বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৭

সরি দীপান্বিতা

সরি দীপান্বিতা নাটক দেখে নাই, ফেসবুকে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিলের ব্যাপার। তবুও বলছি যারা দেখেন নাই তারা দেখে এসে এই গল্পটা পড়বেন। কারনটা নিশ্চয়ই বলতে হবে না... নাম দেখেই বুঝতে পারছেন।
অবশ্য গল্পটা শুরু করার আগে কিছু কথা না বললে শুরু করতে পারছি না। আর গল্পটার প্রথম অংশের কিছু কথা বললে আপনারাও ভালো বুঝতে পারবেন। অনেকেই জানেন গল্পের নায়িকা অর্থাৎ দীপান্বিতা(দীপা) এক্সিডেন্ট করে কোমায় চলে যায়। না পারে কথা বলতে, না পারে চলতে। এদিকে নায়ক যখন অনেক খুঁজে দীপাকে পাই এবং তার কাছে রেখে চিকিৎসা করতে চাই কিন্তু ডাক্তার সেটা অ্যালাও করে না। কষ্টে নায়ক নিরুদ্দেশ হয় কারন দীপার এই অবস্থার জন্য সেই যে একমাত্র দায়ী। সরি নায়কের নামটাই তো দেওয়া হয়নি। আচ্ছা একটা নতুন নাম দেওয়া যাক কি বলেন? কিন্তু কি নাম দেওয়া যায়.... আরে আমার নামটাই দিয়ে দেই..... নায়কের নাম ধ্রুব।
------------------------------------------------------------------------
একদিকে ডাক্তার চিকিৎসার জন্য দীপাকে বিদেশে পাঠাই। আর এদিকে ধ্রুব নিরুদ্দেশ। দুজন দুই পথের যাত্রী। কেউ কারো খোঁজ তো দূরের কথা.. কে কোথায় থাকে সেটায় জানে না। ধ্রুব নিজ শহর ছেড়ে অন্য একটা শহরে গিয়ে থাকে এখন। আর ওখানেই ভর্তি হয় একটা ভার্সিটিতে। ভালোই চলছে তার ভার্সিটি লাইফ নতুন বন্ধুদের নিয়ে।
দেখতে দেখতে ১ বছর কেটে গেল....
ভার্সিটিতে নতুন ব্যাচ ভর্তি হয়েছে। আর এজন্যই ধ্রুব তাদের বন্ধুদের নিয়ে ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দেয়। অবশ্য এটা তাদের প্রথম না কারন তারা মাঝে মাঝেই ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দেয়। এমনি একদিন আড্ডা দিচ্ছিল তারা...
হঠাৎ সামনে দিয়ে একটা মেয়ে চলে গেল। ধ্রুব নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিল না। সেই সাধারণ একটা মেয়ে। একি রকম হাটা। সব কিছু একরকম। যদিও সে পুরোপুরি সিউর এটাই দীপা তবুও জানতে চাইলো বন্ধুর কাছ...
- দোস্ত.. মেয়েটা কে রে??
- আমাদের ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছে।
- নাম জানিস??
- নাতো। কেনরে দোস্ত?
- এমনি.. তোরা থাক আমি আসতেছি।
- কই যাস??
ওদের কথায় কান না দিয়ে চলে গেল ধ্রুব। গিয়ে দেখে মেয়েটা দীপার মতোই ভার্সিটির বারান্দার এক কোণে একাকী বসে আছে। ধ্রুব কাছে গেল। ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে দেখলো একবার কিন্তু না চেনার ভান করে আবার নিজের কাজ করতে লাগলো। ধ্রুব ওর পাশে বসলো। দেখলো দীপার মতোই শুধু খাতার উপর লিখে যাচ্ছে। কিন্তু কি লিখছে সে নিজেও জানে না....
- হাই...
- আমাকে বলছেন?
- এখানে আর কে আছে?
- আপনার নামটা জানতে পারি?
- দীপান্বিতা...
(খুশি হয়ে বললাম)
- আমাকে চিনতে পারছেন? আমি ধ্রুব।
- নাতো.. কে আপনি?
- সত্যিই চিনতে পারছেন না?
- নাতো।
বলেই চলে গেল। কিন্তু ধ্রুব কিছুতেই মানতে পারছিল না যে ওইটা দীপা না। তাও আবার নামটাও এক। তাইতো তাকে ফলো করে তার বাসার ঠিকানা টা জেনে আসলো ধ্রুব। পরের দিন ধ্রুব ভার্সিটিতে না গিয়ে ওদের বাসায় গেল। গিয়ে যা শুনলো..
দীপাকে যে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করানো হয়েছিল সেই ডাক্তারের কাছেই থাকে সে। দীপা এখন সুস্থ কিন্তু স্মৃতি হারিয়ে ফেলছে।
ধ্রুব একদিন দীপা বলে ডেকেছিল সেটা শুনেই ওর নাম দীপা রেখেছে ডাক্তার বাবু।
ধ্রুব তার কথা দীপাকে বলতে নিষেধ করলো। কি দরকার পুরনো কথা মনে করিয়ে কষ্ট দেওয়ার।
কিন্তু ধ্রুব দীপাকে আর হারাতে চাই না। তাই সে প্রতিদিন দীপার সাথে কথা বলতো। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হলো।
কিছুদিন পর সেটা বন্ধুত্বের চেয়ে একটু বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে গেল। ধ্রুব বুঝতে পারলো দীপাও তাকে ভালোবাসে। তাই সে ভাবলো দীপাকে প্রপোজ করবে.... ফোন দিল দীপাকে...
- হ্যালো..
- আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই?
- হ্যাঁ.. বলো না..
- তুমি কি সারাজীবনের জন্য আমার হবে?
- হুমমমম.. হতে পারি যদি তুমি আমায় আমি তোমাকে ভালোবেসে যতোটা কষ্ট পেয়েছি তার চেয়ে বেশি ভালোবাসো...
- মানে তোমার সব কিছু মনে পড়ে গেছে?
- কখনো তো ভুলিই নাই কিভাবে মনে পড়বে?
- মানে এগুলো সব সাজানো?
- হুমমমম.. সব কিছু ডাক্তার বাবু করছে।
- যা করছে ভালোর জন্যই করছে..
- হুমমমম..কি বললাম অতোটা ভালোবাসবে তো?
- তার চেয়েও বেশি.....
পরে অবশ্য ধ্রুব জানতে পারে ডাক্তার বাবু তার সব খোঁজ রেখেছিল। আর দীপা সুস্থ হওয়ার পর তাকে ধ্রুবর ভার্সিটিতে ভর্তি করে দেয়।শুধুমাত্র তাদের অপরিপূর্ন ভালোবাসাকে পূর্নতা দেওয়ার জন্য...
এখন ধ্রুব আর দীপা সুখেই আছে তাদের ছোট্ট একটা মেয়ে কে নিয়ে....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন