রাত্রির রাগ কখনো দীর্ঘ হয়না। দু'এক মিনিট এর মধ্যে রাগ ভেংগে যায়। সে ইচ্ছে করেও রাগ করে! শুভর রাগ ভাংগানোর আদরটা তার ভীষণ ভাল লাগে তাই রাত্রি হুটহাট করেই রাগ করে বসে। কিন্তু আজ আর তার রাগ ভাঙতে পারছে না শুভ! রাত্রি ভীষণ রাগ করেছে! আজ তার একটা কলও রিসিভ করছে না, একটা মেসেজ এর উত্তর দিচ্ছে না! ফোনটাও বন্ধ করছে না রাত্রি। শুভ অবিরত কল-মেসেজ করেই যাচ্ছে। কোন রেসপন্স নেই!
'সরি পাগলি' লিখে শেষ মেসেজটা করেছে শুভ। তারপর শুভ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের উপর খানিক দোষরুপ দিয়ে হঠাৎ ঘুমিয়ে পরে শুভ।
শুভ, এই শুভ!
কোন আওয়াজ নেই শুভর।
তখন সকাল ৭.৩০ বাজে, আজ অনিন্দ্যকে নিয়ে রাত্রির সাথে দেখা করার কথা ছিল। আধাঘণ্টা পার হয়ে গেল সে এখনো ঘুমের ঘরে। অনিন্দ্যের বিশ্বাস এ হচ্ছেনা সে এখনো ঘুমিয়ে আছে কারণ শুভ সময়কে খুব গুরুত্ব দেয়, সময় মত কাজ করে থাকে। তারছাড়াও আজ প্রথম তার প্রিয় মানুষটির সাথে দেখা করবে। তবে আজ কেন লেইট?
অনিন্দ্য হাত ধরে ডাক দিলেন,'শুভ,এই শুভ'
কোন উত্তর আসছে না। শুভর পুরু শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে,নাকে হাত দিয়ে দেখে কোন নিশ্বাস বেড় হচ্ছে না। অনিন্দ্য চিৎকার দিয়ে উঠল!সবাই ঘিরে ফেলেছে শুভকে এক এক করে দেখতে আসছে শেষ দেখা। শুভ আর বেঁচে নেই।
অনিন্দ্য শুভর খুব কাছের বন্ধু। কতটা কাছে বন্ধু এটা বুঝাতে এখনো কোন বাংলা শব্দ আবিষ্কার হয়নি।
অনিন্দ্য শুভর মোবাইল দিয়ে রাত্রিকে ফোন করেই যাচ্ছে। রাত্রি ফোন তুলছেই না। আজ কি কঠিন রাগ করেছে শুভর মৃত্যুর খবরটাও জানাতে পারছেনা। 'প্লিজ প্লিজ প্লিজ ফোনটা তুল রাত্রি, শুভ আর বেঁচে নেই' অনিন্দ্য মেসেজ করেছে।
হঠাৎ ঘুম ভেংগে গেলো রাত্রির! এইসব কি দেখলো স্বপ্নে সে। নিজেকে বিশ্বাস করতেই পারছেনা। তার বুক কাঁপছে! বালিশ এর নিচ থেকে মোবাইলটা বেড় করল। অসংখ্য কল-মেসেজ এর ভরপুর। তখন তার ৩.৪০ বাজে। কান্না করতে থাকলো রাত্রি। জ্যোৎস্না পরতে শুরু করছে। বাহিরে ভীষণ অন্ধকার নামছে। চারপাশে ঝিঝি পোকার ডাক শুনা যাচ্ছে। ভীষণ ভয়ানক শব্দ। সে কি দেখলো এটা।
কল করছে রাত্রি। কোন রেসপন্স পাচ্ছে না।
প্লিজ, ফোনটা রিসিভ কর শুভ।
শুভ কখনোই ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমায় না, রাত্রি একদিন গভীর রাতে ফোন দিয়ে বলে, 'তোমাকে খুব মিস করছি'! ঠিক এমনি গভীর রাতে হুট করে রাত্রি ফোন করে বসে। তাই শুভ রাতে ফোন সাইলেন্ট করেনা। আজ কেন জানি ফোনটা সাইলেন্ট করে ঘুমিয়ে পরেছে। একটার পর একটা কল করে যাচ্ছে রাত্রি আর নিজেকে গালাগাল দিয়েই যাচ্ছে। কেন আমি রাগ করলাম তার সাথে? কেন ফোনটা রিসিভ করলাম না? কোন উত্তর পাচ্ছে না।
রাত্রি অবিরত কান্না করে যাচ্ছে, খুব কান্না। খাট থেকে ধীরেধীরে নেমে ফ্লোর এ বসে খাটের সাথে হেলান দিয়ে কল করে যাচ্ছে। তার কষ্টগুলো তাকেঘিরে ধরেছে।
'শুভ, আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমি আর রাগ করবো না। কথা দিচ্ছি তোমার সাথে আর কখনই রাগ করবো না। তোমার সব ফোন রিসিভ করবো। আমাকে ক্ষমা করে দাও না প্লিজ' এই মেসেজ টা করে রাত্রি শুভর ফোনে। ফোন-মেসেজ, ফোন-মেসেজ করতে করতে রাত্রি অচেতন হয়ে ফ্লোরে শুয়ে পরে। তার চোখের জল গড়িয়ে গড়িয়ে ফ্লোরে একটি সরু পথ করে যাচ্ছে সামনের দিকে। শুভর কোন সাড়া নেই।
ফজর এর আযান হচ্ছে 'আছালাতু খাইরুম মিনান নায়ুম'
শুভ, শুভ! এইই শুভ, কি ঘুমরে বাবা! এইভাবে কেহ ঘুমায়?
'মা! তুমি না আরামের ঘুমটা হারাম করে দিলা'
আযান হচ্ছে শুনতে পাচ্ছিস না। যা মসজিদে যা।
ও আল্লাহ্! এই কি এত কল আর মেসেজ। শুভ তাড়াহুড়া করে কল বেক করে,'আপনার ডায়ালকৃত নাম্বারটি এই মুহুর্তে বন্ধ আছে'। শুভর মাথায় কিছুই কাজ করছে না। কি করবে সে? বার বার ফোন করছে বার বার শুধু বন্ধই বলে যাচ্ছে।
নামাজ শেষ করেই একটা দৌড় দিল রাত্রির বাসার দিকে। শুভ কখনই রাত্রির বাসায় যায়নি, এই প্রথম যাচ্ছে! খুব তাড়াহুড়ো করে যাচ্ছে। তার শরীর দিয়ে ঘাম ঝরছে, খুব টেনশন করছে! শুভ জানে রাত্রি কখনই ফোন অফ করে না। একদিন রাত্রি ঠাট্টা করে বলেছিল,'যেদিন দেখবে আমার ফোন বন্ধ সেই আমিও বন্ধ'। কথাটা মনে পরে শুভর বুক ধবধব করে কাঁপছে।
'আল্লাহ এটা যেন কখনওই সত্যি না হয়'।
দূর থেকে কয়েকজন এর কান্নার আওয়াজ বাতাসে ভেসে আসছে। মাথার উপর কাকের ডাক খুব অদ্ভুত লাগছে। এত কাকের ডাক এক সাথে শুভ আর কখনই শুনতে পায় নি। খুব ভয় পাচ্ছে।
বাসায় ঢুকতেই কিছু লোকের ভিড় দেখা যাচ্ছে। সকাল ৭.৩০ বাজে তখন। সবার চুখে পানি। তাদের মাঝে সাদা কাপড়ে কেহ একজন শুয়ে আছে! রাত্রি নীল রং এর জামা পরতে পছন্দ। তার নীল রং খুব পছন্দ। সে সাদা জামা পরতেই না। দু'জন এর ফাক দিকে দেখে নাক-মুখের উপর দিয়ে ধবধবে সাদা কাপড়টা দিয়ে ঘুরে রেখেছে।
খুব শীত পরেছে, রাত্রির হাল্কা জ্বর উঠেছিল। শুভ বলেছিল,'তুমি নাকে মুখে কাথা দিয়ে ঘুমায় শীত কম লাগবে'।
আমি নাকে মুখে কাথা দিয়ে ঘুমাতে পারিনা। ধম বন্ধ হয়ে আসে।
ভাই, একটু মুখটা দেখাবেন?
রাত্রি ঘুমিয়ে আছে। কি মিষ্টি চেহারা তার, কি যেন একটা অভাব আছে।
ও!হে, তার হাসিটা নেই। খুব বর্ণিল দেখাচ্ছে।
একজন মুরব্বি 'এই, এই কি করছো! মুখ ঢেকে রাখো, মুখ ঢেকে রাখো'।
'আমি আর কখনই রাগ করবো না!আমাকে ক্ষমা করে দাও,প্লিজ। এখন ফোনটা তোল' শুভর কাছে রাত্রির শেষ মেসেজটা করেছিল।
মনের অজান্তেই আবার কল করলো শুভ! একটি মেয়ের কন্ঠই ভেসে আসল,' আপনার ডায়লকৃত নাম্বারটি এই মুহুর্তে বন্ধ আছে'।
'সরি পাগলি' লিখে শেষ মেসেজটা করেছে শুভ। তারপর শুভ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের উপর খানিক দোষরুপ দিয়ে হঠাৎ ঘুমিয়ে পরে শুভ।
শুভ, এই শুভ!
কোন আওয়াজ নেই শুভর।
তখন সকাল ৭.৩০ বাজে, আজ অনিন্দ্যকে নিয়ে রাত্রির সাথে দেখা করার কথা ছিল। আধাঘণ্টা পার হয়ে গেল সে এখনো ঘুমের ঘরে। অনিন্দ্যের বিশ্বাস এ হচ্ছেনা সে এখনো ঘুমিয়ে আছে কারণ শুভ সময়কে খুব গুরুত্ব দেয়, সময় মত কাজ করে থাকে। তারছাড়াও আজ প্রথম তার প্রিয় মানুষটির সাথে দেখা করবে। তবে আজ কেন লেইট?
অনিন্দ্য হাত ধরে ডাক দিলেন,'শুভ,এই শুভ'
কোন উত্তর আসছে না। শুভর পুরু শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে,নাকে হাত দিয়ে দেখে কোন নিশ্বাস বেড় হচ্ছে না। অনিন্দ্য চিৎকার দিয়ে উঠল!সবাই ঘিরে ফেলেছে শুভকে এক এক করে দেখতে আসছে শেষ দেখা। শুভ আর বেঁচে নেই।
অনিন্দ্য শুভর খুব কাছের বন্ধু। কতটা কাছে বন্ধু এটা বুঝাতে এখনো কোন বাংলা শব্দ আবিষ্কার হয়নি।
অনিন্দ্য শুভর মোবাইল দিয়ে রাত্রিকে ফোন করেই যাচ্ছে। রাত্রি ফোন তুলছেই না। আজ কি কঠিন রাগ করেছে শুভর মৃত্যুর খবরটাও জানাতে পারছেনা। 'প্লিজ প্লিজ প্লিজ ফোনটা তুল রাত্রি, শুভ আর বেঁচে নেই' অনিন্দ্য মেসেজ করেছে।
হঠাৎ ঘুম ভেংগে গেলো রাত্রির! এইসব কি দেখলো স্বপ্নে সে। নিজেকে বিশ্বাস করতেই পারছেনা। তার বুক কাঁপছে! বালিশ এর নিচ থেকে মোবাইলটা বেড় করল। অসংখ্য কল-মেসেজ এর ভরপুর। তখন তার ৩.৪০ বাজে। কান্না করতে থাকলো রাত্রি। জ্যোৎস্না পরতে শুরু করছে। বাহিরে ভীষণ অন্ধকার নামছে। চারপাশে ঝিঝি পোকার ডাক শুনা যাচ্ছে। ভীষণ ভয়ানক শব্দ। সে কি দেখলো এটা।
কল করছে রাত্রি। কোন রেসপন্স পাচ্ছে না।
প্লিজ, ফোনটা রিসিভ কর শুভ।
শুভ কখনোই ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমায় না, রাত্রি একদিন গভীর রাতে ফোন দিয়ে বলে, 'তোমাকে খুব মিস করছি'! ঠিক এমনি গভীর রাতে হুট করে রাত্রি ফোন করে বসে। তাই শুভ রাতে ফোন সাইলেন্ট করেনা। আজ কেন জানি ফোনটা সাইলেন্ট করে ঘুমিয়ে পরেছে। একটার পর একটা কল করে যাচ্ছে রাত্রি আর নিজেকে গালাগাল দিয়েই যাচ্ছে। কেন আমি রাগ করলাম তার সাথে? কেন ফোনটা রিসিভ করলাম না? কোন উত্তর পাচ্ছে না।
রাত্রি অবিরত কান্না করে যাচ্ছে, খুব কান্না। খাট থেকে ধীরেধীরে নেমে ফ্লোর এ বসে খাটের সাথে হেলান দিয়ে কল করে যাচ্ছে। তার কষ্টগুলো তাকেঘিরে ধরেছে।
'শুভ, আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমি আর রাগ করবো না। কথা দিচ্ছি তোমার সাথে আর কখনই রাগ করবো না। তোমার সব ফোন রিসিভ করবো। আমাকে ক্ষমা করে দাও না প্লিজ' এই মেসেজ টা করে রাত্রি শুভর ফোনে। ফোন-মেসেজ, ফোন-মেসেজ করতে করতে রাত্রি অচেতন হয়ে ফ্লোরে শুয়ে পরে। তার চোখের জল গড়িয়ে গড়িয়ে ফ্লোরে একটি সরু পথ করে যাচ্ছে সামনের দিকে। শুভর কোন সাড়া নেই।
ফজর এর আযান হচ্ছে 'আছালাতু খাইরুম মিনান নায়ুম'
শুভ, শুভ! এইই শুভ, কি ঘুমরে বাবা! এইভাবে কেহ ঘুমায়?
'মা! তুমি না আরামের ঘুমটা হারাম করে দিলা'
আযান হচ্ছে শুনতে পাচ্ছিস না। যা মসজিদে যা।
ও আল্লাহ্! এই কি এত কল আর মেসেজ। শুভ তাড়াহুড়া করে কল বেক করে,'আপনার ডায়ালকৃত নাম্বারটি এই মুহুর্তে বন্ধ আছে'। শুভর মাথায় কিছুই কাজ করছে না। কি করবে সে? বার বার ফোন করছে বার বার শুধু বন্ধই বলে যাচ্ছে।
নামাজ শেষ করেই একটা দৌড় দিল রাত্রির বাসার দিকে। শুভ কখনই রাত্রির বাসায় যায়নি, এই প্রথম যাচ্ছে! খুব তাড়াহুড়ো করে যাচ্ছে। তার শরীর দিয়ে ঘাম ঝরছে, খুব টেনশন করছে! শুভ জানে রাত্রি কখনই ফোন অফ করে না। একদিন রাত্রি ঠাট্টা করে বলেছিল,'যেদিন দেখবে আমার ফোন বন্ধ সেই আমিও বন্ধ'। কথাটা মনে পরে শুভর বুক ধবধব করে কাঁপছে।
'আল্লাহ এটা যেন কখনওই সত্যি না হয়'।
দূর থেকে কয়েকজন এর কান্নার আওয়াজ বাতাসে ভেসে আসছে। মাথার উপর কাকের ডাক খুব অদ্ভুত লাগছে। এত কাকের ডাক এক সাথে শুভ আর কখনই শুনতে পায় নি। খুব ভয় পাচ্ছে।
বাসায় ঢুকতেই কিছু লোকের ভিড় দেখা যাচ্ছে। সকাল ৭.৩০ বাজে তখন। সবার চুখে পানি। তাদের মাঝে সাদা কাপড়ে কেহ একজন শুয়ে আছে! রাত্রি নীল রং এর জামা পরতে পছন্দ। তার নীল রং খুব পছন্দ। সে সাদা জামা পরতেই না। দু'জন এর ফাক দিকে দেখে নাক-মুখের উপর দিয়ে ধবধবে সাদা কাপড়টা দিয়ে ঘুরে রেখেছে।
খুব শীত পরেছে, রাত্রির হাল্কা জ্বর উঠেছিল। শুভ বলেছিল,'তুমি নাকে মুখে কাথা দিয়ে ঘুমায় শীত কম লাগবে'।
আমি নাকে মুখে কাথা দিয়ে ঘুমাতে পারিনা। ধম বন্ধ হয়ে আসে।
ভাই, একটু মুখটা দেখাবেন?
রাত্রি ঘুমিয়ে আছে। কি মিষ্টি চেহারা তার, কি যেন একটা অভাব আছে।
ও!হে, তার হাসিটা নেই। খুব বর্ণিল দেখাচ্ছে।
একজন মুরব্বি 'এই, এই কি করছো! মুখ ঢেকে রাখো, মুখ ঢেকে রাখো'।
'আমি আর কখনই রাগ করবো না!আমাকে ক্ষমা করে দাও,প্লিজ। এখন ফোনটা তোল' শুভর কাছে রাত্রির শেষ মেসেজটা করেছিল।
মনের অজান্তেই আবার কল করলো শুভ! একটি মেয়ের কন্ঠই ভেসে আসল,' আপনার ডায়লকৃত নাম্বারটি এই মুহুর্তে বন্ধ আছে'।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন