বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭

স্বার্থহীন ভালোবাসা

-"দুপুরে খেয়েছো তুমি"।(রিদিতা)
-"হ্যাঁ,তুমি খেয়েছো"।(তুষার)
-"হ্যাঁ।বাসায় আসবে কখন,পারলে আজ একটু
তারাতারি এসো"।(রিদিতা)
-"আজকে অফিসে অনেক কাজ আছে,আসতে
দেরি হবে।তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে যেও"।(তুষার)
"এখন তাহলে পরিচয় দেওয়া যাক।আমি তুষার..
আর এতক্ষন কথা হচ্ছিলো আমার আর আমার..
বউ রিদিতার সাথে।২ বছর হলো আমারা বিয়ে..
করেছি,৫ বছর সম্পর্ক করে।আমি এখন নিজে..
ব্যবসা করছি,কারন আমার অন্যের অধীনে..
কাজ করতে ভালো লাগে না।আজ অনেক..
কষ্ট করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি।অনেক কষ্টের..
পর আমি আমার লক্ষে যেতে পেরেছি"।
"আমার বাবা-মা কে তা আমি জানি না।
ছোট থেকে অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি।
কেউ আমার সাথে কথা বলতো না,
খেলতেও নিতো না।এমন কি আমার..
সাথে খারাপ ব্যবহার করতো এবং..
মারতো।অনেক কান্না করতাম তখন..
আর ভাবতাম আজ যদি আমার বাবা-মা..
থাকতো তাহলে কেউ আমার সাথে খারাপ..
কিছু করতে পারতো না।সব সময় একা..
থাকতাম,সবার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে..
রাখতাম।তাও সবাই আমার সাথে খারাপ..
ব্যবহার করতো,মারতো।এক দিন আমার..
অনেক রাগ উঠে একটি ছেলেকে মেরে..
নাক,মুখ ফাটিয়ে দেই।তাই আমাকে এতিম..
খানা থেকে বের করে দেয়।তখন প্রতিজ্ঞা করি..
যে জীবনে বড় কিছু হবো"।
"তখন থেকে আমি পথ শিশুদের সাথে থাকি।
ছোট ছিলাম বলে কেউ কাজ দিতো না,তাও..
অনেক কষ্ট করে পড়াশুনা করি।সকালে কাজ..
করতাম আর রাত হলে রাস্তার আলোতে গিয়ে..
পড়তাম।এমনও দিন গেছে না খেয়েও ছিলাম..
শুধু পানি ছাড়া।পড়া-লেখায় ভালো ছিলাম..
তাই ভালো ফলাফল করতাম পরীক্ষায়।এভাবে..
নিজের খরচ নিজে চালাতাম।অনেক কষ্ট করতাম.. প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য"।
"কলেজে উঠার পর ২টা টিউশনি পাই,ভালো..
ছাত্র ছিলাম বলে।পাশা-পাশি হোটেলে কাজ..
করতাম।যা পেতাম তা দিয়ে আমার পড়াশুনার..
খরচ চালানো যেতো।কলেজে নিয়মিত ক্লাস..
করতাম।এক দিন খেয়াল করলাম আমার মতো..
একটি মেয়ে ক্লাসে সব সময় চুপচাপ থাকে,
কারো সাথে মিশে না এমন কি কথাও বলে না"।
"এভাবে অনেক দিন পার হয়ে যায়।এক..
দিন ক্লাস শেষ করে মাঠের এক পাশে..
গিয়ে বই পরছিলাম।অন্য পাশে তাকাতেই..
দেখি আমারদের ক্লাসের সেই মেয়েটি কাঁদছে।
আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।আমি..
মেয়েটির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি.. হয়েছে,আপনি কাঁদছেন কেনো"।
-"তা কি আপনার জানতে হবে।আর আমি তো
আপনাকে চিনি না"।(মেয়েটি)
-"আমি আর আপনি একি ক্লাসে পড়ি।আপনাকে
কাঁদতে দেখে ভাবলাম আপনার হয়তো কোন সমস্যা
হয়েছে তাই জিজ্ঞেস করলাম।আপনি যেহেতু বলবেন
না তাহলে আসি।আর বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত
আমি"।(তুষার)
-"না আসলে আমি আপনাকে চিনি না তাই বললাম।
আপনি যেহেতু শুনতে চান তাহলে বলছি আমি কেনো
কাঁদছি"।(মেয়টি)
-"আচ্ছা বলেন কি হয়েছে আপনার"।(তুষার)
"আমার নাম রিদিতা।আমার পরিবারে সবাই..
আছে।শুধু আমার আপন মা নেই সৎ মা..
আছে।ছোট থাকতে আমার মা মারা যায়।
বাবা তখন আমার কথা ভেবে আবার বিয়ে..
করেন।প্রথমে ভালো ছিল,আমি সব সময়..
আমার আপন মায়ের মতো দেখতাম।সব..
সময় আশেপাশে থাকতাম,কাজে সাহায্য..
করতাম।আমার সৎ মায়ের যখন সন্তান হয়..
তখন থেকে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার..
করা শুরু করে।আমাকে মারতো,নানা ভাবে..
আমাকে অত্যাচার করতো।আমি বাবাকে..
কিছু বলতাম না।এক সময় আমার পড়ালেখা..
বন্ধ করে দেয়,অনেক কষ্টে আজ এতো দূর..
এসেছি।কিন্তু আজ আমাকে বাসা থেকে বের..
করে দেয়,বাবা তখন কিছু বলেনি।আমার নামে..
বাবার কাছে মিথ্যা নালিশ দিতো।তাই এইখানে..
বসে কাঁদছিলাম"।
"রিদিতার কথা শুনে কি বলবো ভাবছি।আমার..
সাথে অনেকটা মিল আছে।আমিও তখন আমার সম্পর্কে রিদিতাকে সব বললাম।দুজন দুজনের..
কষ্ট গুলি শেয়ার করলাম"।
"তখন থেকে আমারদের বন্ধুত্ত শুরু হয়।অনেক..
কষ্ট করে রিদিতাকে হোস্টেল ঠিক করে দেই।
রিদিতার সব খরচ আমি দিতাম।কারন আমি যা..
টাকা আয় করতাম অনেকটাই মাস শেষে জমা.. থাকতো।আমি টিউশনির পাশাপাশি আরও কাজ.. করতাম।নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সব কিছুই.. করতাম,এমন কি মাঝে মাঝে না খেয়েও থাকতাম।আমি যাই করতাম না কেনো খারাপ কোন কাজ.. করতাম না।আমি খারাপ কিছু করে বা মানুষকে..
ঠকিয়ে বড় হতে চাই না"।
"এক সময় আমাদের মাঝে সম্পর্ক হয়।আমারা..
দুজন বিভিন্ন কাজ করতাম আমাদের লক্ষে..
পৌছানর জন্য।তাই পড়ালেখা শেষ হবার..
আগেই আমি নিজেই ব্যবসা করা শুরু করতে..
পারি।পড়ালেখা শেষ হবার পর আমারা বিয়ে..
করি।এখন আমাদের কোন অভাব নেই।আমাদের..
সব কিছুই আছে গাড়ি বাড়ি সব আছে"।
"অনেক কথা বললাম আপনাদের সাথে..
এখন যাই রিদিতা আমার জন্য অপেক্ষা..
করছে।আমি জানি আমি না আশা পর্যন্ত..
রিদিতা না খেয়ে থাকবে।তাই তারাতারি..
অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় চলে আসলাম"।
"নক করার সাথে সাথেই গেট খুলে দিলো।
আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো এতক্ষণ।
জানতো আমি তারাতারি আসবো,যতই..
কাজ থাকুক না কেনো আমার"।
-"তুমি ফ্রেস হয়ে এসো আমি খাবার দিচ্ছি"।(রিদিতা)
-"আচ্ছা"।(তুষার)
-"কি হলো ফ্রেস হতে তোমার এতো সময় লাগে,খাবার
তো ঠাণ্ডা হয়ে যাবে,তারাতারি এসো"।(রিদিতা)
-"এইতো আসচ্ছি"।(তুষার)
"কাল রিদিতার জন্মদিন তাই আমি সারপ্রাইজ..
দেবার জন্য সব কিছু ঠিক করে রেখছি।অফিস..
থেকে আসার সময় সব কিছু নিয়ে এসেছি।কিন্তু..
কিছুই দেখে নাই এখন শুধু অপেক্ষায় আছি কখন.. ১২.০১ বাজবে।রিদিতা কাজ করতে দেখে আমি.. তারাতারি রুম সাজালাম আর সব কিছু ঠিক করে.. রাখলাম"।
-"শুভ জন্মদিন রিদিতা।এই গুলি সব তোমার জন্য"।(তুষার)
-"আমি বুঝিনা তুমি প্রতিবার আমার জন্মদিনে এতো
কিছু আমি কখনো কিছু বুঝতে পারি না"।(রিদিতা)
-"তোমাকে বুঝতে দিলে তো আর সারপ্রাইজ থাকলো
না।তাই তোমাকে না জানিয়ে সব কিছু করি।
ভালোবাসি অনেক তোমাকে রিদিতা"।(তুষার)
-"আমিও অনেক ভালোবাসি তোমাকে।চলো আজ
দুজনে হেঁটে এই শহরটা ঘুরবো"।(রিদিতা)
"আমারা পুরো রাত না ঘুমিয়ে দুজনে হেঁটে..
জন্মদিন পালন করেছি।সকালে বাসায় এসে..
তারপর ঘুমালাম"।
-"তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে"।(রিদিতা)
-"আমি জানি ভালো কিছু হবে।তুমি যখন আমাকে
কিছু দেও তখন সেইটা ভালো কিছুই হয়"।(তুষার)
-"তুমি বাবা হতে যাচ্ছো"।(রিদিতা)
-"তুমি সত্যি বলছো।আজ তুমি আমার সব সপ্ন পূরণ
করে দিলে।আমি বাবা হবো ভাবতেই আমার মধ্যে
যে কি ভালো লাগছে আমি বুঝাতে পারবো না
তোমাকে"।(তুষার)
"আমি এখন আগের থেকে বেশি সময় দেই..
রিদিতাকে।সব কিছুর প্রতি খেয়াল রাখি যেন..
কোন সমস্যা না হয়"।
"দেখতে দেখতে সময় চলে আসলো।আমার..
মেয়ে সন্তান হয়েছে।দেখতে রিদিতার মতো।
রিদিতা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি মেয়েও..
হয়েছে।আমি আর রিদিতা মিলে আমাদের..
মেয়ের নাম আরিসা রাখছি"।
"১ বছর ২ বছর এভাবে আরিসা বড় হচ্ছে।
আজ আরিসাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলাম।
ভালোই চলছে আমাদের সংসার।আরিসাকে..
নিয়ে আমার অনেক সুখে আছি।খুব চালাক..
হয়েছে আরিসা এখনি আমাকে শাসন করে"।

ভেঙে গেছে

কাব্য এই কাব্য এখানে আসো একটু।
- কি হইছে?
- কি হইছে মানে! আমি কি তোমাকে কারণ ছাড়া ডাকতে পারি না নাকি??
- সাথী কি বলো এসব,, এমন করে বলো না প্লিজ।
- তাহলে তুমি ওভাবে বললে কেন?
- আচ্ছা বাবা সরি, আর এমন হবে না।
- কান ধরে বলো।
- এইযে মহারাণী কান ধরলাম হইছে এখন?
- হুম, এবার চল।
- কই যাব?
- কলেজে ব্রেক টাইম, ক্যান্টিনে যাব।
- আচ্ছা জান চলো,
- পাগল একটা,
- তোমার জন্য।
- যা শয়তান কোথাকার।
- হিহিহি পেত্নীর শয়তান।
- কিইইইই, আমি পেত্নী।
- এইইইই না, আমি সেটা বলি নি।
- সেটা বলি নি না, আমাকে আর ভালো লাগে না তাই না, আমার জন্য ভালবাসা কমে গেছে তাই না। তার জন্য আগে আমাকে বলতে পরী আর এখন বলো পেত্নী। উহুঁ উহুঁ,,
- আরে এই পাগলী কাঁদছো কেন? আমি সত্যি বলছি ওভাবে বলতে চাইনি। তুমি কি থেকে কি ভাবো না, নিজেও জানো না।
- তাহলে বললে কেন? আমি পেত্নী?
- উফফফ বাবা, শয়তানের সাথে তো পেত্নীই মানায় তাই না।
- হুম।
- তাহলে আমি শয়তান হলে তুমি পেত্নী।
- আবার,,, আম্মুওওওও।।
- এই চুপ চুপ ( মুখ চেপে ধরলাম) এই পাগলী কি করছো, কলেজে এসে কেউ এভাবে কাদে নাকি?? সবাই পাগল বলবো তো।
আচ্ছা, বাবা " আবার কানে ধরছি, তুমি আমার মিষ্টি পরী। এবার হইছে?
- আবার তো ওটা বলবা না?
- একদম না। ( হাত দিয়ে চোখের পানি টা মুছিয়ে দিলাম)
এবার চল।
.
উহ্ গড, একে নিয়ে কি করি না,,, এতো কান্না যে কই থাকে? একটু কিছু বলা যায় না, ওমনি বাচ্চাদের মতো কান্না করে।
এতো অল্প কিছুতে শুধু তার জন্যই কাদা যায়, যাকে মন থেকে অনেক ভালবাসা যায়। আর ওই কান্নারত কিউট পাগলী পরীটাও আমাকে অনেক ভালবাসে। তারজন্যই আমি ওকে নিয়ে একটু কিছু বাজে বললেই কেদে দেয়। আমার কাছে যেটা ফাজলামো আর দুষ্টামির ওর কাছে সেটা খারাপ লাগা কষ্টের। তাই কেদে দেয়, আর আমিও কিছু বলতে পারি না।
.
আমি কাব্য। আর ও সাথী। দুজনেই একই ক্লাসে পড়ি। এবার অনার্স ফাস্ট ইয়ার। আমাদের ভালবাসার শুরু অনেক আগে থেকেই। ইন্টারে থাকার সময়ই আমাদের ভালবাসার জন্ম। আর সেখান থেকেই আমাদের প্রেম চলে আসছে। এই কয়েক বছরে দুজন দুজনের অনেক কাছাকাছি চলে আসছি। একদম দুই দেহ এক প্রাণ। আমার বিশ্বাস আমাদের এ ভালবাসা সারা জীবনই আমাদের দুজনের মাঝে থাকবে।
.
আমরা যখন ইন্টারে পড়ি, মানে ফাস্ট ইয়ার। তখন থেকেই আমাদের চোখাচোখি হতো। নতুন ভর্তি হওয়া কলেজে এই মেয়ের প্রতিই প্রথম ক্রাশ খাই। তখন আমরা দুজনেই গাজীপুর থাকতাম। ওখানকার কলেজে পড়তাম। আমার বাসা থেকে ওর বাসা কিছুটা দূরে ছিলো, তাই ওর বাসায় গিয়ে উকি মারা মানে নিজের গলায় নিজে ছাগলের দড়ি পরা। তাই ওকে আমি কলেজে থেকেই মন ভরে দেখতাম।
.
প্রথম আমাদের কোনো দিন মুখে কথা হয়নি সবসময় চোখেই কথা হতো। চোখ দিয়েই আমরা আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করতাম। আমাদের চোখের চাহনি যে এতো তাড়াতাড়ি তীব্র ভালবাসায় রুপ নিবে সেটা আমি ভাবতে পারি নি।
.
যেমন :
.
সেদিন ছিলো আকাশে মেঘলা মেঘলা ভাব, কলেজ ছুটি দিছে। যেই কলেজের বাইরে পা রাখছি ওমনি শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। এখন কি করব বুঝতে পারছি না।
কাছেই আমাদের কলেজের এক মেয়ে ছিলো,, ওর আমাদের বাসার পাশেই, আমি ওনাকে আপু বলেই ডাকি।
.
গিয়ে বললাম,
আপু ছাতাটা দিন না, আমার টা আনি নাই। আপনি আপনার কোনো বান্ধবীর ছাতার নিচে যান।
- আরে তার দরকার নেই, আমি তো তোমার বড় আপুই হই, ছাতার নিচে আসো।
- ( সিনিয়র ক্লাসের, বয়সেও বড় তাই ভাইয়ের মতো ছাতার নিচে চলে গেলাম, কতদূর আপুর সাথে যাওয়ার পরই দেখি কে যেন, হ্যাঁচকা টান দিয়ে ছাতা নিয়ে ফেলে দিল,,
ভালো করে দেখলাম এতো সাথী)
- ( আপু) এই মেয়ে তুমি কি করলে
এটা, ছাতা ফেললে কেন?
- ( সাথী) চুপ ছেমরী, ওই হারামজাদা তুই এই মেয়ের ছাতার নিচে কি করছ?
- আরে আপুর সাথে যাচ্ছিলাম, বৃষ্টি হচ্ছে তো তাই।
- একদম মিথ্যা কথা বলবি না, আমি জানি তোর কোনো আপু নেই,, সত্যি করে বল এটা কে?
:- সত্যি বলছি, এটা আমার পাশের বাসার বড় আপু,,, আমার সিনিয়র। ( দেখি আপু আমাদের কান্ড দেখে হাসতেছে)
- সিনিয়র আপু এটা তাই না???
- আপু আপনি কিছু বলুন না, ওকে। বিশ্বাস করছে না আপনি আমার আপু হোন।
- আমি কি বলব?? আর কাব্য তুমি তো আমাকে কোনো দিন বলো নি তোমার রিলেশন আছে।
- রিলেশন না, মনে করেন আমাদের টা চোখে চোখে প্রেম, কোনো দিন কথা হয়নি। কিন্তু আজ ও আপনার সাথে আমাকে দেখে এরকম করবে আমি ভাবতেও পারি নি।
- ওহ্, বুঝতে পারছি। এই তোমার নাম কি?
- সাথী ( রাগী সুরে)
- এতো রাগ করছো কেন? তুমি যেটা ভাবছো সেটা না। কাব্য আমার ভাইয়ের মতো আমরা দুজন সিনিয়র জুনিয়র। আমি কাব্যের সিনিয়র। আর তুমি ভাবছো আমার আর ওর মাঝে রিলেশন আছে তাই না,, তোমার বয়ফ্রেন্ড নিয়ে তুমি যাও, আর আমার ছাতা ফেরত দাও।
- সরি আপু, বুঝতে পারিনি। এই নিন আপনার ছাতা, আর এখন ছাতার দরকার হবে না, বৃষ্টি কমে গেছে।
- আমি আসি আর তোমরা তোমাদের ঝগড়া মেটাও ( আপুর প্রস্থান)
.
- এখন কি হলো, চুপ করলে কেন? এতখন তো চেচামেচি করে গলা ফাটিয়ে ফেলছো।
- চুপ, একদম চুপ,, তোমার সাথে যদি আরেক দিন কোন মেয়েকে দেখি তো তোমারে আমি শেষ করে ফেলবো, সেটা আপুই হোক আর যেই হোক।
- (মাইয়া বলে কি রে) আইচ্ছা।
- প্রপোজ করো এখন।
- আজকে এই বৃষ্টির দিনে?
- হুম।
- কাল করলে হয় না?
- ( ভেবে) ওকে। কাল করবা।
- ওকে জান, আসো একটু জড়িয়ে ধরি।
- একদম না।
- কেন?
- প্রপোজ করার পর।
- উফফফ, ওকে।
.
খুশিতে নাচানাচি করতে করতে বাড়ি আসলাম। ভাবতেই পারছি না, চোখের চাহনিতে এতো ভালবাসা। কয়জনের আছে এমন কপাল। আমার ভাগ্য টা খুবই ভালো রে মাইরি।
.
অতঃপর তার পরের দিন সাথীকে প্রপোজ করলাম আর,,,,,,, তারপর যেন কি করলাম,, ধুরর মনে নাই।
.
ওহ্, হ্যাঁ, তারপর জড়িয়ে ধরছিলাম।
.
তারপর থেকেই আমাদের ভালবাসার শুরু।
আমরা এখন দুজনেই ঢাকা থাকি। দুজনে ঢাকা থাকা আর আসার একটা ঘটনা আছে সেটা হলো,,
আমাদের দুজনের যখন সেকেন্ড ইয়ারে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো, তখন সাথীর পরিবার ঢাকা এসে পরে, সাথী আসতে চাইছিল না, তবুও আর পরিবারের জন্য বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছিল। আর যেদিন এসে পরে সেদিন আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্নাকাটি করে।
.
সেদিন আমিও কেদে ছিলাম। সাথী চলে যাওয়ার কয়েক দিন পরই বুদ্ধি খাটিয়ে, বাবাকে বুঝিয়ে পড়াশুনার ছুতো দিয়ে আমিও চলে আসি ঢাকায়।
.
এখানে এসে দুজনে এক কলেজে ভর্তি হয়ে আবার শুরু হয় চুটিয়ে প্রেম। আমাদের মাঝে কোনো বাধা ছিলো না সবসময় আমরা হ্যাপি ছিলাম। দিন ফুরাতে লাগল, বছর শেষ হতে লাগল, ঢাকায়ই কয়েক বছর গেল।
.
সেই ভালবাসার শুরু থেকে আজ এই অনার্স পর্যন্ত আসলাম, অনেক ঝড়ঝাপটার মুখোমুখি হয়েছি আমরা তবুও কখনো দুজন দুজনের হাত ছাড়ি নি। সেই জন্য আজও আমাদের রিলেশন এতো শক্ত রয়েছে। ভালবাসা নামক শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি আমরা।
.
.
আর কয়েক দিন পর আমাদের অনার্সের টেস্ট পরীক্ষা শুরু। তাই আমরা দুজনেই ভালভাবে প্রস্তুতি নিলাম, টেস্ট পরীক্ষার।
পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল। সুন্দর দুজন হাসিখুশি দিন কাটাচ্ছি।
.
এমন একদিন সময়ে। রাত তিনটে বাজে, একটা বাজে সপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেল, তারপর আর কিছুতেই ঘুম আসছে না। তাই ভাবলাম, পাগলীটাকে একটু ডিস্টার্ব করি।
.
ফোনের স্কিন লাইট জ্বালিয়ে দেখি, রাত তিনটা বেজে পাঁচ মিনিট।
সাথীরে ফোন দিলাম। ফোনে দিয়ে তো আমার মাথায় তালগাছ ভেঙে পরলো। এতরাতে পাগলীর ফোন ওয়েটিং। আমার কেমন যেন ভয় হতে লাগল, বুকের বাম পাশে হালকা ব্যথা অনুভব করলাম।
.
এত রাতে সাথী আবার কার সাথে কথা বলছে। পর পর অনেক বার চেষ্টা করলাম, ঢুকছে না, শুধু ওয়েটিং বলছে।
১ ঘন্টা পর আবার চেষ্টা করলাম,, ভোর হয়ে গেল কিন্তু এখনো ফোন ওয়েটিং। দাড়া আজ আগে কলেজে আসি তারপর মজা দেখাবো।
.
আমি আজকে একটু আগেই কলেজে গেলাম কিন্তু সাথী আজ একটু দেরী করেই কলেজে আসলো।
এসে দেখি আমার কাছে না এসে বান্ধবীদের সাথে হাসাহাসিতে মেতে উঠছে।
- সাথী এদিকে আসো তো একটু।
- কেন?
- কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি এখন?
- এমন ভাবে বলছো কেন?
- এদিকে আসতে বলছি আসো।
- আচ্ছা,,
- তোমার ফোন কই?
- আমার কাছেই।
- ওটা দাও।
- কেন?
- প্রশ্ন করছো কেন? আগে তো প্রশ্ন করতে না। আমি তো আগে বলতাম, তোমার জীবন টা দিয়ে দাও, তুমি বলতে নিয়ে নাও কিন্তু এখন এই ছোটখাটো জিনিস নিয়ে প্রশ্ন করছো কেন?
- কাব্য তোমার কি হইছে, এরকম ভাবে আজ কথা বলছো কেন?
- ফোন দাও,
- এই নাও, যত্তোসব।
- (সাথীর কথার ধরন দেখে অবাক হলাম,, যাইহোক, আগে কল লিস্ট বের করলাম) সাথী এদিকে তাকাও।
- এবার,,,
- আমি তোমাকে রাত তিনটার সময় ফোন দিছিলাম, ধরলে না কেন?
- আরে এই ব্যপার। ফোন সাইলেন্ট ছিলো আর আমি ঘুমোচ্ছিলাম।
- হাহাহা সাথী তুমি মিথ্যা বলা শিখে গেছো। এতো রাতে কার সাথে কথা বলছিলে, ফোন ওয়েটিং ছিলো কেন?
- ইয়ে মানে কি বলছো?
- চুপ, একদম চুপ। কার সাথে কথা বলছিলে?
- এমন করে বলছো কেন?
- কথা ঘুরাবে না, যা বলছি তার উওর দাও।
- আমার কাজিনের সাথে,,
- মেয়ে না ছেলে।
- মেয়ে।
- নাম্বার কই, বের করো। ডায়াল করা নাম্বার থেকে বের করো।
- এই নাও।
( ঠাস)
- এটা কি হ্যাঁ, রাত ৮টার সময় কল দিছিলা সেটা বের করে দিছো,, রাত তিনটের টা কই?
- তুমি আমাকে মারলে?
- আরেক টা মারব এখন,, রাত তিনটের টা বের কর।
- পাব কই সেটা।
- কথা বলছো তখন আর এখন বলছো পাব কই সেটা। ডিলিট করছো কেন?
.
একথা বলতেই ফোনে ভাইব্রেট করে উঠলো। অচেনা নাম্বার থেকে কল, নাম সেভ করা নেই। ফোন আমার হাতেই ছিলো, তাই আমিই ফোন ধরলাম। সাথীকে মারছি বলে ও ওখানে দাড়িয়ে কাঁদছে।
- হ্যালো।
- সাথী কই তুমি? এখনো আসছো না কেন? ( অপর পাশ থেকে)
- কই আসবে?
- তুমি কে?
- আমি ওর ফ্রেন্ড ( আমি বলি নাই আমি ওর বয়ফ্রেন্ড)
- ও সাথীকে কল টা দাও তো একটু।
- কেন?
- ওর সাথে কথা আছে।
- তুমি ওর কে হও?
- আরে ভাই আমি ওর বয়ফ্রেন্ড ওর কাছে ফোন দাও। ( আস্তে) কেন যে এসব ছেলের সাথে বন্ধুত করে!!
- সাথী এই সাথী নাও তোমার বয়ফ্রেন্ড ফোন দিছে
( সাথী আমার কথা শুনে চমকে উঠলো) আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কি যেন বললো, তারপর কেটে দিয়ে আমার কাছে আসলো।
- সরি কাব্য।
( ঠাস)
- তোর লজ্জা করে না, এখন সরি বলতে আইছত,, ছিঃ। আমার এতদিন ধরে তিলেতিলে গড়ে উঠা ভালবাসার পাহাড় এক নিমিষে ভেঙে দিলি। এই তোর ভালবাসা। আমাকে ছেড়ে একটা সেকেন্ড থাকতে পারতি না, আজ আমাকে রেখে অন্য একজনের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলছিস, তোর একটুও আমার কথা মনে পরলো না তখন??
- ( চুপ করে আছে)
- কিছু বলছিস না কেন?? কিভাবে বলবি, তোর বলার কিছু আছে আর! আমি ভেবেছিলাম আমাদের রিলেশন সারাজীবনই থাকবে কিন্তু আজ এখানে এটা শেষ হয়ে যাবে আমি ভাবতেও পারি নাই।
তোর জন্য আমি আমার মা বাবাকে ওখানে রেখে ঢাকায় এসে থাকছি তার বদলে তুই এটাই আমাকে উপহার দিলি।
- ক্ষমা করে দিও।
- আমি মরে গেলেও তোকে কোনো দিন ক্ষমা করব না। বিশ্বাসঘাতক। তোকে আমি ভালবেসে বিশ্বাস করছিলাম, তুই সেটা ধরে রাখতে পারলি না।
তোর ভালবাসা এতদিন তাহলে মিথ্যা ছিলো,,
আবার আমার সামনে এখনো দাড়িয়ে আছিস লজ্জা করে না তোর, যা এখান থেকে।
( একথা বলার পরই দৌড়ে চলে গেল)
.
আমি আর কি করব, ওখানেই বসে পড়লাম আর চোখ দিয়ে পানি ফেলতে লাগলাম। হায়রে মেয়ে মানুষ। দিনের বেলা প্রেম করে একজনের সাথে আর রাতের বেলা প্রেম করে আরেক জনের সাথে।
এটাই কি ওদের ভালবাসা, না ওদের ভেতর ভালবাসা বলতে কিছু নেই!!।।
.
যদি সত্যি ওর ভেতর ভালবাসা থাকতো তাহলে ও আমার সাথে এমন
করতে পারতো???
আমার সব সপ্ন শেষ করে দিল।
.
ধোকা খেলাম জীবনে,, এই প্রথম ভালবাসার ধোঁকা।
এখন বুঝতে পারছি, কাছের মানুষ টা অন্যের হলে কতটা কষ্ট হয় নিজের।
.
.
.
.
এই চোখের পানিই ছিলো আমার ভালবাসার শেষ পরিণতি।

ভালোবাসার শেষ পরিণতি

এক গ্রামে এক মোড়ল ছিল, 
গ্রামের সব মানুষ তাকে শ্রোদ্ধা ভক্তি করতো।
সবাই তাকে পীর, গুরুজন মানতো।
গ্রামের মানুষের কাছে মোড়ল ছিল মাটির মানুষ।
.
মানুষের বিপদে আপদে মোড়ল সব সময় পাশে থাকতেন।
গ্রামে যত অন্যায় অত্তাচার হতো মোড়ল বিচার শালিস করতেন।
সবাই তার বিচার মেনে নিতো।
.
মোড়লের ধন-সম্পদ, টাকার কোন কমতি ছিলনা।
শুধু সন্তানের অভাব ছিল।
অনেক ফকির দরবেশ বাড়িতে আনলেন।
আকুতি মিনতি করলেন কোন কাজ হলোনা।
মাজারে মাজারে ঘুরলেন, শেষ পর্যন্ত মোড়লের কোন সন্তান হলোনা।
.
অবশেষে মা মরা গরীব কৃষকের মেয়ে নিয়ে আসলেন।
জন্মের ১ দিন পরে তার মা মারা যায়।
মোড়ল তার নাম রাখলেন (সাদিয়া)
.
আজকে মোড়লের বাড়ি আলোকিত হলো।
পূর্ণতা পেল। সবাই হাসি খুশিতে মাতামাতি।
মোড়ল গ্রামের মানুষদের, আত্মীয় স্বজন দের দাওয়াত দিলেন।
সব কিছু ধুমধাম করে আয়োজন করা হলো। মনে হচ্ছে এ যেন বিয়ে বাড়ি।
.
অন্যদিকে সাদিয়া ধীরে ধীরে বড় হতে লাগলো। মোড়ল কখনো বুঝতে দিতনা যে সাদিয়া তাদের পালিত মেয়ে।
 সাদিয়া কোন কিছুর কমতি পেতনা, চাওয়া মাত্র পেয়ে যেত।
সাদিয়া পড়াশুনায় অনেক ভাল ছিল।
.
স্কুল জীবন পেরিয়ে কলেজ জীবনে পা রেখেছে।
সাদিয়া নিয়মিত কলেজে যেত।
কলেজে রনি নামের একটি ছেলের সাথে সাদিয়ার পরিচয় হয়।
রনি দেখতে খুব স্মাট, হিরোদের মতো চেহারা ছিল।
যেন কোন মেয়ে রনি কে দেখে ক্রাশ খেত।
.
সাদিয়া আর রনির বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে অনেক গভীরে চলে যায়।
কেউ কাউকে ছাড়া এক মহুত্ব থাকতে পারতোনা।
মনে মনে তারা দুজন দুজনকে পছন্দ করতো, কিন্তু কেউ কাউকে বলতো না।
.
ফেব্রুয়ারি মাস, কিছুদিন পড়ে ভ্যালেনটাইন ডে, ভালোবাসা দিবস।
ভালোবাসা দিবসে, সাদিয়া রনি কলেজ মাঠে দেখা করে। সাদিয়া রনিকে প্রপোজ করে।
সেই থেকে তাদের ভালবাসা শুরু।
সাদিয়া রনি মাঝে মাঝে পার্কে, সিনেমা হলে, হোটেলে যেত।
.
যত টাকা লাগতো সব সাদিয়া ই দিতো।
 রনি প্রায় সাদিয়ার কাছে থেকে টাকা নিতো। সাদিয়া কোন কিছু না বলে ই টাকা দিয়ে দিতো।
এ রকম চলতে চলতে সাদিয়া রনির এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো।
সাদিয়া রনির পরিবার তাদের প্রেমের কথা জেনে গেল।
সাদিয়ার বাড়ি থেকে বাহিরে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল।
.
রনি যে নেশা করতো সাদিয়া তা জানতো না।
রনি পেনসিডিল, ইয়াবা, হিরোইন সহ সব ধরনের নেশা করতো।
আর এই জন্য সাদিয়ার কাছে থেকে রনি মাঝে মাঝে ই টাকা নিতো।
.
বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে সাদিয়া রনি পালিয়ে বিয়ে করে।
সাদিয়া কিছু গহনা আর পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। বিয়ের এক মাস তাদের সংসার ভালই চলছিল।
.
রনি এখন মাঝে মাঝে অনেক রাত করে বাসাই ফেরে। মদ খেত, নেশা করতো, মাতাল হয়ে আসতো।
সাদিয়া অনেক বার বাড়ন করতো কিন্তু কোন কাজ হতোনা।
.
এই দিকে সব টাকা শেষের পথে।
রনি টাকার জন্য সাদিয়ার উপরে অত্তাচার শুরু করলো।
সাদিয়া অত্তাচার সহ্য করে থাকতে লাগলো।
.
একদিন গভীর রাতে রক্ত মাখা শরীরে রনি বাসাই ফিরলো।
পরে জানতে পারা গেল এক লাখ টাকার বিনিময়ে রনি মানুষ খুন করে।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রনি কে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এক বছর পরে রনির জাবতজীবন কারাদন্ড হয়ে যায়।
শেষ হয়ে যায় সাদিয়ার নিষ্পাপ ভালবাসা।
.
গল্পটি কাল্পনিক হলে ও আমাদের সমাজে হাজার হাজার সাদিয়া রনির জীবন ভিন্য দিক থেকে মিল পাওয়া যায়। শুধু চেহারা স্মাট থাকলে হয়না।
সাদিয়ার মতো মেয়েদের একবার প্রেমে পড়ার আগে ভাবা উচিত, সেই ছেলে/মেয়েটি কেমন, তার আচার ব্যবহার কেমন, তাদের বংসো মর্যাদা কেমন।
সব কিছু ভেবে তাদের প্রেমে পড়া উচিত।

তোর জন্যই আজ আমি সুখী

সুপ্রিতা কথা বল, আমি থাকতে তোমার কিছু হতে দেবো না।
: আমি আপনার কাছে থেকে মরতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে করবো। ( কাঁদো কাঁদো কন্ঠে এসব বলেই সে অজ্ঞান হয়ে পড়লো)
:এসব কথা বলো না সুপ্রিতা,,,,আমি তোমাকে আর হারাতে চাই না।
,
কেউ কি আছেন,,, আমাদের একটু সাহায্য করুন,,,,( রাস্তার আশপাশের কয়েকজন মানুষ আমাদের পাশের হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিলো)
,
আমি এখন রোগির বেডে শুয়ে আছি,,,আর ভাবছি পুরোনো দিনের কথা।
,
আমার নাম রাকিব,,,আমি তখন বুয়েট এ পড়তাম,,,আমি আর অহনা, আমরা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসতাম, সেই কলেজ লাইফ থেকেই,,,অহনা আমার দুই বছরের জুনিয়র,,,অহনা ছিলো খুব বড়লোকের মেয়ে,,,আমি সবসময় ভাবতাম পড়ালেখার পর ভালো একটা চাকরি করে অহনা কে বিয়ে করবো,,,যেই ভাবা সেই কাজ,,,,আমি বুয়েট শেষ করেই ১ টা ভালো চাকরি পেয়ে গেলাম।
,
চাকরির ১ বছর পর,,,আমি আমার ফ্যামিলি কে ওদের বাসাই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে পাঠালাম।
,
: আমার ছেলে রাকিব আর আপনার মেয়ে অহনা দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসে,,,,তাই আমি আপনার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। (আমার বাবা বলতে লাগলো)
: এসেছেন ভালো কথা, বসুন,,,,দেখুন আমি আমার মেয়ে কে স্বাধিনভাবে চলতে দিয়েছি,,,, তাই বলে এই নয় যে ওর কথামত ওকে বিয়ে দিতে হবে,,,,আমি ওর জন্য ভালো ১ জন পাত্র দেখেছি,,,সে খুব বড়লোক,,, তাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসা,,,, সেখানে থাকলে আমার মেয়ে শুখেই থাকবে।
,
মোট কথা বলতে গেলে আমরা বড়লোক নয় দেখে আমার বাবা মা কে অনেক কথা বলেছে,,,,আমার বাবা মাও সব শুনেও কিছু বললো না,,,,কারণ আমরা গরিব বলে।
,
বাবা এসে আমাকে সব খুলে বললেন,,,,আর বললেন অহনা কে ভুলে যেতে,,,,আমার আর অহনার কলেজ লাইফ থেকে সম্পর্ক,,,, এত সহজে কি ভুলা যায়,,,,তাই আমি অহনা কে ফোন করে বললাম দেখা করার জন্য।
,
: দেখ অহনা আমরা গরিব বলে,,,তোমার বাবা আমাদের এভাবে অপমান করবে আমি ভাবতেও পারিনি।
: রাকিব আমি না তোমাকে ছাড়া বাচবো না,,,,তাই চল আমরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলি,,,বাবা কি ভাবলো তাতে আমার কোন যাই আসে না।
: না, অহনা তা হয় না,,,,তুমি স্বাধিনভাবে বড় হয়েছো তুমি কষ্ট কি তা বুজবে না,,,আমি জানি আমার ফ্যামিলি আমাকে কত কষ্ট করে পড়ালেখা শিখিয়েছে,,,আমি যদি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি,,,,,তাহলে আমি আমার মা বাবার কাছে থাকতে পারবো না,,,,তার চেয়ে ভালো হয় যদি তুমি আমাকে ৪ বছর সময় দাও।
: ৪ বছর সময় দিয়ে কি হবে???
: আমি তোমার বাবার লেভেলে এসে,, দেখিয়ে দিতে চাই,,,,তুমি পারবে আমাকে ৪ বছর সময় দিতে।
,
(অহনা আমাকে জরিয়ে ধরে বলতে লাগলো)
,
: হ্যা, পারবো,,,,আমি তোমার জন্য সব করতে পারবো।
: তোমার বাবা যদি তোমাকে বিয়ে দিতে চায়???
: আমি বাবা কে বলবো,,,, আমি আরো পড়তে চায়,,,,পড়ালেখার শেষে বিয়ে করতে চায়।
: যদি তারপরেও বিয়ের জন্য চাপ দেই,,,তখন কি করবে???
: তখন আমি তোমার কাছে পালিয়ে চলে আসবো।
: পাগলি কোথাকার।
: হুম আমি পাগলি, তোমার পাগলি।
,
পরের দিন সকাল,,,,আমি আমার অফিসে চলে আসলাম,,,,,এসেই ভাবতে লাগলাম কিভাবে অল্প সময়ে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়,,,,তাও আবার সৎ পথে,,,,হটাৎ আমার মাথায় একটা বুদ্ধি চলে আসলো,,,,যেই ভাবা সেই কাজ।
,
আমি অনলাইনে খুজতে লাগলাম,,,বিদেশে কোথাও ভালো জব পাওয়া যাই কিনা,,,, খুজতে খুজতে ভালো ১ টা জবও পেয়ে গেলাম আমেরিকায়,,,, খুব ভালো বেতন বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা।
,
,
সবার কাজ থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম,,, এয়ারপোর্ট এ অহনার আশার কথা,,,,তাই দেরি না করে তাড়াতাড়ি এয়ারপোর্ট এ চলে আসলাম,,,,এসেই দেখি অহনা দাঁড়িয়ে আছে,,,,আমাকে দেখেই সে দৌড়ে চলে আসলো,,,,আমাকে জোড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো।
,
: আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো রাকিব।
: কেনো, তোমাকে তো বলেছিই মাত্র ৪ বছর আমাকে সময় দিতে,,,,যদি তোমার বাবার লেভেলে পৌছাতে না পারি তারপর না হয় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো।
: সুখে থাকতে হলে তো, একটু তো কষ্ট করে হবে নাকি।
: হুম,,,তাই বলে ৪ বছর তুমি আমার থেকে দুড়ে থাকবে??
: দেখ অহনা আমার কিছু করার নেই।
,
,
অহনার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম, আমেরিকায়,,,,প্র
তিদিন রাতে মোবাইলে মা বাবা আমার ছোট ভাই আর অহনার সাথে কথা বলতাম,,,,একদিন অহনা আমাকে ফোন করে বলতে লাগলো।
,
: রাকিব আমি যে তোমার সাথে প্রতিদিন ফোনে কথা বলি, তাতে তোমার কাজের অসুবিধা হয় না??
: হোক তাতে কি সমস্যা??
: না, আমি চাই না যে তোমার কাজের কোন অসুবিধা হোক,,,আমি কাল থেকে তোমাকে আর কল করবো না,,,,আর আমার মোবাইল বন্ধ থাকবে,,,আমি চাই না যে আমার জন্য তোমার কাজের অসুবিধা হোক তাই তুমি আমাকে আর কল কর না।
: এসব তুম কি বলছো???
: আমি ঠিকি বলছি,,, আশা করি তুমি মনোযোগ দিয়ে কাজ করবে
,
ফোনে কথা বলেই সে ফোন বন্ধ করে দিলো,,,,আমার কয়েকদিন অহনার জন্য মন খারাপ লাগলো,,,,অহনার কথা আমি আমার ফ্যামিলির কাউকেই বলিনি।
,
কয়েক মাস কাজ করার পর আমি আমার বাবা কে বললাম।
,
,
: বাবা তুমি ব্যাংক থেকে কিছু টাকা লোন নিতে পারবে।
: কেনো রাকিব টাকা দিয়ে কি করবি??
: বাবা আমি টাকা দিয়ে কিছু করবো না,,,তুমি আর রাইহান(রাইহান আমার ছোট ভাই) মিলে ১ টা ব্যবসা করবে।
: ঠিক আছে আমি দেখছি।
,
বাবা ব্যাংক থেকে টাকা লোন নিয়ে ১ টা ছোট কাটো গার্মেন্টস খুললো,,,, তারপর ব্যাংকের টাকা শোধ করে আমার টাকা দিয়ে আবার ব্যাংক থেকে টাকা লোন নিয়ে ব্যবসা টাকে আরো বড় করা হলো,,,,তারপর আবার ব্যাংকের টাকা শোধ করে আরো ১ টা গার্মেন্টস খুলার কথা বললাম,,,,এভাবেই আমার বাবা আর আমার ভাই রাইহান মিলে ১ টার পর ১ টা ব্যবসা বাড়াতে লাগলো।
,
,
আজ ৪ বছর হতে ৬ দিন বাকি,,,,এখন আমার ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা,,,,আমাদের ৭ টা গার্মেন্টস আরো দুই টা ইন্ডাস্ট্রি আছে,,,,তাছাড়াও দুইটা ১০ তলা বাড়ি আর ২ তা গাড়ি আছে,,,, আমি বাবা মাকে ফোন কিরে বললাম।
,
: বাবা আমি ৬ দিন পর বাড়িতে আসছি।
: হ্যা বাবা তুই তাড়াতাড়ি বাড়িতে আয়,,,তোর মা তোর জন্য খুব চিন্তা করছে।
: হ্যা বাবা আমি তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসছি,,,,বাবা ১ টা কাজ করতে পারবে???
: কি বাবা??
: অহনা কে বলতে পারবে এয়ারপোর্ট এ থাকার জন্য।
: ঠিক আছে বাবা, আমি বলবো।
,
আমি এখন এয়ারপোর্ট চলে আসলাম। দূরেই দেখতে পাচ্ছি বাবা মা আর আমার ছোট ভাই রাইহান দাঁড়িয়ে আছে।
,
: বাবা অহনা আসেনি??
: না বাবা অহনা একটু অসুস্থ তাই আসতে পারেনি।
(তখন আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো, ৪ বছর পর দেশে আসলাম অথচ অহনা আসলো না)
: ওওওওও
: তুই আগে বাসায় চল,,তারপর অহনার সাথে দেখা করিস।
,
,
বাসায় এসে জানতে পারলাম অহনার বিয়ে হয়ে গেছে,,,,যখন জানতে পারলাম অহনার বিয়ে হয়ে গেছে তখন খুব কান্না পাচ্ছিলো,,,,তাই ওয়াশরুমে গিয়ে অনেকক্ষণ কান্না করলাম,,,,আমি পুরোই ভেংয়ে পরেছিলাম,,,,ঠিকমত খাওয়াদাওয়া করছিলাম না,,,,এভাবে আমার শরিল আসতে আসতে অসুস্থ হতে শুরু করলো,,,,,তা দেখে আমার মা বাবা আমাকে বিয়ে দিতো চাইলো,,,আমি বিয়ে করতে চাচ্ছিলাম না,,,,কিন্তু মা আমাকে কসম কাটলো তুই যদি বিয়ে না করিস তাহলে আমি কিছুই খাবো না,,,তোর মতই না খেয়ে মরে যাবো,,,,তাই বাধ্য হয়ে বিয়ে করলাম।
,
আজ আমার বিয়ে হলো ১ সপ্তাহ,,, আমার বৌয়ের সাথে এখনো কোন কথা হয়নি,,,শুধু মার কাছ থেকে জানতে পারলাম মেয়েটার নাম সুপ্রিতা,,,, আমি প্রতিদিন দেখি সুপ্রিতা ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরে আমার জন্য কাঁদতে কাঁদতে দোয়া করে,,,,আমি দেখেও না দেখার ভান করি,,,,আমি ঠিকভাবে খায় না দেখে সেও না খেয়ে থাকে,,,,, মেয়েটার জন্য খুব মায়া হয়,,,,কেনই বা দরকার ছিলো ওর জীবন টা নষ্ট করার,,,,এভাবে কেটে গেলো ১ টা মাস।
,
,
আমি অহনার কথা ভাবছিলাম,,,,ঠিক এই সময়ে সুপ্রিতা আমার কাছে খাবার নিয়ে এসে বলতে লাগলো।
: আপনি ডিনার করবেন না???
,
আমার মাথা হয়ে গেলো গরম,,,,আমি সুপ্রিতা ১ টা থাপ্পড় নিয়ে বললাম।
: আমাকে নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না,,,,তোমাকে কে বলেছে আমার জিবনে আসতে,,,,আমি তো তোমাকে চাই না,,,,শুধু মা বাবার কথা ভেবে তোমাকে বিয়ে করেছি,,,,তুমি আমার সামনে আর কখনোই আসবে না।
,
সুপ্রিতা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো,,,,,আমার খুব কষ্ট লাগলো,,,,অহনার জন্য আমি সুপ্রিতা কে কেনো মারতে গেলাম,,,,কেনোই বা এতগুলো কথা শোনাতে গেলাম,,,,যেমন ছিলো তেমনিই তো অনেক ভালোছিলো,,,,আমি নিজেকে খুব অপরাধী ভাবতে লাগলাম।
,
পরেরদিন সকালে জানতে পারলাম সুপ্রিতা রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছে।
,
সুপ্রিতা চলে গেলো আজ ১ সপ্তাহ হচ্ছে,,,,,আমি সুপ্রিতা কে খুব মিস করছি,,,,যেই মেয়েটা ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরে আমার জন্য কেঁদে কেঁদে দোয়া করতে,,,,আমি না খেলে সেও কিছু খেত না,,,,সে আজ আমাকে ছাড়া না জানি কিভাবে আছে।
,
,
আমি ভাবতে লাগলাম অহনা যদি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করে সুখে থাকতে পারে তাহলে আমি কেনো পারবো না,,,তাই ভাবলাম সুপ্রিতা কে নিয়ে আসবো,,,,কে জানে মেয়েটা আমার জন্য কত কষ্ট পাচ্ছে।
,
,
যেই ভাবা সেই কাজ,,,,আমি মা কে বলে গাড়ি নিয়ে সুপ্রিতাদের বাসার উদ্দেেশ্য রওনা হলাম।
,
কলিংবেল বাজাতেই সুপ্রিতার মা দরজা খুললো।
: মা, সুপ্রিতা বাসায় আছে??
: হ্যা বাবা সুপ্রিতা বাসায় আছে,,,,যেদিন থেকে এসেছে সেদিন থেকে পানি ছাড়া কিছুই খায় নি,,,,তুমি একটু দেখ না ওকে কিছু খাওয়াতে পারকিনা?
: সুপ্রিতা কোথায়, মা?
: ও ওর রুমেই আছে।
: মা, আপনি সুপ্রিতার জন্য খাবার ব্যবস্থা কিরুন।
: ঠিক আছে বাবা।
,
আমি সুপ্রিতার ঘরে ডুকতেই,,,, সুপ্রিতা আমার পা ছুয়ে সালাম করলো।
,
: সুপ্রিতা তুমি আমাকে না বলে চলে আসলে কেনো?
: আমাকে দেখলে আপনার কষ্ট হয় রাগ হয় তাই আমি চলে এসেছি,,,,আমি আপনার কস্ট দেখতে পারবো না বলে।
: তুমি চলে আসার পর তো আমি আরো বেশি কস্ট পেয়েছি।
: আসলে আমি জানতাম না, আপনি আমার জন্য কস্ট পাবেন,,,,,তাহলে কখনই আসতাম না।
,
আমি সুপ্রিতা কে বুকে জোড়িয়ে ধরে বলতে লাগলাম
: আর কখনই আমাকে ফেলে আসবেনা বল??
: হুম আর কখনই আপনাকে ছেড়ে আসবো না।
,
কিছুক্ষণ পরে সুপ্রিতার মা খাবার নিয়ে আসলো,,,,আমি সুপ্রিতা কে নিজ হাতে খায়িয়ে দিলাম,,,,তখন সুপ্রিতার মুখের দিকে তাকাতেই দেখলাম,,,,এত সুন্দর মায়াবী চেহারা এর আগে আমি কখনই দেখিনি,,,,,অনেক্ষণ সুপ্রিতার মুখের দিকে তাকিয়ে রোয়লাম,,,,,সুপ্রিতার মুখ তো লজ্জায় লাল হয়ে গেলো,,,,সে খুব লজ্জা পাচ্ছে,,,,তখন সুপ্রিতা কে আরো সুন্দর লাগছে।
,
: সুপ্রিতা তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে না,,,,মা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
: আপনি একটু রেস্ট করবেন না??
: না আমি আমাদের বাসায় গিয়ে রেস্ট করবো।
: ঠিক আছে তাহলে তো তাড়াতাড়ি রেডি হতে হয়।
: হুম তাই কর।
,
শ্বাশুরি মার থেকে বিদায় নিয়ে রওনা হলাম,,, আমরা এখন গাড়িতে,,,আমি গাড়ি চালাচ্ছি আর সুপ্রিতার দিকে তাকাচ্ছি,,,,এত মায়াবি চেহারা আমি আগে কখনই দেখিনি,,,,হটাৎ কোথা থেকে যেন ১ টা ট্রাক এসে আমাদের গারিতে পেছন থেকে ধাক্কা দিলো,,,, আমি আর সুপ্রিতা গাড়ি থেকে ছিটকে পরে গেলাম,,,,তারপরেই সব কিছু যেন উল্টাপাল্টা হতে লাগলো,,,,সুপ্রিতা মাথায় একটু বেশিই আঘাত পেয়েছে,,,,সুপ্রিতা মনে করেছিলো ও আর বাচবে না।
,
,
হতাৎ ডাক্তার এসে বলতে লাগলো,,,, আপনার এখন কেমন লাগছে,,,,আমি এতক্ষণ কল্পনার জগতে ছিলাম,,,,হটাৎ ডাক্তারের কথা শুনে আমি বাস্তব জগতে ফিরে আসলাম।
,
: হ্যা ডাক্তার আমি ভালো আছি,,,ডাক্তার আমার ওয়াইফ কেমন আছে??
: চিন্তার কোন কারণ নেই,,,,আপনার ওয়াইফ এখন অনেক সুস্থ আছে,,,দুদিন পর আপনি আর আপনার ওয়াইফ বাসায় যেতে পারবেন।
,
এতক্ষণ পর একটু সস্থি পেলাম,,,,,পাশেই দেখি আমার আর সুপ্রিতার ফ্যামিলির সবাই দাঁড়িয়ে আছে,,,,আমি সুপ্রিতার কথা ডাক্তার কে জিজ্ঞাস করেছি দেখে মা বাবা এত খুশি হয়েছে যে আমি এরকম খুশি মনে হয় কখনই দেখিনি।
,
১৫ দিন পর
: সুপ্রিতা আমার টাই টা একটু এনে দিতে পারবে।
: হ্যা আনছি,,,এই নিন।
: কোথায় যাচ্ছ,,,পড়িয়ে দাও?
: আপনি কি ছোট বাচ্চা যে আপনাকে পড়িয়ে দিতে হবে।
: ও পড়িয়ে দেবে নাতো! ঠিক আছে লাগবে না
(এই কথাটা বলতে দেড়ি,,,, সুপ্রিতার কাঁদতে দেরি হলো না) এই কাঁদছ কেনো???
: আমি কি আপনার সাথে একটু দুস্টুমিও করতে পারবোনা,,,,, আমি শুধু শুধু রাগ করে বসে আছেন (কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো।
: আরে বাবা দেখ মেয়ের কান্ড,,, আমিও তো দুস্টুমিই করছিলাম।
,
আমার কথা কথা শুনেই হেসে দিলো,,,,,তারপর আমাকে পা ধরে সালাম সালাম করে আমার টাই টা পরিয়ে দিলো,,,,,এভাবেই চলতে লাগলো আমাদের দিনকাল।
,
তবে এখন আর আমাদের কেউ ছোটলোক বলতে পারে না,,,,,আমার বাবা কে রাস্তাই দেখলেই সবাই সালাম দেই,,,,,যেকোন বড় অনুষ্ঠানে আমার বাবা কে প্রধান অতিথি হিসাবে দাওয়াত দেই।
,
,
এই সব কিছু হয়েছে ১ মাত্র অহনার জন্য,,,,, সে যদি আমার সাথে ফোনে যোগাযোগ বন্ধ না করতো,,,,তাহলে হয়তো আমি অহনা কে পেতাম,,,, কিন্তু আমার বাবা মা এত সম্মান পেতো না,,,,অহনা যদি ফোনে যোগাযোগ বন্ধ না করতো,,,,,তাহলে আমি এত ভালো,দুস্টু,মিষ্টি কাউকে লাইফ পার্টনার হিসাবে পেতাম না,,,যে শুধু আমাকেই চাই,,,,,আমি অহনার কাছে খুব ঋণি,,,, সে যদি আমাকে সাহস না জোগাত তাহলে আমি এতদুরে কখনই আস্তে পারতাম না,,,,, এক কথায় বলতে গেলে
,
তোর জন্যই আজ আমি এত শুখি
,
আমি আর সুপ্রিতা এখন দুজনে মিলেই ১ সাথে খায়, সে আমাকে খাইয়ে দেই আর আমি সুপ্রিতা কে খাইয়ে দিইই,,,,,আমরা দুজনেই এখন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরি,,,,এখন আমরা খুব সুখেই আছি।
,
হ্যা আপনাদের মনে নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে যে অহনা কে কেন আমি খুজলাম না,,,,,হ্যা অহনা আমি খুজিনি তবে অহনা কে আমি দূর থেকে দেখছি,,,,শুনেছি ওর ১ টা ছোট মেয়েও আছে,,,,,অহনার স্বামী আর অহনা ও তার মেয়ে মিলে শপিং এ এসেছিলো,,,, অহনার স্বামী আমাদের ১ টা গার্মেন্টস এর ম্যানেজার,,,,আম
ি দূর থেকে দেখেই চলে আসলাম,,,,আমি তখন ম্যানেজার কে কিছু বললাম না।
,
পরেরদিন অফিসে
,
: মিঃ জামশেদ আপনাকে কাল শপিং করতে দেখলাম,,,আপনার পাশে যাকে দেখলাম,,, উনি কি আপনার ওয়াইফ??
: জ্বী স্যার,,, আমার ওয়াইফের নাম অহনা,,,আমার ১ টা মেয়েও আছে নাম রাকিবা।
: বাহ আমার নামের সাথে মিল আছে মনে হচ্ছে,,,,এসব বাদ দেন যেই জন্য আপনাকে ডাকলাম,,,আপনার কাজে আমরা সন্তুষ্ট তাই আরো ২ টা গার্মেন্টস এর দায়িত্ব আপনার,,,,আপনি পারবেন তো।
: জ্বী স্যার,,,এটা তো আমার সৌভাগ্য।
: আপনার বেতিনও ৩ গুন বাড়িয়ে দিলাম।
: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ স্যার
: এবার আপনি আসতে পারেন।
,
ভাবলাম যার জন্যই এত কিছু পেলাম,,,,তাকে কাছ থেকে কিছু দিতে পারি আর না পারি দূর থেকেই দিই
,