মেয়েটা ভয় পাচ্ছে । প্রচন্ড রকম ভয় পাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়েছে বলে মনে হয় না। মনে হলো অনেকদিন পর ফ্রেশ একটা মেয়ে পেয়েছি, রাতটা বেশ ভালোই কাটবে। আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম। বুঝতেই পারলাম মেয়েটা ভয় পেয়ে গেছে। ওর ভয় কাটানো উচিত্। ওর চোখে ভয়টা থেকে গেলে রাতটা গরবাদ।
আমি ওর চোখে একটা ভালোবাসার দৃষ্টি ফেলে স্বাভাবিক ভাবে বললাম, দেখো, তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এত রুপ সৌন্দর্য দেয়া হয়েছে কেনো, জানো? পুরুষদের জন্য। হুঁ, পুরুষদের জন্য। কোন মেয়ে কি তোমার এই রুপ দেখবে? দেখবে না। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা তো আনন্দের জায়গা। আর তাছাড়া এটার জন্য তুমি টাকা পাচ্ছো।
চলো মিটিমিটি আলোতে গোছানো বিছানা টা কে অগোছালো করে ফেলি, তখন বুঝবে আনন্দ কাহাকে বলে।
মেয়েটা এক ভীত দৃষ্টি দিয়ে আমাকে দেখছে। এই দৃষ্টি আমার চেনা। এই আধারী জীবনে পা ফেলার প্রথম রাত্রে প্রচন্ড ভয় পায় এরা। এটাই স্বাভাবিক। তবে মেয়েটা বেশ সুন্দর। সুন্দরীরা এভাবে ব্যবসা করে না। এরা করে বয়ফ্রেন্ডের সাথে, অথবা বিয়ের পর স্বামী থাকার পরেও অন্য কারো স্বামীর সাথে।
আমি আর কোনদিকে খেয়াল না দিয়ে, মেয়েটাকে কাছে টেনে নিলাম। দুটি ঠোঁটের কম্পন, মিটিমিটি আলো মাখানো ঘরটাতে কিছু মৃদু আওয়াজ , অতপর রাতটা ভোর।
.
সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছ। বুঝাই যাচ্ছে, সবাই বেশ মনযোগ দিয়েই শুনছিলো। পাশ থেকে একজন বলল, ভাই আপনার এরকম ঘটনা তো অনেক শুনেছি। কিন্তু আজকের বিষয়টা ঠিক বুঝলাম না।
আমি কিছুক্ষন চুপ থাকলাম।
বসে আছি একটা বিল্ডিংয়ে। এই লোকগুলো আমার শ্রমিক। এই বিল্ডিংয়েরই কাজ করছে। একটু আগে পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে একটা মহিলা এসেছিলো কাপড় নেড়ে দিতে।
মহিলাটা বেখেয়ালি হয়ে গামছা দিয়ে চুল ঝাড়ার সময় একটা দৃশ্য আমাদের চোখে পড়ে যায়।
পাশে দাড়িয়ে থাকা ছেলেগুলো একে অপরকে বলছে, দোস্ত!দেখ দেখ! উফ! কি জিনিস মাইরি। যদি একটা রাতের জন্য পেতাম........।
আমিও দেখছি। এমন দৃশ্য না দেখে থাকি কি করে। কিন্তু নাহ, দেখতে মন চাইছে না। মাথাটা নিচু করে অন্যদিকে ঘুরে গেলাম। এমন দৃশ্য দেখে যেখানে আমিই বেশি নাচানাচি করি, সেখানে আমিই চুপচাপ মাথা নিচু করে অন্য দিকে চলে গেলে যে কেউই অবাক হবে। এরাও অবাক হয়েছে।
পিছনে তাকিয়ে দেখি সবাই আমার দিকে তাকাচ্ছে।
একটা জায়গায় বসলাম।
আমার পিছে পিছে সব ছেলেগুলোই চলে আসলো। একজন বলল, বস, আপনার কি কিছু হয়েছে ?
আমি মাথা নেড়ে বললাম "না"।
তাহলে মন খারাপ কেনো? এমন দৃশ্য দেখে কি কারো মন খারাপ হয়?
আমি একদৃষ্টিতে আকাশের তাকিয়ে থেকে বললাম, আমার জীবনের একটা গল্প আমাকে এরকম বানিয়েছে।
সবার কৌতুহল ছিলো, কি সেই গল্প?
তাই উপরের গল্পটা শোনালাম। কিন্তু নাহ, মূল গল্প ঐ টা নয়। ঐরকম নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েদের সাথে রাত কাটানো গল্প আমার জীবনে শত শত আছে।
মূল গল্প আরেকটা আছে। না, গল্প নয়, একটা কঠিন বাস্তবতা। সবাই এই বাস্তবতার গল্পটা শোনার অপেক্ষাতেই বসে আছে।
বলব কি না বুঝতে পারছি না। নাহ, বলা উচিত্। গল্পটা কাউকে বলার জন্য মনটা বেশ উতলা হয়ে আছে।
বলতে শুরু করলাম...
বিয়ে করলাম। বউটা অসম্ভব সুন্দরী। শান্ত শিষ্ট একটা মেয়ে। একদম আমার মনের মত। ওর নাম অরু।
দুনিয়াতে যত মেয়ে দেখেছি, অরুর কাছে তারা যেন কিছুই নয়। আমি অরুর দিকে তাকিয়ে থাকলে সারাদিনের ক্লান্তিগুলো মুছে যাই। অরু যেনো আমার জন্য একটা স্বর্গ। যতক্ষন অরুর পাশে থাকি, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। দুনিয়ার অন্য কোন কিছুর দিকে আমার খেয়াল থাকে না।
আত্নীয় মহলেও অরুর সুনাম অর্জনে বেশি সময় লাগেনি । আমার নানী অরুকে দেখে আমার গাল টিপে বলেছিলো, আমি অনেক লক্ষী একটা বউ পেয়েছি। সবার কাছে বিষয়টা এমন যে, অরুকে অপছন্দ করার মত কোন অপশন নাই। আমার কাছেও তাই। অরু যেনো আমার জন্য গর্বের একটা বিষয় হয়ে দাড়ায়।
বিয়ের কয়েকদিন পর আমরা শহরে চলে আসি, আমার নতুন বিল্ডিংয়ে। সময়গুলো চাওয়ার চেয়েও বেশী সুখে কাটতে থাকে। তবে সংসারের প্রতি আমার খেয়াল থাকতো না বললেই চলে।
এইজন্য টাকা পয়সা যা কামাই করতাম, সবটুকু অরুই নিয়ে নিতো। যখন দরকার হতো, হিসেব করে দিতো। এক পয়সাও এদিক ওদিক খরচ হতে দিতো না। বেশ বিচক্ষন একটা মেয়ে। আমার অগোছালো ভাবভঙ্গি দেখেই ও টাকাপয়সা সব ওর নিজের কাছেই রাখতো। সংসারের প্রতিটা বিষয়ে যথেষ্ট নজরদারী ছিলো ওর। যেনো, সংসার টা কে সুন্দর করে গোছানোর এক মহা উদ্যোগ নিয়ে নেমে পড়েছে। সবকিছু নিয়ম মাফিক চলতে শুরু করে।
শত ব্যস্ততার মাঝেও, সপ্তাহে একটা দিন ওর জন্য রাখাটা আবশ্যক। ঐ দিন টা তে দুজনে সারাদিন এখানে ওখানে ঘুরতাম। রাতে ছাদে বসে জোত্স্না দেখতাম। আমি যেনো একটা নতুন জীবনের সন্ধান পেয়ে যায়। যে জীবনে নেই কোন ক্লান্তি, পেরেশানি। আছে শুধু অজস্র ভালোবাসা।
এত ভালোবাসার মাঝেও অন্য মেয়ের সাথে রাত কাটানো ছাড়তে পারিনি। একসময় এটা নেশা ছিলো, পরে অভ্যাসে পরিনত হয়ে যায়। তবে বিয়ের পরে আগের মত আর ঐ পল্লীতে নিয়মিত যাওয়া হতনা। মাঝে মাঝে যেতাম।
.
প্রায় চার পাঁচমাস পর,
এই কয়েকমাসে সংসারটা অনেক সুন্দর করে গোছানো হয়ে যায়।
নিষিদ্ধ পল্লীতে যাওয়াটা ও অনেক কমে যায়। কমে যাওয়া বলতে না যাওয়ার মতই। একদিন আমি একটু ভেবেছিলাম , ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে এসব করাটা ঠিক হচ্ছে না। তারপর থেকে ঐ পল্লীতে না যাওয়ার চিন্তা করে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি ।
কিছুদিন পর, আমাকে একটা কাজের জন্য ঢাকা যেতে হয়। আসার কথা ছিলো দশদিন পর। কিন্তু কাজটা আগে শেষ হওয়ায়, আট দিনের মাথাতেই বাসায় রওনা হই। আসার দিন অরুর জন্য একটা গিফট নিই। অনেক খুজে গিফটা যোগাড় করেছিলাম।
গিফটা ছিলো একটা গল্পের মত। যেনো কোন একটা মধুর স্মৃতি কাঁচ দিয়ে মোড়ানো আছে। গিফটা ছিলো এরকম,
"অল্প অল্প মেঘের মধ্যে একটা চাঁদ তার জোত্স্নার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীতে। আর পৃথিবীর একজন পথহারা মানুষ সেই জোত্স্নার আলোতে পথ খুজে পেয়ে অপলক দৃষ্টিতে চাঁদটার দিকে তাকিয়ে আছে।"
অরুকে ইচ্ছে করেই জানাইনি। ভেবেছিলাম দুদিন আগে যাচ্ছি, সাথে আমার পছন্দের একটা গিফট। বড় ধরনের একটা সারপ্রাইজ। অরু অনেক খুশি হবে।
বাসায় আসতে রাত এগারোটা বেজে যায়। মেইন গেটের চাবি আমার কাছেও একটা ছিলো। গেট খুলে আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকে দোতলায় যায়। দেখি, ভেতরে ঘরের দরজা খোলা, লাইট ও জ্বালানো । আমি আরেকটু খুশি হই, ভাবি, আস্তে করে গিয়ে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ওর কপালে একটা চুমু এঁকে দিবো। পাগলিটা চমকেও যাবে, সাথে সারপ্রাইজিং ও হবে। ধীর পায়ে ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। আস্তে করে দরজাটা খুলতেই দেখলাম বিছানায় দুটো মানুষ। অরু, সাথে একজন পুরুষ। আমাকে দেখেই দুজনে ধড়ফড় করে ওঠে কাপড় ঠিক করে। আমি হতবাক হয়ে যায়। কি দেখলাম এইটা? জ্ঞাণহারা মানুষের মত স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে থাকি। লোকটা কিছু না বলে তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে যায়।
-তারপর?
-তারপর হাতে থাকা গল্পের মত গিফট টা পড়ে ভেঙে যায়, সাথে মেঘে ঢেকে যায় চাঁদের আলো, অন্ধকারে আবারো হারিয়ে ফেলি পথ। এটাই সেই গল্প।
কিছুক্ষন সব চুপচাপ। নিরব। ছেলেগুলো নির্বাক হয়ে আমাকে দেখছে। বূঝতেই পারছি, এরা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।
একটা হাসির শব্দ শুনতে পেলাম। একজন মুরুব্বি টাইপের বৃদ্ধ হাসছে। এই মুরুব্বিও এখানে কাজ করে। বুঝতে পারলাম ইনিও গল্পটা শুনেছে। কিন্তু হাসছে কেনো? হাসার কারনটা ওর কাছে জানতে চাওয়ার আগেই বলে উঠল,
বাজানরে, তুই কি জানিস? আল্লাহ সর্বোচ্চ ওয়াদা পালনকারী।
আমি কিছু বললাম না।
উনি আবার বললেন, আল্লাহই সর্বোচ্চ ওয়াদা পালন কারী। আর আল্লাহ কোরআনে সূরা নূরের ২৬ নং আয়াতে একটা ওয়াদা করেছেন, সেটা হলো..
অস্চ্চরিত্রা নারী অসচ্চরিত্র পুরুষের জন্য, আর অসচ্চরিত্র পুরুষ অসচ্চরিত্র নারীদের জন্য।
এটুকু বলেই বৃদ্ধ চলে গেলো, আমি নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
আমি ওর চোখে একটা ভালোবাসার দৃষ্টি ফেলে স্বাভাবিক ভাবে বললাম, দেখো, তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এত রুপ সৌন্দর্য দেয়া হয়েছে কেনো, জানো? পুরুষদের জন্য। হুঁ, পুরুষদের জন্য। কোন মেয়ে কি তোমার এই রুপ দেখবে? দেখবে না। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটা তো আনন্দের জায়গা। আর তাছাড়া এটার জন্য তুমি টাকা পাচ্ছো।
চলো মিটিমিটি আলোতে গোছানো বিছানা টা কে অগোছালো করে ফেলি, তখন বুঝবে আনন্দ কাহাকে বলে।
মেয়েটা এক ভীত দৃষ্টি দিয়ে আমাকে দেখছে। এই দৃষ্টি আমার চেনা। এই আধারী জীবনে পা ফেলার প্রথম রাত্রে প্রচন্ড ভয় পায় এরা। এটাই স্বাভাবিক। তবে মেয়েটা বেশ সুন্দর। সুন্দরীরা এভাবে ব্যবসা করে না। এরা করে বয়ফ্রেন্ডের সাথে, অথবা বিয়ের পর স্বামী থাকার পরেও অন্য কারো স্বামীর সাথে।
আমি আর কোনদিকে খেয়াল না দিয়ে, মেয়েটাকে কাছে টেনে নিলাম। দুটি ঠোঁটের কম্পন, মিটিমিটি আলো মাখানো ঘরটাতে কিছু মৃদু আওয়াজ , অতপর রাতটা ভোর।
.
সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছ। বুঝাই যাচ্ছে, সবাই বেশ মনযোগ দিয়েই শুনছিলো। পাশ থেকে একজন বলল, ভাই আপনার এরকম ঘটনা তো অনেক শুনেছি। কিন্তু আজকের বিষয়টা ঠিক বুঝলাম না।
আমি কিছুক্ষন চুপ থাকলাম।
বসে আছি একটা বিল্ডিংয়ে। এই লোকগুলো আমার শ্রমিক। এই বিল্ডিংয়েরই কাজ করছে। একটু আগে পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে একটা মহিলা এসেছিলো কাপড় নেড়ে দিতে।
মহিলাটা বেখেয়ালি হয়ে গামছা দিয়ে চুল ঝাড়ার সময় একটা দৃশ্য আমাদের চোখে পড়ে যায়।
পাশে দাড়িয়ে থাকা ছেলেগুলো একে অপরকে বলছে, দোস্ত!দেখ দেখ! উফ! কি জিনিস মাইরি। যদি একটা রাতের জন্য পেতাম........।
আমিও দেখছি। এমন দৃশ্য না দেখে থাকি কি করে। কিন্তু নাহ, দেখতে মন চাইছে না। মাথাটা নিচু করে অন্যদিকে ঘুরে গেলাম। এমন দৃশ্য দেখে যেখানে আমিই বেশি নাচানাচি করি, সেখানে আমিই চুপচাপ মাথা নিচু করে অন্য দিকে চলে গেলে যে কেউই অবাক হবে। এরাও অবাক হয়েছে।
পিছনে তাকিয়ে দেখি সবাই আমার দিকে তাকাচ্ছে।
একটা জায়গায় বসলাম।
আমার পিছে পিছে সব ছেলেগুলোই চলে আসলো। একজন বলল, বস, আপনার কি কিছু হয়েছে ?
আমি মাথা নেড়ে বললাম "না"।
তাহলে মন খারাপ কেনো? এমন দৃশ্য দেখে কি কারো মন খারাপ হয়?
আমি একদৃষ্টিতে আকাশের তাকিয়ে থেকে বললাম, আমার জীবনের একটা গল্প আমাকে এরকম বানিয়েছে।
সবার কৌতুহল ছিলো, কি সেই গল্প?
তাই উপরের গল্পটা শোনালাম। কিন্তু নাহ, মূল গল্প ঐ টা নয়। ঐরকম নিষিদ্ধপল্লীর মেয়েদের সাথে রাত কাটানো গল্প আমার জীবনে শত শত আছে।
মূল গল্প আরেকটা আছে। না, গল্প নয়, একটা কঠিন বাস্তবতা। সবাই এই বাস্তবতার গল্পটা শোনার অপেক্ষাতেই বসে আছে।
বলব কি না বুঝতে পারছি না। নাহ, বলা উচিত্। গল্পটা কাউকে বলার জন্য মনটা বেশ উতলা হয়ে আছে।
বলতে শুরু করলাম...
বিয়ে করলাম। বউটা অসম্ভব সুন্দরী। শান্ত শিষ্ট একটা মেয়ে। একদম আমার মনের মত। ওর নাম অরু।
দুনিয়াতে যত মেয়ে দেখেছি, অরুর কাছে তারা যেন কিছুই নয়। আমি অরুর দিকে তাকিয়ে থাকলে সারাদিনের ক্লান্তিগুলো মুছে যাই। অরু যেনো আমার জন্য একটা স্বর্গ। যতক্ষন অরুর পাশে থাকি, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। দুনিয়ার অন্য কোন কিছুর দিকে আমার খেয়াল থাকে না।
আত্নীয় মহলেও অরুর সুনাম অর্জনে বেশি সময় লাগেনি । আমার নানী অরুকে দেখে আমার গাল টিপে বলেছিলো, আমি অনেক লক্ষী একটা বউ পেয়েছি। সবার কাছে বিষয়টা এমন যে, অরুকে অপছন্দ করার মত কোন অপশন নাই। আমার কাছেও তাই। অরু যেনো আমার জন্য গর্বের একটা বিষয় হয়ে দাড়ায়।
বিয়ের কয়েকদিন পর আমরা শহরে চলে আসি, আমার নতুন বিল্ডিংয়ে। সময়গুলো চাওয়ার চেয়েও বেশী সুখে কাটতে থাকে। তবে সংসারের প্রতি আমার খেয়াল থাকতো না বললেই চলে।
এইজন্য টাকা পয়সা যা কামাই করতাম, সবটুকু অরুই নিয়ে নিতো। যখন দরকার হতো, হিসেব করে দিতো। এক পয়সাও এদিক ওদিক খরচ হতে দিতো না। বেশ বিচক্ষন একটা মেয়ে। আমার অগোছালো ভাবভঙ্গি দেখেই ও টাকাপয়সা সব ওর নিজের কাছেই রাখতো। সংসারের প্রতিটা বিষয়ে যথেষ্ট নজরদারী ছিলো ওর। যেনো, সংসার টা কে সুন্দর করে গোছানোর এক মহা উদ্যোগ নিয়ে নেমে পড়েছে। সবকিছু নিয়ম মাফিক চলতে শুরু করে।
শত ব্যস্ততার মাঝেও, সপ্তাহে একটা দিন ওর জন্য রাখাটা আবশ্যক। ঐ দিন টা তে দুজনে সারাদিন এখানে ওখানে ঘুরতাম। রাতে ছাদে বসে জোত্স্না দেখতাম। আমি যেনো একটা নতুন জীবনের সন্ধান পেয়ে যায়। যে জীবনে নেই কোন ক্লান্তি, পেরেশানি। আছে শুধু অজস্র ভালোবাসা।
এত ভালোবাসার মাঝেও অন্য মেয়ের সাথে রাত কাটানো ছাড়তে পারিনি। একসময় এটা নেশা ছিলো, পরে অভ্যাসে পরিনত হয়ে যায়। তবে বিয়ের পরে আগের মত আর ঐ পল্লীতে নিয়মিত যাওয়া হতনা। মাঝে মাঝে যেতাম।
.
প্রায় চার পাঁচমাস পর,
এই কয়েকমাসে সংসারটা অনেক সুন্দর করে গোছানো হয়ে যায়।
নিষিদ্ধ পল্লীতে যাওয়াটা ও অনেক কমে যায়। কমে যাওয়া বলতে না যাওয়ার মতই। একদিন আমি একটু ভেবেছিলাম , ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ের সাথে এসব করাটা ঠিক হচ্ছে না। তারপর থেকে ঐ পল্লীতে না যাওয়ার চিন্তা করে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি ।
কিছুদিন পর, আমাকে একটা কাজের জন্য ঢাকা যেতে হয়। আসার কথা ছিলো দশদিন পর। কিন্তু কাজটা আগে শেষ হওয়ায়, আট দিনের মাথাতেই বাসায় রওনা হই। আসার দিন অরুর জন্য একটা গিফট নিই। অনেক খুজে গিফটা যোগাড় করেছিলাম।
গিফটা ছিলো একটা গল্পের মত। যেনো কোন একটা মধুর স্মৃতি কাঁচ দিয়ে মোড়ানো আছে। গিফটা ছিলো এরকম,
"অল্প অল্প মেঘের মধ্যে একটা চাঁদ তার জোত্স্নার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীতে। আর পৃথিবীর একজন পথহারা মানুষ সেই জোত্স্নার আলোতে পথ খুজে পেয়ে অপলক দৃষ্টিতে চাঁদটার দিকে তাকিয়ে আছে।"
অরুকে ইচ্ছে করেই জানাইনি। ভেবেছিলাম দুদিন আগে যাচ্ছি, সাথে আমার পছন্দের একটা গিফট। বড় ধরনের একটা সারপ্রাইজ। অরু অনেক খুশি হবে।
বাসায় আসতে রাত এগারোটা বেজে যায়। মেইন গেটের চাবি আমার কাছেও একটা ছিলো। গেট খুলে আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকে দোতলায় যায়। দেখি, ভেতরে ঘরের দরজা খোলা, লাইট ও জ্বালানো । আমি আরেকটু খুশি হই, ভাবি, আস্তে করে গিয়ে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ওর কপালে একটা চুমু এঁকে দিবো। পাগলিটা চমকেও যাবে, সাথে সারপ্রাইজিং ও হবে। ধীর পায়ে ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। আস্তে করে দরজাটা খুলতেই দেখলাম বিছানায় দুটো মানুষ। অরু, সাথে একজন পুরুষ। আমাকে দেখেই দুজনে ধড়ফড় করে ওঠে কাপড় ঠিক করে। আমি হতবাক হয়ে যায়। কি দেখলাম এইটা? জ্ঞাণহারা মানুষের মত স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে থাকি। লোকটা কিছু না বলে তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে যায়।
-তারপর?
-তারপর হাতে থাকা গল্পের মত গিফট টা পড়ে ভেঙে যায়, সাথে মেঘে ঢেকে যায় চাঁদের আলো, অন্ধকারে আবারো হারিয়ে ফেলি পথ। এটাই সেই গল্প।
কিছুক্ষন সব চুপচাপ। নিরব। ছেলেগুলো নির্বাক হয়ে আমাকে দেখছে। বূঝতেই পারছি, এরা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।
একটা হাসির শব্দ শুনতে পেলাম। একজন মুরুব্বি টাইপের বৃদ্ধ হাসছে। এই মুরুব্বিও এখানে কাজ করে। বুঝতে পারলাম ইনিও গল্পটা শুনেছে। কিন্তু হাসছে কেনো? হাসার কারনটা ওর কাছে জানতে চাওয়ার আগেই বলে উঠল,
বাজানরে, তুই কি জানিস? আল্লাহ সর্বোচ্চ ওয়াদা পালনকারী।
আমি কিছু বললাম না।
উনি আবার বললেন, আল্লাহই সর্বোচ্চ ওয়াদা পালন কারী। আর আল্লাহ কোরআনে সূরা নূরের ২৬ নং আয়াতে একটা ওয়াদা করেছেন, সেটা হলো..
অস্চ্চরিত্রা নারী অসচ্চরিত্র পুরুষের জন্য, আর অসচ্চরিত্র পুরুষ অসচ্চরিত্র নারীদের জন্য।
এটুকু বলেই বৃদ্ধ চলে গেলো, আমি নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন