বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭

পাগলী

আজ থেকে প্রায় দেড় বছর আগের ভেঙ্গে যাওয়া বন্ধুত্ব জোরা লাগাতে যাচ্ছি।গ্রামের মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে একটু ঝগড়া হয়েছিলো রিহানের সাথে।তারপর আর কথা হয়নি কখনো।যতোই হোক বাল্যবন্ধুতো!সব সময় মিস করতাম ওকে।গতকাল রাতেই ওর দেওয়া ডায়েরীটা হাতে পড়ল।আমার লেখাগুলো এই ডায়েরীতেই জমা রাখার কথা বলছিলো।কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।গতকাল রাতেই ভাবলাম ছেলেটার সাথে সবকিছু মিট করে নেওয়াটাই বেটার হবে।
!
-একটা সিট হবে?
-কোথায় যাবেন?
-খুলনা।
-হবে।৮০০ টাকা লাগবে।
-জানালার পাশে দিতে পারবেন?
-হ্যাঁ।
!
গাড়িতে উঠে ল্যাপটপ নিয়ে বসে একটা গল্প লিখতে শুরু করলাম।গল্পটা রিহানকে উৎস্বর্গ করব।হটাৎ একটা মেয়ে এসে হুম করেই পাশে বসে পড়ল।হয়ত সিটের মালিক মেয়েটা!একবার তাকিয়ে আবার লেখা শুরু করলাম।মেয়েটাও কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছে।
!
গাড়ি চলতে শুরু করেছে আপন গতিতে।আমি জানালা দিয়ে প্রকৃতির কালো অন্ধকারাছন্ন পরিবেশ দেখছি।অন্ধকার দেখতে আমার খুব ভালো লাগে।বাসায় প্রায় প্রতি রাতেই ছাদে বসে থাকি।অন্ধকারের সাথি হয়ে।ওর কেউ নেই।আমারো কেউ নেই।বেশ ভালো মিল আছে ওর সাথে আমার।
!
-এই যে হ্যালো!
-জ্বী বলেন।
-একটা হেল্প করবেন?
-কি হেল্প?
-জানালার পাশে আমাকে বসতে দিবেন?
-আসলে আমি জানলার পাশে ছাড়া বসে মজা পাইনা!
-আমার তেমন কোনো সমস্যা নেই তবে বমি করে দিলে আপনার গায়ে পড়তে পারে!
-তো জানালার পাশে সিট নিতে পারেন নি?
-আর ছিলোনা সিট।আপনি বসতে দিবেন ?
-হ্যাঁ,হ্যাঁ বসেন।
!
বমির কথা শুনেই কেমন গা টা গুলিয়ে উঠল।সিট ছেড়ে দিয়ে এপাশে এসে আবারো ল্যাপটপ ওপেন করলাম।তবে এবার গান শোনার জন্য।আমি বরাবরের মত পুরোনো দিনের গান শুনছিলাম।হটাৎ মেয়েটি বলল;
!
-থ্যাংস।
-স্বাগতম।
-স্যরি।
-স্যরি কেন?
-মিথ্যা বলে আপনাকে সিট থেকে সড়িয়ে দেওয়ার জন্য।আমি আসলে জানালার পাশে ছাড়া বসতে পারিনা।তাছাড়া আমার বমি হয়না গাড়িতে উঠলে।
-ওহ আচ্ছা।
-রাগ করলেন নাকি?
-নাহ্।আসলে আমি মিথ্যাকে ঘৃণা করি।
-তাহলেতো আমাকেও ঘৃণা করছেন!
-পাপীকে নয় পাপকে ঘৃণা করি।
-ওকে ওকে।আপনার সিটে আপনি আসুন।
-না থাক।
-তাহলে একটা সত্যি কথা বলবেন?
-কি?
-আপনি এত গম্ভীর কেন?ছ্যাকা খেয়েছেন নাকি?
-কি বলতে চান?ছ্যাকা খাবো মানে কি?
-আরে ধুর।আপনিতো পুরাই নিরামিষ।প্রেম করছেন কখনো?
-নাহ্।
-তাহলে ঠিক আছে।
-কি?
-কিছুনা।আপনি ভুতুম প্যাঁচা।
-থ্যাংস ফর ইওর কম্পিমেন্ট।
-আপনি এমন কেন?
-কেমন বলুনতো?
-এই যে পাশের ছিটে একটা মেয়ে বসে আছে অথচ আপনি কথা বলছেন না!
-আপনি কেমন মেয়েরে বাবা!মানুষকে ইনভাইট করেন আপনার সাথে কথা বলার জন্য।
-আমি কথা না বলে থাকতে পারিনা।আমার পাশে বসে কেউ চুপ থাকতেও পারেনা!আমি জোর করে কথা বলিয়ে নি।
-পাগল কোথাকার।
-স্যরি।আপনি মনে হয় ব্যাকরণে প্রচুর কাঁচা!মেয়েদের কেউ পাগল বলেনা!পাগলী বলতে হয়।
!
বুঝলাম মেয়েটার মাথায় সমস্যা আছে।না হলে কি আর এমন করে কথা বলে!ভলিউমটা বাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে গান শুনছিলাম।কখন যে ফেরীঘাটে পৌছে গেছি টের পাইনি!চোখ খুলে দেখলাম আমাদের গাড়িটা লম্বা সিরিয়ালের প্রায় শেষের দিকে।কখন ফেরীতে উঠতে পারবে তার ইয়ত্বা নেই!ভাবলাম একটু নিচ থেকে ঘুরে আসি!কিন্তু ব্যাগ আর ল্যাপটপ?এগুলো কোথায় রাখবো?যদি কেউ নিয়ে যায়?না না।এভাবে রাখা ঠিক হবেনা!তার থেকে পাগলী মেয়েটাকেই ব্যাগ দেখার দায়িত্ব দিয়ে যাই।
!
-এই যে শুনছেন?
মেয়েটা গভীর ঘুমে নিমগ্ন।মায়াবী চেহারা মেয়েটার।হালকা মেক-আপ মেয়েটার মুখের মায়াবী চেহারা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।আমি এর আগে এত কাছ থেকে কোনো মেয়েকে দেখিনি॥অজান্তেই হাড়িয়ে গেলাম ওর মাঝে।
!
-এই যে মিষ্টার!হা করে কি দেখছেন?এর আগে কখনো মেয়ে দেখেননি?
মেয়েটির কর্কশ কন্ঠ শুনে ঘোর কাটল।
-আসলে আমি একটু বাইরে যেতে চাই!
-বাইরে যাবেন তো আমাকে কি দেখছেন?
-আমার ব্যাগ আর ল্যাপটপ টা একটু দেখবেন?
-ওকে ওকে।
!
কথা না বাড়িয়ে সোজা বাইরে চলে আসলাম।রাতে অন্ধকারটাকে কিছু লাইট দিয়ে আড়াল করা চেষ্টা করা হয়েছে।যেদিকে তাকাই শুধু লাইট আর লাইট।তবুও আমি অন্ধকারকে দেখার চেষ্টা করছি।ডান হাতে থাকা সিগারেটটা বার কয়েক ঠোট স্পর্শ করিয়ে ফেলে দিলাম।খিদেও নেই তেমন একটা!ভাবলাম চুপচাপ গাড়িতে বসেই গান শুনি।
!
-ঘোরা শেষ?
-হ্যাঁ।আপনি যাবেন কি?
-আমি আপনার মতো স্বার্থপর না!একা একা ঘুরতে যাই না।
-আপনি অনেক সুন্দর করে কথা বলেন।
-পাম দিয়েন না!আচ্ছা আপনার নাম কি?
-নীল।আপনার?
-লাল।
-ফাঁন করছেন?
-হুম।
-ভালো।
-একদমই না।আমি খুব খারাপ।
-ভালো।
-পাগল কোথাকার!আমি নীলিমা।
-খুব ভালো নাম।
-আমার আম্মু রেখেছিলেন।
-ঠিক বুঝলাম না!রেখেছিলেন?এখন কোথায় উনি?
-ঐ আকাশে।আমার জন্মের এক বছর তিনি মারা যান।
-ও স্যরি।কোথায় যাবেন আপনি?
-খুলনা।আমার মামা বাড়িতে।আপনি?
-আমিও।তবে বন্ধুর বাড়িতে।
-ভালোই হলো।আপনি ফেসবুক চালান?
-হ্যাঁ।আপনি?
-চালাই।আপনার আইডি নাম বলেন।
!
আমার জিমেইলটা বলে দিলাম।মেয়েটার আইডি নেইমটা বলল না।কারণ টা বুঝতে পারিনি তখন।এরপর যে কখন খুলনাতে চলে আসছি তা ঠিক আন্দাজ করতে পারিনি।ঘুমিয়ে ছিলাম।চোখ মেলে মেয়েটিকে আর দেখিনি।ভোর হতেই বন্ধুর বাড়িতে রওনা করলাম।একটা ভয় ছিলো!যদি রিহান আমাকে রিজেক্ট করে?
!
রিহান আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল;তোকে অনেক মিস করেছি দোস্ত।তুইতো জানিস আমি একটু বেশি অভিমানি।
!
তিন দিন রিহানের বাসায় থাকার পরে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম।গাড়িতে উঠে মেয়েটির কথা মনে পড়ল।কিন্তু কি আর করা?কোথায় থাকে,কি করে কিছুইতো জানিনা।ওর কথা বাদ দিয়ে ভাবলাম তিনদিন ফেবুতে যাওয়া হয়না!একটু ফেবুতে ঢুকি।
!
অনেকগুলি ম্যাসেজ আসছে।লেখা পড়তে পারছেনা বলে অনেকেই ম্যাসেজ দিয়েছে।সবার রিপ্লে দিয়ে একটা ম্যাসেজে চোখ আটকে গেলো।এটা আর কেউ না।আমাকে ফেবুতে যে মানুষটা আমাকে বেশি জালাতন করে সেই মানুষটার ম্যাসেজ।প্রথমত ম্যাসেজটা ওপেন করতে চাইছিলাম না।কি ভেবে যেন ওপেন করলাম!ওমা!এতো সেই মেয়েটা।যে আমার সাথে গাড়িতে এসেছিলো।নীলিমা।
!
অনেক কথা হতে থাকল ওর সাথে।প্রায় এক বছর কথা বলার পরে জানতে পারলাম মেয়েটা আমার লেখার অনেক বড় ভক্ত।এমনকি ও আমাকে অনেক পছন্দ করে।
!
আমি বুঝে উঠতে পারছিনা কি বলব ওকে!বন্ধু হয়ে থাকতে চাই সব সময় ওর পাশে।কারণ আমার একটাই ভয়।এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে রিহান আর ফেবুটাই আছে।জন্মের পরে মা বাবাকে দেখিনি কখনো।এতিমখানায় থাকতাম।ওটাই আমার পরিবার।এতকিছু জানার পরে কি নীলিমা আমাকে গ্রহন করবে?প্রশ্নই আসেনা।চালচুলহীন কোনো ছেলেকে কোনো মেয়েই জীবনসঙ্গী করতে নারাজ।
!
সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি বন্ধু হিসেবেই নীলিমার পাশে দাড়াবো।যদি কখনো ও আমার পুরো জীবনী জানার পরেও আমাকে বন্ধুর মর্যাদা দিতে রাজি থাকে।

শোভার কাছে শেষ চিঠি

প্রিয়তমা,
কেমন থাকছো আজকাল। অনেকদিন তোমার সাথে যোগাযোগ হয়না। মাঝে মাঝে তোমাকে দেখি দূর থেকে। তোমার সাথের ছেলেটিকেও দেখি।কথা বলতে খুব ইচ্ছে হয়।কিন্তু সাহস হয় না। আমি এখনো সাহসী হয়ে উঠতে পারি নি।
.
জানো, আমার খুব হিংসে হয় যখন দেখি আমার সামনেই তুমি সেই ছেলেটির হাত ধরে আছো।কিংবা রিক্সায় ঘুরছো। আমার সমস্ত আবেগ মুহুর্তেই যন্ত্রে পরিনত হয়।মনে হয় খুন করে ফেলি তোমার সাথের ছেলেটিকে।একদিন যে হাত আমার হাতে থাকতো,আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে কথা হতো চোখে চোখে।আজ সেই হাতে অন্য কেউ হাত রাখছে। সেই চোখে চোখ রাখছে অন্য কেউ। আমার খুব হিংসে হয়।খুব কষ্ট হয়।
.
আচ্ছা, তোমার মনে পড়ে? কত রাত আমরা নির্ঘুম কাটিয়েছি।ফোনালাপে ঝগড়া হয়েছে কত শত।হয়েছে দুষ্টুমি,হয়েছে ভালবাসা।একদিন তুমি জ্বরে পড়লে।বললে ,ভীষণ খারাপ লাগছে। আজ কথা বলবে না।ঘুমুবে।আমাকেও ঘুমাতে বললে। সরল বিশ্বাসে আমি ঘুমুতে গেলাম। পরদিন ভোরবেলা তোমাকে ফোন দিলাম।দেখি সুইচ অফ।এদিকে টেনশনে আমি মরে যাচ্ছিলাম।তারপর তোমার রুমমেট কে ফোন দিলাম।তোমার অসুখের কথা জিজ্ঞেস করলাম।কিন্তু তোমার রুমমেট যা বললো তাতে আমি নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।তোমার না কি জ্বর আসে নি।তুমি সারারাত আমার সঙ্গে কথা বলে ফোনের চার্জ শেষ করেছো।এখন ঘুমচ্ছো।
তোমার রুমমেটের কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ আমি স্তব্ধ হয়ে ছিলাম।মনে হলো পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে।কাল রাতে তো তোমার সাথে আমার কথা হয় নি।তাহলে সারারাত তুমি কার সাথে কথা বলেছিলে?
.
আমি আসলে বোকা ছিলাম।তোমাকে বিশ্বাস করাটাই আমার বোকামী ছিলো। কিন্তু ভালবাসলে তো ভালবাসার
মানুষটার উপর বিশ্বাস রাখতে হয়।তা না হলে সম্পর্ক টিকবে কি করে।এজন্য তোমাকে আমি বিশ্বাস করতাম।তোমার সব কথা অন্ধের মতো বিশ্বাস করতাম।কিন্তু সেই তুমিই আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে দিলে।ধূলোয়
মিশিয়ে দিলে আমার সমস্ত আবেগ।লাথি মেরে দূরে সরিয়ে দিলে আমার ভালবাসা।আচ্ছা, তোমাকে ভালবেসে কি ভুল করেছি?না কি আমার ভালবাসায় কোন কমতি ছিলো?খুব জানতে ইচ্ছে করে আমার অপরাধ কি ছিলো?যার জন্য তুমি আমাকে ছেড়ে গেলে।
.
চাকুরী না পাওয়াটাই কি আমার অপরাধ ছিলো। হয়ত তাই।কিন্তু কি করব বলো!আমি তো কম চেষ্টা করিনি।চাকুরীর পরীক্ষা দিচ্ছি। রিটেনে পাস করছি।কিন্তু ভাইবা'তে গিয়ে আউট হচ্ছি। টাকা নেই তো চাকুরী নেই। এস আই এর পরীক্ষাটা দিলাম। পাস করলাম।কিন্তু ঘুষ চাইলো বিশ লাখ টাকা।ব্যাংকে পরীক্ষা দিলাম।সেখানে ঘুষ চাইলো দশ লাখ।আমি এতো টাকা কই পাবো?
দীর্ঘ আঠারো বছর পড়াশুনা করে এখন চাকুরী নিতে গিয়ে এতো টাকা ঘুষ কিভাবে দেবো আমি? মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমি।আমার পড়াশুনার খরচ দিতেই বাবা হিমশিম খান।সেখানে চাকুরীর জন্য এতগুলো টাকা তিনি কোথায় পাবেন? তোমাকে বললাম,দুটো বছর সময় আমাকে দাও।এর মধ্যে আমি চাকুরী জুটিয়ে ফেলব।কিন্তু তুমি সেসময় টুকু আমাকে দিলে না।আমাকে ছেড়ে দিয়ে ব্যাংকার এক ছেলের প্রেমে পড়লে।তোমার বান্ধবীর কাছে শুনলাম গত বছর তোমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।যে তুমি আমাকে এত ভালবাসতে সেই তুমি কি করে পারলে অন্য একটি ছেলের প্রেমে পড়তে।কি করে পারলে তাকে বিয়ে করতে।
আচ্ছা তুমি কি আমাকে ভালবাসতে নাকি আমার সাথে তুমি শুধু টাইম পাস করে ছিলে?
এখন যার সাথে আছো তাকে কি আদৌ ভালবাসো? না কি সে প্রতিষ্টিত শুধু সেজন্যই তাকে বিয়ে করলে?
আচ্ছা অর্থ সম্পদের কাছে কি ভালবাসা নিতান্তই মূল্যহীন?
.
তুমি চলে যাওয়ার পর আমার মনে ভীষণ জিদ চেপে বসলো। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম চাকুরী আমাকে পেতেই হবে।এবং ঘুষ ছাড়াই চাকরী করব আমি।সেদিনই মেস থেকে বাড়ি চলে যাই। বাবা মা কে বুঝিয়ে বললাম।দীর্ঘ আঠারোটি বছর আমাকে পড়িয়েছেন।আর দুটো বছর আমাকে পড়ান।দু'বছর পরে আমি চাকুরী পাব ইনশা আল্লাহ।আমার বাবা অল্প শিক্ষিত মানুষ। তিনি পড়ালেখা সম্পর্কে এতকিছু জানেন না।তিনি বললেন,সংসার সামলাতেই তো হিমশিম খাচ্ছি। এখন আবার পড়বি।এতো টাকা আসবে কোথা থেকে।
বাবার কথা শুনে মন খারাপ করে আবার মেসে চলে আসলাম।পরদিন সকালে মা ফোন দিলেন।বললেন টাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।টাকার চিন্তা করতে নিষেধ করলেন।মন দিয়ে পড়তে বললেন।
আমি পড়লাম।শুধুমাত্র চাকুরীর জন্যই প্রচুর পড়াশুনা করলাম।দেড় বছরের মাথায় আমার চাকুরী হলো।আমি এখন সোনালী ব্যাংকে আছি।আজ আমার চাকুরী আছে।টাকা পয়সাও হয়েছে।শুধু তুমি পাশে নেই।
.
গত পরশু রাতে মা ফোন দিয়েছিলেন।বললেন বাবা আমার বিয়ে দিতে চাচ্ছেন।আমার মতামত জানতে চাইছেন।আমার পছন্দের কেউ আছে কি না জিজ্ঞেস করলেন। মাকে আমি বলতে পারিনি,মা তোমার ছেলে একটা ছলনাময়ী মেয়েকে ভালবাসতো ।যে কিনা শুধু বেকারত্বের কারণে তাকে ছেড়ে চলে গেছে।
.
সেদিন লালবাগে তোমাকে দেখলাম। তোমার বরের সঙ্গে রিক্সায় ঘুরছো।লাল শাড়িতে তোমাকে নতুন বউয়ের মতো লাগছিলো।ছোট ছোট কথাবার্তায় তুমি হেসে হেসে উঠছিলে।তোমার মুখে আগের মতোই সেই মায়াবী হাসি।আমার সাথে রিক্সায় বসে তুমি যেমন করে হাসতে ঠিক তেমন।ইচ্ছে হলো দৌড়ে গিয়ে তোমার সামনে দাঁড়াই।চিৎকার করে বলি,
শোভা,আজ আমার চাকুরী আছে। আমার অনেক টাকা আছে। আমি এখন প্রতিষ্ঠিত।আমি তোমাকে ফিরে পেতে চাই।তুমি কি আমার কাছে ফিরে আসবে?
কিন্তু আমার সব চিৎকার ,বুক চাপা কান্না সব বুকের ভেতরেই ডুকরে মরেছে।তোমার সামনে দাঁড়ানোর সাহস আমার হয় নি। আমি এখনো সাহসী হয়ে উঠিনি।
.
মাঝে মাঝে আমার কথা কি তোমার মনে পড়ে শোভা?তবে তোমার কথা আমার খুব মনে পড়ে।তোমার লেখা চিঠি গুলো আমি যত্ন করে রেখেছি আলমিরায়।হঠাৎ কোন মধ্যরাতে চিঠিগুলো বের করে পড়ি।যার চিঠি এত মায়া মমতা দিয়ে ভরা,সেই মানুষটা কি করে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে!সে কি করে আমাকে ছেড়ে থাকতে পারে!
প্রকৃতি হয়তো তোমাকে নিষ্ঠুর বানিয়েছে।অথবা আমি মিছেমিছি প্রকৃতিকে দোষ দিচ্ছি।তোমার কথা ভাবতে গেলে আমার কষ্ট হয়। কান্না আসে। আমি আর কাঁদতে চাই না শোভা।কাঁদতে কাঁদতে আমি খুব ক্লান্ত।
তুমি ভালো থেকো।
ইতি
অরুপ সেন।

অবুঝ মন

-হৃদয় তুমি আমার বিয়ে করবে না?
----কিসের বিয়ে?
----কিসের বিয়ে মানে?
----সেটা আমারও প্রশ্ন?
----এতো দিন তাহলে কি সব নাটক ছিলো?
----হয়তো না।
----তাহলে আজ এমন করছো কেনো?
----কেমন করছি?
----তুমি আমাকে ছেরে অন্য কাওকে বিয়ে করবা?
----বাবা মা পছন্দ করেছে আর,
----আর তোমারও ভালো লেগে গিয়েছে তাই তো।
----হয়তো বা।
----প্লিজ হৃদয় এমন করো না আমি মরে যাবো?
----দেখো তন্নী আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি কিন্তু ভাগ্য সেটা চাই না।
----ভাগ্য না,
বলো যে তুমি এখন চাও না?
----এই সব কি বলছো তুমি।
----আমি সত্যি বলছি।
----না,
----হ্যা এটাই সত্যি ।
----দেখো আমাকে ভুল বুঝো না আমার কিছু করার নেই।
----কিছু করার নেই মানে কি?
----সব কিছুতে মানে খোজো কেন।
----প্রয়োজন পড়ে তাই।
----যা হয়েছে, হয়েছে এখন আর এইনিয়ে কথা বাড়িও না।
----তুমি এতো নিষ্টুর,মায়াহীন কেনো?
----জানি না, ভালো থেকো আর আমাদের যোগাযোগ হবে না।
----প্লিজ এমন করো না হৃদয় প্লিজ?
----দেখো আমি আমার মা বাবার উপরে যেতে পারবো না।
----ওহ্,,,, আচ্ছা বাই ভালো থেকো সবসময়,
দোয়া করি নতুন জীবনে সুখি হও।
----ধন্যবাদ, তুমিও।
----দেখা যাবে।
কথা গুলো বলে দুইজন দুইদিকে চলো গেলো।
এক জন কান্না করছে, আরেক জন আনন্দে আত্মহারা হচ্ছে।
কিন্তু কি আর করা হৃদয় যে এমনি,
বড়ো লোক মা বাবার এক মাএ সন্তান সে।
লেখা পড়া করেছে কোনো রকম ssc টা পাস ।
তার পরে আর পড়া শোনা হলো না।
কিন্তু কলেজে ভর্তি হতে ভুলি নাই সে।
হৃদয় দেখতে সুন্দর, তার চোখে আর কথায় কেমন মায়া জড়িয়ে আছে।
সেই মায়ার বাঁধা পড়ে আনেক মেয়ে।
হৃদয় আনেক মেয়ের সাথে প্রেম করে,
ভালোবাসার অভিনয় করে।
কিন্তু কোনো মেয়ের সাথে ফিজিকাল রিলেশনশিপ করিনি।
যাই হোক,
হৃদয় এমনি করে সবার সাথে রিলেশনশিপ করে পরে আবার কিছু দিন পর কোনো না কোনো ছুতোতে তা ব্রেকআপ করে।
বেশী অর্থ সম্পদ আছে, মা বাবার এক মাএ ছেলে সে কোনো কিছুতে অপূর্নতা নেই তার।
সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াবে,
কোনো মেয়েকে পছন্দ হলে তার পিছু নেবে।
পোটলে পোটলো না পোটলো না পোটলো।
হৃদয় এর মা বাবা খুব ভালো,
তার সন্তান কে অনেক অনেক ভালোবাসে তাই কিছু বলতে পারে না।
কিন্তু হৃদয় এতোটা খারাপ না,
কোনো অসহায় মানুষ দেখলে সাহায্য করবে,
খেতে না পাওয়া মানুষ পেলে নিজের টাকা দিয়ে খাবার কিনে দেবে।
হৃদয় এর একটাই দোষ সব মেয়েকে ওর ভালোলাগে, আর তার সাথে প্রেম করতে চাই।
এমনি করে যায় দিন গুলো,
হৃদয়ের ঢাকাতে নিজিস্ব বাড়ি আছে ওরা ঢাকাতে থাকে।
একদিন হৃদয় রাস্তার ফুট পথ দিয়ে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে হাটছিলো।
হঠ্যাৎ কয়েক জন পেছেন থেকে তার মুখে একটা পলিথীন বেঁধে মার ধোর শুরু করে,
প্রায় ৫ জন মানুষ ছিলো ওখানে।
একা মানুষ তাও আবার রাত ঢাকাতে দিনের বেলাই মারামারি হলে কেও সামনে আসে না, আর এটা তো রাত
ভোলা ভালা ছেলের মতো মার খেলো, মাথায় আঘাত করাতে হৃদয় অঙ্গান হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু ওরা দুই একটা চড় থাপ্পড় মেরে চলে যেতে চেয়েছিলো কারন ওরা ছিলো তন্নীর বন্ধুর রা।
তন্নীর তাদের কে পাঠিয়েছিলো এটার জন্য।
অঙ্গান হয়ে গেছে বলে তাড়াতাড়ি ভয় পেয়ে চলে যায় ওরা।
রাস্তাধরে যেমন পাগল শুয়ে থাকে ঠিক তেমন করে পড়ে আছে।
রাস্তার মানুষ গুলো পাগল ভেবে কেও আর গুরুত্ব দেই না।
আকাশে কালো মেঘ জমেছে,।
একটু পর আস্তে আস্তে আকাশ থেকে বৃস্টি পড়তে থাকলো।
বৃষ্টির পনিতে হৃদয়ের ঙ্গান ফিরে আসে কিন্তু উঠতে পারছে না, মাথায় আঘাত পাওয়া তে।
ঐ পথ দিয়ে এক ছাতার নিচে দুই জন মানুষ যাচ্ছিলো।
একটা মেয়ে আর সেই মেয়ের বাবা।
হৃদয়ের পাশ এড়াতে হৃদয়, help me বলে উঠলো।
ওরা দুজ তেমন গুরুত্ব দিলো না।
কারন এমন ঢাকা শহরে এমন করে ছিন্তায় কারী, নেশাখোর মানুষ গুলো পাওয়া যায়।
কিন্তু হৃদয় আবার বলে উঠলো।
এবার ঐ মেয়ের বাবা বললো কেও বিপদে পড়েছে আমাদের দেখা দরকাম মা, চলো তো?
কিন্তু মেয়ে যেতে না চাইলেও ওর বাবার কারনে গেলো।
গিয়ে দেখে সত্যি ছেলেটার সাহায্য এর দরকার,
নাক দিয়ে রক্ত বার হচ্ছিলো হৃদয়ের।
মেয়েটার বাবা মেয়েকে ওর কাছে রেখে রিকশা ডেকে আনলো।
আর তাতে করে হৃদয়কে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেলো ওটা ওদের নিজেদের বাড়ি না,
মেয়েটা ঢাকাতে পড়া শোনা করে বলে এখানে একটা বাড়ি ভাড়া করে আছে,
মেয়েটা গ্রাম থেকে এসেছে লেখাপড়া করতে।
মেয়েটার নাম,, মিষ্টি,, দেখতেও খুব সুন্দর,
মিষ্টি একটা মেয়ে।
খুব নরম সরম, ভদ্র সভাবের আর গ্রামের মেয়েরা বেশীর ভাগ এমনি হয়।
মিষ্টি পড়া শোনাতে খুব ভালো বলে তার বাবা চাই ওকে ভালো করে পড়াশোনা করাতে।
মিষ্টির পরিবার আনেক গরীব, ভিটে বাড়ি বাদে মাঠে হয়তো কিছুটা পেট চলার মতো জমি আছে তাদের।
কিন্তু মিষ্টির পড়া শোনার কারনে, ওর অজানতেই জমিটা বিক্রি করে দিয়েছে মিষ্টির বাবা।
আর সেই টাকাটা দিতে আজ ঢাকাতে আসছিলো মেয়ের কাছে।
মিষ্টি যে বাড়িতে ভাড়া থাকে তারা খুব ভালো মনের মানুষ।
ওখানে আরো ৫ জন মেয়ে থাকে এক সাথে ওরা।
রিকশা করে হৃদয় কে নিয়ে আসলো।
বাড়ি ওয়ালাকে ডাক দিলো, ওদের একটা খালি ঘর ছিলো আর সেখানে হৃদয়কে রাখতে বললে।
খুব জোর বৃষ্টি হচ্ছিলো বলে ডাক্তারকে খবর দিতে পারলো না।
অন্ধকারে হৃদয়ের চেহারাটা ভালোকরে দেখতে পাইনি তখন মিষ্টি।
কারেন্ট এর আলোতে হৃদয়ের মুখ দেখে,,
ছেলেটা দেখতে মায়া কাড়া একদম।
মিষ্টির বাবা আর মিষ্টি ও তার বান্ধবী রা এসে ওদের সাহায্য করতে লাগলো।
মিষ্টির বাবা হৃদয়ের শরীরটা মুছে দিলো ভালোকরে
ময়লা, ধুলো লোগেছিলো গায়ে।
ঐ রাতে অনেক সেবা যন্ত করলো বাবা মেয়ে,
মিষ্টির বাবা হৃদয়ের সাথে ঐ ঘরে থেকে গেলো রাতে।
সকাল হতেই হৃদয় কিছুটা ভালো হয়ে গেলো।
মার খাওয়ার পরে তার আর কিছু মনে ছিলো না,
সকালে এক নরম বিছানাতে শুয়ে থাকতে দেখে অবাক হলো।
আমি এখানে কি করে এলাম?
কে আনলো আমায়?
মাথায় ব্যাঁথা লাগাতে মনে পড়ে গেলো সব কিছু।
মিষ্টির বাবা ছেলেটাকে দেখেই জিঙ্গাসা করলো
কেমন আছো?
বললো,
ভালো আছি।
তার পর জানতে চাইলো,
আমি এখানে কেনো?
সব কিছু বললো,
তার পরে ছেলেটা অনেক অনেক ধন্যবাদ জানালো।
এর মাঝে মিষ্টিও এসে হাজীর,
সকালের সোনালী মিস্টি রোদের সাথে করে,
নতুন এক সকালে,
অচেনা এক নতুন জীবনের দেখা পোলো হৃদয় মনে হলো।
মিষ্টির দিকে অপলক তাকিয়ে আছে হৃদয়।
মিষ্টির কথাতে হৃদয়ের ঘোর কাটলো।
বাবা মেয়ের সাথে একটু কথা বলেই হৃদয় বাড়ি যাবে বলে মনস্থীর করলো,
তারা মানা করলো না আর।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিয়ে হৃদয় বিদায় নিলো।
আসার আগে মিষ্টি কোন কেলেজে পড়ে সেটা জেনেছিলো। কিন্তু মিষ্টির নামটা জানলো না হৃদয়।
এর পর ৪ দিন কেটে গেলো।
মিষ্টির বাবাও গ্রামে চলে গিয়েছে এর মধ্য,
হৃদয় ও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গিয়েছে।
আর শুরু হলো তার আাগের কাজ গুলো,কিন্তু এখন কাজ হলো ঐ মিষ্টি মেয়েটাকে খুজে বার করা আর কথা বলার জন্য।
একদিন সকালে মিষ্টির কলেজে এসে দাড়িয়েআছে।
টানা এক ঘন্টা পর সেই মিষ্টি মেয়ের দেখা পেলো,
হৃদয় মিষ্টির নাম জানতো না, কিন্তু মিষ্টি মেয়ে বলে মনে করে।
মিষ্টি কলেজে ঢুকতেই, হৃদয় ডাক দিলো,,
----এইযে মিষ্টি মেয়ে শুনছেন?
----আরে আপনি?
----হুমম আমি। কেমন আছেন?
----এইতো ভালো আছি,
আপনার অবস্তা কেমন?
----ভালো খুব,, অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
----কেনেন?
----ঐ রাতে আমাকে হেল্প করার জন্য।
----মানুষ মানুষ এর জন্য।
----জ্বি ঠিক বলেছে,
আচ্ছা আপনার যদি আপত্তি না থাকে চলেন তাহলে একটা কফি সপে বসে কথা বলি?
----আপত্তি থাকবে কেনেন, কিন্তু ক্লাস আছে যে ?
----ওহ্ আচ্ছা তাহলে বিকালে?
----আচ্ছা ঠিক আছে কলেজ ছুটির পরে
----ওকে, অপেক্ষায় রইলাম।
----ওকে বাই, টেক কেয়ার?
----অবশ্যয়।
মিষ্টি ক্লাসে চলে গেলো আর হৃদয় তার অপেক্ষাতে রইলো।
মিষ্টির মনে হৃদয়ের জন্য একটু কেমন অজানা এক অনুভুতি সৃস্টি হতে থাকলো।
তাই আর ও কফি খাওয়া প্রোজার এ না করলো না।
কলেজ শেষে, তারা একটা কফি সপে গেলো।
ওখানে কফি খেতে খেতে আনেক কথা হলো।
হৃদয় মিষ্টির মন পাওয়ার জন্য সে মিষ্টির সাথে মিথ্যা বললো যে
সে গরীব ঘরের ছেলে।
এইভাবে কিছু মিথ্যা বললো মিষ্টির সাথে।
মিষ্টিও সব কিছু সত্যি বললো তার সম্পর্কে।
এভাবে তারা একটা বন্দুত্ব এর বন্ধনে আটকা পড়ে,
তার পর আস্তে আস্তে,ভালোলাগা ও ভালোবাসা হলো দুই জনের মাঝে।
সত্যি কারের ভালোবাসা জন্মনিলো মিস্টির মাঝে হৃদয়ের জন্য।
কিন্তু হৃদয়ের মাঝে এ সব কিছু ছিলো না, তার ছিলো আগের সেই সব রিলেশন এর মতো।
মিষ্টির প্রথম প্রেম আর ভালোবাস হলো হৃদয়,
আর এটাই তার শেষ ভালোবাসা বলে মনে করে।
তাই হৃদয়ের সব কথাই মিষ্টি মন প্রান দিয়ে বিশ্বাস করতো।
দিন যায় আর হৃদয় মিষ্টির,,, মিস্টি ভালোবাসাও বাড়তে থাকলো।
মিষ্টির কিছু রাগ অভিমান, আর প্রান ঢালা ভাললবাসা দিয়ে চলে যাচ্ছে দিন গুলো।
মিস্টির কাছে টাকা আছে অনেক জানতে পারলো হৃদয়।
মিষ্টি তাকে বলেছিলো, কিন্তু এটা যে তার ।
হৃদয় পরিক্ষা করতে চাইছিলো মিষ্টি তাকে কতোটা ভালোবাসে।
সে এটার জন্য হৃদয় একটা অভিনয় করতে লাগলো।
মিস্টি কে কল দিয়ে বললো,,
----মিষ্টি কোথায় তুমি?
----এইতো কলেজে যাচ্ছি।
----ওহহ্,,ভালো ভাবে যেও?
----কি হয়েছে তোমার এমন করে কথা বলছো কেনো?
----কিছু হয়নি।চিন্তা করো না তুমি কলেজে যাও?
----যাবো না কি হয়েছে বলো?
----আমি এখন hospital এ.
----কেনো কি হয়েছে?
ঠিক আছো তো তুমি?তোমার কিছু হয় নি তো?
----আরে পাগলী কিছু হয় নি আমার।
----কোন hospital এ আছো তুমি বলো?
----না না তোমার আসতে হবেন তুমি কলোজ যাও?
----যাবো না বলো কোথায় আছো.
তাপ পর বললো হৃদয় কোথায় আছে,
সাথে সাথে চলে গেলো মিষ্টি ওখানে।
গিয়ে দেখে হৃদয় বসে আছে,
দেখেই মিষ্টি কান্না করতে লাগলো।
হৃদয় গিয়ে থামানোর চেস্টা করতে লাগলো,
কান্নার কারনন মিষ্টি ভয় পেয়েগিয়েছে হৃদয়ের কিছু হয়নি তো।
যে হৃদয়ের কিছু হয়নি, এটা শুনে মিষ্টি যেনো প্রান ফিরে পেলো।
কিন্তু জানতে পারলো তার বাবা খুব অসুস্থ,
হার্ট অপারেশন করতে হবে তার জন্য অনেক টাকা লাগবে বললো ডাক্তার।
কিন্তু হৃদয় এর পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা অসম্ভব বলে মনে করলো মিষ্টি
মিষ্টি হৃদয়ের পাসে গিয়ে বসলো,,
----এতো চিন্তা কেনো করছো?( মিষ্টি)
----আমার বাবা?
----কিচ্ছু হবে না তোমার বাবার।
----তুমি বুঝতে পারছো না এতো টাকা কোথায় পাবো এখন আমি?
----এতো ভেঙ্গে পড়ছো কেনো?
----আমার মাথায় কাজ করছে না মিষ্টি কি করবো এখন আমি।
----চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে,
----কি করে হবে?
----আচ্ছা তুমি এখন বাড়ি যাও কাল দেখা করি আমারা?
----আচ্ছা,, বাই।
----বাই।
বলে একটু অভিনয়ের কান্না করতে করতে চলে যায় হৃদয়।
এদিকে মিষ্টি ভেবে পাচ্ছে না কি করে তার বাবা কে বাচাবে।
দুই দিন এর মধ্য অপারেশন করতে হবে না হলে বাচানো যাবে না ওর বাবা কে।
যাকে এতো টা ভালোবাসে তার বিপদে পাসে না দাড়াতে পারলে সারাজীবন কি করে দাড়াবে একে উপর এর প্রতি।
কিভাবে সুখ দুঃখ ভাগ করে নেবে?
অনেক ভেবে চিন্তে আর কিছু পেলো না,
তার পড়াশোনার জন্য যে টাকা টা মিষ্টির বাবা দিয়েছিলো।
সেটা হৃদয়ের বাবার জন্য ডাক্তার এর কাছে দিয়ে আসলো।
মিষ্টি এতোটাই ভালোবাসে যে তার ভবিষ্যাৎ এর দিকে না তাঁকিয়ে , হৃদয়ের দিকে লক্ষ করে সব কিছু বিসর্জন দিলো।
মিষ্টি কোনো কিছু না ভেবে কাজটা করে।
এবার তার এখানে থাকার মতো আর টাকা নেই।
ঢাকা শহরে টাকা ছাড়া এম মুহূর্ত ও চলা যায় না।
এক দিন পর একটা মেয়ের সাথে মিষ্টির দেখা মিল্লো।
আর সেই মেয়েটা হলো তন্নী,
তন্নী মিষ্টিকে দেখে বললো,
ঐ ছেলেটা কি হয়?
জবাবে বললো সব কিছু তাদের সম্পর্কের কথা মিষ্টি।
তার পর হৃদয়ের সম্পর্কে অজানা গুলো জানিয়ে দিলো মিষ্টিকে।
মিস্টি কিছু বিশ্বাস করতে চাইনি।
তার পর প্রমান দিলো সে তার সাথে তোলা ছবি গুলো।
মিষ্টি কান্না চেপে ধরে আছে।
তার বুকটা যেনো ফেটে যাচ্ছে,
যাকে এতোটা ভালোবাসে সে কিনা তার সাথে মিথ্যা অভিনয় করেছে।
চাপা কস্ট হচ্ছে আজ মিষ্টির।
মিষ্টি এতো বড় ধাক্কা খাওয়াতে সে আর এখানে থাকবে না,
হৃদয়ের জীবন থেকে চলে যাবে বলে স্থির করলো।
যা টাকা ছিলো,
তাই দিয়ে মিস্টি হৃদয় কে না জানিয়ে তার গ্রামে চলে গেলো।
এদিকে হৃদয় তার বিশ্বাস ছিলো সে তার বাবার জন্য টাকা দেবে।
হৃদয়ের মনে খটকা লাগলো সে এতো টাকা দিলো কিন্তু এখন ও চলবে কি করে,
ডাক্তার কে অভিনয় করতে বলেছিলো হৃদয়,
ডাক্তার টা ছিলো ওর এক আঙ্কেল।
এভাবে দুই দিন কেটে গেলো কিন্তু মিষ্টির কোনো দেখা মিললো না।
তার খোজ করাতে জানতে পারলো,
তার এক বান্ধবির কাছ থেকে যে,
তার লেখা পড়া করার জন্য ওর বাবা জমী বিক্রি করে যে টাকা পাঠিয়েছিলো, সে কাকে ভালোবাসতো তার বাবা অসুস্থ ছিলো তাই তার বাবকে বাচানোর জন্য সব টাকা দিয়ে দিয়েছে
আর সে গ্রামে চলে গিয়েছে।
হৃদয় যেনো আকাশ থেকে পড়লো,
যে মিস্টি আমার জন্য তার স্বপ্ন কে কবর দিলো,
আর আমি, ছি, নিজেকে অপোরাধি মনে করছে এই প্রথম বার।
যে মেয়েটা ওকে এতোটা ভালোবাসে।
হৃদয় মিষ্টির গ্রামের ঠিকানা নিয়ে আর তারর আঙ্কেল এর কাছ থেকে টাকা নিয়ে, ঐ দিনি মিষ্টির গ্রামে চলে যায়।
বাড়ি থেকে কিছু টাকা নিয়ে চলে গেলো।
৫ ঘন্টা বাসে জারনি করে তার পর পেলো মিষ্টির গ্রাম টা।
কিন্তু সমস্যা হলো হৃদয় তো আর তার বাসা চেনে না।
কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।
তার বাবার মা এর নামও জানে না।
শুধু যানে মিষ্টি নাম খানা, কিন্তু এতে কি তার বাসা চেনা যাবে।
 অনেক কষ্টে মিষ্টির বাড়ির ঠিকানা টা পেলো।
কিন্তু কোন মুখ নিয়ে তার সামনে যাবো ভেবে পাচ্ছে না হৃদয়।
মিষ্টি কেনে হঠ্যাৎ চলে আসলো সব কিছু ছেড়ে বুঝতো পারলো না।
ভয়ে ভয়ে মিষ্টির দিকে পা বাড়ালো, ঠিকানা সূত্র ধরে ঠিক বাড়িতে গিয়ে পৌছালো।
একটা বেড়ার ঘর, উপরে লালচে টিন দেওয়া আছে।
যেটা এক কামরা ঘর ঠিক মতো হয় না সেটা দুই কামরা বানানো।
একটা তে মিস্টি আরেক টাতে ওর বাবা মা।
মিষ্টির বাড়িতে যেতেই মিষ্টির মায়ের সাথে দেখা।,
----কে বাবা তুমি?(মিষ্টির মা)
----খালাম্মা, আমি মিষ্টির বন্ধু ঢাকা থেকে এসেছি।
----তুমি ঢাকা থেকে এখানে এসেছো?
----জ্বি খালাম্মা।
----এখানে কারো আত্মীয় বাড়ি আছে বুঝি?
----না খালাম্মা, কেও নাই!
----তাহলে,
----আমি মিষ্টির সাথে দেখা করতে এসেছে শুধু, ওকে একটু ডেকে দেওয়া যাবে?
----ও আচ্ছা, তুমি ঘরে এসো এসে বসো, আমি মিষ্টিকে ডেকে দিচ্ছি?
----ঠিক আছে খালাম্মা।
কিছুক্ষান পরে কেও যেনো হাপাতে হাপাতে আমার সামনে এসে দাড়ালো বুঝতে পারলো।
হৃদয় ঘরটা দেখছিলো,
যে মিষ্টির আমি কতো বড় ক্ষতি করেছি বুঝতে পারলাম।
হৃদয় মিষ্টির চোখ দিকে তাঁকাতে পারছে না।
কোন মুখ নিয়ে তাকাবে সে?
কিসের উপর ভিত্তিতে তাঁকাবে?
সে যে পাপ করে ফেলেছে বড়।
তার পর মিষ্টি বললো..
----হৃদয় তুমি এখানে কি করছো? (মিষ্টি)
----কি করছি সেটা জানতে চাও,
কেমন আছি জানতে চাইলে না যে?
----জানি ভালোই আছো, তাই বললাম না।
----ভুল, ভালো নাওতো থাকতে পারি।
----বাদ দেও, এখানে কোনো এসেছো?
----তোমার সাথে দেখা করতে?
----আমার সাথে দেখা করার কি আছে?
----অনেক কিছু।
----বলো কি বলতে চাও?
----মিষ্টি আমি ছরি, আমি জানি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি, যার কোনো ক্ষমা হয় না।
----কি করেছো তুমি আমার কাছে যে এবাবে সংকোচ করছো?
----প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও?
----তুমি ক্ষমা কেনো চাতে ছো?
----তোমার বিশ্বাস নিয়ে খেলা করার জন্য?
তোমার ভালোবাসা নিয়ে অভিনয় করার জন্য?
----আর কিছু?
----এই নেও তোমার সেই টাকা একটাও খরচ হয় নি?
----এ টাকা আমার আর প্রয়োজন নেই।
----এমন করে বলো না, তুমি আবার ঢাকাতে চলো তোমার পড়া শোনার সব খরচ আমার?
----তার জন্য ধন্যযোগ্য।
----এভাবে কেনো বলছো?
----আমি আর পড়বো না।
----কেনো?
----আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
----কি বলছো এসব, ৩দিন এর মধ্য বিয়ে ঠিক হলো কি করে?
----বাবা আগে থেকে দেখে রেখেছিলো।
----তাহলে আমার ভালোবাসার কি হবে?
----ভালোবাসা?
----হুমম,, তোমাকে যে আমি খুব ভালোবাসি?
----এটা তোমার ভালোবাসা না ভালোলাগা।
----মিষ্টি আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি, প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও?
----আমরা গরিব হতে পারে কিন্তু কওকে ঠকাতে পারি না?
কারো বিশ্বাস নিয়ে খেলা করতে পারি না ।
কারো ভালোবাসা নিয়ে অভিনয় করতে পারি না।
যদি কাওকে ভালোবাসি তো মন প্রান। উজাড় করে সারাজীবন এর জন্য তাকে ভালোবেসে যায়।
----মিষ্টি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি বিশ্বাস করো?
----এখানে এই সব আর বলো না, মা আছে শুনলে সমস্যা হবে।
----আমি তোমার মা বাবার সাথে কথা বলি তোমার জন্য?
----কখনো না, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছি
৩ দিন পরে আমার বিয়ে হৃদয়।
----মিষ্টি প্লিজ এমন করো না, ( মিষ্টির হাত ধরে)
----কি করছো হাত ছাড়ো মা দেখে ফেলবে, ছাড়ো হাত প্লিজ হৃদয়?
----তার আগে বলো তুমি আমার ছেড়ে যাবে না?
----এটা সম্ভব না, তুমি ফিরে যাও হৃদয়?
----ফিরে গেলে তোমাকে নিয়েই যাবো আমি।
----আমি যাবো না তোমার সাথে।
----আমাকে একটি বার সুজক দেও
আমার নামে কোনো অভিযোগ থাকবে না?
----ঐসব বাদ দেও তুমি ফিরে যাও প্লিজ হৃদয়?
----গেলে তোমাকে নিয়ে যাবো।
----পাগলামো করো না, আমার পরিবার এর জন্য আমি জীবনটাও দিতে পারি,তাদের খুসির জন্য।
----আমি তোমার জন্য নিজেকে মৃত্যুর। দিকে উৎস্বগ্র করতে পিছু হাটবো না।
----তুমি ফিরে যাও, না হলে আমাদের নামে কথা উঠবে।গরীব মানুষ এর কিছু হলে সেটা দশ গুন বারিয়ে দেই তুমি আর থেকো না যাও প্লিজ?
----মিষ্টি?
----মনে করো মিষ্টি মরে গেছে তোমার?
----আমি চলে যাচ্ছে তবুও দোহায় তোমার এমন কথা বলো না?
---- তাহলে যাও ফিরে যাও তুমি?
----আচ্ছা। ভালো থেকো?
----হুম, তুমিও।
বলে হৃদয় বাইরে আসতেই হৃদয়ের বাবা আর মা এর সাথে দেখা।
মিষ্টির মা সব কিছু শুনেছে তাদের কথা।
হৃদয় তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে সেই টাকা গুলো তাদের হাতে তুলে দিলো।
এটা মিষ্টির পোড়ার টাকা,
বাবার জমী বিক্রি করে মেয়ের জন্য পড়ানোর টাকা।
মিষ্টির বাবার কাছে মিষ্টিকে ভিক্ষা চাইলো অনেক বোঝালো, তও কোনো কাজ হলো না।
অবশেষে হৃদয় ফিরে যেতে লাগলো,
কি করে মনকে আজ বুঝাবে,
মিষ্টিকে ছাড়া কি ভাবে জীবন সাঁজাবে।
মিষ্টি যে হৃদয়ের প্রান পাখি,
মন ছিলো যে অবুঝ পাখি।
কতো টা ভালোবাসি বুঝলো যখন মন?
নিয়তি মানলো না যে তখন।
ভালোবাসি গো কতো তোমায় মিষ্টি,
এই হৃদয় হয়েছে যে তোমার জন্যই সৃষ্টি।
মন ছিলো আমার উরাল পাখি,
কি করে বলো তারে বেঁধে রাখি।
তোমায় ছাড়া শূন্য এ হৃদয় ভুবন,
ভালোবাসে তোমকে এই অবুঝ মন।
হৃদয় মিষ্টিকে সত্যি অনেক ভালোবেসে ফেলেছিলো।
তার ভিতরে সত্যি ভালোবাসার সৃস্টি হয়েছে আজ।
হৃদয় ঐ গ্রাম থেকে গেলো না।
এক লোকের বাড়িতে ঠায় নিলো কয়েকদিন এর জন্য।
দুই দিন কেঁটে গেলো, আজ মিষ্টির বিয়ে হবে।
হৃদয়ের বুকের পাজড় যেনো দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।
কিছুই করার নেই যে তার।
সব আয়োজন শেষ হলো সকাল গড়িয়ে দুপুর।
বর আসার পালা এখন।
কিন্তু আসলো না বর, আসলো বর এ যে গাড়িতে করে আসছিলো সেটা এক্সিডেন্ট করেছে।
সাথে সাথে তারা সবাই হসপিটালে গেলো।
মিষ্টিও গেলো, যার সাথে মিষ্টির বিয়ে হবে কিন্তু মিষ্টি এখনো তাকে দেখিনি।
তাদের পিছু পিছু হৃদয়ও গেলো।
যার সাথে বিয়ে হবে তাকে দেখে মিষ্টির পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো।
কারন, ৪৫ বছর এর একটা লোকের সাথে তার বিয়ে ঠিক করেছে তার বাবা।
মিষ্টি কেঁদে ফেললো যে তার বাবা তার জন্য এমন করলো কেনো।
জানতে পারলো ওর মায়ের কাছ থেকে,
যে জমী জমা আর টাকার জন্য এটা করেছে।
মিষ্টি মনকে বুঝ দেবে কি করে,
যে তার বাবা টাকার জন্য নিজের মেয়েকো এমন এক লোকের হাতে তুলে দেচ্ছে?
এটা কি মেয়ের প্রতি ভালোবাসা?
যে মিস্টি আমি মা বাবার মুখে হাসির জন্য এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলো বিয়েতে।
কারন সে জানতো তার মা বাবা তার মনের মতো কারো সাথে বিয়ের ব্যবস্তা করেছে।
কিন্তু না সে তাকে সম্পদ এর লোভে পড়ে তার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে।
মিষ্টি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে গেলো।
যার সাথে বিয়ে হবে সে হয়তো দুইদিনপর ঠিক হয়ে যাবে তাই
মিস্টির বাবা দুই দিন পর বিয়ের ব্যবস্তা ঠিক করবে জানালো

সবাই বাড়িতে আসতেই মিষ্টি তার বাবা কে বললো,
----আব্বু তুমি এটা কি করলে?
----কেনে মা?
----তুমি ঐ বুড়ো লোক টার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করলে কেনো?
----তুই অনেক সুখে থাকবি, রাজ রানী করে রাখবে তোকে।
----চাইনা রাজ রানী হতে আমি।
----কি বলছিস এসব?
---- তুমি আমার ঐ লোকটার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছো।
----ছি,,,,, মা কি বলিস এইসব, বাবা হয়ে তোকে বিক্রি করবো?
----এটা বিক্রি ছাড়া কি হতে পারে,
অর্থের লোভে তুমি আমার তার সাথে বিয়ে দিচ্ছো। তার কাছ থেকে টাকা জমী জমা পাচ্ছো,
আমার বিয়ে দেওয়ার জন্য এটা বিক্রি বলে না?
----দেখ মা আমি তোর সুখের জন্য করেছি যা করেছি।
----তোমারা আমার যদি সুখটাই চেতে তাহলে এমন কাজ কখনো করতে পারতে না?
----আমি তোর বাবা যেটা করেছি ঠিক করেছি কথা বাড়াস না এই নিয়ে, দুই দিন পর বিয়ে।
----বাবা তোমারা যে আমার বাবা মা বলতে লজ্জা করছে, যারা জেনে বুঝে মেয়েকে এমন কারো হাতে তুলে দিতে পারে তাদের কাছে আমি পর্ণদ্রব্য এর মতো।
আমার জীবন আমি নিজেই বেছে নেবো বাবা তোমাদের আর কষ্ট করতে হবে না।
----কি বলছিস এই সব আমারা তোর মা বাবা আমারে এভাবে বলতে পরলি মেয়ে হয়ে?
----তোমারা বাবা মা, হয়ে মেয়ে কে একম এক জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিতে পারলে,
আমি মেয়ে হয়ে কেনো পারবো না সেই জায়গা থেকে সরে যেতে।
হৃদয় আড়াল থেকে সব কথা শুনছিলো তাদের ।
হৃদয় হঠ্যাৎ ওদের সামনে আসলো।
মিষ্টির বাবার দেখে বললো,
---তুমিমি এখনে কি করছো আজ তেমার জন্য আমার এতো বড় ক্ষতি হলো সব তোমার জন্য। (মিষ্টির বাবা)
মিষ্টি বললো,, সে ক্ষতি করেনি বাবা,
অবুঝ মনটা কে বুঝ দিয়েছে সত্য এর পথে এসেছে আমার জন্য।
মিষ্টি ওর বাবা মা এর সামনে হৃদয় কে বললো,,
----ভালোবাসো আমাকে?
----বুজাতে পারবো না।
----ভুলে যাবে না তো কখনো?
----মরে গেলোও না।
----কষ্ট দেবে আমাকে?
----ব্যথা দিবো নিজেকে।
----সারাজীবন এই হাত টা ছাড়বে না তো?
----ছাড়ার জন্য তো আর ধরিনি।
----বউ করবে আমায়?
----না,
হৃদয়ের জানপাখি করবো।
----তাহলে আমাকে নিয়ে চলো?
----আমার হাত ধরো?
তারপর মিষ্টি হৃদয়ের হাতটা ধরে তার মা বাবা ও গ্রামের মানুষ গুলোর সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে।
এতে গ্রামের মানুষ গুলো খারাপ না বরং মিষ্টিকে অনেক দোয়া করছে যেনো সে সুখি হয়।
কারন তারা জানতো তার বাবা অর্থের লোভে মেয়েকে ঐ লোক টার সাথে বিয়ে দেচ্ছে।
কিন্তু মিষ্টি তার জীবন টা নিজের মতো করে সাজানোর জন্য,
হৃদয়ের হাত ধরে চলে যাচ্ছে।
যে মা বাবা তার মেয়ের সাথে এমন করতে পারে,
তাহলে সব কিছু বুঝেও কি করে সেই দিকে নিজেকে সপে দেবে।
তাইতো আজ হৃদয়ের হাত চলে গেলো সারাজীবনএর জন্য।
হৃদয় মিষ্টিকে নিয়ে তার বাড়িতে গেলো।
হৃদয় এর মা বাবা সব শুনে মিষ্টিকে বউমা বলে মানতে পারলো না,
নিজের একটা মেয়ের সমান মনে করে মেনেনিলো।
অথপর হৃদয় আর মিষ্টির বিয়ে হলো।
আজ মিষ্টি খুব খুসি,
সে তার প্রথম ভালোবাসর মানুষটাকে পেয়েছে।
যাকে সে জীবন দিয়ে ভালোবাসতো।
হৃদয় আর মিষ্টির জীবনটা সুখ,শান্তিও ভালোবাসয় ভরে উঠুক।
সুখে থাকুক সারাজীবন,,,
হৃদয় আর মিষ্টি।

প্রিয়ার গল্প

আমি আমার জীবনের কিছু কথা আমি সকলের সাথে শেয়ার করতে চাই। তার আগে আমি আমার পরিচয়টা দেই । আমি প্রিয়তি আক্তার প্রিয়া। আমার বাসা গাজীপুরে।আমি মা-বাবার একমাত্র মেয়ে ।আমার কোনো ভাই নেই । ছোটবেলায় আমার অনেক ইচ্ছা ছিল আমি পড়াশুনা করে বড় হব।মা-বাবার মুখ উজ্জল করবো। একটা ছেলে যা করে আমিও তাই করে আমার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবো । সেই উপলক্ষ্যে আমি আমার জীবনকে সাজাচ্ছিলাম । সব কিছুই ঠিকই ওই চলছিল । এস.এস সিতে ভালো রেজাল্ট করে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হলাম।
আমি কখনো রিলেশনে জড়ায় নি ।অনেকের কাছে শুনেছি রিলেশন করে কেউ কখনো সুখি হতে পারেনি । আর তাই আমিও চেয়েছিলাম আমার বাবা-মার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করবো। তাদের মতের বিরুদ্ধে যাবো না । তাদেরকে কষ্ট দিবো না ।
ইন্টারমিডিয়েটে ক্লাস শুরু হল। আমিও মনযোগ দিয়ে ক্লাস শুরু করলাম। একদিন ক্লাস শেষে বাড়ী ফিরলাম। মা আমার কাছে আসলো সন্ধ্যায়। পাশে বসে বলল ।
মাঃ কালকে কলেজ যাস না ।
.
আমিঃ বললাম কেন ?
.
মাঃ কালকে তোকে দেখতে ছেলে পক্ষ থেকে লোক আসবে ।
.
আমিঃ কি বল এসব? আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না ।আমি এখন পড়াশুনা করতে চাই। জীবনে বড় কিছু হতে চাই ।
.
মাঃ দেখতে আসলেই কি বিয়ে হয়ে যায় নাকি ? দেখতে আসলে সমস্যা কোথায় ?
.
আমিঃ এখন এসবের দিকে আমি নজর দিতে চাই না ।
.
মাঃ বেশী কথা বলো না ।যা বললাম তাই ।
.
তারপরে মা চলে গেল । আমি রুমে থ মেরে বসেছিলাম । তাহলে কি আমার বড় হওয়ার দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে ।
তারপরে সেদিন ছেলে পক্ষ থেকে লোকজন আসলো ।আমি সাজলাম না যাতে পছন্দ না করে । সাধারন বেশেই ওদের সামনে গেলাম । ওরা আমাকে দেখলো বিভিন্ন প্রশ্ন করলো আমি চুপ চাপ সেইগুলোর উত্তর দিচ্ছিলাম । আমি ওদের দিকে তেমন খেয়াল করি নাই ।কারণ বিয়ে করার ইচ্ছা আমার তখন এক বিন্দুও ছিল না ।কিছুক্ষণ পরে আমাকে রুমে যেতে বলা হল । তার কিছু পরে বাবা মা কে ডাকলো ।দুজন আলাদা রুম কি যেন কথা বলছে।আমি তাদের কথা বলা দেখতে পাচ্ছি কিন্তু কি বলছে তাই বুঝতে পারছি না ।
.
কথা বলা শেষে মা বাবা দুজনেই আমার কাছে আসলো আর আমার সামনেই বসলো ।প্রথমে বাবা গলাটা কেশে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো ।তারপর বলা শুরু করলো
.
বাবাঃ ছেলে কেমন দেখলে?
.
আমিঃচুপ
.
মাঃ কিরে বাবা কি বলছে বল ?
.
আমিঃ আমি দেখি নাই ।
.
বাবাঃ কেন?
.
আমিঃ এখন বিয়ে করতে চাই না ।
.
বাবাঃ শুনো ছেলে অনেক ভালো । ব্যবসা আছে। টাকা পয়সা............
.
আমিঃ আমি এখন বিয়ে করবো না ।
.
বাবাঃ বেশি কথা বলো না ।এমন ছেলে বার বার আসে না ।ওরা তোমাকে পছন্দ করছে ।আজকেই বিয়ে করতে চায়।তোমার মত জানতে চাইছে ।আমি বলে আসছি আমি যা বলবো আমার মেয়ে তাই করবে ।তারপরেও আমি তোমাকে বলতে আসছি ।তাই বলে এই ভেবো না তুমি যা বলবে আমি তাই করবো । তাড়াতাড়ি রেডি হও । আজকেই বিয়ে দিয়ে দিব।
.
।আমি অনেক করে বুঝালাম।আকুতি মিনতি কিছুই বাদ দেই নি ,এমনকি আমি বাবার হাত পাত ও ধরেছি ।কোন কাজ হলো না ।
.
অগত্যা আমাকে বিয়ের পিড়িতে বসতে হল । বরের সাথে দুজন এসেছে ।আর আমার পরিবারের কয়েকজনকে ডাকা হল ।আমার বিয়ে নিয়ে অনেক আশা ছিল। অনেকে আসবে ,বাড়ী ভর্তি মানুষ লোকজন থাকবে ।তার কিছুই হলো। সবকিছু বাদে সেদিন আমার বিয়ে হল।
.
পরের দিন বাবা আমাকে বরের সাথে নিয়ে গিয়ে বরের বাড়িতে রেখে আসলো।বাবা আসার সময় অনেক কান্না করলাম ।তারপরেও বাবা চলে আসল।নতুন পরিবেশ নতুন মুখ কেমন জানি লাগছিল। আশে পাশের সবাই দেখতে আসলো আমাকে ।এভাবেই ১ সপ্তাহ চলে গেল ।মাঝে একবার মা আসছিল । দেখে চলে গেছে । শাশুড়িকে মা আমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিল ।কিন্তু যেতে দেই ।শাশুড়ীকে বলছে কারন আমার শশুড় জীবিত নেই ।
.
সবাই আমাকে খুব ভালবাসে ।নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হত । কিন্তু সেই ভালবাসা বেশিদিন থাকে নি হঠাত করে সব পরিবর্তন হওয়া শুরু হল ।
.
আমার স্বামী,আমার শাশুড়ি সবাই পরিবর্তন হয়ে গেল ।আমি যে কাজ করি না কেন সব কাজের ভুল ধরে । এইটা কেন হল,এইটা কেন হল না ।সারাদিন মানুষিক অত্যাচার। খুব কষ্ট হত আমার ।কান্না করতাম ।এসে বলত আমি নাকি ভালোই অভিনয় করতে পারি । মরার উপর খাড়ার ঘা আর কি । শাশুড়ী আমাকে অনেক নোংরা নোংরা কথা বলত। যা একটা মেয়ে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না ।সেও ত একটা মেয়ে । আমার শাশুড়ি আমার স্বামীকে আমাকে মারতে বলত ।সেই কথাই সে শুনত।মা যা বলে তাই করে। আমি বলতাম তুমি বাসায় থাকো না ।তুমি আমার থেকে আগে তো শুনবে কি হয়েছে ।তুমি শুধু শুধু আমাকে মারো কেন ?
.
তখন ও বলত আমার মা যা বলবে আমি তাই করবো । বউকে আমি পানিতে ফেলে দিতে পারবো কিন্তু মা কে না । আমি বলতাম আমি তোমাকে মাকে ফেলে দিতে বলছি না শুধু জানতে বলছি । তখন বলত মুখে মুখে কথা বলিস বলে আবার আমাকে মারত। আমি যেন ব্যায়াম করার বস্তা ,আমাকে মেরে আমার স্বামী ব্যায়াম করে ।
।পড়াশুনা করার ইচ্ছা আমার তখনো দমে যায় নাই। আমি ইন্টারে কমার্সে পড়তাম ।আমি আমার প্রাইভেট পড়ার কথা বললে বলত পড়াশুনা করার দরকার নাই ।এমনি পাশ করলে ভালো। পড়তে বসলেও পড়তে দিত না ,এইটা কে করবে ওইটা কে করবে ।একটা শেষ করি তো আরেকটা করতে বলে ।সেইবার আমি ইন্টারে এক বিষয়ে ফেল করলাম।
.
দিন দিন অত্যাচার আরো বাড়তে থাকে লাগলো । এক সময় অত্যাচার সহ্য করতে না পেড়ে পালিয়ে চলে আসলাম। এসেও শান্তি পেলাম না । আরেক অশান্তি । আমার শাশুড়ি বলছে আমি নাকি রাতে পালিয়ে এসেছি যদিও আমি দিনে আসছিলাম । আশে পাশের লোকজন আমাকে দোষ দিতে লাগলো ।কিন্তু কেন আমাকে আসতে হল সেইটার কোনো খোজ নিল না ।বলেই সবাই খালাশ ।
ফ্রমফিলাপ করলাম আবার ।কিছুদিন পরে আমার স্বামী আসলো আমাকে নিতে। বলল এমন আর করবে না ।আমার মাও বলল একটু এমন হয়।মানিয়ে চলতে হয় । আমি কি মানিয়ে চেষ্টা করি নাই । আবারো পরিবারের পরামর্শে আমি স্বামীর বাড়িতে আবার গেলাম ।
.
সপ্তাহখানেক ঠিক ওই ছিল ।আবার শুরু হল । এইবার আরো বেশি। অনেক চেষ্টা করছি ।কিন্তু পারিনি আবার চলে আসলাম।আবারো কিছুদিন পরেই আমার স্বামী আসল।বললো বাড়িতে যেতে ।আমি বললাম আমি যাব না । এইবার আমার বাবার বাড়িতেই মারলো আমাকে ।আমি বললাম তুমি কি আমাকে মারতে পারো না বলে মারতে আসছো এখানে ? এমন মারার ইচ্ছাই যদি থাকে তাহলে আর এসো না আমি মার খেতে খেতে যে বড় ক্লান্ত । সেইদিন আমার স্বামী রাত ১ পর্যন্ত আমার সাথে ঝগড়া করে সেই রাতে চলে গেল ।আমি আমার ভালবাসাতে তাকে আটকাতে পারিনি । আর কখনো যোগাযোগ করে নি ।
.
। ইন্টার পরিক্ষা শুরু আর কয়েকদিন পরেই ।তাই ফোন দিয়ে এডমিট কার্ড চাইলাম । এডমিট দিলো না। বললো পরিক্ষা দিতে হবে না । পরে এডমিট কার্ড ছিড়ে ফেলছে ।
কিন্তু আমি তো পড়তে চাই।আমার লক্ষ্য পুরণ করতে চাই।অবশেষে থানায় জিডি করে পরীক্ষা দিলাম এই ২০১৭ সালে। পরীক্ষা ভালোই দিয়েছি । জানি না কি হবে আমার সামনের দিনগুলো ।কি অপেক্ষা করছে আমার জন্য। আমার সবামীকে আমি অনেক ভালোবাসি ।মাঝে এখনো কান্না করি । আমি একটা সুন্দর সংসারের স্বপ্ন দেখতাম । যেখানে আমার শাশুড়ি আমাকে মেয়ে মত করে আগলে রাখবে। ভুল ত্রুটি ঠিক করে দিবে। কিন্তু এই গুলো হয়ত কল্পনায় সম্ভব ।
.
এখনো আমার স্বামীকে কাছে পেতে ইচ্ছা করে খুব করে । একটা সংসার পেতে । ফিরে যেতে ইচ্ছা করে আমার সেই সংসারে যে সংসারে আমার স্বামী,আমার শশুড়ী আছে। কিন্তু কার আশা বা ভরসায় যাবো স্বামী নাকি শাশুড়ির । একজন তো পাশে থাকবে ।
কিন্তু সেই একজনকে যে কোনোদিন ওই পেলাম না । যার বন্ধনে আবন্ধ হয়ে সেই সংসারে গেলাম সেই যে আমাকে দূরে ঠেলে দেয়।
.
আমি আর আমার জীবন এখন অন্ধকারে পা ফেলছে । আমি কি খুব বেশি আশা করেছিলাম । আমি কি খুব বেশি চেয়েছিলাম । আমি আমার মায়ের মত আরেকটা মা চেয়েছিলাম নতুন সংসারে ।জমা ভালোবাসা কারো সাথে বিনিময় করতে চাইছি।এটা কি আমার খুব বেশি চাওয়া একটা মেয়ে হিসাবে ?

আবরণ

শিহাব, বয়স ২৩ এর মতন। ইন্টারমিডিয়েট ফেল করার পর আর পড়াশুনা করে নি। কাজ সারাদিন ঘুরে বেড়ানো আর বাজারের ক্লাব ঘরে আড্ডা দেওয়া। সব সময় নেতা নেতা ভাব নিয়ে ঘুরে , সাথে থাকে কিছু সুসময়ের বন্ধু।
আজ ক্লাব ঘরে ক্যারাম খেলছে এমন সময় ভীতরে ঢুকল রুপু। শিহাব কেন জানি এই ছেলেটাকে দেখতে পারে না। রুপু বেশ সোজা শান্ত। সবাই বলে রুপুর মত ভাল ছেলে হয় না। কিন্ত কেন জানি শিহাবের ধারনা সবই ওর লোক দেখানো।
রুপু ক্যারাম বোর্ডের কাছে আসতেই শিহাব বলে উঠল
- এইতো আমাদের মহারাজ হাজির, এই এই তোরা সবাই তাকে স্বাগতম জানারে।
তারপর রুপুর দিকে তাকিয়ে বিগলিত গলায় বলল- বলুন বলুন হুজুর কি খেদমত করতে পারি আপনার?
সবাই হেসে উঠতেই রুপু আগুন মাখা চোখে সবাইকে একবার দেখে ঘরের অন্যদিকে সরে গেল।কাসেম, নাজমুল, বাবুল মিলে লুডু খেলছিল ওখানে গিয়ে বসল। এখনো শিহাব কি কি যেন বলছে আর সবাই তাতে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে। রুপু কান দিলো না। নাজমুল ওকে বসতে দেখেই জিজ্ঞাস করল ' কিরে খেলবি নাকি? '
- না তোরা খেল।
রুপুর মন একটু একটু করে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। শিহাব ভাইয়ের সমস্যাটা কি সে আজো ধরতে পারল না। সব সময় উল্টা পাল্টা কথা বলে তাকে। বয়সে বড় হওয়ায় কিছু বলতেও পারেনা তাই এড়িয়ে চলে। কিন্তু শিহাবের কাজই যেন রুপুর পিছু লাগা। রুপু শিহাবের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল,"আর কত দিন জ্বালাবি? বিদেশ যাওয়ার পর দেখব আর কাকে জ্বালাস।
রুপু বের হয়ে এল ক্লাব ঘর থেকে। মিয়া বাড়ির পুকুর পাড়ে এসে বকুল তলায় বসল। এইটা তার খুব প্রিয় একটা জায়গা। নিরিবিলি পরিবেশ প্রিয় হওয়ার আরেকটা কারনও অবশ্য আছে। পুকুরের আরেক পাড়ে ইলাদের বাড়ি, এখানে বসলে মাঝে মাঝে ওকে দেখা যায়। ইলাকে রুপু ভালবাসে কিনা নিজেই বুঝে না, তবে ওকে দেখলে খুব ভাল লাগে। বিদেশ চলে গেলে ইলাকে আর দেখতে পাবেনা বিষয় টা রুপুকে কষ্ট দেয় কিন্তু আর কিছু করার নেই। বাবা অনেক কষ্টে তার বিদেশ যাবার টাকা যোগাড় করেছে, তাকে যেতেই হবে।
//
আসরের নামাজ পড়ে নাজমুল, বাবুল আর রুপু হাটতে বের হয়েছে। ওদের গ্রামের পশ্চিমে কোন বাড়িঘর নেই,যতদূর চোখ যায় ধানের খেত। মাঝখান দিয়ে একটা মেঠো পথ গেছে দুপাশেই বড় বড় গাছ।পথের আরেক প্রান্ত মিশেছে বকশি গ্রামের সাথে। ওরা এই পথেই হাটছে।
- তুই চলে গেলে দোস্ত ভাল লাগব না রে। বলে নাজমুল রুপুর কাধে হাত রাখল।
- কি করার আছে আর ? রুপু তাকাল নাজমুলের দিকে।
ওমনি বাবুল চিল্লাল - এই তুই যাওয়ার পর আমারেও নিস, আমার আর দোকান করতে ভাল্লাগেনা, আব্বা আমারে একটা পয়সাও হাতে দেয় না।
বাবুলের কথার ভঙ্গি শুনে দুইজনেই হেসে উঠল।
- হাসিস না তোরা। ওই জানিস বকশি আর আমাদের গ্রাম মিলে ফুটবল খেলার আয়োজন করব।
- তুই কই শুনলি?
- শিহাব ভাই বলল। সবাইরে চাদা ধরছে ২০০ করে।
-তার মত সবার বাপ ভাই বিদেশ করে না যে দুই দিন পর পর এত চাদা দিবো ।
-তোরা কেউ নাম দিবি খেলায় ? আব্বা তো আমারে দোকান বাদ দিয়া উঠতেই দিব না।
- না, রুপু উত্তর দিল।
- আমি নাম দিতে পারি। নাজমুল উত্তর দিল।
মাগরিবের আজান দিতেই ওরা দ্রুত পা চালিয়ে গ্রামের মসজিদের দিকে চলল।
//
গ্রামের মাঠে প্রতিদিন ফূটবল খেলার প্রাকটিস চলে। ফাইনাল খেলা হবে সামনের মাসের ১ তারিখে। নাজমুল খেলায় নাম দিয়েছে। রুপু বসে বসে ওদের খেলা দেখছে। হঠাৎ শিহাব খেলা ছেড়ে রুপুর পাশে এসে সটান শুয়ে পড়ে হাপাতে লাগল। রুপু ভাবছে উঠে যাবে কিনা তখনি শিহাব রুপুর দিকে তাকিয়ে বলল -" তুই নাকি যেকোনো দিন ফুস ??? " বলে বিমান উড়ার অনুকরণ করল।
রুপু কথা না বলে চুপ করে রইল। শিহাব উঠে বসে রুপুর পিঠে ঠ্যালা দিয়ে বলল - ওই কথা কস না যে???
রুপুর মুখটা কঠিন করে কিছু বলবে এমন সময় নাজমুল ল্যাংড়াতে ল্যাংড়াতে হাজির, - রুপুউউউ আমারে বাড়ি নিয়া চল তো, ব্যথা পাইইইছি।
//
১ তারিখ, আজ ফাইনাল খেলা। যাব না যাব না ভেবেও রুপু বেরিয়ে পড়ল।অলস পায়ে বড় মাঠের দিকে কিছুদূর এগুতেই দেখে ওদের গ্রামের কিছু লোক দ্রুত হেটে এদিকে আসছে। রুপুর সামনে আসতে বলল-"ওদিকে যাস না, খেলায় ঝামেলা হয়ছে। "
ঝামেলার কথা শুনেই ও বড় মাঠের দিকে দৌড় দিল, ওখানে নাজমুল আছে।
মাঠে দুই জার্সি পড়া দলে মারামারি হচ্ছে।নাজমুল কে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা। ধর ধর বলে দুইজন নাজমুলদের দলের কাকে যেন ধরেই মারতে শুরু করেছে । রুপু দৌড়ে গেল, না নাজমুল না, শিহাব ভাই। যা মার দিচ্ছে তার তিন গুন বেশি খাচ্ছে। ধা করে রুপুর মাথায় রক্ত চড়ে গেল, ওদের এলাকার ছেলেকে মারছে!!! একজনকে ঝাপটে ধরে আচ্ছামত কিল, ঘুষি দিতে লাগল। নাজমুল, বাবুলও কোথা থেকে এসে আরেকজন কে ধরল। কেউ টেনে সরাতেই রুপুর হুশ হল, ততক্ষনে ও সামনের জনের নাক মুখ সমান করে দিছে ।
" শালা খুন করলে মাডার কেস খাবি, ভাগ। " ধমকে উঠে শিহাব রুপুকে টেনে দৌড় দিল গ্রামের দিকে।
//
বেশ কিছুদিন ধরে দুই গ্রামেই থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। আরো দুই একবার ছোটখাটো মারামারিও হয়ে গেছে । তবুও দুই গ্রামের মাতাব্বর, মেম্বার, চেয়ারম্যান মিলে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে শালিসের মাধ্যমে সব মিটমাটের চেষ্টা করল। কতদূর মিটমাট হল বুঝা গেল না,তবে অপরাধী সাব্যস্ত সবাই নিজেদের মধ্যে কোলাকুলি করে মাফ চাইল। রুপুর সাথে যখন মিঠু কোলাকুলি করছিল তখন ওর কানে ফিসফিস করে বলল
-" তৈরি থাকিস, ওইদিনের কথা ভুলি নাই। " কিন্তু সবাইকে শুনিয়ে মাফ চাইল,মাফ করল।
ঝামেলা শেষ হওয়ায় অনেকদিন পর নাজমুল, রুপু, বাবুল সেই পশিমের রাস্তায় আজ বেড়াতে এসেছে। সেটাই কাল হল ওদের জন্য। সন্ধ্যায় ফিরে আসছে এমন সময় হঠাৎ ধানক্ষেত থেকে ৬-৭ জন রাস্তায় উঠেই হাতের লাঠি দিয়ে ওদের এলোপাথাড়ি মারতে লাগল। কিছু বুঝার আগেই বাবুল আর রুপু মার খেয়ে পড়ে গেল। নাজমুল কোন রকমে ছুটে গিয়ে রাস্তা ধরে ছুটল প্রানপণে, ক্লাবঘরে পৌছাতেই হবে। শিহাবসহ অনেকেই ছিল ওখানে। নাজমুল হড়বড় করে বলল কি ঘটেছে।শিহাব হুংকার দিয়ে ছুটল। মনে হচ্ছে কে যেন ওর হৃৎপিন্ডে হাত দিয়েছে। বাকি সবাইও হাতের কাছে যা পেল নিয়ে ছুটল।
শিহাবই সবার আগে পৌছাল, ততক্ষনে ওরা চলে গেছে। রুপু আর বাবুল ভাঙ্গাচোরা পুতুলের মত পড়ে আছে।ওদের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।
শিহাবের কলিজাটা মোচড়ে উঠল। হাটুগেড়ে বসে রুপুর হাত টা চেপে ধরল," রুপু ভাই আমার.... বলতে বলতেই গলার স্বর ভেঙ্গে গেল। বুঝতে পারছে এত দিনের যত রাগ, ঘৃণা, বিদ্বেষ সব ছিল বাইরের আবরণ মাত্র। ও মন থেকে কখনোই রুপুর খারাপ চায় নি। -" ভাই মরিস না, বেচে থাক, আল্লাহর দোহাই লাগে বেচে থাক। "
কিন্তু আল্লাহর দোহাই রুপুর কানে পৌঁছায়নি। একটু দেরি হয়ে গেছে।

বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭

নীল পরী

আবারও আইডিটা নষ্ট হয়ে গেল। কেন যে সবায় ব্লক দেয়। ব্লক দেয় বুঝলাম কিন্তু রিপুট করবি কেন। আমি কি তোদের খুব ক্ষতি করছি? শুধু একটু শিউর হইলাম যে মুখোশ পড়া আপনি মেয়ে/ছেলে। বেস এতেই কি বড় ধরনের দোষ হইয়া গেল?
,
আমার আগের আইডিটার জীবনে ঘটে যাওয়া ছোট্ট একটা গল্প বলি। বয়স তার খুব একটা ছিল না কেবল দের মাসের মত। ফ্রেন্ড সংখা খুব কম। তাই পোস্টে লাইকও আসে না। তাই এক ফ্রেন্ডের কথামত 'এড মি' লিখে একটা পেইজের টাইমলাইন পোস্টে কমেন্ট করলাম। আর শুরু হলো ভেলকি। রিকুয়েস্ট আসতে লাগলো। ছেলে গুলোকে না দেখেই রিসিভ। ঘটনা ক্রমে এক 'নীল পরী' নামের আইডিটাও রিসিভ করে ফেলছি।
,
যাহ্ শালা এহ্ কি করলাম। যেগুলোকে চিনি না সেই মেয়ে আইডি রাখি না। তাই আইডির ভেতরে গেলাম আনফ্রেন্ড করবো।
,
ওরেহ্ বাস এত্ত এত্ত ফটো মেয়েটার। আবার কমেন্টেও অনেক মেয়ের কমেন্ট। দেখে ভালই লাগলো। মনে হয় আইডিটা আসলেই মেয়ে। তবে চেহারায় টান আছে একটা। যাই হোক আনফ্রেন্ড করলাম না। দেখা যাক পরিচিত হই ছেলে/মেয়ে। আর খালিও আছি যদি লাইজ্ঞা যায়। এখন অপেক্ষায় আছি কখন অনলাইনে আসে।
,
পাইছি পাইছি
-হাই(আমি)
-...(কোনো উত্তর নাই। ভাবলাম মেয়েদের একটু দাম হয়ই)
-আপু কি অনলাইনে আছো?
-(নো রেসপন্স। তার মানে আমাকে অন্য রাস্তা নিতে হবে)
-আপু তোমার চেহারা সেইরকম সুন্দর। তোমার জন্য একটা প্রপোজাল ছিল(হয়তো কাজে লাগবে)
-হ্যালো(আপু)
-একটা প্রপোজাল ছিল তোমার জন্য
-কি প্রপোজাল বল!
-আসলে তুমি দেখতে অনেক সুন্দরী ভাবলাম তোমার সাথে পরিচিত হই। তো বন্ধু হওয়া যাবে?
-তোমার প্রপোজালটা বল তারপর দেখি
-ওইযে ওইটাই তো ছিল
-আজব
-তুমি কি মনে করছিলা আপু?
-না কিছু না
-আপু তোমার নাম কি?
-বৃষ্টি
-বাহ্ সুন্দর নাম তো
-স্বাভাবিক, আমিই সুন্দর
-হি হি আপু ভুল বললা তো। তুমি সুন্দরী হবা সুন্দর না
-ডিসগাটিং
-কি বললা আপু শুনি নাই (যদিও কথা ম্যাসেজে হচ্ছিল)
-না কিছু না
-আপু তুমি তো ম্যাসেঞ্জারে আছ তাই না
-হুম তো
-না মানে একবার কল দিতাম। আসলে আপনি তো অনেক সুন্দর (সুন্দরী বললাম না যদি রাগ করে) আপনার কন্ঠটাও মনে হয় অনেক সুন্দর। তাই যদি একবার হ্যালো বলতেন যদি ছোট্ট করে (সবটাই জানার জন্য মেয়ে না ছেলে। এর আগে অনেক ধরছি যার কারনে ব্লকও খাইছি। দেখি এইটায় কি হয়)
-সরি সমস্যা আছে
-পাশে আম্মু আছে তাই না!
-হুম আম্মু আছে
-তাইলে আর কি আমার ভাগ্য খারাপ
-অওঅঅ সিক
-হুম। আচ্ছা বাদ দাও আপু। তুমি আর আম্মুর একটা পিক তুলো তো। আর তোমার আম্মুকে বলবা তোমার গলা ধইরা তুলতে
-আম্মু ফটো তুলে না
-আগে তো জানতাম না কোন মায়ের কাছে সন্তান এইটুকু চাইলে সেই মা না করবে
-ফাউল
-সেইটাই। তো কয়দিন ধরে?
-কি কয়দিন ধরে!
-এই যে নিজে ছেলে হইয়া মেয়ে আইডি চালাইতেছ
-মানে কি
-মানে এইটাই তুমি ছেলে(একটু জোর খাটালাম কথায় যদি আসলেই মেয়ে হয়)
-...
-কয়দিন ধরে বললা না আপুপুপুও...
যাহ্ বাবা তার নামটা কাল হয়ে গেল। তার মানে ব্লক দিলো! নাহ্ ঠিক করলো না এইটা। এখনও শিউর-ই হইতে পারলাম না ছেলে না মেয়ে আর ব্লক দিয়ে দিল। না একদম ঠিক করে নাই। দ্বাড়াও অন্য উপায় বের করতেছি। তবুও বের করতেই হবে তুমি ছেলে না মেয়ে।
,
ঢুকলাম ১০ মিনিটের জন্য জিমেইল ওয়েব সাইটে। নিলাম জিমেইলটা। অতঃপর আমিও খুলে নিলাম মেয়ে আইডি 'নিলাঞ্জনা আদ্রি' নাম দিলাম। ম্যাসেঞ্জারে নিয়ে নিলাম। কথা তো বের করতে হবে। এরপর ফটোও দিলাম যাম্পেস। আকর্ষনীয় যে করতে হবে। ওয়েব ডট দিয়ে ঢুকে সব গুলো শেয়ারের টাইম দিলাম দাদার আমলের। যাতে কারও সন্দেহ না হয় আইডিটা আজকের।
,
সার্চ করলাম 'নীল পরী' নামের আইডিটা। পাঠালাম রিকু। আমার দিতে যতক্ষন আর তার রিসিভ করা শেষ। ওয়েট করতেছি যদি সে আগে ম্যাসেজ দেয় তাইলে সে ছেলে। আর যদি আমায় আগে দিতে হয় তাইলে সে মেয়ে।
বেশিক্ষন ওয়েট করতে হলো না। হয়তো প্রোফাইলটা ঘুরে দেখতে তার সময় লেগে গেছে
-হাই(পরী)
-(প্রথম বার উত্তর দিলাম না)
-হ্যালো
-হ্যালো
-ভাল আছো আপু
-হ্যা ভাল। চিনলাম না তো
-আমিও তো চিনি না তাই বলে কি কথা বলা যাবে না
-তা না
-ঠিক তাই। পরিচিত হওয়া যাক। আম নীলা
-আমি আদ্রিতা
-সুন্দর নাম তো
-হুম
-কই থাকেন
-টাংগাইল
-অহ্ মাই গড। আমার গ্রামের বাসা টাংগাইল
-তাই! টাংগাইল কোথায়?
-হ্যা। আমার আব্বুর ওখানে অনেক বড় একটা বাড়ি আছে। আসলে ছোট কাল থেকেই ঢাকা থাকি তো তাই আসলে চিনি না
-অহ্ ভাল
-তো আপু লেখাপড়া কর তাই না!
-হুম এইবার এইচ.এস.সি দিলাম(ওর আইডিতে যা ছিল তাই বললাম)
-ওওঅঅ গশ আমিও তো। কোথায় থেকে দিলেন?
-সৃষ্টি কলেজ
-নাম শুনছি অনেক। কলেজটা নাকি অনেক ভাল
-হুম
-আপু তোমার সাথে কথা বলে অনেক ভাল লাগলো। তোমার ফোন নাম্বারটা দিবা?
-না আপু। আমি অচেনা কাউকে নাম্বার দেই না। আর আপনার সাথে কেবল পরিচয় সো আই আম সরি
-আচ্ছা আপু অসুবিধা নাই
-(কিছু বললাম না)
,
চাইলেই নাম্বারটা দিয়ে দিতে পারতাম। এতে আরও বেশি শুবিধা হতো ধরার জন্য। কিছুক্ষন সে ব্রেক নিলো। তারপর আবার শুরু।
-আপু আছো?(নীল পরী)
-হুম
-একটা কথা বলার ছিল
-বলো
-আসলে আপু আমার নাম হাসিব। আমার একটা ফ্রেন্ডের সাথে মজা করার জন্য আইডিটা খুলছিলাম। পরে যখন দেখি আইডিতে ভালই লাইক পরে তাই রেখে দিলাম। এখন এইটা চালাতে ভালই লাগে(বেটায় মুখ খুলছে)
-তো আমি কি করবো
-না কিছু না এমনি বলে রাখলাম
-ভালো
-তো আপু ফ্রেন্ডস্
-ওয়েট ওয়েট
-হ্যা বলেন আপু
-কিছুক্ষন আগে 'Shaion Khan' নামের যে আইডিটাকে ব্লক দিলেন তাকে আপনি চিনেন
-কে সে? চিনি না তো
-ভাল করে দেখেন
-ওহ তাহলে তুমি সেই ছেলে যে আমায় প্রপোজাল দেয়
-ঠিক তাই
-আচ্ছা আমি মাইয়া আইডি চালাই তোর সমস্যা কি?
-কোন সমস্যা নাই। কিন্তু আমার সামনে পরলো কেন? আর বড় কথা আমার আইডি নষ্ট করলি কেন(কিছুক্ষন পর আমার আইডিটা আস্ত ছিল না। রিভিউ-এ চলে গেল আর ফেরত পাইলাম না)
-তা আমার কি। ওইটা তোর বিষয়
-সেইটাই। ওয়েট কর তোর আইডির ১২ টা বাজাইতেছি। তোর স্বাদের আইডি দেখাইতেছি
সেন্ড হওয়ার সাথে সাথেই ব্লক আর রিপুট টিপুট যা আছে সব মারলাম। দেরি করলেই বকা শুরু করতো। আমার ফ্রেন্ডদেরও বললাম রিপুট দে আইডিটাতে। অতঃপর আইডি বাতিল।
,
যাহ্ আরও একটা ফেক আইডি সাথে স্বার্থক আমি ছি.আই.ডি। ভালাই লাগলো ধরতে পেরে। একেতে ধরতে পারলাম আর দুই আমার রাগটাও মিটলো।
,
বর্তমানে ফেসবুক ফ্রেন্ড নামে কিছুই না। সব ধান্দাবাজ।
,
কারও আমার মত সময় পার করা। আর কেও ভুয়া নামে ভুয়া পরিচয়ে ধান্দা করে বেড়ানো। আসলে ফেসবুক নামের এই সোসাল জগৎ একটা আজব মেশিন। যেখানে সবাই রাজা।