শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭

অভিমানী বউ

..
--- আমিঃ হ্যালো রূপা!
--- রূপাঃ হ্যাঁ কে বলছেন?
--- আমিঃ ফাজিল বলছি।
--- রূপাঃ আমাকে ফোন করছেন কেন?
--- আমিঃ ফাজলামি করার জন্য আমি
কি একটু ফাজলামি করতে পারি?
--- রূপাঃ না পারেন না। অপরিচিত
কারোর সাথে আমি
কথা বলি না সো রাখি।
--- আমিঃ এই যে প্লীজ রাখবেন না।
আপনাকে না
আমার অনেক প্রয়োজন।
--- রূপাঃ কেনো?
--- আমিঃ ভালোবাসি বলে।
--- রূপাঃ আমি আপনাকে চিনি না
জানিনা সো
ভালোবাসাতো অনেক দূরের কথা।
--- আমিঃ তাহলে আর কি করি অন্য
রূপার খুঁজ করি।
--- রূপাঃ জ্বী তাই করেন বাই।
..
ফোনটা কেটে গেলো। হলোনা
রূপার সাথে কথা। ইশ কি চমৎকার কণ্ঠ!
এইরকম কণ্ঠ যার আছে তার প্রেমেতো
বারবার পরতে হয়। কি ভাবলেন সবাই?
রূপা মেয়েটা আমার অপরিচিত?
আসলে তা না। রুপা আমার কিউট সুইট
বউ রাগ করে বর্তমানে বাপের বাড়ি
আছে। একটু অভিমানী টাইপের মেয়ে।
ওকে নাকি আমি একদম সময় দেই না
সেজন্য ম্যাডাম আমাকে অনেকগুলা
ঝাড়ি দিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে আমার
সামনে দিয়েই আজ সকালে চলে
গেলেন। আর যাওয়ার সময় বলে
গেলেন, ভুলেও যেনো তাকে আর
বিরক্ত না করি। আমিও আর পথও
আটকালাম না। কারণ জানি
আটকিয়ে লাভ নেই তিনি যখন
বলেছেন যাবেন তো যাবেনি। এক
কথার মেয়ে, যাকে বলে
ঘারত্যাড়া। তবে এটাও জানি আজ
রাত ১২টা হলে তিনি আমার কাছে
ফিরে আসবেন। কারণ এই রূপা নামের
মেয়েটা বিয়ের পর অর্থাৎ এই দুই
বছরে একদিনও আমাকে ছাড়া ঘুমাতে
পারেননি। সো এই ব্যাপারে আমি
নিশ্চিত।
..
রাত ৯টা এখন! ভাবলাম অভিমানী
রূপাকে আরেকবার বিরক্ত করা যাক।
তাই ফোন হাতে নিয়ে ফোন দিলাম
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ,,,
..
ওপাশ থেকে ,,,
..
--- রূপাঃ হ্যালো।
--- আমিঃ রূপা।
--- রূপাঃ আবার কি?
--- আমিঃ একটু ভালোবাসা।
--- রূপাঃ আমি কি ভালোবাসা
বিক্রি করি যে আপনাকে
ভালোবাসা দিবো!
--- আমিঃ বাসায় আসবেনা।
--- রূপাঃ না আর আসবোনা।
--- আমিঃ রাতে কার কাছে
ঘুমাবে?
--- রূপাঃ একা ঘুমাবো।
--- আমিঃ কার বুকে মাথা রেখে
ঘুমাবে?
--- রূপাঃ বালিশের বুকে মাথা
রেখে ঘুমাবো।
--- আমিঃ যদি বলি এই রাতে
তোমাকে নিয়ে সাড়া শহর
ঘুরে বেড়াবো তাহলে কি আমার
সাথে ঘুরতে বেড় হবে?
--- রূপাঃ না হবো না।
--- আমিঃ আমি জানি হবে। বাসার
সামনে বেড় হও আমি দাঁড়িয়ে আছি।
কোন এক অভিমানী রূপার অভিমান
ভাঙ্গাণোর জন্য হাতে একগুচ্ছ লাল
গোলাপ
নিয়ে।
--- রূপাঃ সত্যি! বাবুটা উম্মাহ। আমি
আসতেছি বাবু।
..
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দেখি
দরজা খুলে একটা
মেয়ে আসছে। অল্প আলোতে দেখা
যাচ্ছে
কালো একটা শাড়ি পড়া মেয়ে
আমার দিকে এগিয়ে
আসছে। বলতে গেলে দৌড়ে আসছে
একদম
কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো
আর চুমু
খেলো অনেক।
..
--- আমিঃ এই রূপা আমার কিন্তু লজ্জা
লাগছে তুমি এই রাতে এই অবলা
পুরুষটারে একা পেয়ে এভাবে
জড়িয়ে ধর নির্যাতন করতে
পারোনা।
--- রূপাঃ ওরে আমার অবলারে চলো
ঘুরতে হবে।
--- আমিঃ কোথায় ঘুরবো।
--- রূপাঃ সাড়া শহর। এখন যদি না
বলো তাহলে আবার কিন্তু চলে যাব
আমি।
--- আমিঃ আচ্ছা ম্যাডাম চলেন।
দাঁড়ান একটা রিক্সা ডাকি।
--- রূপাঃ না হাটবো এখন। পরে
রিক্সায় উঠবো।
--- আমিঃ এই রূপা তোমার জুতা
কোথায়, তুমি দেখি খালি পায়ে!
--- রূপাঃ তাড়াহুড়া করে আর পড়া
হয়নি চলে এসেছি। শুধু আসার সময়
আম্মুকে কোনরকম বলে এসেছি,
গর্ধবটা এসেছে আমি গেলাম মা।
--- আমিঃ কি আমি গর্ধব?
--- রূপাঃ হুম আমার গর্ধবরাজ। উম্মাহ।
--- আমিঃ তোহ আসলে কেনো এই
গর্ধবের ডাকে?
---- রূপাঃ আমার গর্ধব ডেকেছে আর
আমি না এসে
পারি?
--- আমিঃ হুহ... হইছে। আচ্ছা আমাকে
ছাড়া কি
ঘুমাতে পারতে?
--- রূপাঃ এর আগে কি ঘুমিয়েছি
কখনো?
..
আমি আর কিছু বললাম না। নীরবভাবে
হাত ধরে হাটছি কিন্তু আমি
জানিনা গন্তব্য কি বাসায় নাকি
অন্য কোথাও!
তবে আমার আইডিয়া অনূসারে রূপার
এখন ফুচকা খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার
কথা।
..
--- রূপাঃ গর্ধব আমাকে কোলে
নিতে পারবা?
--- আমিঃ হাটতে পারছোনা নাকি?
রিক্সা ডাকবো?
--- রূপাঃ বলছি কোলে নিতে
পারবা কিনা।
--- আমিঃ আবার জিগায়! অবশ্যই
পারবো।
..
এই বলেই রূপাকে কোলে তুলে নিয়ে
হাটা শুরু
করলাম। রূপা হাত দিয়ে আমার গলা
জড়িয়ে ধরে
আছে।
..
--- আমিঃ রূপা, তোমার ওজনতো বেশ
বেড়ে
গেছে মনে হচ্ছে।
--- রূপাঃ কি! আমার ওজন বেশি হয়ে
গেছে? নামাও
আমাকে। আমি আর তোমার কোলে
চড়বোনা।
--- আমিঃ হি হি হি আমিতো
নামাবো না।
--- রূপাঃ এই গর্ধব! আমি আইসক্রীম
খাবো।
--- আমিঃ এই ঠান্ডার মধ্যে?
--- রূপাঃ হ্যাঁ ঠান্ডার মধ্যে। যাও
একটা কোণ
আইসক্রীম নিয়া আসো।
--- আমিঃ আমি কি তাহলে চেয়ে
দেখবো?
--- রূপাঃ হ্যাঁ দেখবা।
..
অতঃপর রূপাকে কোল থেকে
নামিয়ে গেলাম
আইসক্রীম আনতে। নিয়ে এসে বললাম
,,,
..
--- আমিঃ এই নেন আপনার আইসক্রীম।
--- রূপাঃ দাও। আর চেয়ে চেয়ে
দেখো আর
আমি খাই। হি হি হি।
..
আমি জানি রূপা আমাকে দিয়ে
একটা আইসক্রীম
আনিয়েছে। সে চায় আমরা যেকোন
জিনিস ভাগাভাগি
করে খাই। এর আগেও বহুবার একটা
আইসক্রীম
দুজন খেয়েছি। তারপর রূপা অল্প
খাওয়ার পর বলল ,,,
..
--- রূপাঃ এই নাও তুমি খাও পরে কিন্তু
আবার আমাকে
দিবা।
..
রূপাকে আবার কোলে তুলে হাটা শুরু
করলাম। রূপা
খাচ্ছে আবার আমাকে খাওয়াচ্ছে।
..
--- আমিঃ রূপা!
--- রূপাঃ কি?
--- আমিঃ বাসায় চলো।
--- রূপাঃ আরেকটু পর যাই প্লীজ
বাবুটা। ভালো
লাগছে তোমার কোলে।
--- আমিঃ আচ্ছা আরেকটু পরেই যাই।
..
হাটতে হাটতে পা ব্যাথা হয়ে
গেলো কিন্তু এই
ব্যাথার মধ্যেও অন্যরকম একটা আনন্দ
পাচ্ছি। এই
আনন্দটা পাওয়ার জন্য সাড়া জীবন এই
রকম ব্যাথা
পেতে রাজী আমি।
.

২টি মন্তব্য: