নদীর পারে বসে বসে কয়েক মাস আগের কথা ভাবছে নিবির।এই জায়গাটায় নিবির ও খুশির অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার থেকে তাদের পরিচয়,তারপর ধীরে ধীরে অনেক ভালো বন্ধুত্ব;অত:পর তারা জড়িয়ে পরে ভালোবাসা নামক সম্পর্কে।অনেক সুখের দিন যাচ্ছিল তাদের।ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পরলেও তারা লেখাপড়ায় যথেষ্ট মনোযোগী ছিল।যার ফলে তাদের পরীক্ষার ফলাফলও ভালো হতো।সময়ের আবর্তনে তারা একে অপরকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছিলো।এদিকে তাদের এইচএসসি পরীক্ষার সময়ও ঘনিয়ে আসছিলো।
.
৩মাস পর........
পরীক্ষার কারণে নিবির ও খুশির দেখা সাক্ষাত একটু কমই হয়েছে তাই বলে সময়ের ব্যবধানে তাদের ভালোবাসা কমে যায়নি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে।আজ ৩মাস পর আবার তারা সেই নদীর পারে বসে কথা বলছে....
নিবির→কেমন আছো খুশি?
খুশি→এতোদিন যেমন ছিলাম,এখন তার থেকে অনেক বেশি ভালো আছি।
নিবির→তাই বুঝি!পাগলি আমার।আচ্ছা খুশি,আমি তো রেজাল্টের পর বিদেশে চলে যাবো লেখাপড়া করার জন্য,তখনও কি তুমি আমাকে এতটাই ভালোবাসবে???
খুশি→কি!তুমি আমায় ছেড়ে বিদেশে যাবে কেন!এখানেই লেখাপড়া করবা,তারপর লেখাপড়া শেষ করে আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবা(একটু লজ্জা পেয়ে)।
নিবির→বিয়ের প্রস্তাব তো নিয়ে যাবোই কিন্তু তার আগে নিজেকে তোমার যোগ্য করে নিতে হবে আর সেই জন্যই তো আমি বিদেশে যাবো,
খুশি→এই কি বললি তুই!(একটু রেগে)তুই আমার যোগ্য না???নিবির→হ্যা,যোগ্য তো বটেই,কিন্তু সেটা তোমার কাছে,আঙ্কেল-আন্টির কাছে না।তাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই আমি বিদেশে যেতে চাচ্ছি,তুমি আমার এই সিদ্ধান্তে পাশে থাকবানা?
খুশি→জানি এতে আমাদের অনেক কষ্ট হবে,তারপরেও আমি তোমার সিদ্ধান্তে আমি তোমার পাশে আছি।
.
কিছুদিন পর তাদের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলো।নিবির ও খুশি দুজনেই ভালো রেজাল্ট করেছে।তারপর খুশি ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হলো আর নিবির চলে গেলো বিদেশে।তারপরেও নিবির প্রতিদিন খুশির সাথে ফোনে কথা বলতো,খুশির সব খোঁজ-খবর নিতো।
.
৬মাস পর.....
এখন আর খুশি আগের মতো নেই,নিবির ফোন করলে সে ঠিকমতো কথা বলতো না।বিভিন্ন ধরণের বাহানা করে অল্প একটু কথা বলেই ফোন রেখে দিতো।নিবির এতে কষ্ট পেলেও তা নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতো।কিন্তু প্রতিনিয়ত খুশির এরকম আচরণে নিবির আর থাকতে পারলো না বিদেশে,সে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে আসল।আসার পরের দিন নিবির খুশির ইউনিভার্সিটি তে গেল খুশিকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য,কিন্তু ভার্সিটির ক্যাম্পাসে খুশির সাথে এটা কাকে দেখছে নিবির!খুশি একটা ছেলের হাত ধরে বসে গল্প করছে।তখন নিবির একটি মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো যে সে খুশিকে চেনে কিনা!
মেয়েটি বললো যে হ্যা,সে খুশিকে চেনে।তখন নিবির মেয়েটির কাছে খুশির পাশে বসে থাকা ছেলেটির ব্যাপারে জানতে চাইলে মেয়েটি জানায় যে ওটা খুশির বয়ফ্রেন্ড।
.
তখনই নিবির সেই নদীর পাড়ে চলে আসে।এসে সে ভাবছে শুনেছিলাম "চোখের আড়াল হলে মনেরও আড়াল হয়"
আজ নিজেই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ হয়ে গেলাম★
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন