বুধবার, ৩ মে, ২০১৭

পরীক্ষার হল থেকে বাসর ঘর

->এই যে মিস তিলওয়ালি।(আমি)
-->আমাকে বলছেন??(মেয়েটি)
-->এখানে আপনার গালে তিল ছাড়া আর কার গালে আছে,দেখান তো?
-->জ্বি বলুন।
-->পরীক্ষার হলে ডাকলে শুনেন না কেন?
-->আমাকে ডাক দেন আপনি?
-->হুম।
-->আপনি তো আমার সামনের হুমায়রাকে ডাক দেন,আমাকে না।
-->কীহহ?
-->জ্বি।
-->ওকে পরের পরীক্ষা থেকে আপনাকে ডাকবো।
-->হুম।
-->তো আপনার নাম টা কী?
-->নাম ই জানেন না।এতগুলা পরীক্ষা একসাথে দিলাম আমরা।
-->জ্বি না।
-->আমার নাম সূচনা।আর আপনার নাম সিফাত,তাই না?
-->হুম।
-->ওকে যাই,বায়।
-->বায়।
:
আমি সিফাত।আর যার সাথে কথা হচ্ছিল ও সূচনা।আমরা দুজনেই এবার এইচএসসি দিচ্ছি।তবে আলাদা কলেজ থেকে।আমি সলিমুল্লাহ কলেজ আর ও রায়হান স্কুল এন্ড কলেজ থেকে।আমাদের দুজনের হলই পড়ছে শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজে।
:
তো ওকে আমি প্রথম পরীক্ষার দিন দেখেই ক্রাশ খাই।ও একটু লেট করে আসছিল সেদিন।
আমি ক্লসে ঢুকতেই প্রথম সারির দ্বিতীয় বেঞ্চিতে আর ও মাঝের সারির তৃতীয় বেঞ্চিতে।
আমার কোন সমস্যা হলে আমি ওর সামনের হুমায়রাকে ডাকতাম।আর সূচনার নামও এর আগে আমি জানতাম না।
অষ্টম পরীক্ষারর দিন ও আমার কাছে সাহায্য চায়।
ও খুব কম কথা বলে।আর অপরিচিত কারো সাথে কথা বলে না।
তো এভাবেই আমাদের কথা বলা শুরু হয়।আর পরে ওর থেকে ফেসবুক আইডি নেই।
এই থেকে আমাদের কথা বলা শুরু হয় যোগাযোগ মাধ্যমে।
:
আমাদের পরীক্ষা ও শেষ হয়।রেজাল্ট দুজনেরই ভাল হয়।ভার্সিটি ভর্তি কোচিং করি দুজন একসাথে।আমি আর ও দুজনেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাই এবং ভর্তি হই।
তো এভাবে আমরা আরো কাছাকাছি চলে আসি। প্রথমে আপনি বললেও পরে তুমি করে বলা শুরু করি।।দুজন দুজনের অনেক কেয়ার করি।
ও একটু বেশি কেয়ার করত আমার।
আর আমি তো ওর উপরে আগে থেকেই ফিদা।
:
তো আমি আর টিকতে না পেরে ওকে ভালবাসার কথা বলার জন্য প্রস্তুতি নেই।এবং আমাদের পরিচয়ের ঠিক এক বছর পূর্ণ হওয়ার দিন ওকে প্রপোজ করি।
-->সূচনা।
-->হুম।
-->একটা কথা বলি।
-->বলো।
-->রাগ করবে না তো।
-->নাহ বলো।
-->আমি তোমাকে ভালবাসি।আমার সম্পূর্ণ দায়িত্ব তোমাকে দিতে চাই এবং তোমার দায়িত্ব আমি নিতে চাই।(বলে গালে হাত দিয়ে ওর সামনে দাড়িঁয়ে থাকি।)
-->কী বললা তুমি?
-->সত্যি বলছি।
-->আমি একদিন ভাবার জন্য সময় চাই।
-->ওকে।
-->বায়।
-->বায়।
আমি খুব টেনশনে ছিলাম।ও কী জবাব দিবে তাই নিয়ে।
১ দিন যেন কাটছিলই না।
:
তো পরের দিন বলে যে, ও রাজি আছে।
আমি যে কী পরিমাণ খুশি হইছি তা বলে বুঝানো যাবে না।
তো এভাবে আমাদের নতুন পথ চলা শুরু হয়।
দুষ্টামি রাগারাগি দিয়ে আমাদের দিন কাটছিল।
কিন্তু তারপরেও কিছু সমস্যা দেখা দেয়।যেমন ওর বিয়ের প্রপোজাল আসে আর ও কোনমতে তা ভেঙ্গে দেয়।
:
আমরা অনার্স শেষ করি একসাথে।
আমি জবে ঢুকি।আর ও সেই সময়ে আমাদের রিলেশনেরর কথা ওর বাড়িতে জানায়।প্রথমে না মানলেও পরে মেনে নেয় কারণ ও খুব আদরের মেয়ে তাই।
আমার বাবা-মা ওর বাড়িতে যেয়ে বিয়ের কথা পাকা করে
:
একমাস পরেই আমাদের বিয়েটা হয়।
অতঃপর বাশেঁর ঘরে থুক্কু বাসর ঘরে আমি-
:
সূচনা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।আমাকে ঘরে আসতে দেখে ও খাট থেকে নেমে আমাকে সালাম করে আবার খাটে গিয়ে বসে।
-->ঘোমটা টা একটু সরাবা।
-->তুমি সরাও।
-->ওকে
বলেই যেই আমি ঘোমটা সরালাম।দেখেই আমি খাট থেকে পড়ে যাই।
-->এ কী শালি তুমি। তোমার আপু কই?
-->হাহাহাহাহা।আপনাকে বোকা বানানোর জন্যই আমরা সবাই এমন একটা প্ল্যান করি।
-->মানে।
-->মানে আপনার ভাবিরা,আমি,আপু মিলেই প্ল্যান করি।হিহিহিহি।
-->তোমাকে আমাদের বাড়িতে না আনলেই ভাল হত।
-->ইসসস।
-->তোমার আপু কই?
-->ওই যে।
পর্দার আড়াল থেকে আমার বউ আর ভাবীরা বের হল।
-->এটা করা তোমাদের ঠিক হয় নি।
-->হুহহহ।তা তো দেখতেই পাচ্ছি। হিহিহি।
-->আমরা যাই দেবরজান।
-->হুম।যাও।
বলে ওরা সবাই আমাদের রেখে চলে গেল।
এখন আমি আমার বউ কে পাইছি।আহহ কী যে শান্তি লাগতাছে।
-->আচ্ছা এমন ফাজলামো করলা কেন?
-->এমনি।
-->এমনি মানে?
-->এমনি মানে এমনি।চেপে বসো।আমাকে ঘুমাতে দাও।
-->ঘুমাবে মানে।
-->ঘুমাবো মানে ঘুমাবো।
-->তাহলে বিড়াল মারবো কখন।
-->কিসের বিড়াল?
-->কেন বাসর ঘরে তো সব পুরুষই বিড়াল মারে।
-->দেখ দুষ্টুমি করবে না।আমার কাছে আসবার চেষ্টা করবা না।
-->করলে কী করবা?
-->দেখ ভাল হবে না বলে দিলাম।
-->হাহাহাহাহা।
অতঃপর আমি বিড়াল মারার কাজে লেগে গেলাম।😜
:
বিঃদ্রঃ এটা কাল্পনিক একটা গল্প।আমি শুধু মেয়েটার উপর ক্রাশ খাইছি আর নামটা জানছি।এর বেশি কিছুই না।তাই ইহা কে সত্য বলিয়া চিন্তা করিয়া লজ্জা দিবেন না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন