কে বলেছে তোমাকে
রান্না করতে?(ধমকের
সুরে
বললাম)
-নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে
আছে।
-যেটা পার না সেটা
করতে যাও কেন?
-নিশ্চুপ।
-আমি তোমাকে কিছু
বলছি চুপ করে থাকবে
না।
-মাথা নিচু করে
দাড়িয়ে আছে।
-যদি বড় ধরনের কোন
দুর্ঘটনা ঘটত।কে
জবাবদিহিতা করত
তোমার বাবা-মাকে।
-নিশ্চুপ।
-আমার কথাগুলো কি
কানে ঢুকেছে?
-নিশ্চুপ।
-কতবার তোমাকে
বোঝাতে হবে?
-মাথা উচু করে এবার
করে কিছু বলতে
যাচ্ছিল।
-ঠাশ.....গালে একটা
থাপ্পড় দিলাম।
-উ হু হু করে কেঁদে
দিল।
-আর কোন দিন যেন
তোমাকে রান্নাঘরে
ঢুকতে না
দেখি।তুমি কেন বুঝনা
তুমি এগুলো পার না।
-উ হু হু হু। (নীরব
চোখে অশ্রু গড়িয়ে
পড়ছে,অবাক
হয়ে আমার মুখের
দিকে তাকিয়ে আছে)
-দেখি হাতটা দাও?
কতখানি পুড়ে গেছে?
-হাত দেখা লাগবে না...(কাঁদতে কাঁদতেই বলে)
-কি হল হাত দেখাতে
বলছি না।(বলেই
হাতটা
ধরলাম,অমনি কাঁদতে
কাঁদতে ঘর থেকে বের
হয়ে
গেল)
-এই শোন শোন......
(ডাকে সাড়া দিল
না,ছুটে
বেরিয়ে গেল।
মেয়েটাকে কেন
মারতে গেলাম।
নিজেকে ভীষন
অপরাধী মনে হচ্ছে।
একটু জোরে কথা
বললে যে
কেঁদে দেয় তার গায়ে
হাত তুললাম।ছি ছি
ছি আমি
মোটেও ঠিক করিনি।
কিন্তু এই মেয়েটা
অবুঝের মত
কাজ করবে সারাক্ষন।
এত মানা করি এটা
করনা তুমি
পারবে না তবুও
শোনেনা।
.
ও লতা,আমার
স্ত্রী।তিনমাস হল
আমাদের বিয়ে
হয়েছে।ওর শরীরের বর্ণটা একটু কালো। ভীষন
আবেগী
একটা মেয়ে। প্রথম
যেদিন ওকে দেখেছিলাম
বুঝেছিলাম
একাকিত্ব ওকে পেয়ে
বসেছে।প্রথম
দেখাতেই ভাল
লেগেছিল।
অন্যমেয়েদের মত
সব আছে।গায়ের রং টাই শুধু ফর্সা নয়
।তাই বলে কিন্তু একেবারে অপছন্দ করার মতো
মেয়ে না।ও
আমাদের
বাড়িওয়ালার মেয়ে।
প্রথম প্রথম ভাললাগা
তারপর
মনের অজান্তেই
ভালবাসা।এত নম্র ভদ্র
একটা মেয়ে
ফর্সা না হলেও ওর যেন আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে।
ওর
চলাফেরা,উদাসীন
হয়ে আকাশ
দেখা,বিকেলের ছাদে
খোলা চুলে বসে থাকা
সবকিছুতে কেমন যেন
মায়াচ্ছন্ন হয়ে
পড়ছিলাম।
কয়েকদিন পর ছাদে
উঠেছি দেখি এককোনে
দাড়িয়ে আছে।কাছে
গিয়ে নাম জিজ্ঞাসা
করলাম।বললঃ'আমার নাম লতা।'
আরও
কিছু প্রশ্ন
জিজ্ঞাসা করব কিন্তু শুধু নামটা বলেই চলে গেল।
সেদিনের মত আমিও চলে
আসলাম ।এর পর আর ওকে ছাদে আগের মত বেশি দেখতাম না।
.
একদিন ছাদে বসে
আছি, লতাও আস্তে আস্তে ছাদে আসল।আমি ওর দিকে এগিয়ে গেলাম।ওর কাছে গিয়ে বললাম,সেদিন তোমাকে কিছু বলব ভেবেছিলাম, তো তুমি নাম বলেই চলে গেলে তাই বলতে পারিনি।আজ একটা কথা তোমাকে বলতে চাই।লতা তেমন কিছু বলল না আমার কথা শুনে। তারপর আর কিছু না ভেবে ওকে
বললাম,'ভালবাসি
তোমাকে'।অবাক
দৃষ্টিতে একনজরে
তাকাল তারপর চলে
গেল।আমি দাড়িয়ে
ছিলাম
চলে যাওয়ার পানে
দৃষ্টি ।
পরেরদিন আমাকে বলল,
আমি অতি
সাধারন একটা
মেয়ে।তারপর দেখতে কালো।
আপনার বউ হওয়ার
কোন
যোগ্যতাই আমার নেই।
তাছাড়া আপনার
ভিতর এখন
হয়ত আবেগ না হয়
করুনা কাজ করছে যা
ক্ষনিকের
জন্য থাকবে।কিন্তু
জীবনটা অনেক
কঠিন আপনি
আমাকে নিয়ে চলতে
পারবেন না।আমি
সত্যিই
নিরুপায় আমি যদি আপনার যোগ্য হতাম
তাহলে
নিশ্চয়ই আপনাকে
ভালবাসতাম।এটুকু বলে চলে
যেতে চাইল।আমি হাত
টেনে
ধরে বললাম এটা
করুনা নয়,আবেগ ও নয়
আমি সত্যিই
তোমাকে ভালবেসে
ফেলেছি,এখন যেমন
আছি
সারাটি জীবন
এমনভাবেই থাকব।এরপর আর কিছু বলেনি মেয়েটি।
কিছুদিন পর বাসায়
জানাই।তারপর বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই বাবা মাকে রাজি করিয়ে।ওর পরিবারের
দিক থেকেও কোন
আপত্তি
ছিলনা।কিন্তু ওকে
অনেক কষ্টেই রাজি
করিয়েছিলাম।
তারপর বিয়েটা সুষ্ঠু
ভাবে সম্পন্ন
হয়েছিল।
.
মেয়েটা
ভীষন কেয়ার নেয়।
সবকিছু গুছিয়ে
রাখে।আর নীরব মনের
মেয়েটা যে কতখানি
ভালবাসতে জানে
সেটা তো উপলব্ধি
করতে
পারছি।
.
.
আজ অফিস শেষে
বাসায় এসে শুনি
লতা রান্না
করতে গিয়ে গরম
তেলে হাতে ফোস্কা
উঠেছে।ওর রান্না করে
অভ্যাস নেই।
তাই ওকে
আগুনের কাছে যেতে
দেইনা।ওর আব্বু
আম্মুও নিষেধ
করেছিল।আজকে
আম্মু বিকেলে
ঘুমিয়েছিল তখন
রান্না করতে গেছে।
গরম তেল
হাতে পড়লে হাতটা
সরিয়ে আনতে গিয়ে
একটা
গামলা পড়েছিল
ফ্লোরে তার সাথে
আর্তনাদ শুনে আম্মু
উঠে এসে চুলাটা
নিভিয়ে
আমাকে ফোন করে।
বাসায় ঢুকেই মাথাটা
গরম হয়ে
যায়,কেমন যেন ভুলে
গিয়েছিলাম সব।
তাছাড়া একটা ভুল
করেই ফেলেছে
তাই বলে হাত তুললাম?
রাগ করে আম্মুর
কাছে গিয়ে
শুয়ে আছে।এর আগে
একবার এভাবে
কেঁদেছিল,বিয়ের
পরেরদিন ফুফু হঠাৎ
ওর সামনেই বলে উঠল
অভ্র তুই
শেষ পর্যন্ত একটা
কালো মেয়েকে বিয়ে
করলি।
প্রচন্ড রাগ হয়েছিল
সেদিন আমার ফুপির
উপর।
লতা দৌড়ে গিয়ে
রুমে শুয়ে শুয়ে
কেঁদেছিল
সারাদিন।
-আরে পাগলী
ফুপি কি বলল না বলল
তা
শুনেই তোমাকে কাঁদতে
হবে? আমি তো
তোমাকে
অনেক ভালবাসি।তবুও
কান্না থামেনা।সে
শেষে বলেই দিল,
-তুমি অন্য একটা
মেয়েকে বিয়ে
করে নাও।..
আমি সাথে
সাথে বুকে টেনে
নিয়েছিলাম।এই
পাগলী তুমি ছাড়া
দ্বিতীয় কোন
নারী আমার জীবনে
কখনও আসবেনা।
সেদিনের পর
থেকে বুঝেছিলাম
মেয়েটা কতটা
আবেগী...
আম্মুর রুমে গিয়ে
দেখি আব্বু আম্মু
লতা লুডু
খেলছে।আমাকে
দেখেই মুখটা অন্য
দিকে ঘুরিয়ে নিল।
-কি রে কিছু বলবি?
(আব্বু)
-জ্বি।না মানে ক্ষুধা
লেগেছে।
-ক্ষুধা লেগেছে
টেবিলে খাবার দেওয়া
আছে খেয়ে
ঘুমিয়ে পড়।(আম্মু)
-তোমরা খাবে না?
-একটু দেরি হবে।
-ইশারায় লতাকে
ডাক দিলাম।(ইশারায়
না
বলে দিল সে
)
-কি হয়েছে মা?(আব্বু
জিজ্ঞাসা করল)
-ও মাথা নিচু করে চুপ
করে থাকল।
আব্বু আমার চোখের
দিকে
তাকাতেই আমিও মাথা
নিচু
করে বেরিয়ে এলাম।
ধ্যাত
মেয়েটার এত রাগের
কি আছে? একটু বের
হলেই
পারত।রাগে গজ গজ
করতে করতে রুমে
গিয়ে শুয়ে
পড়লাম।একটু পরে
আম্মু এসে ডাক দিল।
খেতে বসেছি
আম্মু ওকে খাইয়ে
দিচ্ছে আমি ওর দিকে
তাকাতেই
চোখ সরিয়ে নিচ্ছে।
খাওয়া শেষ করে রুমে
এসে
শুয়ে পড়েছি একটু পর
লতা ঢুকল।কিছু
বলতে
যাব,পাত্তা না দিয়ে
আবার বেরিয়ে গেল।
একটু পরে
এসে জানালার কাছে
দাঁড়াল।
-আই এ্যম স্যরি।
(আমি)
-চুপ।(লতা)
-আমি খুব অন্যায়
করেছি আমার মিষ্টি
বউটাকে
বকা দিয়েছি,মেরেছি।
আমার মিষ্টি বউটা
কি তার এই
পঁচা বরটাকে মাফ
করবে না।
-চুপ।
-আমি তো জানি
আমার বউটা অনেক
রেগে আছে।
কিন্তু কি করব
আমার বউটা কেন
এমন ছেলে মানুষি
করে যদি তার কিছু
হয় আমি তো বাঁচব না।
-এবার জানালার কাছ
থেকে সরে এসে বলছে,
-আমি কি
আমার স্বামীর জন্য
কিছু রান্না করতে
পারি না?
-,পারো
তো কিন্তু তুমি তো
রান্না
করতে জান না।(আমি)
-জানি না বলে শিখতে
পারব না?
-পারবে তো তবে
আম্মুকে কাছে রাখবে।
-আমাকে মারলে কেন?
-বুঝতে পারিনি।
সত্যিই আমি দুঃখিত।
-না।
-আমাকে মাফ করে
দাও প্লিজ।
-না।
-আর কখনও এমন ভুল
হবেনা।
-না।
-শেষবারের মত মাফ
করে দাও।
-না
আমি স্যরি বলে হাত
ধরলাম।হাতটি
ছাড়িয়ে নিল।
কান্না চোখে পিছু
ফিরলাম।এবার
পাগলীটা
কাঁদতে কাঁদতে আমার
সামনে এসে আমাকে
জড়িয়ে ধরেছে।ফুপিয়ে
ফুপিয়ে কাঁদছে।আর সে
কান্নার আওয়াজ যেন
আমার বুকের
মাঝখানটাতে গিয়ে
ধাক্কা খায়।
আমিও জড়িয়ে রাখব
সারাজীবন।
আর কখনও দুঃখ দিব
না আমার মিষ্টি
বউটাকে।
অফিসে গেলে মাঝে
মাঝে ফোন করে কেঁদে
ফেলে।ওর নিঃশ্বাসের
শব্দ
শুনলে সত্যিই আমি
ওকে উপলব্ধি করতে
পারি।মনে
হয় খুব কাছাকাছি
বুকের বামপাশে
হৃদয়ের মাঝে
থাকে সে সারাক্ষন।
বুঝতে পারি তখনই ওর
হৃদয়ের
কথা।
পৃথিবীর কাছে ও
কালো একটি মেয়ে
হতে পারে
,কিন্তু
আমার
কাছে সে আমার
অন্ধকার ঘরের
আলো,সবচেয়ে রূপসী।
সারাক্ষন মেয়েটা
চঞ্চল থাকে।
অবাক হয়ে তাকিয়ে
থাকি মেয়েটির
দিকে,এমন
করে কেউ ভালবাসতে
পারে।এত গভীর ভাবে
মেয়েটি ভালবাসতে
পারে আমি সত্যিই
মুগ্ধ হয়ে
যাই।আমি মোটেও ভুল
করিনি এই রূপসীকে
কাছে
টেনে.....
রান্না করতে?(ধমকের
সুরে
বললাম)
-নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে
আছে।
-যেটা পার না সেটা
করতে যাও কেন?
-নিশ্চুপ।
-আমি তোমাকে কিছু
বলছি চুপ করে থাকবে
না।
-মাথা নিচু করে
দাড়িয়ে আছে।
-যদি বড় ধরনের কোন
দুর্ঘটনা ঘটত।কে
জবাবদিহিতা করত
তোমার বাবা-মাকে।
-নিশ্চুপ।
-আমার কথাগুলো কি
কানে ঢুকেছে?
-নিশ্চুপ।
-কতবার তোমাকে
বোঝাতে হবে?
-মাথা উচু করে এবার
করে কিছু বলতে
যাচ্ছিল।
-ঠাশ.....গালে একটা
থাপ্পড় দিলাম।
-উ হু হু করে কেঁদে
দিল।
-আর কোন দিন যেন
তোমাকে রান্নাঘরে
ঢুকতে না
দেখি।তুমি কেন বুঝনা
তুমি এগুলো পার না।
-উ হু হু হু। (নীরব
চোখে অশ্রু গড়িয়ে
পড়ছে,অবাক
হয়ে আমার মুখের
দিকে তাকিয়ে আছে)
-দেখি হাতটা দাও?
কতখানি পুড়ে গেছে?
-হাত দেখা লাগবে না...(কাঁদতে কাঁদতেই বলে)
-কি হল হাত দেখাতে
বলছি না।(বলেই
হাতটা
ধরলাম,অমনি কাঁদতে
কাঁদতে ঘর থেকে বের
হয়ে
গেল)
-এই শোন শোন......
(ডাকে সাড়া দিল
না,ছুটে
বেরিয়ে গেল।
মেয়েটাকে কেন
মারতে গেলাম।
নিজেকে ভীষন
অপরাধী মনে হচ্ছে।
একটু জোরে কথা
বললে যে
কেঁদে দেয় তার গায়ে
হাত তুললাম।ছি ছি
ছি আমি
মোটেও ঠিক করিনি।
কিন্তু এই মেয়েটা
অবুঝের মত
কাজ করবে সারাক্ষন।
এত মানা করি এটা
করনা তুমি
পারবে না তবুও
শোনেনা।
.
ও লতা,আমার
স্ত্রী।তিনমাস হল
আমাদের বিয়ে
হয়েছে।ওর শরীরের বর্ণটা একটু কালো। ভীষন
আবেগী
একটা মেয়ে। প্রথম
যেদিন ওকে দেখেছিলাম
বুঝেছিলাম
একাকিত্ব ওকে পেয়ে
বসেছে।প্রথম
দেখাতেই ভাল
লেগেছিল।
অন্যমেয়েদের মত
সব আছে।গায়ের রং টাই শুধু ফর্সা নয়
।তাই বলে কিন্তু একেবারে অপছন্দ করার মতো
মেয়ে না।ও
আমাদের
বাড়িওয়ালার মেয়ে।
প্রথম প্রথম ভাললাগা
তারপর
মনের অজান্তেই
ভালবাসা।এত নম্র ভদ্র
একটা মেয়ে
ফর্সা না হলেও ওর যেন আলাদা একটা সৌন্দর্য আছে।
ওর
চলাফেরা,উদাসীন
হয়ে আকাশ
দেখা,বিকেলের ছাদে
খোলা চুলে বসে থাকা
সবকিছুতে কেমন যেন
মায়াচ্ছন্ন হয়ে
পড়ছিলাম।
কয়েকদিন পর ছাদে
উঠেছি দেখি এককোনে
দাড়িয়ে আছে।কাছে
গিয়ে নাম জিজ্ঞাসা
করলাম।বললঃ'আমার নাম লতা।'
আরও
কিছু প্রশ্ন
জিজ্ঞাসা করব কিন্তু শুধু নামটা বলেই চলে গেল।
সেদিনের মত আমিও চলে
আসলাম ।এর পর আর ওকে ছাদে আগের মত বেশি দেখতাম না।
.
একদিন ছাদে বসে
আছি, লতাও আস্তে আস্তে ছাদে আসল।আমি ওর দিকে এগিয়ে গেলাম।ওর কাছে গিয়ে বললাম,সেদিন তোমাকে কিছু বলব ভেবেছিলাম, তো তুমি নাম বলেই চলে গেলে তাই বলতে পারিনি।আজ একটা কথা তোমাকে বলতে চাই।লতা তেমন কিছু বলল না আমার কথা শুনে। তারপর আর কিছু না ভেবে ওকে
বললাম,'ভালবাসি
তোমাকে'।অবাক
দৃষ্টিতে একনজরে
তাকাল তারপর চলে
গেল।আমি দাড়িয়ে
ছিলাম
চলে যাওয়ার পানে
দৃষ্টি ।
পরেরদিন আমাকে বলল,
আমি অতি
সাধারন একটা
মেয়ে।তারপর দেখতে কালো।
আপনার বউ হওয়ার
কোন
যোগ্যতাই আমার নেই।
তাছাড়া আপনার
ভিতর এখন
হয়ত আবেগ না হয়
করুনা কাজ করছে যা
ক্ষনিকের
জন্য থাকবে।কিন্তু
জীবনটা অনেক
কঠিন আপনি
আমাকে নিয়ে চলতে
পারবেন না।আমি
সত্যিই
নিরুপায় আমি যদি আপনার যোগ্য হতাম
তাহলে
নিশ্চয়ই আপনাকে
ভালবাসতাম।এটুকু বলে চলে
যেতে চাইল।আমি হাত
টেনে
ধরে বললাম এটা
করুনা নয়,আবেগ ও নয়
আমি সত্যিই
তোমাকে ভালবেসে
ফেলেছি,এখন যেমন
আছি
সারাটি জীবন
এমনভাবেই থাকব।এরপর আর কিছু বলেনি মেয়েটি।
কিছুদিন পর বাসায়
জানাই।তারপর বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই বাবা মাকে রাজি করিয়ে।ওর পরিবারের
দিক থেকেও কোন
আপত্তি
ছিলনা।কিন্তু ওকে
অনেক কষ্টেই রাজি
করিয়েছিলাম।
তারপর বিয়েটা সুষ্ঠু
ভাবে সম্পন্ন
হয়েছিল।
.
মেয়েটা
ভীষন কেয়ার নেয়।
সবকিছু গুছিয়ে
রাখে।আর নীরব মনের
মেয়েটা যে কতখানি
ভালবাসতে জানে
সেটা তো উপলব্ধি
করতে
পারছি।
.
.
আজ অফিস শেষে
বাসায় এসে শুনি
লতা রান্না
করতে গিয়ে গরম
তেলে হাতে ফোস্কা
উঠেছে।ওর রান্না করে
অভ্যাস নেই।
তাই ওকে
আগুনের কাছে যেতে
দেইনা।ওর আব্বু
আম্মুও নিষেধ
করেছিল।আজকে
আম্মু বিকেলে
ঘুমিয়েছিল তখন
রান্না করতে গেছে।
গরম তেল
হাতে পড়লে হাতটা
সরিয়ে আনতে গিয়ে
একটা
গামলা পড়েছিল
ফ্লোরে তার সাথে
আর্তনাদ শুনে আম্মু
উঠে এসে চুলাটা
নিভিয়ে
আমাকে ফোন করে।
বাসায় ঢুকেই মাথাটা
গরম হয়ে
যায়,কেমন যেন ভুলে
গিয়েছিলাম সব।
তাছাড়া একটা ভুল
করেই ফেলেছে
তাই বলে হাত তুললাম?
রাগ করে আম্মুর
কাছে গিয়ে
শুয়ে আছে।এর আগে
একবার এভাবে
কেঁদেছিল,বিয়ের
পরেরদিন ফুফু হঠাৎ
ওর সামনেই বলে উঠল
অভ্র তুই
শেষ পর্যন্ত একটা
কালো মেয়েকে বিয়ে
করলি।
প্রচন্ড রাগ হয়েছিল
সেদিন আমার ফুপির
উপর।
লতা দৌড়ে গিয়ে
রুমে শুয়ে শুয়ে
কেঁদেছিল
সারাদিন।
-আরে পাগলী
ফুপি কি বলল না বলল
তা
শুনেই তোমাকে কাঁদতে
হবে? আমি তো
তোমাকে
অনেক ভালবাসি।তবুও
কান্না থামেনা।সে
শেষে বলেই দিল,
-তুমি অন্য একটা
মেয়েকে বিয়ে
করে নাও।..
আমি সাথে
সাথে বুকে টেনে
নিয়েছিলাম।এই
পাগলী তুমি ছাড়া
দ্বিতীয় কোন
নারী আমার জীবনে
কখনও আসবেনা।
সেদিনের পর
থেকে বুঝেছিলাম
মেয়েটা কতটা
আবেগী...
আম্মুর রুমে গিয়ে
দেখি আব্বু আম্মু
লতা লুডু
খেলছে।আমাকে
দেখেই মুখটা অন্য
দিকে ঘুরিয়ে নিল।
-কি রে কিছু বলবি?
(আব্বু)
-জ্বি।না মানে ক্ষুধা
লেগেছে।
-ক্ষুধা লেগেছে
টেবিলে খাবার দেওয়া
আছে খেয়ে
ঘুমিয়ে পড়।(আম্মু)
-তোমরা খাবে না?
-একটু দেরি হবে।
-ইশারায় লতাকে
ডাক দিলাম।(ইশারায়
না
বলে দিল সে
)
-কি হয়েছে মা?(আব্বু
জিজ্ঞাসা করল)
-ও মাথা নিচু করে চুপ
করে থাকল।
আব্বু আমার চোখের
দিকে
তাকাতেই আমিও মাথা
নিচু
করে বেরিয়ে এলাম।
ধ্যাত
মেয়েটার এত রাগের
কি আছে? একটু বের
হলেই
পারত।রাগে গজ গজ
করতে করতে রুমে
গিয়ে শুয়ে
পড়লাম।একটু পরে
আম্মু এসে ডাক দিল।
খেতে বসেছি
আম্মু ওকে খাইয়ে
দিচ্ছে আমি ওর দিকে
তাকাতেই
চোখ সরিয়ে নিচ্ছে।
খাওয়া শেষ করে রুমে
এসে
শুয়ে পড়েছি একটু পর
লতা ঢুকল।কিছু
বলতে
যাব,পাত্তা না দিয়ে
আবার বেরিয়ে গেল।
একটু পরে
এসে জানালার কাছে
দাঁড়াল।
-আই এ্যম স্যরি।
(আমি)
-চুপ।(লতা)
-আমি খুব অন্যায়
করেছি আমার মিষ্টি
বউটাকে
বকা দিয়েছি,মেরেছি।
আমার মিষ্টি বউটা
কি তার এই
পঁচা বরটাকে মাফ
করবে না।
-চুপ।
-আমি তো জানি
আমার বউটা অনেক
রেগে আছে।
কিন্তু কি করব
আমার বউটা কেন
এমন ছেলে মানুষি
করে যদি তার কিছু
হয় আমি তো বাঁচব না।
-এবার জানালার কাছ
থেকে সরে এসে বলছে,
-আমি কি
আমার স্বামীর জন্য
কিছু রান্না করতে
পারি না?
-,পারো
তো কিন্তু তুমি তো
রান্না
করতে জান না।(আমি)
-জানি না বলে শিখতে
পারব না?
-পারবে তো তবে
আম্মুকে কাছে রাখবে।
-আমাকে মারলে কেন?
-বুঝতে পারিনি।
সত্যিই আমি দুঃখিত।
-না।
-আমাকে মাফ করে
দাও প্লিজ।
-না।
-আর কখনও এমন ভুল
হবেনা।
-না।
-শেষবারের মত মাফ
করে দাও।
-না
আমি স্যরি বলে হাত
ধরলাম।হাতটি
ছাড়িয়ে নিল।
কান্না চোখে পিছু
ফিরলাম।এবার
পাগলীটা
কাঁদতে কাঁদতে আমার
সামনে এসে আমাকে
জড়িয়ে ধরেছে।ফুপিয়ে
ফুপিয়ে কাঁদছে।আর সে
কান্নার আওয়াজ যেন
আমার বুকের
মাঝখানটাতে গিয়ে
ধাক্কা খায়।
আমিও জড়িয়ে রাখব
সারাজীবন।
আর কখনও দুঃখ দিব
না আমার মিষ্টি
বউটাকে।
অফিসে গেলে মাঝে
মাঝে ফোন করে কেঁদে
ফেলে।ওর নিঃশ্বাসের
শব্দ
শুনলে সত্যিই আমি
ওকে উপলব্ধি করতে
পারি।মনে
হয় খুব কাছাকাছি
বুকের বামপাশে
হৃদয়ের মাঝে
থাকে সে সারাক্ষন।
বুঝতে পারি তখনই ওর
হৃদয়ের
কথা।
পৃথিবীর কাছে ও
কালো একটি মেয়ে
হতে পারে
,কিন্তু
আমার
কাছে সে আমার
অন্ধকার ঘরের
আলো,সবচেয়ে রূপসী।
সারাক্ষন মেয়েটা
চঞ্চল থাকে।
অবাক হয়ে তাকিয়ে
থাকি মেয়েটির
দিকে,এমন
করে কেউ ভালবাসতে
পারে।এত গভীর ভাবে
মেয়েটি ভালবাসতে
পারে আমি সত্যিই
মুগ্ধ হয়ে
যাই।আমি মোটেও ভুল
করিনি এই রূপসীকে
কাছে
টেনে.....