তিহার সাথে আজ প্রায় অনেকদিন হলো
যোগাযোগ নেই আমার। মেয়েটাকে অনেক
পছন্দ করতাম। অনেক ভালোও বাসতাম। ও
একদম আমার মনের মতো ছিল। কিন্তু ও
হয়তো বাসতোনা। তাইতো সবার সামনে
যেদিন মুখে বোকা বোকা হাসি নিয়ে হাটু
গেড়ে ফিল্মি স্টাইল এ প্রোপোজ
করেছিলাম ,সবার সামনে অপমান করে চলে
গিয়েছিল। আমি নাকি ছোটলোকের ছেলে
কারন আমার বাবার ওর বাবার মতো অতো
টাকা ছিলনা।
.
.
অনেক পুরনো কথা এসব। প্রায় ২ বছর তো
হবেই। শুনেছি তিহা নাকি বাহিরের
কোনো দেশ এ চলে গিয়েছে। আমার জীবন
ও থেমে নেই। আমি তিহার সবচেয়ে কাছের
বান্ধবী রিয়া কে বিয়ে করে নিয়েছি
প্রায় এক বছর আগেই। মেয়েটা দেখতে অতো
ভালনা সবাই বলে। কিন্তু আমার কাছে
কখনোই ওকে অসুন্দর মনে হয়নি। কারন
আমার মতে সৌন্দর্য মানুষের মনে থাকে,
চেহারায় নয়।
.
.
কিন্তু আজ হঠাত একটা কল এসেছিল অচেনা
একটা নাম্বার থেকে। তিহার সাথে
কখনোই আমার মোবাইল এ কথা হয়নি তাও
আমার মনে হচ্ছিল এটা তিহাই। সন্ধ্যা ৭
টায় দেখা করার কথা হয়েছে আমাদের।
অফিস থেকে ফিরে রিয়া কে কিছু না
বলেই বেরিয়ে পড়লাম। বের হওয়ার আগে
মনে হলো রিয়া কিছু বলতে চায় কিন্তু শেষ
মুহুর্তে কেন যেন আর বলেনি। তিহা এতদিন
পরে কি এমন বলার জন্য ডেকেছে সে
চিন্তায় আমিও আর কিছু জানতে চাইনি।
.
.
রেস্টুরেন্ট এ একদম শেষ এর দিকে একটা
মেয়েকে একা বসে থাকতে দেখলাম ঢুকেই।
আমি ওকে আজও পিছন দিক থেকেই চিনে
ফেলতে পারলাম ঠিক যেমন ভার্সিটির
দিনগুলোতে পারতাম। খুবই অবাক হলাম।
সামনে যেতেই বুঝলাম আমার তিহাকে
চিনতে আজও ভুল হয়নি। কিন্তু ওকে দেখে
আমি একটা ধাক্কার মতো খেলাম।
--কেমন আছো আবির। (তিহা)
-- হ্যা ভাল আছি আমি। কি-- কি ন্তু
তোমার এই অবস্থা কেন? কি হয়েছে তিহা
তোমার। বলো। (আমি)
তিহা কিছু বলেনা, শুধু হাসে। দেখে আমার
অনেক রাগ হলো।
-- হাসির কিছু বলেছি আমি? কি হয়েছে
তোমার বলবেতো।
--- কিছুই হয়নি, আবার অনেক কিছু হয়েছেও।
--- দেখো তিহা আমি এখানে তোমার
সাথে নাটক করতে আসিনি। আমার সাথে
রহস্য করে কথা বলবেনা প্লিজ।
--- আচ্ছা আচ্ছা আমি রহস্য করবোনা
কেমন। তুমি একটু শান্ত হও আগে। আমি
বলছি।
--- বলো। প্লিজ তাড়াতাড়ি বলো।
-- তোমার মনে আছে ভার্সিটিতে একবার
তুমি আমাকে দেখার জন্য আমাদের
ডিপার্টমেন্ট এর সামনে দাড়িয়েছিলে।
কিন্তু আমি তোমার পিছন দিক থেকে
সামনে যেয়ে ডিপার্টমেন্ট এ ঢুকে আবার
তোমার সামনেই ডিপার্টমেন্ট থেকে বের
হচ্ছিলাম। তুমি হা করে তাকিয়েছিলে।
কিন্তু বোঝোই নি যে তোমার জন্যই সেদিন
ক্লাস টা মিস দিয়ে তোমার আগে পিছে
ঘুরছিলাম যেন তুমি দেখতে পাও।
--- হ্যা তিহা অনেক সুন্দর ছিল ওই
দিনগুলো।
--- হ্যা। কিন্তু তুমিনা একদম বুদ্ধু ছিলে।
পুরো ক্যাম্পাস জানতো আমি তোমার জন্য
কত্তো পাগল শুধু তুমিই বুঝতেনা। এভাবে
তাকাচ্ছো কেন? ওকে ওকে কারেকশন।
তুমিও বুঝতে।
--- ভালবাসতাম আমিও তিহা। আর তাইতো
সবার সামনে জানিয়েছিলাম আমার
ভালবাসার কথা। কিন্তু তুমিতো ....
---- আমিতো কি? অপমান করে চলে গেলাম
তাইতো? কখনো কি ভেবে দেখেছ যেই
মেয়েটা নিজের ক্লাস না থাকলেও
ভার্সিটিতে যেয়ে তোমার ডিপার্টমেন্ট
এর সামনে দিয়ে ঘুর ঘুর করতো, সে কেন
করতো এমন?
--- আমি এসব আর ভাবতে চাইনা।
---- কিন্তু আমি বলতে চাই। কারন আর
হয়তো বলার সুযোগ পাবোনা।
---- মানে???
--- আবির তোমার মনে আছে আমাকে
প্রোপোজ করার ঠিক ৭ দিন আগে আমাদের
কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট এর ল্যাব এ কেউ
একজন মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল। তুমি
ডিপার্টমেন্ট এর সামনেই ছিলে কিন্তু
অনেক মানুষ থাকায় তার চেহারা তুমি
দেখতে পাওনি। ওই মেয়েটা আমি ছিলাম।
---- মানে??? কি হয়েছিল তোমার?
---- জানিনা আমি। বাবা কখনোই
জানায়নি আমাকে। শুধু বলেছিল আমাকে
কিছু হতে দিবেনা। কিন্তু বাবার কথায়
কিছুতো ছিল যার কারনে আমি বুঝতে
পেরেছিলাম আমি হয়তো আর ঠিক হবোনা।
আমি আমার অনিশ্চিত জীবনের সাথে
তোমাকে জড়াতে চাইনি। তাই তোমাকে
ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। আমি চাইনি
আবির তুমি আমাকে পেয়েও হারিয়ে ফেল।
কিন্তু আমি জানতাম যে আমি এভাবে চলে
গেলে তুমি অনেক ভেংগে পড়বে। তাই
রিয়াকে বলেছিলাম যেন সারাজীবন
তোমার সাথে থাকে। তুমি যেমন আমাকে
ভালবাসতে, রিয়াও আমাকে অনেক
ভালবাসতো তাই আমার কথা সে
রেখেছিল।
---- বাহ তিহা বাহ। তুমি কত্তো মহত। এত্ত
বড় ধোকা তুমি আমাকে দিয়েছ। আর
পুরস্কার স্বরুপ একটা মেয়ের নকল ভালবাসা
দিয়ে গেছ আমাকে।
---- তুমি আমাকে ভুল বুঝছো আবির।
---- কি ভুল বুঝছি আমি তিহা? বলো।
তোমাকে আমি ভালবেসেছিলাম, আমার
কি সত্যিটা জানার অধিকার ছিলনা। আর
রিয়া? ওকেতো আমি সত্যি সত্যিই
ভালবাসতে শুরু করেছিলাম বিয়ের পরে।
কারন আমার মনে হতো এই মেয়েটাই
আমাকে তুমি চলে যাওয়ার পরে নতুন করে
বাচতে শিখিয়েছিল। কিন্তু আজকে
জানতে পারলাম সবটাই নাটক ছিল। কেন
করলে তুমি আমার সাথে এমন?
---- আবির রিয়া নাটক করেনি। ও তোমাকে
সত্যিই ভালবাসতো। হয়তো আমার চেয়েও
বেশি। নাহলে আমি আমার ব্যাপারে
তোমার কাছে কিছুই গোপন করতাম না।
আমি চেয়েছিলাম আমি আমার ভালবাসা
না পেলেও ও পাক।
.
.
-- আমি তোমাদের দুজনের কাছেই ক্ষমা
চাচ্ছি। জানি ক্ষমার অযোগ্য তবুও প্লিজ
হঠাত রিয়ার কথায় আমাদের ঘোর
ভাংলো।
----- রিয়া তোর ক্ষমা চাইতে হবেনা। আর
কিছু বলতেও হবেনা। যা বলার আমি
বলেছি। আবির তোকে মাফ করে দিবে। আর
আবির আমি এটাই বলতে এসেছিলাম যে
আমি হয়তো আর বেশিদিন বাচবোনা।
অনেক হার্ট করেছি তোমাকে। পারলে
ক্ষমা করে দিও আমাকে। আমি আসি।
আর থাকতে পারলাম না আবিরের সামনে।
ওর কান্না দেখার শক্তি নেই আমার। আর
আমি চেয়েও আবিরকে বলতে পারলাম না
যে সেদিন ল্যাব এ যা হয়েছিল সেটা স্রেফ
একটা এক্সিডেন্ট ছিলনা। কিছু মানুষ
নিষ্ঠুর হতে পারেনা আর তাই হয়তো
নিজের সুখগুলো ছিনিয়ে নিতে পারেনা।
.
.
১ বছর পর
.
তিহা ৬ মাস আগেই মারা গিয়েছে। ডক্টর
রাও ওকে বাচাতে পারেনি। কেমিস্ট্রির
অনেক ভাল ছাত্রী ছিলাম আমি। নতুন নতুন
এক্সপেরিমেন্ট করা আমার নেশা ছিল। আর
আবির ও আমার নেশা ছিল। আমি জানতাম
তিহা থাকলে আবির কখনোই আমার
হবেনা। তাই সেদিন আমার বানানো সদ্য
নতুন ভাইরাসটি আমি তিহার শরীরে
ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। যার প্রতিষেধক ও শুধু
আমার কাছেই ছিল। তিহা সবই জানতে
পেরেছিল পরে। কিন্তু তবুও আমার কাছে
এসে এন্টিডোড চায়নি। ও আমাকে অনেক
ভালবাসতো। তাই আবিরকে আমার হাতে
তুলে দিয়ে গিয়েছিল। আর মনের আঘাত
নিয়েই আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলেও
গেল।
.
.
আমি আবিরকে আজও সত্যিটা বলতে
পারিনি। এমন না যে কখনো বলতে ইচ্ছা
হয়নি। হয়েছে। কিন্তু যেই সত্য তিহা বলতে
চায়নি সেটা আমিও আর বলিনি।
.
.
আমি মা হতে চলেছি। ডক্টর বলেছে মেয়ে
হবে। আমি তিহা নাম রাখবো ঠিক
করেছি। আবির শুনে অনেক অবাক হয়েছিল।
আমি কিছুই বলিনি। সব কথার উত্তর হয়তো
মুখে দেওয়া যায়না।
যোগাযোগ নেই আমার। মেয়েটাকে অনেক
পছন্দ করতাম। অনেক ভালোও বাসতাম। ও
একদম আমার মনের মতো ছিল। কিন্তু ও
হয়তো বাসতোনা। তাইতো সবার সামনে
যেদিন মুখে বোকা বোকা হাসি নিয়ে হাটু
গেড়ে ফিল্মি স্টাইল এ প্রোপোজ
করেছিলাম ,সবার সামনে অপমান করে চলে
গিয়েছিল। আমি নাকি ছোটলোকের ছেলে
কারন আমার বাবার ওর বাবার মতো অতো
টাকা ছিলনা।
.
.
অনেক পুরনো কথা এসব। প্রায় ২ বছর তো
হবেই। শুনেছি তিহা নাকি বাহিরের
কোনো দেশ এ চলে গিয়েছে। আমার জীবন
ও থেমে নেই। আমি তিহার সবচেয়ে কাছের
বান্ধবী রিয়া কে বিয়ে করে নিয়েছি
প্রায় এক বছর আগেই। মেয়েটা দেখতে অতো
ভালনা সবাই বলে। কিন্তু আমার কাছে
কখনোই ওকে অসুন্দর মনে হয়নি। কারন
আমার মতে সৌন্দর্য মানুষের মনে থাকে,
চেহারায় নয়।
.
.
কিন্তু আজ হঠাত একটা কল এসেছিল অচেনা
একটা নাম্বার থেকে। তিহার সাথে
কখনোই আমার মোবাইল এ কথা হয়নি তাও
আমার মনে হচ্ছিল এটা তিহাই। সন্ধ্যা ৭
টায় দেখা করার কথা হয়েছে আমাদের।
অফিস থেকে ফিরে রিয়া কে কিছু না
বলেই বেরিয়ে পড়লাম। বের হওয়ার আগে
মনে হলো রিয়া কিছু বলতে চায় কিন্তু শেষ
মুহুর্তে কেন যেন আর বলেনি। তিহা এতদিন
পরে কি এমন বলার জন্য ডেকেছে সে
চিন্তায় আমিও আর কিছু জানতে চাইনি।
.
.
রেস্টুরেন্ট এ একদম শেষ এর দিকে একটা
মেয়েকে একা বসে থাকতে দেখলাম ঢুকেই।
আমি ওকে আজও পিছন দিক থেকেই চিনে
ফেলতে পারলাম ঠিক যেমন ভার্সিটির
দিনগুলোতে পারতাম। খুবই অবাক হলাম।
সামনে যেতেই বুঝলাম আমার তিহাকে
চিনতে আজও ভুল হয়নি। কিন্তু ওকে দেখে
আমি একটা ধাক্কার মতো খেলাম।
--কেমন আছো আবির। (তিহা)
-- হ্যা ভাল আছি আমি। কি-- কি ন্তু
তোমার এই অবস্থা কেন? কি হয়েছে তিহা
তোমার। বলো। (আমি)
তিহা কিছু বলেনা, শুধু হাসে। দেখে আমার
অনেক রাগ হলো।
-- হাসির কিছু বলেছি আমি? কি হয়েছে
তোমার বলবেতো।
--- কিছুই হয়নি, আবার অনেক কিছু হয়েছেও।
--- দেখো তিহা আমি এখানে তোমার
সাথে নাটক করতে আসিনি। আমার সাথে
রহস্য করে কথা বলবেনা প্লিজ।
--- আচ্ছা আচ্ছা আমি রহস্য করবোনা
কেমন। তুমি একটু শান্ত হও আগে। আমি
বলছি।
--- বলো। প্লিজ তাড়াতাড়ি বলো।
-- তোমার মনে আছে ভার্সিটিতে একবার
তুমি আমাকে দেখার জন্য আমাদের
ডিপার্টমেন্ট এর সামনে দাড়িয়েছিলে।
কিন্তু আমি তোমার পিছন দিক থেকে
সামনে যেয়ে ডিপার্টমেন্ট এ ঢুকে আবার
তোমার সামনেই ডিপার্টমেন্ট থেকে বের
হচ্ছিলাম। তুমি হা করে তাকিয়েছিলে।
কিন্তু বোঝোই নি যে তোমার জন্যই সেদিন
ক্লাস টা মিস দিয়ে তোমার আগে পিছে
ঘুরছিলাম যেন তুমি দেখতে পাও।
--- হ্যা তিহা অনেক সুন্দর ছিল ওই
দিনগুলো।
--- হ্যা। কিন্তু তুমিনা একদম বুদ্ধু ছিলে।
পুরো ক্যাম্পাস জানতো আমি তোমার জন্য
কত্তো পাগল শুধু তুমিই বুঝতেনা। এভাবে
তাকাচ্ছো কেন? ওকে ওকে কারেকশন।
তুমিও বুঝতে।
--- ভালবাসতাম আমিও তিহা। আর তাইতো
সবার সামনে জানিয়েছিলাম আমার
ভালবাসার কথা। কিন্তু তুমিতো ....
---- আমিতো কি? অপমান করে চলে গেলাম
তাইতো? কখনো কি ভেবে দেখেছ যেই
মেয়েটা নিজের ক্লাস না থাকলেও
ভার্সিটিতে যেয়ে তোমার ডিপার্টমেন্ট
এর সামনে দিয়ে ঘুর ঘুর করতো, সে কেন
করতো এমন?
--- আমি এসব আর ভাবতে চাইনা।
---- কিন্তু আমি বলতে চাই। কারন আর
হয়তো বলার সুযোগ পাবোনা।
---- মানে???
--- আবির তোমার মনে আছে আমাকে
প্রোপোজ করার ঠিক ৭ দিন আগে আমাদের
কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট এর ল্যাব এ কেউ
একজন মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল। তুমি
ডিপার্টমেন্ট এর সামনেই ছিলে কিন্তু
অনেক মানুষ থাকায় তার চেহারা তুমি
দেখতে পাওনি। ওই মেয়েটা আমি ছিলাম।
---- মানে??? কি হয়েছিল তোমার?
---- জানিনা আমি। বাবা কখনোই
জানায়নি আমাকে। শুধু বলেছিল আমাকে
কিছু হতে দিবেনা। কিন্তু বাবার কথায়
কিছুতো ছিল যার কারনে আমি বুঝতে
পেরেছিলাম আমি হয়তো আর ঠিক হবোনা।
আমি আমার অনিশ্চিত জীবনের সাথে
তোমাকে জড়াতে চাইনি। তাই তোমাকে
ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। আমি চাইনি
আবির তুমি আমাকে পেয়েও হারিয়ে ফেল।
কিন্তু আমি জানতাম যে আমি এভাবে চলে
গেলে তুমি অনেক ভেংগে পড়বে। তাই
রিয়াকে বলেছিলাম যেন সারাজীবন
তোমার সাথে থাকে। তুমি যেমন আমাকে
ভালবাসতে, রিয়াও আমাকে অনেক
ভালবাসতো তাই আমার কথা সে
রেখেছিল।
---- বাহ তিহা বাহ। তুমি কত্তো মহত। এত্ত
বড় ধোকা তুমি আমাকে দিয়েছ। আর
পুরস্কার স্বরুপ একটা মেয়ের নকল ভালবাসা
দিয়ে গেছ আমাকে।
---- তুমি আমাকে ভুল বুঝছো আবির।
---- কি ভুল বুঝছি আমি তিহা? বলো।
তোমাকে আমি ভালবেসেছিলাম, আমার
কি সত্যিটা জানার অধিকার ছিলনা। আর
রিয়া? ওকেতো আমি সত্যি সত্যিই
ভালবাসতে শুরু করেছিলাম বিয়ের পরে।
কারন আমার মনে হতো এই মেয়েটাই
আমাকে তুমি চলে যাওয়ার পরে নতুন করে
বাচতে শিখিয়েছিল। কিন্তু আজকে
জানতে পারলাম সবটাই নাটক ছিল। কেন
করলে তুমি আমার সাথে এমন?
---- আবির রিয়া নাটক করেনি। ও তোমাকে
সত্যিই ভালবাসতো। হয়তো আমার চেয়েও
বেশি। নাহলে আমি আমার ব্যাপারে
তোমার কাছে কিছুই গোপন করতাম না।
আমি চেয়েছিলাম আমি আমার ভালবাসা
না পেলেও ও পাক।
.
.
-- আমি তোমাদের দুজনের কাছেই ক্ষমা
চাচ্ছি। জানি ক্ষমার অযোগ্য তবুও প্লিজ
হঠাত রিয়ার কথায় আমাদের ঘোর
ভাংলো।
----- রিয়া তোর ক্ষমা চাইতে হবেনা। আর
কিছু বলতেও হবেনা। যা বলার আমি
বলেছি। আবির তোকে মাফ করে দিবে। আর
আবির আমি এটাই বলতে এসেছিলাম যে
আমি হয়তো আর বেশিদিন বাচবোনা।
অনেক হার্ট করেছি তোমাকে। পারলে
ক্ষমা করে দিও আমাকে। আমি আসি।
আর থাকতে পারলাম না আবিরের সামনে।
ওর কান্না দেখার শক্তি নেই আমার। আর
আমি চেয়েও আবিরকে বলতে পারলাম না
যে সেদিন ল্যাব এ যা হয়েছিল সেটা স্রেফ
একটা এক্সিডেন্ট ছিলনা। কিছু মানুষ
নিষ্ঠুর হতে পারেনা আর তাই হয়তো
নিজের সুখগুলো ছিনিয়ে নিতে পারেনা।
.
.
১ বছর পর
.
তিহা ৬ মাস আগেই মারা গিয়েছে। ডক্টর
রাও ওকে বাচাতে পারেনি। কেমিস্ট্রির
অনেক ভাল ছাত্রী ছিলাম আমি। নতুন নতুন
এক্সপেরিমেন্ট করা আমার নেশা ছিল। আর
আবির ও আমার নেশা ছিল। আমি জানতাম
তিহা থাকলে আবির কখনোই আমার
হবেনা। তাই সেদিন আমার বানানো সদ্য
নতুন ভাইরাসটি আমি তিহার শরীরে
ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। যার প্রতিষেধক ও শুধু
আমার কাছেই ছিল। তিহা সবই জানতে
পেরেছিল পরে। কিন্তু তবুও আমার কাছে
এসে এন্টিডোড চায়নি। ও আমাকে অনেক
ভালবাসতো। তাই আবিরকে আমার হাতে
তুলে দিয়ে গিয়েছিল। আর মনের আঘাত
নিয়েই আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলেও
গেল।
.
.
আমি আবিরকে আজও সত্যিটা বলতে
পারিনি। এমন না যে কখনো বলতে ইচ্ছা
হয়নি। হয়েছে। কিন্তু যেই সত্য তিহা বলতে
চায়নি সেটা আমিও আর বলিনি।
.
.
আমি মা হতে চলেছি। ডক্টর বলেছে মেয়ে
হবে। আমি তিহা নাম রাখবো ঠিক
করেছি। আবির শুনে অনেক অবাক হয়েছিল।
আমি কিছুই বলিনি। সব কথার উত্তর হয়তো
মুখে দেওয়া যায়না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন