শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৭

বাল্যবিবাহ

বিয়েটা এমনিতেই অনেক বড় দ্বায়িত্বের বিষয়। প্রাপ্ত বয়স্করাও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে। নতুন একটা পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়। মেয়েদের শ্বশুর বাড়িটাকে নিজের মতো করে সব কিছু করে নিতে হয়। সবকিছুর একটা সঠিক সময় আছে।
.
সবকিছুর জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকার একটা ব্যাপার আছে। আর বিয়ের জন্য পুরোপুরি। যেহেতু বিয়ে সেহেতু মানসিক আর শারীরিক দুজায়গাই প্রস্তুত থাকতে হয়। আর সেখানে প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে কিভাবে হয়?
.
ক্লাস সিক্স থেকে সেভেনে উঠতেই দিয়ে দিলেন বিয়ে। শরীর সাস্থ বড়সড় হলেই হয়না। অনেক গার্ডিয়ান'রা এ কাজটা করে। স্বাভাবিকভাবে মেয়েরা বেড়ে উঠে ছেলেদের থেকে একটু আগ করে।
.
সিক্স সেভেন কিংবা এইটে উঠতেই হয়তো শরীর সাস্থ ঠিক হয়ে যায়। আরে বোকা গার্ডিয়ান'রা এটা চিন্তা করেনা মন মানসিকতারও একটা ব্যাপার আছে। যে সময়ে তাঁর দুনিয়া সম্পর্কে আরো জ্ঞান অর্জন করার কথা সে সময়ে সংসার সামলাতে হয়!
.
বাল্যবিবাহ'র কারনেই বেশি মায়েদের সমস্যা হয়। একটা বাচ্চা কি করে আরেকটা বাচ্চা সামলাবে? এ জন্য সিজার বা ইত্যাদি সমস্যার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরলোকগমন করতে হয়। হয় বাচ্চা বাঁচে মা মরে নাহয় মা বাঁচে বাচ্চা মরে। দুটোই কষ্ট দ্বায়ক।
.
খুব স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়সে বিয়ে হলে ছেলে মেয়ে উভয়দিক থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়না। আর বাল্যবিবাহ হলে সমস্যা তো খুব স্বাভাবিক বিষয়।
.
মা হওয়ার যন্ত্রণা বাচ্চামেয়ের সহ্য করতে হয়। অনেক বিয়ে এর জন্য বিচ্ছেদ পর্যন্তও পৌঁছিয়েছে। বিষয়টা হচ্ছে এমন ক্লাস ফাইবের ছাত্রীকে দিচ্ছেন ক্লাস নাইনের বই সামলাতে।
.
যেখানে সে একদমই জ্ঞানহীন। আধুনিক মেয়েরা যতই আধুনিক হোক না কেন বিয়ের চাপড়া সহ্য করতে কষ্ট হয়ই। সময়ের সাথে সাথে মেয়েটা অনেক কিছু আগে শিখতো তাঁর পর নাহয় নিতো সংসারের প্রস্তুতি।
.
আরেকটা ভূল গার্ডিয়ান'রা করে থাকেন সেটা হলো, বিয়ের আগে মেয়েদের জিজ্ঞেস করেনা "তুমি কি বিয়ের জন্য প্রস্তুত আছো? বা বিয়ের জন্য ঠিক আছে কি না?.. বাবারা মনে করে আমার মেয়ে আমি যা বলবো তাই হবে মেয়ে আমার না করবেনা।
.
আমি যা করবো তাই'ই। তাইতো বিয়ের পর দৌড়াদৌড়ি তাঁদেরই করতে হয় ভিবিন্ন সমস্যা নিয়ে। একটার পর আরেকটা সমস্যা লেগেই থাকে। বাবা হীসেবে তাঁদের সীমাহীন কষ্ট হলেও সমস্যাটা মেয়ের উপর দিয়েই যায়।
.
পুরো দখল তারই সহ্য করতে হয়। মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা খুব প্রয়োজন বিয়ের আগে। তা তে কি হয় সংসারটা খুব সহজে সাজিয়ে নিতে পারে, মানিয়ে নিতে পারে। আমি আবারো বলছি "মানিয়ে নিতে পারে" আর মানিয়ে নেওয়াটাই সবচেয়ে জরুরি নতুন বন্ধনের জন্য, খুব বেশি।
.
বাংলাদেশের এর জন্য সীমিত আইন থাকলেও কার্যকর হয় খুব কম। অল্প মালেই (টাকা) কাজ হয়ে যায়। আমি মনে করি বিয়ের পরেই একটা মেয়েকে মায়ের অবধান রাখতে হয়। কারো ভাবী, কারো মামী, কাকী আর ভাবী, মামী, কাকী মানেই তো মায়ের সমান।
.
একটা মায়ের ভুমিকা পালন করতে যথেষ্ট সময়, মন মানসিক আর শারীরিক সবদিক থেকেই প্রস্তুত থাকতে হয়। তাহলে ক্লাস, সিক্স, সেভেন, এইট ,নাইনের মেয়েদের যে বিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা কি করবে?
.
কষ্ট হবেনা মানিয়ে নিতে? আমার মতে, "মেয়েদের তখনই বিয়ের সঠিক সময় হয় যখন সে একজন মায়ের ভুমিকা পালনের জন্য সবদিক থেকে প্রস্তুত হয় " এর জন্য বাংলাদেশে অনেক সংস্থা কাজ করলেও কাজ হচ্ছেনা।
.
বাড়ছে বাল্যবিবাহ'র সংখ্যা। কেন জানিনা আমার বাল্যবিবাহ দেখলে মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। যখন মেয়েটার বিয়ের পরের কিছু দৃশ্যের কথা ভাবি। আমিই বা কি করবো? আমি না প্রধানমন্ত্রী না রাষ্ট্রপতি।
.
মস্তিষ্কের জোর দিয়ে এটুকু কলমের দ্বারা বলতে পারি " বন্ধ করুন বাল্যবিবাহ, ভাবুন, সোচ্চার হোন, আধুনিকতার অপব্যবহার করছেন , সময় পাল্টাচ্ছে জানি, অর্ধমরা ডিজিটাল হচ্ছে জানি তার মানে তো এইনা যে এস.এস.সি পাশ মেয়েটা ভার্সিটির বই সামলাতে পারবে? "

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন