দেখুন যা সিদ্ধান্ত নেয়ার আপনাকেই নিতে হবে।আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না।আপনাকে এই জন্যই এখানে ডেকেছি।আর যদি জোর করে বিয়ে দেই আপনার সাথে তাহলে অনেক টা খারাপ হবে।
-
কথা গুলো বলছিল রুপা।সাজিম নিরব হয়ে শুনছিলো রুপার কথা গুলো।যে মেয়ে সরা সরি বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে সেখানেই বা আর কি বলার আছে সাজিমের।
-
আমি এখন উঠি বলেই রুপা উঠে চলে যাচ্ছে।সাজিমের ইচ্ছা করলো একবার ডাক দিতে। কোথাই যেন বাধা পড়ল। চুপ করে একাই বসে আছে সাজিম।রুপার সাথে সাজিমের বিয়ের কথা চলছিল।রুপা সরা সরি না করে দিয়েছে সাজিম কে বিয়ে করতে পারবে না।
-
মেয়েটা খুব রাগি টাইপের।সব সময় চুপ চাপ থাকে।সাজিমদের ফ্লাটে ভাড়াটিয়া থাকে।মেয়ে দেখতে ফর্সা।কিন্তু এখানে আসার পর কোন সময় হাশি মুখটা সাজিম দেখতে পারেনি।মনে হত হাসতে যেন পারেনা।মুখটা গম্ভির হয়ে থাকত সব সময়।
-
বাবা মায়ের নাকি এই মেয়েটাকেই খুব প্রছন্দ হয়েছে এনাকেই তাদের বৌ মা বানাবে।কেন মেয়ে আর ছিলো না পৃথিবীতে?বাবা মায়ের ওপর খুব রাগ হচ্ছে এখন কিন্তু তবুও তো তারা আমার বাবা মা।রুপাকে আর কিছুই বলিনি। বাবা মাকেও জানালাম না যে মেয়ে বিয়েতে রাজি না চুপ চাপ চেপে থাকলাম দেখি কি হয়,
-
চলে যাচ্ছিল দিন কয়েক দিন পড়,কিরে অফিস যাবি না? মা কথাটা বলল।আজ শরিরটা ভালো নেই তাই আজ আর অফিস যাবোনা।বস কে কল দিয়ে ছুটি নিয়ে নিলাম।নিজের রুমে মোবাইলে গেম খেলছিলাম।হঠাৎ রুপা আমার রুমে এসে বলতে শুরু করলো
-
আমার মা কেমন যেন করছে প্লিজ একটু আসবেন? মোবাইলটা রেখে রুপার দিকে তাকালাম রুপার চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি পরছিলো।মোবাইল টা রেখে দ্রুত রুপার আম্মুর কাছে গেলাম।তারা তারি করে ধরে আমি আর রুপা নিচে নিয়ে গেলাম।একটা গাড়ি ঠিক করে সোজা ক্লিনিকে নিয়ে গেলাম।
-
গাড়িতে বসে রুপা খুব কাঁদছিলো, আমার কেমন জানি খুব খারাপ লাগছিল রুপার কান্না দেখে।রুপা আর আমি বসে আছি রুপা এখনো কেঁদেই চলেছে।রুপাকে কাঁদতে মানা করলাম বললাম সব ঠিক হয়ে যাবে।রুপাকে সান্তনা দেওয়া ছাড়া কিই বা করার আছে আমার।রুপা এখনো কেঁদেই চলেছে।
-
-
রুপার আম্মাকে বাসাই নিয়ে আসা হল।এখন তিনি মোটা মোটি একটু ভালো।রুপা এখন আর কাঁন্না করছে না।নিজের রুমে চলে আসলাম।ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নিলাম।হাসপাতাল থেকে আসতে আসতে প্রায় সন্ধা হয়ে গেছে।
-
ছাদের বসে ভাবছিলাম রুপা কেমন যেন লুক নিয়ে আমার দিকে বার বার তাকচ্ছিল।ওর লুক দেখে মনে হচ্ছিলো সে বড় ধরনের কোন অপরাধ করেছে আমার কাছে।না এই মেয়েটা অনেক কঠিন।
-
রাতে ছাদে বসে নিকটিনের ধোয়া উরাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম, বাবা মাকে মানা করে দিবো বলবো অন্য কোন মেয়ে দেখতে।হঠাৎ মনে হলো আমার পিছনে কেউ দারিয়ে আছে।পিছে তাকাতেই চমকে গেলাম এই তো রুপা।রুপা এখানে কেন আসলো?
-
আরে তুমি এত রাতে ছাদে আসলে যে,আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কথা বলল রুপা।আমি জানি আজকের ঘটনার জন্য ধন্যবাদ টা ওর কাছ থেকে হয়ত পাওয়ার যোগ্য হয়েছি।রুপা এদিক ওদিক হাটছিল, আমি বললাম আর কিছু বলবে? মেয়েটা চুপ হয়ে আছে আন্দাজ করতে পারলাম কোন কিছু বলবে তাই আবারো বললাম কিছু বললে বলতে পারো,
-
রুপা আস্তে করে বলে উঠলো আমি একজন কে ভালোবাস তাম।আমি কিছুটা চমকে গেলাম রুপার কথা শুনে। জিঙ্গেস করলাম এখন বাসো না?
প্রতি উত্তরে বলল হা এখনো বাসি।রুপার মুখটা যেন আরো বেশি মলিন হয়ে গেল।রুপা এখনো দাড়িয়ে ছিলো পাশে বসতে বললাম।রুপা পাশে এসে বসল।।
-
এবার রুপার দিকে ভালো করে তাকালাম।স্পষ্ট বোঝাই যাচ্ছে রুপার মনটা ভিষন খারাপ।আচ্ছা তুমি যাকে ভালো বাসো তার নাম কি কোথাই থাকে কি করে? রুপা এবার আমার দিকে তাকালো।
-
রুপা হয়ত আমার থেকে এমন কিছু আশা করেনি।তার পরেও বলল সে যাকে ভালো বাসতো তার নাম রিদয়।রুপা জানেনা সে এখন কি করে কোথাই আছে?হঠাৎ করে যেন হারিয়ে গেছে।
-
আমি জিঙ্গেস করলাম কি হয়েছিল ওর সাথে?রুপা এবার নিচের দিকে তাকিয়ে আছে হয়ত বলতে চাচ্ছে না, তাই আমি আবার বললাম বলতে না চাইলে থাক বলতে হবে না শুধু কষ্ট গুলো বাড়বে।
-
আমি ওকে খুব ভালো বাসতাম।আর এখনো বাসি।আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিলো অনেক আশা ছিল।দুজনে রাত জেগে জেগে গল্প করবো,একসাথে পাশা পাশি হাটবো,দুজনে ফুসকা খাবো,আর আমাদের ছোট্ট একটা পরিবার হবে।
-
রুপা এবার চুপ হয়ে গেল।আমি জিঙ্গেস করলাম তার পর
-
আমরা এক সাথে অনেক ঘুরেছি হাতে হাত রেখে।এমনো রাত কেটেছে সারা রাত ফোনে কথা বলে।এক দিন কথা না বললে মনে হত কত জনম কথা বলা হয়নি ওর সাথে।সেও আমাকে অনেক অনেক ভালো বাসতো।
-
তার পাগলামি গুলো ছিল কেমন যেন। হুট করে বাসার সামনে চলে আসতো এসে কল দিতো।খুব রাগ হতো কেন আসছে জিঙ্গেস করলেই বলতে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই চলে আসলাম।অনেক রাত কেটেছে পুকুর পাড়ে বসে গল্পে।ওর মধ্যে এমন কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিলো না।কিন্তু সে মাঝে মাঝে বলতো আমি কোন একদিন হারিয়ে জাবো চাইলেও আর খুজে পাবে না।
-
ও কখনো সিরিয়াস ভাবে কথা বলে না।কিন্তু সেদিন ওর কথা বলাটা আমার কাছে অন্যরকম ছিলো।আমার কেমন যেন খুব খারাপ লাগছিল ভয় পাচ্ছিলাম।মনে হচ্ছিলো সত্য সত্যই হারিয়ে যাবে।
-
সত্যিই একদিন হারিয়ে গেল।হাজার চেষ্টা করেও যোগা যোগ করতে পারিনি।খাওয়া ভুলে গিয়েছিলাম, ঘুম কি জিনিস ভুলে গিয়েছিলাম।শুধু মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকতাম এই বুঝি কল আসছে রিদয়ের।
কিন্তু না অপেক্ষ সেই অপেক্ষাই থেকে গেলো।
-
আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি মেয়েটা কাঁদছে,আচ্ছা সে যদি ফিরে আসে তখন কি করবে কথাটা বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।ভাবছি বাবা মাকে না করে দিবো, কিনা।
রুপা কে বললাম আমি কি তোমার বন্ধু হয়ে থাকতে পারি?
-
রুপা মাথা নাড়িয়ে হা সূচক জবাব দিলো।রুপাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওর রুমে পাঠিয়ে দিলাম।আমি এখনো বসে আছি ছাদের ওপর।আজ কেন জানি ভালো লাগছে বসে থাকতে।আজকের তারা গুলো কেমন মিটি মিটি হাসছে।জল জল করছিল চাঁদ টা।
-
পরের দিন অফিসে চলে গেলাম। একটা কম্পানিতে জব করি।কাজ শেষ করে বাসাই ফিরলাম।মা খাবার বেড়ে দিচ্ছিল মা বলল রুপা নাকি আজ মার কাছে এসেছিল।আমি জিঙ্গেস করলাম কেন?
মা বলল এমনিতেই।খাচ্ছি আর ভাবছি দরকার ছাড়া যে মেয়ে আসে না সে আজ আমাদের এখানে এসেছিল মতলব কি??
-
রাতে শুয়ে ভাবছি রুপা কে একটা কল দেই।নাম্বারটা বের করলাম কল দিতে গিয়েও কেটে দিলাম।খুব ভয় করছিল মেয়েটা যদি কিছু বলে।
মোবাইলটা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।৫ মিনিট পর ফোনের রিংটন বেজে উঠলো।
-
স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি এটা কি সত্যি নাকি আমার কল্পনা।এটা তো রুপার নাম্বার কলটা রিসিভ করলাম।
কাল কি আপনি ফ্রি আছেন? ওপর পাশ থেকে এমন একটা আস্ক করবে ভাবতেই পারিনি।
আমি বললাম হা কিন্তু কেন?
কাল একটু মার্কেটে যেতে চাচ্ছিলাম আপনি যদি যেতেন,
-
আমি রাজি হয়ে গেলাম কারন কাল শুক্রবার অফিস ছুটি ফ্রি আছি।ওর আম্মার কথা জিঙ্গেস করতেই বলল ভালো আছে। কিছুক্ষন কথা বলে কলটা কেটে দিলো।কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম টেরই পাইনি।
-
ঘুম ভাংল রুপার কলে।তারা তারি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করলাম।সকাল ৯ টা বেজে গেছে রুপা রেডি হয়ে বসে আছে।বার বার কল দিচ্ছিলো। আমি রেডি হয়ে নিচে চলে আসলাম।
রুপা নিচে দাড়িয়ে আছে।
-
আজ এই প্রথম রুপার পাশা পাশি বসেছি তাও আবার এত কাছে।খুব ইচ্ছে করছিল রুপার হাতে হাত রেখে যেতে।চাইলের পারছি না কোথাও বাধা পড়ে আছে।দুজনেই চুপচাপ কেও কিছুই বলছি না।ভালোই লাগছিল বসে ওর পাশে।ইচ্ছে করছিল বলতে আমি তোমার পাশে এভাবে সারা জিবন বসার অধিকার টুকু চায় দেবে কি আমাকে সেই অধিকার টুকু?
-
কখন যে সপিং মলের সামনে চলে আসলাম ভাবতেই পারিনি। কল্পনার জগতে কখন যে পা দিয়েছি বুঝতেই পারিনি।রুপার ডাকে কল্পনার জগত ছেড়ে বাস্তবে ফিরলাম।রুপা অনেক কিছু কিনল।বিশেষ করে একটা টি শার্ট কিনলো আমি হতভাগ হয়ে তাকিয়ে আছি মেয়েটার কি টি শার্ট পড়ার অভ্যাস আছে নাকি?
-
সারা দিন ঘুরলাম।ফুসকা খেলাম আরো অনেক কিছু।আজ এই প্রথম রুপা কে একটু হাসতে দেখেছি।আমার ফুসকা খাওয়া দেখে একটু হেসেছিল।হয়ত আমার ফুসকা খাওয়াটা হচ্ছিলো না বা অন্য কোন রহস্য ছিল।বাসাই চলে আসলাম।বাসাই এসে একটা প্যাকেট ধরাই দিয়ে বলল এটা আপনার জন্য।প্যাকেট টা না নিয়ে আর পারিনি তাই নিয়ে নিজের রুমে গেলাম।প্যাকেট টা খুলে দেখলাম আরে এটাতো সেই টি শার্ট যেটা আমি কিনে দিয়েছিলাম।তাহলে মেয়েটা কি আমার জন্যই কিনেছে??
-
এখন প্রায় রুপার সাথে ঘুরতে বের হয়।অফিস ছুটি থাকলেও না থাকলেও।তবে বেশির ভাগ সময় কাটে রাতে রাস্তাই হেঁটে হেঁটে গল্প করতে করতে।রুপার হয়ত ভালো লাগে।রুপার সাথে প্রতিদিন রাতে ফোনে কথা হয়।আমাদের সম্পর্কটা আরো গভির হয়েছে।
-
আজ বাবা মা আমার আর রুপার বিয়ের তারিখ ঠিক করেছে।রুপা আজ সারাদিন একটা বার কল দেইনি। আমিও বাবা মাকে রুপার বিষয়টা এখনো বলিনি ১১ দিন পর আমার আর রুপার বিয়ে।আমি রুপাকে হারাতে চাইনা তাই আর বাবা মাকে কিছুই বললাম না।
-
এদিকে কাল রুপার জন্মদিন রুপা আগেই বলেছিল।রাত পোহালেই জন্মদিন। কাল অফিস ছুটি নিয়েছি।রুপার জর্ন্ম দিনে কি গিফট দেওয়া যাই ভাবছিলাম।যা দেওয়া যায় কাল দিবনে এখন গুমাই।ঘুমিয়ে গেলাম।
-
বারিতে বেশি মানুষ নেই কয়েক জন আত্বিয় ছাড়া।রুপার কিছু বন্ধুরা আসছে।রুপা এখনো কেক সামনে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।আমি যাওয়া মাত্তই রুপার মুখটাতে যেন হাসি ফুটে উঠলো।এতক্ষন হয়ত গোমরা মুখ করে দাড়িয়ে ছিল।গিফট টা রুপার হাতে দিয়ে দিলাম। এবার রুপা কেক টা কাটলো।খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজের রুমে চলে আসলাম।আজ রুপাকে একদম অন্যরকম লাগছিল।বার বার আর চোখে তাকাচ্ছিল।আমিও বার বার ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম।
-
ছাদে বসে আছি মনে হলো পাশে কেও এসেছে।হা সত্যিই তো রুপা এসেছে।রুপা আজ সারি পড়েছে।সারি পড়াতে রুপাকে অনেক অনেক সুন্দর লাগছিল।আমি পাশে বসতে বললাম।রুপা আমার পাশে বসে আছে।কিছু বলতে গিয়েও বলতি পারছি না আমি।
-
আপনার গিফট টা অনেক সুন্দর,আমার খুব প্রছন্দ হয়েছে, 'আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কথাটা রুপা বলল।আমি কি বলবো ভাবছি গিফটা ছিল একটা ছেলে পুতুল আর একটা মেয়ে পুতুল এক সাথে জড়িয়ে আছে তাইই আমি বললাম ওই গিফটের মত আমরা কি এক হতে পারিনা???
-
রুপা চুপ করে আছে অবশেষে একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে হা সুচক জবাব টা বুঝিয়ে দিল আমরা এক হতে রাজি,,,,,,
-
কথা গুলো বলছিল রুপা।সাজিম নিরব হয়ে শুনছিলো রুপার কথা গুলো।যে মেয়ে সরা সরি বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে সেখানেই বা আর কি বলার আছে সাজিমের।
-
আমি এখন উঠি বলেই রুপা উঠে চলে যাচ্ছে।সাজিমের ইচ্ছা করলো একবার ডাক দিতে। কোথাই যেন বাধা পড়ল। চুপ করে একাই বসে আছে সাজিম।রুপার সাথে সাজিমের বিয়ের কথা চলছিল।রুপা সরা সরি না করে দিয়েছে সাজিম কে বিয়ে করতে পারবে না।
-
মেয়েটা খুব রাগি টাইপের।সব সময় চুপ চাপ থাকে।সাজিমদের ফ্লাটে ভাড়াটিয়া থাকে।মেয়ে দেখতে ফর্সা।কিন্তু এখানে আসার পর কোন সময় হাশি মুখটা সাজিম দেখতে পারেনি।মনে হত হাসতে যেন পারেনা।মুখটা গম্ভির হয়ে থাকত সব সময়।
-
বাবা মায়ের নাকি এই মেয়েটাকেই খুব প্রছন্দ হয়েছে এনাকেই তাদের বৌ মা বানাবে।কেন মেয়ে আর ছিলো না পৃথিবীতে?বাবা মায়ের ওপর খুব রাগ হচ্ছে এখন কিন্তু তবুও তো তারা আমার বাবা মা।রুপাকে আর কিছুই বলিনি। বাবা মাকেও জানালাম না যে মেয়ে বিয়েতে রাজি না চুপ চাপ চেপে থাকলাম দেখি কি হয়,
-
চলে যাচ্ছিল দিন কয়েক দিন পড়,কিরে অফিস যাবি না? মা কথাটা বলল।আজ শরিরটা ভালো নেই তাই আজ আর অফিস যাবোনা।বস কে কল দিয়ে ছুটি নিয়ে নিলাম।নিজের রুমে মোবাইলে গেম খেলছিলাম।হঠাৎ রুপা আমার রুমে এসে বলতে শুরু করলো
-
আমার মা কেমন যেন করছে প্লিজ একটু আসবেন? মোবাইলটা রেখে রুপার দিকে তাকালাম রুপার চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি পরছিলো।মোবাইল টা রেখে দ্রুত রুপার আম্মুর কাছে গেলাম।তারা তারি করে ধরে আমি আর রুপা নিচে নিয়ে গেলাম।একটা গাড়ি ঠিক করে সোজা ক্লিনিকে নিয়ে গেলাম।
-
গাড়িতে বসে রুপা খুব কাঁদছিলো, আমার কেমন জানি খুব খারাপ লাগছিল রুপার কান্না দেখে।রুপা আর আমি বসে আছি রুপা এখনো কেঁদেই চলেছে।রুপাকে কাঁদতে মানা করলাম বললাম সব ঠিক হয়ে যাবে।রুপাকে সান্তনা দেওয়া ছাড়া কিই বা করার আছে আমার।রুপা এখনো কেঁদেই চলেছে।
-
-
রুপার আম্মাকে বাসাই নিয়ে আসা হল।এখন তিনি মোটা মোটি একটু ভালো।রুপা এখন আর কাঁন্না করছে না।নিজের রুমে চলে আসলাম।ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নিলাম।হাসপাতাল থেকে আসতে আসতে প্রায় সন্ধা হয়ে গেছে।
-
ছাদের বসে ভাবছিলাম রুপা কেমন যেন লুক নিয়ে আমার দিকে বার বার তাকচ্ছিল।ওর লুক দেখে মনে হচ্ছিলো সে বড় ধরনের কোন অপরাধ করেছে আমার কাছে।না এই মেয়েটা অনেক কঠিন।
-
রাতে ছাদে বসে নিকটিনের ধোয়া উরাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম, বাবা মাকে মানা করে দিবো বলবো অন্য কোন মেয়ে দেখতে।হঠাৎ মনে হলো আমার পিছনে কেউ দারিয়ে আছে।পিছে তাকাতেই চমকে গেলাম এই তো রুপা।রুপা এখানে কেন আসলো?
-
আরে তুমি এত রাতে ছাদে আসলে যে,আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কথা বলল রুপা।আমি জানি আজকের ঘটনার জন্য ধন্যবাদ টা ওর কাছ থেকে হয়ত পাওয়ার যোগ্য হয়েছি।রুপা এদিক ওদিক হাটছিল, আমি বললাম আর কিছু বলবে? মেয়েটা চুপ হয়ে আছে আন্দাজ করতে পারলাম কোন কিছু বলবে তাই আবারো বললাম কিছু বললে বলতে পারো,
-
রুপা আস্তে করে বলে উঠলো আমি একজন কে ভালোবাস তাম।আমি কিছুটা চমকে গেলাম রুপার কথা শুনে। জিঙ্গেস করলাম এখন বাসো না?
প্রতি উত্তরে বলল হা এখনো বাসি।রুপার মুখটা যেন আরো বেশি মলিন হয়ে গেল।রুপা এখনো দাড়িয়ে ছিলো পাশে বসতে বললাম।রুপা পাশে এসে বসল।।
-
এবার রুপার দিকে ভালো করে তাকালাম।স্পষ্ট বোঝাই যাচ্ছে রুপার মনটা ভিষন খারাপ।আচ্ছা তুমি যাকে ভালো বাসো তার নাম কি কোথাই থাকে কি করে? রুপা এবার আমার দিকে তাকালো।
-
রুপা হয়ত আমার থেকে এমন কিছু আশা করেনি।তার পরেও বলল সে যাকে ভালো বাসতো তার নাম রিদয়।রুপা জানেনা সে এখন কি করে কোথাই আছে?হঠাৎ করে যেন হারিয়ে গেছে।
-
আমি জিঙ্গেস করলাম কি হয়েছিল ওর সাথে?রুপা এবার নিচের দিকে তাকিয়ে আছে হয়ত বলতে চাচ্ছে না, তাই আমি আবার বললাম বলতে না চাইলে থাক বলতে হবে না শুধু কষ্ট গুলো বাড়বে।
-
আমি ওকে খুব ভালো বাসতাম।আর এখনো বাসি।আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিলো অনেক আশা ছিল।দুজনে রাত জেগে জেগে গল্প করবো,একসাথে পাশা পাশি হাটবো,দুজনে ফুসকা খাবো,আর আমাদের ছোট্ট একটা পরিবার হবে।
-
রুপা এবার চুপ হয়ে গেল।আমি জিঙ্গেস করলাম তার পর
-
আমরা এক সাথে অনেক ঘুরেছি হাতে হাত রেখে।এমনো রাত কেটেছে সারা রাত ফোনে কথা বলে।এক দিন কথা না বললে মনে হত কত জনম কথা বলা হয়নি ওর সাথে।সেও আমাকে অনেক অনেক ভালো বাসতো।
-
তার পাগলামি গুলো ছিল কেমন যেন। হুট করে বাসার সামনে চলে আসতো এসে কল দিতো।খুব রাগ হতো কেন আসছে জিঙ্গেস করলেই বলতে দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই চলে আসলাম।অনেক রাত কেটেছে পুকুর পাড়ে বসে গল্পে।ওর মধ্যে এমন কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিলো না।কিন্তু সে মাঝে মাঝে বলতো আমি কোন একদিন হারিয়ে জাবো চাইলেও আর খুজে পাবে না।
-
ও কখনো সিরিয়াস ভাবে কথা বলে না।কিন্তু সেদিন ওর কথা বলাটা আমার কাছে অন্যরকম ছিলো।আমার কেমন যেন খুব খারাপ লাগছিল ভয় পাচ্ছিলাম।মনে হচ্ছিলো সত্য সত্যই হারিয়ে যাবে।
-
সত্যিই একদিন হারিয়ে গেল।হাজার চেষ্টা করেও যোগা যোগ করতে পারিনি।খাওয়া ভুলে গিয়েছিলাম, ঘুম কি জিনিস ভুলে গিয়েছিলাম।শুধু মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকতাম এই বুঝি কল আসছে রিদয়ের।
কিন্তু না অপেক্ষ সেই অপেক্ষাই থেকে গেলো।
-
আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি মেয়েটা কাঁদছে,আচ্ছা সে যদি ফিরে আসে তখন কি করবে কথাটা বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।ভাবছি বাবা মাকে না করে দিবো, কিনা।
রুপা কে বললাম আমি কি তোমার বন্ধু হয়ে থাকতে পারি?
-
রুপা মাথা নাড়িয়ে হা সূচক জবাব দিলো।রুপাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওর রুমে পাঠিয়ে দিলাম।আমি এখনো বসে আছি ছাদের ওপর।আজ কেন জানি ভালো লাগছে বসে থাকতে।আজকের তারা গুলো কেমন মিটি মিটি হাসছে।জল জল করছিল চাঁদ টা।
-
পরের দিন অফিসে চলে গেলাম। একটা কম্পানিতে জব করি।কাজ শেষ করে বাসাই ফিরলাম।মা খাবার বেড়ে দিচ্ছিল মা বলল রুপা নাকি আজ মার কাছে এসেছিল।আমি জিঙ্গেস করলাম কেন?
মা বলল এমনিতেই।খাচ্ছি আর ভাবছি দরকার ছাড়া যে মেয়ে আসে না সে আজ আমাদের এখানে এসেছিল মতলব কি??
-
রাতে শুয়ে ভাবছি রুপা কে একটা কল দেই।নাম্বারটা বের করলাম কল দিতে গিয়েও কেটে দিলাম।খুব ভয় করছিল মেয়েটা যদি কিছু বলে।
মোবাইলটা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।৫ মিনিট পর ফোনের রিংটন বেজে উঠলো।
-
স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি এটা কি সত্যি নাকি আমার কল্পনা।এটা তো রুপার নাম্বার কলটা রিসিভ করলাম।
কাল কি আপনি ফ্রি আছেন? ওপর পাশ থেকে এমন একটা আস্ক করবে ভাবতেই পারিনি।
আমি বললাম হা কিন্তু কেন?
কাল একটু মার্কেটে যেতে চাচ্ছিলাম আপনি যদি যেতেন,
-
আমি রাজি হয়ে গেলাম কারন কাল শুক্রবার অফিস ছুটি ফ্রি আছি।ওর আম্মার কথা জিঙ্গেস করতেই বলল ভালো আছে। কিছুক্ষন কথা বলে কলটা কেটে দিলো।কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম টেরই পাইনি।
-
ঘুম ভাংল রুপার কলে।তারা তারি উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করলাম।সকাল ৯ টা বেজে গেছে রুপা রেডি হয়ে বসে আছে।বার বার কল দিচ্ছিলো। আমি রেডি হয়ে নিচে চলে আসলাম।
রুপা নিচে দাড়িয়ে আছে।
-
আজ এই প্রথম রুপার পাশা পাশি বসেছি তাও আবার এত কাছে।খুব ইচ্ছে করছিল রুপার হাতে হাত রেখে যেতে।চাইলের পারছি না কোথাও বাধা পড়ে আছে।দুজনেই চুপচাপ কেও কিছুই বলছি না।ভালোই লাগছিল বসে ওর পাশে।ইচ্ছে করছিল বলতে আমি তোমার পাশে এভাবে সারা জিবন বসার অধিকার টুকু চায় দেবে কি আমাকে সেই অধিকার টুকু?
-
কখন যে সপিং মলের সামনে চলে আসলাম ভাবতেই পারিনি। কল্পনার জগতে কখন যে পা দিয়েছি বুঝতেই পারিনি।রুপার ডাকে কল্পনার জগত ছেড়ে বাস্তবে ফিরলাম।রুপা অনেক কিছু কিনল।বিশেষ করে একটা টি শার্ট কিনলো আমি হতভাগ হয়ে তাকিয়ে আছি মেয়েটার কি টি শার্ট পড়ার অভ্যাস আছে নাকি?
-
সারা দিন ঘুরলাম।ফুসকা খেলাম আরো অনেক কিছু।আজ এই প্রথম রুপা কে একটু হাসতে দেখেছি।আমার ফুসকা খাওয়া দেখে একটু হেসেছিল।হয়ত আমার ফুসকা খাওয়াটা হচ্ছিলো না বা অন্য কোন রহস্য ছিল।বাসাই চলে আসলাম।বাসাই এসে একটা প্যাকেট ধরাই দিয়ে বলল এটা আপনার জন্য।প্যাকেট টা না নিয়ে আর পারিনি তাই নিয়ে নিজের রুমে গেলাম।প্যাকেট টা খুলে দেখলাম আরে এটাতো সেই টি শার্ট যেটা আমি কিনে দিয়েছিলাম।তাহলে মেয়েটা কি আমার জন্যই কিনেছে??
-
এখন প্রায় রুপার সাথে ঘুরতে বের হয়।অফিস ছুটি থাকলেও না থাকলেও।তবে বেশির ভাগ সময় কাটে রাতে রাস্তাই হেঁটে হেঁটে গল্প করতে করতে।রুপার হয়ত ভালো লাগে।রুপার সাথে প্রতিদিন রাতে ফোনে কথা হয়।আমাদের সম্পর্কটা আরো গভির হয়েছে।
-
আজ বাবা মা আমার আর রুপার বিয়ের তারিখ ঠিক করেছে।রুপা আজ সারাদিন একটা বার কল দেইনি। আমিও বাবা মাকে রুপার বিষয়টা এখনো বলিনি ১১ দিন পর আমার আর রুপার বিয়ে।আমি রুপাকে হারাতে চাইনা তাই আর বাবা মাকে কিছুই বললাম না।
-
এদিকে কাল রুপার জন্মদিন রুপা আগেই বলেছিল।রাত পোহালেই জন্মদিন। কাল অফিস ছুটি নিয়েছি।রুপার জর্ন্ম দিনে কি গিফট দেওয়া যাই ভাবছিলাম।যা দেওয়া যায় কাল দিবনে এখন গুমাই।ঘুমিয়ে গেলাম।
-
বারিতে বেশি মানুষ নেই কয়েক জন আত্বিয় ছাড়া।রুপার কিছু বন্ধুরা আসছে।রুপা এখনো কেক সামনে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।আমি যাওয়া মাত্তই রুপার মুখটাতে যেন হাসি ফুটে উঠলো।এতক্ষন হয়ত গোমরা মুখ করে দাড়িয়ে ছিল।গিফট টা রুপার হাতে দিয়ে দিলাম। এবার রুপা কেক টা কাটলো।খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজের রুমে চলে আসলাম।আজ রুপাকে একদম অন্যরকম লাগছিল।বার বার আর চোখে তাকাচ্ছিল।আমিও বার বার ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম।
-
ছাদে বসে আছি মনে হলো পাশে কেও এসেছে।হা সত্যিই তো রুপা এসেছে।রুপা আজ সারি পড়েছে।সারি পড়াতে রুপাকে অনেক অনেক সুন্দর লাগছিল।আমি পাশে বসতে বললাম।রুপা আমার পাশে বসে আছে।কিছু বলতে গিয়েও বলতি পারছি না আমি।
-
আপনার গিফট টা অনেক সুন্দর,আমার খুব প্রছন্দ হয়েছে, 'আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কথাটা রুপা বলল।আমি কি বলবো ভাবছি গিফটা ছিল একটা ছেলে পুতুল আর একটা মেয়ে পুতুল এক সাথে জড়িয়ে আছে তাইই আমি বললাম ওই গিফটের মত আমরা কি এক হতে পারিনা???
-
রুপা চুপ করে আছে অবশেষে একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে হা সুচক জবাব টা বুঝিয়ে দিল আমরা এক হতে রাজি,,,,,,
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন