এই যে ভাইয়া শুনছেন?
.
- চায়ের দোকান থেকে ইমরান পেছনে ফিরে! জী, আমাকে বলছেন?
-হ্যা,আপনাকেই বলছি।
.
- (ইমরান ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
আপনি এতো রাতে একা এখানে?
- হ্যা, কিন্তু আপনি কোথায় যাচ্ছেন? ( মেয়টির প্রশ্ন)
- ঘুরতে গিয়েছিলা, এখন বাসাই ফিরছি!
- ওহ, একটা কথা ছিলো
.
-কি বলবেন বলেন, আমার তাড়া আছে
- এইটা কি আপনার গাড়ি?( পাশে)
.
- হ্যা। কিন্তু কেন? আর আপনার হাতে ওইসব কি?
.
- এগুলো রক্ত,
- রক্ত কেন?
.
আসলে কিভাবে বলব বুজতে পারছিনা। (উত্তেজিত কন্ঠে)
.
- আপনি এতো উত্তেজিত হচ্ছেন কেন? শান্ত হন! আর কি হয়েছে খুলে বলুন?
.
- আসলে আমার একটা বড় বিপদ হয়েগেছে,! ( কান্না কন্ঠে)
- কি বিপদ! খুলে বলুন!
- আমার ছোট ভাইয়াটার গত কয়েক দিন আগে ক্যান্সার রোগ ধরা পড়েছে. আর কাল রাতে তার শরিরের ভিবিন্ন অংশ দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়েছিল।।
ডাক্তার বলেছিলো আজ রাতে ৩:০০ টার ভেতর রক্ত জোগাড় করে অপারেশন না করলে মারা যেতে পারে।
কিন্তু দেখুন রক্ত জোগাড় করেছি ঠিকই কিন্তু হসপিটাল যাওয়ার জন্য গাড়ি পাচ্ছিনা। এখন কি করি ভেবে পাচ্ছিনা। ( মায়া কন্ঠে)
.
- কোন হসপিটাল?
-.................... এই।
.
.
-ইমরান ঘড়ির দিকে তাকালো, তখন রাত ১: ০৫ মিনিট.. ( oh my God) অপারেশনেরতো আর বেশিক্ষন বাকি নেই) আর................. এই হসপিটালতো এখান থেকে অনেক দূর, প্রায় ১ ঘন্টা ২৫ মিনিটের রাস্তা। আর আমার বাসার উল্টো দিকে!
.
- হ্যা। কিন্তু দেখুন রাস্তায় একটা গাড়িও নাই। মনে হই আমার ভাইয়াটাকে বাঁচাতে পারবোনা।।। ( গভির কান্নার কন্ঠে)
-
- ইমরান ভাবছে,( এতো রাতে একা, এই দিকে মেয়েটি সেই কখন থেকে কান্না করতেছে,।
খুব মায়া হচ্ছে তার, লিপ্টটা দিলে হইত একটা জীবন বাঁচবে!)
-
- কি ভাবছেন?
- কিছুনা, চলুন!
-কোথায়?
- হসপিটাল যাবেন্না?
-হ্যা! কিন্তু কিভাবে?
- কিভাবে আবার আমার গাড়িতে করে!
- সত্তিই?
-হ্যা,গাড়িতে উঠুন।...
...
...
...
...
...
...
অতঃপর কিছুদুর যাওয়ারপর।
সত্তিই আপনার এই উপকারের কথা আমি ভুলবনা।
- আরে নাহ কি বলেন,এটা আমার কর্তব্য, মানুষ হিসেবে মানুষকে সাহায্য করবেই এটাই স্বাভাবিক..
.
- সত্তিই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!
-আপনার নাম কি?
- ইমরান! আপনার???
- আমার নাম- নাদিয়া।
- অহ,
- ভাইয়া একটা কথা!
- কি কথা?
- সামনের বাজারে আমার কিছু আত্মীয় আছেন, ওরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে, আপনি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে উনাদের কে আপনার গাড়িতে করে নামিয়ে দিবেন?
- কিছু মনে করার কি আছে! অসুবিধা নেই
-
-
- দুই মিনিট পর নাদিয়া ফোন করে তাদেরকে রাস্তার পাশে এসে দাঁড়াতে বলে,& কালো মাইক্রো দেকলে হাতের ইশারা করতে বলে!...
.
.
এর কিছুক্ষণ পর বাজারে এসে গাড়ি থামে,
আর গাড়ি থেকে মাত্র কয়েক ফিট দূরে কয়েকজন লোক যেন কিসের জন্য অপেক্ষা করছিলো।
.
নাদিয়া দেখেই আর চিনতে বাকি রইলনা এরাই তার আত্মীয়, ( যেহেতু সে সামনেই বসা ছিলো)
-
.
অতঃপর নাদিয়া গাড়ি থেকে নেমে
অই লোক গুলো হাতের ইশারায় গাড়ির নিকট আসতে বলে।
.
- ইতিমধ্যে ইমরান ও ড্রাইভিং শিট থেকে নেমে নাদিয়া মেয়েটির পাশে এসে দাঁড়ায়!
.
- লোক গুলো কাছে আসা মাত্রই
( কি রাফিসা এতক্ষন লাগছিলো কেন?)
-
- ওপ্স! আর বলিয়েন্না
রাস্তায় একটা গাড়িও নেই, কিছুক্ষণ পর পর যা কয়েকটা আসছিলো তারাও যেতে বিমত,
!
অবশেষে এই ভাইয়াটার দেখা পেলাম,
আর বিষয়টা পুরোপুরি খুলে বললাম!
তিনিও বিষয়টি বুঝে লিপ্ট দিতে রাজি হলেন।
,- বাই দ্যা ওয়ে, ওনার নাম " ইমরান"
- সবাই সালাম জানালো " ইমরানকে"
.
ইমরান ভাইয়া ওনার নাম -( কাদের) পাশের জন রফিক, আর ইনি দেলোয়ার,!
-
- সবাই একে অপরের সাথে পরিচিত হলো!
- এই রাফিসা আমাদের এখান দেরি করা ঠিক হবেনা, আমাদের বরং যাওয়া উচিৎ,
.
- ঠিক! চলুন যাওয়া যাক( ইমরান)
.
.
.
রাত ২:১১
নিস্তব্ধ পরিবেশ,
পাহাড়িয়া আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার দুই ধারে পাহাড়,, জন শুন্যহীন জায়গা, কোথায় মানুষের বসবাসের চিহ্ন নেই, মাঝে মধ্যে দু একটি নাইট বাস, আর ঝি ঝি পোকার ডাক, ইমরানের মনে ভয় একটু ভয় জন্মাচ্ছিল
।
.
. - ইমরান সাহেব কি ভাবছেন?
- তেমন কিছুনা! ছোট্ট একটা কথা!
.
-বলুন কি কথা!
- আচ্ছা আপনারা নাদিয়াকে রাফিসা বললেন যে?
- হ্যা ওর না.......
- , আসলে ওরা আমাকে আদর করেই রাফিসা বলেই ডাকে ( নাদিয়া কথা কাটালো)
.
. ওহ
.
- ভাইয়া পানি খাবেন? ( দেলোয়ার)
- না! তেষ্টা পাইনি!
- অহ!
- ইমরান সাহেব আপনি smoke করেন?( মাঝ বয়সি রফিক নামের লোকটা)
- হ্যা! তবে মাঝে মাঝে!
- খাবেন নাকি একটা? বিদেশি কিন্তু ( রফিক)
.
- ওহ! খাওয়া যায়.
- এই নিন বলেই রফিক সিগারেটের পেকেট থেকে একটা সিগারেট ইমরানের দিকে বাড়িয়ে দিলো।
- ইমরান হাসি মুখে গ্রহন করে!
- লাইটার টাও বাড়িয়ে দিলো ( কাদের)
- সিগারেটে আগুন দিয়ে " একটা শুকটান দিলো! (ইমরান)
- কেমন ইমরান সাহেব? ( দেলোয়ার)
- হুম, বেশ!
.....
..
...
...
....
.....
....
চারদিকে পাখির ডাক, হালকা রোদের আলো আর সকালের ঠান্ডা বাতাসে ইমরানের ঘুম ভাঙল. অবশ্য এটা ঘুম কিনা সন্দেহ!
- ইমরান চোখ কচলাতে কচলাতে কি আপনারা সবাই কোথায় গেলেন? নাদিয়া আপনার ভাইয়ার কি অবস্থা?
- কিন্তু কারো সাড়াশব্দ নেই!
- কি হলো কথা বলছেন্না কেন?
- কিন্তু কারো শব্দ নেই
চোখ মেলেই দেখে সে পাহাডের অনেকটা নিছের একটা গাছের মুন্ডির সাথে আটকে আছে!
ইমরান ভয় পেয়ে উঠে দাড়ানোর চেস্টা করে কিন্তু না কোন ভাবেই পারছেনা!
ইমরান লক্ষ্য করল তার ডান পায়ের হাটু থেকে এখনো হালকা রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে।।
আর মাথার পেছন থেকে হালকা রক্ত গাড় দিয়ে বেয়ে পড়ছে!!!!
.
.
ইমরানের আর বুঝতে বাকি রইলনা ওরা ছিলো ব্ল্যাক মেইল পার্টি, আর তারা সিগারেট কে তাদের প্রধান হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করেছে।
.
.
- সমাপ্ত
.
.
বিঃদ্রঃ- কাউকে সহজে বিশ্বাস করা ঠিক না,।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন