বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০১৬

স্মৃতিময় ভালবাসা

ফাহিম রিক্সা করে কলেজে যাচ্ছিল। আজ ফাহিমের কলেজ জীবনের প্রথম দিন। ফাহিম দেখতে খুবই স্মার্ট এবং স্টাইলের দিক দিয়েও কোন কম নয়। যদিও ফাহিমের আজ কলেজের প্রথম দিন, তার মাঝে ভয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল না। ফাহিমের মনে হচ্ছে কলেজ তার খুব চেনা-পরিচিত জায়গা। এজন্য নিরদ্ধায় কলেজ ঢুকে পড়ল।
.
ক্লাসে স্যার আসার সময় হয়ে গেছে। ক্লাসে স্যার আসল সবাই সালাম দিল। এরপর স্যার সবার সাথে পরিচয় হচ্ছিলেন। এরই মাঝে ফাহিমের কাছে তারপর পরিচয় জানার আগেই জিজ্ঞেস করল। এগুলো কি বেঁধেছ গলায়, হাতে এসব কলেজে পরে আসলে চলবে না।
.
ফাহিম এসব কথা শুনে মনে মনে প্রচন্ড রাগ করেছিল, এছাড়াও ক্লাসের ছেলে/মেয়েরা সবাই হাঁসাহাসি করছিল। এটা মটেও ফাহিমের ভাল লাগেনি। এভাবে ১ সপ্তাহ পার হয়ে গেল। এতে ফাহিমের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছিল না। ফাহিম সাধারণ ভাবেই এখন কলেজে আসছে। কিন্তু একটু পরিবর্তন হয়েছে । চোখে চশমা, হাতে কোন বেসল্টে নেই, এছাড়াও গলায় কোন চেন জাতীয় কোন লকেট নেই।
.
সেদিন ক্লাসে একটি নতুন মেয়ে আসল, ফাহিম মেয়েটিকে দেখে ক্রাশ খাওয়ার মত অবস্থা!!! অতঃপর স্যার আসার সময় হয়ে গেছে। স্যার এসে পেজেন্টের কাজ শুরু করলেন। সবার পেজেন্ট হল কিন্তু মেয়েটার হয়নি। এজন্য মেয়েটি উঠে দাড়াল। স্যার আমার পেজেন্ট হয়নি। স্যার মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করল। মেয়েটি বলল' সানিয়া ' নাম শুনে ফাহিমের মনে লাড্ডু ফুটল। সঙ্গে সঙ্গে ফাহিম কল্পনার ডানা মিলে নীল আকাশে উড়তে শুরু করেছে ।
.
ফাহিম বাস্তবতায় চলে আসল, দেখল ক্লাসে কেউ নেই। সবাই চলে গেছে। মাত্র কলেজ ছুটি হল। এজন্য ফাহিম পাগলের মত ছুটতে থাকল। আর এমন ভাব করল যেন 'সানিয়া' নামের মেয়েটি তার অনেক দিনের পরিচিত।
.
ফাহিমের আমার কাছে এসে বলল ' পল্টু ভাই আমার একটা কাজ করে দে' না "
-কি কাজ? 
-তোর বাইকটা একটু দিবি? 
-কেন বাইক নিয়ে কি করবি?
-আচ্ছা আগে একটা কথা বলত 'সানিয়া'কে দেখেছিস?
-আমি বললাম সানিয়া কে?
-আমাদের ডিপার্টমেন্ট আজ নতুন যেই মেয়েটি এসেছে, সেই মেয়েটির কথা বলছি।
-হ্যা চিনেছি। 
-দেখেছিস মেয়েটিকে?
-হ্যা' মাত্র রিক্সায় উঠে চলে গেল।
-পল্টু ভাই আমার মেয়েটিকে ফলো কর।
-আচ্ছা বাইকে উঠ....
মেয়েটিকে খুঁজে পেলাম অবশেষে। ফাহিম দেখেই মেয়েটিকে নাম ধরে ডাকল। সানিয়া তোমার নোট খাতা ক্লাসে রেখে আসছিলে! এই নাও তোমার খাতা। ব্যাস কাজ হয়ে গেল। সানিয়া ফাহিম 'কে জিজ্ঞেস কলল। তোমার নাম কি" ফাহিম।
-আচ্ছা আজ তাহলে আসি, আগামীকাল কলেজে দেখা হবে।
-Bye bye... See you tomorrow.
.
অতঃপর সেখান থেকে চলে এলাম। ফাহিম বলল থ্যাংকস পল্টু! আচ্ছা ঠিক আছে। ফাহিম এখানে নাম আমার আবার হসপিটালে যেতে হবে। ফাহিম কে নামিয়ে দিয়ে হসপিটালে চলে এলাম। আমার মামা সরকারি এক হসপিটালে ভর্তি আছে। কোন সরকারি হসপিটালে ঢুকলে বুঝতে পারবেন। মানুষ কত আসহায়। যদিও মামার প্রচুর টাকা বললাম " মামা তোমার এত টাকা পয়সা থাকতেও। তুমি সরকারি হসপিটালে আস কেন? এখানে তোমার চিকিৎসা ঠিক মত হচ্ছে না। এখানে থেকে চল। মামা না ছোড় বান্দা! "" তারপর বললাম তুমি যদি চিকিৎসার অভাবে মরে যাও। তাহলে তোমার এত টাকা পয়সা দিয়ে কি হবে। মামা আচর্য্য হয়ে আমার দিকে তাঁকিয়ে বলল ' ঠিক কথা বলেছিস তো পল্টু। আচ্ছা চল। ভাল হসপিটালে।
.
মামাকে শেষ পযর্ন্ত বুঝাতে পেরেছি। বেসরকারি একটা ভাল হসপিটালে ভর্তি করে দিয়ে বাসা চলে আসলাম। মামা বলল তোর মাকে আসতে বলিস তো একবার। আচ্ছা মামা এখন আমি গেলাম। আর শোন পল্টু বাইক আসতে চালাবি কিন্তু, আচ্ছা মামা। চলে আসলাম হসপিটাল থেকে ।
.
পরদিন কলেজে ফাহিম দেখি অনেক আগে গিয়ে ক্লাসে বসে আছে। আমাকে দেখে ফাহিম বলল' এই পল্টু শোন এই দিকে আয় । কি হয়েছে রে ফাহিম ডাকছিস কেন? পল্টু মেয়েটি তো এখনো আসছে না। আমি বললাম কোন মেয়েটিরে? আরে পল্টু সানিয়ার কথা বলছি। আমি কি করে যানব! ফাহিম।
.
অবশ্য ক্লাসেরও সময় হয়ে গেছে। সবাই ক্লাসে আসছে। ক্লাস শুরু হয়ে গেল। কিন্তু সানিয়া আসল না। ফাহিমের মুখে অস্থীর ছায়া দেখতে পাচ্ছিলাম। আজ ফাহিমের স্যার লেকচারের উপর কোন মনই নেই। স্যার ফাহিমের এই অমনযোগি দেখে ক্লাস থেকে বের করে দিল।
.
ক্লাস শেষ' আমি বাসার যাওয়ার জন্য কলেজের গ্যারেজ থেকে বাইক নিয়ে আসতে যাব ঠিক তখনি। গিয়ে দেখি ফাহিম আমার বাইকের উপর বসে আছে। আমি এগিয়ে যেতেই ফাহিম বলল' পল্টু একটু সানিয়াদের বাসায় নিয়ে যাবি? আমি বিরক্তির ভাবে বললাম দেখ ফাহিম প্রতিদিন এসব করতে ভাল লাগছে না। আর বাইকে পেট্রোল নেয়। যেই টুকু আছে, এদিয়ে বাসায় ফিরতে হবে। আজ ঝামেলা করিস না।
.
তারপর ফাহিম বলল বাইকের চাবিটা দে ২মিনিটের মধ্যে আসছি। দিলাম ঠিক দু মিনেটের মধ্যেই দেখি বাইক নিয়ে চলে এসেছে। বলল পেট্রোল নিয়ে আসলাম। এবার ফিছনে উঠ। ফাহিম বলল পল্টু তোর কালো সানগ্লাসটা দে তো এই নে, আর ফাহিমের চশমা টা আমায় দিল। ওইটা চোখে নিতেই উস্ঠা খেয়ে পড়ে গেলাম। ফাহিম হাসছে। পল্টু আমার চশমায় পাওয়ার কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধা হয়। হা হা হা।
.
এরপর বাইকে চড়ে বসলাম। সানিয়ার বাসায় চলে আসলাম। ফাহিম গিয়ে সানিয়াদের বাসা কলিং বেল দিতেই সানিয়া বের হয়ে আসল।
.
ফাহিম সানিয়া কে দেখা মাত্র ই বলল! তুমি আজ কলেজে আসলে না কেন? তুমি যান তোমার জন্য আজ কোন কিছুতেই মন ছিল না। সানিয়া সত্যিই আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি ।
-
সানিয়া বলল' ফাহিম তুমি যখন প্রথমদিন আমার দিকে তাকিয়ে কি যে ভাবছিলে তখন থেকেই তোমাকে আমার ভাল লেগে যায়। আর আমি ইচ্ছে করেই খাতাটা ফেলে রেখে এসেছিলাম, জানি তুমি খাতাটা নিয়ে আমাকে অনুসরণ করতে করতে চলে আসবে। আর আজ আমি ইচ্ছে করেই যায়নি। কারণ আমি দেখতে চেয়েছিলাম ফাহিম তুমি আমাকে কে কতোটা ভালবাস।
.
ফাহিম বলল' সানিয়া তোমাকে আমি অনেকটা ভালবাসি।
Fahim:- I love you Sania.
Sania:- I love too much fahim. 
.
এই বলে দুজন দুজনকে যরিয়ে ধরল এরপর ;ফাহিম আমার কাছে এসে বলল সানিয়া এটা আমার বন্ধু পল্টু অনেক ভাল বন্ধু! বাইকটা নিয়ে ওরা ঘুড়তে গেল। এরি মাঝে আমার মুঠফোনটা ফোনটা বেঁজে চলেছে...............!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন