ইরার কথন:-
হঠাৎ রিংটোনের শদ্বে ঘোর
কাটলো। কিন্তু এই টোনটা আমার
চেনা। এটা শুধু বিশেষ একজনের
জন্য সেইভ করা। এখন আমার
কাজ হচ্ছে দরজা খোলা। কারন
দরজার ওপাশে শাকিল ভাই দারিয়ে
আছে।
.
কিরে সং সেজে দারিয়ে আছিস কেন?
আমার কাছে কোন টাকা নেই। সর
সামনে থেকে ভিতরে ঢুক্তে দে।
তিনি তার মতো করে ঢুকে গেলো।
আমি তার কান্ড দেখে অবাক।
সে মাঝেমাঝেই এইরকম উদ্ভট কাজ
কর্মের জন্য খুবি বিখ্যাত। কিন্তু
এইবার যা করছে তা আরো
বিরক্তিকর। আপনার মাথার চুল
গুলা কই। বুঝলি ইরা ইদানিং খুব
গরম পরছে। ভাবলাম মাথার চুল
গুলা ফালিয়ে দেই। একটা সন্ন্যাসী
সন্ন্যাসী ভাব এসেছে। ভালো লাগছে
না এখন আমাকে। কচু চিনেন
সেই কচুর মতো লাগছে। আমারতো
মনেহয় আপনি নিশ্চই কোন
মেয়ের পিছে লাইন মারছিলেন
তাই সেই মেয়ের বরো ভাই
আপনাকে ধরে টাক করে দিছে।
সেইটা লজ্জায় এখন বলতে
পারছেন না। তুই সারাদিন নাটক
দেখিস মনেহয়। দিন দিন তোর
মাথায় সব কুটনুতিক বুদ্ধি যায়গা
করে নিচ্ছে। এই স্টার জলসা
আসলেই তোর মাথাটা খেলো।
আপনাকে বলছে? মাই ডিয়ার
ইরা আমাকে কে কি বলবে? এইযে
আমার এখন খুব ইচ্ছা করছে আপনার
ওই টাক মাথায় আমি আলকাতরা
মেখে দেই। ইরা তোর মেজাজ
সবসময় এইরকম চরায় কেন
উঠে থাকে আমাকে বলবি?
আপনার ওই হনুমান মাকরা মুখ
দেকলেই আমার মেজাজ গরম
হয় বুঝলেন! আচ্ছা খাল্লামা কি
তোর জন্মের সময় ভুল করে মধুর
বদলে করলার রস খাইয়ে দিছিলেন।
তা আমি কি যানি সেটা আপনার
খাল্লামাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন।
.
মাই ডিয়ার ইরা এখন ঝটপট
এক গ্লাস সরবত বানিয়ে নিয়ে
আস।
.
আমাকে কি কোন এংগেলে কাজের
বিটি রহিমা মনেহয়। না আমার
কপালে কিছু লেখা আছে।
.
বুঝলি ইরা আমার খানিক
সন্দেহ হয় তুই সত্যি আসাদের
বোন তো। তোর ভাই এতো
ভালো আর তুই হুবাহু রিনা খান।
.
আপনার টাক মাথা আমি ফাটিয়ে
ফেলবো। এখনি সরবত খেয়ে
বিদায় হন।
.
শাকিল ভাই আমার বরো ভাইর
বন্ধু। আসাদ ভাইয়া এইতো
মাত্র দুই বছর হলো পাশ করে
চাকরি নিয়েছে। আর শাকিল
ভাই এখনো বেকার। তার নাকি
চাকরি ভালো লাগে না। তার
নাকি চাকরি বন্দী আসামির মতো
মনেহয়। তাই প্রত্যেক বার
যখন তার কোন চাকরির ইন্টার্ভিউ
থাকে ঠিক দুই দিন আগে সে
বাড়ি ছারা হয়ে যায়। কিনা কোন
দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসে।
ইন্টার্ভিউর পরের দিন এসে
বলবে। বুঝলি ইরা ওনেক ভাবলাম
আসলে চাকরির ইন্টার্ভিউর
সাথে আমার কোয়ালিটি যায় না।
এই দেশে ওনেক হতো দরিদ্র
আছে যারা চাকরি পায় না। এখন
তুই ভাব আমি যদি চাকরি নেই
ওই একটা ছিট ভরে যাবে আর
একটা দরিদ্র চাকরি থেকে
বঞ্চিত হলো। আমাদের দেশের
মানুষ গুলো খুব ভালো এদের
দিকটাও তো আমার ভাবা উচিৎ।
তাই একাকি এইসব ভাবার জন্য
সিলেট গিয়েছিলাম। অনেক
সুন্দর যায়গা। না গেলে জীবন
বৃথা। কেমন উদাস উদাস হয়ে
এই কথা গুলো বলে আমার শুধু
তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে।
ইন্টার্ভিউর পর কিছুদিন সে
এখানেই থাকে কারন তার বাবা
খুব রাগী আর তার বাবার একটা
লাইসেন্স করা গুলি আছে যেটা
নয়ে সে বসে থাকে তার জন্য।
শাকিল ভাই যে কয়দিন আমাদের
বাসায় থাকে সে কয়দিন আমি
কলেজে যাই না। সারাদিন আমি
তার সাথে গল্প করি হাসা হাসি
করি। মাঝেমাঝে চোখে পানি
এসে পরে এতো আনন্দ সত্যি কি
আমি পাবো এইভেবে। আর তিনি
বোকার মতো আমার দিক ফ্যালফ্যাল
করে তাকিয়ে থাকে আর বলে
বুঝলি ইরা মেয়েরা হচ্ছে গিরগিটির
মতো খালি রং বদলায়। আর
এই ক্ষেত্রে পৃথিবীর সমস্ত ছেলেরা
হচ্ছে কালার ব্লাইন্ড। যখন সে
চলে যায় তখন কেন যানি সব
খালি খালি লাগে।
.
একদিন সে এসে বলে মাই
ডিয়ার ইরা মাঝেমাঝে জীবন টা
কেন যানি খালি খালি লাগে।
যেদিকে তাকাই শুধু কাপেল আর
কাপেল। আমারো ইচ্ছা হয় পাশে
কাউকে নিয়া তার হাত ধরে ঘুরে
বেরাতে। আমি মুখ ঝামটা দিয়ে
বলতাম উম বুরা বয়সে ভিমরতি।
.
সেদিন হঠাৎ করেই তাকে ফেইসবুক
থেকে ব্লক করলাম। কারন
সে একটা মেয়ের ছবিতে কমেন্টে
করছে "তোমাকে দেকতে ওনেক
কিউট লাগছে " আর প্রতিদিন
হোম পেইজে দেখি ৪ বা ৫ টা
মেয়ে তার ফ্রেন্ড তাই রাগে তাকে
ব্লক করলাম । উনি কি বুঝতে
পারে না আমি তাকে কতো
ভালবাসি।
__
শাকিলের কথন :-
ইরা হচ্ছে আমার বন্ধুর ছোট বোন।
সেই কবে থেকে ওদের বাসায়
আমার যাওয়া আসা। খাল্লামা
আমাকে তার ছেলের মতোই যানে।
কিন্তু ওই পিচ্চি আমাকে দেকলেই
তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। কিন্তু
একটা জিনিস ভেবে খুব শান্তি
পাই যে মেয়েরা যাকে বেশি ভালবাসে
তার সাথেই বেশি রাগারাগি করে।
আমার মতে ইরাও আমাকে
ভালবাসে। সেদিন ওনেক কষ্ট
করে জীবনের প্রথম একটা কবিতা
লিখেছিলাম ওর জন্য। তারপর
ফেইসবুকে মেসেজ দিয়ে ছিলাম।
.
"মাই ডিয়ার ইরা
তোমায় দেকলে আমার
বুকে জাগে প্রেমের পিড়া
আমায় দেবে নাকি একটু ক্ষীরা "
.
পরে অনুধাবন করেছিলাম এইসব
কবিতা লিখতে মনের মাধুর্য লাগে
আর গুরু গম্ভীর শদ্ব ব্যাবহার করা
লাগে। আর কবিতায় ছন্দ থাকা
জরুরি। কিন্তু আমার কবিতায়
এসব কিছুই নেই। তাই চেষ্টা
করছি। আমার ইচ্ছা কোন
এক বর্ষায় ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কয়েক
গুচ্ছ কদম ফুল নিয়ে ওর সামনে
গিয়ে বলবো "বুঝলি ইরা আমার
মনেহয় আমি তোকে ভালবাসি "।
.
কিন্তু ওর মাথা অলটাইম গরম
লাভার মতো গরম থাকে। একটু
সুন্দর চেহারা নিয়া কতোই না
বরাই দেখায়। আমি ওর একটা
নাম দিছি বুচি ইরা। চিন্তা করছি
বিয়ের পর এই নামটা ধরে ডাকবো।
.
এইতো সেদিন গরমের ভিতর
দারিয়ে ছিলো আমি দেখে তারাতারি
ওর জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে আসলাম।
কিন্তু বদ মেয়েটা আমার হাত থেকে
আইস্ক্রিম টা নিয়ে সোজা হাটা দিলো।
একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দিলো না।
যানি এটা আমার দায়িত্ব। সেদিন
রাতে ফোন দিয়ে বললাম তুই কি
আমার উপর রেগে আছিস। ও
বলে "আপনি আমার বরো ভাইর
বন্ধু আপনার উপর কেন রাগ করবো"
আমার কথা শুনে নিজের মাথার
চুল ছিরে ফেলতে ইচ্ছা করছিলো
তাই তো চুল ফেলে দিলাম।
.
ইরার কথন:-
ওনেক দিন থেকে তাকে ফোন
দিচ্ছি কিন্তু শাকিল ভাই ফোন
ধরছে না। যানি তিনি আর কোনদিন
এসে বলবেনা দরজার সামনে
সং সেজে দারিয়ে আছিস কেন?
ইরা এক গ্লাস ঠান্ডা সরবত নিয়ে
আয়তো। মানুষটা সবসময়
তারা হুরায় থাকে। এইতো দিন
৩০ আগে রাস্তা পারের সময়
হঠাৎ ট্রাকের সাথে ধাক্কা খায়
আর পরে যায়। তার মা সেদিন
পঈ হাসপাতাল থেকে ফোন করে
ওনেক কেঁদেছিলেন। তিনি নাকি
আর স্ক্রাস ছারা হাটতে পারবে না।
তাকে ওনেক ফোন দেই কিন্তু
তিনি একবারো ফোন রিসিভ করে
না। মাঝেমাঝে একটা দু স্বপ্ন দেখি।
দেখি তিনি এক বরো রাস্তার
মাঝখানে একা দাড়িয়ে আছে
স্ক্রাস নিয়ে। আর আমার দিক
শিশুশুলভ লুক নিয়া বলে বুঝলি
ইরা রাস্তাটা ওনেক বরো। কিভাবে পার
হবো বল তো। আমি ফ্যাল ফ্যাল
করে তার দিক তাকিয়ে থাকি।
ওনেক ফোন করার পর তিনি
কল ধরছেন আর বলেছেন।
কাল দেখা করবে।
.
শাকিলের কথন:-
মেয়েটা বড্ড বোকা। আগে যদি
এরকম করতো তা নহয় একটা কথা
ছিলো। কিন্তু এখন এই অনিশ্চিত
জীবনের সাথে ওকে কোন
ভাবেই মিলানো সম্ভব না। তাই
ওকে দেখা করতে বলেছি।
পার্কে। কালকেই সব শেষ করে
দিতে হবে।.
আজ আকাশটা কালো হয়ে
র্যেছে মনেহয় কিছুক্ষনের
মধ্যেই বৃষ্টি পরবে। হঠাৎ ঝুম
বৃষ্টি পরা আরম্ভ করলো।
আমি স্ক্রাসটা নিয়ে দাড়ালাম।
দূরে দেখি সাদা সেলোয়ায় পরে
ইরা আসতেছে হাতে সাদা চুড়ি
হাতে মেহেদি। এসেই বলে দেখেন
তো মেহেদি মুছে গেছে কিনা।
আমি বলি না ঠিকি আছে।
বুঝলি ইরা জীবটা সিনেমা
না তুই যা ভাবছিস সেটা কোন
দিন সম্ভব না। আপনাকে বলছে।
তুই চলে যা। আপনি চুপ করে আমার
হাত ধরুন আর এটা ফেলে দিন।
এটা কোনদিন সম্ভব নয় ইরা।
আপনি আমার কথা না শুনলে
রাস্তায় গিয়ে আমিও গাড়ির
নিচে লাফ দিবো। তখন বুঝবেন।
আপনি তো যানের আমি কি
করতে পারি। এই মেয়ে দেখি
কাদতেছে। কিন্তু পানি বুঝা
যায় না। ঠোটতা মৃদু কাপছে।
আমি ওর হাত ধরে দাড়ালাম।
ওকে উপেক্ষা করা সম্ভব না।
চিন্তা করছি কদম ফুল কই পাই।
ইরা বললো আপনি যানেন আপনি
আমার স্বপ্নে জিজ্ঞাস করতেন
"বুঝলি ইরা রাস্তাটা ওনেক বরো
কিভাবে পার হবো বলতো "
তুই তখন কি বলতি? এই যে
এখন যেভাবে আপনাকে ধরে হাটছি
এই বলে হাসি দিলো। আমিও
একটা হাসি দিলাম। হাটতে হাটতে
চিন্তা করছি জীবনা সিনেমা হলে
খারাপ হতো না।
হঠাৎ রিংটোনের শদ্বে ঘোর
কাটলো। কিন্তু এই টোনটা আমার
চেনা। এটা শুধু বিশেষ একজনের
জন্য সেইভ করা। এখন আমার
কাজ হচ্ছে দরজা খোলা। কারন
দরজার ওপাশে শাকিল ভাই দারিয়ে
আছে।
.
কিরে সং সেজে দারিয়ে আছিস কেন?
আমার কাছে কোন টাকা নেই। সর
সামনে থেকে ভিতরে ঢুক্তে দে।
তিনি তার মতো করে ঢুকে গেলো।
আমি তার কান্ড দেখে অবাক।
সে মাঝেমাঝেই এইরকম উদ্ভট কাজ
কর্মের জন্য খুবি বিখ্যাত। কিন্তু
এইবার যা করছে তা আরো
বিরক্তিকর। আপনার মাথার চুল
গুলা কই। বুঝলি ইরা ইদানিং খুব
গরম পরছে। ভাবলাম মাথার চুল
গুলা ফালিয়ে দেই। একটা সন্ন্যাসী
সন্ন্যাসী ভাব এসেছে। ভালো লাগছে
না এখন আমাকে। কচু চিনেন
সেই কচুর মতো লাগছে। আমারতো
মনেহয় আপনি নিশ্চই কোন
মেয়ের পিছে লাইন মারছিলেন
তাই সেই মেয়ের বরো ভাই
আপনাকে ধরে টাক করে দিছে।
সেইটা লজ্জায় এখন বলতে
পারছেন না। তুই সারাদিন নাটক
দেখিস মনেহয়। দিন দিন তোর
মাথায় সব কুটনুতিক বুদ্ধি যায়গা
করে নিচ্ছে। এই স্টার জলসা
আসলেই তোর মাথাটা খেলো।
আপনাকে বলছে? মাই ডিয়ার
ইরা আমাকে কে কি বলবে? এইযে
আমার এখন খুব ইচ্ছা করছে আপনার
ওই টাক মাথায় আমি আলকাতরা
মেখে দেই। ইরা তোর মেজাজ
সবসময় এইরকম চরায় কেন
উঠে থাকে আমাকে বলবি?
আপনার ওই হনুমান মাকরা মুখ
দেকলেই আমার মেজাজ গরম
হয় বুঝলেন! আচ্ছা খাল্লামা কি
তোর জন্মের সময় ভুল করে মধুর
বদলে করলার রস খাইয়ে দিছিলেন।
তা আমি কি যানি সেটা আপনার
খাল্লামাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন।
.
মাই ডিয়ার ইরা এখন ঝটপট
এক গ্লাস সরবত বানিয়ে নিয়ে
আস।
.
আমাকে কি কোন এংগেলে কাজের
বিটি রহিমা মনেহয়। না আমার
কপালে কিছু লেখা আছে।
.
বুঝলি ইরা আমার খানিক
সন্দেহ হয় তুই সত্যি আসাদের
বোন তো। তোর ভাই এতো
ভালো আর তুই হুবাহু রিনা খান।
.
আপনার টাক মাথা আমি ফাটিয়ে
ফেলবো। এখনি সরবত খেয়ে
বিদায় হন।
.
শাকিল ভাই আমার বরো ভাইর
বন্ধু। আসাদ ভাইয়া এইতো
মাত্র দুই বছর হলো পাশ করে
চাকরি নিয়েছে। আর শাকিল
ভাই এখনো বেকার। তার নাকি
চাকরি ভালো লাগে না। তার
নাকি চাকরি বন্দী আসামির মতো
মনেহয়। তাই প্রত্যেক বার
যখন তার কোন চাকরির ইন্টার্ভিউ
থাকে ঠিক দুই দিন আগে সে
বাড়ি ছারা হয়ে যায়। কিনা কোন
দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসে।
ইন্টার্ভিউর পরের দিন এসে
বলবে। বুঝলি ইরা ওনেক ভাবলাম
আসলে চাকরির ইন্টার্ভিউর
সাথে আমার কোয়ালিটি যায় না।
এই দেশে ওনেক হতো দরিদ্র
আছে যারা চাকরি পায় না। এখন
তুই ভাব আমি যদি চাকরি নেই
ওই একটা ছিট ভরে যাবে আর
একটা দরিদ্র চাকরি থেকে
বঞ্চিত হলো। আমাদের দেশের
মানুষ গুলো খুব ভালো এদের
দিকটাও তো আমার ভাবা উচিৎ।
তাই একাকি এইসব ভাবার জন্য
সিলেট গিয়েছিলাম। অনেক
সুন্দর যায়গা। না গেলে জীবন
বৃথা। কেমন উদাস উদাস হয়ে
এই কথা গুলো বলে আমার শুধু
তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে।
ইন্টার্ভিউর পর কিছুদিন সে
এখানেই থাকে কারন তার বাবা
খুব রাগী আর তার বাবার একটা
লাইসেন্স করা গুলি আছে যেটা
নয়ে সে বসে থাকে তার জন্য।
শাকিল ভাই যে কয়দিন আমাদের
বাসায় থাকে সে কয়দিন আমি
কলেজে যাই না। সারাদিন আমি
তার সাথে গল্প করি হাসা হাসি
করি। মাঝেমাঝে চোখে পানি
এসে পরে এতো আনন্দ সত্যি কি
আমি পাবো এইভেবে। আর তিনি
বোকার মতো আমার দিক ফ্যালফ্যাল
করে তাকিয়ে থাকে আর বলে
বুঝলি ইরা মেয়েরা হচ্ছে গিরগিটির
মতো খালি রং বদলায়। আর
এই ক্ষেত্রে পৃথিবীর সমস্ত ছেলেরা
হচ্ছে কালার ব্লাইন্ড। যখন সে
চলে যায় তখন কেন যানি সব
খালি খালি লাগে।
.
একদিন সে এসে বলে মাই
ডিয়ার ইরা মাঝেমাঝে জীবন টা
কেন যানি খালি খালি লাগে।
যেদিকে তাকাই শুধু কাপেল আর
কাপেল। আমারো ইচ্ছা হয় পাশে
কাউকে নিয়া তার হাত ধরে ঘুরে
বেরাতে। আমি মুখ ঝামটা দিয়ে
বলতাম উম বুরা বয়সে ভিমরতি।
.
সেদিন হঠাৎ করেই তাকে ফেইসবুক
থেকে ব্লক করলাম। কারন
সে একটা মেয়ের ছবিতে কমেন্টে
করছে "তোমাকে দেকতে ওনেক
কিউট লাগছে " আর প্রতিদিন
হোম পেইজে দেখি ৪ বা ৫ টা
মেয়ে তার ফ্রেন্ড তাই রাগে তাকে
ব্লক করলাম । উনি কি বুঝতে
পারে না আমি তাকে কতো
ভালবাসি।
__
শাকিলের কথন :-
ইরা হচ্ছে আমার বন্ধুর ছোট বোন।
সেই কবে থেকে ওদের বাসায়
আমার যাওয়া আসা। খাল্লামা
আমাকে তার ছেলের মতোই যানে।
কিন্তু ওই পিচ্চি আমাকে দেকলেই
তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। কিন্তু
একটা জিনিস ভেবে খুব শান্তি
পাই যে মেয়েরা যাকে বেশি ভালবাসে
তার সাথেই বেশি রাগারাগি করে।
আমার মতে ইরাও আমাকে
ভালবাসে। সেদিন ওনেক কষ্ট
করে জীবনের প্রথম একটা কবিতা
লিখেছিলাম ওর জন্য। তারপর
ফেইসবুকে মেসেজ দিয়ে ছিলাম।
.
"মাই ডিয়ার ইরা
তোমায় দেকলে আমার
বুকে জাগে প্রেমের পিড়া
আমায় দেবে নাকি একটু ক্ষীরা "
.
পরে অনুধাবন করেছিলাম এইসব
কবিতা লিখতে মনের মাধুর্য লাগে
আর গুরু গম্ভীর শদ্ব ব্যাবহার করা
লাগে। আর কবিতায় ছন্দ থাকা
জরুরি। কিন্তু আমার কবিতায়
এসব কিছুই নেই। তাই চেষ্টা
করছি। আমার ইচ্ছা কোন
এক বর্ষায় ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কয়েক
গুচ্ছ কদম ফুল নিয়ে ওর সামনে
গিয়ে বলবো "বুঝলি ইরা আমার
মনেহয় আমি তোকে ভালবাসি "।
.
কিন্তু ওর মাথা অলটাইম গরম
লাভার মতো গরম থাকে। একটু
সুন্দর চেহারা নিয়া কতোই না
বরাই দেখায়। আমি ওর একটা
নাম দিছি বুচি ইরা। চিন্তা করছি
বিয়ের পর এই নামটা ধরে ডাকবো।
.
এইতো সেদিন গরমের ভিতর
দারিয়ে ছিলো আমি দেখে তারাতারি
ওর জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে আসলাম।
কিন্তু বদ মেয়েটা আমার হাত থেকে
আইস্ক্রিম টা নিয়ে সোজা হাটা দিলো।
একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দিলো না।
যানি এটা আমার দায়িত্ব। সেদিন
রাতে ফোন দিয়ে বললাম তুই কি
আমার উপর রেগে আছিস। ও
বলে "আপনি আমার বরো ভাইর
বন্ধু আপনার উপর কেন রাগ করবো"
আমার কথা শুনে নিজের মাথার
চুল ছিরে ফেলতে ইচ্ছা করছিলো
তাই তো চুল ফেলে দিলাম।
.
ইরার কথন:-
ওনেক দিন থেকে তাকে ফোন
দিচ্ছি কিন্তু শাকিল ভাই ফোন
ধরছে না। যানি তিনি আর কোনদিন
এসে বলবেনা দরজার সামনে
সং সেজে দারিয়ে আছিস কেন?
ইরা এক গ্লাস ঠান্ডা সরবত নিয়ে
আয়তো। মানুষটা সবসময়
তারা হুরায় থাকে। এইতো দিন
৩০ আগে রাস্তা পারের সময়
হঠাৎ ট্রাকের সাথে ধাক্কা খায়
আর পরে যায়। তার মা সেদিন
পঈ হাসপাতাল থেকে ফোন করে
ওনেক কেঁদেছিলেন। তিনি নাকি
আর স্ক্রাস ছারা হাটতে পারবে না।
তাকে ওনেক ফোন দেই কিন্তু
তিনি একবারো ফোন রিসিভ করে
না। মাঝেমাঝে একটা দু স্বপ্ন দেখি।
দেখি তিনি এক বরো রাস্তার
মাঝখানে একা দাড়িয়ে আছে
স্ক্রাস নিয়ে। আর আমার দিক
শিশুশুলভ লুক নিয়া বলে বুঝলি
ইরা রাস্তাটা ওনেক বরো। কিভাবে পার
হবো বল তো। আমি ফ্যাল ফ্যাল
করে তার দিক তাকিয়ে থাকি।
ওনেক ফোন করার পর তিনি
কল ধরছেন আর বলেছেন।
কাল দেখা করবে।
.
শাকিলের কথন:-
মেয়েটা বড্ড বোকা। আগে যদি
এরকম করতো তা নহয় একটা কথা
ছিলো। কিন্তু এখন এই অনিশ্চিত
জীবনের সাথে ওকে কোন
ভাবেই মিলানো সম্ভব না। তাই
ওকে দেখা করতে বলেছি।
পার্কে। কালকেই সব শেষ করে
দিতে হবে।.
আজ আকাশটা কালো হয়ে
র্যেছে মনেহয় কিছুক্ষনের
মধ্যেই বৃষ্টি পরবে। হঠাৎ ঝুম
বৃষ্টি পরা আরম্ভ করলো।
আমি স্ক্রাসটা নিয়ে দাড়ালাম।
দূরে দেখি সাদা সেলোয়ায় পরে
ইরা আসতেছে হাতে সাদা চুড়ি
হাতে মেহেদি। এসেই বলে দেখেন
তো মেহেদি মুছে গেছে কিনা।
আমি বলি না ঠিকি আছে।
বুঝলি ইরা জীবটা সিনেমা
না তুই যা ভাবছিস সেটা কোন
দিন সম্ভব না। আপনাকে বলছে।
তুই চলে যা। আপনি চুপ করে আমার
হাত ধরুন আর এটা ফেলে দিন।
এটা কোনদিন সম্ভব নয় ইরা।
আপনি আমার কথা না শুনলে
রাস্তায় গিয়ে আমিও গাড়ির
নিচে লাফ দিবো। তখন বুঝবেন।
আপনি তো যানের আমি কি
করতে পারি। এই মেয়ে দেখি
কাদতেছে। কিন্তু পানি বুঝা
যায় না। ঠোটতা মৃদু কাপছে।
আমি ওর হাত ধরে দাড়ালাম।
ওকে উপেক্ষা করা সম্ভব না।
চিন্তা করছি কদম ফুল কই পাই।
ইরা বললো আপনি যানেন আপনি
আমার স্বপ্নে জিজ্ঞাস করতেন
"বুঝলি ইরা রাস্তাটা ওনেক বরো
কিভাবে পার হবো বলতো "
তুই তখন কি বলতি? এই যে
এখন যেভাবে আপনাকে ধরে হাটছি
এই বলে হাসি দিলো। আমিও
একটা হাসি দিলাম। হাটতে হাটতে
চিন্তা করছি জীবনা সিনেমা হলে
খারাপ হতো না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন