আজও কি তোমার ফিরতে দেরী হবে?
-------হ্যঁ দেরী হবে,অফিসে কাজের চাপ অনেক বেড়ে গেছে ইদানীং।
------ওহহ।আচ্ছা সমস্যা নেই।
বলে মন খারাপ করে অহনা,তা দেখে আকাশ বলে ওঠে.....
-------মন খারাপ করো না,আর তো মাত্র কয়েকটাদিন।তারপর ই প্রজেক্ট টা শেষ হবে।তারপর দুরে কোথাও ঘুরতে যাবো আমরা।
-------সত্যি??
------হুম সত্যি সত্যি সত্যি।
------আচ্ছা ঠিক আছে।
বলে আকাশকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয় অহনা।আকাশ দরজার সামনে গিয়ে অহনার কপালে একটা চুমু দিয়ে অফিসের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে যায়।
.
আকাশ চলে যাওয়ার সাথে সাথে ই অহনা মোবাইল বের করে ফোন দেয় নাদিমকে....
------হ্যলো জান।
------হা জান বলো।
------আজকেও ওর অফিস থেকে আসতে দেরী হবে।
------ওয়াও!!!!!তাহলে আজকেও আমরা ডেটিং এ যেতে পারবো।
-------হা জান,আজকে কোথায় যাবে ঘুরতে?
-------তুমি তৈরী হয়ে থেকো,আমি তোমায় চার রাস্তার মোড় থেকে নিয়ে যাবো।
-------ওকে জান।
.
এতক্ষণ ধরে অহনা যার সাথে কথা বলছিলো সে হলো নাদিম,অহনার পরকীয়া প্রেমিক।বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অহনা নাদিমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করেছে।নাদিমের সাথে ওর পরিচয় ফেসবুকে,সেখান থেকে ই টুকটাক কথা বলা,পরিচয় অতঃপর পরিণয়। যদিও নাদিম এটা জানে যে অহনা বিবাহিত তবুও সে অহনার সাথে সম্পর্ক রেখেছে।কারন বিনা বাধায় যদি মধু খাওয়া যায় তাহলে সেটা কে ই বা মিস করতে চায়?অহনা ও নাদিম কয়েকবার ই ডেট ও মিট করেছে,যার মধ্যে কয়েকটা রুমডেটও ছিলো।আর এসব ই হচ্ছিলো আকাশের চোখের আড়ালে।ভালোবেসে একে অপরকে বিয়ে করেছে ওরা,আকাশ অহনাকে প্রচন্ড ভালোবাসে।কিন্তু অহনা ইদানীং নাদিমকে পেয়ে সব ভালোবাসা তাকে ই বিলিয়ে দিচ্ছে।যদিও আকাশের সামনে সে ভালোবাসা আর একজন স্ত্রীর অভিনয় টা ভালো ই করে।
.
আজ কাজ শেষ হতে দেরী হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগে ই অফিসের প্রজেক্টের কাজ শেষ হয় আকাশের।যদিও এর জন্য পরিশ্রম টা অনেক বেশী ই করতে হয়েছে।
কাজ শেষ করে বের হয়ে ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে দেখে সন্ধ্যা সাতটা বাজে।ক্লান্তিতে আকাশের গা ভেঙ্গে পড়তে চাইছে,কিন্তু বহুদিন পর আজ স্ত্রীর সাথে ডিনার করতে পারবে।তাই অফিস থেকে বেড়িয়ে বাসে ওঠে বাসায় যাওয়ার জন্য।ওর সিটটা জানালার পাশে ই পড়ে।ক্লান্ত থাকায় কিছুক্ষণের জন্য চোখটা বুজে আসে ওর আর তখন মনে পড়ে
যাচ্ছে পুরনো অনেক স্মৃতি । এই তো সেদিন অহনার সাথে
পরিচয়,কথা বলা,তারপর প্রপোজ করা,খুনসুটি ভালোবাসা,হঠাৎ অহনার পরিবার তার বিয়ে ঠিক করায় তাকে নিয়ে পালিয়ে আসা।পরিবার মেনে না নেয়ায় আলাদা ফ্ল্যাট নেয় আকাশ আর পড়ালেখা শেষ হওয়ায় পরিচিত এক বন্ধুর সহায়তায় এই চাকুরীটা পায় ও।যদিও এখন দুজনের পরিবার ই বিয়েটা মেনে নিয়েছে,তবুও আকাশ অহনাকে নিয়ে এখানে থাকে চাকুরীর জন্য।
অহনার আর ওর দিনগুলি কত ই না সুখে কাটছে,যদিও ও জানে না অহনা ওর চোখের আড়ালে ওকে প্রতিনিয়ত ধোকাঁ দিয়ে যাচ্ছে।
.
বাসের ঝাকুনিঁতে তন্দাভাব কিছুটা কেটে যায় আকাশের।বুঝতে পারে গাড়ি জ্যমে আটকা পড়েছে। ঘড়িতে হাত বুলিয়ে দেখে প্রায় আটটা বাজে।জ্যম ছোটার অপেক্ষা করছে আকাশ,এমন সময় ওর চোখ যায় সামনে,তাকিয়ে দেখে একটা রিকশায় অহনার মতো দেখতে একটা মেয়ে একটা ছেলের কাধেঁ মাথা রেখে একটা হাত ধরে পরম নির্ভরতায় চোখ বুঝে আছে।সাথে সাথে তন্দ্রাভাব কেটে যায় আকাশের,না না এটা অহনা হতে পারে না,অহনা তো বাসায়, তাহলে এটা কে?ভালোমতো দেখার আগে ই সিগন্যাল ছেড়ে দেয়ায় আকাশের আর দেখা হলো না মেয়েটা সত্যি ই অহনা ছিলো কি না।মনের ভুল হতে পারে বা ক্লান্ত থাকায় ভুল দেখতে পারে ভেবে বিষয়টাকে উপেক্ষা করে আকাশ, যদিও ওর মনটা তখনও খচখচ করছিলো।
.
বাসায় ফিরে আকাশ দেখে দরজায় তালা দেয়া। কি ব্যাপার? এই সময় অহনা কোথায় গেলো? আকাশের মনটা আবারো খচখচ করতে লাগলো আর সন্দেহটাও প্রবল হয়ে ওঠলো।তাহলে কি তখন রিকশায় কি অহনা ই ছিলো?এসব ও আরো নানা আজেবাজে চিন্তা মাথায় আসতে লাগলো ওর।
কিছুক্ষণ পর কলিংবেলের আওয়াজে ঘোর কাটে আকাশের।উঠে
গিয়ে দরজা খুলে দেখে অহনা দাড়িয়ে আছে, চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট ফুটে রয়েছে।অহনা ভিতরে ঢুকতে ই আকাশ অহনাকে জিজ্ঞেস করলো......
------কোথাও কি গিয়েছিলে নাকি?
------হ্যঁ মা ফোন করেছিল, তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। ক্লান্ত স্বরে উত্তর দেয় অহনা।
------তোমার মা অসুস্থ তা আমায় বলো নি কেনো?
-------তুমি অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তোমায় জানাই নি।
-------ওহ,,তা তোমাকে এত ক্লান্ত লাগছে কেনো?
------জার্নি করেছি তো তাই এমন দেখাচ্ছে। তুমি খেয়ে নাও,আমি খেয়ে ই এসেছি।ফ্রেশ হয়ে ঘুমাবো।
------আচ্ছা যাও।
অহনা চলে যাওয়ার পর আকাশের মনে সন্দেহ দানা বাধতেঁ থাকে।কারন অহনা কখনো ওকে না জানিয়ে ওর মায়ের বাসায় যায় নি,তাছাড়া ওর শাশুড়ি অসুস্থ হলে সে খবর ওর কাছে খবর আসতো।কিন্তু এমনটা হয় নি,আর ওর শশুড়বাড়ি এতটা দুরেও নয় যে জার্নি করতে হয়।সব মিলিয়ে আকাশের মনে সন্দেহ টা এবার ডালপালা মেলা শুরু করলো।
.
ইদানীং প্রায় ই অহনার ফোন ব্যস্ত পায় আকাশ,ফোন দিলে সহজে ধরে না,ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন ওয়েটিং এ থাকে।জিজ্ঞেস করলে বলে মা অসুস্থ তার খোজ খবর নেই তাই এমনটা হচ্ছে।কিন্তু আসল ঘটনা হলো এই সময় অহনা নাদিমের সাথে ফোনে প্রেমালাপ করে বা একান্ত সময় কাটায়।তাই আকাশ ফোন দিলে ধরে না।
এটা নিয়ে একদিন ওদের মাঝে কথা কাটাকাটিও হয়।যা ঝগড়ায় রূপ নেয়।
পরে পারিবারিক মধ্যস্থতায় সব ঠিকঠাক হলেও দুজনের মাঝে সৃষ্টি হয় দূরত্ব।
.
আস্তে আস্তে দিন যায়,এখন অহনা আর আকাশ আগের মত ই আছে,শুধু তাদের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে অবিশ্বাস ও সন্দেহ নামক বস্তুটা।যার দরুণ এক ই ছাদের নীচে থাকার পরও দুজন আলাদা।
দুদিন পর আকাশ যখন অফিসে কাজ করছিলো তখন ওর কলিগ হৃদয় ওকে লক্ষ্য করে বললো......
-------আচ্ছা আকাশ সাহেব আপনার কি কোন ভাই আছে?
-------কই না তো,আমি আমার মা বাবার একমাত্র সন্তান।
-------আপনার স্ত্রীর কি কোন ভাই আছে?
-------না নেই।ওরা দু বোন,ও ছোট।কি ব্যাপার? আজ হঠাৎ করে আপনি এসব জিজ্ঞেস করছেন কেনো?ঘটনা কি??
-------না মানে কিভাবে যে বলি,,কাল ভাবী কে দেখলাম একটা অপরিচিত ছেলের সাথে এক ই রিকশায় করে যাচ্ছে।তাই আপনাকে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনার বা ভাবীর কোন ভাই আছে কি না।।
-------আপনি কি সিউর যে আপনি আমার স্ত্রী কে ই দেখেছেন?
-------আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি ওটা আপনার স্ত্রী ই ছিল।
-------হতে পারে ওর কোন রিলেটিভের সাথে কোথাও গিয়েছিল।আর আপনি তখন তার সাথে ই ওকে দেখেছেন।
-------হ্যঁ এটাও হতে পারে,আমার কথায় কিছু মনে করবেন না আকাশ সাহেব।
-------ইটস ওকে।
.
কথাগুলো বলে ওর কলিগ চলে যায়। এবার আকাশের সন্দেহ আরো জোরালো হয় যে অহনা ওর পেছনে অন্য কারো সাথে পরকীয়া করছে।নাহলে ওর ফোন এত ওয়েটিং, সেদিন ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরা আর আজ ওর কলিগের কথায় সব পরিষ্কার হয়ে গেলো।কিন্তু এখন কিছু করা যাবে না,কারন ওকে ধরতে হবে হাতেনাতে,প্রমাণ সহ।যার জন্য দরকার একটা সুযোগের।
বাসায় এসে যথারীতি ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমাতে চলে গেল আকাশ,অহনাও ওর মতো করে খেয়ে ঘুমিয়ে যায়।আকাশ ঘুমানোর চেষ্টা করেও পারে না।যাকে ও এত ভালোবাসে,যার জন্য নিজের পরিবারের সাথে লড়াই করেছে,যার জন্য নিজের সবকিছু বিসর্জন দিচ্ছে সে ই কিনা আজ ওর সাথে এতবড় বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারলো? ওর ভালোবাসা আর বিশ্বাসের এই মূল্য দিলো?এসব ভাবতে ই ওর চোখ পানিতে ভরে যায়,টুপ করে দু ফোটা অশ্রু গড়িয়ে নীচে পড়ে।
এ অশ্রু ভুল মানুষকে ভালোবাসার অশ্রু,এ অশ্রু ভুল জায়গায় ভালোবাসা দেয়ার অশ্রু,এ অশ্রু ভুল মানুষকে বিশ্বাস করার অশ্রু।।।
.
কিছুদিন অপেক্ষা করার পর আকাশ সুযোগ টা পেয়ে যায়। আর দুদিন পর ওদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী, গতবছর এই দিনটা ওরা একসাথে ই উদযাপন করেছে,কিন্তু এবার আকাশ অহনাকে ওর অপকর্মের শাস্তি দেয়ার জন্য প্লান করে।
প্লান অনুযায়ী আকাশ অহনাকে বলে যে অফিসের জরুরী কাজের প্রয়োজনে ওকে
এক সপ্তাহের জন্য চিটাগাং যেতে হবে,খুব ই গুরুত্বপূর্ণ কাজ।তাই এবার বিবাহবার্ষিকী একসাথে পালন করা যাবে না হয়তো।বলে মন খারাপের ভান ধরে আকাশ,অহনার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য।
এটা শুনে অহনা যেন ঈদের চাদঁ হাতে পায়!!!এক সপ্তাহ!!অনেক সময়, এই এক সপ্তাহ নাদিমের সাথে অনেক আনন্দ করা যাবে ভেবে ওর মুখে সূক্ষ্ম একটা হাসি ফুটে ওঠে যা আকাশের নজর এড়ায় না।
যদিও অহনা মন খারাপের অভিনয় করে,আফসোস করে কিন্তু আকাশ বুঝতে পারে এসব ই কৃত্রিম ও মেকি।
.
পরদিন আকাশ ব্যগ গুছিয়ে চিটাগাং এর উদ্দেশ্য বের হয়ে যাওয়ার পর পর ই অহনা নাদিনকে ফোন দেয়.....
------হ্যালো জান
------হ্যঁ বেবি বলো।
------একটা দারুণ খবর আছে।ও এক সপ্তাহের জন্য চিটাগাং গেছে অফিসের কাজে।
------ওয়াও!!!!দারুণ সংবাদ।
------হ্যঁ জান,এই এক সপ্তাহ শুধু তুমি আর আমি। আমরা একসাথে থাকবো,যা খুশি করবো, কেউ নেই বাধা দেয়ার,কেউ নেই কিছু দেখার।শুধু তুমি আর আমি।
-------তাই নাকি বেবি।তাহলে তো সোনায় সোহাগা।।
-------হ্যঁ জান,আর শোন কাল আমাদের মানে ওর আর আমার দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী, ও নেই তো কি,তুমি তো আছো,,,কাল তুমি আর আমি আমাদের বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করবো একসাথে। আমাদের বাসায়।।
------সত্যি দারুণ হবে।আমি কাল সময়মতো চলে আসবো।তারপর শুধু তুমি আর আমি,আমি আর তুমি।
-------হ্যঁ জান।আগে তো সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম কিন্তু এখন আর ভয় নেই।কাল চলে এসো জান,দেরী করো না কিন্তু।
-------ওকে বেবি।
ফোন রেখে অহনা
তৃপ্তির হাসি দেয় কালকের কথা ভেবে।অপরদিকে নাদিমও হাসছে,কামনা আর লোলুপতার হাসি।।।
.
.
পরদিন নির্ধারিত সময়ের আগে ই নাদিম আকাশের ফ্ল্যাটে গিয়ে হাজির হয়,ওর চোখে মুখে উত্তেজনা বিরাজ করছে আজ।কলিংবেলের আওয়াজ শুনে অহনা দরজা খুলে দেয়।দরজা খোলার পর অহনাকে দেখে ই নাদিম হা করে তাকিয়ে থাকে,ক্ষুদাটা যেন আরো বেড়ে যায়।আজ অহনা নীল শাড়ি পড়েছে,স্লিভলেস ব্লাউজ, হাতভরা নীল কাচেরঁ চুড়িঁ,কপালে ম্যাচিং টিপ আর মুখে মেকাপ করায় অহনাকে পুরো কামনার দেবী মনে হচ্ছিলো নাদিমের।ওর হুশ ফেরে অহনার ডাকে....
-------কি ব্যাপার নাদিম??কি দেখছো এভাবে?
----- তোমাকে না আজকে অনেক সুন্দর
লাগছে।কিছু বলার মতো ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।একদম কামনার দেবীর মতো লাগছে তোমাকে,যার জন্য সবাই পাগল।
------উফফ,,তাই নাকি জান ?
------হুম সিরিয়াসলি । আমারমাথা নষ্ট হয়ে গেছে,, এই নীল শাড়ী আর ড্রেসআপে
যা লাগছে না তোমাকে,,পুরো হট আর সেক্সি।
-------আজ শুধু তুমি আর আমি,আর কেউ নেই।Come On Jan,,Just Enjoy This Moment.....
শুরু হয়ে যায় দুজনের অবৈধ ও নিষিদ্ধ নোংরামী।
.
আকাশ বাসার আশেপাশে ই ছিলো,নাদিম ভিতরে ঢোকার কিছুক্ষণ পর আকাশও বাসায় প্রবেশ করে।দরজা খুলতে গিয়ে দেখে ভিতর থেকে লক করা,ডুপ্লিকেট চাবি থাকায় দরজা খুলতে কোন সমস্যা ই হলো না ওর।ঘরে প্রবেশ করে ওদের বেডরুমের দরজার সামনে
দেখে
অহনার শাড়ি,ব্লাউজ পড়ে আছে।এই শাড়ীটাই ও গতবছর অহনাকে গিফট করেছিলেন ওদের প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে। এসব দেখে মনের মধ্যে অনেক খারাপ
চিন্তাভাবনা ঘুরপাক করেছে
আকাশের । হঠাৎ ওর মনে হল
ওদের বেডরুম থেকে একটা শব্দ আসছে ।
আকাশ বেডরুমের সামনে গিয়ে দেখল
দরজটা একটু খোলা । ভেতরে তাকিয়ে
যা দেখল তা আকাশ কথনো কল্পনাই
করতে পারে না । তার ভালোবাসার
মানুষটি অন্য এক
পরপুরুষের সাথে
অবৈধ আদিম খেলায় মত্ত । প্রায়
হাজার ভোল্টজের মত শক খেল আকাশ। ওর শরীর দিয়ে এক শীতল
ঘামের
স্রোত নেমে গেল ।এখনো
ওর
বিশ্বাসই হচ্ছে না বিছানায় আদিম
খেলায় মত্ত নগ্ন মেয়েটি ওর প্রিয়তমা স্ত্রী,ওর ভালোবাসার মানুষ।একটা প্রাণীকে ভোতাঁ ছুরিঁ দিয়ে কাটলে প্রাণীটা যতটা কষ্ট পায়,তারচেয়েও বেশী কষ্ট পাচ্ছে আকাশ এসব দেখে।তারপর অহনাকে লক্ষ্য করে বলে ওঠলো.......
-------আমায় আর ভালো লাগে না এটা বললে ই তো পারতে, এসব করার কি দরকার ছিলো?আমায় বললে ই তো আমি তোমায় মুক্তি দিয়ে দিতাম।।
আকাশের কন্ঠস্বর শুনে অহনা ও নাদিমের হুশ ফেরে।আকাশকে এসময় ঘরে দেখে চমকে ওঠে অহনা।নাদিম নিজের কাপড়চোপড় নিয়ে এক দৌড়ে আকাশকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়, আর অহনা বিছানার চাদর দিয়ে নিজের লজ্জা নিবারণ করার চেষ্টা করে। লজ্জায় মাথা তুলতে পারছে না অহনা।আকাশ ওকে লক্ষ্য করে কয়েকটা কথা ই শুধু বললো....
-------এসব করার কি দরকার ছিলো?আমায় বললে আমি ই তোমায় মুক্তি দিতাম।তোমায় জীবনের চেয়ে বেশী ভালোবেসেছি,বিশ্বাস করেছি,, আজ তার উত্তম প্রতিদান তুমি দিয়েছ।ভেবো না,এসব কথা আমি কাউকে বলবো না কোনদিনও।তুমি আমায় যে কষ্ট টা দিয়েছ তা আমি ভুলে থাকার চেষ্টা করবো।পারবো কি না জানি না।তুমি সুখী হও এই দোয়া করি, আমি কিছুদিনের মধ্যে ই ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবো...
বলে ই আকাশ ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়,হাটতে থাকে অজানা কোন গন্তব্যর উদ্দেশ্য, আজ তার বিক্ষিপ্ত মনটা বড্ড অশান্ত হয়ে আছে।অন্ধের মতো ভালোবাসা আর বিশ্বাস করার প্রতিদান আজ ও পেয়েছে।
.
তারপর??
.
তারপর আকাশ অহনাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।অহনাও খুশি মনে আকাশকে ছেড়ে নাদিমের কাছে যায়,নাদিম ওকে মেনে নিবে এই আশায়।নাদিমের কাছে গিয়ে তাকে বিয়ে করতে বলে,একথা শোনার সাথে সাথে ই নাদিম পল্টি নেয় অহনার সাথে,অহনাকে লক্ষ্য করে বলে.....
------যে মেয়ে বিয়ের পর পরপুরুষের সাথে শুতে পারে সে মেয়েকে বিয়ে করবো,,,, এতটা বোকা আমি নই।তোমার মত মেয়েদের সাথে এনজয় করা যায়,ঘরের বউ করা যায় না।তোমার আর রাস্তার পতিতাদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই।তোমাদের মধ্যে শুধু পার্থক্য এটা ই ওরা রাতের আধারেঁ চারদেয়ালের ভেতর নোংরামি করে, আর তোমার মতো মেয়েরা দিনের আলোতেও এসব করতে দ্বিধাবোধ করো না।ওরা তোমার মতো মেয়েদের চাইতে শতগুনে ভালো,অন্তত কারো বিশ্বাস নিয়ে তো আর খেলা করে না।আমি তোমার সাথে এনজয় করেছি, Nothing Else...এখন দেয়ার মতো কিছু ই নেই তোমার।তোমার চেয়ে ভালো কাউকে আমি ডিজার্ভ করি।আর কোনদিন আমার সাথে যোগাযোগ করবে না।সেকেন্ডহ্যন্ড জিনিস পার্টটাইম ইউস করা যায়,পার্মানেন্টলি নয়,,বলে অহনাকে তাড়িয়ে দেয় নাদিম।
.
অহনা বাইরে এসে কাঁদতে থাকে।এ কি সেই নাদিম যার জন্য সে তার স্বামী ও ভালোবাসার মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এ কি সেই নাদিম যাকে সে নিজের সব বিলিয়ে দিয়েছে বিশ্বাস করে।।ও যে কতবড় বোকা ছিল আজ স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে।কিন্তু আজ এ আফসোস ও কান্না করে কোন লাভ হবে না।ভাবে অহনা।
তারপরও অহনা বারবার নাদিমের কাছে গিয়ে ওকে চাপ দিতে থাকে বিয়ে করার জন্য।ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিম ওর আর অহনার অন্তঃরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও নেটে ছেড়ে দেয়।যা দেখে অনেকে ই অহনাকে ধিক্কার দিতে থাকে,ওর পরিবার ওকে ত্যাজ্য ঘোষনা করে ওর সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে।সব হারিয়ে অহনার স্থান হয় নিষিদ্ধপল্লীতে।
আজ ওর জীবন
কষ্টে চলছে ।আজ ও সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট
জীব আই মিন পতিতা।যে হাজার পুরুষের চাহিদা মেটায়,যাকে সুশীল সমাজ ঘৃনার নজরে দেখে।
.
কি ভাবছেন নাদিম অনেক সুখে আছে??
না
ভাগ্য তাকেও সুখী হতে দেয় নি ।
"যেমন কর্ম তেমন ফল"বলে একটা কথা আছে,যার উদাহরন হলো নাদিম।অহনাকে ছাড়ারঁ পর আরেকটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায় ও,শারীরিক সম্পর্কও করে মেয়েটার সাথে।কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওই মেয়েটা এইচআইভি আক্রান্ত ছিলো,যা নাদিমের মধ্যেও সংক্রামিত হয়।নিজের পাপের উপযুক্ত শাস্তি নাদিম পাচ্ছে আজ,মৃত্যুর প্রহর গুনে গুনে কাটছে তার নিঃসঙ্গ দিনগুলি।।
.
আর আকাশ?হ্যঁ আকাশ এখনো বেচেঁ আছে,কিন্তু ওর ভেতর থেকে হাসিটা কে যেন কেড়ে নিয়েছে।সদা হাসোজ্জল ছেলেটা এখন জিন্দালাশ হয়ে গেছে,একা একা থাকে,কারো সাথে ঠিকমতো কথা বলে না।ওর পরিবার ওকে সুস্থ করে তোলার জন্য ভালো ডাক্তার দেখাচ্ছে, হয়তো একদিন আকাশ সুস্থ হয়ে উঠবে।কিন্তু যে শক ও পেয়েছে তা কি কখনো ভুলতে পারবে?বিশ্বাস করতে পারবে মেয়ে জাতি কে?প্রশ্ন টা রইলো আপনাদের কাছে।।
.
লেখকের কিছু কথাঃ-এটা শুধুমাত্র একটা গল্প। যার পুরোটাই কল্পনা থেকে নেয়া।কিন্তু আজকাল এমনটা অহরহ হচ্ছে।অনেক বিবাহিত মেয়ে ও মহিলারা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে যাদের স্বামী প্রবাসে ও দুরে চাকুরী করে তারা ই পরকীয়াতে বেশী জড়িত।এর অনেক কারনও রয়েছে,যার মূখ্য কারন হলো শারীরিক চাহিদা।স্বামী কষ্ট করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিজের সুখ, স্বাদ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে গাধার মতো খাটে শুধুমাত্র স্ত্রী ও সন্তান সুখে থাকবে, কোন ইচ্ছে অপূর্ণ থাকবে না এটা ভেবে।কিন্তু স্ত্রী তার বিশ্বাস ভঙ্গ করে পরকীয়া করছে,স্বামীর হক নষ্ট করছে,আমানতের খেয়ানত করছে।এই পরকীয়ার জন্য কত নারীর সংসার ভেঙেছে,সন্তান রেখে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যাচ্ছে স্বামীর টাকা পয়সা নিয়ে,নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার নজিরও রয়েছে।
বাস্তবে এইরূপ ঘটনা অহরহ ঘটে
চলেছে । আর কত আকাশরা এভাবে কষ্ট পেলে পরকীয়া দমন হবে? বলতে পারেন আর কত
আকাশরা
মানসিক বিকারগ্রস্ত হলে, আর কত
অহনা পতিতাবৃত্তির মতো নোংরা
পেশা বেছে নিল, আর কত নাদিমের মৃত্যু হলে, আর কত
স্বামী স্ত্রীর পরকীয়ার জন্য বা কত
স্ত্রী স্বামীর পরকীয়ার জন্য
আত্মহত্যা করলে পরকীয়া নির্মূল হবে???????
আমাদের দেশে যৌতুক আর পতিতাবৃত্তিকে সামাজিক
ব্যাধি ও ভয়াবহ ভাইরাস হিসেবে অভিহিত করা হয়।তাহলে পরকীয়াকে কেন সামাজিক ব্যাধি হিসেবে ধরা হয় না???আমাদের সুশীল সমাজ একটা ইস্যু পেলে সেটাকে নিয়ে কত গলা ফাটায়,তাহলে পরকীয়ার মতো একটা সামাজিক ব্যাধির বেলায় তাদের সেই গলা কোথায় যায়??কেনো মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ার পরেও পরকীয়ার বিরুদ্ধে দেশে শক্ত আইন নেই?যেখানে আরব রাষ্ট্রে এমনটা হলে পাথর ছুড়ে হত্যা করার বিধান রয়েছে। আফসোস হয় এসব দেখে।যতদিন পর্যন্ত দেশে ইসলামিক শাসন পুরোপুরি চালু না হবে ততদিন পর্যন্ত পরকীয়া নামক এই ভাইরাস সমাজে বিস্তার লাভ করতে ই থাকবে।
পরকীয়ার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নয়
কেন? আর কত সংসার, কত জীবন ধ্বংস
হবে পরকীয়ার জন্য?এর কি কোন সমাধান নেই?প্রশ্ন গুলো রইলো আপনাদের কাছে..............
.
-------হ্যঁ দেরী হবে,অফিসে কাজের চাপ অনেক বেড়ে গেছে ইদানীং।
------ওহহ।আচ্ছা সমস্যা নেই।
বলে মন খারাপ করে অহনা,তা দেখে আকাশ বলে ওঠে.....
-------মন খারাপ করো না,আর তো মাত্র কয়েকটাদিন।তারপর ই প্রজেক্ট টা শেষ হবে।তারপর দুরে কোথাও ঘুরতে যাবো আমরা।
-------সত্যি??
------হুম সত্যি সত্যি সত্যি।
------আচ্ছা ঠিক আছে।
বলে আকাশকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেয় অহনা।আকাশ দরজার সামনে গিয়ে অহনার কপালে একটা চুমু দিয়ে অফিসের উদ্দেশ্য বেড়িয়ে যায়।
.
আকাশ চলে যাওয়ার সাথে সাথে ই অহনা মোবাইল বের করে ফোন দেয় নাদিমকে....
------হ্যলো জান।
------হা জান বলো।
------আজকেও ওর অফিস থেকে আসতে দেরী হবে।
------ওয়াও!!!!!তাহলে আজকেও আমরা ডেটিং এ যেতে পারবো।
-------হা জান,আজকে কোথায় যাবে ঘুরতে?
-------তুমি তৈরী হয়ে থেকো,আমি তোমায় চার রাস্তার মোড় থেকে নিয়ে যাবো।
-------ওকে জান।
.
এতক্ষণ ধরে অহনা যার সাথে কথা বলছিলো সে হলো নাদিম,অহনার পরকীয়া প্রেমিক।বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অহনা নাদিমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করেছে।নাদিমের সাথে ওর পরিচয় ফেসবুকে,সেখান থেকে ই টুকটাক কথা বলা,পরিচয় অতঃপর পরিণয়। যদিও নাদিম এটা জানে যে অহনা বিবাহিত তবুও সে অহনার সাথে সম্পর্ক রেখেছে।কারন বিনা বাধায় যদি মধু খাওয়া যায় তাহলে সেটা কে ই বা মিস করতে চায়?অহনা ও নাদিম কয়েকবার ই ডেট ও মিট করেছে,যার মধ্যে কয়েকটা রুমডেটও ছিলো।আর এসব ই হচ্ছিলো আকাশের চোখের আড়ালে।ভালোবেসে একে অপরকে বিয়ে করেছে ওরা,আকাশ অহনাকে প্রচন্ড ভালোবাসে।কিন্তু অহনা ইদানীং নাদিমকে পেয়ে সব ভালোবাসা তাকে ই বিলিয়ে দিচ্ছে।যদিও আকাশের সামনে সে ভালোবাসা আর একজন স্ত্রীর অভিনয় টা ভালো ই করে।
.
আজ কাজ শেষ হতে দেরী হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগে ই অফিসের প্রজেক্টের কাজ শেষ হয় আকাশের।যদিও এর জন্য পরিশ্রম টা অনেক বেশী ই করতে হয়েছে।
কাজ শেষ করে বের হয়ে ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে দেখে সন্ধ্যা সাতটা বাজে।ক্লান্তিতে আকাশের গা ভেঙ্গে পড়তে চাইছে,কিন্তু বহুদিন পর আজ স্ত্রীর সাথে ডিনার করতে পারবে।তাই অফিস থেকে বেড়িয়ে বাসে ওঠে বাসায় যাওয়ার জন্য।ওর সিটটা জানালার পাশে ই পড়ে।ক্লান্ত থাকায় কিছুক্ষণের জন্য চোখটা বুজে আসে ওর আর তখন মনে পড়ে
যাচ্ছে পুরনো অনেক স্মৃতি । এই তো সেদিন অহনার সাথে
পরিচয়,কথা বলা,তারপর প্রপোজ করা,খুনসুটি ভালোবাসা,হঠাৎ অহনার পরিবার তার বিয়ে ঠিক করায় তাকে নিয়ে পালিয়ে আসা।পরিবার মেনে না নেয়ায় আলাদা ফ্ল্যাট নেয় আকাশ আর পড়ালেখা শেষ হওয়ায় পরিচিত এক বন্ধুর সহায়তায় এই চাকুরীটা পায় ও।যদিও এখন দুজনের পরিবার ই বিয়েটা মেনে নিয়েছে,তবুও আকাশ অহনাকে নিয়ে এখানে থাকে চাকুরীর জন্য।
অহনার আর ওর দিনগুলি কত ই না সুখে কাটছে,যদিও ও জানে না অহনা ওর চোখের আড়ালে ওকে প্রতিনিয়ত ধোকাঁ দিয়ে যাচ্ছে।
.
বাসের ঝাকুনিঁতে তন্দাভাব কিছুটা কেটে যায় আকাশের।বুঝতে পারে গাড়ি জ্যমে আটকা পড়েছে। ঘড়িতে হাত বুলিয়ে দেখে প্রায় আটটা বাজে।জ্যম ছোটার অপেক্ষা করছে আকাশ,এমন সময় ওর চোখ যায় সামনে,তাকিয়ে দেখে একটা রিকশায় অহনার মতো দেখতে একটা মেয়ে একটা ছেলের কাধেঁ মাথা রেখে একটা হাত ধরে পরম নির্ভরতায় চোখ বুঝে আছে।সাথে সাথে তন্দ্রাভাব কেটে যায় আকাশের,না না এটা অহনা হতে পারে না,অহনা তো বাসায়, তাহলে এটা কে?ভালোমতো দেখার আগে ই সিগন্যাল ছেড়ে দেয়ায় আকাশের আর দেখা হলো না মেয়েটা সত্যি ই অহনা ছিলো কি না।মনের ভুল হতে পারে বা ক্লান্ত থাকায় ভুল দেখতে পারে ভেবে বিষয়টাকে উপেক্ষা করে আকাশ, যদিও ওর মনটা তখনও খচখচ করছিলো।
.
বাসায় ফিরে আকাশ দেখে দরজায় তালা দেয়া। কি ব্যাপার? এই সময় অহনা কোথায় গেলো? আকাশের মনটা আবারো খচখচ করতে লাগলো আর সন্দেহটাও প্রবল হয়ে ওঠলো।তাহলে কি তখন রিকশায় কি অহনা ই ছিলো?এসব ও আরো নানা আজেবাজে চিন্তা মাথায় আসতে লাগলো ওর।
কিছুক্ষণ পর কলিংবেলের আওয়াজে ঘোর কাটে আকাশের।উঠে
গিয়ে দরজা খুলে দেখে অহনা দাড়িয়ে আছে, চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট ফুটে রয়েছে।অহনা ভিতরে ঢুকতে ই আকাশ অহনাকে জিজ্ঞেস করলো......
------কোথাও কি গিয়েছিলে নাকি?
------হ্যঁ মা ফোন করেছিল, তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। ক্লান্ত স্বরে উত্তর দেয় অহনা।
------তোমার মা অসুস্থ তা আমায় বলো নি কেনো?
-------তুমি অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তোমায় জানাই নি।
-------ওহ,,তা তোমাকে এত ক্লান্ত লাগছে কেনো?
------জার্নি করেছি তো তাই এমন দেখাচ্ছে। তুমি খেয়ে নাও,আমি খেয়ে ই এসেছি।ফ্রেশ হয়ে ঘুমাবো।
------আচ্ছা যাও।
অহনা চলে যাওয়ার পর আকাশের মনে সন্দেহ দানা বাধতেঁ থাকে।কারন অহনা কখনো ওকে না জানিয়ে ওর মায়ের বাসায় যায় নি,তাছাড়া ওর শাশুড়ি অসুস্থ হলে সে খবর ওর কাছে খবর আসতো।কিন্তু এমনটা হয় নি,আর ওর শশুড়বাড়ি এতটা দুরেও নয় যে জার্নি করতে হয়।সব মিলিয়ে আকাশের মনে সন্দেহ টা এবার ডালপালা মেলা শুরু করলো।
.
ইদানীং প্রায় ই অহনার ফোন ব্যস্ত পায় আকাশ,ফোন দিলে সহজে ধরে না,ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন ওয়েটিং এ থাকে।জিজ্ঞেস করলে বলে মা অসুস্থ তার খোজ খবর নেই তাই এমনটা হচ্ছে।কিন্তু আসল ঘটনা হলো এই সময় অহনা নাদিমের সাথে ফোনে প্রেমালাপ করে বা একান্ত সময় কাটায়।তাই আকাশ ফোন দিলে ধরে না।
এটা নিয়ে একদিন ওদের মাঝে কথা কাটাকাটিও হয়।যা ঝগড়ায় রূপ নেয়।
পরে পারিবারিক মধ্যস্থতায় সব ঠিকঠাক হলেও দুজনের মাঝে সৃষ্টি হয় দূরত্ব।
.
আস্তে আস্তে দিন যায়,এখন অহনা আর আকাশ আগের মত ই আছে,শুধু তাদের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে অবিশ্বাস ও সন্দেহ নামক বস্তুটা।যার দরুণ এক ই ছাদের নীচে থাকার পরও দুজন আলাদা।
দুদিন পর আকাশ যখন অফিসে কাজ করছিলো তখন ওর কলিগ হৃদয় ওকে লক্ষ্য করে বললো......
-------আচ্ছা আকাশ সাহেব আপনার কি কোন ভাই আছে?
-------কই না তো,আমি আমার মা বাবার একমাত্র সন্তান।
-------আপনার স্ত্রীর কি কোন ভাই আছে?
-------না নেই।ওরা দু বোন,ও ছোট।কি ব্যাপার? আজ হঠাৎ করে আপনি এসব জিজ্ঞেস করছেন কেনো?ঘটনা কি??
-------না মানে কিভাবে যে বলি,,কাল ভাবী কে দেখলাম একটা অপরিচিত ছেলের সাথে এক ই রিকশায় করে যাচ্ছে।তাই আপনাকে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনার বা ভাবীর কোন ভাই আছে কি না।।
-------আপনি কি সিউর যে আপনি আমার স্ত্রী কে ই দেখেছেন?
-------আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি ওটা আপনার স্ত্রী ই ছিল।
-------হতে পারে ওর কোন রিলেটিভের সাথে কোথাও গিয়েছিল।আর আপনি তখন তার সাথে ই ওকে দেখেছেন।
-------হ্যঁ এটাও হতে পারে,আমার কথায় কিছু মনে করবেন না আকাশ সাহেব।
-------ইটস ওকে।
.
কথাগুলো বলে ওর কলিগ চলে যায়। এবার আকাশের সন্দেহ আরো জোরালো হয় যে অহনা ওর পেছনে অন্য কারো সাথে পরকীয়া করছে।নাহলে ওর ফোন এত ওয়েটিং, সেদিন ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরা আর আজ ওর কলিগের কথায় সব পরিষ্কার হয়ে গেলো।কিন্তু এখন কিছু করা যাবে না,কারন ওকে ধরতে হবে হাতেনাতে,প্রমাণ সহ।যার জন্য দরকার একটা সুযোগের।
বাসায় এসে যথারীতি ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমাতে চলে গেল আকাশ,অহনাও ওর মতো করে খেয়ে ঘুমিয়ে যায়।আকাশ ঘুমানোর চেষ্টা করেও পারে না।যাকে ও এত ভালোবাসে,যার জন্য নিজের পরিবারের সাথে লড়াই করেছে,যার জন্য নিজের সবকিছু বিসর্জন দিচ্ছে সে ই কিনা আজ ওর সাথে এতবড় বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারলো? ওর ভালোবাসা আর বিশ্বাসের এই মূল্য দিলো?এসব ভাবতে ই ওর চোখ পানিতে ভরে যায়,টুপ করে দু ফোটা অশ্রু গড়িয়ে নীচে পড়ে।
এ অশ্রু ভুল মানুষকে ভালোবাসার অশ্রু,এ অশ্রু ভুল জায়গায় ভালোবাসা দেয়ার অশ্রু,এ অশ্রু ভুল মানুষকে বিশ্বাস করার অশ্রু।।।
.
কিছুদিন অপেক্ষা করার পর আকাশ সুযোগ টা পেয়ে যায়। আর দুদিন পর ওদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী, গতবছর এই দিনটা ওরা একসাথে ই উদযাপন করেছে,কিন্তু এবার আকাশ অহনাকে ওর অপকর্মের শাস্তি দেয়ার জন্য প্লান করে।
প্লান অনুযায়ী আকাশ অহনাকে বলে যে অফিসের জরুরী কাজের প্রয়োজনে ওকে
এক সপ্তাহের জন্য চিটাগাং যেতে হবে,খুব ই গুরুত্বপূর্ণ কাজ।তাই এবার বিবাহবার্ষিকী একসাথে পালন করা যাবে না হয়তো।বলে মন খারাপের ভান ধরে আকাশ,অহনার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য।
এটা শুনে অহনা যেন ঈদের চাদঁ হাতে পায়!!!এক সপ্তাহ!!অনেক সময়, এই এক সপ্তাহ নাদিমের সাথে অনেক আনন্দ করা যাবে ভেবে ওর মুখে সূক্ষ্ম একটা হাসি ফুটে ওঠে যা আকাশের নজর এড়ায় না।
যদিও অহনা মন খারাপের অভিনয় করে,আফসোস করে কিন্তু আকাশ বুঝতে পারে এসব ই কৃত্রিম ও মেকি।
.
পরদিন আকাশ ব্যগ গুছিয়ে চিটাগাং এর উদ্দেশ্য বের হয়ে যাওয়ার পর পর ই অহনা নাদিনকে ফোন দেয়.....
------হ্যালো জান
------হ্যঁ বেবি বলো।
------একটা দারুণ খবর আছে।ও এক সপ্তাহের জন্য চিটাগাং গেছে অফিসের কাজে।
------ওয়াও!!!!দারুণ সংবাদ।
------হ্যঁ জান,এই এক সপ্তাহ শুধু তুমি আর আমি। আমরা একসাথে থাকবো,যা খুশি করবো, কেউ নেই বাধা দেয়ার,কেউ নেই কিছু দেখার।শুধু তুমি আর আমি।
-------তাই নাকি বেবি।তাহলে তো সোনায় সোহাগা।।
-------হ্যঁ জান,আর শোন কাল আমাদের মানে ওর আর আমার দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী, ও নেই তো কি,তুমি তো আছো,,,কাল তুমি আর আমি আমাদের বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করবো একসাথে। আমাদের বাসায়।।
------সত্যি দারুণ হবে।আমি কাল সময়মতো চলে আসবো।তারপর শুধু তুমি আর আমি,আমি আর তুমি।
-------হ্যঁ জান।আগে তো সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম কিন্তু এখন আর ভয় নেই।কাল চলে এসো জান,দেরী করো না কিন্তু।
-------ওকে বেবি।
ফোন রেখে অহনা
তৃপ্তির হাসি দেয় কালকের কথা ভেবে।অপরদিকে নাদিমও হাসছে,কামনা আর লোলুপতার হাসি।।।
.
.
পরদিন নির্ধারিত সময়ের আগে ই নাদিম আকাশের ফ্ল্যাটে গিয়ে হাজির হয়,ওর চোখে মুখে উত্তেজনা বিরাজ করছে আজ।কলিংবেলের আওয়াজ শুনে অহনা দরজা খুলে দেয়।দরজা খোলার পর অহনাকে দেখে ই নাদিম হা করে তাকিয়ে থাকে,ক্ষুদাটা যেন আরো বেড়ে যায়।আজ অহনা নীল শাড়ি পড়েছে,স্লিভলেস ব্লাউজ, হাতভরা নীল কাচেরঁ চুড়িঁ,কপালে ম্যাচিং টিপ আর মুখে মেকাপ করায় অহনাকে পুরো কামনার দেবী মনে হচ্ছিলো নাদিমের।ওর হুশ ফেরে অহনার ডাকে....
-------কি ব্যাপার নাদিম??কি দেখছো এভাবে?
----- তোমাকে না আজকে অনেক সুন্দর
লাগছে।কিছু বলার মতো ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।একদম কামনার দেবীর মতো লাগছে তোমাকে,যার জন্য সবাই পাগল।
------উফফ,,তাই নাকি জান ?
------হুম সিরিয়াসলি । আমারমাথা নষ্ট হয়ে গেছে,, এই নীল শাড়ী আর ড্রেসআপে
যা লাগছে না তোমাকে,,পুরো হট আর সেক্সি।
-------আজ শুধু তুমি আর আমি,আর কেউ নেই।Come On Jan,,Just Enjoy This Moment.....
শুরু হয়ে যায় দুজনের অবৈধ ও নিষিদ্ধ নোংরামী।
.
আকাশ বাসার আশেপাশে ই ছিলো,নাদিম ভিতরে ঢোকার কিছুক্ষণ পর আকাশও বাসায় প্রবেশ করে।দরজা খুলতে গিয়ে দেখে ভিতর থেকে লক করা,ডুপ্লিকেট চাবি থাকায় দরজা খুলতে কোন সমস্যা ই হলো না ওর।ঘরে প্রবেশ করে ওদের বেডরুমের দরজার সামনে
দেখে
অহনার শাড়ি,ব্লাউজ পড়ে আছে।এই শাড়ীটাই ও গতবছর অহনাকে গিফট করেছিলেন ওদের প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে। এসব দেখে মনের মধ্যে অনেক খারাপ
চিন্তাভাবনা ঘুরপাক করেছে
আকাশের । হঠাৎ ওর মনে হল
ওদের বেডরুম থেকে একটা শব্দ আসছে ।
আকাশ বেডরুমের সামনে গিয়ে দেখল
দরজটা একটু খোলা । ভেতরে তাকিয়ে
যা দেখল তা আকাশ কথনো কল্পনাই
করতে পারে না । তার ভালোবাসার
মানুষটি অন্য এক
পরপুরুষের সাথে
অবৈধ আদিম খেলায় মত্ত । প্রায়
হাজার ভোল্টজের মত শক খেল আকাশ। ওর শরীর দিয়ে এক শীতল
ঘামের
স্রোত নেমে গেল ।এখনো
ওর
বিশ্বাসই হচ্ছে না বিছানায় আদিম
খেলায় মত্ত নগ্ন মেয়েটি ওর প্রিয়তমা স্ত্রী,ওর ভালোবাসার মানুষ।একটা প্রাণীকে ভোতাঁ ছুরিঁ দিয়ে কাটলে প্রাণীটা যতটা কষ্ট পায়,তারচেয়েও বেশী কষ্ট পাচ্ছে আকাশ এসব দেখে।তারপর অহনাকে লক্ষ্য করে বলে ওঠলো.......
-------আমায় আর ভালো লাগে না এটা বললে ই তো পারতে, এসব করার কি দরকার ছিলো?আমায় বললে ই তো আমি তোমায় মুক্তি দিয়ে দিতাম।।
আকাশের কন্ঠস্বর শুনে অহনা ও নাদিমের হুশ ফেরে।আকাশকে এসময় ঘরে দেখে চমকে ওঠে অহনা।নাদিম নিজের কাপড়চোপড় নিয়ে এক দৌড়ে আকাশকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়, আর অহনা বিছানার চাদর দিয়ে নিজের লজ্জা নিবারণ করার চেষ্টা করে। লজ্জায় মাথা তুলতে পারছে না অহনা।আকাশ ওকে লক্ষ্য করে কয়েকটা কথা ই শুধু বললো....
-------এসব করার কি দরকার ছিলো?আমায় বললে আমি ই তোমায় মুক্তি দিতাম।তোমায় জীবনের চেয়ে বেশী ভালোবেসেছি,বিশ্বাস করেছি,, আজ তার উত্তম প্রতিদান তুমি দিয়েছ।ভেবো না,এসব কথা আমি কাউকে বলবো না কোনদিনও।তুমি আমায় যে কষ্ট টা দিয়েছ তা আমি ভুলে থাকার চেষ্টা করবো।পারবো কি না জানি না।তুমি সুখী হও এই দোয়া করি, আমি কিছুদিনের মধ্যে ই ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবো...
বলে ই আকাশ ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়,হাটতে থাকে অজানা কোন গন্তব্যর উদ্দেশ্য, আজ তার বিক্ষিপ্ত মনটা বড্ড অশান্ত হয়ে আছে।অন্ধের মতো ভালোবাসা আর বিশ্বাস করার প্রতিদান আজ ও পেয়েছে।
.
তারপর??
.
তারপর আকাশ অহনাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়।অহনাও খুশি মনে আকাশকে ছেড়ে নাদিমের কাছে যায়,নাদিম ওকে মেনে নিবে এই আশায়।নাদিমের কাছে গিয়ে তাকে বিয়ে করতে বলে,একথা শোনার সাথে সাথে ই নাদিম পল্টি নেয় অহনার সাথে,অহনাকে লক্ষ্য করে বলে.....
------যে মেয়ে বিয়ের পর পরপুরুষের সাথে শুতে পারে সে মেয়েকে বিয়ে করবো,,,, এতটা বোকা আমি নই।তোমার মত মেয়েদের সাথে এনজয় করা যায়,ঘরের বউ করা যায় না।তোমার আর রাস্তার পতিতাদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই।তোমাদের মধ্যে শুধু পার্থক্য এটা ই ওরা রাতের আধারেঁ চারদেয়ালের ভেতর নোংরামি করে, আর তোমার মতো মেয়েরা দিনের আলোতেও এসব করতে দ্বিধাবোধ করো না।ওরা তোমার মতো মেয়েদের চাইতে শতগুনে ভালো,অন্তত কারো বিশ্বাস নিয়ে তো আর খেলা করে না।আমি তোমার সাথে এনজয় করেছি, Nothing Else...এখন দেয়ার মতো কিছু ই নেই তোমার।তোমার চেয়ে ভালো কাউকে আমি ডিজার্ভ করি।আর কোনদিন আমার সাথে যোগাযোগ করবে না।সেকেন্ডহ্যন্ড জিনিস পার্টটাইম ইউস করা যায়,পার্মানেন্টলি নয়,,বলে অহনাকে তাড়িয়ে দেয় নাদিম।
.
অহনা বাইরে এসে কাঁদতে থাকে।এ কি সেই নাদিম যার জন্য সে তার স্বামী ও ভালোবাসার মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, এ কি সেই নাদিম যাকে সে নিজের সব বিলিয়ে দিয়েছে বিশ্বাস করে।।ও যে কতবড় বোকা ছিল আজ স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে।কিন্তু আজ এ আফসোস ও কান্না করে কোন লাভ হবে না।ভাবে অহনা।
তারপরও অহনা বারবার নাদিমের কাছে গিয়ে ওকে চাপ দিতে থাকে বিয়ে করার জন্য।ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিম ওর আর অহনার অন্তঃরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও নেটে ছেড়ে দেয়।যা দেখে অনেকে ই অহনাকে ধিক্কার দিতে থাকে,ওর পরিবার ওকে ত্যাজ্য ঘোষনা করে ওর সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে।সব হারিয়ে অহনার স্থান হয় নিষিদ্ধপল্লীতে।
আজ ওর জীবন
কষ্টে চলছে ।আজ ও সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট
জীব আই মিন পতিতা।যে হাজার পুরুষের চাহিদা মেটায়,যাকে সুশীল সমাজ ঘৃনার নজরে দেখে।
.
কি ভাবছেন নাদিম অনেক সুখে আছে??
না
ভাগ্য তাকেও সুখী হতে দেয় নি ।
"যেমন কর্ম তেমন ফল"বলে একটা কথা আছে,যার উদাহরন হলো নাদিম।অহনাকে ছাড়ারঁ পর আরেকটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায় ও,শারীরিক সম্পর্কও করে মেয়েটার সাথে।কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওই মেয়েটা এইচআইভি আক্রান্ত ছিলো,যা নাদিমের মধ্যেও সংক্রামিত হয়।নিজের পাপের উপযুক্ত শাস্তি নাদিম পাচ্ছে আজ,মৃত্যুর প্রহর গুনে গুনে কাটছে তার নিঃসঙ্গ দিনগুলি।।
.
আর আকাশ?হ্যঁ আকাশ এখনো বেচেঁ আছে,কিন্তু ওর ভেতর থেকে হাসিটা কে যেন কেড়ে নিয়েছে।সদা হাসোজ্জল ছেলেটা এখন জিন্দালাশ হয়ে গেছে,একা একা থাকে,কারো সাথে ঠিকমতো কথা বলে না।ওর পরিবার ওকে সুস্থ করে তোলার জন্য ভালো ডাক্তার দেখাচ্ছে, হয়তো একদিন আকাশ সুস্থ হয়ে উঠবে।কিন্তু যে শক ও পেয়েছে তা কি কখনো ভুলতে পারবে?বিশ্বাস করতে পারবে মেয়ে জাতি কে?প্রশ্ন টা রইলো আপনাদের কাছে।।
.
লেখকের কিছু কথাঃ-এটা শুধুমাত্র একটা গল্প। যার পুরোটাই কল্পনা থেকে নেয়া।কিন্তু আজকাল এমনটা অহরহ হচ্ছে।অনেক বিবাহিত মেয়ে ও মহিলারা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে যাদের স্বামী প্রবাসে ও দুরে চাকুরী করে তারা ই পরকীয়াতে বেশী জড়িত।এর অনেক কারনও রয়েছে,যার মূখ্য কারন হলো শারীরিক চাহিদা।স্বামী কষ্ট করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিজের সুখ, স্বাদ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে গাধার মতো খাটে শুধুমাত্র স্ত্রী ও সন্তান সুখে থাকবে, কোন ইচ্ছে অপূর্ণ থাকবে না এটা ভেবে।কিন্তু স্ত্রী তার বিশ্বাস ভঙ্গ করে পরকীয়া করছে,স্বামীর হক নষ্ট করছে,আমানতের খেয়ানত করছে।এই পরকীয়ার জন্য কত নারীর সংসার ভেঙেছে,সন্তান রেখে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যাচ্ছে স্বামীর টাকা পয়সা নিয়ে,নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার নজিরও রয়েছে।
বাস্তবে এইরূপ ঘটনা অহরহ ঘটে
চলেছে । আর কত আকাশরা এভাবে কষ্ট পেলে পরকীয়া দমন হবে? বলতে পারেন আর কত
আকাশরা
মানসিক বিকারগ্রস্ত হলে, আর কত
অহনা পতিতাবৃত্তির মতো নোংরা
পেশা বেছে নিল, আর কত নাদিমের মৃত্যু হলে, আর কত
স্বামী স্ত্রীর পরকীয়ার জন্য বা কত
স্ত্রী স্বামীর পরকীয়ার জন্য
আত্মহত্যা করলে পরকীয়া নির্মূল হবে???????
আমাদের দেশে যৌতুক আর পতিতাবৃত্তিকে সামাজিক
ব্যাধি ও ভয়াবহ ভাইরাস হিসেবে অভিহিত করা হয়।তাহলে পরকীয়াকে কেন সামাজিক ব্যাধি হিসেবে ধরা হয় না???আমাদের সুশীল সমাজ একটা ইস্যু পেলে সেটাকে নিয়ে কত গলা ফাটায়,তাহলে পরকীয়ার মতো একটা সামাজিক ব্যাধির বেলায় তাদের সেই গলা কোথায় যায়??কেনো মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ার পরেও পরকীয়ার বিরুদ্ধে দেশে শক্ত আইন নেই?যেখানে আরব রাষ্ট্রে এমনটা হলে পাথর ছুড়ে হত্যা করার বিধান রয়েছে। আফসোস হয় এসব দেখে।যতদিন পর্যন্ত দেশে ইসলামিক শাসন পুরোপুরি চালু না হবে ততদিন পর্যন্ত পরকীয়া নামক এই ভাইরাস সমাজে বিস্তার লাভ করতে ই থাকবে।
পরকীয়ার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নয়
কেন? আর কত সংসার, কত জীবন ধ্বংস
হবে পরকীয়ার জন্য?এর কি কোন সমাধান নেই?প্রশ্ন গুলো রইলো আপনাদের কাছে..............
.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন