মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৬

স্বামী স্ত্রীর খুনসুটি

নতুন বিয়ে করেছি মনের সুখে সকাল
বেলা ঘুমিয়ে আছি---
:
আফিয়া>>এই যে সাহেব ঘুম থেকে ওঠার
বুঝি সময় হয় নাই আপনার? ওঠেন বলছি। ,
আমি>> হায় হায়!! বলে কি? এই শীতের
সকালে কেউ ঘুম থেকে
ওঠে,!
,
আফিয়া >> শুধু ঘুম থেকে ওঠা না গোসল ও
করতে হবে তোমাকে,
,
আমি>> গোসল!! এই শীতের সকালে গোসল
আমার দ্বারা সম্ভব না,(কাপতেঁ কাপতেঁ) ,
আফিয়া>> কাঁপা কাঁপি করে লাভ নাই
গোসল করতেই হবে,
,
আমি>> দোস্ত একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দাও
না!
,
আফিয়া>> কিসের দোস্ত ??? আমি এখন
তোমার বিবাহ করা স্ত্রী,মানে বউ। দোস্ত
মোস্ত বলে পাম দিয়ে কাজ হবে না,দোস্ত
আগে ছিলাম এখন না।
,
আমি>>ওহ পুরানো অভ্যাস তো তাই মুখ
ফস্কে বের হয়ে গেছে,তবে দোস্ত ডাকার
মাঝে একটা ভালবাসা আছে,
,
আফিয়া >> হুম,,এই এখন ওঠো,অনেক বাজে
চেম্বারে যেতে হবে না? গোসল করে ফ্রেশ
হয়ে নাও
,
আমি>> একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দাও না
সোনা বউ আমার,
,
আফিয়া >> ন্যাকামি বাদ দিয়ে
ওঠো,গোসল করে,ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে
আসো খাবার রেডি করছি আমি,
:
(এই বলে ৩২ খানা দাঁত বের করে রুম থেকে
চলে গেলো।
আমি অবুঝ বালকের ন্যায় চিতফাটাং হয়ে
শুয়ে আছি।
কিছুক্ষন পর পাগলি টা আবার রুমে প্রবেশ
করলো )
,
আফিয়া>> এই যে জাহাপানা আপনার
উঠতে হবে না?
,
আমি>> না ওঠবো না,তাহলে একটু আদর করে
দাও,সুন্দর করে মাথায় হাত বুলিয়ে দাও!! ,
আফিয়া>>পাগলা টাকে নিয়ে আর পারি
না,সেই প্রথম পরিচয় হতে পাগলামি করেই
যাচ্ছে পাগলামী তো ছাড়ছেই না,বরং
দিন দিন পাগল আরো বেশি হচ্ছে। ,
আমি>> আমি আর আজ ওঠবো না,সারা দিন
ঘুমিয়েই থাকবো,
,
আফিয়া>> আমার পুসকু বাবু একটা,এই তো
তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি,অনেক
আদর করে দিচ্ছি,এই বার ওঠো উঠে গোসল
করে, ফ্রেশ হয়ে নাও কেমন,
:
:
--------ওঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে
চেম্বারে চলে গেলাম,আজ রোগী দের
ভীষন ভিড় চেম্বারে,কাজ করে বাসায় চলে
গেলাম,রাত তখন ১ টা ২৭,পাগলী টা বলে
ছিল ১২ টার আগেই বাসা তে
ফিরবা,পাগলী টা চেম্বারে থাকা কালীন
বার বার ফোন দিয়েছে আজ,নামাজ পড়েছি
কি না? সময় মত খেয়েছি কিনা? সব খেয়াল
ই নেয়,মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগলেও,ভালো
লাগার পরিমান টাই বেশি-------
"
যাই হোক কাজ ছেড়ে মাঝ রাতে বাড়ীতে
গেলাম,যাবার সময় রাস্তার পাশে সালাম
মামার দোকান থেকে ১০ টাকার ঝাল মুড়ি
নিলাম,কারন ঝাল মুড়ি পাগলি টার খুব
পছন্দের এটা দিয়েই রাগ টাকে ম্যানেজ
করবো আজ,
"
কলিং বেলের কিরিং কিরিং
,
আফিয়া>>কি এখন আসার সময় হলো বুঝি
আপনার?ভিতরেই ডুকতে দেবো না আজ যাও
বাহিরেই থাকো,(অভিমানী কন্ঠে) ,
আমি>>দেখো বাবু তোমার জন্য আমি কি
নিয়ে এসেছি,সোনা দানা,হীরা মানিক
কিছুই না এই সামান্য ঝাল মুড়ি!!
(রোমান্টিক ভাবে পেশ করলাম) আফিয়া>>
হি হি হি তারছেড়াঁ একটা,যাও এবার রের
মত মাফ করলাম,তো এত দেরি হল কেন আজ?
,
আমি>> না মানে ইয়ে আজ রোগীর খুব ভীড়
ছিল,শীতকাল তো তাই
,
আফিয়া>> থাক আর বলতে হবে না,কি
আমার জনদরদী!! নিজের বউ এর প্রতি তো
কোন খেয়াল ই নেই,না খেয়ে সারা রাত
তোমার জন্য বসে আছি,
,
আমি>> পাগলী আমার একটা, চলো আজ
তোমাকে খাইয়ে দেবো,
:
------পাগলী টাকে খাওয়া য় দিলাম আর
নিজেও খেয়ে নিলাম, সারা টা দিন খুব
পরিশ্রম করেছি শরীর টা খুব ক্লান্ত
লাগছে,বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম ,
আফিয়া>> তামিম ওঠো না,চলো ছাদে
যাই,আমার ছাদে যেতে ইচ্ছে করছে,ছাদ
আমার খুব ভালো লাগে,ওঠো না
,
আমি>>কি?? এই শীতের মধ্যে ছাদে!! আর
আমি খুব ক্লান্ত ভালো লাগছে না আমার,
চুপ করে ঘুমিয়ে পড়ো,
,
আফিয়া>> এই তামিম ওঠ না প্লিজ,চলো
ছাদে যাই,বিয়ের আগে তো খুব বলতে ? দুই
জনে ছাদে বসে গল্প করবো,তুমি আমার
কাধে মাথা রাখবে আর আমি মাথায়
আলতো করে হাত বুলিয়ে দেবে, এই সব কি
ভুলে গেছো?? ভুলে তো যাবেই তুমি
আমাকে ভাল ই বাসো না,
,
আমি>>ন্যাকামি ভালো লাগছে না বললাম
না যাবো না (ধমক দিয়ে)
,
--------পাগলী টা কান্না করতে করতে চলে
গেলো,
একটু পর মনের ভিতর নাড়া দিয়ে ওঠলো
পাগলী টাকে মনে হয় শুধু কষ্ট দিলাম,আমার
জন্য না খেয়ে বসে ছিল কত ক্ষন আর আমি
ধমক দিলাম,,
:
আফিয়া কে খুজতে খুজতে ছাদে চলে
গেলাম,
আফিয়া ছাদের এক কোনে ফুলের টপের
কাছে বসে আসে আর কান্না করছে,
আমাকে দেখেই মুখটা ঘুড়িয়ে নিল,উনি যে
খুব অভিমান করছে তা আর জানতে বাকী
নেই,
আমি>> এই বাবু কান্না করে না এই তো
আমি ছাদে এসেছি,
আফিয়া>> তুমি কেন ছাদে এসেছো যাও
চলে যাও,লাগবে না আর আমাকে তুমি
তোমার চেম্বার নিয়েই থাকো,তুমি
আমাকে একটু ভালোবাসো না (এক
নিঃশ্বাস এ)
,
আমি>> কে বলেছে আমি তোমাকে
ভালবাসি না!! এত্ত এত্ত ভালবাসি
তোমাকে,
আফিয়া>> তাহলে কান ধরো,আর বলো আর
কখনো আমাকে ধমক দিবা না।
,
আফিয়া>> কান ! থাক না কান ধরা,এবারের
মত মাফ করে দাও,
,
আফিয়া>> কোন মাফ হবে না,
,
আমি>> কান ধরলাম (ভ্যাগিস আশে পাশে
কেউ নেই)
,
আফিয়া>>এখানে আসো পাশে বসো,
তোমার কাধে মাথা রাখবো এখন, আমি আর
তুমি গল্প বলবে,আর আলতো করে মাথায়
হাত বুলিয়ে দিবে,
------পাগলী টা কাধে মাথা রেখে--- ,
আফিয়া>> তামিম আমি তোমার কাধে
আজীবন ই মাথা রাখতে চাই এই ভাবেই
পার করে দিতে চাই আজীবন,আমায় ছেড়ে
কোথাও যাবা না তো?(চোখে পানি) ,
আমি>>আরে পাগলী কান্না করে না,দুর
পাগলী একটা,তোমায় ছেড়ে কোথায় যাবো
আমি?এখন তো আমরা স্বামী স্ত্রী আর
হারানোর ভয় নাই।
,
আফিয়া>> কান্না করি না তো,জানো
তামিম তোমার কাধে মাথা রেখে যে সুখ
টা পাই তা আর কোথাও পাই না,সুখে ও
অনেক সময় চোখে পানি আসে,
:
কাধে মাথা রেখেই কথাথা বলতে বলতে
ঘুমিয়ে পড়েছে পাগলী টা,অপলক দৃষ্টি তে
তাকিয়ে আছি পাগলী টার দিকে,কুয়াশা
ভেজা রাতে,এক দম পরীর ন্যায় লাগছে
আফিয়া কে,তারপর কোলে করে রুমে নিয়ে
গিয়ে পাগলী টাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে
আমি ঘুমিয়ে গেলাম
:
:
স্বামী স্ত্রীর এই রকম মান অভিমান,ছোট্ট
ছোট্ট খুনসুটি খারাপ না ভালোই
লাগে,প্রতিটি দম্পত্তির মাঝেই থাকুক
মান অভিমান আর টুকরো টুকরো দুষ্ট মিষ্টি
ঝগড়া আর ছোট্ট বাবু দের মত পাগলামি
করা কিছু আবদার আর খুনসুটি। ,
জয় হোক পৃথীবির সকল ভালবাসার

৩টি মন্তব্য: