বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫
বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫
অবেলায় তুমি....
মাত্র থার্ড ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হল। পড়ালেখার তেমন কোন চাপ নেই
মোটামুটি ফ্রি আছি। ঘরে শুয়ে বসে HAY DAY গেমস খেলে সময় পার করছি।এমন সময়
লিজার ফোন। ওর ফোন আসলেই আমার বুকের ভিতর কাঁপন ধরে। ফোন ধরতে ইচ্ছা করছে
না, না ধরে উপায় নেই আমি ফোন না ধরলে আম্মার মোবাইলে কল করবে। তখন আম্মা
তার মোবাইল নিয়ে আসবে।সেটা আরও বেশি লজ্জার হবে তাই ধরলাম কল টা।
.
-- এই তুমি কি কর?
-- কিছু না গেমস খেলি।
-- এক কাজ কর।
-- কি?
-- সুন্দর দেখে একটা পাঞ্জাবী পরে শ্যামলী চলে আস।
-- শ্যামলী কেন?
-- কারণ আমি আমাদের উত্তরার ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে এসেছি।তোমাকে নিয়ে ফ্ল্যাটে যাব।
-- সেখানে গিয়ে কি করব?
-- সেটা সেখানে গিয়েই দেখবে। দেরি করবে না তারাতারি চলে আসবে আমি গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছি।
-- আচ্ছা দেখি।
-- দেখি-টেখি নাই তারাতারি চলে আস। আর শোন আসার সময় কয়েকটা বেলুন কিনে নিয়ে আসবে ফার্মেসী থেকে।
-- বেলুন দিয়ে কি করবে? কার জন্ম দিন নাকি?
-- গাধা!! আমি এসএমএস করছি এসএমএস পরে দেখ।
.
লিজা এই ধরণের আহব্বান আগেও করেছে তবে সেটা ফ্ল্যাটে না বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বা পার্কে আজকের ব্যাপারটা ভিন্ন। এর মাঝে মোবাইল খুলে দেখি লিজার এসএমএস তাতে পষ্ট করে লেখা আছে কনডম নিয়ে আসবা ২ প্যাকেট। ও যখন ফার্মেসী থেকে বেলুন নিতে বলছে তখনি আমি বুঝেছি ও কিসের কথা বলেছে তার পরেও না বুঝার ভান করে ছিলাম। এর কারণ হল ও ভাববে আমি খুব সরল সোজা তেমন কিছু বুঝি না। আর মেয়েরা বোকা স্বামী খুব পছন্দ করে কিন্তু ছেলেরা বোকা স্ত্রী পছন্দ করে না। তাই কিছুটা বোকা সেজে থাকার অভিনয় আর কি।
.
এই যেমন আমার ও , ওর সাথে একটা নির্জন ফ্ল্যাটে যাচ্ছি ভাবতেই অন্যরকম লাগছে কিন্তু তার পরেও ওর সামনে গিয়ে এমন ভাব করব যে আমি খুব বিরক্ত যেতে চাচ্ছি না। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আম্মা জিজ্ঞেস করল তুই পাঞ্জাবী পরে এই সময় কোথায় যাস ? আমি কিছু বললাম না অন্যদিকে তাকিয়ে কিছুটা লজ্জার হাসি হাসলাম। মা দের অনেক কিছু বলা লাগে না তারা এমনি বুঝে যায় বিষয়টা। বাসা থেকে বের হয়ে একটু দূরের ফার্মেসিতে যেতে হবে যেখানে আমাকে চিনে না কারণ পরিচিত যায়গা থেকে এই সব জিনিষ নেওয়া খুব লজ্জার। আর দোকানদার যদি বয়সে একটু বড় বা ছোট হয় তাহলে কনডমের প্যাকেট দেওয়ার সময় এমন একটা হাসি দেয়। সে হাসিতে সে বুঝিয়ে দেয় এইটা দিয়ে কি করবা সেটা কিন্তু আমি জানি এই টাইপ হাসি ।
.
শ্যামলী গিয়ে দেখি লিজা এখন ও আসে নাই। ৫ মিনিট পরে ওদের গাড়ি আমার পাশে থামল। আমি ড্রাইভারের পাশে বশতে গেলে লিজা খুব বিরক্ত হয়ে বলল ঐ খানে বসছ কেন আমার পাশে বস।আমি খুব অনিচ্ছার ভাব নিয়ে ওর পাশে বসলাম যদিও আমিও চাচ্চিলাম এইটাই কিন্তু ওকে বুঝতে দিতে চাই না। গাড়ি উত্তরার দিকে যাচ্ছে আমি অন্য দিকে তাকিয়ে আছি। লিজা খুব বিরক্ত নিয়ে বলল তোমার সমস্যা কি? তুমি সব সময় আমাকে এমন পাশ কাটিয়ে চল কেন? আমি দুর্বল ভাবে হেসে বললাম কই পাশ কাটালাম? লিজা চশমা ঠিক করতে করতে বলল, তুমি আজ পর্যন্ত ইচ্ছা করে আমার সাথে একবার ও দেখা করেছ? আমি তোমাকে বার বার নিজে দেখা কারার কথা বলি তার পরেও তুমি আস্তে চাও না। আমাকে বলবে আমার অপরাধ কি ?
.
আমি তেমন কিছুই বলি না চুপ করে বসে থাকি মনে মনে ভাবি আমার ও তোমার সাথে দেখা করতে খুব ইচ্ছা করে কিন্তু সেই ইচ্ছাকে আমি গুরুত্ব দেই না। লিজা আবার বলল আচ্ছা তুমি আমাকে কচ্ছপ বলতে কেন? আমি কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যাই ছোট বেলা লিজাকে শুধু আমি না ওর পরিচিত মোটামুটি সবাই কচ্ছপ বলত। ও আবার বলল কি হল জবাব দেও না কেন? আমি বললাম তোমার বয়স যখন ২ বছর তখন তুমি কার উপরে রাগ হলে এমন কামড় দিতে যে কোন ভাবেই সেটা ছুটান যেত না পরে দাতের ফাকে চামিচ দিয়ে ছুটাতে হত এই কারণে কচ্ছপ বলা।
.
লিজা হাসছে বেশ শব্দ করেই হাসছে। ড্রাইভার ভিউ মিরার দিয়ে আর চোখে কয়েকবার লিজা কে দেখল। আমিও হাসছি। লিজা সম্পর্কে আমার আপন খালাত বোন হয় যদিও এখন আর সম্পর্কটা খালাতো বোনের মাঝে নেই।
.
লিজাদের উত্তরার ফ্ল্যাটটা বেশ বড়।এই ফ্ল্যাট নাকি লিজার নামেই কেনা। ও ফ্ল্যাটে ঢুকে বোরখা খুলে ফেলল। বোরখার নিচে নিল রঙের একটা শাড়ি পড়েছে। মনে হচ্ছে পাখা লাগিয়ে দিলে এখনি উড়ে চলে যাবে। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে ওকে। ইচ্ছা করছে ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরি তবে ইচ্ছাটা দমন করলাম। জিজ্ঞেস করলাম এত সুন্দর করে শাড়ি কে পড়িয়ে দিয়েছে। ও বলল আম্মা। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম তোমার আম্মা জানে তুমি আমার সাথে দেখে করতে আসবে? ও বলল হা জানবে না কেন? তাহলে তো অ্যান্টি এতক্ষণে আমার মা কে বলে দিছে তুমি আমার সাথে দেখা করতে আসছে। ও বেশ অবাক হয়ে বলল , বললে সমস্যা কোথায় তুমি এমন লুকচুরি করছ কেন?
.
নিজের কাছেই কি রকম কি রকম জানি লাগছে। এই মেয়ে যেদিন আমার লাইফে এসেছে সেদিন থেকেই আমি কেমন জানি চোরাচোরা টাইপের হয়ে গেছি।পরিচিত কাউকে দেখলে আস্তে করে মাথা নিচে দিয়ে চলে যাই বিশেষ করে আমার থেকে বছর কয়েকের বড় কাজিন দের দেখলে।
.
আমার খালা দের অবস্থা আমাদের থেকে অনেক ভাল।খালা অসম্ভব রাগি টাইপ মহিলা কিন্তু আমাদের জন্য মানে তার বোনের ছেলে মেয়েদের জন্য তার দিল সব সময় খোশ থাকে। তার পরেও আমি তেমন একটা যেতাম না ওনাদের বাসায়। খুবি কম যেতাম এমন না যে তিনি আমাদের যত্ন করে না কি কারণে জানি ভাল লাগত না। গেলেও মাথা নিচের দিকে দিয়ে আমি ডিসকভারি চ্যানেল ছেড়ে বসে থাকতাম।ওনার মেয়ে লিজা আমার থেকে ৪ বছরের ছোট ও সব সময় আমাকে রোবট মানব ডাকত। আসলে আপনারা আমাকে জটা ভাল মনে করছেন আমি অতটা ভাল না ভাল সেজে থাকার অভিনয় করি।
.
অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পরে খালা বলল লিজা তো SSC দিবে তুই ওকে একটু কয়টা দিন পরা দেখিয়ে দিস। আমার সমস্যা হল আমি কাউকে মুখের উপরে না করতে পারি না। আমি বললাম আচ্ছা । কেউ যদি আমাকে বলে যা ৫ তলা বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে নিচে পর আমি বলব আচ্চা। তাই বলে ভাব্বেন না আমি ৫ তালা থেকে লাফ দিব। আমি কথা মত গেট খুলে বের হব ভান করব লাফ দিতে যাচ্ছি কিন্তু আস্তে করে নিচে চলে যাব আগামি এক মাস তার সামনেই পরব না। কোন কারণে দেখা হলে এমন ভান করব ঐ বিষয় আমাদের যে কথা হয়েছে সেটা আমার মনেই নেই।
.
তেমনি খালা কে আচ্চা বলে আমি যথা রিতি বাসায় এসে আগের মতই চলতে লাগলাম ।তবে পারলাম না আম্মার কারণে ওকে পরাতে যেতে হল। এক মাস পরে লিজা আমাকে একটা চিঠি দিল সোজা বাংলায় প্রেম প্রস্তাব। চিঠি পেয়ে আমার ভীতরে কাঁপন উঠলেও চেহারা স্বাভাবিক করে চিঠি পকেটে রেখে দিলাম। এর পরে আর তেমন একটা যাইনি ওদের বাড়িতে। এমন না যে লিজা কে আমার পছন্দ না আসলে আমার খালা আমাদের উপর যতই দিল খোশ হোক না কেন সে কক্ষন ও তার মেয়ের হাত আমার হাতে দিবে না কারন আমাদের সামাজিক অবস্থা তাদের থেকে দুর্বল আর প্রতিটা মা-ই চায় তার মেয়ে তাদের থেকে একটা উচ্চ ঘরে বউ হয়ে যাক। আর এইটা দোষের কিছু না এটাই স্বাভাবিক।
.
এর পরেও লিজার সাথে আমার কয়েকবার দেখা হয়েছে কিন্তু ও খুব স্বাভাবিক আচরণ করেছে এমন ভাব করেছে যেন কিছু হয়নি।আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম যদিও প্রকাশ করিনি।এর মাঝে অনেক কিছু পরিবর্তন হল লিজা ইন্টার পাশ করল। অনার্সের ভর্তি হবে। এমন সময় লিজার মা ভাল এক ছেলে দেখে লিজার বিয়ে ঠিক করল ছেলে পাইলট। অনেকটা হুট হাট করে করেই বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। সবাই কে দেওয়াত দেওয়া হল।মূল সমস্যা হল বিয়ে আসরে যার জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না।
.
লিজার হবু বরকে আমাদের এক আত্মীয় দেখে চিনে ফেলল। এই ছেলে পাইলট ঠিকি কিন্তু আগেও একটা বিয়ে করেছে। পরে সেটা নিয়ে অনেক বড় ক্যাচাল হল ছেলের বাবা সবার কাছে ক্ষমা চাইল একই সাথে তার ছেলেকে ত্যাজ্য পুত্র ঘোষণা করল আরও অনেক কিছু।এদিকে আমার খালা এই খবর শুনে ফিট হয়ে গেছে। বিয়ের আসর থেকে মেয়ের বিয়ে না ভেঙ্গে গেলে সেই মেয়ে নাকি অলক্ষ্মী হয়। এখন কি কারা? আমার বড় মামা তখন এগিয়ে আসল বলল চাইলে বিয়ে এখন ও হতে পারে। খালা চোখ পিটপিট করে কি ব্যবস্থা? মামা বল পাত্র যদিও প্রতিষ্ঠিত না তার পরেও ছেলে খুব ভাল সে হল হাসান। খালা বুঝতে পারছিল না কি করবে এমন পরিস্থিতিতে সবাই কিছুটা হতবাক।
.
তখন আমাদের সব আত্মীয় বুঝানোর পরে খালা রাজি হল। আমি ভীতরে ভীতরে খুব উত্তেজিত হয়ে পরলেও গলা খুব স্বাভাবিক ভাবে বলি পাগল নাকি আমি এখন বিয়ে করব? এখন ও অনার্স শেষ হয় নাই।আসলে সত্যি বলতে কি আমার এক মনে বলছে বিয়েটা করে ফেলি আবার আরেক মনে বলছে না। পরে সবার চাপা-চাপিতে আমি কিছুটা নরম হলাম । বললাম আগে দেখি লিজা কি বলে আমি ওর সাথে কথা বলে। তখন আমাকে আর লিজাকে আলাদা কথা বলার সুযোগ দেওয়া হল। এত একটা বড় ঘটনা অথচ লিজা খুব স্বাভাবিক আছে। আমি বললাম তোমার কি মতামত। ও খুব স্বাভাবিক গলায় বলল....
.
-- সেটা তোমার উপর নির্ভর করে।
-- মানে?
-- কোন মানে টানে নাই। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে ফেলেছি তাই আর টেনশন হেচ্ছে না।
-- gasp emoticon কি সিদ্ধান্ত?
-- তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলে সব স্বাভাবিক চলবে।
-- আর রাজি না হলে?
-- আত্মহত্যা করব। কারণ অলক্ষ্মী অপবাদ নিয়ে বেচে থাকতে পারব না।
এই বলে ও আমার সামনে থেকে উঠে চলে গেল। আমি কিছুক্ষণ ঝিম ধরে বসে রইলাম। পরে সবার অনুরধে বিয়েটা হয়ে গেল। তবে কিছু শর্ত থাকল। এখন শুধু বিয়ে আর কিছু না বউ আরও ৩ বছর পরে উঠিয়ে নেওয়া হবে।
.
এর পরেই শুরু হল লাইফের লুকুচুরি। আমার বয়সে বড় কাজনরা দেখলেই হাসে যদিও তারা স্বাভাবিক ভাবেই হাসে কিন্তু আমার মনে হয় তাদের আগে বিয়ে কড়াতে তারা টিটকারি দিয়ে হাসে। আর বন্ধুদের কথা কি বলব হারামি গুলো দেখলেই বলে দোস্ত ভাবির হাতের রান্না খাওয়াবি না? আমি বরাবরই ভদ্র ছেলে হয়ে থাকার চেষ্টা করি তাই কিছু বলি না শুধু হাসি আর বলি হা খাওয়াব সময় হোক। অথচ মনে মনে বলি তোর ভাবি একটা জিনিষ পারে খুন্তি গরম করতে খাবি নাকি শালা তার একটা সেঁকা একবার খেলে সারাজীবন মনে রাখবি। আগে কলেজের মেয়ে গুলো দেখলেই সুন্দর করে জিজ্ঞেস করত ভাইয়া ক্যামন আছেন আর এখন দেখলেই জিজ্ঞেস করে ভাইয়া ভাবি ক্যামন আছে।
.
তবে সব যে লস হয়েছে তানা কিছু লাভ ও হয়েছে যেমন খালু সাহেব আমাকে ব্যাংকে একটা একাউন্ট খুলে দিয়েছে সেই একাউন্টে আবার ৮০ হাজার টাকা দিয়েছে।বলছে শেষ হলে আবার চাইতে।
.
লিজার ডাকে আমার হুশ ফিরল বলল কি এত চিন্তা করছ? আমাকে ক্যামন লাগছে বল? আমি কিছু বললাম না হাসলাম বললাম তুমি ঐ দিকে ঘুর ও অবাক হয়ে বলল কেন? বললাম আহা ঘুর না । ও ঘুরল আমি ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম আমাদের সামনে আয়না। আমি আয়নায় পষ্ট দেখতে পাচ্ছি লিজার চোখে পানি..............
.
-- এই তুমি কি কর?
-- কিছু না গেমস খেলি।
-- এক কাজ কর।
-- কি?
-- সুন্দর দেখে একটা পাঞ্জাবী পরে শ্যামলী চলে আস।
-- শ্যামলী কেন?
-- কারণ আমি আমাদের উত্তরার ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে এসেছি।তোমাকে নিয়ে ফ্ল্যাটে যাব।
-- সেখানে গিয়ে কি করব?
-- সেটা সেখানে গিয়েই দেখবে। দেরি করবে না তারাতারি চলে আসবে আমি গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছি।
-- আচ্ছা দেখি।
-- দেখি-টেখি নাই তারাতারি চলে আস। আর শোন আসার সময় কয়েকটা বেলুন কিনে নিয়ে আসবে ফার্মেসী থেকে।
-- বেলুন দিয়ে কি করবে? কার জন্ম দিন নাকি?
-- গাধা!! আমি এসএমএস করছি এসএমএস পরে দেখ।
.
লিজা এই ধরণের আহব্বান আগেও করেছে তবে সেটা ফ্ল্যাটে না বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বা পার্কে আজকের ব্যাপারটা ভিন্ন। এর মাঝে মোবাইল খুলে দেখি লিজার এসএমএস তাতে পষ্ট করে লেখা আছে কনডম নিয়ে আসবা ২ প্যাকেট। ও যখন ফার্মেসী থেকে বেলুন নিতে বলছে তখনি আমি বুঝেছি ও কিসের কথা বলেছে তার পরেও না বুঝার ভান করে ছিলাম। এর কারণ হল ও ভাববে আমি খুব সরল সোজা তেমন কিছু বুঝি না। আর মেয়েরা বোকা স্বামী খুব পছন্দ করে কিন্তু ছেলেরা বোকা স্ত্রী পছন্দ করে না। তাই কিছুটা বোকা সেজে থাকার অভিনয় আর কি।
.
এই যেমন আমার ও , ওর সাথে একটা নির্জন ফ্ল্যাটে যাচ্ছি ভাবতেই অন্যরকম লাগছে কিন্তু তার পরেও ওর সামনে গিয়ে এমন ভাব করব যে আমি খুব বিরক্ত যেতে চাচ্ছি না। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আম্মা জিজ্ঞেস করল তুই পাঞ্জাবী পরে এই সময় কোথায় যাস ? আমি কিছু বললাম না অন্যদিকে তাকিয়ে কিছুটা লজ্জার হাসি হাসলাম। মা দের অনেক কিছু বলা লাগে না তারা এমনি বুঝে যায় বিষয়টা। বাসা থেকে বের হয়ে একটু দূরের ফার্মেসিতে যেতে হবে যেখানে আমাকে চিনে না কারণ পরিচিত যায়গা থেকে এই সব জিনিষ নেওয়া খুব লজ্জার। আর দোকানদার যদি বয়সে একটু বড় বা ছোট হয় তাহলে কনডমের প্যাকেট দেওয়ার সময় এমন একটা হাসি দেয়। সে হাসিতে সে বুঝিয়ে দেয় এইটা দিয়ে কি করবা সেটা কিন্তু আমি জানি এই টাইপ হাসি ।
.
শ্যামলী গিয়ে দেখি লিজা এখন ও আসে নাই। ৫ মিনিট পরে ওদের গাড়ি আমার পাশে থামল। আমি ড্রাইভারের পাশে বশতে গেলে লিজা খুব বিরক্ত হয়ে বলল ঐ খানে বসছ কেন আমার পাশে বস।আমি খুব অনিচ্ছার ভাব নিয়ে ওর পাশে বসলাম যদিও আমিও চাচ্চিলাম এইটাই কিন্তু ওকে বুঝতে দিতে চাই না। গাড়ি উত্তরার দিকে যাচ্ছে আমি অন্য দিকে তাকিয়ে আছি। লিজা খুব বিরক্ত নিয়ে বলল তোমার সমস্যা কি? তুমি সব সময় আমাকে এমন পাশ কাটিয়ে চল কেন? আমি দুর্বল ভাবে হেসে বললাম কই পাশ কাটালাম? লিজা চশমা ঠিক করতে করতে বলল, তুমি আজ পর্যন্ত ইচ্ছা করে আমার সাথে একবার ও দেখা করেছ? আমি তোমাকে বার বার নিজে দেখা কারার কথা বলি তার পরেও তুমি আস্তে চাও না। আমাকে বলবে আমার অপরাধ কি ?
.
আমি তেমন কিছুই বলি না চুপ করে বসে থাকি মনে মনে ভাবি আমার ও তোমার সাথে দেখা করতে খুব ইচ্ছা করে কিন্তু সেই ইচ্ছাকে আমি গুরুত্ব দেই না। লিজা আবার বলল আচ্ছা তুমি আমাকে কচ্ছপ বলতে কেন? আমি কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যাই ছোট বেলা লিজাকে শুধু আমি না ওর পরিচিত মোটামুটি সবাই কচ্ছপ বলত। ও আবার বলল কি হল জবাব দেও না কেন? আমি বললাম তোমার বয়স যখন ২ বছর তখন তুমি কার উপরে রাগ হলে এমন কামড় দিতে যে কোন ভাবেই সেটা ছুটান যেত না পরে দাতের ফাকে চামিচ দিয়ে ছুটাতে হত এই কারণে কচ্ছপ বলা।
.
লিজা হাসছে বেশ শব্দ করেই হাসছে। ড্রাইভার ভিউ মিরার দিয়ে আর চোখে কয়েকবার লিজা কে দেখল। আমিও হাসছি। লিজা সম্পর্কে আমার আপন খালাত বোন হয় যদিও এখন আর সম্পর্কটা খালাতো বোনের মাঝে নেই।
.
লিজাদের উত্তরার ফ্ল্যাটটা বেশ বড়।এই ফ্ল্যাট নাকি লিজার নামেই কেনা। ও ফ্ল্যাটে ঢুকে বোরখা খুলে ফেলল। বোরখার নিচে নিল রঙের একটা শাড়ি পড়েছে। মনে হচ্ছে পাখা লাগিয়ে দিলে এখনি উড়ে চলে যাবে। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে ওকে। ইচ্ছা করছে ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরি তবে ইচ্ছাটা দমন করলাম। জিজ্ঞেস করলাম এত সুন্দর করে শাড়ি কে পড়িয়ে দিয়েছে। ও বলল আম্মা। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম তোমার আম্মা জানে তুমি আমার সাথে দেখে করতে আসবে? ও বলল হা জানবে না কেন? তাহলে তো অ্যান্টি এতক্ষণে আমার মা কে বলে দিছে তুমি আমার সাথে দেখা করতে আসছে। ও বেশ অবাক হয়ে বলল , বললে সমস্যা কোথায় তুমি এমন লুকচুরি করছ কেন?
.
নিজের কাছেই কি রকম কি রকম জানি লাগছে। এই মেয়ে যেদিন আমার লাইফে এসেছে সেদিন থেকেই আমি কেমন জানি চোরাচোরা টাইপের হয়ে গেছি।পরিচিত কাউকে দেখলে আস্তে করে মাথা নিচে দিয়ে চলে যাই বিশেষ করে আমার থেকে বছর কয়েকের বড় কাজিন দের দেখলে।
.
আমার খালা দের অবস্থা আমাদের থেকে অনেক ভাল।খালা অসম্ভব রাগি টাইপ মহিলা কিন্তু আমাদের জন্য মানে তার বোনের ছেলে মেয়েদের জন্য তার দিল সব সময় খোশ থাকে। তার পরেও আমি তেমন একটা যেতাম না ওনাদের বাসায়। খুবি কম যেতাম এমন না যে তিনি আমাদের যত্ন করে না কি কারণে জানি ভাল লাগত না। গেলেও মাথা নিচের দিকে দিয়ে আমি ডিসকভারি চ্যানেল ছেড়ে বসে থাকতাম।ওনার মেয়ে লিজা আমার থেকে ৪ বছরের ছোট ও সব সময় আমাকে রোবট মানব ডাকত। আসলে আপনারা আমাকে জটা ভাল মনে করছেন আমি অতটা ভাল না ভাল সেজে থাকার অভিনয় করি।
.
অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পরে খালা বলল লিজা তো SSC দিবে তুই ওকে একটু কয়টা দিন পরা দেখিয়ে দিস। আমার সমস্যা হল আমি কাউকে মুখের উপরে না করতে পারি না। আমি বললাম আচ্ছা । কেউ যদি আমাকে বলে যা ৫ তলা বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে নিচে পর আমি বলব আচ্চা। তাই বলে ভাব্বেন না আমি ৫ তালা থেকে লাফ দিব। আমি কথা মত গেট খুলে বের হব ভান করব লাফ দিতে যাচ্ছি কিন্তু আস্তে করে নিচে চলে যাব আগামি এক মাস তার সামনেই পরব না। কোন কারণে দেখা হলে এমন ভান করব ঐ বিষয় আমাদের যে কথা হয়েছে সেটা আমার মনেই নেই।
.
তেমনি খালা কে আচ্চা বলে আমি যথা রিতি বাসায় এসে আগের মতই চলতে লাগলাম ।তবে পারলাম না আম্মার কারণে ওকে পরাতে যেতে হল। এক মাস পরে লিজা আমাকে একটা চিঠি দিল সোজা বাংলায় প্রেম প্রস্তাব। চিঠি পেয়ে আমার ভীতরে কাঁপন উঠলেও চেহারা স্বাভাবিক করে চিঠি পকেটে রেখে দিলাম। এর পরে আর তেমন একটা যাইনি ওদের বাড়িতে। এমন না যে লিজা কে আমার পছন্দ না আসলে আমার খালা আমাদের উপর যতই দিল খোশ হোক না কেন সে কক্ষন ও তার মেয়ের হাত আমার হাতে দিবে না কারন আমাদের সামাজিক অবস্থা তাদের থেকে দুর্বল আর প্রতিটা মা-ই চায় তার মেয়ে তাদের থেকে একটা উচ্চ ঘরে বউ হয়ে যাক। আর এইটা দোষের কিছু না এটাই স্বাভাবিক।
.
এর পরেও লিজার সাথে আমার কয়েকবার দেখা হয়েছে কিন্তু ও খুব স্বাভাবিক আচরণ করেছে এমন ভাব করেছে যেন কিছু হয়নি।আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম যদিও প্রকাশ করিনি।এর মাঝে অনেক কিছু পরিবর্তন হল লিজা ইন্টার পাশ করল। অনার্সের ভর্তি হবে। এমন সময় লিজার মা ভাল এক ছেলে দেখে লিজার বিয়ে ঠিক করল ছেলে পাইলট। অনেকটা হুট হাট করে করেই বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। সবাই কে দেওয়াত দেওয়া হল।মূল সমস্যা হল বিয়ে আসরে যার জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না।
.
লিজার হবু বরকে আমাদের এক আত্মীয় দেখে চিনে ফেলল। এই ছেলে পাইলট ঠিকি কিন্তু আগেও একটা বিয়ে করেছে। পরে সেটা নিয়ে অনেক বড় ক্যাচাল হল ছেলের বাবা সবার কাছে ক্ষমা চাইল একই সাথে তার ছেলেকে ত্যাজ্য পুত্র ঘোষণা করল আরও অনেক কিছু।এদিকে আমার খালা এই খবর শুনে ফিট হয়ে গেছে। বিয়ের আসর থেকে মেয়ের বিয়ে না ভেঙ্গে গেলে সেই মেয়ে নাকি অলক্ষ্মী হয়। এখন কি কারা? আমার বড় মামা তখন এগিয়ে আসল বলল চাইলে বিয়ে এখন ও হতে পারে। খালা চোখ পিটপিট করে কি ব্যবস্থা? মামা বল পাত্র যদিও প্রতিষ্ঠিত না তার পরেও ছেলে খুব ভাল সে হল হাসান। খালা বুঝতে পারছিল না কি করবে এমন পরিস্থিতিতে সবাই কিছুটা হতবাক।
.
তখন আমাদের সব আত্মীয় বুঝানোর পরে খালা রাজি হল। আমি ভীতরে ভীতরে খুব উত্তেজিত হয়ে পরলেও গলা খুব স্বাভাবিক ভাবে বলি পাগল নাকি আমি এখন বিয়ে করব? এখন ও অনার্স শেষ হয় নাই।আসলে সত্যি বলতে কি আমার এক মনে বলছে বিয়েটা করে ফেলি আবার আরেক মনে বলছে না। পরে সবার চাপা-চাপিতে আমি কিছুটা নরম হলাম । বললাম আগে দেখি লিজা কি বলে আমি ওর সাথে কথা বলে। তখন আমাকে আর লিজাকে আলাদা কথা বলার সুযোগ দেওয়া হল। এত একটা বড় ঘটনা অথচ লিজা খুব স্বাভাবিক আছে। আমি বললাম তোমার কি মতামত। ও খুব স্বাভাবিক গলায় বলল....
.
-- সেটা তোমার উপর নির্ভর করে।
-- মানে?
-- কোন মানে টানে নাই। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে ফেলেছি তাই আর টেনশন হেচ্ছে না।
-- gasp emoticon কি সিদ্ধান্ত?
-- তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলে সব স্বাভাবিক চলবে।
-- আর রাজি না হলে?
-- আত্মহত্যা করব। কারণ অলক্ষ্মী অপবাদ নিয়ে বেচে থাকতে পারব না।
এই বলে ও আমার সামনে থেকে উঠে চলে গেল। আমি কিছুক্ষণ ঝিম ধরে বসে রইলাম। পরে সবার অনুরধে বিয়েটা হয়ে গেল। তবে কিছু শর্ত থাকল। এখন শুধু বিয়ে আর কিছু না বউ আরও ৩ বছর পরে উঠিয়ে নেওয়া হবে।
.
এর পরেই শুরু হল লাইফের লুকুচুরি। আমার বয়সে বড় কাজনরা দেখলেই হাসে যদিও তারা স্বাভাবিক ভাবেই হাসে কিন্তু আমার মনে হয় তাদের আগে বিয়ে কড়াতে তারা টিটকারি দিয়ে হাসে। আর বন্ধুদের কথা কি বলব হারামি গুলো দেখলেই বলে দোস্ত ভাবির হাতের রান্না খাওয়াবি না? আমি বরাবরই ভদ্র ছেলে হয়ে থাকার চেষ্টা করি তাই কিছু বলি না শুধু হাসি আর বলি হা খাওয়াব সময় হোক। অথচ মনে মনে বলি তোর ভাবি একটা জিনিষ পারে খুন্তি গরম করতে খাবি নাকি শালা তার একটা সেঁকা একবার খেলে সারাজীবন মনে রাখবি। আগে কলেজের মেয়ে গুলো দেখলেই সুন্দর করে জিজ্ঞেস করত ভাইয়া ক্যামন আছেন আর এখন দেখলেই জিজ্ঞেস করে ভাইয়া ভাবি ক্যামন আছে।
.
তবে সব যে লস হয়েছে তানা কিছু লাভ ও হয়েছে যেমন খালু সাহেব আমাকে ব্যাংকে একটা একাউন্ট খুলে দিয়েছে সেই একাউন্টে আবার ৮০ হাজার টাকা দিয়েছে।বলছে শেষ হলে আবার চাইতে।
.
লিজার ডাকে আমার হুশ ফিরল বলল কি এত চিন্তা করছ? আমাকে ক্যামন লাগছে বল? আমি কিছু বললাম না হাসলাম বললাম তুমি ঐ দিকে ঘুর ও অবাক হয়ে বলল কেন? বললাম আহা ঘুর না । ও ঘুরল আমি ওকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম আমাদের সামনে আয়না। আমি আয়নায় পষ্ট দেখতে পাচ্ছি লিজার চোখে পানি..............
এমন আশা দিওনা যেই আশায় যেন
সে সপ্ন দেখা শুরু করে
অথচ পরে তাকে নিরাশ করে দিলে...
.
এমন কথা বলো না যেই কথায় বিশ্বাস করেছে
অথচ কথা দিয়ে কথা না রেখে তাকে বিপদে ফেলেছো...
.
এমন সন্দেহ এর মনোভাব নিওনা
অথচ দেখা গেলো সে তোমার সন্দেহ এর অংশীদারি নয়..
.
এমন কিছু করোনা যা করলে
অন্যের মনের উপর আঘাত বলে,
একটা অংশ তার হৃদয়ে জায়গা করে নেয়
.
উল্লেখিত এর বিপরীত হলে মন্দ নয়,
তা না হলে তুমি তোমার জীবন সংগ্রামে
তুমি নিজেই পরাজিত হওয়ার জন্য দায়ী থাকবে..
সে সপ্ন দেখা শুরু করে
অথচ পরে তাকে নিরাশ করে দিলে...
.
এমন কথা বলো না যেই কথায় বিশ্বাস করেছে
অথচ কথা দিয়ে কথা না রেখে তাকে বিপদে ফেলেছো...
.
এমন সন্দেহ এর মনোভাব নিওনা
অথচ দেখা গেলো সে তোমার সন্দেহ এর অংশীদারি নয়..
.
এমন কিছু করোনা যা করলে
অন্যের মনের উপর আঘাত বলে,
একটা অংশ তার হৃদয়ে জায়গা করে নেয়
.
উল্লেখিত এর বিপরীত হলে মন্দ নয়,
তা না হলে তুমি তোমার জীবন সংগ্রামে
তুমি নিজেই পরাজিত হওয়ার জন্য দায়ী থাকবে..
ভালবাসা
কেউ যদি কথা দেয় আসবে, তার
জন্য অনেক ক্ষন ধরে অপেক্ষা
করার নাম হচ্ছে বিশ্বাস। কিন্তু সে আর
কখনো
আসবেনা জেনেও তার জন্য সারা জীবন
অপেক্ষা করার নামি হচ্ছে ভালবাসা।
জন্য অনেক ক্ষন ধরে অপেক্ষা
করার নাম হচ্ছে বিশ্বাস। কিন্তু সে আর
কখনো
আসবেনা জেনেও তার জন্য সারা জীবন
অপেক্ষা করার নামি হচ্ছে ভালবাসা।
"জীবন একটাই" তাই কোন ভুল সিদ্ধান্ত নয়
একটা সময় একটা মেয়ের জন্য খুব
পাগল ছিলাম। মেয়েটাও আমাকে ভালোবাসতো আর আমিও মেয়েটাকে। আমাদের ভালোবাসাটা
তখন আমার কাছে পৃথিবীর সেরা সম্পদ মনে হয়েছিলো।ভালোবাস
া বহিঃপ্রকাশ এর জন্য হাতকাটা পা কাটা না খেয়ে থাকা কোনকিছুরই কমতি ছিলোনা আমাদের মধ্যে।প্রচুর অভিমান রাগ আর মধুর কিছু মূহুর্তের সংমিশ্রনে চলতে থাকে আমাদের রিলেশন। প্রথম দিকে একটা দিন কথা না হলে আমার মনে হতো আমি আর বাচতে পারবোনা।সেও আমাকে ছাড়া কিছু ভাবতেই পারতোনা। প্রতিদিন ফেসবুকে আনলিমিটেড চ্যাটিং হতো,ফোনে কথা হতো ঘন্টার পর ঘন্টা। সপ্তাহে অন্তত একবার দেখা হতো। সবমিলিয়ে সুখের এক বিশাল সমুদ্রে ভাসছিলাম আমরা। আমরা বিয়ে কবে করবো? আমরা কয়টা বাচ্চা নিবো? বাচ্চাদের নাম কি হবে? এতদূর পর্য্ন্ত ভেবেছিলাম আমরা।
একদিন যদি একজনের শরির খারাপ থাকতো তাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা শুরু করে দিতাম। ""প্লিজ আমার বাবুটার জন্য দোয়া করবেন ও খুব অসুস্থ"।
জান তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা??
ও কষ্ট পেত ভেবে আমার কষ্টের আর কোন সীমা ছিলোনা। ভাবতাম ও একা একা কষ্ট পাবে তা হতে পারেনা। তাই নিজে নিজে ব্লেড দিয়ে হাত কাটতাম। কাটার পর একটু স্বস্তি মিলতো মনে।
মোটকথা একটা ছেলে একটা মেয়ের প্রতি আর একটা মেয়ের একটা ছেলের প্রতি যতটা কেয়ারিং আর দুর্বল হওয়া সম্ভব তার থেকে আমাদের মাঝে কোন অংশেই কমতি ছিলোনা।
আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে বলে বেড়াতাম ওকে নিয়ে কতশত স্বপ্ন আমার। ও ছাড়া আমার পৃথিবীতে আর কেউ নাই। ওকে ছাড়া আমি আমার একটা মুহুর্ত কল্পনাও করতে পারিনা।
এভাবেই চলে আমাদের এই মনোমুগ্ধকর প্রণয়।
কিছুদিন পরে ওর সাথে আমার কিছু অমিল সৃষ্টি হয়। নিজেদের মধ্যে প্রতিদিন ঝগড়া হতে থাকে।
ছোটখাটো ব্যপারেই অনেক বড় ঝগড়া হতো।
হঠাত করেই একদিন ওর সাথে আমার রিলেশন টা শেষ হয়ে যায়। শেষ হয়ে যায় বলতে ওই আমাকে ছেড়ে চলে যায়।কারন বলতে তেমন কিছু ছিলোনা। যা ছিলো,সেটা হলো আমার ক্যারিয়ার নেই,আমি চলি বাপের টাকায় আমাকে স্টান্ড করতে এখনো বহু দেরী।এর আগেই আমার থেকে বহু ভালো ক্যারিয়ারওয়ালা ছেলে হয়ত তার পানি পাওয়ার জন্য ব্যাগ্রচিত্তে অপেক্ষা করছিলো। যাই হোক সে আমার সাথে ব্রেকাপ করে দেয়।
ও নিজের ক্যারিয়ার বন্ধুবান্ধব নিয়া বিজি হয়ে পড়ে। কিন্তু আমি অই মুহুরতে সেই পরিস্থিতি ঠিক সামলে নিতে পারিনি।
প্রতিদিন কান্না করে করে বালিশ কয়টা ভিজাইছি তার ইয়ত্তা ছিলোনা।
া বহিঃপ্রকাশ এর জন্য হাতকাটা পা কাটা না খেয়ে থাকা কোনকিছুরই কমতি ছিলোনা আমাদের মধ্যে।প্রচুর অভিমান রাগ আর মধুর কিছু মূহুর্তের সংমিশ্রনে চলতে থাকে আমাদের রিলেশন। প্রথম দিকে একটা দিন কথা না হলে আমার মনে হতো আমি আর বাচতে পারবোনা।সেও আমাকে ছাড়া কিছু ভাবতেই পারতোনা। প্রতিদিন ফেসবুকে আনলিমিটেড চ্যাটিং হতো,ফোনে কথা হতো ঘন্টার পর ঘন্টা। সপ্তাহে অন্তত একবার দেখা হতো। সবমিলিয়ে সুখের এক বিশাল সমুদ্রে ভাসছিলাম আমরা। আমরা বিয়ে কবে করবো? আমরা কয়টা বাচ্চা নিবো? বাচ্চাদের নাম কি হবে? এতদূর পর্য্ন্ত ভেবেছিলাম আমরা।
একদিন যদি একজনের শরির খারাপ থাকতো তাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা শুরু করে দিতাম। ""প্লিজ আমার বাবুটার জন্য দোয়া করবেন ও খুব অসুস্থ"।
জান তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা??
ও কষ্ট পেত ভেবে আমার কষ্টের আর কোন সীমা ছিলোনা। ভাবতাম ও একা একা কষ্ট পাবে তা হতে পারেনা। তাই নিজে নিজে ব্লেড দিয়ে হাত কাটতাম। কাটার পর একটু স্বস্তি মিলতো মনে।
মোটকথা একটা ছেলে একটা মেয়ের প্রতি আর একটা মেয়ের একটা ছেলের প্রতি যতটা কেয়ারিং আর দুর্বল হওয়া সম্ভব তার থেকে আমাদের মাঝে কোন অংশেই কমতি ছিলোনা।
আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে বলে বেড়াতাম ওকে নিয়ে কতশত স্বপ্ন আমার। ও ছাড়া আমার পৃথিবীতে আর কেউ নাই। ওকে ছাড়া আমি আমার একটা মুহুর্ত কল্পনাও করতে পারিনা।
এভাবেই চলে আমাদের এই মনোমুগ্ধকর প্রণয়।
কিছুদিন পরে ওর সাথে আমার কিছু অমিল সৃষ্টি হয়। নিজেদের মধ্যে প্রতিদিন ঝগড়া হতে থাকে।
ছোটখাটো ব্যপারেই অনেক বড় ঝগড়া হতো।
হঠাত করেই একদিন ওর সাথে আমার রিলেশন টা শেষ হয়ে যায়। শেষ হয়ে যায় বলতে ওই আমাকে ছেড়ে চলে যায়।কারন বলতে তেমন কিছু ছিলোনা। যা ছিলো,সেটা হলো আমার ক্যারিয়ার নেই,আমি চলি বাপের টাকায় আমাকে স্টান্ড করতে এখনো বহু দেরী।এর আগেই আমার থেকে বহু ভালো ক্যারিয়ারওয়ালা ছেলে হয়ত তার পানি পাওয়ার জন্য ব্যাগ্রচিত্তে অপেক্ষা করছিলো। যাই হোক সে আমার সাথে ব্রেকাপ করে দেয়।
ও নিজের ক্যারিয়ার বন্ধুবান্ধব নিয়া বিজি হয়ে পড়ে। কিন্তু আমি অই মুহুরতে সেই পরিস্থিতি ঠিক সামলে নিতে পারিনি।
প্রতিদিন কান্না করে করে বালিশ কয়টা ভিজাইছি তার ইয়ত্তা ছিলোনা।
শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৫
শিশির ভেজা ভোরে তুমি নেই বলে
কোয়াশা ঢাকা ভোরবেলা ঘুম ভাঙ্গে পাখি কিচির মিচির ডাকে তারপর বিছানা ছেড়ে চোখ কচলাতে কচলাতে শিশির ভেজা ঘাসের উপর দিয়ে হেটে চললাম,
-
কিন্তু যখন গাছের পাতা থেকে এক ফোটা জল মুখের উপর পড়ে তখন সারা শরীর শির শির করে কেপে উঠে, আর মনে পড়ে প্রিয়া তোমার কথা।
-
প্রিয়া তুমি আজ পাশে নেই, পাশে থাকলে হয়ত তোমার ওড়না দিয়ে আলতো করে মুছে দিতে, অামার মুখে পড়া শিশির কণা জল গুলো।
-
ঘুমের আলসে ভাবের সাথে হেটে চলার ক্লান্ততা নিয়ে গাছের নিচে ঘাসের উপর বসি, তখন যে শিশির কণাগুলো তোমার কথা মনে করিয়ে দেয়,আর তখনই তোমার স্বপ্নগুলো হাতচানি দেয়,
আমার মনের গহিন ঘরে।
-
তোমার পিঠে পিঠ লাগিয়ে ঘাসের উপর বসে গল্প করতাম তখন কতই না স্বপ্ন দেখাতে আগামীর পথ চলার,কিন্তু আজ তুমি নেই।তুমি নেই বলে কি হয়েছে আমিতো আছি আজও তোমার স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে।
-
যতো দিন বেঁচে থাকবো, তোমার স্বপ্ন অার তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকবো, তুমি অাজ অামার সঙ্গে নেই,, তবে তোমার স্বপ্ন অার তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি গুলো এখন অামার সঙ্গী,
-
কিন্তু যখন গাছের পাতা থেকে এক ফোটা জল মুখের উপর পড়ে তখন সারা শরীর শির শির করে কেপে উঠে, আর মনে পড়ে প্রিয়া তোমার কথা।
-
প্রিয়া তুমি আজ পাশে নেই, পাশে থাকলে হয়ত তোমার ওড়না দিয়ে আলতো করে মুছে দিতে, অামার মুখে পড়া শিশির কণা জল গুলো।
-
ঘুমের আলসে ভাবের সাথে হেটে চলার ক্লান্ততা নিয়ে গাছের নিচে ঘাসের উপর বসি, তখন যে শিশির কণাগুলো তোমার কথা মনে করিয়ে দেয়,আর তখনই তোমার স্বপ্নগুলো হাতচানি দেয়,
আমার মনের গহিন ঘরে।
-
তোমার পিঠে পিঠ লাগিয়ে ঘাসের উপর বসে গল্প করতাম তখন কতই না স্বপ্ন দেখাতে আগামীর পথ চলার,কিন্তু আজ তুমি নেই।তুমি নেই বলে কি হয়েছে আমিতো আছি আজও তোমার স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে।
-
যতো দিন বেঁচে থাকবো, তোমার স্বপ্ন অার তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকবো, তুমি অাজ অামার সঙ্গে নেই,, তবে তোমার স্বপ্ন অার তোমার রেখে যাওয়া স্মৃতি গুলো এখন অামার সঙ্গী,
"হবু বউয়ের ইচ্ছে"
অটোবাইক স্টান্ডের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। একটা অটোতে দেখি একটা মেয়ে বসে
আছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো অটোটা ছাড়বে। ব্যাপারটাকে তেমন একটা আমলে না
নিয়ে হেটেই চলেছি। কিন্তু কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে থমকে গেলাম। মনে হচ্ছিলো
মূল্যবান কিছু একটা পিছনে ফেলে যাচ্ছি। উলটো হাটা দিয়ে মেয়েটার
সামনাসামনি আবার আসলাম।
.
সামনাসামনি আসতেই চোখে চোখ পড়ে গেলো। অদ্ভুত সুন্দর মেয়েটা। গাঢ় কালো রঙের অক্ষিগোলক দুটো অন্যরকম এক উন্মাদনায় আমায় মাতিয়ে তুললো। কালো রঙ্গের শীতের কোর্টটাতে একটু বেশিই সুন্দর লাগছিলো মেয়েটাকে।
.
মেয়েটা জিজ্ঞাসু আর বিরক্তি চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো। আমি আর দেরি না করে অটোওয়ালাকে 'মামা চলেন' বলে মেয়েটার পাশে বসে পড়লাম। অটোওয়ালা বলে উঠলো- 'কই যাবেন'? 'আপনি যতদূর যাবেন ততদূর যাবো,চলেন' এই বলে একটা হিরো হিরো ভাব নিয়ে মেয়েটার পাশের আসনটা খুব ভালভাবে দখল করলাম।
.
আমার মিশন শুধু মেয়েটার সাথে একটু কথা বলা, পরিচয় হওয়া এই আরকি। অটোবাইক চলতে শুরু করলো এমন সময় নাম না জানা মেয়েটার জবান খুললো। গোলাপ পাপড়ি ঠোটে বলে উঠলো - 'মামা থামেন আমি যাবোনা।'
.
অটোবাইক থামলো আর ছোটখাটো একটা বাজ পড়লো আমার মাথায়। স্বল্পদৈর্ঘ্য স্বপ্ন আমার নিমিষেই ভেঙ্গে গেলো।
.
মেয়েটা আবার বলে উঠলো- 'মামা আমি একাই যাবো, অন্য কোনও প্যাসেঞ্জারের সাথে আমি যেতে পারবনা, আর এই ছেলেটার তো হাব ভাবও ভাল না।'
.
আমি উপস্থিত ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা হয়ে গেলাম। পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিবো বুঝতেই পারছিনা। অটো থেকে আমি নেমে গেলে তো আমি হেরে যাবো আর আমিতো হারার পাত্র নই। সাহস করে বলেই ফেললাম- 'পৃথিবীর কোনো শক্তি আমায় অটো থেকে নামাতে পারবেনা, আর মামা আপনি চলেন তো আমি ম্যানেজ করছি ব্যাপারটা।'
.
মেয়েটা বিরক্তি নিয়ে কি যেনো ভাবলো তারপর বললো,
-'তবে আপনি ওইদিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকবেন, আমার দিকে তাকাতে পারবেন না, বিষয়টা আমার খুব অস্বস্তিকর লাগছে।'
- 'সমস্যা নেই মিস অথৈ, আমি এদিকে ঘুরে যেতেও রাজি আছি।'
.
আসল ঘটনাটা ঘটবে এখন তা আমি ভাল করেই জানি। তাই সুন্দরী বালিকার দিকে না তাকিয়ে সুন্দর প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে রইলাম।
.
- 'আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?'
.
আমি জবাব না দিয়ে চুপ করেই রইলাম।
.
- 'আপনি কি আমাকে চেনেন?'
.
আমি আবার কোনও জবাব না দিয়ে চুপ করে রইলাম।
.
- 'আচ্ছা আপনি এদিকে ঘুরতে পারেন কোনো সমস্যা নেই কিন্তু আপনি আমার নাম কিভাবে জানেন সেটা বলুন।'
.
ঘুরে বসলাম। অথৈ এর উৎসুক চোখে তাকিয়ে বলা শুরু করলাম- 'তোমার বিয়ের কথা বার্তা চলছে 'আমু' নামের এক ছেলের সাথে, কথাটা কি আমি ভুল বলেছি?'
- 'নাহ! ভুল বলেননি, কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন এসব?'
- 'ছেলেটির ছবি তুমি দেখোনি?'
- 'নাহ দেখিনি, রাগ করেই দেখিনি।'
- 'কেনো দেখোনি জানতে পারি?'
- 'কেননা এখন আমার বিয়ে করতে কোনরকম ইচ্ছে নেই।'
- 'বিয়েতো একদিন করতেই হবে তো এখন করলে সমস্যা কি শুনি?'
- 'সেই কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে হবে মিঃ আমু?'
- 'আজব তো! তুমি আমায় চিনলে কিভাবে!'
- 'অনুমান করে।'
- 'অনুমান তো ভুলও হতে পারতো? '
- 'আমার অনুমান কখনও যে ভুল হয়না!'
.
পরিস্থিতি এখন পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে। হবু বউয়ের সাথে কথা বলতে খুব ভালই লাগছিলো। কিন্তু আমি হবু বউ বললে কি হবে সে তো বিয়ে করতেই রাজি না। কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সে বললো যে সে কিনা এরেঞ্জ ম্যারেজ কোনোদিনও করবেনা তার অনেক ইচ্ছে যে প্রেম করে বিয়ে করবে।
.
খুব হাসি পাচ্ছিলো অথৈ এর কথা শুনে। তবে সে আমায় একটা অফার দিয়ে বসলো যে, যদি আমি বিয়ের আগে তিনমাস প্রেম করতে রাজি হই তাহলে সেও আমাকে বিয়ে করতে রাজি।
.
প্রেম করে বিয়ে করার আমারও কম ইচ্ছে ছিলোনা। অথৈ আমার ইচ্ছে পূরন করে দিলো। দুজনের ইচ্ছে না হয় একসাথেই পুরন হবে। খুশি মনে বিয়ের ডেট তিনমাস পিছিয়ে নিলাম, হবু বউয়ের ইচ্ছে বলে কথা
.
সামনাসামনি আসতেই চোখে চোখ পড়ে গেলো। অদ্ভুত সুন্দর মেয়েটা। গাঢ় কালো রঙের অক্ষিগোলক দুটো অন্যরকম এক উন্মাদনায় আমায় মাতিয়ে তুললো। কালো রঙ্গের শীতের কোর্টটাতে একটু বেশিই সুন্দর লাগছিলো মেয়েটাকে।
.
মেয়েটা জিজ্ঞাসু আর বিরক্তি চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো। আমি আর দেরি না করে অটোওয়ালাকে 'মামা চলেন' বলে মেয়েটার পাশে বসে পড়লাম। অটোওয়ালা বলে উঠলো- 'কই যাবেন'? 'আপনি যতদূর যাবেন ততদূর যাবো,চলেন' এই বলে একটা হিরো হিরো ভাব নিয়ে মেয়েটার পাশের আসনটা খুব ভালভাবে দখল করলাম।
.
আমার মিশন শুধু মেয়েটার সাথে একটু কথা বলা, পরিচয় হওয়া এই আরকি। অটোবাইক চলতে শুরু করলো এমন সময় নাম না জানা মেয়েটার জবান খুললো। গোলাপ পাপড়ি ঠোটে বলে উঠলো - 'মামা থামেন আমি যাবোনা।'
.
অটোবাইক থামলো আর ছোটখাটো একটা বাজ পড়লো আমার মাথায়। স্বল্পদৈর্ঘ্য স্বপ্ন আমার নিমিষেই ভেঙ্গে গেলো।
.
মেয়েটা আবার বলে উঠলো- 'মামা আমি একাই যাবো, অন্য কোনও প্যাসেঞ্জারের সাথে আমি যেতে পারবনা, আর এই ছেলেটার তো হাব ভাবও ভাল না।'
.
আমি উপস্থিত ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা হয়ে গেলাম। পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দিবো বুঝতেই পারছিনা। অটো থেকে আমি নেমে গেলে তো আমি হেরে যাবো আর আমিতো হারার পাত্র নই। সাহস করে বলেই ফেললাম- 'পৃথিবীর কোনো শক্তি আমায় অটো থেকে নামাতে পারবেনা, আর মামা আপনি চলেন তো আমি ম্যানেজ করছি ব্যাপারটা।'
.
মেয়েটা বিরক্তি নিয়ে কি যেনো ভাবলো তারপর বললো,
-'তবে আপনি ওইদিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকবেন, আমার দিকে তাকাতে পারবেন না, বিষয়টা আমার খুব অস্বস্তিকর লাগছে।'
- 'সমস্যা নেই মিস অথৈ, আমি এদিকে ঘুরে যেতেও রাজি আছি।'
.
আসল ঘটনাটা ঘটবে এখন তা আমি ভাল করেই জানি। তাই সুন্দরী বালিকার দিকে না তাকিয়ে সুন্দর প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে রইলাম।
.
- 'আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?'
.
আমি জবাব না দিয়ে চুপ করেই রইলাম।
.
- 'আপনি কি আমাকে চেনেন?'
.
আমি আবার কোনও জবাব না দিয়ে চুপ করে রইলাম।
.
- 'আচ্ছা আপনি এদিকে ঘুরতে পারেন কোনো সমস্যা নেই কিন্তু আপনি আমার নাম কিভাবে জানেন সেটা বলুন।'
.
ঘুরে বসলাম। অথৈ এর উৎসুক চোখে তাকিয়ে বলা শুরু করলাম- 'তোমার বিয়ের কথা বার্তা চলছে 'আমু' নামের এক ছেলের সাথে, কথাটা কি আমি ভুল বলেছি?'
- 'নাহ! ভুল বলেননি, কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন এসব?'
- 'ছেলেটির ছবি তুমি দেখোনি?'
- 'নাহ দেখিনি, রাগ করেই দেখিনি।'
- 'কেনো দেখোনি জানতে পারি?'
- 'কেননা এখন আমার বিয়ে করতে কোনরকম ইচ্ছে নেই।'
- 'বিয়েতো একদিন করতেই হবে তো এখন করলে সমস্যা কি শুনি?'
- 'সেই কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে হবে মিঃ আমু?'
- 'আজব তো! তুমি আমায় চিনলে কিভাবে!'
- 'অনুমান করে।'
- 'অনুমান তো ভুলও হতে পারতো? '
- 'আমার অনুমান কখনও যে ভুল হয়না!'
.
পরিস্থিতি এখন পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে। হবু বউয়ের সাথে কথা বলতে খুব ভালই লাগছিলো। কিন্তু আমি হবু বউ বললে কি হবে সে তো বিয়ে করতেই রাজি না। কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সে বললো যে সে কিনা এরেঞ্জ ম্যারেজ কোনোদিনও করবেনা তার অনেক ইচ্ছে যে প্রেম করে বিয়ে করবে।
.
খুব হাসি পাচ্ছিলো অথৈ এর কথা শুনে। তবে সে আমায় একটা অফার দিয়ে বসলো যে, যদি আমি বিয়ের আগে তিনমাস প্রেম করতে রাজি হই তাহলে সেও আমাকে বিয়ে করতে রাজি।
.
প্রেম করে বিয়ে করার আমারও কম ইচ্ছে ছিলোনা। অথৈ আমার ইচ্ছে পূরন করে দিলো। দুজনের ইচ্ছে না হয় একসাথেই পুরন হবে। খুশি মনে বিয়ের ডেট তিনমাস পিছিয়ে নিলাম, হবু বউয়ের ইচ্ছে বলে কথা
শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫
অভিমানী ভালোবাসা
<<<অভিমানী ভালোবাসা
বিয়ের অনুষ্ঠানে এক একা বসে আছে লিমা। প্রচন্ড বিরক্ত
হচ্ছে সে। বিরক্ত লাগছে তার অনেক বেশি। আগেই
জানতো এখানে এসে একা থাকতে হবে, তাই আসতেই
চায়নি সে। কিন্তু মায়ের পিড়াপীড়িতে আসতে বাধ্য হয়েছে।
কোন কাজ না পেয়ে ফেসবুকে লগইন করলো। করেই
দেখে অনলাইনে রাকিব, লিমার বয়ফ্রেন্ড !
- কি করো, জান ? ( লিমাকে অনলাইনে দেখামাত্রই রাকিবের
মেসেজ )
- কিছু না। মেজাজ খারাপ এখন।
- হইছে টা কি ?
- কথা বলবা না।
- ওকে।
- ওকে মানে কি ?
- তুমিই তো বললা কথা বলতে না।
- তাই বলে আমার সাথে কথা বলবা না ?
- আরেহ আশ্চর্য তুমিই তো বললা !
- ও বুঝছি তুমি তো এখন মেয়েদের সাথে চ্যাটিং-এ ব্যস্ত।
করো করো যত ইচ্ছা চ্যাট করো।
- আজব তো। হু করতেছি আমি চ্যাট। তোমার কি তাতে ?
- কি ??????????
- জানো আমি এখন ১০ জন মেয়ের সাথে চ্যাট করতেছি !
প্রচন্ড রাগে ফেসবুক থেকে বের হয়ে যায় লিমা !
ইচ্ছা করেই রাকিব কাজটা করে। লিমাকে রাগিয়ে দেয় সে। আর লিমাও একটু আহ্লাদী মেয়ে, মন মত কিছু না হলেও হয়েছে, প্রচন্ড রেগে যায় সে। বরাবরের মতই এখন
রাগে ফুঁসছে সে। ফর্সা, গোলগাল চেহারাটা রক্ত বর্ণ ধারণ
করেছে। একটু পরেই আবার ফেসবুকে গেলো।
গিয়ে নিজের আইডি থেকে লগআউট করে রাকিবের
আইডিতে গেলো।
গিয়ে দেখে কিসের কি ! সে বাদে সর্বশেষ
মেসেজিং করেছে তার বন্ধুদের সাথে। কোন মেয়ের
সাথেই তার চ্যাটিং হয়নি। তারমানে মিথ্যা বলেছে সে !
আরেকদফা রেগে গেলো লিমা।
আবার নিজের আইডিতে গিয়ে রাকিবকে মেসেজ দিলো, "
আমার সাথে মিথ্যা কথা বললা কেন ? "
- তারমানে তুমি আমার আইডিতে লগইন করেছিলে ? ছি ছি !
না বলে অন্যের আইডিতে যাও, লজ্জা নাই তোমার ?
- কি ????????????
- এত কি কি করো কেন ?
- তোমার সাথে কথা নাই।
- আরেহ আজব !
রিপ্লাই দেয় না লিমা। রেগে মেগে ফেসবুক থেকে বের
হয়ে গেছে সে। একটু পরে আবার লগইন
করে দেখে একটা লাভ স্টোরি দিয়েছে রাকিব, নায়ক
যথারীতি আর্মি অফিসার !
- আচ্ছা তুমি এত আর্মি আর্মি করো কেন গল্পে ?
- এনি প্রব্লেম ?
- মানে কি ?
- মানে হচ্ছে আমার গল্পের প্লটের
সাথে আর্মি অফিসারেরা বেশি খাপ খায়, তাই ওভাবে দেই।
আমি ওভাবে কল্পনা করে লিখতে পছন্দ করি।
- না তুমি এভাবে বলো নাই !
- মানে ?
- তুমি প্রথমে অন্যভাবে বলেছ।
- আরেহ আজব।
- কি আজব ?
- তুমি ! নারায়ণগঞ্জের মেয়ে তো, একটু
বেশি সন্দেহপ্রবণ ! সবসময় একটু বেশি বুঝে !
- তোমার সাথে কথা নাই।
- উফফ !! কিছু হইলেই খালি কথা নাই, কথা নাই বলে গান শুরু
করে দিবে মেয়েটা !
- তুমি মুড়ি খাও।
- তুমি বিয়েতে গেছো না ?
- হুম।
- তাইলে তুমি ভালো করে মোরগ-পোলাও খাও !
তাইলে যদি মাথায় একটু বুদ্ধি হয় !
মেসেজ দেখে আবার রেগে গেলো লিমা। এবার আর
কথাই নাই। সোজা আইডি ডি-অ্যাক্টিভ করে বের
হয়ে গেলো।
পরদিন বিকালে পার্কে বসে আছে রাকিব।
গতরাতে লিমাকে প্রচন্ড রাগিয়ে দিয়েছে সে !
যে কারণে মেয়েটা প্রথম প্রথম তার ফোনও ধরনি।
মোবাইলের মেসেজে অনবরত সরি বলার বলার পরে একবার
ফোন ধরেছিল। ফোনেও অনেকবার সরি বলেছে,
লিমা কোন কথা বলেনি। তাই
তাকে বিকালে এখানে আসতে বলেছে। যতই কথা না বলুক রাকিব
জানে লিমা না এসে পারবে না।
যথা সময়েই লিমা এসে হাজির। রাকিবকে দেখেই, " তোমার
সাথে কোন কথা নাই। "
মুচকি হাসে রাকিব। রাগলে লিমাকে দেখতে বেশি সুন্দর লাগে।
তাই ইচ্ছা করেই সে তাকে রাগায়। আর সে ভালো করেই
জানে লিমার রাগ কি করে ভাঙ্গাতে হয় !
পকেট থেকে কিটক্যাটের একটা বড় প্যাকেট বের
করে বললো, " ভেবেছিলাম তোমাকে দিবো কিন্তু এখন
এটা দেওয়ার জন্য মনে হয় অন্য একজন
মেয়ে খুঁজতে হবে ! "
" কি ? " চোখে পাকিয়ে বলে লিমা। " এটা আমার জন্য আনোনি ?
"
- এনেছিলাম তোমার জন্যই। কিন্তু তুমি তো নিতে চাও না ...
- ফাজিল।
আর রাগ ধরে রাখতে পারলো না লিমা।
হেসে ফেললো সে। তার মধ্যে এখনো বাচ্চাদের মত
চকলেটপ্রীতি কাজ করে। আর সেটা জানে রাকিব। লিমার রাগ
ভাঙ্গাতে সে তাই চকলেটের ব্যবহারই করে ! এভাবেই
তাদের খুনসুটির সমাপ্তি ঘটে যেটা গত দুই বছর ধরে প্রতিনিয়ত
চলে আসছে !
পার্কে বসে রাকিবের কাঁধে মাথা রেখে চকলেট খাচ্ছে লিমা !
আর দুজনে নীরবে উপভোগ করছে পড়ন্ত বিকেলের
আশ্চর্য সুন্দর, মায়াবী পরিবেশটা !
দুজন প্রেমিক-প্রেমিকার এ দৃশ্যটা আশ্চর্য সুন্দর, সমস্ত
সৌন্দর্যকে যেন হার মানিয়ে যায় ! অসাধারণ সুন্দর আর
মায়াবী পড়ন্ত বিকেলও এ দৃশ্য দেখে যেন হিংসায় মরে যায় !
বিয়ের অনুষ্ঠানে এক একা বসে আছে লিমা। প্রচন্ড বিরক্ত
হচ্ছে সে। বিরক্ত লাগছে তার অনেক বেশি। আগেই
জানতো এখানে এসে একা থাকতে হবে, তাই আসতেই
চায়নি সে। কিন্তু মায়ের পিড়াপীড়িতে আসতে বাধ্য হয়েছে।
কোন কাজ না পেয়ে ফেসবুকে লগইন করলো। করেই
দেখে অনলাইনে রাকিব, লিমার বয়ফ্রেন্ড !
- কি করো, জান ? ( লিমাকে অনলাইনে দেখামাত্রই রাকিবের
মেসেজ )
- কিছু না। মেজাজ খারাপ এখন।
- হইছে টা কি ?
- কথা বলবা না।
- ওকে।
- ওকে মানে কি ?
- তুমিই তো বললা কথা বলতে না।
- তাই বলে আমার সাথে কথা বলবা না ?
- আরেহ আশ্চর্য তুমিই তো বললা !
- ও বুঝছি তুমি তো এখন মেয়েদের সাথে চ্যাটিং-এ ব্যস্ত।
করো করো যত ইচ্ছা চ্যাট করো।
- আজব তো। হু করতেছি আমি চ্যাট। তোমার কি তাতে ?
- কি ??????????
- জানো আমি এখন ১০ জন মেয়ের সাথে চ্যাট করতেছি !
প্রচন্ড রাগে ফেসবুক থেকে বের হয়ে যায় লিমা !
ইচ্ছা করেই রাকিব কাজটা করে। লিমাকে রাগিয়ে দেয় সে। আর লিমাও একটু আহ্লাদী মেয়ে, মন মত কিছু না হলেও হয়েছে, প্রচন্ড রেগে যায় সে। বরাবরের মতই এখন
রাগে ফুঁসছে সে। ফর্সা, গোলগাল চেহারাটা রক্ত বর্ণ ধারণ
করেছে। একটু পরেই আবার ফেসবুকে গেলো।
গিয়ে নিজের আইডি থেকে লগআউট করে রাকিবের
আইডিতে গেলো।
গিয়ে দেখে কিসের কি ! সে বাদে সর্বশেষ
মেসেজিং করেছে তার বন্ধুদের সাথে। কোন মেয়ের
সাথেই তার চ্যাটিং হয়নি। তারমানে মিথ্যা বলেছে সে !
আরেকদফা রেগে গেলো লিমা।
আবার নিজের আইডিতে গিয়ে রাকিবকে মেসেজ দিলো, "
আমার সাথে মিথ্যা কথা বললা কেন ? "
- তারমানে তুমি আমার আইডিতে লগইন করেছিলে ? ছি ছি !
না বলে অন্যের আইডিতে যাও, লজ্জা নাই তোমার ?
- কি ????????????
- এত কি কি করো কেন ?
- তোমার সাথে কথা নাই।
- আরেহ আজব !
রিপ্লাই দেয় না লিমা। রেগে মেগে ফেসবুক থেকে বের
হয়ে গেছে সে। একটু পরে আবার লগইন
করে দেখে একটা লাভ স্টোরি দিয়েছে রাকিব, নায়ক
যথারীতি আর্মি অফিসার !
- আচ্ছা তুমি এত আর্মি আর্মি করো কেন গল্পে ?
- এনি প্রব্লেম ?
- মানে কি ?
- মানে হচ্ছে আমার গল্পের প্লটের
সাথে আর্মি অফিসারেরা বেশি খাপ খায়, তাই ওভাবে দেই।
আমি ওভাবে কল্পনা করে লিখতে পছন্দ করি।
- না তুমি এভাবে বলো নাই !
- মানে ?
- তুমি প্রথমে অন্যভাবে বলেছ।
- আরেহ আজব।
- কি আজব ?
- তুমি ! নারায়ণগঞ্জের মেয়ে তো, একটু
বেশি সন্দেহপ্রবণ ! সবসময় একটু বেশি বুঝে !
- তোমার সাথে কথা নাই।
- উফফ !! কিছু হইলেই খালি কথা নাই, কথা নাই বলে গান শুরু
করে দিবে মেয়েটা !
- তুমি মুড়ি খাও।
- তুমি বিয়েতে গেছো না ?
- হুম।
- তাইলে তুমি ভালো করে মোরগ-পোলাও খাও !
তাইলে যদি মাথায় একটু বুদ্ধি হয় !
মেসেজ দেখে আবার রেগে গেলো লিমা। এবার আর
কথাই নাই। সোজা আইডি ডি-অ্যাক্টিভ করে বের
হয়ে গেলো।
পরদিন বিকালে পার্কে বসে আছে রাকিব।
গতরাতে লিমাকে প্রচন্ড রাগিয়ে দিয়েছে সে !
যে কারণে মেয়েটা প্রথম প্রথম তার ফোনও ধরনি।
মোবাইলের মেসেজে অনবরত সরি বলার বলার পরে একবার
ফোন ধরেছিল। ফোনেও অনেকবার সরি বলেছে,
লিমা কোন কথা বলেনি। তাই
তাকে বিকালে এখানে আসতে বলেছে। যতই কথা না বলুক রাকিব
জানে লিমা না এসে পারবে না।
যথা সময়েই লিমা এসে হাজির। রাকিবকে দেখেই, " তোমার
সাথে কোন কথা নাই। "
মুচকি হাসে রাকিব। রাগলে লিমাকে দেখতে বেশি সুন্দর লাগে।
তাই ইচ্ছা করেই সে তাকে রাগায়। আর সে ভালো করেই
জানে লিমার রাগ কি করে ভাঙ্গাতে হয় !
পকেট থেকে কিটক্যাটের একটা বড় প্যাকেট বের
করে বললো, " ভেবেছিলাম তোমাকে দিবো কিন্তু এখন
এটা দেওয়ার জন্য মনে হয় অন্য একজন
মেয়ে খুঁজতে হবে ! "
" কি ? " চোখে পাকিয়ে বলে লিমা। " এটা আমার জন্য আনোনি ?
"
- এনেছিলাম তোমার জন্যই। কিন্তু তুমি তো নিতে চাও না ...
- ফাজিল।
আর রাগ ধরে রাখতে পারলো না লিমা।
হেসে ফেললো সে। তার মধ্যে এখনো বাচ্চাদের মত
চকলেটপ্রীতি কাজ করে। আর সেটা জানে রাকিব। লিমার রাগ
ভাঙ্গাতে সে তাই চকলেটের ব্যবহারই করে ! এভাবেই
তাদের খুনসুটির সমাপ্তি ঘটে যেটা গত দুই বছর ধরে প্রতিনিয়ত
চলে আসছে !
পার্কে বসে রাকিবের কাঁধে মাথা রেখে চকলেট খাচ্ছে লিমা !
আর দুজনে নীরবে উপভোগ করছে পড়ন্ত বিকেলের
আশ্চর্য সুন্দর, মায়াবী পরিবেশটা !
দুজন প্রেমিক-প্রেমিকার এ দৃশ্যটা আশ্চর্য সুন্দর, সমস্ত
সৌন্দর্যকে যেন হার মানিয়ে যায় ! অসাধারণ সুন্দর আর
মায়াবী পড়ন্ত বিকেলও এ দৃশ্য দেখে যেন হিংসায় মরে যায় !
রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫
তুমি দেখতে সুন্দর বলে,
অন্যকে ঘৃনা করোনা।
কারন, তুমি যার হাতে সৃষ্টি,
সে তার হাতে সৃষ্টি ।
কখনো নিজের সৌন্দর্য নিয়ে
অহংকার করোনা.....
অন্যকে ঘৃনা করোনা।
কারন, তুমি যার হাতে সৃষ্টি,
সে তার হাতে সৃষ্টি ।
কখনো নিজের সৌন্দর্য নিয়ে
অহংকার করোনা.....
শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫
*** কিশোর প্রেম ***
.
আমাদের স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়া এক ছেলে কিশোর প্রেমের ডাকে সারা দিয়ে এক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। ঘটনাবশত মেয়েটি ছিল পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভাতিজি। ছেলে এবং মেয়ে পালিয়ে গিয়ে আবেগের তাড়ানায় বিয়েও করে ফেলে। একসময় তাদের খোঁজাখুঁজি শুরু হয় এবং তারা ধরাও পড়ে যায়। পুলিশের ভাতিজি বলে কথা। ছেলেটাকে ধরে এনে দেয়া হলো উদুম মাইর। পুলিশের হাতে ধরা খাওয়া মানে.....।
ছেলেটাকে ৭ দিনের রিমান্ড দেয়া হলো অস্ত্রের কথা বলে। ছেলের বাবা কেউ পিটানো হলো। .
.
.
এইগুলা আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া কাহিনী। কাহিনী বললে ভুল হবে, এই গুলা বাস্তব ঘটনা। আমার কথা হল এইখানে কি ছেলেটার একার দোষ ছিল নাকি মেয়ে টাও সমান ভাবে দোষী?? একটা কথা মনে রাখবেন এক হাতে কখনো তালি বআমার কথা হলো একটা দশ্ম শ্রেনিতে পড়া ছেলে - মেয়ের একজন আরেক জনকে ভালো লাগতেই পারে। তাই বলে পালিয়ে যেতে হবে কেন?? পালিয়ে গেল ছেলে - মেয়ে কিন্তু ছেলের সাথে তার বাবা কেউ কেন মার খেতে হল,, কেনই বা এত অপদস্থ হতে হলো।
কিশোর প্রেম যার কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সেটাতে কেন এত বেশি বর্তমান ছেলেরা - মেয়েরা ঝুকে পড়ছে। এর প্রধান কারন হলো আমাদের মিডিয়া এবং চ্যানেল গুলা। তারা প্রতিনিয়ত প্রচার করে যাচ্ছে নানা রোমান্টিক কাহিনী। যেগুলা দেখে কিশোরদের মনে হয়,, ইসস যদি আমারও একটা গার্লফ্রেন্ড থাকত। টিভিতে কোনো প্রকার শিক্ষামুল্ক জিনিস নাই বললেই চলে,, যা আছে তা অতি অল্প।.......
.
.
" কিশোর প্রেম যে কোনো প্রকার বোমা অপেক্ষা মারাত্মক। এটি নিমিষে একটি প্রজন্ম কে ধংসস করে দিয়ে পারে । প্রেম করো কিন্তু কমপক্ষে স্কুল টা পাশ করো।....
.
.
নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলো,,তোমাকে মেয়েদের পিছনে ছুটে যেতে হবে না।। তোমাকে পাত্রী ও দেখতে হবে না।। বস্তা বস্তা প্রস্তাব আসবে তোমার। তুমি দেখিয়ে দাও তোমার ভিতরেও শক্তি আছে। তোমার ও মনোবল আছে। এসব না দেখে মরতে চাইলে,,, কর কিশোর প্রেম। পালিয়ে যাও কোনো মেয়েকে নিয়ে। লাঞ্চিত কর তোমার পিতা মাতা কে। তাদের বুঝিয়ে দাও তোমার মত ছেলে / মেয়ে কে জন্ম দিয়ে তারা ভুল করেছেন।
.
.
তোমার জীবন তোমার সিদ্ধান্ত। কিন্তু একবার হলেও ভেবে দেখো তোমার পিতা মাতার কথা,,যাদের ইচ্ছা ছিল তাদের সন্তানেরা বিশ্বজোড়া নাম তৈরি করবে। তাদের মনে কস্ট দিয়ে কিভাবে তুমি জিবনে উন্নতি করতে চাও।
.
.
লজ্জা তুমি আজ জাতির থেকে হারিয়ে গেছো।
মমতা তুমি আজ বড় একা হয়ে গেছো।
সার্থ আজ তুমি আমার বড় আপন।
প্রেম আজ তুমি অনেক ক্ষুদ্র হয়ে গেছো।
ক্রোধ আজ তোমার পরিধি অনেক বিশাল।
.
শিক্ষামুলক গল্প আজ তা যোগ্যতা হারিয়েছে ।
*এ কেমন কথা??
চারিদিকে আজ শুধু রোমান্টিকতা আর রোমান্টিকতা
স্বপ্নের ক্যানভাস
কাব্যঃ কিরে দোস্ত কেমন আছিস?
--- নীলঃ আরে আর বলিসনা, স্বপ্ন আমার যা হাল করেছে উফ...
--- কাব্যঃ কেন কি করেছে?
--- নীলঃ কি আর করেছে আমায় দেখেও বুঝতে পারছিসনা?
--- কাব্যঃ হুম একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছি তকে দেখে। আচ্ছা তুই আর হিমুর মতন I mean হিমুকে অনুকরণ করিসনা!!!
--- নীলঃ না বেটা ম্যাডামের নির্দেশ খালি পায়ে হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে আর মুখে পাণ গুঁজে উদ্ভট পাগলাদের মতন ঘুরাঘুরি করা যাবেনা।
--- কাব্যঃ বাহ বেশ ভালই পরিবর্তন করেছিস নিজের। এবারে তাহলে রোমাঞ্চিত নীল তাও আবার নীল স্বপ্ন। বাহ বাহ চালিয়ে যা চালিয়ে যা। সালার আমি একটা পাইলে সারাজীবন বসে বসে খেতাম।
--- নীলঃ হুম এবারে তাইলে কাউকে বেছে নে। ভালোবাসাযুক্ত জীবনভর কাটা। দোআ করিস। আর বসে বসে খাবি মানে?
--- কাব্যঃ ওইতো আমার ভালোবাসার চাঁদমুখখানা দেখে বসেই পার করে দিতাম জীবনটা।
--- নীলঃ সালা ঝাটার বারি খাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসছেরে দোস্ত সময় হলে জানাস কেমন খেতে। আসি...
--- কাব্যঃ তুই সালা সবসময় এমন করিস। আমি যখনি কিছু করে উঠবো ভাবি ঠিক তখনি তুই আমার মণ ভেঙ্গে দিস। তর নামে মণ ভাঙ্গনের মামলা করবো।
--- নীলঃ ধ্যাত তর ভাষণ থামা। গেলাম।
--- কাব্যঃ যা তর লগে আর কথাই কমুনা।
--- নীলঃ হিঁ,,,,,,হিঁ,,,,,,হিঁ,,,,,,
--- কাব্যঃ আবার বলদের মতো হাঁসে। যা ভাগ।
--- নীলঃ ওওওওকেএএএ গেলামরে দোস্ত...
..
নীল আর কাব্য দুইজন খুব ভালো বন্ধু একেবারে ছেলেবেলা থেকেই। তারা দুজনে হিমুর বই পড়তে পড়তে হিমুকে অনুকরণ করা শুরু করে। আর স্বপ্ন হলো নীলের বেস্ট ফ্রেন্ড। নীল অনেক ভালোবাসে স্বপ্নকে।
..
--- স্বপ্নঃ হ্যালো ভাইয়া আমাকে আপনার সাইকেলে একটু লিফট দিবেন?
--- নীলঃ আরে না না। গ্রামের মানুষ দেখলে কি বলবে!!
--- স্বপ্নঃ প্লীজ আমার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। আর কেউ কিছু বলবেনা।
--- নীলঃ এ হয়না। একজন মেয়ে আরেকজন ছেলে তাও আবার সাইকেলে লিফট!! আমি কারোর হাঁসির পাত্র হতে চাইনা।
--- স্বপ্নঃ দেখুন এমন কথা বলছেননা যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে পারেননা।
--- নীলঃ আচ্ছা আচ্ছা উঠুন। মেপে দুই হাত দূরে বসবেন।
--- স্বপ্নঃ আপনার সাইকেলে আছে কতটুকু জায়গা?? গর্দভ একটা।
--- নীলঃ ওই হলো আরকি। যা বললাম তা মেনে বসবেন।
--- স্বপ্নঃ ওকে চলুন।
..
তারপর স্বপ্ন নীলের সাইকেল থেকে নেমে তড়িঘড়ি করে কলেজে চলে গেলো। কেননা স্বপ্নের পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার আর ৫ মিনিট বাকি ছিলো। নীলও কিছু বলেনি। নীল বুঝেছিল মেয়েটার সত্যি আর সময় নেই। তবে স্বপ্ন চলে যাওয়ার পর নীল উপলব্ধি করতে পারলো মেয়েটাকে সে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছে। বিভিন্ন ছাইপাঁশ মনের মাঝে অংকন করতে করতে কলেজ ছাড়লো।
নীল বাসায় গিয়ে ভাবছে আচ্ছা ওর সাথে কি আবার দেখা হবে, দেখা হলেই বা কি বলবো!! না না আমিতো হিমু প্রায়। হিমুদের এমন আশা নেই। আমি আর ওকে নিয়ে ভাববো না। যেই ভাবা সেই কাজ হতচ্ছাড়া নীল এক নিমিষেই ভুলে গেলো।
এদিকে স্বপ্ন বাসায় ফিরে এসে ছেলেটার কথা মনে করলো আর মনে মনে বিড়বিড় করতে লাগলো। ইস আমি অনেকটা স্বার্থপর... কালকেই ছেলেটার সাথে দেখা করে ধন্যবাদ জানাতে হবে। এইসব বলে স্বপ্ন রাতে ঘুমিয়ে পড়লো। সকাল হলো আর তৎক্ষণাত কিছু খেয়ে বেড়িয়ে পরলো গতদিনের রাস্তা ধরে। নীল বসে আছে তার প্রিয় হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে আর মুখে পাণ গুঁজে হিজল গাছটির নিচে। স্বপ্ন দেখতে পেয়ে, ডাকলো...
..
--- স্বপ্নঃ এইযে মিঃ কাল আমাকে ধন্যবাদ না দিয়ে চলে এলেন কেন?
..
নীল নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আর বেমালুম ভুলে গেলো গতকাল রাতের কথা যে নীল আর ওই মেয়ের কথা স্মরণ করবেনা কিন্তু এবার আর কথা না বলে থাকতে পারলনা। কেননা মেয়েটা দোষ করে তার উপড়ে চাপাচ্ছে।
..
--- নীলঃ ওই কি বলছেন!! আপনার মতো এমন মেয়ে আর একটাও দেখিনি।
--- স্বপ্নঃ ওমা আপনি কি খালি মেয়ে দেখে বেড়ান নাকি? অবশ্য যা দেখতে দেখাচ্ছে আপনাকে।
--- নীলঃ আপনি এমন কেন? আল্লাহ কি ঘারের তার টেরা করে দিছে? ঠিকঠাক মতো কথা বলতে পারেননা।
--- স্বপ্নঃ না পারিনা। একটা কথা বলি?
--- নীলঃ আলাদা করে আরো কিছু বলার ফন্দি আছে নাকি?
--- স্বপ্নঃ যা সত্যি তাই বলছি। আপনাকে দেখতে না আমার মরহুম চাচার মতো লাগছে।
--- নীলঃ মানে?
--- স্বপ্নঃ এইযে খালি পায়ে, গায়ে হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে তাও আবার পাণ মুখে। ছিঃ ছিঃ... জানেন কতটা বাজে দেখাচ্ছে আপনাকে?
--- নীলঃ তাআআ,,,তেএএ আপনার কি!! আমার এভাবে ভালো লাগে। আর আপনি বেশিয়ে করছেন কিন্তু।
--- স্বপ্নঃ আরে আরে এভাবে তু তু তুতলাচ্ছেন কেন? মুখ দেখো হিঁ,,,হিঁ,,,হিঁ একেবারে জুকার।
--- নীলঃ আপনার সঙ্গে আর কোন কথা নাই। ফালতু বজ্জাত মেয়ে।
--- স্বপ্নঃ যান যান,,,, আর শুনুন কালকে আমায় আপনার সাইকেলে লিফট দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
--- নীলঃ ধুর....
--- স্বপ্নঃ হিঁ,,,হিঁ,,,হিঁ,,,
..
সেদিনের পর থেকে নীল সেই যে মেয়েটার সাথে রাগ করেছে দীর্ঘ দেড় মাস তার রাগ একটুও কমানোর চেষ্টা করেনি। আমাকে কিনা তার মরহুম চাচার মতো
--- নীলঃ আরে আর বলিসনা, স্বপ্ন আমার যা হাল করেছে উফ...
--- কাব্যঃ কেন কি করেছে?
--- নীলঃ কি আর করেছে আমায় দেখেও বুঝতে পারছিসনা?
--- কাব্যঃ হুম একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছি তকে দেখে। আচ্ছা তুই আর হিমুর মতন I mean হিমুকে অনুকরণ করিসনা!!!
--- নীলঃ না বেটা ম্যাডামের নির্দেশ খালি পায়ে হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে আর মুখে পাণ গুঁজে উদ্ভট পাগলাদের মতন ঘুরাঘুরি করা যাবেনা।
--- কাব্যঃ বাহ বেশ ভালই পরিবর্তন করেছিস নিজের। এবারে তাহলে রোমাঞ্চিত নীল তাও আবার নীল স্বপ্ন। বাহ বাহ চালিয়ে যা চালিয়ে যা। সালার আমি একটা পাইলে সারাজীবন বসে বসে খেতাম।
--- নীলঃ হুম এবারে তাইলে কাউকে বেছে নে। ভালোবাসাযুক্ত জীবনভর কাটা। দোআ করিস। আর বসে বসে খাবি মানে?
--- কাব্যঃ ওইতো আমার ভালোবাসার চাঁদমুখখানা দেখে বসেই পার করে দিতাম জীবনটা।
--- নীলঃ সালা ঝাটার বারি খাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসছেরে দোস্ত সময় হলে জানাস কেমন খেতে। আসি...
--- কাব্যঃ তুই সালা সবসময় এমন করিস। আমি যখনি কিছু করে উঠবো ভাবি ঠিক তখনি তুই আমার মণ ভেঙ্গে দিস। তর নামে মণ ভাঙ্গনের মামলা করবো।
--- নীলঃ ধ্যাত তর ভাষণ থামা। গেলাম।
--- কাব্যঃ যা তর লগে আর কথাই কমুনা।
--- নীলঃ হিঁ,,,,,,হিঁ,,,,,,হিঁ,,,,,,
--- কাব্যঃ আবার বলদের মতো হাঁসে। যা ভাগ।
--- নীলঃ ওওওওকেএএএ গেলামরে দোস্ত...
..
নীল আর কাব্য দুইজন খুব ভালো বন্ধু একেবারে ছেলেবেলা থেকেই। তারা দুজনে হিমুর বই পড়তে পড়তে হিমুকে অনুকরণ করা শুরু করে। আর স্বপ্ন হলো নীলের বেস্ট ফ্রেন্ড। নীল অনেক ভালোবাসে স্বপ্নকে।
..
--- স্বপ্নঃ হ্যালো ভাইয়া আমাকে আপনার সাইকেলে একটু লিফট দিবেন?
--- নীলঃ আরে না না। গ্রামের মানুষ দেখলে কি বলবে!!
--- স্বপ্নঃ প্লীজ আমার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। আর কেউ কিছু বলবেনা।
--- নীলঃ এ হয়না। একজন মেয়ে আরেকজন ছেলে তাও আবার সাইকেলে লিফট!! আমি কারোর হাঁসির পাত্র হতে চাইনা।
--- স্বপ্নঃ দেখুন এমন কথা বলছেননা যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে পারেননা।
--- নীলঃ আচ্ছা আচ্ছা উঠুন। মেপে দুই হাত দূরে বসবেন।
--- স্বপ্নঃ আপনার সাইকেলে আছে কতটুকু জায়গা?? গর্দভ একটা।
--- নীলঃ ওই হলো আরকি। যা বললাম তা মেনে বসবেন।
--- স্বপ্নঃ ওকে চলুন।
..
তারপর স্বপ্ন নীলের সাইকেল থেকে নেমে তড়িঘড়ি করে কলেজে চলে গেলো। কেননা স্বপ্নের পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার আর ৫ মিনিট বাকি ছিলো। নীলও কিছু বলেনি। নীল বুঝেছিল মেয়েটার সত্যি আর সময় নেই। তবে স্বপ্ন চলে যাওয়ার পর নীল উপলব্ধি করতে পারলো মেয়েটাকে সে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছে। বিভিন্ন ছাইপাঁশ মনের মাঝে অংকন করতে করতে কলেজ ছাড়লো।
নীল বাসায় গিয়ে ভাবছে আচ্ছা ওর সাথে কি আবার দেখা হবে, দেখা হলেই বা কি বলবো!! না না আমিতো হিমু প্রায়। হিমুদের এমন আশা নেই। আমি আর ওকে নিয়ে ভাববো না। যেই ভাবা সেই কাজ হতচ্ছাড়া নীল এক নিমিষেই ভুলে গেলো।
এদিকে স্বপ্ন বাসায় ফিরে এসে ছেলেটার কথা মনে করলো আর মনে মনে বিড়বিড় করতে লাগলো। ইস আমি অনেকটা স্বার্থপর... কালকেই ছেলেটার সাথে দেখা করে ধন্যবাদ জানাতে হবে। এইসব বলে স্বপ্ন রাতে ঘুমিয়ে পড়লো। সকাল হলো আর তৎক্ষণাত কিছু খেয়ে বেড়িয়ে পরলো গতদিনের রাস্তা ধরে। নীল বসে আছে তার প্রিয় হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে আর মুখে পাণ গুঁজে হিজল গাছটির নিচে। স্বপ্ন দেখতে পেয়ে, ডাকলো...
..
--- স্বপ্নঃ এইযে মিঃ কাল আমাকে ধন্যবাদ না দিয়ে চলে এলেন কেন?
..
নীল নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আর বেমালুম ভুলে গেলো গতকাল রাতের কথা যে নীল আর ওই মেয়ের কথা স্মরণ করবেনা কিন্তু এবার আর কথা না বলে থাকতে পারলনা। কেননা মেয়েটা দোষ করে তার উপড়ে চাপাচ্ছে।
..
--- নীলঃ ওই কি বলছেন!! আপনার মতো এমন মেয়ে আর একটাও দেখিনি।
--- স্বপ্নঃ ওমা আপনি কি খালি মেয়ে দেখে বেড়ান নাকি? অবশ্য যা দেখতে দেখাচ্ছে আপনাকে।
--- নীলঃ আপনি এমন কেন? আল্লাহ কি ঘারের তার টেরা করে দিছে? ঠিকঠাক মতো কথা বলতে পারেননা।
--- স্বপ্নঃ না পারিনা। একটা কথা বলি?
--- নীলঃ আলাদা করে আরো কিছু বলার ফন্দি আছে নাকি?
--- স্বপ্নঃ যা সত্যি তাই বলছি। আপনাকে দেখতে না আমার মরহুম চাচার মতো লাগছে।
--- নীলঃ মানে?
--- স্বপ্নঃ এইযে খালি পায়ে, গায়ে হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে তাও আবার পাণ মুখে। ছিঃ ছিঃ... জানেন কতটা বাজে দেখাচ্ছে আপনাকে?
--- নীলঃ তাআআ,,,তেএএ আপনার কি!! আমার এভাবে ভালো লাগে। আর আপনি বেশিয়ে করছেন কিন্তু।
--- স্বপ্নঃ আরে আরে এভাবে তু তু তুতলাচ্ছেন কেন? মুখ দেখো হিঁ,,,হিঁ,,,হিঁ একেবারে জুকার।
--- নীলঃ আপনার সঙ্গে আর কোন কথা নাই। ফালতু বজ্জাত মেয়ে।
--- স্বপ্নঃ যান যান,,,, আর শুনুন কালকে আমায় আপনার সাইকেলে লিফট দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
--- নীলঃ ধুর....
--- স্বপ্নঃ হিঁ,,,হিঁ,,,হিঁ,,,
..
সেদিনের পর থেকে নীল সেই যে মেয়েটার সাথে রাগ করেছে দীর্ঘ দেড় মাস তার রাগ একটুও কমানোর চেষ্টা করেনি। আমাকে কিনা তার মরহুম চাচার মতো
বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫
Nasir Uddin: বউ গেলে বউ পাবে কিন্তু বাবা গেলে তো আর বাবা পাবে ন...
Nasir Uddin: বউ গেলে বউ পাবে কিন্তু বাবা গেলে তো আর বাবা পাবে ন...: স্ত্রী অপর্না ব্যাগ গুছিয়ে রেডী হচ্ছে। - কি হলো? ব্যাগ গুছাচ্ছ কেনো? কোথায় যাচ্ছ? - কই আবার? আমার বাবার বাড়ি যাচ্ছি! - কেন? - কেন ত...
শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫
অদ্ভূত অনুভূতি
>আচ্ছা তুমি এমন কেন?
>কেমন?
>কেমন বোকা বোকা?
>আমি এমনি
>আচ্ছা তুমি আমায় বিয়ে করেছো কেন?
>তোমাকে দেখে ভাল লেগেছিল তাই
>তুমি আমাকে ভালবাস?
>ভাল না বাসলে বিয়ে করতামনা
>তাহলে রাত্রে ঘুমানোর সময় অন্য দিকে মুখ ফিরে ঘুমাও কেন?
>তাহলে কিভাবে ঘুমাবো?
>যাও বাসা থেকে যাও
>কই যাবো?
>কই যাবা মানে?দোকানে যাও,আর আমার জন্য
দোকান থেকে চটপটি,ফোচকা,হালিম সবকিছু নিয়ে আসো।
>এত রাত্রে এগুলা কোথায় পাবো?
>কোথায় পাবা মানে?যেখান থেকে পারো নিয়ে আসবা,
যদি না আনতে পারো,রাত্রে বাসায় ডুকতে দিবোনা।
>তাহলে রাত্রে থাকবো কোথায়?
>ঐ যাবা?না.........
>ওকে যাচ্ছি।
নাহ এই ভিতুর ডিম ছেলেকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।
যা করার আমাকেই করতে হবে।
~~~~
~~~~
আমি অত্তন্ত হিংসুটে,রাগী আর লুতুপুতু টাইপের একটা মেয়ে।
জীবনে কখনো প্রেম করিনি,আর আমার মত
একটা অশান্ত মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে
কোন ছেলে তার গাল নষ্ট করবে।
বিয়ের আগ পর্যন্ত অনেক গুলো ছেলেকে
প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার কারনে থাপরিয়েছি।
কিন্তু কেন যে এই আন রোমান্টিক
ভিতুর ডিম ছেলেটাকে বিয়ের জন্য
হ্যা বলে দিয়েছিলাম,আমি নিজেই
এর কারনটা খুজে পাচ্ছিনা।এখন মনে হচ্ছে
জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছি
এই ভিতুর ডিম ছেলেটাকে বিয়ে করে।
বিয়ের আগে ভাবতাম যে,আমার বর আমাকে
নিতে আসবে সাদা ঘোড়ায় চড়ে রাজপুত্রের মত।
বাসর রাতে আমরা দুজন এক সাথে
আকাশের চাঁদ দেখবো,সে আলতো করে
আমার হাত স্পর্শ করবে,আমি তখন
লজ্জায় লাল হয়ে যাবো।বাসর রাতে
তার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যাবো,
সারা রাত সে আমাকে নিয়ে বসে থাকবে।
বাসর রাতে সে আমার জন্য অনেক গুলো চূড়ি
নিয়ে আসবে।সে গুলো আমার হাতে
পড়িয়ে দিবে আর বলবে আই লাভ ইউ।
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি নীরা।
কিন্তু সব কিছুই হল এর ঠিক উল্টো।
বিয়ের দিন আমার কাছে এমন মনে হল যে,
এই বাড়ি থেকে কনে নয় যেন লাশ যাচ্ছে।
বিয়ের দিন রাত্রে বাসর ঘরে বসে আছি।
রাত প্রায় ১টা বেজে গেছে কিন্তু আমার
বর মানে নিলয়ের আসার কোন খবর নেই।
কিছুক্ষণ পরে দেখলাম দুই তিনজন বন্ধু
ঠেলে ঠুলে বাসর ঘরে ঢুকাচ্ছে নিলয়ে কে।
যাক অবশেষে বাসর ঘরে এন্ট্রি হল বরের।
আমি খাট থেকে নেমে গিয়ে সালাম করলাম।
বিয়ের আগে বাসর রাতে স্বামীর সাথে
এটা করবো ওটা করবো কত প্ল্যান
করে রেখেছিলাম,কিন্তু সব প্ল্যানে জল ঢেলে দিয়ে
নিলয় বলল,সারাদিন তোমার উপর দিয়ে
অনেক ধকল গেছে তাই আজকে ঘুমিয়ে পড়।
আজকে বিয়ের ৫দিন হল কিন্তু এখন পর্যন্ত
নিলয় আমাকে একটি বারের জন্য স্পর্শ করেনি।
তাই আজকে সিদ্ধান্ত নিলাম সব গল্পে
রাজ কন্যাকে নেওয়ার জন্য রাজ পুত্র আসে।
আমার গল্পে না হয় রাজ কন্যা আসবে
রাজ পুত্রকে নেওয়ার জন্য।
~~~~
~~~~
নিলয় বাসা থেকে বের হওয়ার পর
তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ১০১টা
মোমবাতি জ্বালালাম রুমে।মোমবাতি
জ্বালাচ্ছি আর ভাবছি আমি যে দস্যি মেয়ে
কখন না জানি বাসায় আগুন ধরিয়ে দেই।
তখন স্বামীর সাথে প্রেম না করে প্রেম
করতে হবে ফায়ার সার্ভিসের পানির সাথে।
রাত প্রায় ২টা বাজে এখনো বাসায় আসছেনা নিলয়।
আমার সারপ্রাইজের মোমবাতি গুলো
নিভে গেছে অনেক আগে,ফোনটাও করতে পারছিনা,ফোনটা
রেখে গেছে বাসায়।চিন্তায় অস্থির হয়ে গেলাম আমি।
একা একা বসে থাকতে আর ভাল লাগছেনা,
তাই একটা কফি বানিয়ে বাসার বারান্দায়
বসে খাওয়ার জন্য বের হলাম।বারান্দায়
এসে দেখি নিলয় মাথা নিচ দিকে
দিয়ে বসে আছে।আমাকে দেখে উঠে দাড়ালো নিলয়।
>দরজা নক না করে এখানে বসে আছো কেন?জানো কত চিন্তা হচ্ছিল তোমার জন্য?
>তুমিইতো বলেছিলে যদি ফোচকা,হালিম না আনতে পারি বাসায় ডুকতে দিবেনা তাই আর নক করিনি।
আমি আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলামনা
জড়িয়ে ধরলাম নিলয়কে।
>তুমি কি বুঝতে পারোনা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি?
>আমি জানি নীরা তুমি আমায় অনেক ভালবাস
>তাহলে আমাকে এড়িয়ে চল কেন?
>যখন ছোট ছিলাম,তখন দেখতাম
আমার মা আমার বাবার সাথে অনেক
ঝগড়া করতো,কখনো তারা হাসি খুশি ছিলনা,
তাই একদিন আমার বাবা মা`কে ডিভোর্স দিয়ে দিল,
তখন থেকে আমার মনে একটা ধারণা
জন্ম নিল যে,সব মেয়েরাই বোধহয়
তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে তাই
কখনো তোমাকে স্পর্শ করার সাহস হয়নি আমার,
কিন্তু বিশ্বাস কর নীরা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।
>আমিও তোমাকে এই কয়েক দিনে
অনেক ভালবেসে ফেলেছি নিলয়,আমি কখনো
তোমার সাথে ঝগড়া করবোনা,কিন্তু
আর কখনো আমাকে এড়িয়ে চলবেনাতো?
.
এখন আর কথা বললনা নিলয়,আমাকে
জড়িয়ে নিল তার বুকের মাঝে।
আমিও সাড়া দিলাম নিলয়ের ডাকে।
যখন কোন মানবের ডাকে মানবী সাড়া দেয়
তখন তার মাঝে একটা অজানা অদ্ভূত অনুভূতির সৃষ্টি হয়,যা বোঝানো যায়না কাউকে।
নিশিমন পরী
১১;৪৫। বার্সার খেলা চলছে। একপলকে তাকিয়ে খেলা দেখছে আবির। হঠাত ফোনটা বেজে উঠল। সায়েম ফোন করেছে।
-কিরে তুই কোথায়?
-কোথায় থাকার কথা এখন আমার?
-না মানে, বাসায়?
-হ্যা। কেনো?
-কি করিস? ব্যাস্ত?
-বার্সার খেলা দেখি, না ব্যস্ত না। কোনো দরকার?
-আর্জেন্ট আমার বাসার সামনে আসবি প্লিজ?
-এখন? অসম্ভব। খেলা দেখছি আমি।
-আরে আয়না? প্লিজ প্লিজ প্লিজ? আমার শরীর খারাপ লাগছে। ডক্টরের কাছে যেতে হবে।
-কি হইছে?
-মাথা ঘোরাচ্ছে বমি বমি লাগছে। যেকোনো সময়......
-থাম! আচ্ছা আমি আসছি।
মুচকি হাসল আবির।
-ওকে ডান।
-কিরে তুই কোথায়?
-কোথায় থাকার কথা এখন আমার?
-না মানে, বাসায়?
-হ্যা। কেনো?
-কি করিস? ব্যাস্ত?
-বার্সার খেলা দেখি, না ব্যস্ত না। কোনো দরকার?
-আর্জেন্ট আমার বাসার সামনে আসবি প্লিজ?
-এখন? অসম্ভব। খেলা দেখছি আমি।
-আরে আয়না? প্লিজ প্লিজ প্লিজ? আমার শরীর খারাপ লাগছে। ডক্টরের কাছে যেতে হবে।
-কি হইছে?
-মাথা ঘোরাচ্ছে বমি বমি লাগছে। যেকোনো সময়......
-থাম! আচ্ছা আমি আসছি।
মুচকি হাসল আবির।
-ওকে ডান।
বিশ মিনিট পর...
বনানীর বিয়াল্লিশ নম্বর বাড়ির সামনে সাদা এলিয়নে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। পড়নে লাল ফর্মাল একটা শার্ট, কালো প্যান্টের সাথে ইন করে পড়ে আছে। দুহাত পকেটে ঢোকানো। ছেলেটা আবির।
আবিরের মাথার উপর ল্যাম্পপোস্টের সোডিয়াম আলো জ্বলছে। তার পিছনে অর্থাৎ রাস্তার বাম পাশে একটা মিডনাইট ক্লাব থেকে হালকা স্বরের মিউজিক আসছে। তার সামনেই বিয়াল্লিশ নম্বর বাড়ির পুরোটাই সাদা রঙ করা। সাততলা বাড়ির তিনতলায় সায়েমের ফ্যাট।
আবির আসার পর অলরেডি সায়েমকে দুবার ফোন দিয়েছে, সায়েম ধরেনি। কিছুটা সময় পেরিয়ে গেছে সায়েম এখনও নীচে নেমে আসেনি। দাঁড়িয়ে থাকার ফলে আবিরের চোখ হালকা ঢুলছে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য তার চোখ লেগে এসেছিল, হঠাত তার কাধে আস্তে করে কেউ চাপড়ে দিল। আবির চমকে ফিরে তাকাল। একটা অপরিচিত মেয়ে তার পাশে এসে দাড়িয়েছে অথচ সে খেয়াল করেনি!
বনানীর বিয়াল্লিশ নম্বর বাড়ির সামনে সাদা এলিয়নে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। পড়নে লাল ফর্মাল একটা শার্ট, কালো প্যান্টের সাথে ইন করে পড়ে আছে। দুহাত পকেটে ঢোকানো। ছেলেটা আবির।
আবিরের মাথার উপর ল্যাম্পপোস্টের সোডিয়াম আলো জ্বলছে। তার পিছনে অর্থাৎ রাস্তার বাম পাশে একটা মিডনাইট ক্লাব থেকে হালকা স্বরের মিউজিক আসছে। তার সামনেই বিয়াল্লিশ নম্বর বাড়ির পুরোটাই সাদা রঙ করা। সাততলা বাড়ির তিনতলায় সায়েমের ফ্যাট।
আবির আসার পর অলরেডি সায়েমকে দুবার ফোন দিয়েছে, সায়েম ধরেনি। কিছুটা সময় পেরিয়ে গেছে সায়েম এখনও নীচে নেমে আসেনি। দাঁড়িয়ে থাকার ফলে আবিরের চোখ হালকা ঢুলছে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য তার চোখ লেগে এসেছিল, হঠাত তার কাধে আস্তে করে কেউ চাপড়ে দিল। আবির চমকে ফিরে তাকাল। একটা অপরিচিত মেয়ে তার পাশে এসে দাড়িয়েছে অথচ সে খেয়াল করেনি!
মেয়েটা তার পাশেই তার মত গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুচকি একটা হাসি দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘আবির?’
আবির ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। মুখ হা হয়ে গেছে। কোনো রকমে মাথা নেড়ে হ্যা সূচক জবাব দিল।
মেয়েটা অপরূপ সুন্দরী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সে হালকা গোলাপি রঙয়ের একটা টি-শার্ট আর আকাশি জিন্স পড়ে আছে। মেয়েটার আরেকটা ব্যাপার হল চুলে বাদামি রঙ করা। সোডিয়ামের আলোয় তা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। ঠোটে কড়া করে লিপস্টিক লাগিয়েছে। মেয়েটা হয়ত চুইংগাম চিবুচ্ছে তাই অনবরত মুখ নড়ছে। মুখে মিষ্টি হাসিটা লেগেই আছে। এতকিছুর পরও আবির মেয়েটার প্রতি কোনো আগ্রহ দেখালনা, মুখ ঘুরিয়ে নিল।
মেয়েটা সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল, ‘অনুমান করেছিলাম।’
আবির কিছু বললনা, চুপ করে গেল। মেয়েটা কেমন যেন উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। ব্যাপারটা আবিরের ভাল লাগলনা। বোঝা যাচ্ছে এ মেয়ে নিজে থেকে বেশি কথা বলবে।
মেয়েটা জিজ্ঞেস করল, ‘কারো জন্য অপেক্ষা করছ?’
আবির এবারো কিছু বললনা, মাথা নাড়ল। মেয়েটা আবার বলল, ‘তুমি জানো? আমি অনুমান করে অনেক কিছুই বলে দিতে পারি।’
আবির নির্লিপ্ত গলায় বলল, ‘ও তাই?’
‘বিশ্বাস হচ্ছেনা তোমার? মেয়েটা অবাক হওয়ার মত করল। ‘আমি শিওর তোমার পকেটে লুমিয়া ১০২০ আছে। তাইনা?’
আবির হঠাত হকচকিয়ে যায়। পকেটে হাত দিয়ে তার লুমিয়াটা বের করে আনল। সে মনে মনে ভেবে পাচ্ছেনা মেয়েটা কিভাবে জানল ব্যাপারটা। অপরিচিত কারো জানার কথা নয়।
মেয়েটা মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করল, ‘কি বিশ্বাস হয়? তুমি আরও প্রমাণ চাও?’ আবির হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে আছে। ‘তুমি কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেনা? তাকে আবার ফোন কর তো? এবার নিশ্চিত বন্ধ পাবে।’
আবির সাথে সাথেই সায়েমকে ফোন করল, ‘এই মূহুর্তে আপনার কাঙ্খিত নাম্বারে......’ সত্যিই ফোন বন্ধ। মেয়েটা মুচকি হেসে উঠে বলল, ‘কি বলেছিলাম?’ গলার স্বর নামিয়ে বলল, ‘শোনো, তুমি চমকে যাচ্ছ। চমকাবার কিছু নেই। আমি আনুমান করে যা বলি তা স্বাভাবিক ভাবেই মিলে যায়।’ মুচকি হেসে একবার চোখ টিপল।
আবিরের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। মেয়েটা আবার বলল, ‘তুমি নিশ্চয়ই বাসায় চলে যাবে এমন কিছু চিন্তা করছ আর আমাকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছোনা তাইনা? দেখ, আমি নিশ্চিত বাসার পথে যাওয়ার সময় তুমি এক্সিডেন্ট করতে পার।’
আবির চোখে আবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটার কথা যেরকম বিশ্বাস করতে পারছেনা সেরকম অবিশ্বাসও করতে পারছেনা।
‘আবির তুমি এরকম কনফিউজড হয়ে পড়ছ কেনো? আমি যা বলছি সব অনুমান করেই বলছি। আর তা সত্যিও হয়ে যাচ্চে এটা তুমি এখন অবিশ্বাস করতে পারনা। আমি তোমাকে একটা অফার করব?’
আবির মুখ ফসকে বলে ফেলল, ‘বল?’
‘আজ রাত তো বাসায় জরুরী কোনো তাড়া নেই তাইনা? আর বাসার পথ ধরাও তো ঠিক হবেনা। চল এক কাজ করি রাতটা আমরা গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াই পুরো শহর।’
আবির এতক্ষণে বুলি ফোটাল, ‘তোমার অনুমান বেশ খারাপ।’
মেয়েটা চমকে গেল, ‘কেনো?’
‘রাতটা ঘোরার মত যথেষ্ট তেল আমার আমার নেই।’
‘ও, এই কথা! আচ্ছা চল কোথাও গিয়ে বসব নাহয়।’
আবির ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। মুখ হা হয়ে গেছে। কোনো রকমে মাথা নেড়ে হ্যা সূচক জবাব দিল।
মেয়েটা অপরূপ সুন্দরী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সে হালকা গোলাপি রঙয়ের একটা টি-শার্ট আর আকাশি জিন্স পড়ে আছে। মেয়েটার আরেকটা ব্যাপার হল চুলে বাদামি রঙ করা। সোডিয়ামের আলোয় তা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। ঠোটে কড়া করে লিপস্টিক লাগিয়েছে। মেয়েটা হয়ত চুইংগাম চিবুচ্ছে তাই অনবরত মুখ নড়ছে। মুখে মিষ্টি হাসিটা লেগেই আছে। এতকিছুর পরও আবির মেয়েটার প্রতি কোনো আগ্রহ দেখালনা, মুখ ঘুরিয়ে নিল।
মেয়েটা সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল, ‘অনুমান করেছিলাম।’
আবির কিছু বললনা, চুপ করে গেল। মেয়েটা কেমন যেন উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। ব্যাপারটা আবিরের ভাল লাগলনা। বোঝা যাচ্ছে এ মেয়ে নিজে থেকে বেশি কথা বলবে।
মেয়েটা জিজ্ঞেস করল, ‘কারো জন্য অপেক্ষা করছ?’
আবির এবারো কিছু বললনা, মাথা নাড়ল। মেয়েটা আবার বলল, ‘তুমি জানো? আমি অনুমান করে অনেক কিছুই বলে দিতে পারি।’
আবির নির্লিপ্ত গলায় বলল, ‘ও তাই?’
‘বিশ্বাস হচ্ছেনা তোমার? মেয়েটা অবাক হওয়ার মত করল। ‘আমি শিওর তোমার পকেটে লুমিয়া ১০২০ আছে। তাইনা?’
আবির হঠাত হকচকিয়ে যায়। পকেটে হাত দিয়ে তার লুমিয়াটা বের করে আনল। সে মনে মনে ভেবে পাচ্ছেনা মেয়েটা কিভাবে জানল ব্যাপারটা। অপরিচিত কারো জানার কথা নয়।
মেয়েটা মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করল, ‘কি বিশ্বাস হয়? তুমি আরও প্রমাণ চাও?’ আবির হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে আছে। ‘তুমি কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেনা? তাকে আবার ফোন কর তো? এবার নিশ্চিত বন্ধ পাবে।’
আবির সাথে সাথেই সায়েমকে ফোন করল, ‘এই মূহুর্তে আপনার কাঙ্খিত নাম্বারে......’ সত্যিই ফোন বন্ধ। মেয়েটা মুচকি হেসে উঠে বলল, ‘কি বলেছিলাম?’ গলার স্বর নামিয়ে বলল, ‘শোনো, তুমি চমকে যাচ্ছ। চমকাবার কিছু নেই। আমি আনুমান করে যা বলি তা স্বাভাবিক ভাবেই মিলে যায়।’ মুচকি হেসে একবার চোখ টিপল।
আবিরের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। মেয়েটা আবার বলল, ‘তুমি নিশ্চয়ই বাসায় চলে যাবে এমন কিছু চিন্তা করছ আর আমাকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছোনা তাইনা? দেখ, আমি নিশ্চিত বাসার পথে যাওয়ার সময় তুমি এক্সিডেন্ট করতে পার।’
আবির চোখে আবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটার কথা যেরকম বিশ্বাস করতে পারছেনা সেরকম অবিশ্বাসও করতে পারছেনা।
‘আবির তুমি এরকম কনফিউজড হয়ে পড়ছ কেনো? আমি যা বলছি সব অনুমান করেই বলছি। আর তা সত্যিও হয়ে যাচ্চে এটা তুমি এখন অবিশ্বাস করতে পারনা। আমি তোমাকে একটা অফার করব?’
আবির মুখ ফসকে বলে ফেলল, ‘বল?’
‘আজ রাত তো বাসায় জরুরী কোনো তাড়া নেই তাইনা? আর বাসার পথ ধরাও তো ঠিক হবেনা। চল এক কাজ করি রাতটা আমরা গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াই পুরো শহর।’
আবির এতক্ষণে বুলি ফোটাল, ‘তোমার অনুমান বেশ খারাপ।’
মেয়েটা চমকে গেল, ‘কেনো?’
‘রাতটা ঘোরার মত যথেষ্ট তেল আমার আমার নেই।’
‘ও, এই কথা! আচ্ছা চল কোথাও গিয়ে বসব নাহয়।’
ব্যাপারটায় আবিরের বেশ কৌতুহল হচ্ছে। মেয়েটা তার কাছে কি চাইছে তা জানার আগ্রহ বাড়ছে। তাই সে আর না করলনা। বলল, ‘চল।’
আবির ড্রাইভিং সীটে উঠে বসতেই মেয়েটা তার পাশের সীটে উঠে বসল। আবির জিজ্ঞস করল, ‘কোথায় যাব প্রথমে?’
‘তুমি যেদিকে ভাল মনে কর?’
আবির জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নামটা জানা হলনা।’
‘আনিকা!’
‘রূপসী। সুন্দর নাম।’ আবির ড্রাইভিং করছে আর সামনে তাকিয়া কথা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘হুম! তোমার সম্পর্কে আরেকটা অনুমান আমার হচ্ছে।’
‘কি অনুমান?’
‘তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে তাইনা?’
আবির সামনে তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ‘হুম! ঠিক অনুমান করেছ। তার নামটা অনুমান করতে পারবে?’
আনিকা একটু ভেবে নিয়ে বলল, ‘উম, সরি বলতে পারছিনা।’
‘তুমি যেদিকে ভাল মনে কর?’
আবির জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নামটা জানা হলনা।’
‘আনিকা!’
‘রূপসী। সুন্দর নাম।’ আবির ড্রাইভিং করছে আর সামনে তাকিয়া কথা চালিয়ে যাচ্ছে।
‘হুম! তোমার সম্পর্কে আরেকটা অনুমান আমার হচ্ছে।’
‘কি অনুমান?’
‘তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে তাইনা?’
আবির সামনে তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ‘হুম! ঠিক অনুমান করেছ। তার নামটা অনুমান করতে পারবে?’
আনিকা একটু ভেবে নিয়ে বলল, ‘উম, সরি বলতে পারছিনা।’
আধ ঘন্টা পর...
আবির আর আনিকা রাস্তার পাশে একটা বেঞ্চিতে বসে আছে। সামনে খোলা মাঠ। রুটির মত খোলা চাদটা সারা মাঠ আলোকিত করে বেড়াচ্ছে। সবদিকে অপরূপ স্নিগ্ধতার সাথে শহরের কোলাহল স্তব্ধ হয়ে গেছে। পরিবেশের সাথে আনিকা মেয়েটাও নিশ্চুপ হয়ে গেছে। আবির একটু আগের আনিকার সাথে এখন এই নিশ্চুপ আনিকার মিল খুজে পাচ্ছেনা।
আবির নিরবতা ভেঙ্গে বলল, ‘তুমিত অনেক অনুমান করলে, সত্যিও হল। এবার আমি একটু অনুমান করি?’
আনিকা না তাকিয়েই জানতে চাইল, ‘কি অনুমান করবে?’
আবির চাদটার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকাল। সে বলতে শুরুর করল, ‘সপ্তাহখানেক আগে থেকে একটা অপরিচিত মেয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত আমাকে ফোন করে আমার খোজখবর রাখে। যেমন খেয়েছি কিনা, ঘুমোলাম কিনা, কোথায় গেলাম না গেলাম এসব। মেয়েটির সাথে কথা বলতে বলতে আমারো ভালো লেগে যায়। মেয়েটি আমার খোজ খবর নিয়েছে কারণ সে আমাকে ভালোবাসে।’ আবির একটু থেমে আবার বলতে শুরু করল, ‘আর আমি নিশ্চিত আমার পাশে বসা মেয়েটিই সেই মেয়েটি তাইনা? তুমিই পারিশা নওকি?’ কথাটা বলে আবির অল্প হাসছে।
মেয়েটি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল কতক্ষণ। ‘আ...আ...আজ্জব! তু... তুমি কি করে বুঝলে?’
আবির হেসে হেসে বলল, ‘পুরো ব্যাপারটাই এখন আমার কাছে পরিষ্কার। আমার অনুমান সত্যি হলে, তুমি আর সায়েম আগে থেকেই প্ল্যান করে নিয়েছিলে সব। আমাকে কল করে ডেকে আনবে। অনুমানের কথা আমাকে হতভম্ব করে দিবে। তারপর যেন আমি তোমার কথাগুলো শুনতে বাধ্য হই আর তোমার সাথে সময়টা কাটাই। তাইনা?’
পারিশা এবার একেবারে হা হয়ে গেছে, ‘হ্যা!’
এবার আরেকটা অনুমান করি। তোমার এতসব ঘটনা বানানোর কারণ নিশ্চয়ই আমাকে সামনাসামনি প্রপোজ করে আরো বোকা বানানোর জন্য। তাইনা?’
‘অনেকটাই ঠিক। কিন্তু তুমিত বললে তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে।’
‘ হাহা! সেখানেই তুমি ধরা খেয়েছ। তুমি আমার কাছ থেকে না আশা করছিলে কিন্তু আমি হ্যা বলায় তুমি বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। নাম জিজ্ঞেস করায় তুমি আরও থতমত খেয় যাও। আর এরপর থেকে পুরোটা সময়ই তুমি চুপচাপ হয়ে ছিলে।’
পারিশা এবার খিল খিল করে হেসে দিল। ‘উফফ! কি মানুষরে বাবা। আচ্ছা মাফ চাইছি এতসবের জন্য। কিন্তু এতকিছু যার জন্য করলাম তার উত্তরটা কি পাবনা?’
আবিরও হেসে দেয়। ‘আমার নিশিমন পরী উত্তরটা নিশ্চয়ই আপনি ভালো অনুমান করতে পারছেন। হ্যা ভালোবাসি তোমাকে। চাদের নিঃস্বার্থ আলোর মত ভালোবাসি তোমাকে।’
আবির পারিশাকে কাছে টেনে নেয়। পারিশাও তার কাধে মাথা গুজে দেয়। এই নিরবতায় আর কোনো কথা হবেনা।
আবির আর আনিকা রাস্তার পাশে একটা বেঞ্চিতে বসে আছে। সামনে খোলা মাঠ। রুটির মত খোলা চাদটা সারা মাঠ আলোকিত করে বেড়াচ্ছে। সবদিকে অপরূপ স্নিগ্ধতার সাথে শহরের কোলাহল স্তব্ধ হয়ে গেছে। পরিবেশের সাথে আনিকা মেয়েটাও নিশ্চুপ হয়ে গেছে। আবির একটু আগের আনিকার সাথে এখন এই নিশ্চুপ আনিকার মিল খুজে পাচ্ছেনা।
আবির নিরবতা ভেঙ্গে বলল, ‘তুমিত অনেক অনুমান করলে, সত্যিও হল। এবার আমি একটু অনুমান করি?’
আনিকা না তাকিয়েই জানতে চাইল, ‘কি অনুমান করবে?’
আবির চাদটার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকাল। সে বলতে শুরুর করল, ‘সপ্তাহখানেক আগে থেকে একটা অপরিচিত মেয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত আমাকে ফোন করে আমার খোজখবর রাখে। যেমন খেয়েছি কিনা, ঘুমোলাম কিনা, কোথায় গেলাম না গেলাম এসব। মেয়েটির সাথে কথা বলতে বলতে আমারো ভালো লেগে যায়। মেয়েটি আমার খোজ খবর নিয়েছে কারণ সে আমাকে ভালোবাসে।’ আবির একটু থেমে আবার বলতে শুরু করল, ‘আর আমি নিশ্চিত আমার পাশে বসা মেয়েটিই সেই মেয়েটি তাইনা? তুমিই পারিশা নওকি?’ কথাটা বলে আবির অল্প হাসছে।
মেয়েটি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইল কতক্ষণ। ‘আ...আ...আজ্জব! তু... তুমি কি করে বুঝলে?’
আবির হেসে হেসে বলল, ‘পুরো ব্যাপারটাই এখন আমার কাছে পরিষ্কার। আমার অনুমান সত্যি হলে, তুমি আর সায়েম আগে থেকেই প্ল্যান করে নিয়েছিলে সব। আমাকে কল করে ডেকে আনবে। অনুমানের কথা আমাকে হতভম্ব করে দিবে। তারপর যেন আমি তোমার কথাগুলো শুনতে বাধ্য হই আর তোমার সাথে সময়টা কাটাই। তাইনা?’
পারিশা এবার একেবারে হা হয়ে গেছে, ‘হ্যা!’
এবার আরেকটা অনুমান করি। তোমার এতসব ঘটনা বানানোর কারণ নিশ্চয়ই আমাকে সামনাসামনি প্রপোজ করে আরো বোকা বানানোর জন্য। তাইনা?’
‘অনেকটাই ঠিক। কিন্তু তুমিত বললে তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে।’
‘ হাহা! সেখানেই তুমি ধরা খেয়েছ। তুমি আমার কাছ থেকে না আশা করছিলে কিন্তু আমি হ্যা বলায় তুমি বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। নাম জিজ্ঞেস করায় তুমি আরও থতমত খেয় যাও। আর এরপর থেকে পুরোটা সময়ই তুমি চুপচাপ হয়ে ছিলে।’
পারিশা এবার খিল খিল করে হেসে দিল। ‘উফফ! কি মানুষরে বাবা। আচ্ছা মাফ চাইছি এতসবের জন্য। কিন্তু এতকিছু যার জন্য করলাম তার উত্তরটা কি পাবনা?’
আবিরও হেসে দেয়। ‘আমার নিশিমন পরী উত্তরটা নিশ্চয়ই আপনি ভালো অনুমান করতে পারছেন। হ্যা ভালোবাসি তোমাকে। চাদের নিঃস্বার্থ আলোর মত ভালোবাসি তোমাকে।’
আবির পারিশাকে কাছে টেনে নেয়। পারিশাও তার কাধে মাথা গুজে দেয়। এই নিরবতায় আর কোনো কথা হবেনা।
প্রেমপত্র
খুব মনোযোগ সহকারে স্যারের লেকচার শুনছি। এমন সময় কোথা থেকে একটা কাগজের ঢিল গায়ে এসে লাগলো। কোনো বন্ধু হয়তো দুষ্টামি করছে এই ভেবে পুনরায় লেকচারে মনোযোগ দিলাম। কিছুক্ষণ পর আবার একটা কাগজের ঢিল উড়ে এসে আমার গায়ে লাগলো। কাগজের ঢিলটা হাতে নিয়ে আশেপাশের বন্ধুদের দিকে দেখছি যে ঢিলটা কে ছুড়তে পারে!
.
হটাৎ কেন জানি মনে হলো কাগজটায় কিছু লিখা থাকতে পারে। সাথে সাথে খুলে দেখলাম। কাগজে লিখা- "আগের কাগজটা ব্রেঞ্চ এর নিচ থেকে তুলে পড়ো"
.
ব্রেঞ্চ এর নিচে খুজে দেখছি কিন্তু কাগজের ঢিলটা খুজেই পাচ্ছিনা। স্যারের লেকচার চলছে তাই ভালভাবে খুজতেও পারছিনা। স্যার যাতে বুঝতে না পারে এমনভাবে আগের কাগজটা খুজছি এমন সময় আরেকটা কাগজের ঢিল গায়ে এসে পড়লো। সাথে সাথেই এদিক ওদিক তাকালাম, সবাই লেকচার শোনায় ব্যস্ত, সম্ভাব্য ঢিল ছুড়নে ওয়ালা কে হতে পারে তা আমি বুঝতেই পারলাম না।
.
এবারের কাগজটা খুলে দেখলাম, লিখা- "হাদারাম, তোমার সামনের ছেলেটার পায়ের কাছে দেখো কাগজটা"।
.
আমি অবাক হবো না হতবাক হবো, কিছুই বুঝতে পারছিনা। ওই কাগজটায় এমন কি রাজ অন্তর্নিহিত আছে যে পর পর দুইবার ঢিল ছুড়ে কেবল ওই কাগজেটাই পড়ার জন্য নির্দেশ করছে। তবে একটা ব্যাপারে খটকা লেগেই রইলো যে, আমাকে 'হাদারাম' বলে সম্বোধন করতে পারে কোন মহান ব্যক্তি!
.
অতঃপর নির্দেশিত কাগজের ঢিলটা খুজে পেলাম। কাগজটা খুলে দেখলাম, দেখি যে ডাবল বাউন্ডারি দিয়ে সুন্দর করে বিশাল একটা লাভ আঁকা যাকে আমরা হৃদয় বা ভালবাসার প্রতীক হিসেবেই জানি। এই লাভ দেখেই যেমন কাগজ তেমন করে পকেটে রেখে দিলাম। ভেতরে কিছু লিখা ছিলো কিন্তু ক্লাসের মধ্যে লাভ লেটার পড়াটা ভদ্রতার মধ্যে পড়েনা তাই পরে সুন্দর পরিবেশে ফিলিংস নিয়ে পড়ার জন্য যত্ন করে পকেটে রেখে দিলাম। এই প্রথম প্রেমপত্র পেয়ে আমিতো খুশিতে দিশাহারা। তবে এড় প্রেরকটা কে হতে পারে তা নিয়ে একটা বড় রকমের দ্বিধা দ্বন্দ্বে পরে গেলাম।
.
আমি প্রথম বারের মত প্রেমপত্র পেয়েছি এই ভেবে গর্বে আমার বুক ফুলে উঠছে। মনে মনে ভাবতে লাগলাম সালার বন্ধুদের এবার দেখিয়ে দিবো প্রেম কি জিনিস! যারা আমায় বলতো 'তোর জীবনে কোনোদিন গার্লফ্রেন্ড হবেনা' তাদের সামনে এখন আমি ওপেন রোমান্স করবো। দেখি কে ঠেকায়।
.
ক্লাসের একটা মেয়েকে অল্প অল্প পছন্দ করতাম যার নাম ঈশিতা। বন্ধু বান্ধবীদের মধ্যে অনেকেই এটা জানতো। কিন্তু সাহস করে কোনোদিন ঈশিতাকে মনের কথা বলা হয়নি। ইস! ঈশিতাই যদি এই প্রেমপত্র দিয়ে থাকে তাহলে তো আমি আনন্দে হার্ট ফেইল করে ফেলবো।
.
.
পর পর আরো দুটো ক্লাস করে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় এসে আম্মু বলা শুরু করলো,
- এই অমি, পরনের জিন্সটা সহ আর কি ধোয়া লাগবে নিয়ে আয়।
.
আসলেই জিন্সটা ময়লা হয়েছে। জিন্সটা চ্যাঞ্জ করে আম্মুকে দিয়ে আসলাম। কিছুক্ষণ পর আবার আম্মুর ডাক,
- এই অমি, অমি... তোর পকেটে এটা কিসের কাগজ, আরেকটু হলে তো ধুয়ে দিতাম। দেখতো কোনো দরকারি কাগজ কিনা?
.
হার্টবিট বেড়ে গেলো। দৌড়ে গিয়ে দেখি আমার প্রেমপত্র এখনও অক্ষত আছে। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কাগজটা যদি ভিজে যেতো তাহলে তো বড় রকমের একটা বিপদ হয়ে যেতো। এমনিতেই চিঠিটা কে দিয়েছে এখনও তার নামই জানিনা।
.
ঘরের দরজা বন্ধ করে কাগজটা খুললাম। ভাজ সোজা করে লিখার শেষের দিকে আগে আমার হবু প্রেমিকার নাম খুজতে লাগলাম। কিন্তু কি আশ্চর্য্য লিখার শেষে কোনো নামও দেখলাম না। বাধ্য হয়ে প্রথম থেকে পড়া শুরু করলাম।
.
অমি,
আমি ঈশিতা বলছি,..
..............................
..............................
..............................
ক্লাস শেষে প্লিজ লাইব্রেরিতে দেখা করো।
.
চিঠির মাঝখানে অনেক কিছু লিখা। প্রেম শুরু না করতেই এত প্রেম আর আবেগ দিয়ে চিঠিটা লিখার কোনো মানেই ছিলোনা। কলেজ থেকে বাসায় এসেছি আধঘন্টা হলো তার মানে ঈশিতা আমার জন্য আধঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছে। বিদ্যুৎ গতিতে রওনা দিলাম, অটোতে যেতে প্রায় পনেরো মিনিট লাগবে। এতক্ষন ঈশিতা থাকবে কিনা চলে যাবে এটা ভাবতেই নিজের মাথার চুল একটা একটা করে ছিড়তে ইচ্ছে হচ্ছে। কেনো যে কাগজের লিখাটা তখনই পড়লাম নাহ!
.
.
লাইব্রেরিতে না ঢুকতেই দেখি ঈশিতা বের হচ্ছে। এক প্রকার দৌড়ে গিয়ে তার সামনে দাড়ালাম।
.
- ঈশিতা, আমি এত্তগুলা সরি।
- কিসের আবার সরি! পথ ছাড়ো।
- আচ্ছা, আমি আরো অনেক অনেক সরি।
- আমি এখন বাসায় যাবো, পথ ছাড়ো
- আচ্ছা তোমার চোখ লাল দেখাচ্ছে ক্যান?
- কই? কোথায়? কিছু পড়ছে মনে হয়!
- আচ্ছা, একটু শান্ত হয়ে আমার কথাটা শোনো
.
সবকিছু খুলে বললাম, ঈশিতার রাগী আর গোমরা মুখটা ধীরে ধীরে সুশ্রী আর মিষ্টি হতে লাগলো।
.
- তুমি তো তখন কাগজটা খুলে দেখলা,
- খুলছি কিন্তু পড়িনি তো
- কেনো পড়োনি শুনি?
- ক্লাসরুম এর পরিবেশ যে প্রেমপত্র পড়ার জন্য উপযোগী নয় তাই।
- হয়েছে থাক, আচ্ছা আন্টি আবার কাগজটা খুলে দেখেনি তো?
- আরে নাহ, আম্মু তো দরকারি কাগজ মনে করে রেখে দিয়েছিলো, দেখেনি
- ভাগ্যিস আন্টি দেখেনি!!
- আর দেখলেও তেমন একটা সমস্যা হতোনা, আম্মু তোমার কথা জানে
- আমার কথা জানে মানে?
.
এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো, দেখি যে আম্মু ফোন দিয়েছে,
- হ্যা আম্মু বলো
- দেখা হয়েছে তো?
- হ্যা হয়েছে!!! আম্মু কার সাথে দেখা হওয়ার কথা বলছো?
- কার সাথে আবার ঈশিতার সাথে
- আ!!! আম্মু তুমি কি তাহলে...
- হ্যা, তোর প্রেম পত্র আমি পড়ে ফেলেছি। ঈশিতাকে একটু ফোনটা দে তো
.
ঈশিতাকে ফোনটা দিলাম। ঈশিতা আমার কাছ থেকে একটু দূরে গিয়ে কথা বলে আসলো।
.
- কি বললো আম্মু?
- তোমাকে তো বলা যাবেনা বাব্বুউউ..
- উহু বলোনা
- উহু বলবনা
.
প্রিয় সম্পর্কগুলো তো এমনই, যেমন মধুর তেমন সুখময়। যে সম্পর্কগুলোর জন্য অনেকদিন বাঁচতে ইচ্ছে করে, ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করেনা কোনোদিন।
.
ভালবাসা!!কেন এত অসহায়?
-দোস্ত দেখ হিমেল কেমন জানি একা একা
থাকে।
মোবাইল থেকে নজরটা শরিয়ে মেঘনার কথায়
ধ্যান দিল রাফা।
-হুমম।
-কি হুমম।ও কারো সাথে কথা বলেনা কোন
মেয়ের সাথে মিশেনা ইভেন কোন ছেলের
সাথেও না।একা একা শুধু পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে
ইস্ট্রেঞ্জ।
-ওর কিছু একটা করা দরকার।
-কি করব?
-আই থিংক ওর একটা প্রেম করিয়ে দেয়া দরকার।
ও চেঞ্জ হয়ে যাবে।
-প্রেম আর ওর সাথে ইম্পসিবল!!ও কাওকে পাত্তা
দিবে না।আর কেও ওর সাথে প্রেম করবে না।
-আর যদি করে।
-কে করবে শুনি?
-আমি আর কে?
-হা হা।ও তোর দিকে ফিরেও তাকাবে না।
-ও আমার সাথে প্রেম করবে।তুই দেখবি?
-বাজি ধর।তুই পারবি না।
-আচ্ছা ডান।ও যদি আমার প্রেমে পড়ে তুই
আমাদের বন্ধুদের সবাইকে ট্রিট দিবি।
-ওকে ডান।কিন্তু আবির কি বলবে।তোদের
রিলেশনের প্রবলেম হবে তো?
-আরে কিচ্ছু হবেনা।আমি ওরে সব বুঝিয়ে দেব।
-আচ্ছা দেখা যাক কি হয়।
-দেখ কি করি।
.
বলে হিমেলের কাছে যায় রাফা।চিকন চোখে
চশমা পড়া ছেলেটা হলো হিমেল।আর ও সবসময়
একা থাকতে পছন্দ করে।তাই রাফা মেঘনার
সাথে বাজি ধরে হিমেলের সাথে প্রেম করবে।
শিড়িতে বসা হিমেলের কাছে ছুটে যায় রাফা।
.
-হিমেল আজকের এসাইনমেন্ট করতে আমাকে
হেল্প করবে প্লিজ?
.
রাফা হিমেলের পাশ ঘেসে বসে তাই হিমেল
একটু দূরে সরে চশমাটা ঠিক করে।
-আজকেরটা।আচ্ছা ঠিক।
.
বলে রাফার এসাইনমেন্ট করতে হেল্প করে
হিমেল।তাদের মাঝে হাসি ঠাট্টা চলে।হিমেল
পরে বাসায় চলে যায়।
পরেরদিন ক্যান্টিনে বসে পড়তে থাকে হিমেল।
এর মধ্যে রাফা আসে।
.
-থ্যাংক ইউ সো মাচ হিমেল।তুমি না থাকলে
মনে হয় আজকে স্যার মেরেই ফেলত।
কথাগুলা বলতে বলতে টেবিলে রাখা হিমেলের
হাতে হাত পরে যায় রাফার।ঘাবরে গিয়ে
ততক্ষনাক হাতটা সড়িয়ে নেয় হিমেল।
.
-কি হলো?
-না কিছুনা।
.
কথাটা শুনে অটঠাসিতে ফেটে পড়ে রাফা।
তারপর দুজন কথা বলতে থাকে।এক পর্যায়ে রাফা
বলে:
-তোমাকে চশমা ছাড়া অনেক সুন্দর লাগবে।আর
টি-শার্ট না পড়ে শার্ট পড়লে অনেক মানাবে।
.
কথাগুলা হিমেল সিরিয়েসলি নেয়।আর মনে মনে
খুশি হতে থাকে।কারন জিবনের প্রথম কোন মেয়ে
ওকে এই কথাগুলা বলেছে।
বাসায় গিয়ে হিমেল চশমা ছাড়া শার্ট পড়ে
আয়নার সামনে দাড়ায় আর মুচকি হাসি দিতে
থাকে।তারপর সারারাত রাফার ব্যাপারে
ভাবতে থাকে।কারন ওর মনে রাফার জন্য একটা
জায়গা তৈরি হয়।
.
পরেরদিন হিমেলকে চশমা ছাড়া আর শার্ট পড়া
দেখে ভার্সিটির সবাই চমকে যায়।আর ওদিকে
রাফা মেঘনাকে বলে:
-দেখেছিস কি পরিবর্তন এনেছি।দেখবি এখন
আমার কাছেই আসবে।
হিমেল রাফার কাছে গিয়ে দাড়ায়।রাফা
হিমেলের প্রশংসা করতে থাকে:
-এইত কি সুন্দর লাগছে।তোমাকে দেখে তো
যেকোন মেয়ে ক্রাশ খেয়ে যাবে।
হিমেল নরমসূরে বলে
-সত্যি যেকোন মেয়ে?
-আরে হ্যা।আমি কি মিথ্যা বলব নাকি।যাও এখন
ক্লাসে যাও আমাদের ওখানেই দেখা হবে।বায়।
.
হিমেল ক্লাসের দিকে এগিয়ে যায়।আর ওদিকে
মেঘনা রাফাকে বলে:
-মানতে হবে।তুই বাবা লা-জবাব।ছাগল দিয়েও
হাল চাষ করতে পারিস।
-এখন দেখবি কাল ও আমাকে প্রপোস করেছে।
-আচ্ছা দেখি।
.
পরেরদিন:
--------
মাঠে সবাইকে রাফা আগে থেকেই বলে
রেখেছিল।হিমেল পকেটে গোলাপ ফুলটা রেখে
দৌড়ে আসে রাফার দিকে।
-(হাপাতে হাপাতে)রাফা!!রাফা।আমি
তোমাকে কিছু বলতে চাই।
-হ্যা বলো।
তারপর হিমেল হাটু গেরে বসে রাফাকে প্রপোস
করে।
-আই লাভ ইউ রাফা।তুমি আমাকে অনেক বদলে
দিয়েছ।ওয়িল ইউ ম্যারি মি।
.
কথাটা শুনে আনন্দে লাফ দিয়ে উঠে রাফা।আর
চিৎকার দিয়ে বলতে থাকে:
-হে গায়েস আই ডু ইট।
বলে দৌড়ে গিয়ে মেঘনার হাতের সাথে হাত
মিলায় রাফা।হিমেল বোকার মতো দাড়িয়ে
দাড়িয়ে দেখছিল।তারপর রাফা গিয়ে সব খুলে
বলে হিমেলকে।
রাফা চলে যাওয়ার সময় হিমেল পিছ থেকে
হাতটা ধরে।
.
-দাড়াও।তুমি এইভাবে চলে যেতে পারো না।
রাফার হাসি মুখ বন্ধ হয়ে যায়।আর হাতটা
ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
-হাত ছাড়ো হিমেল।সবাই দেখছে।
-দেখতে দাও।তুমি কেন এমন করলে বলে যাও।
-হাত ছাড়তে বলেছি ছাড়ো।
-ছাড়বো না।
হাত না ছাড়াতে বাম হাত দিয়ে একটা থাপ্পড়
দেয় রাফা।আর সবার সামনে বলে উঠে:
-কি মনে কর তুমি নিজেকে?আমার সাথে প্রেম
করার মতো কি যোগ্যতা আছে তোমার।হেসে ২
টা কথা কি বলেছি তুমি মনে করেছ আমি
তোমার প্রেমে পড়েছি।তোমার মতো ফাউল
ছেলেকে আমি আমার জুতা মুছার জন্যও রাখি
না।
.
কথাগুলা বলে চলে যায় রাফা।ওদিকে গালে হাত
দিয়ে চলে যায় হিমেল।
.
পরেরদিন:
--------
হিমেলের বন্ধু রনি এসে রাফাকে একটা চিঠি
দেয়।তারপর কাদতে কাদতে চলে যায়।চিঠিটা
খুলে পড়তে থাকে রাফা:
.
আসলে ঠিকই বলেছ আমার কোন যোগ্যতা ছিল
না তোমার সাথে প্রেম করার।তুমি হয়তোবা
বাজি ধরে কাজটা করেছ কিন্তু আমার ভালবাসা
তো সত্য ছিল।তোমাকে ঘৃনা করতে আমি
পারবোনা।কারন তোমাকে জুড়ে আমার মনে শুধু
ভালবাসা আছে ঘৃনার কোন জায়গা নেই।তাই
চলে যাচ্ছি বহুদূর।যেখানে তোমাকে ঘৃনা করতে
হবেনা আমাকে।সুখে থেক ভাল থেক।
.
চিঠিটা পড়ে কাদতে লাগল রাফা।আর
নিজেকেই নিজে বলতে লাগল:
-কি ভুল করলাম।যার প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগও
পেলাম না।
বন্ধুত্ব
আবির শোন! তোর সাথে কিছু কথা
ছিল। রিপার পিছু ডাক।
আবির থামলো। কি বলবি তাড়াতাড়ি
বল, আমার কাজ আছে।
.
মাঠে যেতে হবে ওরা আমার জন্য
অপেক্ষা
করছে, যা বলার তাড়াতাড়ি বল।
.
রিপা:মনে হচ্ছে তুই
অনেক ব্যস্ত, যা মাঠে যা বন্ধুদের নিয়ে
আড্ডা দে। না আমার কিছুই বলার নেই।
.
রিপার মন খারপ আবির কে কি যেন
বলতে গিয়েও থেমে গেলো তাই।
.
আবির ও রিপার পাশাপাশি বাড়ি,
একই কলেজের ছাত্র ছাত্রী । দুজন
দুজনের বাসাতে যায়-আসে, আবার
কখনো গল্প আড্ডায় অনেক লম্বা সময়
কাটিয়ে দেয় ওরা।
.
কলেজ থেকে শুরু করে কোচিং সব একই
সাথে করে।
.
ওরা দুজন দুজনের ভাল বন্ধু, ছোট বেলা
থেকে এ পর্যন্ত ওদের মাঝে গড়ে
উঠেছে ভাল
এক সম্পর্ক যা বন্ধুত্বের চেয়ে একটু
বেশী।
.
রিপার অনেক ভাল লাগতে থাকে
আবির কে,
আবিরের ও একটু একটু।
.
আর এই ভাল লাগা থেকেই ভালবাসার
জন্ম রিপার হৃদয়ে। অনেক দিন যাবত
বলবে-বলবে ভাবছে রিপার ভালবাসার
কথা।
কিন্তু ভয়ে ভয়ে আর বলা হয়ে উঠেনা।
.
আবির ও কিছুটা বুঝতে পারে রিপার যে
ওকে ভাল লাগে, কিন্তু আবির থাকে চুপ
চাপ
কিছুই যেনো বুঝেনা!!
.
আবিরের হৃদয় কেনো জানি প্রেম
ভালবাসার প্রতি অনেক অনিহা।
.
সমাজের দেখা এই প্রেম-ভালবাসা
ওকে
যেন অনেক ভাবায়। আবির সমাজের
প্রচলিত প্রেম ভালবাসায় মেটেও
বিশ্বাসিনা।
.
তারপরেও কেন যেন এক গভীর টান
রিপার জন্য।
.
রিপারকে যেকোন ব্যাপারে আবির
সাহায্য
করে। রিপার দুঃখ-কষ্ট, হাসি-আনন্দ সব
ভাগাভাগি করে নেয়।
.
ওদের দু'জনের মাঝে এমন এক সম্পর্ক গড়ে
উঠে যা সঙ্গায়িত করার ভাষা আবির
খুজে পায়না।
.
একদিন আবির ও রিপা পার্কে বসে গল্প
করছে।
.
কথা ছলে হঠাৎ রিপা বলে ফেললো,
আবির আমি তোকে ভালবাসি!!
আমার হৃদয়ে শুধু তুই তোকে ছাড়া আমি
বাচবোনা। তুই আমার জান প্রান সব।
.
বল তুই আমাকে ভালবাসিস কি না?
.
আবির চুপ একদম চুপ
হয়ে গেল, কিছুই মুখ দিয়ে বের হলো
না।
.
আবির রিপাকে বললো, রিপা আমার
মাথা
ব্যাথা করছে। আমি এখন কিছু বলতে
পারছিনা, আমি এখন যাবো।
.
কথা না বড়িয়ে আবির চলে গেলো।
.
সেই রাতে আবিরের ঘুম নেই কাল কি
বলবে
রিপাকে??
.
আবির কিছুই ভাবতে পারছেনা। আবির
শুধু ভাবে। এই ভালবাসা আমাকে এবং
রিপাকে অনেক কষ্ট দিবে।
.
সামান্য প্রেম-ভালবাসার জন্য আমার
বন্ধুত্ব নষ্ট করতে পারবো না। মোহ
ফুরালে ভালবাসা হারিয়ে যাবে।
হারিয়ে যাবে বন্ধুত্ব। না না আমি
কিছুতেই আমার বন্ধুকে হারাতে
চাইনা। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো
আবির।
.
পরদিন সকাল বেলা আবির রিপাকে
বললো
.
দেখ রিপা আমি তোকে অনেক
ভালবাসি অনেক।
কিন্তু আমরা দুজন বন্ধু সারা জীবন বন্ধু
হয়েই থাকতে চাই।
.
তুই যে প্রেম ভালবাসার কথা বলেছিস
ওটা
আমি পারবো না।
.
তুই আমার বন্ধু আমার দুজন বন্ধু হয়েই
থাকতে চাই।
.
বন্ধু তোকে আমি অনেক ভালবাসি
বলেই ফিরিয়ে দিলাম। আমি চাইনা
কখনো আর আর আমার বিশ্বাস নষ্ট হয়ে
যাক। আমি চাইনা কখনো তুই আমাকে
ভুলে বুঝে অথবা আমি তোকে কখনো ভুল
ভেবে দূরে হারিয়ে যাই।
.
আবির এর কথা গুলো শুনছে আর গড় গড়
করে চোখ দিয়ে আশ্রু ধারা ঝাড়াচ্ছে
রিপা।
.
আবিরের হাত ধরে রিপা বললো।
.
আমি জানতাম তুই আমাকে
ভালবাসিস, আমিও তোকে অনেক
ভালবেসেছিলাম।
কিন্তু আজ আমার আর তুর বন্ধুত্বের
প্রতি ভালবাসা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে
গেলাম দোস্ত।
.
তবে যদি কখনো আমাকে তোর জীবন
সঙ্গিনী করিস আমি তুর ভালবাসার
দাসি হয়ে থাকবো।
.
আর তুর ভালবাসা, তোকে আপন করে
পাওয়ার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনবো।
.
_________________
সত্যি অবাক লাগে বন্ধুত্ব এমন একটা
জিনিষ
ভালবাসাও তার কাছে হার মানে।
.
যদি কখনো কেউ এমন বন্ধু জীবনে পেয়ে
থাকেন তাহলে সত্যি আপনি অনেক
ভাগ্যবান/ভাগ্যবতী।
বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫
ভালোবাসা কোন সস্তা জিনিস না
...
সপ্তাহে ২ বার ডেটে গেলে বা ১০
বার I Love You বললেই
ভালোবাসা হয় না ...
টাইমলাইনে প্রতিদিন পোস্ট করলেই
ভালোবাসা
প্রকাশ পায় না ...
"জানু, বেবি" -
সম্বোধন করলেই বুঝা যায় না সে
আসলেই তোমাকে
ভালোবাসে কিনা !!
…
ভালোবাসতে "CARE" লাগে ...
ভালোবাসতে "SHARE" লাগে !!
তোমাকে যে আসলেই ভালোবাসে,
সে তার দিনের প্রতিটা
মূহুর্তের কথা তোমার সাথে SHARE না
করে পারবে না…
...
তার ভেতর খচ খচ করতে থাকবে ...
কথাগুলো বলার জন্য সে উশখুশ করতে
থাকবে ...
সবকিছু না বলা পর্যন্ত,
সবকিছু না SHARE করা পর্যন্ত সে একদম
শান্তি
পাবে না !!
…
তোমাকে যে আসলেই
ভালোবাসে,সে তোমার দিনের
প্রতিটা মূহুর্তে তোমার
CARE না করে পারবে না ... সকালে ঘুম
ভাঙতেই
বালিশের নিচ থেকে মোবাইলটা
হাতড়ে বের করে সে
তোমার খোঁজ নিবে ...
ক্লাসের ফাঁকে, কাজের ফাঁকে হঠাৎ
তার মনে হবেঃ
"আচ্ছা, ও কি করতেছে এখন ??" ...
দুপুরের খাবারটা মুখে তোলার আগে
সে জিজ্ঞেস
করবে তুমি খেয়েছো কিনা ...
...
সে ব্যস্ততার অজুহাত দেখাবে না ...
বরং সে তোমার
CARE নিতেই ব্যস্ত থাকবে !!
......
সে শুধু হাসির ইমো আর কান্নার ইমো
দিবে না ...
তোমাকে সত্যি সত্যি হাসাবে ... ...
এবং তোমাকে সত্যি সত্যি কাঁদাবে
...
এবং তারপর আলতো করে গাল থেকে
অশ্রুটুকু মুছে
দিবে !!
ভালোবাসা খুব কঠিন না ...
বরং ভালোবাসার মর্ম বুঝে
এরকম মানুষ
কথাগুলো সত্য কি না ???
○ ভালবাসার মানুষ যত খারাপই
হোক
আপনার কাছে
সে সব
সময়ই ভালো.....
.
○ তার সাথে আপনার সম্পর্ক শেষ
হওয়ার
পরও কেউ
যদি
তাকে নিয়ে খারাপ কোন মন্তব্য
করে
তখন আপনি
খুব
রেগে যান হয়তো কাউকে বুঝতে
দেন
না.....
.
○ আপনার বিপরীত লিঙ্গের কারো
সাথে কথা
বলার সময়
খুজে বের করার চেষ্টা করেন তার
সাথে আপনার
ভালবাসার
মানুষটার কি কি মিল আছে.....
.
○ হঠাৎ তার পছন্দের কোন জিনিস
যদি
আপনারসামনে পরে
যায় আপনি চেষ্টা করলেও তার কথা
মনে
না করে
থাকতে
পারবেন না.....
.
○ তার সাথে যে জায়গা গুলোতে
আপনি
বসে
থাকতেন ঐ
জায়গা গুলোতে গেলে সব সময়
সেজায়গাটাই বসার
চেষ্টা
করবেন যেখানে আপনার ভালবাসার
মানুষ
বসতো.....
.
○ তার কাছ থেকে পাওয়া যে কোন
জিনিস এখনও
আপনার
কাছে আছে যা আপনার পড়ার বই
গুলোর
চেয়ে ভাল
অবস্থায় আছে..... (যদি ফেরত না
দিয়ে
থাকেন আর
ফেলে না দিলে)
.
○ ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাকে ভুলে
হলেও একবার
মনে করেন..
যখন কেউ ভালোবাসার
মানুষটার সাথে
থাকে তখন সবারই
খুব ভালোলাগে...
তখন কেউ এটা ভাবেনা
যে এই মুহূর্ত গুলো
একটু পরেই অতীত হয়ে যাবে,
আর রয়ে যাবে স্মৃতির পাতায়..
যতদিন সে সাথে থাকবে
এই স্মৃতি গুলো
হাসাবে,আর যখন সে
থাকবেনা তখন এই
স্মৃতিগুলোই আবার
কাঁদাবে...
মানুষটার সাথে
থাকে তখন সবারই
খুব ভালোলাগে...
তখন কেউ এটা ভাবেনা
যে এই মুহূর্ত গুলো
একটু পরেই অতীত হয়ে যাবে,
আর রয়ে যাবে স্মৃতির পাতায়..
যতদিন সে সাথে থাকবে
এই স্মৃতি গুলো
হাসাবে,আর যখন সে
থাকবেনা তখন এই
স্মৃতিগুলোই আবার
কাঁদাবে...
বউ গেলে বউ পাবে কিন্তু বাবা গেলে তো আর বাবা পাবে না
স্ত্রী অপর্না ব্যাগ গুছিয়ে রেডী হচ্ছে।
- কি হলো? ব্যাগ গুছাচ্ছ কেনো? কোথায়
যাচ্ছ?
- কই আবার? আমার বাবার বাড়ি যাচ্ছি!
- কেন?
- কেন তুমি বুঝো না? গত এক মাস ধরে বলছি
তোমার
বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিতে, তা তো
তোমার কানেই যায় না! এই বাড়ীতে হয় তোমার
বাবা থাকবে নয় আমি থাকবো!
- বাবা থাকলে সমস্যা কি? (মিনমিন করে বললো
সুমন)
- তোমার বাবার কাশির শব্দে ঘুমাতে পারিনা! কি
দরকার এই বুড়োটাকে বাড়িতে রেখে? পাঠিয়ে
দাও বৃদ্ধাশ্রমে। রুমটা ভাড়া দিলেও তো কিছু টাকা
পাওয়া যেতো!
.
অপর্নার
কথা শুনে তাজ্জব বনে যায় সুমন!
ভালবেসে বিয়ে করেছিল অপর্নাকে। শিক্ষিত,
সুন্দরী সব গুণই ছিল অপর্নার মধ্যে। সুমনের মা
মারা গেছে অনেক আগেই। সুমন ছিল একমাত্র
ছেলে। সুমনের মুখের দিকে তাকিয়ে আর
বিয়ে করেননি ওর বাবা। সরকারি একটা চাকরি করতেন
তিনি।
.
- কি হল কথা বলছো না কেন? স্মৃতি হাতরে
বেড়াচ্ছিল সুমন। অপর্নার কথায় চমকে উঠলো।
- কি বলবো?
- কি বলবো মানে, তোমার কি সিদ্ধান্ত বলো?
- সিদ্ধান্ত!
আমি বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবো না, এইটাই
সিদ্ধান্ত! (জোর দিয়ে বললো সুমন)
- আচ্ছা। থাকো তুমি তোমার বাবাকে নিয়ে আমি
চললাম!
.
ব্যাগ নিয়ে হনহন করে করে বেরিয়ে গেলো
অপর্না! সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সুমন! একদিকে
বিবাহিত
স্ত্রী অন্যদিকে জন্মদাতা পিতা। ধীর পায়ে বাবার
রুমে এসে ঢুকলো সুমন। তখনই মনে পড়লো
বাবা কিছুদিন যাবত অসুস্থ। বাবা বিছানায় শুয়ে আছে।
বিছানার পাশের চেয়ারে বসলো সুমন।
.
- বাবা সুমন? (ক্ষীণ
কন্ঠে ডেকে উঠলো সুমনের বাবা)
- জী, বাবা?
- একটু পানি দিবি বাবা?
টেবিল থেকে পানি এনে দিলো সুমন।
- বুকের ব্যথাটা খুব বাড়ছে বাবা!
- আচ্ছা, কাল সকালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব।
- সকালে না তোর অফিস থাকে?
- একদিন অফিসে না গেলে কি হবে?
.
পরম যত্নে বাবার গায়ের কাঁথাটা ঠিক করে দিল
সুমন। ঠিক যেমনিভাবে তার বাবা ছোটবেলা
সুমনের কাঁথা ঠিক করে দিত। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে
নিয়েছে সুমন। বউ গেলে বউ পাবে কিন্তু বাবা
গেলে তো আর বাবা পাবে না
- কি হলো? ব্যাগ গুছাচ্ছ কেনো? কোথায়
যাচ্ছ?
- কই আবার? আমার বাবার বাড়ি যাচ্ছি!
- কেন?
- কেন তুমি বুঝো না? গত এক মাস ধরে বলছি
তোমার
বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিতে, তা তো
তোমার কানেই যায় না! এই বাড়ীতে হয় তোমার
বাবা থাকবে নয় আমি থাকবো!
- বাবা থাকলে সমস্যা কি? (মিনমিন করে বললো
সুমন)
- তোমার বাবার কাশির শব্দে ঘুমাতে পারিনা! কি
দরকার এই বুড়োটাকে বাড়িতে রেখে? পাঠিয়ে
দাও বৃদ্ধাশ্রমে। রুমটা ভাড়া দিলেও তো কিছু টাকা
পাওয়া যেতো!
.
অপর্নার
কথা শুনে তাজ্জব বনে যায় সুমন!
ভালবেসে বিয়ে করেছিল অপর্নাকে। শিক্ষিত,
সুন্দরী সব গুণই ছিল অপর্নার মধ্যে। সুমনের মা
মারা গেছে অনেক আগেই। সুমন ছিল একমাত্র
ছেলে। সুমনের মুখের দিকে তাকিয়ে আর
বিয়ে করেননি ওর বাবা। সরকারি একটা চাকরি করতেন
তিনি।
.
- কি হল কথা বলছো না কেন? স্মৃতি হাতরে
বেড়াচ্ছিল সুমন। অপর্নার কথায় চমকে উঠলো।
- কি বলবো?
- কি বলবো মানে, তোমার কি সিদ্ধান্ত বলো?
- সিদ্ধান্ত!
আমি বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাবো না, এইটাই
সিদ্ধান্ত! (জোর দিয়ে বললো সুমন)
- আচ্ছা। থাকো তুমি তোমার বাবাকে নিয়ে আমি
চললাম!
.
ব্যাগ নিয়ে হনহন করে করে বেরিয়ে গেলো
অপর্না! সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সুমন! একদিকে
বিবাহিত
স্ত্রী অন্যদিকে জন্মদাতা পিতা। ধীর পায়ে বাবার
রুমে এসে ঢুকলো সুমন। তখনই মনে পড়লো
বাবা কিছুদিন যাবত অসুস্থ। বাবা বিছানায় শুয়ে আছে।
বিছানার পাশের চেয়ারে বসলো সুমন।
.
- বাবা সুমন? (ক্ষীণ
কন্ঠে ডেকে উঠলো সুমনের বাবা)
- জী, বাবা?
- একটু পানি দিবি বাবা?
টেবিল থেকে পানি এনে দিলো সুমন।
- বুকের ব্যথাটা খুব বাড়ছে বাবা!
- আচ্ছা, কাল সকালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব।
- সকালে না তোর অফিস থাকে?
- একদিন অফিসে না গেলে কি হবে?
.
পরম যত্নে বাবার গায়ের কাঁথাটা ঠিক করে দিল
সুমন। ঠিক যেমনিভাবে তার বাবা ছোটবেলা
সুমনের কাঁথা ঠিক করে দিত। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে
নিয়েছে সুমন। বউ গেলে বউ পাবে কিন্তু বাবা
গেলে তো আর বাবা পাবে না
রবিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৫
বিশ্বাস ঘাতক/ ব্ল্যাক মেইল
এই যে ভাইয়া শুনছেন?
.
- চায়ের দোকান থেকে ইমরান পেছনে ফিরে! জী, আমাকে বলছেন?
-হ্যা,আপনাকেই বলছি।
.
- (ইমরান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
আপনি এতো রাতে একা এখানে?
- হ্যা, কিন্তু আপনি কোথায় যাচ্ছেন? ( মেয়টির প্রশ্ন)
- ঘুরতে গিয়েছিলা, এখন বাসাই ফিরছি!
- ওহ, একটা কথা ছিলো
.
-কি বলবেন বলেন, আমার তাড়া আছে
- এইটা কি আপনার গাড়ি?( পাশে)
.
- হ্যা। কিন্তু কেন? আর আপনার হাতে ওইসব কি?
.
- এগুলো রক্ত,
- রক্ত কেন?
.
আসলে কিভাবে বলব বুজতে পারছিনা। (উত্তেজিত কন্ঠে)
.
- আপনি এতো উত্তেজিত হচ্ছেন কেন? শান্ত হন! আর কি হয়েছে খুলে বলুন?
.
- আসলে আমার একটা বড় বিপদ হয়েগেছে,! ( কান্না কন্ঠে)
- কি বিপদ! খুলে বলুন!
- আমার ছোট ভাইয়াটার গত কয়েক দিন আগে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়েছে. আর কাল রাতে তার শরিরের ভিবিন্ন অংশ দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়েছিল।।
ডাক্তার বলেছিলো আজ রাতে ৩:০০ টার ভেতর রক্ত জোগাড় করে অপারেশন না করলে মারা যেতে পারে।
কিন্তু দেখুন রক্ত জোগাড় করেছি ঠিকই কিন্তু হসপিটাল যাওয়ার জন্য গাড়ি পাচ্ছিনা। এখন কি করি ভেবে পাচ্ছিনা। ( মায়া কন্ঠে)
.
- কোন হসপিটাল?
-.................... এই।
.
.
-ইমরান ঘড়ির দিকে তাকালো, তখন রাত ১: ০৫ মিনিট.. ( oh my God) অপারেশনেরতো আর বেশিক্ষন বাকি নেই) আর................. এই হসপিটালতো এখান থেকে অনেক দূর, প্রায় ১ ঘন্টা ২৫ মিনিটের রাস্তা। আর আমার বাসার উল্টো দিকে!
.
- হ্যা। কিন্তু দেখুন রাস্তায় একটা গাড়িও নাই। মনে হই আমার ভাইয়াটাকে বাঁচাতে পারবোনা।।। ( গভির কান্নার কন্ঠে)
-
- ইমরান ভাবছে,( এতো রাতে একা, এই দিকে মেয়েটি সেই কখন থেকে কান্না করতেছে,।
খুব মায়া হচ্ছে তার, লিপ্টটা দিলে হইত একটা জীবন বাঁচবে!)
-
- কি ভাবছেন?
- কিছুনা, চলুন!
-কোথায়?
- হসপিটাল যাবেন্না?
-হ্যা! কিন্তু কিভাবে?
- কিভাবে আবার আমার গাড়িতে করে!
- সত্তিই?
-হ্যা,গাড়িতে উঠুন।...
...
...
...
...
...
...
অতঃপর কিছুদুর যাওয়ারপর।
সত্তিই আপনার এই উপকারের কথা আমি ভুলবনা।
- আরে নাহ কি বলেন,এটা আমার কর্তব্য, মানুষ হিসেবে মানুষকে সাহায্য করবেই এটাই স্বাভাবিক..
.
- সত্তিই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
-আপনার নাম কি?
- ইমরান! আপনার???
- আমার নাম- নাদিয়া।
- অহ,
- ভাইয়া একটা কথা!
- কি কথা?
- সামনের বাজারে আমার কিছু আত্মীয় আছেন, ওরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে, আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে উনাদের কে আপনার গাড়িতে করে নামিয়ে দিবেন?
- কিছু মনে করার কি আছে! অসুবিধা নেই
-
-
- দুই মিনিট পর নাদিয়া ফোন করে তাদেরকে রাস্তার পাশে এসে দাঁড়াতে বলে,& কালো মাইক্রো দেকলে হাতের ইশারা করতে বলে!...
.
.
এর কিছুক্ষণ পর বাজারে এসে গাড়ি থামে,
আর গাড়ি থেকে মাত্র কয়েক ফিট দূরে কয়েকজন লোক যেন কিসের জন্য অপেক্ষা করছিলো।
.
নাদিয়া দেখেই আর চিনতে বাকি রইলনা এরাই তার আত্মীয়, ( যেহেতু সে সামনেই বসা ছিলো)
-
.
অতঃপর নাদিয়া গাড়ি থেকে নেমে
অই লোক গুলো হাতের ইশারায় গাড়ির নিকট আসতে বলে।
.
- ইতিমধ্যে ইমরান ও ড্রাইভিং শিট থেকে নেমে নাদিয়া মেয়েটির পাশে এসে দাঁড়ায়!
.
- লোক গুলো কাছে আসা মাত্রই
( কি রাফিসা এতক্ষন লাগছিলো কেন?)
-
- ওপ্স! আর বলিয়েন্না
রাস্তায় একটা গাড়িও নেই, কিছুক্ষণ পর পর যা কয়েকটা আসছিলো তারাও যেতে বিমত,
!
অবশেষে এই ভাইয়াটার দেখা পেলাম,
আর বিষয়টা পুরোপুরি খুলে বললাম!
তিনিও বিষয়টি বুঝে লিপ্ট দিতে রাজি হলেন।
,- বাই দ্যা ওয়ে, ওনার নাম " ইমরান"
- সবাই সালাম জানালো " ইমরানকে"
.
ইমরান ভাইয়া ওনার নাম -( কাদের) পাশের জন রফিক, আর ইনি দেলোয়ার,!
-
- সবাই একে অপরের সাথে পরিচিত হলো!
- এই রাফিসা আমাদের এখান দেরি করা ঠিক হবেনা, আমাদের বরং যাওয়া উচিৎ,
.
- ঠিক! চলুন যাওয়া যাক( ইমরান)
.
.
.
রাত ২:১১
নিস্তব্ধ পরিবেশ,
পাহাড়িয়া আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার দুই ধারে পাহাড়,, জন শুন্যহীন জায়গা, কোথায় মানুষের বসবাসের চিহ্ন নেই, মাঝে মধ্যে দু একটি নাইট বাস, আর ঝি ঝি পোকার ডাক, ইমরানের মনে ভয় একটু ভয় জন্মাচ্ছিল
।
.
. - ইমরান সাহেব কি ভাবছেন?
- তেমন কিছুনা! ছোট্ট একটা কথা!
.
-বলুন কি কথা!
- আচ্ছা আপনারা নাদিয়াকে রাফিসা বললেন যে?
- হ্যা ওর না.......
- , আসলে ওরা আমাকে আদর করেই রাফিসা বলেই ডাকে ( নাদিয়া কথা কাটালো)
.
. ওহ
.
- ভাইয়া পানি খাবেন? ( দেলোয়ার)
- না! তেষ্টা পাইনি!
- অহ!
- ইমরান সাহেব আপনি smoke করেন?( মাঝ বয়সি রফিক নামের লোকটা)
- হ্যা! তবে মাঝে মাঝে!
- খাবেন নাকি একটা? বিদেশি কিন্তু ( রফিক)
.
- ওহ! খাওয়া যায়.
- এই নিন বলেই রফিক সিগারেটের পেকেট থেকে একটা সিগারেট ইমরানের দিকে বাড়িয়ে দিলো।
- ইমরান হাসি মুখে গ্রহন করে!
- লাইটার টাও বাড়িয়ে দিলো ( কাদের)
- সিগারেটে আগুন দিয়ে " একটা শুকটান দিলো! (ইমরান)
- কেমন ইমরান সাহেব? ( দেলোয়ার)
- হুম, বেশ!
.....
..
...
...
....
.....
....
চারদিকে পাখির ডাক, হালকা রোদের আলো আর সকালের ঠান্ডা বাতাসে ইমরানের ঘুম ভাঙল. অবশ্য এটা ঘুম কিনা সন্দেহ!
- ইমরান চোখ কচলাতে কচলাতে কি আপনারা সবাই কোথায় গেলেন? নাদিয়া আপনার ভাইয়ার কি অবস্থা?
- কিন্তু কারো সাড়াশব্দ নেই!
- কি হলো কথা বলছেন্না কেন?
- কিন্তু কারো শব্দ নেই
চোখ মেলেই দেখে সে পাহাডের অনেকটা নিছের একটা গাছের মুন্ডির সাথে আটকে আছে!
ইমরান ভয় পেয়ে উঠে দাড়ানোর চেস্টা করে কিন্তু না কোন ভাবেই পারছেনা!
ইমরান লক্ষ্য করল তার ডান পায়ের হাটু থেকে এখনো হালকা রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে।।
আর মাথার পেছন থেকে হালকা রক্ত গাড় দিয়ে বেয়ে পড়ছে!!!!
.
.
ইমরানের আর বুঝতে বাকি রইলনা ওরা ছিলো ব্ল্যাক মেইল পার্টি, আর তারা সিগারেট কে তাদের প্রধান হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করেছে।
.
.
- সমাপ্ত
.
.
বিঃদ্রঃ- কাউকে সহজে বিশ্বাস করা ঠিক না,।
অপূর্ন তৃপ্তি
→সাবরিনা সবে মাত্র কলেজে ভর্তি
হয়েছে কলেজের জীবনের শুরু থেকে এই
পর্যন্ত অনেক ছেলে থাকে প্রপোস করেছে
কিন্তু কেউ তাঁর মনের মত হয়ে উঠেনি।
→আজ কলেজের এক অনুষ্টানে একটি
ছেলেকে দেখে সাবরিনার অনেক ভালো
লেগে যায় একতায় তাঁর স্বপ্নে দেখা সেই
রাজকুমারের মত।
→কিছু দিন পর পরীক্ষা চলে আসে তাই
থাকে আর খুঁজা হয়ে উঠেনি।
→আজ কেনো জানি ছেলেটার জন্য মনটা
একটু বেকুল হয়ে উঠেছে।
→এই দিকে ক্লাসে আসে দেখে স্যার ও
প্রায় ১০ মিনিট আগে খাতা দিয়েছে।
→কিছুতেই যেনো পরীক্ষাতে মন বসতেছে
না বার বার সেই ছেলেটির মুখ চোখের
সামনে বেসে উঠছে।
★★
★★
→এই ভাবে কিছু দিন যাওয়ার পর পরীক্ষা
শেষ হয় এখন ত কলেজে ও বন্ধ কি করে
ছেলেটার খুঁজ নিবে।
→কথা গুলো একা একা ভাবছে সাবরিনা
আর মনে মাঝে কেনো জানি অজানা একটি
কষ্ট অনুভব হচ্ছে।
→সাবরিনা এখনো ফ্রেশ হসনি(রাহেলা
বেগম)
→আম্মু আমি যাবনা তুমি যাও।
→যাবিনা মানে কাল ত তর মামা বিয়ে
আর এখন বলছিস যাব না।
→অনেক রিকুয়েষ্ট করার পর সাবরিনা
রাজি হয়।
→বিয়ে বাড়িতে সবাই আনন্দের মেতে
উঠেছে কিন্তু সাবরিনা কেনো জানি মন
মরা হয়ে আছে।
↓
→বিয়ে বাড়িতে হঠ্যাত্ তাঁর সেই
রাজকুমার কে দেখতে পায় সাবরিনা
নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পাচ্ছেনা।
→অপলক দৃষ্টিতে থাকিয়ে কিছুতেই
ছেলেটির দিক থেকে চোখ ফিরাতে
পাচ্ছে না।
→ছেলেটিকে দেখার পর থেকে মনের মাঝে
সুখের বৃষ্টি হচ্ছে এই সুখের আশায় এত দিন
অপেক্ষায় ছিলো।
↓
→তার পর সাবরিনা খুঁজ নিয়ে জানতে
ছেলেটার নাম সুমন তাদের কলেজে অনার্স
৩য় বর্ষের ছাত্র।
↓
→এর বেশি তেমন কিছু জানা হয়ে উঠেনি।
→কিছু দিন পর সাবরিনার ফেইসবুক
আইডিতে সুমন নাম থেকে রিকুয়েষ্ট আসে
এমনিতে অপরিচিত কারো রিকুয়েষ্ট
এক্সচেপ্ট করে না।কি যেনো মনের
রিকুয়েষ্টটা এক্সচেপ্ট করে পেলে।
→এক্সচেপ্ট করতেই মেসেজ আসে কেমন
আছো।
→ভালো কে আপনি?
→আমি সুমন।
→এই ভাবে কিছু দিন চ্যাটিং হওয়ার পর
সাবরিনা জানতে এইটা তার স্বপ্নের
রাজকুমার 'সুমনের' আইডি।
→তার পর থেকে আর বেশি বেশি চ্যাটিং
হত তাদের মধ্য।
→সাবরিনা এক দিন সুমনকে দেখা করতে
বলে অনেক রিকুয়েষ্ট এর পর সুমন রাজি।
→সাবরিনা সুমনকে দেখে সব লাজ লজ্জা
ভুলে গিয়ে বলে উঠল সুমন আমি তোমাকে
ভালোবাসি।
↓
→আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবনা
আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।
→আর তুমি আমার জাস্ট বন্ধু মাত্র এর বেশি
কিছু তোমাকে নিয়ে ভাবিনী।বলে এখান
থেকে সুমন চলে যায়।
→সাবরিনা শুধু সুমনের দিকে থাকিয়ে
আছে কথা বলার কোনো শক্তি পাচ্ছেনা।
→মনে হচ্ছে পৃথিবীর চার পাশ যেনো
অন্ধকার হয়ে আসছে।
↓
→এর পর অনেক দিন কেটে যায় সুমনের
সাথে কোনো প্রকার দেখা হয়নি।
সাবরিনা এখন ঢাকা মেডিকেল ছাত্রী।
খোলা চিঠি.......
প্রিয় নিরুপমা,
তোমাকে ভালবাসার আগে জানতাম না স্বপ্নগুলো
ভাঙ্গার কষ্ট কি, মানুষ কেন এত কষ্ট পায় স্বপ্ন ভেঙ্গে
গেলে, আর জানবোই বা কেমন করে বলো তো ? তোমার
আগে অন্য কাউকে নিয়ে তো এত স্বপ্ন দেখিনি, অন্য
কাউকে ভালবাসি নি, তোমাকে নিয়েই তো স্বপ্ন
দেখার সুচনা করলাম। আর তুমি স্বপ্ন গুলোর সুচনা করেই
চলে গেলে?
.
এখন বুঝি স্বপ্নগুলো ভাঙ্গার কষ্ট কি, তুমি আমাকে
ভালোবেসে যা দিয়ছো, তা হয়তো কোন ভালবাসার
মানুষ তার ভালোবাসার মানুষটিকে দেয় না, আসলে
তোমার ভালবাসার প্রতিদান দেয়ার ধরনটাই
এমন,তাইনা? তাই নাহলে কি কেউ কাউকে বুকভরা
ভালবাসা নিয়ে জীবন ভরা কস্ট দেয়?
.
তোমাকে একটা অনুরোধ, তুমি কোনদিন কারো স্বপ্ন
হবার ইচ্ছে করো না, কেন জানো, কারন তুমি স্বপ্ন
ভাঙ্গতে জানো কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে জানো
না, হ্যা স্বীকার করছি তুমি অনেক ভাল সুখের স্বপ্ন
দেখাতে পারো, কিন্তু সেগুলো অপুর্ন রেখে নিজের
সুখের জন্য ভালই ভাবতে পারো। তোমার সুখের জন্য
তুমি যে কাউকে যখন তখন আপন করতে পারো।
.
নিরুপমা তুমি হয়তো জানো না মানুষের জীবনের
কষ্টকর মুহুর্ত গুলোর মধ্যে একটি হল,
"তুমি দেখছো তুমি যাকে ভালবাসো সে অন্য কাউকে
ভালবাসে "। পৃথিবীতে কারো আপন হওয়াটা খুব সহজ
কিন্তু কাউকে আপন করে পাওয়াটা খুব কঠিন। আমিও
পাইনি তোমার আপন হয়েও তোমাকে আপন করে।
"তোমারই মুখটা মনে পড়ে যখনি,
মনে হয় নেই আলো নেই,
আমি তুমি ছাড়া নেই ভালো নেই........
তোমাকে ফেরাতে পারে বিধাতারও নেই সেই জোর,,
আজ তুমি শুধু নেই মোর".....................
.
তুমি জানো আজ আমার প্রতিটা কষ্ট কোন একসময়
তোমার আমার ভবিষ্যতের স্বপ্ন ছিলো, বিশ্বাস করো
তোমাকে ছাড়া আমি এখনো ভালো নেই, আমি ভাল
থাকতেও পারি না, কিভাবে ভাল থাকবো বলো আমার
ভাল থাকার মাধ্যমটাই তো তুমি ছিলা।
আমি জানি আমি কখনো তোমাকে বুঝাতে পারবো না
কতোটা ভালোবাসি তোমায়, এমনকি এইও জানি
তোমাকে কখনো আমার করে পাবো না। তবে তোমাকে
যে ভালোবাসি তা তোমাকে বলতে পেরে ক্ষনিকের
সুখ টুকু আমি পেয়েছি ভালোবাসা নামের প্রবাদ
থেকে, তার সমতুল্য পুরো পৃথিবী আমার কাছে।
.
জানিনা তুমি আমাকে আদৌ ভালোবেসেছিলে কিনা
তবে এই দেহে যতদিন প্রাণ থাকবে, ততদিন তোমায়
ভালোবেসে যাবে, কারণ একটাই তুমি ছাড়া এই হৃদয়
ঘরে আর কখনো কেউ আমার অনুভুতি আবেগকে ছুঁয়ে
দেখতে পারবে না। যা ছিল সব স্বপ্ন তোমার জন্যই
তুলে রেখেছি, তুমি ছিলে তুমি আছ তুমি থাকবে........
.
নিরুপমা
কিছু কথা আছে
মনে মনে রয়,
কতটা স্বপ্ন দেখলে?
স্বপ্নটা সত্যি হয়।
কতটা অশ্রু ঝরালে?
কান্না ভোলা যায়।
কতটা ভালবাসলে?
ভালবাসার মানুষটিকে পাওয়া যায়।
বলতো??
✎ আবেগ Vs ভালোবাসা ✎
আবেগ হল, পছন্দের মানুষটিকে একপলক না দেখে
থাকতে না পারা।
ভালোবাসা হল, পবিত্র ভাবে ভালোবাসার জন্য
প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে দূরে থাকা।
.
আবেগ হল, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলা।
ভালোবাসা হল, ফোনে কথা বলে সময় নষ্ট না করে
নিজের ক্যারিয়ার ঠিক করা।
.
আবেগ হল, তোমাকে না পেলে আমি বাঁচবোনা।
ভালোবাসা হল, সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষটির
জন্য নিজেকে জীবিত রাখা।
.
আবেগ হল, ঘরের কোণায় নিশ্চুপে কেঁদে কিংবা
নিকোটিনের ধোঁয়ায় নিজেকে তিল তিল করে শেষ
করে দেয়া।
ভালোবাসা হল, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নতুন করে
সবকিছু শুরু করা।
.
আবেগ হল, ঘন ঘন সন্দেহ করে সবসময় একটা বাড়তি
টেনশনের মধ্যে থাকা।
ভালোবাসা হল, পবিত্র মনে একে-অপরকে বিশ্বাস
করা।
.
আবেগ হল, হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে উল্টাপাল্টা
কাজ করে ফেলা।
ভালোবাসা হল, প্রতিটি সিদ্ধান্ত ভেবচিন্তে
নেয়া, বড়দের মতামত নিয়ে কাজ করা।
.
আবেগ হল, সবসময় ভুল করে, ভুল মানুষকে ভালোবেসে
ফেলা।
ভালোবাসা হল, সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষটির
জন্য পবিত্র মনে অপেক্ষা করা।
.
✔বন্ধুরা, আজ চারদিকে এত ব্রেকআপ, সুইসাইড, অনেক
মেয়ে সতীত্ব হারাচ্ছে শুধুমাত্র আবেগের বশে
সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে। আজ চারদিকে এত
হাহাকার শুধুমাত্র ভুল মানুষকে অন্ধভাবে
ভালোবেসে ফেলার কারণে। কাউকে দেখে
ভালোলাগা/ ভালোবাসা দোষের কিছু না, দোষ হয়
তখন, যখন অন্ধভাবে ভালোবেসে আবেগের বশবর্তী
হয়ে উল্টাপাল্টা কাজ করা হয়।
বন্ধুরা আবেগ দ্বারা নয়, বিবেগ দ্বারা সিদ্ধান্ত
নিতে শিখো, নিজেকে কন্ট্রোল করতে শিখো। আর
একটি কথা, নিজের মহামূল্যবান ভালোবাসাকে
নিজের কাছেই আগেল রাখো, সেখান থেকে একটু একটু
করে প্রিয় মানুষটিকে ভালোবাসা দাও, তাহলে
ভালোবাসা ধীরে ধীরে খাঁটি হবে, ভালোবাসার
মানুষটিও তোমার সেই ভালোবাসা পাওয়ার জন্য
ব্যাকুল হয়ে থাকবে, আর তুমিও কষ্ট পাবেনা।
সেই কথাগুলো
.
১
.
সপ্ন দেখে আসিফের ঘুম ভেঙে গেল। এই সপ্নটি আসিফ গত দুই তিনদিন ধরেই দেখছে। সপ্নটিতে রিমির অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।
.
কয়েকদিন আগে রিমিকে বলল
-তোর বিয়ে হবে কবে রে?
-কেন কি হয়েছে?
-তোর বিয়ে হয়ে তোকে বিদায়ের সময় তুই কাঁদবি। আর আমি তা দেখে হাসব।
-তুই তো একটা হারামি। অন্যের দুঃখে নিজে হাসবি।
-হারামিরা এমনই হয়। আর তোর সাথে কথা নেই। থাক, আমি গেলাম।
.
রিমির সাথে এইরকম বিয়ের কথা বলে অনেকবার ঝগড়া করেছে। রিমি রেগে গেলেও আসিফ মজা নিয়েছে।
.
অথচ আজ রিমির বিয়ের সপ্ন দেখে আসিফের কেন এমন হবে? আসিফ আর এমন হতে দিতে চায় না।
.
আসিফ ভাবির ডাকে বাস্তবে ফিরে এল। আসিফ বলল
-তুমি কখন এলে ভাবি?
-এসেছি তো অনেক্ষন। তোমাকে ডাকছি কিন্তু তোমার কোন পাত্তাই নেই।
-আসলে আমি খেয়াল করি নি।
-খেয়াল করবে কিভাবে। তুমি তো ভাবনার জগতে ডুবে ছিলে। তা কি এত ভাবছো?
-একটা জিনিস আমার পিরা দিচ্ছে।
-কি জিনিস সেটা?
-মনে হচ্ছে আমি একজন মেয়েকে হারিয়ে ফেলতে চাই না। সারাজীবন তাকে আমার কাছে ধরে রাখতে চাই। কিন্তু তার প্রতি আমার ভালবাসা আছে কি না জানি না।
-আচ্ছা এর সমাধান আমি দেব।
-এখন খেতে আসো।
.
২
.
রিমি কানের ভেতর হেডফোন দিয়ে গান শুনছে। হঠাৎ গান বন্ধ হওয়ায় রিমি মোবাইলের স্ক্রিনে তাকালো। আর তাকিয়ে বুঝতে পারলো আসিফের ফোন।
.
প্রথমবার কেটে দিলেও পরেরবার রিসিভ করল। রিমি বলার আগেই আসিফ বলল
-কিরে ফোন কেটে দিস কেন?
-আমার ফোন তাই আমার ইচ্ছা। তাতে তোর কি?
-আজ তুই ঝগড়া করতে চাইলেও আমি ঝগড়া করবো না।
-কেন রে? তুই এত ভাল কবে থেকে?
-এখন থেকে। কারন আমার প্রয়োজনে ফোন করেছি।
-তা তোর কি প্রয়োজনে ফোন করলি?
-আমার সাথে এক জায়গায় যেতে পারবি?
-কোথায়?
-একটা মেয়েকে প্রোপোস করতে।
-তা কার জন্য?
-কার আবার! আমার জন্য। তুই যাবি নাকি বল।
-যাবো না।
-মনে থাকে যেন এই কথা।
-আচ্ছা যাবো যাবো।
-আচ্ছা বিকেলে আমাদের কলেজের সামনে ওই কোচিং সেন্টারের ওখানে চলে আসবি।
-আচ্ছা।
.
৩
.
আসিফ অনেক সময় ধরে রিমির জন্য দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু রিমির কোন খবর নেই। মনেহয় রিমি নিজে থেকে দেরি করে আসছে।
.
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে রিমির দেখা মিলল। আসিফ কাছে গিয়ে বলল
-তোর আসতে এত সময় লাগে? আমি তোর জন্য অপেক্ষা করছি।
-আমার জন্য অপেক্ষা করার কি আছে?
-জীবনের প্রথম তো। তাই সাহস পাচ্ছি না।
-মেয়েটির সম্পর্কে কিছু জানিস?
-নাহ।
-মেয়েটির সম্পর্কে কিছু জানা নেই। আর তাকে তুই প্রোপোস করতে এসেছিস।
-আরে জানতে জানতে যদি অন্য কেউ বুকিং দেয়।
-তা ঠিক। আচ্ছা তুই যা।
-আমি যেতে পারবো না।
-যা বলছি।
.
৪
.
আসিফকে পাঠিয়ে দিয়ে রিমি দুরে দাঁড়িয়ে আছে। আসিফের অন্য কারো প্রতি ভালবাসার কথা শুনে রিমির মনেহচ্ছে আসিফকে সে নিজের করে নিলেই পারতো। কিন্তু দেরি করে ফেলায় বুঝি তা আর হল না।
.
আসিফের অন্য কারো প্রতি ভালবাসা দেখে কেন যানি নিজেকে নিঃসঙ্গ লাগছে। আসিফের কি কখনও রিমির প্রতি ভালবাসা জেগেছিল। একথা জানা হয় নি।
.
এইরকম অনেক ভাবনা রিমির মনের ভেতর ঘুরে ফিরে আসছে। হঠাৎ আসিফের ডাকে রিমি ঘুরে তাকালো। আসিফ বলল
-আমার আর ওই মেয়ের সাথে প্রেম করা হবে না।
-কেন কি হয়েছে?
-ওই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
-কি!!!
.
আসিফের দিকে তাকিয়ে রিমি চুপ হয়ে আছে। মনেহচ্ছে আজ রিমি আসিফকে ভালবাসার কথা জানাতে পারে। রিমি বলল
-আমার সাথে প্রেম করবি?
-কি বললি!
-হ্যা। আমার সাথে প্রেম কর। দেখ আমি ওই মেয়ের চেয়ে কম সুন্দরি হতে পারি। কিন্তু ওই মেয়ের চেয়ে অনেক বেশি ভালবাসবো।
-ধুর। আমি তো তোর বন্ধু।
-বন্ধু ছিলি। কিন্তু এখন প্রেমিক হবি।
.
আসিফ কিছু সময় চুপ থেকে বলল
-তুই ভেবে বলছিস তো?
-হ্যা ভেবে বলছি। আমি অন্যকাউকে বিয়ে করতে চাই না। আমি তোকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু তুই সেটা কখনও বুঝিস নি।
-এখন তো বুঝিয়ে দিলি। আমিই তাহলে তোর স্বামি হবো।
-আচ্ছা। তাহলে তুই আমার প্রেমিক। আমি এখন তোর কাধে মাথা রেখে বসে থাকব।
.
৫
.
রিমি আসিফের কাধে মাথা রেখে বসেছিল।হঠাৎ একজন বলল
-বাহ। এখনই আমার দেবরের কাধে মাথা রেখে ফেলেছ।
রিমি তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটি। রিমি বলল
-আপনি!! আসিফ তো আপনাকে প্রোপোস করতে গিয়ে বিবাহিত দেখে আমাকে প্রোপোস করল।
-বিবাহিত না হলে আসিফের ভাবি হলাম কিভাবে?
.
রিমি আসিফের দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে বলল
-মানে?
-মানে উনি আমার ভাবি। তুই আমাকে ভালবাসিস নাকি সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ছিলাম না। আর নিশ্চিত নাহলে তো তোর সাথে প্রেম করা যায় না। তাই প্রোপোস করার নাটক সাজিয়েছি।
-কি! তোর আজ খবর আছে।
-এবারের মত মাফ করে দে।
-প্রেমিক বলে মাফ করলাম। আর তুই আজ মনের কথাগুলো বলতে দিয়েছিস তাই মাফ।
-যাক বাঁচলাম।
.
আসিফ রিমি কেউ কাউকে সেই ভালবাসার সেইকথাগুলো যেকথা কখনও বলে দেখে নি। তবে কোন এক পরিবেশে কথাগুলো বলা হয়ে গেল।
অপেক্ষায় আছি
এখনো মেয়েটির প্রোফাইলের নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে।
হ্যা মেয়েটি এখনো অনলাইনে আছে। রুমা আক্তার নামের এই আইডিটি বারবার চেক করছে ইরফান! ম্যাসাজ বক্সে কিছু একটা লিখে আবার ব্যাক বাটনে চাপছে ইরফান। কিছুক্ষন পর আবার ফরওয়ার্ড বাটন চাপছে। কিন্তু ম্যাসাজ করার সাহস পাচ্ছে না।
.
কয়েকদিন আগে তো এমন হতো না! তখন তো সবসময় চ্যাটিং হতো। কিন্তু ইদানিং কেনো যেনো ম্যাসাজ করতে বুকে কম্পন শুরু হয়।
.
মেয়েটির নাম রুমা আক্তার। ফেসবুকেই পরিচয়।
.
কয়েকবছর আগে,
.
অফিস থেকে সদ্য বাসায় ফিরলো ইরফান। একটু ফ্রেশ হয়ে ফেসবুকে ঢুকে দেখে সেই পরিচিত এক মেয়ের ম্যাসাজ! ম্যাসাজটি ছিলো-
.
-কেমন আছো? (রুমা)
-ভাল আছি। তুমি? (ইরফান)
-হুম ভালো। কি করো?
-এইতো অফিস থেকে ফিরলাম।
-হুম। তাড়াতাড়ি কিছু খেয়ে নাও নয়তো অসুখ করবে।
-আচ্ছা। তুমিও করে নাও।
.
আস্তে আস্তে ইরফান আর রুমা ভাল বন্ধু হয়ে উঠে। তারপর থেকে চলতে থাকে তাদের খুনশুটি। রাগারাগি, মান-অভিমান।
.
একসময় ইরফান রুমার কাছে নাম্বার চায় এবং প্রতুত্তরে রুমাও তার নাম্বার দেয়। তারপর থেকে শুরু হয় তাদের ফোনালাপ। রাতদিন ফোনে কথা, চ্যাটিং নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে তারা।
.
ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব আরো ঘনিষ্ট হয়ে উঠে। একে অপরের উপর
টেক কেয়ার, আদেশ-নিষেধ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠে।
.
রুমা ইরফানকে আদেশ করতো এটা করতে ওটা করতে। আর ইরফান হাসিমুখে রুমার কথা শুনতো।
.
কেউ হয়তো বলেছিলো, "একটা ছেলে আর মেয়ে বেশীদিন বন্ধু থাকতে পারে না" । ঠিক তাই হয়েছিলো ইরফানের ক্ষেত্রে। ইরফান রুমাকে ভালবেসে ফেলেছিলো।
.
তখন থেকে ইরফানের আরো পরিবর্তন ঘটতে থাকলো। রাতদিন ফোনে কথা বলা। ফেসবুকে রুমার ম্যাসাজ আসার সাথে সাথেই উত্তর দিয়ে অপেক্ষায় করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
.
ইরফান আর নিজেকে সংযত না রাখতে পেরে একদিন রুমাকে প্রপোজ করে। কিন্তু উত্তরে রুমা কিছুই বলে নি। হয়তো বলেছিলো, "আমরা বন্ধু হয়ে থাকতে চাই" ।
.
কিন্তু ইরফানের মাঝে মাঝে রুমার আচরন দেখে মনে হতো রুমা ও তাকে ভালবাসে। কিন্তু আবার কেনো জানি মনে হতো রুমা তাকে ভালবাসে না।
.
ইদানিং রুমার সাথে আগের মতো কথা হয় না। সেটা রুমার দিক থেকেই। ইরফান সারাদিন ফেসবুকে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে
কখন "রুমা আক্তার" নামটির ডান পাশে সবুজ বাতি জ্বলবে।
কখন তার সাথে কথা হবে?
.
কিন্তু রুমা দিনদিন ইরফানকে একরকম এড়িয়েই চলছে। ইরফানের ম্যাসাজের উত্তর বেশী দেরীতে দেয়। ফোন রিসিব করে অল্প সময় কথা বলে কেটে দেয়।
.
কিন্তু ইরফানের একটাই প্রত্যাশা রুমা তাকে ভালবাসে হয়তো সে মুখ ফুটে বলতে পারছে না।
.
ইরফান শুধু একটা কথাই জানে। সে রুমাকে খুব বেশীই ভালবাসে।
মাঝেমাঝে তার ভয় হয়, রুমা তাকে আদৌ ভালবাসে কিনা? কিন্তু
এসবের মাঝে একটাই চিরন্তন সত্য কথা তা হলো ইরফান রুমাকে ভালবাসে। যার কোন শেষ নেই।
বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫
"শুধু তুমি"
.
বন্ধুত্বের আড়ালের ভালবাসাটা অনেকেই বুঝতে পারে না।আমি জানি না যে তুমি সেটা বোঝ কি না?কিন্তু আবার এটাও মনে হয় তুমি সবই বোঝো।আমিতো অনেক কিছুই বলতে না গিয়েও তোমাকে বলে দেই।তবুও খুব জানতে ইচ্ছে হয় আমার সম্বন্ধে তোমার কোন ফিলিংস টা কেমন।বেখায়ালি মনটা আজকাল তোমাকে একটু বেশীই মিস করে।এতদিনও আমি তা বুঝতাম না।কিন্তু আজকাল তোমাকে ভেবে আমি নিজের মধ্যে অনেকটা পরিবর্তন লক্ষ্য করছি।কোন কাজে মন বসে না এমনকি বসলেও সেই কাজ সঠিকভাবে পূরন করতে পারি না শুধু তোমায় ভেবে।কি করে পারবো?তুমিতো আমার মনটাই এক অদ্ভুদ মায়ায় পূরন করে রেখেছো।
.
তুমি জানো কিনা জানি না আমার সারাটা দিন শুধু তোমাকে ভেবেই কাটে।ফেসবুকে সারাটাক্ষন পরে থাকি শুধু তোমার সাথে একটু কথা বলার জন্য।একটু পর পর তোমার আইডিটা ঘুরে দেখি।তোমার প্রোফাইল পিকচারের ঐ পুতুলের ছবিটাকেই তুমি ভাবি।কিছুদিন আগেও তুমি আমার খুব ভাল একজন বন্ধু ছিলে।কিন্তু যেদিন আমাকে ম্যাসেজে বলেছিলে যে কয়েকদিন কথা না হওয়ায় তুমি আমাকে অনেক মিস করেছিলে সেদিন থেকে এই মনটা তোমাকে বন্ধুর চেয়ে একটু বেশি জায়গা দিয়ে দিয়েছে।আমি জানি না তুমি আমাকে এখনও শুধুই বন্ধু ভাবো নাকি এর চেয়ে একটু বেশী কিছু কিন্তু আমি বলছি আমি তোমাকে বন্ধুর চেয়ে অনেক বেশী কিছুই মনে করি।সেটা কি আমি জানি না।
.
যখন আমি তোমার সাথে চ্যাট করি তখন মনে হয় যেন আমার চেয়ে সুখি ব্যাক্তি এই মূহুর্তে আর কেউ নেই।কেমন যেন এক অদ্ভুদ অনুভুতি মনে উকি দেয়।যেন আমি সুখের সাগরে ভাসছি।যখন তোমার মেসেজের রিপ্লে দিতে একটু দেরী হয় তখন মনটা খাচার বন্দী পাখির মত ছটফট করে।আর যখন তুমি রিপ্লে দাও তখন মনে হয় আমি মরেও বেঁচে এসেছি।যখন তোমার নামের পাশ থেকে সবুজ বাতিটা নিভে যায় তখন তোমার প্রতি খুব মায়া হয়।মনে হয় যেন আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলছি।
.
আমি তোমাকে এখনও দেখিনি।জানি না তুমি কালো না ফর্সা।শুধু এইটুকু জানি তুমি খুব খুব খুব অসম্ভব ভাল একটা মেয়ে।যেমনটা আমি প্রতি রাত্রে স্বপ্নে দেখি।তুমি ফর্সা কিবা কালো হও তাতে আমার কিছু যায় আসে না আমি শুধু এইটুকু জানি যে তোমার সঙ্গ পেলে আমার জীবন ধন্য।তোমাকে নিয়ে মনটা অনেক বড় স্বপ্ন দেখে।প্রতিটিক্ষনে ক্ষনে তোমাকে নিয়ে মনে অনেক আশা জাগে।জানিনা যে আমার এ আশা বা স্বপ্ন কোন দিন পূরন হবে কিনা।
.
জানি না তোমার গলার সুরটা কেমন।মধুর নাকি কর্কশ।তবে এইটুকু জানি যে তুমি যা ই বলো কথাগুলো খুব সুন্দর ও গুছিয়ে বলো।সুরটা না হয় কল্পনাতেই ডুবে থাক।তোমাকে বাস্তবে পাওয়াটাই আমার জীবনের সার্থকতা।
.
তুমি বলেছিলে যে আমার তোমার তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে কিনা।হ্যা,তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করে।কিন্তু ভয় হয় এই ভেবে যে তোমাকে দেখার পর যদি মনটা তোমাকে আরও পেতে চায় তাহলে আমি নিজেকে সামলে রাখতে পারবো কিনা।যদি না পারি তখন আমার কি হবে?
.
বলতে গিয়েও তোমাকে বলতে পারি নি যে তোমার জন্য আমার মনের জায়গাটা কত বিশাল।সেখানে তোমাকে নিয়ে জীবনটা পার করতে চাই।যতটা বারই কিছু একটা বলতে চেয়েছি মন থেকে উল্টো কিছুই বের হয়েছে।খুব ভয় হয় বললে যদি তুমি বন্ধুত্বটা নষ্ট করে দাও তখন আমার কি হবে?
.
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে শীতল বাতাসে হাটতে।কখনও আবার ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে ঐ দূর মেঘের ভেতরে ডুবে যেতে।
ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে একটা সুখের নাটাই তৈরি করি।
ইচ্ছে করে তোমার হাতে হাত রেখে অনেকটা পথ পাড়ি দেই।
ইচ্ছে করে কোন রুপালি দুপুর আর অদ্ভুদ বিকেলে তোমাকে নিয়ে দূরে হারাই।
জানিনা কখনও আমার এই অবুঝ ইচ্ছাগুলো পূরন হবে কিনা।কিন্তু নাছোরবান্দা মনটাকে কিছুতেই বোঝাতে পারি না।
.
হয়তো তুমি আমার লেখাগুলো এই মুহুর্তে পড়ছো।যদি পড়ে থাকো তাহলে হ্যা আমি তোমাকেই বলছি,
"জানি না যে আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি কিনা,শুধু এইটুকু জানি যে আমি তোমার মায়ার জালে আটকে গেছি।তোমাকে নিয়ে আমি আমার জীবনটা রংধনুর সাতরঙ্গের মতো সাজাতে চাই।পূরন করতে চাই তোমাকে নিয়ে আমার স্বপ্নগুলো।জীবনের অনেকটা পথ হাটতে চাই তোমাকে সঙ্গী করে।সারাজীবন বাধ্যের মতো শুনে যেতে চাই তোমার কথা।তোমার দুঃখগুলোর ভাগিদার হতে চাই।তুমি কি আমার হবে?
সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৫
তুমি ছুয়ে দিয়ে এই মন
--কেন এমন করলা বলো??
--সরি রিদিতা।
--আমার চোখের জলের মূল্য দিতে পারবে তুমি বলো? (চিৎকার দিয়ে)
--আমার কিছু করার ছিল না।
--আমি মরেই যাবো। আলভি।
--এখন আমি কি করতে পারি বলো?
--কিছু করতে হবে না, যা কিছু করার আমিই করবো।
--আরে শোনো?
--(হন হন করে কাদতে কাদতে চলে গেল, রিদিতা)
|
[[রিদিতা মেয়ে টি খুব অভিমানী, তাছাড়া কারো সাথে বেশি কথাও বলে না। এই তো ভার্সিটি তে শুধুই মেয়ে বন্ধুদের সাথেই চলে সে, কোনো ছেলে বন্ধু নেই তার। যেহেতু রিদিতা দেখতে অপ্সরীদের মত। তাই ভার্সিটির প্রথম দিক থেকেই ছেলেরা অনেকেই চান্স নিতে চেয়েছে। কিন্তু পারে নি।]]
•
[[এদিকে আলভির বন্ধুরা সবাই কলেজে আড্ডা দিতেছে,, এমন সময় রিদিতাকে নিয়ে কথা উঠলো, যে রিদিতার মনে প্রেম জাগাতে পারবে, তাকে ৫ হাজার টাকা দেয়া হবে। আর সেটাই অালভি করলো, রিদিতার সাথে প্রেমের অভিনয় করেছে। কিন্তু রিদিতা আলভি কে সত্তি কারের ভালো বেসে ফেলছে। কিন্তু আলভির জন্য সেটা কখনওই ভালবাসা ছিল না। শুধু মাত্রই ছিল একটা **ডিল** ।]]
•
[[এদিকে আলভিও যখন রিদিতাকে ছাড়া একা হয়ে গেল, তখন সে তার ভাল বাসার মানুষটির মর্ম বুঝতে পারল। কিন্তু রিদিতার কাছে কোন মুখে যাবে আবার সে তাই। নিজের মতই রয়ে গেল। এদিকে রিদিতা আজ সপ্তাহ খানিক ধরে কোনো যোগাযোগ করে নি আলভির সাথে। হয়তবা অভিমান করেই]]
•
[[কিন্তু রিদিতা সত্তি আলভি কে খুব ভালবাসত। তাই এত এতকিছুর পরও অভিমান ভেঙ্গে আলভি কে ফোন দিল]]
•
--কেমন আছো? (কান্না সুরে রিদিতা)
--আরে কাদতেছ কেন তুমি?
--প্লিজ একটু দেখা করতে পারবা?
--আজকে? আচ্ছা কখন?
--এই তো বিকেলে সেই জায়গায়, ভ্যালেন্টাইনে যেখানে আমি তোমার কাধে মাথা দিকে বসেছিলাম।
--আচ্ছা ঠিক আছে।
--আসবা কিন্তু প্লিজ।(কান্না স্বরে)
--আচ্ছা আসব, এখন কান্না বন্ধ করো প্লিজ।
--আচ্ছা। ঠিক আছে।
•
[[অতপর বিকেলে সেই জায়গাটায় ওরা দুজন দেখা
করতে গেল। রিদিতি এখনও কাদতেছে। ]]
•
--আলভি আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাবো,তাই শেষ বারের মত তোমাকে দেখার জন্য এসেছি।
--কেন যাবে?
--এমনি, তোমার প্রিয় রংয়ের পান্জাবী, আর এই গোলাপ গুলো এনেছি। এই গুলো তোমার কাছে থাকলে হয় একটুও মনে করবে আমায়। যখন না থাকব।
--যদি যেতে না দেই? তোমায়?
--কোন বাধনে বেধে রাখবে?তুমি?
--ভালবাসার বন্ধনে বাধব তোমায়।
--কিন্তু তুমি কখনও তো ভালবাসো নি আমায়,শুধুই
অভিনয় ছিল সব।
--এখন থেকে শুধু তোমায় ভালবাসব।
--সত্তি?
--হ্যা সত্তি সত্তি সত্তি।(আলভি)
--আর কখনও যদি বলও যে অভিনয় করছো, তাহল কিন্তু
মরেই যাব।
--না কখনওই বলব না।
--আই লাভ ইউ অালভি। (বলেই অালভিকে জড়িয়ে
ধরে কাদতে লাগল)
--আহারে, থাক পাগলী টা কান্না না।
--হি হি হি। আমি তোমার না বাবুনি হই?
--ওহ হ্যা তাই তো। ইয়ে মানে ভুলে গিয়েছিলাম।
--আর কখনও ভুলবানা। আর হ্যা আমি যা বলব শুনবা।
--আচ্ছা। নীল পরীটা।
--এই পান্জাবীটা পড়ে কাল আসবা আমরা ঘুরতে
যাবো, ওকে?
--আচ্ছা পাগলী মেয়ে।
••
[[অবশেষে দুজনে পার্কের একটি বেন্চে বসেছে, হটাৎ
আলভির কাধে মাথা রেখে চোখ বুজে আছে পাগলীটা। কেউ কিছু বলছেনা, চুপ করে রয়েছে শুধু]]
অবশেষে,,,
••
--এই পাগলী চুপ করে আছো কেন?
--তোমার কাধে মাথা রাখতে আমার খুব ভাল
লাগে। কারন তোমাকে খুব ভালবাসি।
--হুম আমিও।
--কি?
--খুব ভালবাসি তোমায়।
--হি হি হি আমিও।
●
শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৫
ফিরে চাই সেই ছেলেটি.
এখন আর "আজিম" আগের মত নদীর কুলে বসে গভীর নিশিতে বাজায়না করুণ সুরের সেই বাঁশি। আগের মত ছেলেটি রহস্য আর হাসি মাতনের কথাগুলো বলেনা। "মনা'র" চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়না সেই বন্ধুদের সাথেও। কয়েকদিন থেকেই নীরব হয়ে গেছে "আজিম " বেছে নিয়েছে একাকীত্ব। তার দিকে দেখলে মনে হয় এই পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখি মানুষটা হয়তো সে।
-
মনে হয় তাঁর এই পৃথিবীতে কেউ নেই। আগে দেখতাম কত রঙ্গের কথা আর গানে মাতিয়ে রাখতো সবাইকে। যেই ছেলেটির বাশির করুণ সুরে মাঝ রাতে কান পেতে থাকতাম। মুগ্ধতায় নিশ্চুপ হয়ে শুনতে থাকতাম তার বেদনা মাখা সুর গুলো। আজ সেই ছেলেটি লোকারণ্যে থেকেও যেন লোকশুন্য কোন ভিন্ন জগতে।
আগে নামাজের সময় সে মাসজিদে নিয়ে যেতো মানুষকে ডেকে। কিন্তু তাঁর আজকে এমন কি হয়ে গেলো যে। সে রাস্তায় বসে সিগারেট টানে মাঝে মাঝে গাঞ্জাও টানে। পথে ঘাটে পড়ে থাকে। একলা নিরিবিলি সারাক্ষণ শুধু ভাবনায় থাকে আর সিগারেটে টান দিয়ে চেয়ে থাকে দুর দিগন্তে।
-
পাড়ার লোকেরা কিছুই বুঝতে পারেনা শুধু হতবাক চোখে দেখে যায় সেই সোনার ছেলেটাকে। বুঝবে কি করে তাঁর যে জীবনে হাজারো স্বপ্ন ছিলো একজন কে নিয়ে সেকি তা কাউকে বলেছে।তাইতো আজ সবার অজান্তেই আজিমের স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে চুর মার হয়ে গেছে। শত আসা আর স্বপ্ন নিয়ে যাকে জীবনে পাওয়ার জন্য এত অবিনয় করে যাচ্ছে আজিম। তা মানুষ কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনা।
-
আসলে আজিমের জীবনের শুধু ভালোবাসা নয় পুরো জীবনটাই ছিলো তাঁর জন্য। তাঁর নাম "রুমা" রুমা'র সাথে আজিমের পরিচয় বহুত পুরোনো। মাদ্রাসার বারান্দায়। আজিম - রুমা তখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রী। এক পথে যাওয়া আসার কারণে আজিম আর রুমা কথা বলতে বলতে বাড়িতে যেতো। কিন্তু তাদের মনে তখন কিছুই ছিলোনা।
-
পড়ার জন্য একে অন্যকে হেল্প করতো একজন মাদ্রাসায় গেলে সে এসে বলতো আজকে এই এই পড়া দিয়েছে। তখন পরদিন মাদ্রাসায় গেলে মার খাওয়ার আশঙ্কা কম থাকতো।
-
এভাবেই তারা ভালো বন্ধু হয়ে যায়। ক্লাস গুনে যতই উপরে উঠছিলো ততই একজন আরেকজনকে জানতে বুঝতে শিখে এখন আর তাদের আগের মত কথা বলা মানায় না। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেও আর কথা বলার সাহস হয়না। কারণ সমাজের মানুষ দেখলে আবার হুজুরদের কাছে বলে দিবে।তখন তারা প্রায় কথা বলতে পারতোনা। আজিম ছিলো একটু অন্য প্রকৃতির ছোট বেলা থেকেই সে ছিলো অগোছালো। তার সব কিছুই ছিলো এলোমেলো। আজিমের বাবা একজন সাধারন কৃষক। বছর জুড়ে পরিশ্রম করে যা পায় তা দিয়েই কোন মতে দিন কাটে তাদের। দশম শ্রেণীতে উঠার পর আজিমের বাবা লেখা পড়া বন্ধ করে দেয় আজিমের। আজিম এখন কি করবে মাত্র ষোল বছর বয়স। বাবা'র সাথে সেও যোগ দেয় কৃষি কাজে।
-
এদিকে আজিমের এমন অবস্থা দেখে অস্থির হয়ে উঠেছে রুমা। কি করতে পারে আজিমের জন্য। আজিমের ছোট বেলা থেকে ব্ন্ধু হওয়ার কারণে রুমা'র বাড়ির সবাই আজিম কে চিনে। রুমা তার বাবাকে বল্লো আজিম কে হেল্প করার জন্য।রুমার বাবা আজিমের বাবা'র সাথে কথা বলে আবার লেখা পড়া করাতে বলে। কিন্তু আজিমের বাবা বলে তারও ইচ্ছা আছে লেখা পড়া করাতে সংসারের এমন অবস্থা দখে তিনি বাদ দিয়ে দেন। রুমার বাবা বলে আপনি ওসব নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমি আপনার ছেলেকে দেখবো। এমন একটা শান্ত শিষ্ট ছেলেকে কে না দেখবে!। আজিম আগের মত লেখা পড়া করতে থাকে। আজিম আর রুমা'র ভালোই বন্ধুত্ব হয়ে যায়।
-
তারা মেট্রিক পরিক্ষা একই সাথে শেষ করে। আস্তে আস্তে আজিম একজন নম্র ভদ্র একজন সামাজিক ছেলে হয়ে উঠে।পরিক্ষার রেজাল্ট আসে আজিম কৃতিত্ব ভরা একটা নাম্বার পায় ( জি পি এ ৫) এই রেজাল্ট দেখে পাড়ার সবাই খুশি। সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছে রুমা'র বাবা। যার টাকা পয়সা দিয়ে আজকে আজিম এত বড় হয়েছে। আজিম ও তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলো।এদিকে রুমা ও আজিম একে অপরের প্রতি ভালোবাসার নজরে তাকায় কিন্তু কেউ কিছু বলেনা।
-
তারা দুজনই আবার মাদ্রাসা অনুযায়ী "আলিম" এ ভর্তি হয়। একদিন আজিম চিন্তা করে তাকে কিভাবে বলা যায়। চিন্তা ভাবনা করে একদিন তাকে এক যায়গায় আসতে বলে।রুমা সময় মতো হাজির হয় সেখানে। আজিম অত্যান্ত লজ্জা নিয়ে বল্লো রুমা আমি তোমাকে ভালোবাসি। রুমা বল্লো আমিও এতদিন তোমার অপেক্ষায় ছিলাম।
-
অতঃপর দুজনের শুরু হয় ভালোবাসার জীবন মাদ্রাসাতে যাওয়া আসা করতো একসাথে গভীর প্রেমে হাবুডুবো খাচ্ছিল দুজন একজন আরেকজন কে ছাড়া থাকতে পারতোনা। কিন্তু এসব ব্যাপার ছিলো এলাকার মানুষের অজানা।
একদিন রুমা বল্লো আমার "বাশির" সুর শুনতে খুবই ভালো লাগে কি যে এক মধুর সুর। সেদিনই আজিম বাজার থেকে একটা বাশি কিনে নিয়ে আসে। কিন্তু বাজাতে জানেনা। রাস্তার মোড়ে বসে সুর হীন বাশিটা বাজাতে থাকে আজিম। আস্তে আস্তে কিছুদিন পর শিখে ফেলে বাশি বাজানো। পুরাপুরি এখন সুর তুলতে জানে সে। তাই গভীর রাতে নদীর পাড়ে বসে সুরের বাশিটা বাজাতে থাকে।খুব সুন্দর লাগতো যখন দুঃখের কোন সুর নিয়ে বাশি বাজাতো মুগ্ধ হয়ে কান পেতে থাকতো রুমা দক্ষিনের জানালায়।ওহ কি মধূর সে সূর।আর নিস্তব্ধ রজনীতে বাশির সুরগুলো শুন্যতায় মিলিয়ে যায়।
-
পরদিন রুমা'র সাথে আজিমের দেখা হয়। আজিম কে ধন্যবাদ দেয় রুমা।আজিম শুধু নিরবে বলে তোমার ভালোবাসার জন্য আমি যেকোন কিছুই করতে পারি। ইতি মধ্যে আজিম লেখা পড়া বন্ধ করে দেয়। কারণ রুমার বাবা দুরে সরতে শুরু করেছে। তার আর ভালো লাগেনা সংসারের এমন অভাব অনটান।কি করবে ঢাকায় গিয়ে কোন একটা কাজে যোগ দেয়।আজিম রুমাকে ফোনে খোজ খবর নিতো।রুমা আজিম কে দেখার জন্য পাগল পারা হয়ে থাকতো সব সময়।আজিমও রুমাকে দেখতে চাইতো কিন্তু কিছুই করার নেই। জীবিকার তাগিদে তাকে ছেড়ে থাকতেই হবে।কিছুদিন পর আজিম বাড়িতে আসে পাড়ার সবাই খুশি।আজ আবার আজিম আগের মত নিস্তব্ধ রজনীতে বসে বসে বাশি বাজাচ্ছে। মন মুগ্ধকরা সেই সুরে রুমা হারিয়ে যেতো স্বপ্নের জগতে।
-
ইতিমধ্যে রুমা'র আলিম ফাইনাল পরিক্ষা। আজিম বল্লো তুমি পরিক্ষা দাও আমি ঢাকা থেকে ঘুরে আসি।আজিম চলে যায়।এদিকে রুমা পরিক্ষা দিয়ে পরিক্ষা শেষ করে।আজিম চিন্তা করে তাঁর জন্য সারপ্রাইজ দরকার তাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে আজিম গিফ্ট কিনে রুমা'র জন্য। রুমা অনেক দিন আজিমকে দেখেনা তাই সে দেখার জন্য পাগল পারা প্রায়। আজিম বলছে আজকে কালকে এভাবে করে করে আসছেনা।ইতিমধ্যে আজিম তাঁর মোবাইলে মেসেজ পায়।
-- আজিম। আমাকে আজ দেখতে এসেছে ওদের আমাকে পছন্দ ও হয়েছে বাবা মা বলছে কথা বার্তা ঠিক হলে বিয়ে দিয়ে দিবে।তমি বাড়িতে আস তাড়াতাড়ি প্লিজ। মেসেজটা দেখে আজিমের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। পায়ের নিছ থেকে মাটি গুলো সরে যাচ্ছে। তাকে যেন আমাবস্যার আঁধারে ঘিরে ফেলেছে।বিশ্বাস করতে পারছেনা সে এমন কথা। তবুও কোন রকম নিজেকে সামলে নিয়ে রিপ্লাই দিলো "আমি আসতেছি" পরদিন আজিম বিষন্ন মনে বাড়ি ফিরে। কিন্তু কি করবে কিছুই করার নেই মনের মাঝে ভিষণ যন্ত্রনা। রুমাকে ফোন দিলো
-- হেলো রুমা কি খবর।
-- আর কি সবার সব কিছু রেডি।
-- তার মানে তার মানে?
-- আগামী সোম ও মঙ্গলবার আমার বিয়ে।
-- তোমার মাথা ঠিক আছে?
-- আমি কি করবো অনেক নিষেধ করেছি কেউ আমার কথা মানতে ছায়না তুমি একটা কিছু করনা প্লিজ।
-- কিভাবে আমাদের যে অবস্থা তাতে তোমাকে সত্যই অসম্ভব আমি কি করবো নিজেও জানিনা।
--সবাই কে সাহস করে বল!!
-- কি বলবো থাক বাবু মনের ব্যাথা নিয়ে দুজন কে দুদিকে যেতেই হবে।
-- আমার কিছুই করার নেই
-- আমারও নেইইইইই।
-
লাইন কাটতেই হু হু করে কেঁদে উঠলো আজিম। রুমার ও একই অবস্থা দুজন দু প্রান্তে কান্দে আর সেই কান্নার ধ্বনি লোকারণ্যের আড়াল হয়ে শুন্যে মিলিয়ে গেলো।মনের হাহাকার নিয়ে আজিমের জীবন বিগ্ন ঘটতে শুরু করে।নিরবতার দীর্ঘ শাঁসে কাঁদছে তাঁর জীবন আকাশের স্বপ্নগুলো। জোৎনা মাখা সেই চাঁদটাও যেন আজ তাদের দুঃখে দুঃখী হয়ে লুকিয়ে যায় মেঘের আড়ালে।
-
ঐ নীরব রজনীতে এখন ভেসে আসেনা মুগ্ধ করা সেই বাসীর সুর। এখন আর আগের মত নির্ঘুম চোখে কান পেতে থাকিনা সেই সুরের অপেক্ষায়। আজ এই সমাজের মানুষগুলোও তাকে নিয়ে হতাশ। যেই সমাজের মানুষদের ছেলেটা মাতিয়ে রাখতো সেই ছেলেটাই আজ পাল্টে গেছে।পড়ন্ত বিকেলে নদীর কুলে বসে আগে যে ছেলেটা গানের সুর তুলতো।সেই ছেলেটা নদীর কুলে বসে চোখের জ্বলে ভেসে যাচ্ছে।গাল বেয়ে পড়া কয়য়েক ফোঁটা জ্বল গড়িয়ে সবুজ ঘাঁসের আড়াল হয়ে যাচ্ছে।
-
রাতের আকাশে জ্বলে উঠা হাজার নক্ষত্র মিটি মিটি হেসেও তার ব্যাথা ভুলানোর ব্যার্থ চেষ্টা করছে।কোন কিছুতেই যেন তাঁর শান্তি নেই। পৃথিবীটা তার জন্য মনে হচ্ছে একটা অশান্ত কারাগার। এদিকে রুমার বিয়ের দিনও এগিয়ে আসছে।আর ঐ দিকে সোনার ছেলেটা ধুঁকে ধুঁকে মরছে। নিঃস্ব অসহায় আজিমের শরীরটা অনেক ভেঙ্গে পড়েছে। তার মা বাবাও কিছু বুঝতে পারেনা ছেলেটির কথা। কোন ভাবেই সে পরিত্রাণ পাচ্ছেনা নিঃশব্দ এই বেদনা থেকে।
-
সকল কিছু শেষ হয়ে আজ রুমা'র গায়ে হলুদের রাত। বন্ধুরা বল্লো অনেকদিন বাঁশিটা পড়ে আছে। চল্ আজকে একটু বাশি বাজা!। অনেক সাধের সেই বাঁশিটা হাতে তুলে নেয় আজিম রাতের অন্ধকারে চলে যায় নির্দিষ্ট স্থানে।কিন্তু বাজানোর জন্য গায়ে শক্তি নেই জীর্ণ শির্ণ হয়ে গেছে তাঁর শরীরটা।তবুও বহু কষ্টে বেদনা মাখা একটা সুর তুল্লো আজিম।তা এতটাই করুন ছিলো যে পাশের বন্ধুরাও কেঁদে দিয়েছে।এখনো হলুদের আসরে বসা রুমা বসে বসে বারবার চোখের জ্বলে ভেসে যাচ্ছে আত্মীয় স্বজনেরা ভেবেছে সব মেয়ে বিয়ের আগে কাঁদে রুমাও তার ব্যাতিক্রম নয়।
-
কিন্তু না এযে সে একজনকে হারনোর বোবা কান্না। হাতে মেহেদী লাগাচ্ছে রুমার আর অমনি শুনতে পেলো দিগন্ত থেকে ভেসে আসা সেই করুণ সুর। টপ টপ করে চোখ বেয়ে জ্বল নেমে আসলো রুমা'র। এই যে তাঁর চেনা বাশির সুর। সে যেন শুনছে তাঁর মনের কুটিরে বসে থাকা মানুষটি তাঁকে সুরে সুরে ডাকছে। সেই ভাষা বুঝবে কয়জন। রুমা হউ মাউ করে কেঁদে উঠে হাতের মেহেদী ধুয়ে ফেলে।চলে যায় হলুদের আসর ছেড়ে। ওদিকে করুণ সুরে এখনো ডেকে যাচ্ছে
-
আজিম।রাতের নীরবতার আড়ালে বাশির সুরটা দিগন্তে মিলিয়ে যাচ্ছে। ক্লান্ত শ্লান্ত শরীর নিয়ে রাতে ঘুমিয়েছিল আজিম। হটাত কোন এক খটকা শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় ওহ বেলাতো অনেক হয়েছে।বন্ধুরা সবাই এসেছে।
-- কিরে তুই বিয়েতে যাবি না?
--নারে তোরা যা
-- আরে বেটা চল তারে শেষ বারের মত দেখে আয়?
-- নারে ও যদি আমারে দেখে হয়তো বিয়ের আসর ভেঙ্গে যাবে।আর আমি চাইনা ওর বিয়েটা ভেঙ্গে যাক।
-- কি বলচিস কিছু হবেনা চল!
-- কিন্তু কিভাবে না কলিজা মানবে নারে।ওওওওওহহ
-- তুই না গেলে পাড়ার সবাইকে বলে দিবো তুই যা করতেচিস সব রুমা'র জন্য।
-- তোদের পায়ে ধরি আচ্ছা আমি যাবো চল। কিন্তু গিফ্ট কোথায়
-- গিফ্ট আমরা কিনেছি সবাই মিলে এটা দিবো চল্
-- ওকে আমি ফ্রেশ হয়ে আসি
-
আজিম বন্ধুদের চেঁচামেছিতে পড়ে যেতে হলো তবে কিছুই খায়নি তাকেও দেখতে যায়নি। শুধু বিয়ের আসরটা এক নজর দেখে আসলো।খুব শিঘ্রই বেরিয়ে এসে বাড়ির অদুরেই রাস্তার পাশে বসে পড়লো। কিছুক্ষণ পরেই রুমাকে নিয়ে যাবে। গাড়িটা চলে এসেছে রুমাকে কেউ একজন কোলে করে গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল। আর রুমা'র আর্ত চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে।
-
আজিমের এতদিনে অশ্রু শুকিয়ে যাওয়া চোখেও পানি চলে আসলো গাড়িটির পানে চেয়ে দু চার ফোটা জ্বল গড়িয়ে হারিয়ে গেলো সবুজ ঘাঁসের ডগায়। আর থাকতে পারেনি সেখানে চলে এসেছে।এরপর থেকে আজিম এখনো অগছালো। পায়নি ফিরে আর হারানো দিন গুলো। সমাজের মানুষের অজান্তেই রয়ে গেলো আজিমের হাজারো স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়ার কথা।আজো সমাজ ফিরে পেতে চায় সেই আজিমকে যে ছিলো একজন সমাজের গর্বিত সন্তান। সমাজ ফিরে চায় তাকে যে ছিলো সমাজের একজন আদর্শ সন্তান ও সকল ছেলেদের জন্য আদর্শ।
**---**--**--*↓
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)