আমি যখন ছোট ছিলাম,মানে হাইস্কুল টাইমে সবসময় হাফপ্যান্ট পড়তাম।
ফুলপ্যান্ট খুব একটা পছন্দ ছিল না আমার।
বেশিরভাগ সময়ই থ্রি কোয়ার্টার কিংবা হাফ প্যান্ট পড়ে থাকতাম।
আমি যখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি তখন আমাদের পাশের বাসায় একটা মেয়েকে দেখতে পাই।
নতুন ভাড়া এসেছিল,প্রথম বারেই মেয়েকে দেখে যা বুঝেছিলাম,,তা এই যুগের ক্রাশ......
আমি প্রতিদিন ফুটবল প্র্যাকটিসে যাওয়ার সময় মেয়েটাকে দেখতে পেতাম।
মেয়েটাকে দেখেও আমি না দেখার ভান করে চলে যেতাম,কারণ,,যদি দেখে আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি তাহলে কি না কি ভাববে........
তাই আমি প্রতিদিন আড়চোখে দেখতাম মেয়েটাকে।
তবে মেয়েটিকে এতদিন লক্ষ্য করে বুঝেছিলাম যে মেয়েটা একটু চঞ্চল প্রকৃতির তবে কেউ সহজে ব্যাপারটা বুঝতে পারবে না।
.
একদিন ফুটবল প্র্যাকটিস শেষ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি মেয়েটা আমাদের বাসায়।
আমি অন্য কোনো দিকে খেয়াল না দিয়ে চুপচাপ বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আম্মুর কাছে গেলাম।
আম্মুকে আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করলাম,
:এই মেয়ে আমাদের বাসায় কেনো???
:মেয়ে মেয়ে করিস না তো।ওর নাম রাহি,আর ও তোর ক্লাসেই পড়ে (আম্মু)
:আমার ক্লাসে পড়ে ভালো কথা,কিন্তু আমাদের বাসায় ক্যান??
:ওর আব্বু এখানে বদলি হয়েছে,আর ও এখনো কোনো স্কুলএ ভর্তি হয় নি,আর ওর বইগুলোও আনে নি।
:তাই আমি কি করবো???
:তোর কিছু বই ওকে দে,,পড়ে আবার দিয়ে যাবে।
:কিন্তু...........
:কোনো কিন্তু না(একটু রাগী সুরেই বলল আম্মু)
.
তাই আমিও কথা বাড়ালাম না।চুপচাপ রুমে গিয়ে বুকসেল্ফ থেকে অন্য একসেট বই বের করলাম।
কারণ,সবসময় আমার আব্বু এক্সট্রা বই এনে রাখে আমার জন্য।সেইগুলো যখন মেয়েকে মানে রাহি কে দিতে গেলাম,তখনই মেয়েটা বলে উঠলো,
:এই যে মিস্টার হাফপ্যান্ট,কেমন আছেন???(রাহি)
:কি!!!!কি বললেন??(আমি)
:কেনো??কানে কি কম শুনেন নাকি??(রাহি)
:আপনি আমাকে হাফপ্যান্ট বললেন ক্যান??(আমি)
:আসলে,প্রতিদিন হাফপ্যান্ট পড়া দেখি তো,, তাই.....(রাহি)
:হইছে,হইছে এখন বইগুলো নিন আর ভাগেন(আমি)
:আচ্ছা,মিস্টার হাফপ্যান্ট আপনি কখনও ফুল প্যান্ট পড়েন না??(রাহি)
:আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে যে আমি স্কুলেও হাফপ্যান্ট পড়ে যাই!!!আর কিসের মিস্টার হাফপ্যান্ট লাগাইছেন???আমার একটা নাম আছে,বুঝতে পারছেন??(একটু রাগী ভাব নিয়েই বললাম)
:তো আপনার নাম টা কি জানতে পারি???(রাহি)
:আমার নাম ফাহিম,আর আপনি এখন আসতে পারেন(আমি)
:এতো রাগ করেন ক্যান??যাইতেছি,
,,,হুহ।
বলেই সেদিন চলে গেল মেয়েটা।
.
তারপর প্রতিদিন বিকেল বেলাতেই দেখতে পেতাম রাহিকে।
রাহির সাথে কথাও হত,তবে খুব কম।
কথা না হলেও আমি আড়চোখে ওকে দেখাটা মিস করতাম না।
অস্বাভাবিক মাধুর্যতা ছিল মেয়েটারয মধ্যে।আর এক ধরনের চঞ্চলতা,যা আমার ভীষণ ভালো লাগতো।
আসলে সেটা শুধু ভালো লাগা ছিলো নাকি অন্য কিছু বুঝি নি।
.
প্রায় দু বছর পর,,,
তখন আমি ক্লাস নাইন কি টেনএ পড়ি।
আগের মতোই ফুটবল প্র্যাকটিসে যেতাম।কিন্তু,,,
হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম রাহিকে আর দেখা যায় না।পরপর তিনদিন দেখতে না পাওয়ার পর আমি আম্মুকে জিজ্ঞেস করে যা শুনলাম,,তা শোনার ইচ্ছে ছিলো না আমার।
রাহির আব্বুর নাকি অন্য জায়গায় পোস্টিং হয়েছে,তাই সবাই চলে গেছে।।
তবে ওদের পরিবারের সাথে আমার পরিবারের ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে আম্মু নাকি ওদের ফোন নাম্বার রেখে দিয়েছে।
.
আজ প্রায় ছয় বছর পর আমি আর আমার পরিবারের সবাই রাহিদের বাড়িতে।
কারণ,সামনের সপ্তাহে রাহির বিয়ে।
বিগত সাত বছর নিয়মিতই রাহির পরিবারের সাথে আমার পরিবারের যোগাযোগ হতো।
বিয়ের এক সপ্তাহ আগেই আমি আর আমার পরিবার বিয়ে বাড়িতে।
আর আমি রাহির ঠিক সামনে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে এতক্ষণ এইসব ভাবছি।
আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে রাহি বলে উঠলো,
:এই যে মিস্টার হাফ প্যান্ট,,কেমন আছেন???দারুণ স্মার্ট হয়েছেন দেখছি....হুমমম???(রাহি)
:আমি ভালোই আছি।তবে ভাবিনি যে তখনকার সেই কিউট মেয়েটা আরও কিউট হবে।তবে চঞ্চলতা সেই আগের মতোই আছে(আমি)
:হয়েছে,,,আমাকে আর পাম মারতে হবে না।।সামনে আমার বিয়ে,,বুঝেছেন???কয়টা গার্লফ্রেন্ড জুটিয়েছেন,,,হুমমম???(রাহি)
:দুঃখিত,,আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।তবে বাল্যকালে একজনকে খুব ভালো লাগতো।কিন্তু তাকে বলবো বলবো বলে কিছু বলার আগেই তাকে হারিয়ে ফেলেছি।
(এইটুকু বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
.
মাকে গিয়ে মিথ্যে বললাম যে আমার বন্ধুর বাবা অসুস্থ।
মিথ্যে বলে চলে আসলাম রাহিদের বাড়ি থেকে।
হয়তো ওখানে কিছুদিন থাকলে কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারতো।কারণ,আমি চলে আসার সময় দেখেছি রাহির চোখের জল,যেটা সবার চোখের কাছ থেকে আড়াল হলেও আমার চোখের আড়াল হয় নি।
আর কিছু দিন থাকলে হয়তো আমি আমার মনের কথা সবার সামনেই বলে দিতাম,কিন্তু এতে রাহির পরিবারের মানসম্মানের ক্ষয় হতো,,সেই সাথে আমার পরিবারেরও।
.
আমার হৃদয়ের আর্তনাদ আমি ছাড়া কেউ শুনছে না।আমার বাল্যকালের প্রেম যে আজ এতদিন পর আমাকে এতটা কষ্ট দেবে,তা আমি কখনো ভাবি নি।
হৃদয়ের আর্তনাদের কাছে হার মানলে আমার চলবে না।সবসময় ভালোবাসলেই কাছে পেতে হয় না।
ভালো থাকুক রাহি,আশা করি সুখী হোক ওর নতুন জীবন নিয়ে।
ফুলপ্যান্ট খুব একটা পছন্দ ছিল না আমার।
বেশিরভাগ সময়ই থ্রি কোয়ার্টার কিংবা হাফ প্যান্ট পড়ে থাকতাম।
আমি যখন ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি তখন আমাদের পাশের বাসায় একটা মেয়েকে দেখতে পাই।
নতুন ভাড়া এসেছিল,প্রথম বারেই মেয়েকে দেখে যা বুঝেছিলাম,,তা এই যুগের ক্রাশ......
আমি প্রতিদিন ফুটবল প্র্যাকটিসে যাওয়ার সময় মেয়েটাকে দেখতে পেতাম।
মেয়েটাকে দেখেও আমি না দেখার ভান করে চলে যেতাম,কারণ,,যদি দেখে আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি তাহলে কি না কি ভাববে........
তাই আমি প্রতিদিন আড়চোখে দেখতাম মেয়েটাকে।
তবে মেয়েটিকে এতদিন লক্ষ্য করে বুঝেছিলাম যে মেয়েটা একটু চঞ্চল প্রকৃতির তবে কেউ সহজে ব্যাপারটা বুঝতে পারবে না।
.
একদিন ফুটবল প্র্যাকটিস শেষ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি মেয়েটা আমাদের বাসায়।
আমি অন্য কোনো দিকে খেয়াল না দিয়ে চুপচাপ বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আম্মুর কাছে গেলাম।
আম্মুকে আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করলাম,
:এই মেয়ে আমাদের বাসায় কেনো???
:মেয়ে মেয়ে করিস না তো।ওর নাম রাহি,আর ও তোর ক্লাসেই পড়ে (আম্মু)
:আমার ক্লাসে পড়ে ভালো কথা,কিন্তু আমাদের বাসায় ক্যান??
:ওর আব্বু এখানে বদলি হয়েছে,আর ও এখনো কোনো স্কুলএ ভর্তি হয় নি,আর ওর বইগুলোও আনে নি।
:তাই আমি কি করবো???
:তোর কিছু বই ওকে দে,,পড়ে আবার দিয়ে যাবে।
:কিন্তু...........
:কোনো কিন্তু না(একটু রাগী সুরেই বলল আম্মু)
.
তাই আমিও কথা বাড়ালাম না।চুপচাপ রুমে গিয়ে বুকসেল্ফ থেকে অন্য একসেট বই বের করলাম।
কারণ,সবসময় আমার আব্বু এক্সট্রা বই এনে রাখে আমার জন্য।সেইগুলো যখন মেয়েকে মানে রাহি কে দিতে গেলাম,তখনই মেয়েটা বলে উঠলো,
:এই যে মিস্টার হাফপ্যান্ট,কেমন আছেন???(রাহি)
:কি!!!!কি বললেন??(আমি)
:কেনো??কানে কি কম শুনেন নাকি??(রাহি)
:আপনি আমাকে হাফপ্যান্ট বললেন ক্যান??(আমি)
:আসলে,প্রতিদিন হাফপ্যান্ট পড়া দেখি তো,, তাই.....(রাহি)
:হইছে,হইছে এখন বইগুলো নিন আর ভাগেন(আমি)
:আচ্ছা,মিস্টার হাফপ্যান্ট আপনি কখনও ফুল প্যান্ট পড়েন না??(রাহি)
:আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে যে আমি স্কুলেও হাফপ্যান্ট পড়ে যাই!!!আর কিসের মিস্টার হাফপ্যান্ট লাগাইছেন???আমার একটা নাম আছে,বুঝতে পারছেন??(একটু রাগী ভাব নিয়েই বললাম)
:তো আপনার নাম টা কি জানতে পারি???(রাহি)
:আমার নাম ফাহিম,আর আপনি এখন আসতে পারেন(আমি)
:এতো রাগ করেন ক্যান??যাইতেছি,
,,,হুহ।
বলেই সেদিন চলে গেল মেয়েটা।
.
তারপর প্রতিদিন বিকেল বেলাতেই দেখতে পেতাম রাহিকে।
রাহির সাথে কথাও হত,তবে খুব কম।
কথা না হলেও আমি আড়চোখে ওকে দেখাটা মিস করতাম না।
অস্বাভাবিক মাধুর্যতা ছিল মেয়েটারয মধ্যে।আর এক ধরনের চঞ্চলতা,যা আমার ভীষণ ভালো লাগতো।
আসলে সেটা শুধু ভালো লাগা ছিলো নাকি অন্য কিছু বুঝি নি।
.
প্রায় দু বছর পর,,,
তখন আমি ক্লাস নাইন কি টেনএ পড়ি।
আগের মতোই ফুটবল প্র্যাকটিসে যেতাম।কিন্তু,,,
হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম রাহিকে আর দেখা যায় না।পরপর তিনদিন দেখতে না পাওয়ার পর আমি আম্মুকে জিজ্ঞেস করে যা শুনলাম,,তা শোনার ইচ্ছে ছিলো না আমার।
রাহির আব্বুর নাকি অন্য জায়গায় পোস্টিং হয়েছে,তাই সবাই চলে গেছে।।
তবে ওদের পরিবারের সাথে আমার পরিবারের ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে আম্মু নাকি ওদের ফোন নাম্বার রেখে দিয়েছে।
.
আজ প্রায় ছয় বছর পর আমি আর আমার পরিবারের সবাই রাহিদের বাড়িতে।
কারণ,সামনের সপ্তাহে রাহির বিয়ে।
বিগত সাত বছর নিয়মিতই রাহির পরিবারের সাথে আমার পরিবারের যোগাযোগ হতো।
বিয়ের এক সপ্তাহ আগেই আমি আর আমার পরিবার বিয়ে বাড়িতে।
আর আমি রাহির ঠিক সামনে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে এতক্ষণ এইসব ভাবছি।
আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে রাহি বলে উঠলো,
:এই যে মিস্টার হাফ প্যান্ট,,কেমন আছেন???দারুণ স্মার্ট হয়েছেন দেখছি....হুমমম???(রাহি)
:আমি ভালোই আছি।তবে ভাবিনি যে তখনকার সেই কিউট মেয়েটা আরও কিউট হবে।তবে চঞ্চলতা সেই আগের মতোই আছে(আমি)
:হয়েছে,,,আমাকে আর পাম মারতে হবে না।।সামনে আমার বিয়ে,,বুঝেছেন???কয়টা গার্লফ্রেন্ড জুটিয়েছেন,,,হুমমম???(রাহি)
:দুঃখিত,,আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।তবে বাল্যকালে একজনকে খুব ভালো লাগতো।কিন্তু তাকে বলবো বলবো বলে কিছু বলার আগেই তাকে হারিয়ে ফেলেছি।
(এইটুকু বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
.
মাকে গিয়ে মিথ্যে বললাম যে আমার বন্ধুর বাবা অসুস্থ।
মিথ্যে বলে চলে আসলাম রাহিদের বাড়ি থেকে।
হয়তো ওখানে কিছুদিন থাকলে কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারতো।কারণ,আমি চলে আসার সময় দেখেছি রাহির চোখের জল,যেটা সবার চোখের কাছ থেকে আড়াল হলেও আমার চোখের আড়াল হয় নি।
আর কিছু দিন থাকলে হয়তো আমি আমার মনের কথা সবার সামনেই বলে দিতাম,কিন্তু এতে রাহির পরিবারের মানসম্মানের ক্ষয় হতো,,সেই সাথে আমার পরিবারেরও।
.
আমার হৃদয়ের আর্তনাদ আমি ছাড়া কেউ শুনছে না।আমার বাল্যকালের প্রেম যে আজ এতদিন পর আমাকে এতটা কষ্ট দেবে,তা আমি কখনো ভাবি নি।
হৃদয়ের আর্তনাদের কাছে হার মানলে আমার চলবে না।সবসময় ভালোবাসলেই কাছে পেতে হয় না।
ভালো থাকুক রাহি,আশা করি সুখী হোক ওর নতুন জীবন নিয়ে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন