আপনি এইদিকে কেনো।
ইনোঃ ফ্রেন্ড ফোন দিয়া কইলো আইতে, তাই আইলাম।
মেয়েটাঃ ঘুম নষ্ট করে এসে পরলেন। আমি তো জানতাম ভোরের ঘুমটা ছেলেদের খুব প্রিয় , যার ভাগ কাউ কেই দিতে চায় না কেউই। আর আপনি সেই ঘুম বাদ দিয়ে বন্ধুর সাথে দেখা করতে আসছেন। খুবই রহস্যময় চিন্তা ভাবনা আপনার্।
ইনোঃ কার কাছ থেইকা যানি শুনছিলাম , বন্ধু মানে বন্ধন আর এই পৃথিবী টা নাকি বন্ধনের উপরে টিইকা আছে। আর পৃথিবী আছে বইলাই তো আমরা বা আমি আছি। তাইলে যাদের জন্য আমি আছি তারা যদি ডাক দেয় তাইলে না আইসা কেমনে পারি। আর এখন মনে হইতাছে আইসা ভালোই করছি নাইলে তো আপনার সাথে কথাও হইতো না।
মেয়েটাঃ আপনাকে আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। মাঝে মাঝে কিছু কথা বলেন তখন কথা গুলোর অর্থ খুজতে গিয়ে খুব ভালোলাগে। কিন্তু সব সময় বলেন না। সব সময় নিজের মতো করেই ভাবেন বলেই হয়তো ভাবনার এতো গভীরে যেতে পারেন।
ইনোঃ আল্লাহ আপনি আমারে কিন্তু অপমান করতাছেন। আমি ভালো কইরা গুছাইয়া কথা কইতে পারিনা তাই এই কথা কইলেন।
মেয়েটাঃ আরে নাহহ ছি ছি আপনি ভুল ভাবছেন।
ইনোঃ যা ভাবছি আমি ভাবছি। আপনার কথায় তো আমার ভাবনার পরিবর্তন হইবো না , তাই না।
মেয়েটাঃ বুঝতে পারছি আপনার মুডটা ঠিক নেই। এতো অল্পতেই রাগা ঠিক না। নিজেকে কন্ট্রোল করতে শিখুন। আমি আসছি , ভালো থাকবেন।
ইনোঃ যান যান এইখানে থাকার লেইগা কে জোর করলো আপনারে।
.
সেদিন তাদের মাঝে মোটামুটি একটা ছোট্ট ঝগড়ার সৃষ্টি হলো। পৃথিবীর নিয়ম এক পক্ষ কঠিন হলে অপর পক্ষকে নরম হতে হয় , নয়তো জীবনে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়না। আর মেয়েটা ঠিক এই কাজটিই করলো। কারন মেয়েটি খুব বুদ্ধিমতি , তাছাড়াও মেয়েটা যানে ছেলেটা উগ্র মেজাজের , এখন যদি দুজনেই বিক্রিয়া করে তাহলে তো বিস্ফোরণের সৃষ্টি হবে। তাই মেয়েটাই সব সময় স্তব্ধ হয়ে যায়। এই মান অভিমানের পালা বেশকিছুদিন চললো। প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে দুজন দুজনের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। মেয়েটা ভাবছে আর হয়তো কথা হবেনা। আর বার বার নিজেকে দোষী ভাবছে। কারন তার জন্যই ইনোর মেজাজ বিগ্রে যায়। যাই হোক যদি জীবনে কখনো তাকে সামনে পায় তাহলে মেয়েটা ক্ষমা চেয়ে নিবে বলে ঠিক করেন। কিন্তু সেই সুযোগ টা বেশ কিছুদিন ধরে পাচ্ছে না। আর পাবে কিনা সেটা সে জানেনা, কারন ছেলেটা যদি মেয়েটার সামনে এসে না দাড়ায় তাহলে কিভাবে মেয়েটা ক্ষমা চাইবে। নিজেকে অপরাধী ভেবে কাটিয়ে দিলো আরো কয়েকটি সপ্তাহ।
.
এক মিষ্টি দুপুরে মেয়েটা বাড়ির বাহিরে দাড়িয়ে ফোন থেকে কোনো একটা নম্বর ডাইল করার চেষ্টা করছে। ইনো কোথা থেকে এসে তার সামনে হাজির্। মেয়েটার হাত থেকে ফোনটা নিয়েই ইনো বলে ------
ইনোঃ নাম্বার কন?
মেয়েটাঃ জি আপনি আসছেন? আমি ত ভাবতেই পাচ্ছি না।
ইনোঃ অহ আইসা ভুল করলাম নাকি , তাইলে যাইগা।
মেয়েটাঃ না প্লিজ যাবেন না। আমি সেইদিনের জন্য খুবই দুঃখিত সেইদিন আমার জন্যই আপনার মুডটি নষ্ট হয়ে যায়। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন।
ইনোঃ হেহহেহেহ হইছে তো , এখন নাম্বার কন। . . . .
মেয়েটা নাম্বার বললো ইনো কল করে দিলো মেয়েটা কথা বললো। ইনো চুপচাপ দাড়িয়ে আছে কোনো কথা বলে না। মেয়েটা ভাবছে ইনো চলে গেছে। কিন্তু মেয়েটার কেনো যেনো মনে হচ্ছে ইনো তার পাশেই আছে। মেয়েটা বললোঃ আপনি কি আছেন নাকি চলে গেছেন।
ইনোঃ কোনটা আশা করছিলেন।
মেয়েটাঃ আপনার উপস্থিত থাকাটা। আবার ভাবলাম চলেও যেতে পারেন। হয়তো আপনার ফ্রেন্ড খুব দরকারে ফোন দিয়েছে তাই . . . . . .
ইনোঃ নাহহ আজ ফ্রেন্ড আসতে বলেনাই তবুও নিজের ইচ্ছায় আইছি আপনার সাথে কথা বলতে।
মেয়েটাঃ আমি ঠিক বুঝিনি।
ইনোঃ আমার খুব অল্পতেই রাগ উঠে। আর রাগ ভাংতে অনেক লম্বা সময় নেয়। এই কারনেই আমি sry বলার আগেই আমার বন্ধু রা আমারে sry বলে দেয়। আর ক্ষমা চাওয়ার পর কি আর রাগ থাকে আপনিই কন। আমি আজ আইছিলাম আপনারে sry কইতে।
মেয়েটাঃ আল্লাহ তাই বলে এতো লম্বা সময়। এক দিনে ২৪ ঘন্টা , ৬০ মিনিটে ১ঘন্টা . ৬০ সেকেন্ডে ১মিনিট। যথেষ্ট লম্বা সময়। রাগ করে একদিন থাকলেই তো হয়।
ইনোঃ কি করমু। আমি এইরহমি। . . . . . . . . . . . . .
.
সেইদিন তারা দুজন অনেকটা সময় একসাথে কাটায়। তাদের কুশল বিনিময় করে। এবং সেদিনই তারা ফ্রেন্ডশীপ করে নেয়। শুরু হয় একটা নতুন বন্ধুত্বের পথযাত্রা। দুপুর গরিয়ে যখন সন্ধ্যে নেমে এতো , তখন ইনো মেয়েটির থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে গেলো।
.
সন্ধ্যের পর থেকে মেয়েটি যেনো ইনো কে একটু বেশিই মিস করতে লাগলো। আর এদিকে ইনোও wait করছিলো কখন ঘড়ির কাটা ১০ এর ঘরে এসে দাড়াবে। অবশেষে ঘড়ির কাটায় রাত ১০ টা। শব্দ হতে লাগলো , কিরিং কিরিং। এই কিরিং কিরিং শব্দটি শুনে মেয়েটা চকমকে উঠলো। কারন এই সময় মেয়েটিকে কেউই ফোন দেয় না। মেয়েটির ধারনা হয়তো রং নাম্বার হবে। তবুও ফোনটা রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে বলে উঠলো : আসসালামু অলাইকুম .
মেয়েটাঃ অলাইকুম আসসালাম। আপনি এইসময়? আমার নাম্বার টা কিভাবে মেনেজ করলেন।
ইনোঃ আমি শুধুই সালাম দিছি , এতেই কেমনে বুঝলেন আমিই হইতে পারি।
মেয়েটাঃ আপনাকে দেখিনি , চিনিনা , তা বলে এই নয় যে আমি আপনার ভয়েস টাকেও চিনিনা। আপনার সাথে আমার কথা হয়েছে তাহলে কন্ঠ কিভাবে ভুলে যাই বলেন। তাছাড়া ও আপনি এইটা বলেন আপনি কিভাবে বুঝলেন যে আমি আপনাকে মিন করেছি। আমিতো অন্য কাউকেও মিন করতে পারতাম তাই না।
ইনোঃ খুবই স্বাভাবিক , আপনি আমার নাম যানেন না। এইটা প্রথম ধাপ আর দ্বিতীয় ও শেষ ধাপ হলো নাম্বার মেনেজ করার কথা টা। এই দুইটা ধাপের কারনেই আমি বুঝতে পারছি যে আপনে আপনি দ্বারা আমারেই বুঝাইছেন। যাকগে আমি ইনো , আজ দুপুরে আপনার বান্ধবীকে আপনার ফোন থেকে ফোন করার সময়ই আপনার নাম্বার টা মেনেজ করি। যদি ভুল কইরা থাকি তাইলে আগেই ক্ষমা চাইয়া নিতাছি।
মেয়েটাঃ না না ঠিক আছে আমি কিছু মনে করিনি। তাছাড়া বিকেলে আমাদের ফ্রেন্ডশীপ হয়েছে। so এখন আপনি আমার নাম্বার নিতেই পারেন। কিন্তু আপনি যে আমার নাম যানতে চাইলেন না।
ইনোঃ আমি মনে করি, নামের মাঝে কখনোই একজন মানুষকে বুঝা যায় নাl আর একটা মানুষ কে বুঝতে হলে তার কাছে যাওয়াটা জরুরী।
মেয়েটাঃ আপনাকে ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। আপনি কেমন যেনো একটা গোলক ধাধার মতো। বার বার হারিয়ে ফেলি। আপনি কিছু টা মরিচিকার মতো সামনেই আছেন কিন্তু কাছে গেলেই আর অস্তিত্ব পাইনা। আপনি মাঝে মাঝে খুব সুন্দর করে কথা বলেন। লজিক দিয়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন কিন্তু সব সময় না। আচ্ছা আপনি সব সময় এইভাবেই কথা বলতে পারেন না। আমি যানি আপনি পারেন বা পারবেন। প্লিজ এখন থেকে এই আপনি টাই থাকেন প্লিজ।
ইনোঃ ok দেখি চেষ্টা করবো। আমাতে আমিই বিদ্যমান থাকতে পারি কিনা।
মেয়েটাঃ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ , আমি যানি আপনি পারবেন।. . . . . . . . . . . . . . .
.
সেদিন রাতে ওদের মাঝে অনেক কথা হয়। তারা প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত এইভাবেই গল্প করলো। একজন আরেকজনকে বুঝতে চেষ্টা করে , আর একজন আরেকজনকে বুঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু হয়তো দুজনের কেউই উভয়ের মনের কথা বুঝতে পারেনি। বা দুজনের কেউই ওদের মনের কথা একে অপর কে বুঝাতে পারেনি। বুঝা আর বোঝানো বা বুঝতে পারা বা বুঝানোর চেষ্টা করা আর এই বুঝা ও না বুঝার মাধ্যে পরে ওরা নিজেরাই বুঝতে পারছে না যে ওরা আসলে কি বুঝতে চাচ্ছে। এভাবে না বুঝেই তারা মধ্যরাত অতিবাহিত করলো। . . . .
.
পরদিন গোধূলির সময় ইনো রেডি হচ্ছে , কোথায় যেনো যাবে। খুব দ্রূত রেডি হয়ে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরলো। ওহ হে আজ তো ইনোর মেয়েটির সাথে কথা বলার কথা। গতকাল রাতে তাদের মাঝে কথা হয়েছিলো। আজ তারা কোথাও মিট করবে। গোধূলির সময় থেকে প্রদোষকাল সময় পর্যন্ত তারা কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটাবে। এইটা মেয়েটার কথা নয়। এইটা ইনোর আবদার ছিলো মেয়েটার কাছে। মেয়েটা ইনোর আবদার টুকু ফেলতে পারে নি। কারন মেয়েটাও মনে মনে এইটাই চেয়েছিলো। . . . . . ইনো মেয়েটাকে তার বাড়ির সামনে থেকে নিয়ে, নদীর ধারে নির্জন পরিবেশ তরু ছায়ার নিচে বসে। সেখানে গিয়েই ইনো মেয়েটা কে তাদের আশেপাশের বর্ননা দিতে শুরু করলো। যাতে মেয়েটা বুঝতে পারে তারা এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সুন্দর্যের মাঝে অবস্থা করছে। হুট করেই ইনো বলে উঠলো : আচ্ছা আপনার বয়ফ্রেন্ড কয়টা।
মেয়েটাঃ এইটা আবার কেমন প্রশ্ন। কে তার ভালোবাসার সাথে অন্ধ কে জরাবে। আকাশ আর মাটি কি কখনো এক হয়।
ইনোঃ হে এক হয়। অই নদীটার দিকে তাকান। oops sorry দেখতে না পেলেও আমার কথা টা ফিল করে বুঝতে পারবেন আমি আশা করি। নদীর দিকে তাকালেই দেখা যায় আকাশ জমীনে নেমে আসছে।
মেয়েটাঃ অইটা তো একটা প্রতিবিম্ব মাত্র।
ইনোঃ না ঐ টা প্রতিবিম্ব না। ওইটা নদীর বুকে আকাশের ছবি। আমরা যাকে ভালোবাসি চোখ বন্ধ করলে তাকে যেমন দেখতে পাইl যেইভাবে তার ছবি আমাদের চোখের পাতায় ভেসে উঠে, ঠিক সেভাবেই নদী আর আকাশের ভালোবাসা এতোই গভীর যে নদীর বুকে সবসময় আকাশের ছবি দেখা যায়।
মেয়েটাঃ আপনার সাথে আমি কথায় পারবো না। তাছাড়াও আপনিই বলেন কে একটা বোঝাকে বইতে চায়। যারা প্রথম আলাপে জানতে পারে আমি অন্ধ দ্বিতীয় বারের মত আর তাদের সাথে আমার আলাপ হয় না। আমার লাইফে আপনিই প্রথম ছেলে , যেকিনা আমি অন্ধ যেনেও আমার সাথে মিশেছে , আমার কাছে এসেছে , আমার বন্ধু হয়েছে।
ইনোঃ কিন্তু আমি আর আপনার বন্ধু হয়ে থাকতে চাইনা। আপনিই একদিন বলেছিলেন ১দিনে ২৪ঘন্টা , ৬০মিনিটে ১ঘন্টা , ৬০সেকেন্ডে ১মিনিট যথেষ্ট লম্বা সময়। আমরা আমাদের ফ্রেন্ডশীপের এক দিন পার করে ফেলছি। অনেক লম্বা একটা সময় অতিক্রম করে ফেলছি। কিন্তু আর না , আমি আর ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে চাই না। আমি আপনার দুচোখ হতে চাই। যেই চোখ আপনাকে সুন্দর পৃথিবী দেখাবে। আমি আপনার একলা পথের সঙ্গী হতে চাই। যেই একলা পথ আপনার একাকিত্ব টাকে দূর করবে। বিশ্বাস করেন কখনো আপনার দৃষ্টিহীন চোখ থেকে পানি ঝরতে দেবোনা। please you love me.
মেয়েটাঃ ( মাথা নিচু করে ) are you serious. যে আপনি আমাকে বা আমার মত একটা মেয়েকে ভালোবাসেন। আপনি কি সিরিয়াসলি আমাকে ভালোবাসেন।
ইনোঃ আপনার কি মনে হচ্ছে আমি এই বিষ নিয়ে আপনার সাথে fun করছি।
মেয়েটাঃ যানিনা , আমি কিছু বলতে পারবো না . . . . .
ইনোঃ please anyone reply. কিছু একটা বলুন।
মেয়েটাঃ আপনাকে আমার ভালোলাগে , আপনার সাথে কথা বলতে ভালোলাগে , আপনার সাথে একা গল্প করতে ভালোলাগে , কিছু সময় একসাথে কাটাতে ভালো লাগে, আপনি আমার সাথে থাকলে আমার ভালোলাগে।
ইনোঃ just এইটুকুই , আমি যানি আপনার আমাকে ভালোলাগে কারন ভালোনা লাগলে আপনি আজ আমার সাথে এইখানে আসতেন না। একটা গান আছে ভালোলাগা ভালোবাসা এক নয়।
মেয়েটাঃ যাকে আপনার ভালোই লাগে না তাকে ভালোবাসবেন কিভাবে , গান বানানো হয় মানুষের পাবলিসিটি পাবার জন্য। মানুষের চিন্তা ভাবনা বা মনোভাব কে পরিবর্তন করার জন্য না।
ইনোঃ আমি অতো শত বুঝিনা , আমি শুধু যানি I love you. আচ্ছা যান আপনি না চাইলে,
আপনাকে আমায় ভালোবাসতে হবে নাl
আমার সাথে কোথাও ঘুরতে যেতে হবে নাl
রোজ আমার সাথে ফোনে কথা বলতে হবেনা।
আমার পাশে বসে বাদাম খেতে হবে না।
আমার হাতে হাত রেখে হাটতেও হবে না।
শুধু দিনে যতবার আমি আপনাকে বলবো ভালোবাসি , প্রতিবারে আপনি একটু মুচকি হেসে. আমার চোখে চোখ রেখে মৃদু গলায় বলবেন, পাগল তাতেই আমি খুশিl
মেয়েটাঃ হাহাহা, পাগল একটা।
ইনোঃ তাহলে কবুল তো।
মেয়েটাঃ হু পাগল।
ইনোঃ যাই হই তোমারি তো।
মেয়েটাঃ I love you.
ইনোঃ I love you too. . . . . . . .
.
__একটা কথা বলবো রাগ করবে নাতো। (মেয়েটা)
__নাহহ, বলো রাগ করবো কেন?
__আমি অন্ধ না , আমি তোমারি মত দৃষ্টি যুক্ত চোখ দিয়ে দেখতে পাই। এতদিন আমি অন্ধের নাটক করে গেছি। প্লিজ আমাকে ভুল বুঝোনা।
__কিহহহহ তুমি এতদিন নাটক করে গেছো , কিন্তু কেনো।
__সেইদিন কার সিচুয়েশন সামলানোর জন্য কিন্তু ভেবেছিলাম পরে সব বলে দিবো কিন্তু সুযোগ হয়নি। অবশেষে নাটক টা কন্টিনিউ করতে হয়। এখন মনে হচ্ছে নাটক টা করে ভালোই হয়েছে নয়তো আমি তোমার মত কাউকে পেতাম না। যে শুধুই আমার মনকে ভালোবেসেছে।
__তুমি কি সব সত্যি বলছো। আচ্ছা বলোতো আমি কি কালারের শার্ট পড়ে আছি।
__blue.
__তারমানে তুমি এতদিন আমার ভালোবাসার পরিক্ষা নিলা।
__ Yesssss Sir.
__ তো মেডাম আমার পরিক্ষার রেজাল্ট টা কই?
__ ( গালে আলতো হামি দিয়ে ) একদম পটিয়ে ফেলছ। just পোটে গেলাম। i love you. . . . . . . .
__ i love you toooo.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন