>আচ্ছা তুমি এমন কেন?
>কেমন?
>কেমন বোকা বোকা?
>আমি এমনি
>আচ্ছা তুমি আমায় বিয়ে করেছো কেন?
>তোমাকে দেখে ভাল লেগেছিল তাই
>তুমি আমাকে ভালবাস?
>ভাল না বাসলে বিয়ে করতামনা
>তাহলে রাত্রে ঘুমানোর সময় অন্য দিকে মুখ ফিরে ঘুমাও কেন?
>তাহলে কিভাবে ঘুমাবো?
>যাও বাসা থেকে যাও
>কই যাবো?
>কই যাবা মানে?দোকানে যাও,আর আমার জন্য
দোকান থেকে চটপটি,ফোচকা,হালিম সবকিছু নিয়ে আসো।
>এত রাত্রে এগুলা কোথায় পাবো?
>কোথায় পাবা মানে?যেখান থেকে পারো নিয়ে আসবা,
যদি না আনতে পারো,রাত্রে বাসায় ডুকতে দিবোনা।
>তাহলে রাত্রে থাকবো কোথায়?
>ঐ যাবা?না.........
>ওকে যাচ্ছি।
নাহ এই ভিতুর ডিম ছেলেকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।
যা করার আমাকেই করতে হবে।
~~~~
~~~~
আমি অত্তন্ত হিংসুটে,রাগী আর লুতুপুতু টাইপের একটা মেয়ে।
জীবনে কখনো প্রেম করিনি,আর আমার মত
একটা অশান্ত মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে
কোন ছেলে তার গাল নষ্ট করবে।
বিয়ের আগ পর্যন্ত অনেক গুলো ছেলেকে
প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার কারনে থাপরিয়েছি।
কিন্তু কেন যে এই আন রোমান্টিক
ভিতুর ডিম ছেলেটাকে বিয়ের জন্য
হ্যা বলে দিয়েছিলাম,আমি নিজেই
এর কারনটা খুজে পাচ্ছিনা।এখন মনে হচ্ছে
জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা করেছি
এই ভিতুর ডিম ছেলেটাকে বিয়ে করে।
বিয়ের আগে ভাবতাম যে,আমার বর আমাকে
নিতে আসবে সাদা ঘোড়ায় চড়ে রাজপুত্রের মত।
বাসর রাতে আমরা দুজন এক সাথে
আকাশের চাঁদ দেখবো,সে আলতো করে
আমার হাত স্পর্শ করবে,আমি তখন
লজ্জায় লাল হয়ে যাবো।বাসর রাতে
তার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যাবো,
সারা রাত সে আমাকে নিয়ে বসে থাকবে।
বাসর রাতে সে আমার জন্য অনেক গুলো চূড়ি
নিয়ে আসবে।সে গুলো আমার হাতে
পড়িয়ে দিবে আর বলবে আই লাভ ইউ।
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি নীরা।
কিন্তু সব কিছুই হল এর ঠিক উল্টো।
বিয়ের দিন আমার কাছে এমন মনে হল যে,
এই বাড়ি থেকে কনে নয় যেন লাশ যাচ্ছে।
বিয়ের দিন রাত্রে বাসর ঘরে বসে আছি।
রাত প্রায় ১টা বেজে গেছে কিন্তু আমার
বর মানে নিলয়ের আসার কোন খবর নেই।
কিছুক্ষণ পরে দেখলাম দুই তিনজন বন্ধু
ঠেলে ঠুলে বাসর ঘরে ঢুকাচ্ছে নিলয়ে কে।
যাক অবশেষে বাসর ঘরে এন্ট্রি হল বরের।
আমি খাট থেকে নেমে গিয়ে সালাম করলাম।
বিয়ের আগে বাসর রাতে স্বামীর সাথে
এটা করবো ওটা করবো কত প্ল্যান
করে রেখেছিলাম,কিন্তু সব প্ল্যানে জল ঢেলে দিয়ে
নিলয় বলল,সারাদিন তোমার উপর দিয়ে
অনেক ধকল গেছে তাই আজকে ঘুমিয়ে পড়।
আজকে বিয়ের ৫দিন হল কিন্তু এখন পর্যন্ত
নিলয় আমাকে একটি বারের জন্য স্পর্শ করেনি।
তাই আজকে সিদ্ধান্ত নিলাম সব গল্পে
রাজ কন্যাকে নেওয়ার জন্য রাজ পুত্র আসে।
আমার গল্পে না হয় রাজ কন্যা আসবে
রাজ পুত্রকে নেওয়ার জন্য।
~~~~
~~~~
নিলয় বাসা থেকে বের হওয়ার পর
তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ১০১টা
মোমবাতি জ্বালালাম রুমে।মোমবাতি
জ্বালাচ্ছি আর ভাবছি আমি যে দস্যি মেয়ে
কখন না জানি বাসায় আগুন ধরিয়ে দেই।
তখন স্বামীর সাথে প্রেম না করে প্রেম
করতে হবে ফায়ার সার্ভিসের পানির সাথে।
রাত প্রায় ২টা বাজে এখনো বাসায় আসছেনা নিলয়।
আমার সারপ্রাইজের মোমবাতি গুলো
নিভে গেছে অনেক আগে,ফোনটাও করতে পারছিনা,ফোনটা
রেখে গেছে বাসায়।চিন্তায় অস্থির হয়ে গেলাম আমি।
একা একা বসে থাকতে আর ভাল লাগছেনা,
তাই একটা কফি বানিয়ে বাসার বারান্দায়
বসে খাওয়ার জন্য বের হলাম।বারান্দায়
এসে দেখি নিলয় মাথা নিচ দিকে
দিয়ে বসে আছে।আমাকে দেখে উঠে দাড়ালো নিলয়।
>দরজা নক না করে এখানে বসে আছো কেন?জানো কত চিন্তা হচ্ছিল তোমার জন্য?
>তুমিইতো বলেছিলে যদি ফোচকা,হালিম না আনতে পারি বাসায় ডুকতে দিবেনা তাই আর নক করিনি।
আমি আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলামনা
জড়িয়ে ধরলাম নিলয়কে।
>তুমি কি বুঝতে পারোনা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি?
>আমি জানি নীরা তুমি আমায় অনেক ভালবাস
>তাহলে আমাকে এড়িয়ে চল কেন?
>যখন ছোট ছিলাম,তখন দেখতাম
আমার মা আমার বাবার সাথে অনেক
ঝগড়া করতো,কখনো তারা হাসি খুশি ছিলনা,
তাই একদিন আমার বাবা মা`কে ডিভোর্স দিয়ে দিল,
তখন থেকে আমার মনে একটা ধারণা
জন্ম নিল যে,সব মেয়েরাই বোধহয়
তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে তাই
কখনো তোমাকে স্পর্শ করার সাহস হয়নি আমার,
কিন্তু বিশ্বাস কর নীরা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।
>আমিও তোমাকে এই কয়েক দিনে
অনেক ভালবেসে ফেলেছি নিলয়,আমি কখনো
তোমার সাথে ঝগড়া করবোনা,কিন্তু
আর কখনো আমাকে এড়িয়ে চলবেনাতো?
.
এখন আর কথা বললনা নিলয়,আমাকে
জড়িয়ে নিল তার বুকের মাঝে।
আমিও সাড়া দিলাম নিলয়ের ডাকে।
যখন কোন মানবের ডাকে মানবী সাড়া দেয়
তখন তার মাঝে একটা অজানা অদ্ভূত অনুভূতির সৃষ্টি হয়,যা বোঝানো যায়না কাউকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন