মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

অনেক ভালোবেসেছিলাম

হ্যালো, আদিবা?(আমি)
কে বলছেন আপনি?(আদিবা)
এখন চিনবেনা কারন আমি অপরিচিত।
(আমি)
এত কথা বলার সময় নেই আমার, কে বলছেন
আপনি সেটা বলেন।(আদিবা)
আফসান নামের কোনো ছেলেকে চিনতে?
(আমি)
আরে আফসান তুই,কতদিন হয়েছে দেশে
আসার?(আদিবা)
হা আমি, আজ আসছি দেশে,কিন্তু নিজের
আত্বীয় কারো বাসায় উটছি না তোদের
বাসায় উটবো।(আমি)
আচ্ছা চলে আয় আমাদের বাসায়,আমি
এড্রেস দিচ্ছি।(আদিবা)
আচ্ছা আসতেছি।(আমি)
আমি আফিসান, পাঁচ বছর পর বিদেশ থেকে
ফিরছি। আদিবা হচ্ছে আমার কলেজ
জীবনের সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
ঠিকানা মত চলে গেলাম। কলিং বেল
চাপতেই আদিবা দরজা খুললো। আমাকে
দেখে অনেক আনন্দ করছে আদিবাদের
বাসায় তার বাবা ও আদিবা থাকে।
আদিবার মা অনেক বছর আগে মারা
গেছেন। সেদিন অনেক আনন্দ ফুর্তি হয়।
আদিবার বাবা আমাকে খুব ভালো ছেলে
হিসাবে কোনো সন্দেহ করেননা। বিদেশ
যাওয়ার আগেও অনেক তাদের বাসায় গিয়ে
রাত কাটিয়েছি।
পরেরদিন রাতে একা একা রুমে ডুকে
আদিবার কথা ভাবছি। মেয়েটা কত দুস্টু
ছিল। কত রাগ অভিমান করে, আবার দুজন
ঠিক হয়ে যেতাম। অনেক দিনের বন্ধুত্ব
আমাদের। হটাৎ একদিন আদিবা আমাকে
প্রপোজ করে বসে।
আফসান আমি তোকে ভালোবাসি।(আদিবা
)
কি বলিস এসব,তোর মাথা ঠিক আছে তো।
(আমি)
হা আমার মাথা ঠিক আছে।(আদিবা)
মাথা ঠিক থাকলে তো ঠিক আছে, কিন্তু
আমি তোকে বন্ধু ছাড়া আর কিছুই
ভাবিনা।(আমি)
থাক,লাগবেনা তোর ভালোবাসা।(আদিবা)
সেদিন অনেক কান্না করে মেয়েটি চলে
যায়।
কয়েকদিন ধরে কোনো যোগাযোগ নেই।
আমিও যোগাযোগ করার চেস্টা করেনি।
একদিন কলেজ ক্যাম্পাসে বসে আছি। হটাৎ
দেখি আদিবা একটা ছেলের সাথে কথা
বলছে। একজন আরেকজনের হাত ধরছে। আমি
তো হতভাগা হয়ে গেলাম। এই কলেজে আমি
ছাড়া কোনো ছেলের সাথে কথা বলতো
না। এখন দেখি অন্য ছেলের সাথে কথা
বলছে। আমার মাথা নস্ট হয়ে গেছে।
আদিবার কাছে এগিয়ে গেলাম।
আরে আফসান তুই।(আদিবা)
হা। (আমি)
সে হলো আবির, আমার বয়ফ্রেন্ড।(আদিবা)
অহ আচ্ছা,কয়দিন থেকে তুই প্রেম করেছিস?
(আমি)
এই তো কয়েকদিন।(আদিবা)
সেদিন চলে গেলাম। বাসায় গিয়ে বারবার
আদিবার কথা মনে পড়ে। এক মুহৃত্ব ভালো
কাটেনা। কয়েকদিনের ভিতরে আমি
বিদেশ চলে যাই। বিদেশ পাঁচটি বছর
কাটিয়েছি আদিবার কথা ভেবে। মনে
পড়লে অনেক বুকের ভিতর কস্ট চলে আসে।
মেয়েটা আমাকে সত্যি ভালোবাসতো।
আমি না বুঝে হারিয়েছি থাকে। প্রতি
মুহৃত্ব আদিবা মিছ করেছি।
একদিন আদিবাকে বললাম,
আদিবা বিয়ের জন্য কেমন আনন্দে আছো।
(আমি)
তুই জানলি কি করে।(আদিবা)
আমার খবর রাখিছনা তুই,ভাবছিস আমি
তোর খবর রাখিনা।(আমি)
হুম ভালোই আনন্দে আছি।(আদিবা)
আদিবার সাথে কথা বলার সময় বুকের
ভিতরের কস্ট আরো ভেড়ে যায়।মেয়েটির
মায়াবী চেহারা,মায়াবী চোখ আমায়
পাগল করে দেয়। অনেক কস্ট বুকে জমা।
নিজের ভুলে হারিয়েছি,এখন নিজেই
কপালে মারছি। মনে মনে ভাবলাম আদিবাকে
বলবো আমার সব কথা।
দশদিন পর আদিবাকে বললাম।
আদিবা তোমার সাথে আমার একটু কথা
আছে।(আমি)
হা বলো।(আদিবা)
জানি আমি নিজের ভুলে তোমাকে
হারিয়েছি, কিন্তু পাঁচটি বছর তোমাকে
প্রতি মুহৃত্ব মিছ করেছি, আমি সেদিন
বুঝতে পারিনি। (আমি)
এখন এইসব বলে লাভ নেই।(আদিবা)
প্লিজ একটু বুঝার চেস্টা করোনা,আমি
তোমাকে অনেক সুখে রাখবো।(আমি)
প্লিজ এসব বলে, হুদাই লাভ নেই।(আদিবা)
প্লিজ একটু বুঝার চেস্টা করো।(আমি)
লাভ নেই, এতে যেভাবে আছো, সেভাবে
থাক, বিয়েতে আনন্দ ফুর্তি করে যাবে।
(আদিবা)
সেদিন অনেক কান্না করে চলে আসি।
বুকের ভিতর অনেক কস্ট জমা নিয়ে চলে
আসলাম তাদের বাড়ি থেকে। কয়েকদিন পর
আদিবার বিয়ে হয়ে যায়। আদিবা সুখেই
আছে। কিন্তু আমি সুখে নেই। প্রতি মুহৃত্ব
আদিবাকে মিছ করি। এখনো আদিবাকে
অনেক ভালোবাসি। আদিবাকে অনেক
ভালোবেসেছিলাম।
(সমাপ্ত)

"ভালবাসা"

অনু এবং আদি।তারা দুই জন দুই জন কে পাগলের মত ভালবাসে।তারা কখনই কেও কাও কে হারাতে চাই না। আদি অনু কে ক্লাস 6 থেকে পছন্দ করত।কিন্তু কখনই মুখ ফুটে বলতে পারে নি যে সে অনু কে ভালবাসে কারন যদি অনু এই কথা টা জানার পর আদির সাথে কথা না বলে,যদি তাদের বন্ধুত্ব টা শেষ হয়ে যাই এই ভয়ে। তারপর,প্রায় 2 বছর এই ভাবে যাওয়ার পর তারা 2 জন ক্লাস 8 এ উঠলো।তারা তখন একই স্যার এর কাছে পরতো।জে এস সি পরিক্ষা দেয়ার পর আদি জানতে পারল যে অনু এক টা ফেসবুক আইডি খুলেছে।আদি সাথে সাথে অনুর আইডি তে রিকুয়েস্ট পাঠাই। সন্ধার দিকে আদি তার ফেসবুক এ লগ ইন করে দেখে যে এক টা নোটিফিকেশন এসে রয়েছে।নোটিফিকেশন. টা চেক করে দেখে যে অনু তার রিকুয়েস্ট টা এক্সেপ্ট করেছে। তারপর তাদের কথা চলতে থাকে। এই ভাবে 2-3 দিন গভীর রাত পযন্ত তাদের অনেক কথা হতে থাকে।একদিন অনু আদি কে জিজ্ঞাসা করল যে আদি কি কোনো মেয়ে কে পছন্দ করে করে কিনা,আদি তো অনুর কথা গুলা দেখেও না দেখার ভান করে রয়েছে।আদি উত্তর দিচ্ছে না দেখে অনু আদি কে জোর করে।আদি অন্য কোনো দিক না ভেবে অনু কে বলে দেয় যে সে অনু কে ভালবাসে,খুব ভালবাসে।এই মেসেজ টা আদি অনু কে সেন্ড করে অনু মেসেজ টা সিন করে রেখে দেয়।আদি দেখল যে অনু তার মেসেজ টা দেখেছে।তারপর হটাৎ দেখে যে অনু ফেসবুক থেকে চলে গেসে।আদি প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়ে ছিল।আদি মনে করে ছিল যে অনু তার অপর রাগ করেছে।এই ভাবে কিছু আজগুবি চিন্তা মাথাই আসলো আদির।তারপর দেখল যে অনু রিপ্লাই দিছে যে,দেখ আদি আমি তোকে কখনই ভালবাস তে পারব না।কারন আমি আর তুই সেম ক্লাস এ পড়ি আর আমাদের বয়স ও একই।আমরা যদি রিলেশন শুরু করি তাহলে আমাদের এই রিলেশন. টা আমাদের ফ‍্যামিলির কেউই মানবে না।উল্টে আর ও অনেক প্রব্লেম ক্রিয়েট হবে।এই ভাবে অনেক কিছু বলতে লাগল অনু আদিকে।কিন্তু আদি শুধু এক টা রিপ্লাই দিচ্ছিলো যে "আমি তোমাকে ভালবাসি,খুব ভালবাসি" এই ভাবে চলতে থাকল অনেক কথা।তারপর অনু বলল যে আমি তোর সাথে দেখা করতে চাই।আদি বললো ঠিক আছে কবে দেখা করবি বল?অনু বললো 23 ডিসেম্বর সন্ধার সময় নদীর ধারে।আদি বললো আচ্ছা।তারা 2 জন দেখা করল আদি অনু কে অনেক কিছু বলেছে।অনেক ভাবে বুঝিয়েছে তার ভালবাসার কথা । অবশেষে অনু আদির ভালবাসার কথা টা বুঝতে পারে।এবং সেদিন আদিকে অনু মুখ ফুটে বলে যে আই লাভ ইউ।এই ভাবে তাদের সম্পর্ক শুরু হই।তারপর ক্লাস 9 পার হয় অনেক মজার সাথে।কিন্তু ক্লাস 10 এ উঠার পর থেকেয় অনু কেমন যেন পাল্টে যাই। সে নাকি আদি কে ভালবাস্ তে পারবে না আর।আদি খুব কষ্ট পাই এই কথা টা শোনার পর।কিন্তু আদির কষ্ট টা অনু না বুঝে একদিন বলে দিল যে আমাদের রিলেশন ব্রেক আপ।আদি খুব কষ্ট পাই।খুব কান্না করে এটা শুনার পর।কুরবানি ঈদ ছিল তার ঠিক 2 দিন পর।আদি এই ঈদ টা খুব কষ্ট করে কাটিয়েছে।সারাদিন এক টি বারের জন্য ও হাসে নি।ঈদ এর দিন সন্ধার দিকে আদি অনু কে ফোন দিল অনু কথা বলবে না বলছিল কিন্তু আদি জোর করাতে অনু ফোন ধরে আদিকে যা নয় তাই বলে অপমান করল।আদি মন খারাপ করে বসে ছিল সেটা দেখে আদির বন্ধু গুলা আদি কে জিজ্ঞাসা করল যে কি হয়েছে?কিন্তু আদি কোনো উত্তর না দিয়ে কান্না সুরু করল।তার বন্ধু রা তাকে সান্তনা দিয়ে কান্না থামিয়ে বাসাই পউছে দিয়ে গেল।আদি বাসাই এসে রাতে অনু কে ফেসবুক এ মেসেজ দিল অনু তখন ও বললো যে সে নাকি আর আদিকে ভালবাসে নাহ।আদি অনুর অপর অভিমান করে বলেছিল যে ঠিক আছে ব্রেক আপ।কিন্তু আদি জানতো যে অনু এটা মন থেকে করছে না।তাই সে অনু কে দেখিয়ে দেখিয়ে অন্য এক টা মেয়ের সাথে প্রেম এর অভিনই করে এবং অনু আদির এই প্রেম এর কথা টা জানার পর খুব কান্না করে ছিল।অনু তার বেস্ট ফ্রেন্ড সেনভা কে এই সব কিছু বলে।সেনভা আদি কে বলে।এবং আদি সেনভা কে সব কিছু খুলে বলে,যে সে কি কারনে এই অভিনই টা করে অনুকে কষ্ট দিতে চেয়েছিল।সেনভাকে দেয়া এই মেসেজ টা অনু দেখে ফেলে সেনভার আইডি থেকে।অনু শিকার করে তার ভুলের কথা এবং আদির কাছে ক্ষমা চাই,অতঃপর আদিও ক্ষমা চাই অনুর কাছে তা কে কষ্ট দেয়ার জন্য। তারপর থেকেই আবার শুরু হয় আদি আর অনুর পুরানো ভালবাসার নতুন অধ্যায়।নতুন সুচনা হয় তাদের ভালবাসার মধুর সম্পর্কের।
সত্যি কারের ভালবাসা গুলা এমনই হয়,শত বাধা বিপত্তি পেরিয়েও আবার এক হয়ে মিলে যাই।

রংহীন বেদনার কাব্য

রাতের আকাশটা দেখতে খুব
ভালোই লাগছে লিখনের।ছাদে
বসে পায়ের উপর পা তুলে
একের পর এক সিগারেট বের
করে ফুকছে আর আকাশের দিকে
তাকিয়ে ধোয়া ছুড়ছে।একটা
কষ্টের পাহাড় লিখনের মন
উঠোনে দাড়িয়ে আছে।
ফোনস্ক্রীনে বার বার আলো
জলছে আর নিভছে।কোনো দিকে
খেয়াল নেই লিখনের।
**
রাত গভীর হয়েছে।প্যাকেট
থেকে সিগারেট বের করতে
গিয়ে ফোনের দিকে নজর পড়ল।
আলো জলছে আর নিভছে।ফোনটা
হাতে তুলে নিলো লিখন।
মেঘলার ফোন আসছে।লিখন
ফোনটা আবার টেবিলে রেখে
দিয়ে এক মনে সিগারেট
ফুকছে।
**
কি হয়ে গেলো একটু সময়ের
ব্যাবধানে!আর কখনো যাযাবর
জার্সিতে মাঠে নামতে পারবে
না লিখন।বল হাতে নিয়ে
কখনোই উইকেট তোলার
দায়িত্বটা আর থাকবে না
তার।ভাবতে ভাবতেই কেঁদে
ফেলল লিখন।কিছুক্ষন পরে
আবার মেঘলার ফোন।লিখন
ফোনটা রিসিভ করলো...
**
-লিখন,তুমি একটু দেখা করতে
পারবা?(মেঘলা)
-কখন,কোথায়?(লিখন)
-এখনি।তোমার বাসার নিচে।
-না।তুমি আমার সাথে আর
যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে
না।
-লিখন,শুধু একবার দেখা করো।
কাল থেকে চিরদিনের জন্য
তোমার জীবন থেকে চলে যাব।
প্লিজ লিখন।
**
লিখন ফোনটা কেটে নিচে
নামলো।মেঘলা মেয়েটা অনেক
ভালো।লিখনকে নিজের
চাইতেও বেশি ভালোবাসে
মেয়েটি।কিন্তু লিখন কেন
জানি ওকে ভালোবাসতেই
পারেনা।আর বাসবেই বা কি
করে!
লিখনের ভালোবাসার
মানুষটিতো লিখনকে ছেড়ে
কবেই
চলে গেছে।সেই থেকে লিখন
আর কাউকে আপণ করতে
পারেনা।
**
-কি হয়েছে?কিছু বলবা?
(লিখন)
-হ্যাপি বার্থডে লিখন।
(মেঘলা)
-থ্যাংস।আর কিছু বলবা?
-হুম।অনেক কিছু বলতে চাই।
-তারাতারি বলো।
-আমি তোমাকে ভালোবাসি
লিখন।
-আমি কাউকে ভালোবাসিনা
মেঘলা।তাছাড়া এখন আমার
জীবনটা শূন্য।আমি আর ক্রিকেট
খেলতে পারবোনা কখনো।আমার
সব আশাগুলো আস্তে আস্তে শেষ
হয়ে যাবে আমার চোখের
সামনে অথচ আমি কিছুই করতে
পারবোনা।তুমি চলে যাও এখান
থেকে।আমাকে ভেবে কষ্ট
পেওনা।
**
লিখন চলে গেলো নিজের ঘরে।
মেঘলাও কাঁদতে কাঁদতে চলে
গেলো।লিখন কেন ওকে মেনে
নিতে পারেনা?কি কম আছে
ওর?আর কিছুই ভাবতে পারছেনা
মেঘলা।কাল মেঘলা চলে যাবে
গ্রামের বাড়িতে।লিখনের
থেকে প্রায় সাত'শ
কিলোমিটার
দুরে।কিন্তু লিখনকে ভুলে যেতে
পারবে কি?ওর খেলা,ওর রাগ
এগুলো কিভাবে ভুলবে মেঘলা?
**
লিখন বালিশে মুখ গুজে
কাঁদছে।অনেক স্বপ্ন ছিলো
ক্রিকেট নিয়ে।স্বপ্নগুলো যে
স্বপ্নই থেকে যাবে।কেন তখন
স্যারের সাথে যে ঐ রকম
ব্যবহার করলো?কেন স্যারকে
খারাপ কথা বলতে গেলো এটা
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লো
লিখন।
**
আজ মেঘলা চলে যাবে লিখনকে
ছেড়ে,লিখনের শহর ছেড়ে।
শেষবারের মতো লিখনকে
দেখতে মেঘলা লিখনের বাসায়
আসলো।লিখন এখনো ঘুমাচ্ছে।
কয়েক বার ডাকতে গিয়েও
ডাকতে পারলোনা।লিখনের
বিছানায় বসে আছে মেঘলা।
লিখনের দিকে অপলকে তাকিয়ে
আছে।কাঁদতে কাঁদতে লিখনের
চোখজোরা ফুলে উঠেছে।
**
মেঘলা ভাবছে ছেলেটা কত
শান্ত দেখতে।অথচ এতোটা
কান্না করতে পারে তা জানার
বাইরে ছিলো।সাহস করে ডাক
দিলো লিখনকে।
**
-লিখন,এই লিখন!উঠো না।
দেখো আমি চলে যাচ্ছি।আর
আসবোনা তোমাকে বিরক্ত
করতে।(মেঘলা)
-কি হয়েছে মেঘলা?এতো
সকালে তুমি?আর আমার রুমে
কেন?(লিখন)
-আমি চলে যাচ্ছি লিখন।আর
কখনো দেখা হবে কিনা
জানিনা!তোমাকে এই বেইসলেট
টা দিয়ে গেলাম।এটা হাতে
পড়ো।হয়ত আমাকে মনে পড়বে।
**
কথাটি বলেই লিখনের ঘর
থেকে বেড়িয়ে গেলো মেঘলা।
লিখন মেঘলার যাওয়ার দিকে
কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে
প্যাকেট দিয়ে সিগারেট বের
করে ফুকতে শুরু করলো আর মনে
মনে ভাবলো,,ছেলেদের
জীবনটা বড়ই বেমানান।তাই
বেদনার আচর লাগতে দিতে
নেই।
**
সেই থেকেই লিখন আর মেঘলার
জীবন দুদিকে প্রবাহিত হতে
থাকলো আর লেখা হলো আরেকটা
"রং হীন বেদনার"কাব্য।
**

Love - Fantasy - Relation

জেনি নামের মেয়েটা সবেমাত্র ক্লাস ১০ এ পড়ে, ভালোই স্মার্ট।
ফেসবুকে ৩০০-৪০০ লাইক এমনেই পড়ে। দিনের পর দিন কত ছেলে প্রোপজ করে, কতজন কেঁদে ফেলে এইসব দেখে ভিষন হাসি পায় মাঝে মাঝে তার, আর মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে উল্টা পালটা কথা শুনিয়ে দেয়।
যাই হোক তার এইসবের ভিতর ইন্ট্রেস্ট নাই। রিলেশন টিলেশনের জন্য টাইম নাই, বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়া টাওয়া ইত্যাদি এইসবেই অনেক আনন্দ আর ভালই দিন কাটছে।
`
অন্যান্য গল্পের মত তার জীবনেও আগমন রাফির, টুকটাক কথা, কি জানে এত্ত সুন্দর করে কথা বলে সাপোর্ট দিয়ে কয়েকদিনেই মন জয় করে নিয়ে গেল। তারপর মেসেঞ্জারে কল দিয়ে কথায় কথায় আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, একদিন ভিডিও কলেও কথা হয়ে গেল, জানতে পারল তারা দু'জন একি এলাকার বাসিন্দা, আরো ভালো দেখাও হয়ে গেল এরি মধ্যে কয়েকবার ।
`
হঠাং ঝড়ের বেগে আসা ভালোবাসা, মেয়ের প্রফাইলে এখন আর সেলফি আর ভাবওয়ালা ইংলিশ পোষ্ট গুলা দেখা যায়না, বাংলায় স্টাস্টাস দেওয়া শুরু করছে তাও আবার রোমান্টিক টাইপ, বলতে গেলে সবাই অবাক হয়ে গেছে। এই আর কি জেনি আশায় বসে আছে কবে রাফি প্রপোজ করবে, কারণ মেয়েরা তো আগে প্রপোজ করতে পারেনা। যাই হোক গল্প সবে মাত্র শুরু।
রাফির ম্যাসেজ...
- আজকে একটু দেখা করতে পারবা? (রাফি)
- কখন?
- বিকালে, ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার?
- আচ্ছা আসব।
`
জেনি তো খুশি, সে ভাবছে আজ হয়ত বলেই দিবে, তাই একটু সাজুগুজু করেই বেড়িয়ে গেল বিকাল বেলা। রিক্সা নিয়ে পৌছে গেল ৩২ নাম্বার।
কিছুক্ষণ পর রাফির দেখা, মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে হাটতে লাগল রাফি নিয়ে গেল সুনসান এক জায়গায়, মাটিতে হাটু গেড়ে প্রপোজ করে দিল জেনিকে, জেনি দু'হাত মুখে দিয়ে পারছেনা খুশিতে পরে যেতে, এক্সপেক্ট করে ফেলল একজন আরেকজনককে জড়িয়ে ধরল। এটা হয়ে যায় ইচ্ছা থাকুক আর না থাকুক।
`
তারপর কি ঘুরাঘুরি ফেসবুকে সো অফ, বন্ধুদের কাছে সো অফ করতে লাগল রাফি, আর জেনি তার বান্ধবীদের শুনায় তাদের রিলেশনের খুনশুটি কাহিনী।
`
বেশকিছু দিন যাওয়ার পর ফ্যান্টাসির তারনায় লিপ কিস হয়ে গেল, অবশ্য রোমান্স না হলে রিলেশন জমে না। এতে কারোই আপত্তি ছিলনা মানে জেনির ও না আর রাফির তো আরো না।
`
দিনের পর দিন চলতে লাগল ৩ মাস হয়ে গেছে তাদের রিলেশনের।
কথায় আছেনা মানুষ যত পায় আরো বেশী চায়, রাফির চাহিদাটাও বেড়ে গেল, বুঝতেই পারছেন কি রকম চাহিদা।
জেনিও ফেসে গেছে মানা করতে পারছেনা কিন্তু আবার এতদূর যাওয়াও ঠিকনা। অনেক বুঝা তুঝার পর রাফি শেষমেশ আপত্তিকর জায়গায় ছুঁয়েই ফেলল, এর বেশী জেনি পারবেনা।
`
যাই হোক রিলেশনশিপ শব্দ থাকলে, ব্রেকাপ শব্দটাও আছে কথা কাটাকাটি ব্রেকাপ ঝড় কান্না সব গেল জেনির উপর দিয়ে। এখন তার কাছে সব ছেলেই খারাপ, ফেসবুকে পোষ্ট করছে এইসব আর অনেকে ইনবক্স এ ঝড় তুলছে যা ইচ্ছা বলছে।
সবার ওই একটাই কথা 'সব ছেলে কি আর এক'
যাক এইসব থেকে বের হতেও সময় লাগেনি ১ মাসের সময় লাগে সব ঠান্ডা হতে। সে আর কোনো রিলেশনে জড়াবেনা।
`
এরই মাঝে প্রায়ই ম্যাসেজ আসত 'Md Irfan Robo' নাম করে ছেলের কাছ থেকে, জেনির ফেসবুক ফ্রেন্ড অনেকভাবে বুঝায় , কিন্তু জেনি পাত্তা দেয়না। ভাবার সময় নেই যত্তসব বলে দেয় ছেলেটাকে।
`
জেনি অনিচ্ছা সত্যে আবার রিলেশনে ঢুকে অন্য আরেক ছেলের সাথে, ওই ছেলের সাথে সাবধানে থাকে, টাচ ই করতে দেয়না। দুর্ভাগ্য এই ছেলেটাও আকৃষ্ট করে ফেলে তাকে, কোনো এক বিল্ডিয়ের নিচ তলায় হঠাং কিস হয়ে যায় আবার। চলতে থাকল এমন আবার।
এই রিলেশনও যায় ১মাস কারণ রাফির আগমন আবার ঘটে তাই সে ওই ছেলের সাথে ব্রেকাপ করে। কারণ মেয়েরা যত্তই হোক প্রথম ভালোবাসার কাছে ফিরে যেতে মন চায়, আর রেডি থাকে সর্বকক্ষন।
`
এইদিকে ওই ছেলেটা রাগে ক্ষুদ্ধ আর সহ্য করতে পারছেনা, ছেলেটা ভালোই তো বাসছিল, সহ্য না করতে পেরে, মেয়ের ইনবক্স এ তাকে বুঝায় কিন্তু মেয়ে পালটা ব্লক মারে।
`
ছেলে এবার অন্যভাবে যোগাযোগ করে জেনিকে Prostitute বলে দেয়, জেনির চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝড়তে থাকে, ছেলেটির এমন বলা ঠিক হয়নি, আবার অনেক কান্নাকাটির পর জেনি বুঝতে পারে তারই দোষ।
কি করবে এভাবে চলতে থাকলে তার ইজ্জত থাকবেনা, এখন এসব কথা চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে, এক বন্ধুর থেকে অন্য বন্ধু তারপর আর কি চলছে.....
___________________________
কিছু কথা এত্তক্ষন কি পড়লেন? সব জলদি জলদি হয়ে গেল? কিন্তু বড় করে লেখার কিছু নেই পুরোটা ঘটনা বাস্তব একজন না দু'জন না বহু মানুষের জীবন এর সাথে মিলিয়ে লেখা। আপনার জীবনে ভালোবাসা আসে, আপনি জানেন এটা ঠিক না উপযুক্ত বয়স না তারপরেও কেন জানি বুঝলেও বুঝা হয়না ঢুকে পড়েন রিলেশনে ৮৫% মেয়ের কাহিনী হয় জেনির মত। কোনো মেয়ের অধিকার নাই কোনো ছেলে থেকে ধোকা খাওয়ার পর পুরো ছেলে জাতিকে খারাপ বলা।
পুরো ছেলে জাতি এসে আপনাকে বলে নাই রিলেশন করতে, আপনার চয়েজ ভুল ছিল, সিন্ধান্ত ভুল, বলতে পারেন নিজেই ফেসে গেছেন।
`
জীবনেও রাফির মত খেয়ে ছেড়ে দেওয়া পাবলিক থাকলেও ইরফানের মত ছেলেও থাকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য আর বুঝানোর মত। হ্যা সবার জীবনেই থাকে, ৯০% কেয়ার করেনা সেইসব ছেলেদের কারণ কি? ভুল চয়েজের কারণে আপনি ধোকা খান, সঠিক সিন্ধান্ত নেন, সঠিক মানুষ চয়েজ করেন, যে আপনাকে সাপোর্ট করে এর মানে তা নয় যে সে আপনাকে সঠিকভাবে সাপোর্ট করছে, আপননি ভাবেন ছেলেটা আমাকে বুঝে ঠিক কতটা বুঝে? শেষে গিয়ে ছেলেটা বের হয় রাফির
মত।
`':::::::::
এইটা খেয়াল রাখবেন কিছু মানুষ আপনাকে সঠিক কথা বললে আপনি বিরক্ত হন, ভাবেন সে আপনাকে অপমান করছে একটু পজেটিভলি ভাবেন দেখতে পাবেন অপমান না কথা সঠিক ছিল আর আপনার উপকারো হত।
`
রাফির মত মানুষরা ভালোবাসা বেশী পায় আর ভবিষংতেও পাবে কারণ তারা হ্যা এর সাথে হ্যা মিলিয়ে কথা বলে আর আপনার তাকে ভালো মনে হয় তারপর অবস্থা হয় জেনির মত।
`
মানুষ চিনতে সামান্য ভুল আপনার জীবনের বড় ভুল গুলোর মধ্যে অন্যতম, সর্তক হউন এটাই আমার কামনা।
মানুষ চিনতে ভুল করবেন না, নাহয় ভয়ানক কিছুর সম্মুখীন হতে সময় লাগবে না
`
`

আবেগী ভালোবাসা

দূর ছাতা! আজকেও মনে হয় ক্লাসটা মিস হলো! ক্লাসটা আর ইকটু দেরি করে শুরু হলে কি এমন ক্ষতি হতো..... এসব কথা ভাবতে ভাবতেই রিক্সাওয়ালাকে তাগাদা দিতে থাকে ইরা। "মামা ইকটু তাড়াতাড়ি চালান না, দেরি হয়ে যাচ্ছে"। রিক্সাওয়ালা মামা পেছন ফিরে ইরার দিকে তাকিয়ে একটা শুকনো হাসি দিয়ে বলল, "যাইতাছিই তো.... আমার রিস্কা তো আর প্লেন না যে উড়াইয়া লইয়া যামু"। উত্তরটা পছন্দ হলোনা ইরার। মেজাজটা চড়ে গেলো। ইরার ইচ্ছা করছে যে এই মুহুরতে রিক্সা থেকে নেমে পারলে পায়ে হেটে যায়। কিন্তু ইরা তা করলো না। চুপচাপ বসে রইলো। ইরা গ্রামের মেয়ে। অত্যন্ত সহজ-সরল ও খুবই মেধাবী ছাত্রী। এইচ.এস.সি পরীক্কা শেষে ঢাকায় ভরতি কোচিং করতে আসে। প্রাইমেটস নামে একটি নামকরা মেডিকেল ভরতি কোচিং এ ভরতি হয়। তার লক্ষ একটাই আর তা হচ্ছে ডাক্তার হউয়া। ইরার মা এস.এস.সি পরীক্ষার সময় মারা যান। মার ইচ্ছা ছিলো তার মেয়ে ভাক্তার হবে। মার ইচ্ছা পূরণের জন্যই ইরার শহরে আসা। . কোচিং এ ইরা বরাবরই প্রথম হয়। সেজন্য নিশ্চিত চান্স পাবার সম্ভাবনাময় ছাত্রী হিসেবেই সে বিবেচিত ছিলো। কোচিং এর স্যাররা তার প্রতি এক্সট্রা কেয়ার নিতো। এনাদের মদ্ধে এনামুল স্যার ইরার ইকটু বেশিই কেয়ার নিতো। তবে তার অতিরিক্ত কেয়ার নেউয়াটা ইরার তেমন একটা পছন্দ ছিলো না। . মেডিকেলের পরীক্ষার আর ২ দিন বাকি। কোচিং এ লাস্ট ক্লাস। অন্যান্য সবার মতন ইরাও আজ সেজে এসেছে। সবুজ পাড়িওয়ালা নীল রং এর শাড়ীতে ওকে অপূর্ব লাগছিল। এনামুল স্যারও উপস্থিত ছিলেন। শেষে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এনামুল স্যারের কাছ থেকে ইরা বিদায় নিতে গেলে স্যার তাকে অনেক আশা দিয়ে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে বিদায় দিলেন। . মেডিকেলের পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট বের হলো। ইরা ১৫ তম স্থান অধিকার করে। এনামুল স্যারকে সে তার রেজাল্ট এর খবর জানাতে স্যার তাকে অনেক অভিনন্দন জানান। এরপর স্যারের সাথে প্রায়ই ইরার কথা হতে থাকে। নানান সময়ে নানাভাবে এনামুল স্যার ইরাকে সাহায্য করে যান। . ওদের সম্পর্কটা ধিরে ধিরে ভাললাগা আর এর পর ভালবাসায় রুপ নেয়। ইরার সারাটা পৃথিবী জুড়ে তখন শুধু এনামুল। এনামুলও পাগলের মতন ভালবাসতো ইরাকে। . একদিন ইরা এনামুলকে ফোন করে দ্যাখা করতে বলে। বলে যে খুবই জরুরি কথা আছে। এনামুল ও তাই কাজ ফেলে দ্রুত চলে আসে। ওরা কাঁটাবনের একটা কফিসপে বসে আছে। এমন সময় ইরা এনামুলের হাতে হাত রেখে বলে যে, আমি আজ তোমাকে সত্য একটা কথা বলবো। আজ থেকে তিন বছর আগে আমি আমার এক দূর সম্পর্ক এর মামীরর বাড়িতে যাই বেড়াতে। মামীর বড় ছেলে আমার সমবয়সী ছিলো। নাম রায়হান। ওর সাথে আমার অল্প কদিনের মধ্যেই ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। একদিন রায়হানের সাথে মামীর বাড়ীর পিছনে ধানের ক্ষেতে বেড়াতে যাই। আমরা হাঁটতে হাঁটতে ধানক্ষেতের গভীরে চলে যাই। হঠাত রায়হান আমার হাত চেপে ধরে। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই ও আমার ওড়না দিয়ে আমার মুখ বেঁধে ফেলে। জোর করে আমাকে অপদস্থ করে। আমার সম্ভ্রম কেড়ে নেয়। লোকলজ্জার কারনে আমি কাউকেই কিছু না বলে চলে আসি। বিশ্বাস করো এনামুল, এতে আমার কোন দোষ ছিলোনা। আমি তোমাকে হারানোর ভয়ে এতদিন কিছু বলিনি। কিন্তু তোমাকে আমি ঠকাতে পারবোনা। তাই সত্যটা বললাম। এখন তুমিই সিদ্ধান্ত নাও যে তুমি কি করবে। কথাগুলো বলে ইরা ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। . এনামুল আস্তে করে ইরার হাতটা ওর হাতের উপর থেকে সরিয়ে নিলো। বললো যে, ইরা আমি তোমাকে ভালোবাসি। কিন্তু তোমার ভাগ্যের জন্য হোক আরর যে কারনেই হোক তুমি আমার চোখে এখন একজন চরিত্রহীনা নারী। তোমার মত একজন চরিত্রহীনা মেয়েকে আমি কখনোই বিয়ে করতে পারবো না। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। কথাগুলি বলে এনামুল চলে যায়। ইরা পিছন থেকে নিশপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। তার চোখ থেকে অবিরত ধারায় অস্রু ঝরতে থাকে। . কিছুদিন পরে এনামুলের ফনে একটা মেসেজ আসে। ইরা লিখেছে... তোমাকে সেদিন আমি যে ঘটনাটা বলেছিলাম সেটা তোমাকে পরীক্ষা করার জন্য বলেছিলাম। আমার জীবনে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি দেখতে চেয়েছিলাম যে তোমার ভালবাসার গাড়ত্ব কতটুকু। তোমার কাছ থেকে আমি বাস্তবতার শিক্ষা নিলাম। তুমি ভাল থেকো। ভালো কোনো মেয়ে দেখে বিয়ে করো। খুদা হাফিয। এনামুল মেসেজটা পড়ে নিশপলক শুধু চেয়ে থাকে আর নিজের ভুলের অনুসচনা করতে থাকে। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে.....।