মেয়েটাকে আমি প্রথম দেখি আমার
এক আত্নীয়ার কুলখানি
অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠান যদিও মৃত ব্যক্তির জন্য,
কিন্তু ডেকোরেশন দেখলে
অজ্ঞাত কেউ বিয়ে বাড়ি ভেবে ভুল করবে।
এত জাঁকজমকপূর্ণ-
ও কুলখানি হয়!
গেস্টরা আসছেন হাসি মুখে,তাদেরকে
অভ্যর্থিত করা হচ্ছে অতি হাসি মুখে।
মাঝে মাঝে মৃত ব্যক্তির কথা উঠলে
নিয়ম করে এক দুইজন
কেঁদে উঠছেন।
বড়লোকদের ব্যাপার স্যাপার বোঝা মুশকিল।
.
মেয়েটাও ব্যতিক্রম ছিল না।
সে তার বয়সী কিছু মেয়েদের
সাথে বসে কি যেন গল্প করছিল আর
একটু পরপর হেসে
উঠছিল......
হাসি বেশি জোরে হচ্ছে কিনা
এটা বুঝতে আবার এদিক
ওদিক তাকাচ্ছিল।
.
তার এই চোর চোর স্বভাব
আমার খুবই মজা লেগেছিল,কিন্তু এ
কারনে তার প্রতি আকৃষ্ট হইনি আমি।
হয়েছিলাম তার হাতের
আঙ্গুল দেখে।
মেয়েটার মুখে হাত দিয়ে হাসার স্বভাব ছিল।
সে হাসছিলো,আর তার সুন্দর
হাতের রাঙানো নখগুলোতে
চোখ আটকে গেছিলো আমার।
কি দারুন ফর্সা শুকনো
মত হাতে মাঝারি সাইজের চিকন
আঙুল....নখে লেপ্টে থাকা গোলাপ রঙ,
আর অনামিকায়
আটকানো সাধারণ একটা আংটি........
সবটা জুড়ে কি এক আকর্ষণ!
.
আমি অবশ্য তার দিকে আর
খেয়াল দেয়ার সময় পাইনি,আম্মা
ধরে নিয়ে গিয়ে আত্নীয়-স্বজনদের
সাথে পরিচয় করাতে
লাগলেন।
হঠাৎ একজন মহিলার সাথে আম্মা
পরিচয় করালেন,সম্পর্কে
আমার ফুফুমা হন।
তার পাশেই দাঁড়ানো ছিল মেয়েটা.....সেই
ফুফুমার মেয়ে।
মেয়েটার সাথেও পরিচয় হয়ে গেল।
নাম
জানলাম-'আরমিন'.........
.
জানলাম ও এবার মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে।
পিচ্চি
পুরাই......স্বভাবেও তাই ছিল,খুব চঞ্চল।
মুহূর্ত পরিচয়ে আমাকে নিয়ে গেল
সে বাড়ির ছাদে।কত গল্প
করলো....
ও সম্পর্ক বুঝতো না।
ওর মা যাকে খালা
ডাকতো,দেখলাম আরমিনও তাকে খালা ডাকছে,
এই নিয়ে কি
হাসাহাসি!
অনুষ্ঠান শেষে চলে যাবার সময়
আমার ফোন নম্বর টাও নিয়ে
নিল এক ফাঁকে......
.
তারপর আরমিনের সাথে ফোনে কথা হত আমার।
ওর কোন
নির্দিষ্ট নম্বর পাইনি,
একেকবার একেক নম্বর থেকে ফোন
দিতো পাগলিটা।
আমি অবশ্য সবগুলোই সেইভ করে
রাখতাম,তবে ফোন দিলে কখনো পেতাম না।
বন্ধ দেখাতো।
.
কত অজানা তথ্য জানা হল আমার।
জানলাম ওর সাইকেল চালাতে খুব ভালো লাগে,
প্রজাপতি
ধরে বোতলে রাখতে ভালো লাগে।
মাটি দিয়ে পুতুল বানাতে
ভালো লাগে।
এসব শুনে একটাই মন্তব্য মনে
আসতো ওর ব্যাপারে-মেয়েটা
বেশিই বাচ্চা,ছটফটে একটা প্রজাপতি ও।
.
মাঝেমাঝে ওদের বাসায় যেতাম।
ফুফুমা আদর করতেন খুব।
আরমিনকে নিয়ে মাঝে মাঝে
ফুচকা খেতে বের হতাম।
মেয়েটার রিক্সা ভ্রমণও খুব প্রিয় ছিল।
.
একদিন বিকেলে ফোন দিয়ে হরবর করে
এক গাদা প্রশ্ন করতে
লাগলো আরমিন........
-ফামিম ভাই আপনার
পড়াশুনা করতে কেমন লাগে?
-খুব বেশি ভাল লাগে না,
তবে চাপে পড়ে করতে হয়।
-আমার খুব ভাল লাগে,
কিন্তু আর মনে হয় পড়াশোনা হবে না।
-কেন? আমি অবাক হয়ে জীজ্ঞেস করলাম।
-ওমা!আপনি আমার ব্যাপারে কিছু জানেন না?
এসব ঘটনা তো
লুকোনো থাকে না,
বাতাসের আগে খবর ছড়িয়ে
পড়ে,হিহিহিহি.....
-মানে?
-আপনি জানেন না আমার বিয়ে হয়েছিল?
ছেলে ইতালি
থাকে।তার মনে হয় আমাকে পছন্দ হয়নি
তাই সাথে করে
আমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা
থাকলেও নিয়ে যায়নি।
উল্টো দু
সপ্তাহ পর ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছে।
হাহাহহা।
.
আমি কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না।
আরমিন সাহায্য করলো-
"কি?চুপ করে গেলেন যে?
আচ্ছা আমি নাহয় রেখে দিই
আজ,আল্লাহ হাফেয।"
কান থেকে ফোন নামিয়ে হতবাক হয়ে বসে রইলাম।
কি বলল
আরমিন এতক্ষণ? এইটুকুন বাচ্চা মেয়ে।
কতই বয়স?১৬/১৭?
বাবা মা-ই বা কিভাবে বিয়ে দিয়ে ভুল করলেন,
যার শাস্তি
পাচ্ছে এই ছটফটে পরীটা........
.
এরপর কয়েক সপ্তাহ আরমিনের
কোনো খোঁজ ছিল না....
ফোন
পাইনি আর।
পেলাম একেবারে আজ সকালে......
ঘুমাচ্ছিলাম।
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি আননোন নম্বর।
ঘুম ঘুম
অবস্থাতেই কল রিসিভ করলাম.....
বিরক্তি নিয়ে হ্যালো
বলার সাথেই ওপাশ থেকে
আরমিনের কণ্ঠ ভেসে এল.......
-এত ঘুম কেন আপনার ফামিম ভাই?
কত মানুষ যে কত রাত না
ঘুমিয়ে পার করে, কখনো তাদের কথা ভেবেছেন?
আরমিনের কথায় চমকে উঠলাম আমি,
এ কেমন ক্ষোভ ওর গলায়!
-পৃথিবীর অদ্ভুত নিয়ম,
কাউকে সুখী হতে হলে অন্য কাউকে
দুঃখী হতে হবে।
এই যে আমার প্রাক্তন স্বামী, আমাকে
কষ্টের সাগরে ডুবিয়েই তো
সে সুখী হতে পেরেছে তাইনা?
আমি আবারো চমকালাম।
ঘুম ছুটে গেল চোখ থেকে।মেয়েটা
যেন হুট করে বড় হয়ে গেছে,
কি অদ্ভুতভাবে কথা বলছে!
-কি হয়েছে আরমিন?
তোমার মন খারাপ?
-মন? নেই তো।খারাপ আর হবে কি?
-প্লিজ এভাবে কথা বলো না,
স্বাভাবিকভাবে বল....চঞ্চলা
আরমিনের মত করে।
-কেন?কিভাবে কথা বলছি?
যে মেয়ে ডিভোর্সড,সেই মেয়ের
তো এত চঞ্চলতা মানায় না।
-কি বলছো এসব!
-অবাক হচ্ছেন কেন? আপনারাই
শিখিয়েছেন,আপনাদের
সমাজ।যে মেয়ের স্বামী ডিভোর
্স লেটার পাঠায় তার তো
ভালোভাবে নিজের মত করে
বাঁচার অধিকার নেই তাইনা?
-আরমিন প্লিজ শান্ত হও,তুমি বের হবে?
চল কোথাও গিয়ে ঘুরে
আসি।ভালো লাগবে।
-হাহ.....আর দেখা হবে না ফামিম ভাই।
ভাল থাকবেন।
আর একটা অনুরোধ,
একটা মেয়ের মধ্যে প্রাণ সৃষ্টি করে তার
প্রাণ নিয়ে নেয়ার ভুল কখনো
করবেন না আমার জীবনের
জানোয়ারটার মত......
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না
দিয়ে আরমিন ফোন কেটে দিল।
আমি ফোন কানে নিয়ে বসে থাকলাম।
হাহাকার মেশানো
পোঁ পোঁ আওয়াজ আসতে লাগলো সেখান থেকে।
.
শেষ কথাগুলো কি বলল আরমিন?
প্রাণ সৃষ্টি করে প্রাণ নেয়া
মানে?
আরমিন কি প্রেগনেন্ট?
আর ও কেন বলল আর দেখা হবে না?
বাচ্চা মেয়েটা কিছু করে
বসবে না তো!
দ্রুত আরমিনের সব নম্বরে ডায়াল করে গেলাম......
নাহ,সব বন্ধ।
.
আম্মার ফোনে কল এলো
এই ঘটনার আরো ৪ ঘন্টা পর।
আরমিন সুইসাইড করেছে।
খবরটা শুনে আমি বসে পড়লাম।
নিজের উপর রাগ লাগতে
লাগলো প্রচন্ড.....
এরকম ইঙ্গিতই সে দিয়েছিলো।
আমি কি
পারতাম না তাকে বাঁচাতে?
তখনই যদি ওদের বাসায় গিয়ে
ওকে বোঝাতাম!
ভীষণ কষ্ট হতে লাগলো আমার।
.
.
আম্মাসহ এসেছি আরমিনদের বাসায়।
ওই তো সামনে
আরমিনের লাশ.....
মেয়েটা নিথর হয়ে পড়ে আছে....
অথচ তার
এই বিকেলে কলেজের বন্ধুদের
সাথে আইসক্রিম পার্লারে
যাওয়ার কথা।
তার পরিনতির দায় কে নেবে?
তার বাবা মা?না তার সেই
স্বামি?নাকি এই সমাজের সে
সব লোকজন যারা নানান
বাঁকা কথা শুনিয়ে মেয়েটার
জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল?
উত্তর নেই..........
এক আত্নীয়ার কুলখানি
অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠান যদিও মৃত ব্যক্তির জন্য,
কিন্তু ডেকোরেশন দেখলে
অজ্ঞাত কেউ বিয়ে বাড়ি ভেবে ভুল করবে।
এত জাঁকজমকপূর্ণ-
ও কুলখানি হয়!
গেস্টরা আসছেন হাসি মুখে,তাদেরকে
অভ্যর্থিত করা হচ্ছে অতি হাসি মুখে।
মাঝে মাঝে মৃত ব্যক্তির কথা উঠলে
নিয়ম করে এক দুইজন
কেঁদে উঠছেন।
বড়লোকদের ব্যাপার স্যাপার বোঝা মুশকিল।
.
মেয়েটাও ব্যতিক্রম ছিল না।
সে তার বয়সী কিছু মেয়েদের
সাথে বসে কি যেন গল্প করছিল আর
একটু পরপর হেসে
উঠছিল......
হাসি বেশি জোরে হচ্ছে কিনা
এটা বুঝতে আবার এদিক
ওদিক তাকাচ্ছিল।
.
তার এই চোর চোর স্বভাব
আমার খুবই মজা লেগেছিল,কিন্তু এ
কারনে তার প্রতি আকৃষ্ট হইনি আমি।
হয়েছিলাম তার হাতের
আঙ্গুল দেখে।
মেয়েটার মুখে হাত দিয়ে হাসার স্বভাব ছিল।
সে হাসছিলো,আর তার সুন্দর
হাতের রাঙানো নখগুলোতে
চোখ আটকে গেছিলো আমার।
কি দারুন ফর্সা শুকনো
মত হাতে মাঝারি সাইজের চিকন
আঙুল....নখে লেপ্টে থাকা গোলাপ রঙ,
আর অনামিকায়
আটকানো সাধারণ একটা আংটি........
সবটা জুড়ে কি এক আকর্ষণ!
.
আমি অবশ্য তার দিকে আর
খেয়াল দেয়ার সময় পাইনি,আম্মা
ধরে নিয়ে গিয়ে আত্নীয়-স্বজনদের
সাথে পরিচয় করাতে
লাগলেন।
হঠাৎ একজন মহিলার সাথে আম্মা
পরিচয় করালেন,সম্পর্কে
আমার ফুফুমা হন।
তার পাশেই দাঁড়ানো ছিল মেয়েটা.....সেই
ফুফুমার মেয়ে।
মেয়েটার সাথেও পরিচয় হয়ে গেল।
নাম
জানলাম-'আরমিন'.........
.
জানলাম ও এবার মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে।
পিচ্চি
পুরাই......স্বভাবেও তাই ছিল,খুব চঞ্চল।
মুহূর্ত পরিচয়ে আমাকে নিয়ে গেল
সে বাড়ির ছাদে।কত গল্প
করলো....
ও সম্পর্ক বুঝতো না।
ওর মা যাকে খালা
ডাকতো,দেখলাম আরমিনও তাকে খালা ডাকছে,
এই নিয়ে কি
হাসাহাসি!
অনুষ্ঠান শেষে চলে যাবার সময়
আমার ফোন নম্বর টাও নিয়ে
নিল এক ফাঁকে......
.
তারপর আরমিনের সাথে ফোনে কথা হত আমার।
ওর কোন
নির্দিষ্ট নম্বর পাইনি,
একেকবার একেক নম্বর থেকে ফোন
দিতো পাগলিটা।
আমি অবশ্য সবগুলোই সেইভ করে
রাখতাম,তবে ফোন দিলে কখনো পেতাম না।
বন্ধ দেখাতো।
.
কত অজানা তথ্য জানা হল আমার।
জানলাম ওর সাইকেল চালাতে খুব ভালো লাগে,
প্রজাপতি
ধরে বোতলে রাখতে ভালো লাগে।
মাটি দিয়ে পুতুল বানাতে
ভালো লাগে।
এসব শুনে একটাই মন্তব্য মনে
আসতো ওর ব্যাপারে-মেয়েটা
বেশিই বাচ্চা,ছটফটে একটা প্রজাপতি ও।
.
মাঝেমাঝে ওদের বাসায় যেতাম।
ফুফুমা আদর করতেন খুব।
আরমিনকে নিয়ে মাঝে মাঝে
ফুচকা খেতে বের হতাম।
মেয়েটার রিক্সা ভ্রমণও খুব প্রিয় ছিল।
.
একদিন বিকেলে ফোন দিয়ে হরবর করে
এক গাদা প্রশ্ন করতে
লাগলো আরমিন........
-ফামিম ভাই আপনার
পড়াশুনা করতে কেমন লাগে?
-খুব বেশি ভাল লাগে না,
তবে চাপে পড়ে করতে হয়।
-আমার খুব ভাল লাগে,
কিন্তু আর মনে হয় পড়াশোনা হবে না।
-কেন? আমি অবাক হয়ে জীজ্ঞেস করলাম।
-ওমা!আপনি আমার ব্যাপারে কিছু জানেন না?
এসব ঘটনা তো
লুকোনো থাকে না,
বাতাসের আগে খবর ছড়িয়ে
পড়ে,হিহিহিহি.....
-মানে?
-আপনি জানেন না আমার বিয়ে হয়েছিল?
ছেলে ইতালি
থাকে।তার মনে হয় আমাকে পছন্দ হয়নি
তাই সাথে করে
আমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা
থাকলেও নিয়ে যায়নি।
উল্টো দু
সপ্তাহ পর ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছে।
হাহাহহা।
.
আমি কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না।
আরমিন সাহায্য করলো-
"কি?চুপ করে গেলেন যে?
আচ্ছা আমি নাহয় রেখে দিই
আজ,আল্লাহ হাফেয।"
কান থেকে ফোন নামিয়ে হতবাক হয়ে বসে রইলাম।
কি বলল
আরমিন এতক্ষণ? এইটুকুন বাচ্চা মেয়ে।
কতই বয়স?১৬/১৭?
বাবা মা-ই বা কিভাবে বিয়ে দিয়ে ভুল করলেন,
যার শাস্তি
পাচ্ছে এই ছটফটে পরীটা........
.
এরপর কয়েক সপ্তাহ আরমিনের
কোনো খোঁজ ছিল না....
ফোন
পাইনি আর।
পেলাম একেবারে আজ সকালে......
ঘুমাচ্ছিলাম।
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি আননোন নম্বর।
ঘুম ঘুম
অবস্থাতেই কল রিসিভ করলাম.....
বিরক্তি নিয়ে হ্যালো
বলার সাথেই ওপাশ থেকে
আরমিনের কণ্ঠ ভেসে এল.......
-এত ঘুম কেন আপনার ফামিম ভাই?
কত মানুষ যে কত রাত না
ঘুমিয়ে পার করে, কখনো তাদের কথা ভেবেছেন?
আরমিনের কথায় চমকে উঠলাম আমি,
এ কেমন ক্ষোভ ওর গলায়!
-পৃথিবীর অদ্ভুত নিয়ম,
কাউকে সুখী হতে হলে অন্য কাউকে
দুঃখী হতে হবে।
এই যে আমার প্রাক্তন স্বামী, আমাকে
কষ্টের সাগরে ডুবিয়েই তো
সে সুখী হতে পেরেছে তাইনা?
আমি আবারো চমকালাম।
ঘুম ছুটে গেল চোখ থেকে।মেয়েটা
যেন হুট করে বড় হয়ে গেছে,
কি অদ্ভুতভাবে কথা বলছে!
-কি হয়েছে আরমিন?
তোমার মন খারাপ?
-মন? নেই তো।খারাপ আর হবে কি?
-প্লিজ এভাবে কথা বলো না,
স্বাভাবিকভাবে বল....চঞ্চলা
আরমিনের মত করে।
-কেন?কিভাবে কথা বলছি?
যে মেয়ে ডিভোর্সড,সেই মেয়ের
তো এত চঞ্চলতা মানায় না।
-কি বলছো এসব!
-অবাক হচ্ছেন কেন? আপনারাই
শিখিয়েছেন,আপনাদের
সমাজ।যে মেয়ের স্বামী ডিভোর
্স লেটার পাঠায় তার তো
ভালোভাবে নিজের মত করে
বাঁচার অধিকার নেই তাইনা?
-আরমিন প্লিজ শান্ত হও,তুমি বের হবে?
চল কোথাও গিয়ে ঘুরে
আসি।ভালো লাগবে।
-হাহ.....আর দেখা হবে না ফামিম ভাই।
ভাল থাকবেন।
আর একটা অনুরোধ,
একটা মেয়ের মধ্যে প্রাণ সৃষ্টি করে তার
প্রাণ নিয়ে নেয়ার ভুল কখনো
করবেন না আমার জীবনের
জানোয়ারটার মত......
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না
দিয়ে আরমিন ফোন কেটে দিল।
আমি ফোন কানে নিয়ে বসে থাকলাম।
হাহাকার মেশানো
পোঁ পোঁ আওয়াজ আসতে লাগলো সেখান থেকে।
.
শেষ কথাগুলো কি বলল আরমিন?
প্রাণ সৃষ্টি করে প্রাণ নেয়া
মানে?
আরমিন কি প্রেগনেন্ট?
আর ও কেন বলল আর দেখা হবে না?
বাচ্চা মেয়েটা কিছু করে
বসবে না তো!
দ্রুত আরমিনের সব নম্বরে ডায়াল করে গেলাম......
নাহ,সব বন্ধ।
.
আম্মার ফোনে কল এলো
এই ঘটনার আরো ৪ ঘন্টা পর।
আরমিন সুইসাইড করেছে।
খবরটা শুনে আমি বসে পড়লাম।
নিজের উপর রাগ লাগতে
লাগলো প্রচন্ড.....
এরকম ইঙ্গিতই সে দিয়েছিলো।
আমি কি
পারতাম না তাকে বাঁচাতে?
তখনই যদি ওদের বাসায় গিয়ে
ওকে বোঝাতাম!
ভীষণ কষ্ট হতে লাগলো আমার।
.
.
আম্মাসহ এসেছি আরমিনদের বাসায়।
ওই তো সামনে
আরমিনের লাশ.....
মেয়েটা নিথর হয়ে পড়ে আছে....
অথচ তার
এই বিকেলে কলেজের বন্ধুদের
সাথে আইসক্রিম পার্লারে
যাওয়ার কথা।
তার পরিনতির দায় কে নেবে?
তার বাবা মা?না তার সেই
স্বামি?নাকি এই সমাজের সে
সব লোকজন যারা নানান
বাঁকা কথা শুনিয়ে মেয়েটার
জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল?
উত্তর নেই..........
এক কুলখানিতে পরিচয় হয়েছিল
আরমিন নামের ছটফটে
জোনাকিটার সাথে।
আজ বাসায় ফিরে যাচ্ছি সেই
আরমিনেরই কুলখানির দাওয়াত নিয়ে.....
আরমিন নামের ছটফটে
জোনাকিটার সাথে।
আজ বাসায় ফিরে যাচ্ছি সেই
আরমিনেরই কুলখানির দাওয়াত নিয়ে.....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন