রবিবার, ৭ মে, ২০১৭

**বউয়ের ভালবাসা**

সকাল ৮:৫০ এএম,
জান্নাত: এই!
রুপক: হুম,
জান্নাত:ঘুম ভাঙ্গছে?
রুপক: হুম,মাত্রই ভাঙ্গলো।
জান্নাত:ওঠো এখন, ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করো, আমি এখন অফিসে যাবো।
রুপক: কি! !! এতো সকালে কিসের অফিস?
জান্নাত: এতো সকাল মানে?ঘড়িটা দেখ। ৮:৫৬ এএম এখন।
রুপক: ওহ শিট, আগে ডাকবা না?
জান্নাত: সেই সাতটা থেকে ডাকছি, তুমি তো ঘুম থেকে উঠো নাই বরং আরো বেশি করে কাথা মুরি দিয়ে ঘুমায়ছো। আমি ডাকলে তো তোমার কানেই যায় না।
রুপক:তাই না।
জান্নাত: হুমমম তাই।
রুপক: তুমি নাস্তা করছো?
জান্নাত: তোমাকে ছাড়া কি কখনো নাস্তা করছি আজ পর্যন্ত?
রুপক: না। তুমি টেবিলে যাও আমি তারাতারি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
জান্নাত:তারাতারি আসো।

এতোক্ষন কথা হচ্ছে আমার বড় বউ জান্নাতের সাথে। হ্যাঁ, ওর নাম জান্নাত। বড় বউ কারন জান্নাত আমার চেয়ে তিন বছরের বড়।
আর হ্যাঁ, আমি স্টাডি করি আর জান্নাত একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করে। যদিও বিয়েটা দুইপরিবারে কেউ মেনে নেয় নি।
.
জান্নাত: এই হলো তোমার?
রুপক: হুম,,,আসছি আসছি। ।।
জান্নাত: তারাতারি আসো.....(প্রায় ২ মিনিট পর)
রুপক: এইতো আসছি। নাও খাইয়ে দাও ।
জান্নাত: হুম, হা করো।
রুপক: হুম, দাও।
জান্নাত: আজ নাস্তা কেমন হইছে?
রুপক: দারুন। কোন জবাব নাই।
জান্নাত: সত্যি?
রুপক: হুম, তিন সত্যি।
জান্নাত: নাও তারাতারি খাও।
রুপক: হুম।
জান্নাত: নাও পানি খাও। আর এই নাও ২০ টাকা। এখন সোজা ভার্সিটি যাবা, আর ক্লাস শেষ হওয়া মাত্রই বাসায় চলে আসবা।
এখন আমি অফিসে বেরুচ্ছি। 
রুপক: সবই তো বুঝলাম, কিন্তু আমার আসল পাওনাটা কই?
জান্নাত: উমমমম, হইছে?
রুপক: হুম,।। আচ্ছা পৌঁচ্ছে ফোন দিও।
জান্নাত: হুম, বাই।
রুপক: বাই।
তখনতো ভালোভাবে আমাদের সম্পর্কে বলায় হয়নি।
এবার আমি অনার্স চতুর্থ বর্ষে পরি। আর যখন জান্নাতের সাথে আমার বিয়ে হয় তখন আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি আর জান্নাত মাষ্টার্সে।
জান্নাত আমায় ভার্সিটি প্রথম দিন থেকে
ফলো করতো কিন্তু আমি জানতাম না। আমি প্রায় ছয় মাস পড়ে জানতে পারি। আমি কৌতুহলবসত জান্নাতের সম্পর্কে খোজ লাগায় । খোজ নেওয়ার পর জানতে পারি জান্নাত আর আমি একই ডিপার্টমেন্টে পরি কিন্তু এবং জান্নাত আমার চেয়ে তিন বছরের বড়।
.
এভাবে যখন আমি অনার্স ২য় বর্ষের শেষ দিকে তখন হঠাৎ একদিন জান্নাত আমার প্রপোজ করে আর আমি নির্দ্বিধায় রিজেক্ট করে দেই এবং ওর সামনে থেকে চলে যাই।
যদিও জান্নাতের প্রতি আমি একটু দুর্বল হয়ে পরি। কিন্তু ঐ যে বাস্তবতা,। 
তো এমন ভাবে ১৫ দিন চলে যায়, 
আচমকায় কয়েকটা ছেলে আমার সামনে আসে এবং আমাকে তুলে নিয়ে যায় সোজা কাজী অফিসে। 
কাজী অফিসে পৌঁচ্ছে বুঝতে পারি জান্নাত এমনটা করছে।
জান্নাত আর আমার বিয়েটা ভালোভাবেই হয়ে যায়।(যদিও আমাকে জোড় করা হইছে)
তারপর বিয়ের খবর বাড়িতে জানায় দুজনেই।
কিন্তু ফলাফল যা সাধারনত হয়ে থাকে তাই হলো। কেউই মেনে নিতে পারলো না।)
রুপক: অফিস পৌঁচ্ছেছো?
জান্নাত: হুম। তুমি এখন কোথায়?
রুপক: ভার্সিটিতে। একটা কথা ছিলো, বলবো?
জান্নাত: হুম বলো।
রুপক:বলছিলাম আসার সময় কি আমার জন্য একটা নতুন স্মার্ট ফোন নিয়ে আসতে পারবা?
জান্নাত: তোমার ঐ ফোনটার কি হইছে?
রুপক: আরে এখন কি আর ঐ ১২০০ মডেলের ফোন চলে? আর আমার সব বন্ধুরাই এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করে।
জান্নাত: ঠিক আছে আনবো । এখন রাখছি অনেক কাজ করতে হবে। বাই।
রুপক: উমমমমমাহ। বাই।
এখন সময় সন্ধা ৫.৩৭ পিএম।

কে যেন কলিং বেল বাজালো। আরে কে যেন কি বলছি। এতো আমার জান্নাত।
দরজা খুললাম আর জান্নাতের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা স্মার্টফোনের ব্যাগ।
রুমে এসে প্যাকেটা খুলতেই দেখতে পেলাম জান্নাত আমার জন্য একটা স্যামসাং ব্যান্ডের জে৭ মডেলের স্মার্ট ফোন।
আমি তো খুশিতে জান্নাতকে জড়িয়ে ধরে আলতো করে ওর কপালে একটা চুমু এঁকে দিলাম। আর ও আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।আমিও ওকে জরিয়ে ধরলাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন